নারায়ণগঞ্জে গণধর্ষণ মামলার যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে গৃহবধূ গণধর্ষণ মামলার যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্ত প্রধান আসামি মোক্তারকে (২৫) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। শনিবার (৪ মে) রাতে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে র‌্যাব-১১ এর মিডিয়া অফিসার এএসপি সনদ বড়ুয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এর আগে শুক্রবার (৩ মে) রাতে খাগড়াছাড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-১১ ও র‌্যাব-৭ এর আভিযানিক দল। গ্রেপ্তার প্রধান আসামি মো. মোক্তার (২৫) নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের ছোনার গ্রামের শুক্কুর আলীর ছেলে। মামলার বিবরণ সূত্রে জানা যায়, রূপগঞ্জ উপজেলার ভিকটিম ও তার স্বামী উভয়ই পেশায় শ্রমিক। ভিকটিমের স্বামী ২০১৮ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ভাড়া বাসায় তার স্ত্রীকে রেখে কাজে চলে যান। বাসায় কেউ না থাকার সুযোগে ভিকটিমকে একা পেয়ে সন্ধ্যায় আসামি মোক্তার (২৫) ও তার সহযোগীরা মিলে ভিকটিমের ঘরে প্রবেশ করে এবং পালাক্রমে ধর্ষণ করে। পরে আসামিরা ভিকটিমকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে কৌশলে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ভিকটিমের স্বামী বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন।  র‌্যাব-১১ এর মিডিয়া অফিসার এএসপি সনদ বড়ুয়া জানান, গত ১৫ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ জেলার বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক নাজমুল হক শ্যামল আসামি মোক্তার (২৫), ও খোকা (৩০) কে রূপগঞ্জ থানায় দায়ের করা একটি গণধর্ষণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেন। উভয় আসামি দীর্ঘদিন আত্মগোপনে ছিলেন। তিনি বলেন, আদালতের রায় ঘোষণার পর যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি খোকাকে র‌্যাব-১১ এর আভিযানিক দল গ্রেপ্তার করলেও প্রধান আসামি মোক্তার পলাতক ছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব-১১ ও র‌্যাব-৭ এর যৌথ অভিযানে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার আসামির বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
০৫ মে, ২০২৪

নারায়ণগঞ্জে গণধর্ষণ মামলায় ২ যুবকের যাবজ্জীবন
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে গণধর্ষণ মামলায় মোক্তার (২৫) ও খোকন (৩০) নামে দুই যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।  সোমবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদালত এ রায় দেন। তবে রায় শুনানির সময় আসামিরা পলাতক ছিলেন। গত ২০১৮ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি রূপগঞ্জ উপজেলার ছোনাব গ্রামে গৃহবধূ গণধর্ষণের শিকার হয়। এর আগে এ ঘটনায় ২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি ভুক্তভোগীর স্বামী রূপগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ছোনাব গ্রামের শক্কুর আলীর ছেলে মো. মোক্তার (২৫) ও একই গ্রামের মো. আমিনের ছেলে মো. খোকন (৩০)। নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন। মামলার ঘটনার বিবরণে তিনি জানান, ভুক্তভোগী ও তার স্বামী উভয়ই পেশায় শ্রমিক। ২০১৮ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি দুপুরে স্ত্রীকে উপজেলার ছোনাব গ্রামের ভাড়া বাসায় একা রেখে কাজে যায় স্বামী। এই সুযোগে সন্ধ্যায় আসামি মোক্তার দেয়াল টপকে তার ঘরে প্রবেশ করে। পরে জোরপূর্বক মোক্তার ভুক্তভোগী গৃহবধূকে ধর্ষণ করে। পর্যায়ক্রমে মোক্তারের সঙ্গে থাকা অপর তিন আসামি পালাক্রমে ওই গৃহবধূকে ধর্ষণ করেন। ভুক্তভোগীকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন আসামিরা কৌশলে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর স্বামী বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। আজ সেই দুজন আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত।
১৫ এপ্রিল, ২০২৪

রাবি ছাত্রলীগ কেন ধর্ষণে অভিযুক্তের পক্ষে? 
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করেছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলো। তবে সে মিছিলে বাধা দিয়েছে ছাত্রলীগ কর্মীরা।  সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পেছন থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। এ সময় ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহীদ সৈয়দ নজরুল প্রশাসনিক ভবনের সামনে শেষ হয়।  এ সময় তারা ‘জাবিতে ধর্ষক কেন, শেখ হাসিনা জবাব চাই’, ‘ধর্ষক তৈরির কারখানা জ্বালিয়ে দাও, পুড়িয়ে দাও’, ‘শিক্ষা-ছাত্রলীগ, একসাথে চলে না’, ‘আমার বোন ধর্ষণ কেন, শেখ হাসিনা জবাব চাই’, ‘ছাত্রলীগের কালো হাত, জ্বালিয়ে দাও, পুড়িয়ে দাও’, ‘রুখে দিতে ধর্ষণ, রাবি করো গর্জন’- ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকে। মিছিলের একপর্যায়ে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লাহ-হিল-গালিব নেতাকর্মীসহ উপস্থিত হয়ে মিছিলে বাধা দেন।   বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজক সংগঠনের অন্যতম নাগরিক ছাত্র-ঐক্যের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মেহেদী হাসান মুন্না অভিযোগ করে বলেন, বিক্ষোভ মিছিলের পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবনের সামনে আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য প্রদানের আগে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লাহ-হিল-গালিব বাধা দেন।  একই অভিযোগ করেন ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি রায়হান আলি। সিলেটের এমসি কলেজে গণধর্ষণের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, এমন ঘটনা তো প্রায়ই ঘটছে। এদের সঙ্গে জড়িত কারা? ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীরাই এসব কাজে লিপ্ত। কিন্তু কোনো ঘটনার বিচার হয় না। অন্যদিকে এসব অপকর্ম নিয়ে কোনো প্রতিবাদ করলেই তাতে বাধা দেওয়া হয়।   তিনি বলেন, কোথায় এমন আছে যে সরকার প্রধানকে প্রশ্নের মুখোমুখি করা যাবে না। শেখ হাসিনার কাছে জবাব চাই—এমন স্লোগান নাকি আমরা দিতে পারব না!  এ সময় রাবি ছাত্রলীগ ধর্ষণে অভিযুক্ত ব্যক্তির পক্ষে কি না, এমন প্রশ্নও তোলেন রায়হান আলি।   এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব বলেন, তারা আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী ও ছাত্রলীগের নামে বিতর্কিত স্লোগান দিচ্ছিলেন। আমরা ক্যাম্পাসে সরকার ও ছাত্রলীগের নামে স্লোগান দিতে নিষেধ করেছি। 
০৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

জাবিতে গণধর্ষণের ঘটনায় আসিফ নজরুলের ফেসবুক স্ট্যাটাস
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) বহিরাগত এক দম্পতিকে ডেকে স্বামীকে আটকে রেখে তার স্ত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটি ঘিরে বিক্ষোভ হয় জাবি ক্যাম্পাসে।  ঘটনাটি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অনেকেই। প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুলও। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি লিখেছেন- ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে গতকাল একটা ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। স্বামীকে আবাসিক হলে আটকে রেখে স্ত্রীকে হলসংলগ্ন জঙ্গলে নিয়ে ধর্ষণ করেছে এক ছাত্রলীগ নেতা ও তার অনুসারী। বছর কয়েক আগে সিলেটের এমসি কলেজেও এমন ঘটনা ঘটেছিল। তাদের ধর্ষণ করার অধিকার কি আমরা মেনে নিয়েছি? না হলে বিচার হয় না কেন এই ধর্ষকদের? কেন তাদের বিরুদ্ধে প্রবলভাবে রুখে দাঁড়ান না শিক্ষক-ছাত্ররা? কেন মানবাধিকার আর নারী অধিকার কর্মীরা চুপ থাকেন বা প্রতিবাদ করেন বিচ্ছিন্ন বাতাস তুলে, যাতে ভিত নড়ে না ধর্ষণকারীদের? শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হল সংলগ্ন জঙ্গলে গণধর্ষণের ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতাসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যাদের পরে আদালতের মাধ্যমে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।  রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাবেয়া বেগমের আদালত তাদের এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে নেওয়া আসামিরা হলো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, ৪৬তম ব্যাচের মীর মশাররফ হোসেন হল ছাত্রলীগের সভাপতি পদপ্রার্থী সাগর সিদ্দিকী, ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সাব্বির হাসান সাগর ও ৪৫তম ব্যাচের হাসানুজ্জামান। এর আগে সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অবস) আব্দুল্লাহিল কাফি বলেন, ভুক্তভোগীর স্বামী রাতেই বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় মোস্তাফিজ ও মামুনুর রশীদকে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া বাকি চারজনের বিরুদ্ধে মারধর ও আসামিদের পালাতে সহায়তা করার অভিযোগ আনা হয়েছে। জাবিতে ধর্ষণের ঘটনার বিচার দাবিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ এখনও পলাতক রয়েছে অপর দুই আসামি। তারা হলেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী মুরাদ ও ভুক্তভোগীর স্বামীর পূর্বপরিচিত মামুনুর রশিদ। মামুনুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বহিরাগত। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
০৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

নাজিরপুরে নৌকার কর্মীকে গণধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে মামলা
পিরোজপুরের নাজিরপুরে এক নৌকার কর্মীকে (৩০) গণধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে। শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) নাজিরপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী হিন্দু সম্প্রদায়ের এক গৃহবধূ। ঘটনাটি  গতকাল শুক্রবার রাতে উপজেলার দীর্ঘা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব ছৈলাবুনিয়া গ্রামের নাগাসি পাড়া এলাকায়। ভুক্তভোগী ওই নারীর বাড়ি ওই একই এলাকায়। ভুক্তভোগী ওই নারী জানান, ওই দিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে তিনি নৌকার প্রার্থী শ.ম রেজাউলের নির্বাচনী প্রচার শেষে বাড়ি ফেরার সময় একই এলাকার নাগাসিপাড়ার কদম আলীর বাড়ির সামনে থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী আউয়ালের (ঈগল প্রতীক) কর্মী দক্ষিণ ছৈলাবুনিয়া গ্রামের উজ্জল হালদার (৩৮) ও একই এলাকার পংকজ বেপারীসহ ৪ থেকে ৫ জন তাকে জোড় করে পাশের একটি বাগানে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে।এ সময় ওই নারীর চিৎকারে এক যুবক এগিয়ে এলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়। বিষয়টি কারও কাছে বললে অভিযুক্তরা তার স্বামীসহ পরিবারের সকলকে হত্যার হুমকি দেন। অভিযুক্তরা পিরোজপুর-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগল প্রতীকের কর্মী। নাজিরপুর থানার ওসি মো. শাহ আলম হাওলাদার  বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে শনিবার দুপুরে অভিযোগ দায়ের করেছেন। উল্লেখ্য, পিরোজপুর-১ (নাজিরপুর, পিরোজপুর সদর ও ইন্দুরকানী) আসনে নৌকা প্রতীকের এমপি প্রার্থী মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ.ম রেজাউল করিম এবং তার প্রতিদ্বন্দ্বী  স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক এমপি একেএমএ আউয়াল।
৩০ ডিসেম্বর, ২০২৩

বাড়ির সবাইকে অচেতন করে কিশোরীকে গণধর্ষণ
ঢাকার অদূরে সাভারে মধ্যরাতে একটি বাড়িতে গ্রিল কেটে প্রবেশ করে বাড়ির সবাইকে অচেতন করে এক কিশোরীর হাত-পা বেঁধে ও মুখে রুমাল গুঁজে জোরপূর্বক গণধর্ষণ করেছে একদল দুর্বৃত্ত। এ সময় তারা ঘরে থাকা স্বর্ণলংকার, নগদ টাকা ও মোবাইল ফোনও লুট করে নিয়ে যায়। গত ২১ আগস্ট রাত দেড়টার দিকে সাভারের ভাকুর্তা ইউনিয়নের লুটের চর উত্তরপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) গভীর রাতে সাভার মডেল থানায় এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার। ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, স্থানীয় এক সাবেক ইউপি সদস্যের সাথে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরেই পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। ভুক্তভোগী ওই কিশোরীকে রাজধানীর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে এবং তার বাবা-মাকে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ভুক্তভোগী ওই কিশোরীর বড় ভাই সাংবাদিকদের বলেন, আমি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ শেষ করে চাকরির সন্ধান করছি। বাবা একটি ব্যাংকের প্রাইভেটকার চালান, মা গৃহিণী। আর ছোট বোন স্কুলে পড়ে। ওইদিন রাতে আব্বু, আম্মু ও আমার ছোট বোন আগেই রাতের খাবার খায়। পরে খাওয়াদাওয়া করি আমি। ভাত খাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে আম্মু আমারে বলছে, তোর আব্বুর যেন কেমন করছে? আমার কেন জানি মনে হচ্ছে, খাবারে কিছু একটা মেশানো হইছে। পরে আমার বাবার রুমে গিয়ে অনেক নাড়াচরা করলেও উনি সাড়া দেয়নি। এরপর আমার ছোট বোনের রুমে গিয়ে দেখি, তখন ও ফোনের হেডফোন কানে লাগিয়ে ভিডিও দেখতেছে। তখন আমার বোনের ঠোঁটটা একটু ভারভার ও চোখ ঘুমঘুম মনে হচ্ছিল। তারপর আমার রুমে গিয়ে মোবাইলে কথা বলতে বলতে কোনো এক সময় ঘুমিয়ে যাই।  সকালে ওঠে বোনের কাছ থেকে জানতে পারি, ওরা তিনজন গ্রিলকেটে ঘরে প্রবেশ করে। দুইজন ছিল মধ্যবয়স্ক। তরুণ বয়সের একজন আমার বোনের বেডরুমের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ছিল। আর দুইজন ওর হাত-পা বেঁধে মুখে রুমাল গুঁজে ধর্ষণ করেছে। এ সময় আলমারি থেকে ২০ হাজার, আমার মানিব্যাগ থেকে ৫ হাজার, প্রায় দেড় ভরি স্বর্ণালংকার আর দুটি মোবাইল ফোনে নিয়ে যায় তারা। পরিকল্পিতভাবে তাদের সাথে এই ঘটনা সংঘটিত করা হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘৪ বছর আগে সাড়ে চারকাঠা জমি কিনে একতলা বাড়ি করে আমার বাবা। আমার আব্বু প্রাইভেটকার চালিয়ে অনেক কষ্টে এই বাড়িটা করেছে। কিন্তু আধাকাঠা জমি আমাদের পাশের জায়গার মালিক হাবিবুল্লাহ দখল করে নেয়। এরপর বিভিন্ন সময় রাতের বেলা আমাদের নানাভাবে উৎপাত করা হতো। এ ঘটনায় আমরা মামলা করার পর থেকে তারা আমাদের ওপর ক্ষুব্ধ। এসব ঘটনা থেকে আমার মনে হচ্ছে, আমাদের পরিবারের ওপর এমন নির্যাতন পরিকল্পিতভাবেই করা হয়েছে।’ এ বিষয়ে সাবেক ইউপি সদস্য অভিযুক্ত হাবিবুল্লাহ হাবিব কালবেলাকে জানান, আমাদের বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। সাভার মডেল থানার ওসি দীপক চন্দ্র সাহা কালবেলাকে জানান, সাভারের ভাকুর্তায় একটি পরিবারের সবাইকে অচেতন করে লুট ও এক কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। 
২৩ আগস্ট, ২০২৩

এমসি কলেজের সেই গণধর্ষণ ‘মামলার বিচার বন্ধ’
সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে গৃহবধূ গণধর্ষণ ও চাঁদাবাজির ঘটনায় করা পৃথক দুটি মামলা ছয় মাসেরও বেশি সময় আগে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। কিন্তু সেগুলো এখনো দ্রুত বিচারে স্থানান্তর করা হয়নি। এ সংক্রান্ত কোনো গেজেটও জারি করেনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ফলে মামলা দুটির বিচার সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বন্ধ হয়ে আছে। আইনজীবীরা বলছেন, এতে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার বিচার দীর্ঘসূত্রতার দিকে যাচ্ছে। সেই সুযোগে আসামিরা জামিনে বের হয়ে যেতে পারেন। বাদীপক্ষের ন্যায়বিচার প্রাপ্তি নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা। জানা যায়, ২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় এমসি কলেজে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে গেলে ওই গৃহবধূকে ছাত্রাবাসে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরদিন গৃহবধূর স্বামী ধর্ষণ ও চাঁদাবাজির অভিযোগে পৃথক মামলা করেন। ওই বছরের ৩ ডিসেম্বর সিলেটের মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে ৮ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য। পরে ২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি গণধর্ষণ মামলায় অভিযোগ গঠন করে সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। চাঞ্চল্যকর এ মামলায় ৫১ জনকে সাক্ষী হিসেবে রাখা হয়। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয় তাদের মধ্যে সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান ওরফে রনি, তারেকুল ইসলাম ওরফে তারেক, অর্জুন লস্কর, আইনুদ্দিন ওরফে আইনুল ও মিসবাউল ইসলাম ওরফে রাজনকে দল বেঁধে ধর্ষণের জন্য অভিযুক্ত করা হয়। আসামি রবিউল ও মাহফুজুরকে ধর্ষণে সহায়তা করতে অভিযুক্ত করা হয়। আট আসামিই বর্তমানে কারাগারে আছেন। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়টির ছাত্রলীগের কর্মী। অন্যদিকে এ ঘটনায় করা চাঁদাবাজি ও অস্ত্র আইনের মামলাটি সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচার চলছিল। এরপর ন্যায়বিচারের স্বার্থে বাদীপক্ষের করা এক আবেদনে ২০২১ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট এ ঘটনায় করা মামলা দুটির বিচার কার্যক্রম একসঙ্গে সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে করার আদেশ দেন। পরে ২০২১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি মামলা দুটি চাঞ্চল্যকর ও লোমহর্ষক বিবেচনায় নিয়ে তা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর সুপারিশ করা হয়। মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য সিলেটের জেলা প্রশাসকের (জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের) নেতৃত্বে গঠিত মনিটরিং কমিটি এ সিদ্ধান্ত নেয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কার্যালয় থেকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে চিঠিও লেখা হয়। কিন্তু ওই সিদ্ধান্তের কোনো বাস্তবায়ন হয়নি। এমনই এক পরিস্থিতিতে বাদী পক্ষ মামলা দুটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরের নির্দেশনা চেয়ে ২০২২ সালের ১ আগস্ট হাইকোর্টে আবেদন করেন। গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর হাইকোর্ট মামলা দুটি অনতিবিলম্বে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেন। আইনজীবী ব্যারিস্টার এম আব্দুল কাইয়ুম কালবেলাকে বলেন, হাইকোর্ট অনতিবিলম্বে মামলা দুটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করতে বলেছেন। ফলে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দুটির আর বিচার হচ্ছে না। সব কার্যক্রম দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ হয়ে আছে। তিনি বলেন, সরকার পক্ষ থেকে মামলা দুটি দ্রুত বিচারে পাঠানোর ব্যবস্থা গ্রহণ না করা আদালত অবমাননার শামিল। প্রয়োজনে আবারও হাইকোর্টের হস্তক্ষেপ চাওয়া হবে। বাদীপক্ষের আইনজীবী সিরাজুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, সিলেটের একটি মাত্র নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ৫ হাজারের ওপরে মামলা বিচারাধীন। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই মূলত মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর আবেদন করা হয়। কিন্তু এখনো সে অনুযায়ী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে কোনো গেজেট জারি হয়নি। ফলে মামলা দুটি এখনো নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিচার বন্ধ অবস্থায় পড়ে আছে।
১৭ জুন, ২০২৩
X