নতুন ভবনে নতুন আঙ্গিকে গণহত্যা জাদুঘর
নতুন ভবনে নতুন আঙ্গিকে যাত্রা শুরু করছে গণহত্যা জাদুঘর। জাদুঘরের আর্কাইভে আছে মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত প্রায় ৯ হাজার ছবি ও দুষ্প্রাপ্য পত্রপত্রিকা। শুক্রবার (১৭ মে) খুলনায় গণহত্যা জাদুঘরের দশ বছর পূর্তি উপলক্ষে গণহত্যা জাদুঘরের এক দশক শিরোনামে দিনব্যাপী আলোচনা সভা ও মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১০টায় প্রথম পর্বে খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সেমিনার উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনে সভাপতিত্ব করেন গণহত্যা জাদুঘরের সভাপতি অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন।  প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজাহার খান বলেন, ‘আমাদের নতুন প্রজন্মকে জানতে হবে আমাদের শেকড়কে। আমাদের শেকড় হচ্ছে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস।’  তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিবসে গণহত্যা জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করায় জাদুঘরের কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ফিরে আসায় আমরা আমাদের স্বাধীনতা আবার নতুন করে ফিরে পেয়েছি’। সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, ‘গণতান্ত্রিক সমাজে ঘাতকদের কখনো রাজনীতি করার অধিকার থাকতে নেই। যারা পাকিস্তানের রাজনীতি করতে চায়, তাদের রাজনীতি করার বিরুদ্ধে আমি। বাংলাদেশে কখনো অন্য রাষ্ট্রের রাজনীতি চলতে পারে না’।  মোট তিনটি পর্বে এই দিনব্যাপী আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১১টায় শুরু হয় অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্ব। দ্বিতীয় পর্বের একাডেমিক সেশনে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএচডি গবেষক পুনম মুখার্জি এবং পশ্চিমবঙ্গের কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. সাগর তরঙ্গ মন্ডল। তাদের প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন গণহত্যা জাদুঘরের ট্রাস্টি বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল সাজ্জাদ আলী জহির বীরপ্রতীক এবং নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শরিফ উদ্দিন আহমদ। এই অধিবেশনের সভাপতিত্ব করেন গণহত্যা জাদুঘরের ট্রাস্টি এবং বাংলাদেশের প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ ও আর্কাইভিস্ট ড. মাহবুবর রহমান। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত দশম শহীদ স্মৃতি স্মারক বক্তৃতা প্রদান করেন গণহত্যা জাদুঘরের ট্রাস্টি কবি তারিক সুজাত। কবি তারিক সুজাত ‘যে জাদুঘর জীবনের কথা বলে’ শিরোনামে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, ‘গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘরকে প্রচলিত সংজ্ঞায় শুধু হিসেবে ভাবলে ভুল হবে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এই জাদুঘরকে স্রোতের বিপরীতে সাঁতরাতে হয়েছে’।   অনুষ্ঠানে গণহত্যা জাদুঘরের এক দশক পূর্তি উপলক্ষে  আয়োজিত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার পুরস্কার প্রদান করা হয়।
১৮ মে, ২০২৪

‘যুদ্ধাপরাধীদের চলমান বিচার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়েরও প্রশংসা অর্জন করেছে’
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের চলমান বিচার আজ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়েরও প্রশংসা অর্জন করেছে। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের পর বঙ্গবন্ধু সরকার একাত্তরের গণহত্যাকারী, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধী ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেছিলেন। কিন্তু পঁচাত্তরের পর অবৈধ সামরিক সরকার এ বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতক দালালদের দলগুলোকে রাজনীতিতে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেছিল। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করে এবং শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায়ও কার্যকর করে। বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের চলমান বিচার আজ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়েরও প্রশংসা অর্জন করেছে। শনিবার (১৮ মে) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ধর্মনিরপেক্ষ মানবিক সমাজ গড়ে তুলুন- এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ৮ম জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি এ কথা বলেন। রাষ্ট্রপতি বলেন, আমি ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সক্রিয় উপদেষ্টা ছিলাম। আমার বুকের মধ্যে লালিত স্বাধীনতার চেতনা থেকে কখনো বিচ্যুত হতে পারব না ।    তিনি আরও বলেন, নির্মূল কমিটির ৮ম জাতীয় সম্মেলনে আমি অনেক প্রতিভাবান তরুণ মুখ দেখতে পাচ্ছি। তরুণদের প্রতি আমি আহ্বান জানাব, আপনারা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পড়ুন, বঙ্গবন্ধুর জীবনী ও আদর্শ সম্পর্কে জানুন। আপনাদের মননে, বোধে, জীবনাচরণে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে লালন করুন। ডিজিটাল মাধ্যমকে আপনারা ইতিবাচকভাবে ব্যবহার করুন। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, বঙ্গবন্ধুর দর্শন, ধর্মনিরপেক্ষতা ও অসাম্প্রদায়িকতার বোধকে আপনারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিন। বিশ্বের কাছে তুলে ধরুন বাঙালির গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসকে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সহনশীল ও মানবিক সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আগামী দিনগুলোতেও ‘একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি’র অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে এ প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি। বিচারপতি শামসুদ্দিন মানিক বলেন, মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী সরকারের সহযোগিতা প্রদানের জন্য সংস্থাটি কাজ করছে। একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি যে দাবি তুলেছিল, আমাদের রাষ্ট্রপতি তার নেতৃত্বে কমিশন গঠন করেছিলেন। নির্মূল কমিটি সে তদন্তে সহযোগিতা করেছিল। অনুষ্ঠানের শুরুতে রাষ্ট্রপতিকে উত্তরীয় পরিয়ে দেন শহীদ সন্তান শমী কায়সার ও আসিফ মুনীর। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন শহীদ সন্তান অধ্যাপক ডা. নুজহাত চৌধুরী।
১৮ মে, ২০২৪

নানা আয়োজনে গজারিয়া গণহত্যা দিবস পালিত
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় ১৯৭১ সালে পাকিস্তান সেনাদের হাতে গণহত্যার শিকার শহীদদের স্মরণে সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে।  বৃহস্পতিবার (৯ মে) বিকেল সাড়ে ৫টায় দিবসটি উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে গজারিয়া ইউনিয়নে গণকবরে শহীদ পরিবারে সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে শহীদদের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কোহিনুর আক্তার। পরে স্থানীয় মসজিদের ইমাম শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া করেন। গজারিয়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল খালেক আলো সেদিনের স্মৃতিচারণা করে বলেন, তখন আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের রসায়ন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। যুদ্ধ শুরু হলে দেশকে রক্ষার স্বপ্ন গ্রামের বাড়ি গজারিয়া সদরের গোসারচরে চলে যাই। পরে ত্রিপুরা গিয়ে যুদ্ধের প্রশিক্ষণ গ্রামে ফিরে ‘আলোর দিশারী’ নামে একটি স্কুল গড়ে তুলি যেখানে ২০০ মুক্তিযোদ্ধাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এর মধ্যে খোকা চৌধুরী, শামস চৌধুরী, গফুর চৌধুরী, মোজাফফর আলীসহ আরও কয়েকজন রাজাকার মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করার খবর পাকিস্তানি ক্যাম্পে পৌঁছে দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ৯ মে আমাদের গ্রামে হামলা চালায় পাকিস্তানি সেনারা, খুঁজতে থাকে আমাকে। এ বীর মুক্তিযোদ্ধা জানান, হামলায় গজারিয়া, নয়ানগর এবং গোসাইরচর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এই এলাকাগুলোর প্রতিটি বাড়িতেই সেদিন অন্তত একজনের মৃত্যু হয়েছিল। ওই রাতে বাশগাঁও, সোনাইরকান্দি, নাগেরচর, ফুলদী, কালিয়াপুর ও বেলতলীর মতো এলাকায়ও হামলা হয়। তিনি বলেন, ওই হামলায় আমি আমার ছোট ভাই মোয়াজ্জেমকে হারিয়েছি...আমার পাঁচ চাচাতো ভাই ও চাচা সেই হামলায় মারা গেছে। এ ছাড়াও, প্রায় ১০ জন প্রতিবেশী, যারা আমাদের দূরসম্পর্কের আত্মীয় ছিল, তাদেরও হত্যা করা হয়। এ সময় আমার মা একটি কথাই বললেন, ‘তুই যুদ্ধে চলে যা। যুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করতে হবে। প্রয়োজন হলে আমিও যুদ্ধে যাব’। এরপর ১১ মে আমি গ্রামের অন্যদের সঙ্গে যুদ্ধে যোগ দেই। এক সময় আমাকে গজারিয়ার মুক্তিযোদ্ধাদের কমান্ডার করা হয়। আলো বলেন, ১৪ আগস্ট ছিল পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস, তাই চূড়ান্ত হামলার জন্য আমরা এই দিনটিকে বেছে নিয়েছিলাম। এরপর থেকে তাদের ওপর বিরতিহীন হামলা করেছে মুক্তিযোদ্ধারা। পরে ১০ ডিসেম্বর বিকেলে মেঘনা নদীর পাশে তৎকালীন গজারিয়া থানায় পরাজয় স্বীকার করে ৬০ জনেরও বেশি সেনা সদস্য আত্মসমর্পণ করে। টানা ৮ মাস যুদ্ধ করে শত্রুমুক্ত হয় গজারিয়া। তবে গজারিয়ায় যে গণহত্যা চালিয়েছিল পাকিস্তানি বাহিনী, তার ক্ষত আজও শুকায়নি। তাই প্রতিবছর ৯ মে গজারিয়াবাসী এ দিনটি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে। পালন করে নানা কর্মসূচি। প্রকৃতপক্ষে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে দেশের যেসব অঞ্চলে গণহত্যা সংঘটিত হয়, এর মধ্যে গজারিয়া গণহত্যা অন্যতম। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য যে, স্বাধীনতার ৫৪ বছর হতে চলল, রাজধানী ঢাকা থেকে মাত্র ৩৮ কিলোমিটার অদূরে পাকিস্তানি বাহনীর নৃশংস গণহত্যার সাক্ষী সেই বধ্যভূমিগুলো আজও যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা হয়নি। নেওয়া হয়নি তেমন কোনো সরকারি উদ্যোগও।
০৯ মে, ২০২৪

গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবিতে ঢাবিতে বিক্ষোভ
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যা বন্ধ ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের দাবিসহ তিন দফা দাবিতে সংহতি সমাবেশ ও মানব পতাকা প্রদর্শনের আয়োজন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা।  বৃহস্পতিবার (৯ মে) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘মার্চ ফর প্যালেস্টাইন’ ব্যানারে শিক্ষার্থীরা এই আয়োজন করেন।  মানব পতাকা প্রদর্শনের পাশাপাশি সমাবেশে তারা ৩টি দাবি জানান। সেগুলো হলো- গাজায় গণহত্যা বন্ধ করা; বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দমননীতি বন্ধ করা এবং ইসরায়েলে সামরিক সহায়তা বন্ধ করা। এসময় সমাবেশে যুক্ত হয়ে বক্তব্য প্রদান করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনে আজকে যা হচ্ছে তা মানব সভ্যতার ইতিহাসে সবচেয়ে বর্বর ঘটনা। গাজায় ইতোমধ্যে ইসরায়েলি বাহিনীর আক্রমণে ৬৭ শতাংশ বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যা একটি নির্দিষ্ট এলাকায় সবচেয়ে বড় ধ্বংসযজ্ঞের রেকর্ড ভেঙেও অনেক উপরে চলে গেছে। ৩৫ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করেছে ইসরায়েলিরা। যার মধ্যে ৭০ শতাংশ হচ্ছে নারী-শিশু এবং ৮০ শতাংশ সাধারণ নাগরিক। যাদের সঙ্গে গাজা যুদ্ধের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।  তিনি আরও বলেন, গতকাল ইসরায়েলি বাহিনী কর্তৃক মিসর সীমান্তে অবস্থিত রাফা দখলের মাধ্যমে আরও খারাপ অবস্থায় পড়বে গাজাবাসী। রাফা দখলের মাধ্যমে ইসরায়েলীরা মিসর-ইসরায়েলের যে ডেভিড চুক্তি সেটি ভঙ্গ করেছে। এটিই একমাত্র সীমানা যেখান দিয়ে আহত ফিলিস্তিনি নাগরিকদের জন্য এইড আসতো, ক্ষুধার্ত লোকদের জন্য খাবার আসত। আজ সেই রাস্তাও বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল। আমরা আশা করবো ফিলিস্তিন একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাবে এবং জাতিসংঘের স্থায়ী সদস্য হবে। মানবাধিকারকর্মী শারমিন মুরশিদ বলেন, ইসরায়েলকে সুস্পষ্ট মদদদাতা হল যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিনিদের রক্তে-রন্ধ্রে জমে আছে গণহত্যা ও  দখলদারিত্ব। তারা একটার পর একটা দেশ ও জাতিকে শেষ করে আসছে। ইরাক, লিবিয়া  আফগানিস্তানের মতো দেশকে কতগুলো মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে তারা নিধন করেছে। তাদের হাতে রয়েছে মিডিয়া, তাদের হাতে তথ্যের শক্তি এবং তাদের হাতে রয়েছে অর্থ। আর তারা সেটাকে অপব্যবহার করে প্রতিবার মিথ্যের দোহাই দিয়ে মানুষ খুন করেছে। লেখক ও অ্যাক্টিভিস্ট রাখাল রাহা বলেন, এই আগ্রাসন শুরু হয়েছে ২য় বিশ্বযুদ্ধের পরপরই। তারপর থেকেই নানা চড়াই উতরাই পার করে আজকের এই অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে ফিলিস্তিনকে জাতিগত উচ্ছেদ বা জাতিগত নির্মূলের অবস্থায় নিয়ে গেছে ইসরায়েল। এই উচ্ছেদ আয়োজন অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। এই হামলায় সরাসরি মদদদাতা যুক্তরাষ্ট্রকে এটার প্রতি সমর্থন থেকে ফিরে আসতে হবে।  ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক ও গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির আহ্বায়ক আখতার হোসেন বলেন, আজকের এই আয়োজনে আমরা ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী জনতার সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছি। বিশ্ব পরিমণ্ডলে আমাদের কয়েকটি দাবি থাকবে। তা হল- গাজায় গণহত্যা বন্ধ করতে করতে হবে; আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অত্যাচার ও দমননীতি বন্ধ করতে হবে এবং ইসরায়েলকে সব প্রকার সামরিক সহায়তা বন্ধ করতে হবে। উল্লেখ্য, সমাবেশ শেষে ফিলিস্তিনের একটি মানব পতাকা প্রদর্শনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনের আপামর জনতার সঙ্গে সংহতি প্রদর্শন এবং নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।  
০৯ মে, ২০২৪

গজারিয়া গণহত্যা দিবস আজ
আজ ৯ মে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়াবাসীর জন্য এক শোকাবহ দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে রাজাকারদের সহায়তায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী গজারিয়ার মেঘনার শাখা নদী ফুলদী তীরের গোসাইরচর, নয়ানগর, বালুরচর, বাঁশগাঁও জেলেপাড়া, ফুলদী, নাগের চর, কলসেরকান্দি, দড়িকান্দি, ইসমানিরচর ও গজারিয়া এই ১০ গ্রামে ৩৬০ জন নিরীহ নিরপরাধ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করে। এই গণহত্যায় ঘরে ঘরে কান্নার রোল পড়ে যায়।  গণহত্যা থেকে বেঁচে ফেরা লোকজনের বর্ণনা থেকে জানা যায়, ১৯৭১ সালের মধ্য এপ্রিলের ঘটনা। আব্দুল খালেক আলো নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক যুবক গোসাইচর গ্রামে ‘আলোর দিশারী’ নামে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। সেই স্কুলে উপজেলার প্রায় ২০০ তরুণকে নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা ট্রেনিং ক্যাম্প গড়ে তোলেন। স্থানীয় রাজাকারদের মাধ্যমে এই ট্রেনিং ক্যাম্পের খবর পেয়ে যায় পাক হানাদার বাহিনী।  ৯ মে নীরব-নিস্তব্ধ রাতের মৌনতা শেষে ভোরের সূর্য ওঠার সময় পাকিস্তানি বাহিনীর মর্টার ও কামানের আওয়াজ এলাকাবাসীকে আতঙ্কিত করে তোলে। ফুলদী নদী দিয়ে স্পিডবোটে গজারিয়ার ভবেরচর ইউনিয়নের ১০টি গ্রামে হানা দেয় তারা। রাজাকাররাই তাদের পথ দেখিয়ে গজারিয়া নিয়ে এসেছিল। সেদিন সকাল ৬টার মধ্যেই সোনালি মার্কেট এলাকায় রাস্তার ওপর সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে বুদ্ধিজীবী, ছাত্র, কৃষক, মুক্তিযোদ্ধাসহ ১১০ জনকে ব্রাশফায়ারে হত্যা করে পাকিস্তানিরা। সন্ধ্যা পর্যন্ত আক্রান্ত গ্রামগুলোকে থেকে খুঁজে খুঁজে হত্যা করা হয় মোট ৩৬০ জনকে। সেদিন কাফনের কাপড়ের অভাবে কলাপাতা আর পুরনো কাপড় পেঁচিয়ে নিহত স্বজনদের ১০টি গণকবরে দাফন করেছিলেন গ্রামবাসী।   তবে পাকিস্তানি বাহিনী ওই দিন শুধু নিরীহ নিরস্ত্র মানুষদের হত্যা করে ক্ষান্ত হয়নি। সমানতালে ধর্ষণ, নির্যাতন, অগ্নিসংযোগসহ গ্রামবাসীদের অর্থ-সম্পদ লুণ্ঠন। গজারিয়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল খালেক আলো সেদিনের স্মৃতিচারণা করে বলেন, তখন আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের রসায়ন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। যুদ্ধ শুরু হলে দেশকে রক্ষার স্বপ্ন গ্রামের বাড়ি গজারিয়া সদরের গোসারচরে চলে যাই। পরে ত্রিপুরা গিয়ে যুদ্ধের প্রশিক্ষণ গ্রামে ফিরে ‘আলোর দিশারী’ নামে একটি স্কুল গড়ে তুলি যেখানে ২০০ মুক্তিযোদ্ধাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এরইমধ্যে খোকা চৌধুরী, শামস চৌধুরী, গফুর চৌধুরী, মোজাফফর আলীসহ আরও কয়েকজন রাজাকার মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করার খবর পাকিস্তানি ক্যাম্পে পৌঁছে দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ৯ মে আমাদের গ্রামে হামলা চালায় পাকিস্তানি সেনারা, খুঁজতে থাকে আমাকে। এই বীর মুক্তিযোদ্ধা জানান, হামলায় গজারিয়া, নয়ানগর এবং গোসাইরচর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এই এলাকাগুলোর প্রতিটি বাড়িতেই সেদিন অন্তত একজনের মৃত্যু হয়েছিল। ওই রাতে বাশগাঁও, সোনাইরকান্দি, নাগেরচর, ফুলদী, কালিয়াপুর ও বেলতলীর মতো এলাকায়ও হামলা হয়। তিনি বলেন, ওই হামলায় আমি আমার ছোট ভাই মোয়াজ্জেমকে হারিয়েছি...আমার পাঁচ চাচাতো ভাই ও চাচা সেই হামলায় মারা গেছে। এছাড়াও, প্রায় ১০ জন প্রতিবেশী, যারা আমাদের দূরসম্পর্কের আত্মীয় ছিল, তাদেরও হত্যা করা হয়। এ সময় আমার মা একটি কথাই বললেন, ‘তুই যুদ্ধে চলে যা। যুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করতে হবে। প্রয়োজন হলে আমিও যুদ্ধে যাব’। এরপর ১১ মে আমি গ্রামের অন্যদের সঙ্গে যুদ্ধে যোগ দেই। এক সময় আমাকে গজারিয়ার মুক্তিযোদ্ধাদের কমান্ডার করা হয়। আলো বলেন, ১৪ আগস্ট ছিল পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস, তাই চূড়ান্ত হামলার জন্য আমরা এই দিনটিকে বেছে নিয়েছিলাম। এরপর থেকে তাদের ওপর বিরতিহীন হামলা করেছে মুক্তিযোদ্ধারা। পরে ১০ ডিসেম্বর বিকেলে মেঘনা নদীর পাশে তৎকালীন গজারিয়া থানায় পরাজয় স্বীকার করে ৬০ জনেরও বেশি সেনা সদস্য আত্মসমর্পণ করে। টানা ৮ মাস যুদ্ধ করে শত্রুমুক্ত হয় গজারিয়া। তবে গজারিয়ায় যে গণহত্যা চালিয়েছিল পাকিস্তানি বাহিনী, তার ক্ষত আজও শুকায়নি। তাই প্রতিবছর ৯ মে গজারিয়াবাসী এ দিনটি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে। পালন করে নানা কর্মসূচি। প্রকৃতপক্ষে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে দেশের যেসব অঞ্চলে গণহত্যা সংঘটিত হয়, এর মধ্যে গজারিয়া গণহত্যা অন্যতম। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য যে, স্বাধীনতার ৫৪ বছর হতে চলল, রাজধানী ঢাকা থেকে মাত্র ৩৮ কিলোমিটার অদূরে পাকিস্তানি বাহনীর নৃশংস গণহত্যার সাক্ষী সেই বধ্যভূমিগুলো আজও যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা হয়নি। নেওয়া হয়নি তেমন কোনো সরকারি উদ্যোগও। 
০৯ মে, ২০২৪

রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলায় ওআইসির সহযোগিতা চায় বাংলাদেশ
