ঢাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৯ মে ২০২৪, ০৯:৩৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবিতে ