গণতন্ত্র ও আইনের শাসন ধ্বংসের জন্য সরকার দায়ী : এবি পার্টি
দেশের গণতন্ত্র, মানবাধিকার, আইনের শাসনসহ রাষ্ট্রের সকল প্রতিশ্রুতি ধ্বংসের জন্য বর্তমান সরকারকে দায়ী করেছে আমার বাংলাদেশ পার্টি-এবি পার্টি। বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদন প্রকাশের বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির নেতারা এই অভিযোগ করে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর বিজয়নগরস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ ও অধ্যাপক ডা. মেজর (অবঃ) আব্দুল ওহাব মিনার।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক উল্লেখ করে তাজুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি প্রকাশিত প্রতিবেদনে বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, মত প্রকাশ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, ইন্টারনেট ব্যবহারে বাধা, রাজনৈতিক সভা সমাবেশে বাধা, বিরোধী রাজনৈতিক কর্মীদের উপর নির্যাতনসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে অপরাধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দায় মুক্তির বিষয় উঠে এসেছে।
তিনি বলেন, ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পরও এই সময়ের মধ্যে ৯৪ জন মানুষ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে মারা গেছেন, গুম ও অপহরণ করা হয়েছে ৩২ জনকে।
তিনি আরও বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওই প্রতিবেদনে বর্তমান বাংলাদেশের চেহারা সকলের সামনে সুস্পষ্ট হয়েছে। বাংলাদেশ যে আশা আকাঙ্ক্ষা নিয়ে স্বাধীন হয়েছিলো, বাহান্ন বছর পরও আজ তা সুদূর পরাহত। আজ বড় বড় যে সমস্ত প্রকল্প গ্রহণ করছে তা শুধু সরকারের তল্পিবাহক লোকদের দুর্নীতি আর লুটপাটের জন্য। তার বড় প্রমাণ সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ। একটি রাষ্ট্রের উন্নয়ন শুধু কোনো সেতু আর ফ্লাইওভারের পিলারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।
ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, বাংলাদেশ গত পনের বছরের মতো এতো খারাপ অবস্থায় কখনো যায়নি। আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার আশা আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে প্রতারণা করে এই রাষ্ট্রটিকে ব্যর্থ রাষ্ট্রের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রিপোর্টে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে এদেশের অধিকাংশ মানুষ স্বাধীন নয়। গত নির্বাচনকে তারা ডমিন্যান্ট পার্টি ইলেকশন হিসেবে অভিহিত করেছে।
তিনি বলেন, যে সমস্ত রাষ্ট্রে মানুষের স্বাধীনতা কম তাদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি কম। গণতন্ত্রহীন যেসব রাষ্ট্র রয়েছে সেখানে মানুষের সমৃদ্ধি কম আবার যেখানে মানুষ স্বাধীনভাবে চলতে পারে সেখানে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অনেক বেশী। সরকার এই প্রতিবেদন প্রত্যাখান করলেও বাস্তবে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ দেশের ব্যবসা বাণিজ্য, বিদেশি বিনিয়োগ এবং রপ্তানি বাণিজ্যে এর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রয়েছে। এই রিপোর্ট প্রকাশের পর আমদানিরকারক রাষ্ট্রগুলো আমাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, বৈদেশিক বিনিয়োগ বিঘ্নিত হবে। যা বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রের দিকে নিয়ে যাবে।
ডা. আব্দুল ওয়াহাব মিনার বলেন, বাংলাদেশে আজ প্রতিটা পেশার মানুষ পরাধীন। তারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে না। আজ সাংবাদিকরাও নির্যাতনের শিকার। তারা স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশ করতে পারে না, সঠিক সংবাদ পরিবেশন করতে পারে না।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, সিনিয়র সহকারী সদস্যসচিব আব্দুল বাসেত মারজান, সহকারী সদস্যসচিব শাহ আব্দুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার ফারুক, উত্তরের সদস্যসচিব সেলিম খান, দক্ষিণের যুগ্ম সদস্যসচিব সফিউল বাসার, কেফায়েত হোসেন তানভীর, আহমাদ বারকাজ নাসির, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হালিম নান্নু, যুবপার্টি ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব শাহিনুর আক্তার শীলা, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মশিউর রহমান মিলু, রিপন মাহমুদ, শরণ চৌধুরী, পল্টন থানার আহ্বায়ক আব্দুল কাদের মুন্সি ও সদস্যসচিব আব্দুল ওয়াদুদ রনিসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
২৮ এপ্রিল, ২০২৪