রোহিঙ্গা গণহত্যার বিচারের দাবিতে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গাম্বিয়ার করা মামলায় আইনি ও আর্থিক সহযোগিতা করতে ওআইসি সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। গাম্বিয়ার স্থানীয় সময় রোববার বানজুলে ১৫তম ওআইসি শীর্ষ সম্মেলনের শেষ দিনের অধিবেশনে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের দলনেতা হিসেবে তিনি এ আহ্বান জানান। অধিবেশনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে রোহিঙ্গাদের আইনি অধিকার প্রতিষ্ঠার বিষয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মামলা করায় গাম্বিয়াকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, আইন ও আর্থিক বিষয়ে ওআইসি সদস্য দেশগুলোর সহযোগিতা মামলার দ্রুত নিষ্পত্তিতে সহায়ক হবে। সভায় সৌদি আরব, তুরস্ক, মালয়েশিয়া, ফিলিস্তিনসহ উপস্থিত সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতিনিধিরা রোহিঙ্গা সমস্যার দ্রুত ও স্থায়ী সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এ সময় গাম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মামাদৌ তাঙ্গারা মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। সম্মেলন ওআইসি মহাসচিব হিসেইন ব্রাহিম তাহা, গাম্বিয়ার বিচারবিষয়ক মন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেল দাওদা এ জালও ওআইসি নেতাদের সামনে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার অগ্রগতি তুলে ধরেন।
০৭ মে, ২০২৪

পাবনায় ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধ ও স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে ছাত্রলীগের পদযাত্রা
ফিলিস্তিনের গণহত্যা বন্ধ ও স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে পাবনায় জেলা ছাত্রলীগের পদযাত্রা ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (৬ মে) সকাল ১১টার দিকে সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের প্রধান ফটকের সামনে থেকে ছাত্রলীগের উদ্যোগে পদযাত্রাটি বের হয়। আলিয়া মাদ্রাসা, বড় ব্রিজ ও শহরের ট্রাফিক মোড় ঘুরে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয় পদযাত্রা। পরে সমাবেশে বক্তব্য দেন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান সবুজ, সাধারণ সম্পাদক মীর রাব্বিউল ইসলাম সীমান্ত প্রমুখ। বক্তব্যে অবিলম্বে ফিলিস্তিনের গণহত্যা বন্ধ ও স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জোরালো দাবি জানান। এদিকে বগুড়ায় স্বাধীন ফিলিস্তিনের দাবিতে পদযাত্রা ও ছাত্র সমাবেশ করেছে ছাত্রলীগ। স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি এবং ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্যাতনের বিরুদ্ধে এ কর্মসূচি পালন করে সংগঠনটি। সোমবার দুপুর ১২টার দিকে সরকারি আজিজুল হক কলেজে ও শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে (শজিমেক) ছাত্রলীগের আয়োজনে পদযাত্রা ও ছাত্র সমাবেশ আয়োজিত হয়। সরকারি আজিজুল হক কলেজে ছাত্রলীগ স্ট্যান্ড থেকে সংগঠনটির অর্ধশত নেতাকর্মী পদযাত্রা শুরু করে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ শেষে বটতলায় গিয়ে সমাবেশ করে। ছাত্রলীগ নেতা তন্ময় সাহা, জিহাদ, আরমান হোসেন, সানোয়ার ও রুদ্র বক্তব্য রাখেন। সমাবেশে ছাত্রলীগের অর্ধশত নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তারা মিছিলে ফ্রি প্যালেস্টাইন-স্টপ জেনোসাইড, স্বৈরাচার নিপাত যাক-ফিলিস্তিন মুক্তি পাক, উই ওয়ান্ট জাস্টিস-জয় জয় ফিলিস্তিন, ফ্রম দ্য রিভার টু দ্য সি-প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন। একই সময়ে শজিমেক ক্যাম্পাসে ছাত্র হোস্টেলের সামনে থেকে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা পদযাত্র শুরু করেন। ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ শেষে তারা একাডেমিক ভবনের সামনে গিয়ে সমাবেশের আয়োজন করেন। কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান, সহসভাপতি অর্ঘ্য রায় ও ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. তৌফিক হাসান নিশাত বক্তব্য রাখেন। তারা ইসরায়ীলি নানা নীপিড়নের কথা তুলে ধরে স্বাধীন ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠার দাবি জানান। 
০৬ মে, ২০২৪

রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলায় সহযোগিতার জন্য ওআইসি সদস্যদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ রোহিঙ্গা গণহত্যার বিচারের দাবিতে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গাম্বিয়ার দায়ের করা মামলায় আইনি ও আর্থিক সহযোগিতা প্রদানের জন্য ওআইসি সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহবান জানিয়েছেন।  সোমবার (৬ মে) গাম্বিয়ার বানজুলে ১৫তম ওআইসি শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলনেতা হিসেবে তিনি এ আহ্বান জানান।  সম্মেলনের দ্বিতীয় ও শেষ দিনের অধিবেশনে পশ্চিম আফ্রিকার স্থানীয় সময় রোববার অপরাহ্নে ওআইসি মহাসচিব হিসেইন ব্রাহিম তাহার উপস্থিতিতে গাম্বিয়ার বিচারবিষয়কমন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেল দাওদা এ জালও ওআইসি নেতাদের সামনে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার অগ্রগতি তুলে ধরেন।  অধিবেশনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে রোহিঙ্গাদের আইনি অধিকার প্রতিষ্ঠার বিষয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মামলা করায় গাম্বিয়াকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, আইন ও আর্থিক বিষয়ে ওআইসি সদস্য দেশগুলোর সহযোগিতা মামলার দ্রুত নিষ্পত্তিতে সহায়ক হবে।  সভায় সৌদি আরব, তুরস্ক, মালয়েশিয়া, প্যালেস্টাইনসহ উপস্থিত সদস্য রাষ্ট্রসমূহের প্রতিনিধিরা রোহিঙ্গা সমস্যার দ্রুত ও স্থায়ী সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এ সময় গাম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মামাদৌ তাঙ্গারা মিয়ানমার হতে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় প্রদানের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
০৬ মে, ২০২৪

রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার দ্রুত নিষ্পত্তিতে আশাবাদী বাংলাদেশ-গাম্বিয়া
রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার দ্রুত নিষ্পত্তিতে আশাবাদী বাংলাদেশ ও গাম্বিয়া। গাম্বিয়ার বানজুলে ২ ও ৩ মে অনুষ্ঠিত ওআইসির ১৫তম শীর্ষ সম্মেলনের প্রাক-প্রস্তুতিমূলক পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করে। সম্মেলনের সাইডলাইনে স্থানীয় সময় শুক্রবার অপরাহ্নে গাম্বিয়ার বিচারবিষয়ক মন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেল দাওদা এ জালও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। গাম্বিয়ার বিচারবিষয়ক মন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেল মিয়ানমার হতে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে মানবিক বিবেচনায় বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। একইসঙ্গে রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলা পরিচালনার জন্য অর্থ সাহায্য প্রদান করার জন্য তিনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। সাক্ষাতকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর রক্ষণাবেক্ষণে বাংলাদেশের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ ও ভবিষ্যৎ প্রতিবন্ধকতাগুলোও তুলে ধরেন। রোহিঙ্গা সমস্যার টেকসই সমাধানের লক্ষ্যে তিনি বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের তাদের নিজভূমি মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন শুরু করার প্রতিও গুরুত্বারোপ করেন। গাম্বিয়ার মন্ত্রী দাওদা এ জালও বৈঠকে রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার বর্তমান চিত্র তুলে ধরেন এবং মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যা মামলার অভিযোগ প্রমাণের আশাবাদ ব্যক্ত করেন। একই সাথে তিনি এ মামলা পরিচালনায় প্রয়োজনের তুলনায় অপর্যাপ্ত ফান্ডের বিষয়টিও তুলে ধরে ওআইসিতে গাম্বিয়া সভাপতি থাকাকালীন সদস্য রাষ্ট্রগুলোর আরও সহযোগিতা পাওয়ায় বিষয়েও আশাপ্রকাশ করেন। প্রেক্ষিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এ মামলা পরিচালনার জন্য বাংলাদেশের পক্ষ হতে প্রয়োজনীয় আইনি সাহায্য ও সাক্ষ্যপ্রমাণ প্রদানের আশ্বাস দেন এবং বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বর্তমান অবস্থা সরোজমিনে দেখার জন্য গাম্বিয়ার মন্ত্রী দাওদা এ জালও'র আগ্রহকে স্বাগত জানান। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২৯ মে অনুষ্ঠিত ওআইসি'র চতুর্দশ শীর্ষ সম্মেলনের প্রাক-প্রস্তুতিমূলক পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনের পাশাপাশি গাম্বিয়ার নেতৃত্বে রোহিঙ্গাবিষয়ক মন্ত্রী পর্যায়ের এডহক সভায় আন্তুর্জাতিক বিচার আদালতে মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে রোহিঙ্গাদের আইনি অধিকার প্রতিষ্ঠার বিষয়ে গাম্বিয়ার নেতৃত্বে মামলা করার বিষয়ে ঐকমত্য হয়। সভায় মামলার উদ্যোগ গ্রহণসহ অন্যান্য আইনি ও আর্থিক সহযোগিতার ব্যাপারে ওআইসি সদস্য দেশগুলো হতে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি পাওয়ার ধারাবাহিকতায় সে বছরই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গাম্বিয়া মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের করে।
০৪ মে, ২০২৪

রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি চায় বাংলাদেশ ও গাম্বিয়া
রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে করা মামলা দ্রুত নিষ্পত্তিতে আশাবাদী বাংলাদেশ ও গাম্বিয়া। স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার গাম্বিয়ার বানজুলে দেশটির বিচারবিষয়ক মন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেল দাউদা এ. জাল্লোর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। সেসময় দুই মন্ত্রী এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। গাম্বিয়ার বানজুলে ২-৩ মে অনুষ্ঠিত ওআইসি ১৫তম শীর্ষ সম্মেলনের প্রাক-প্রস্তুতিমূলক পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সভায় ড. হাছান মাহমুদের নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল অংশ নেয়। বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে মানবিক বিবেচনায় আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানান গাম্বিয়ার বিচারবিষয়ক মন্ত্রী। একই সঙ্গে রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলা পরিচালনার জন্য অর্থ সহায়তার জন্যও কৃতজ্ঞতা জানান। সাক্ষাতে রোহিঙ্গাদের রক্ষণাবেক্ষণে বাংলাদেশের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ ও প্রতিবন্ধকতা তুলে ধরেন ড. হাছান মাহমুদ। সমস্যার টেকসই সমাধানে প্রত্যাবাসন শুরুর প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। বৈঠকে রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার বর্তমান চিত্র তুলে ধরে অভিযোগ প্রমাণের আশা প্রকাশ করেন দাওদা এ জালও। পাশাপাশি মামলা পরিচালনায় অপর্যাপ্ত ফান্ডের বিষয়টি তুলে ধরে ওআইসির সভাপতি থাকাকালীন সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সহযোগিতা পাওয়ায় কথাও জানান। মামলায় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় আইনি সহায়তা ও সাক্ষ্য-প্রমাণ সরবরাহের আশ্বাস দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। এ ছাড়া রোহিঙ্গা পরিস্থিতি সরেজমিন দেখতে গাম্বিয়ার মন্ত্রীকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। ২০১৯ সালের ২৯ মে ওআইসির চতুর্দশ শীর্ষ সম্মেলনের প্রাক-প্রস্তুতিমূলক পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনের পাশাপাশি রোহিঙ্গাবিষয়ক এডহক সভায় আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে রোহিঙ্গাদের আইনি অধিকার প্রতিষ্ঠার বিষয়ে গাম্বিয়ার নেতৃত্বে মামলা করার বিষয়ে ঐকমত্য হয়। ওআইসি সদস্য দেশগুলো থেকে আইনি ও আর্থিক সহযোগিতার প্রতিশ্রুতিতে সে বছরই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে মামলা করে গাম্বিয়া।
০৪ মে, ২০২৪
X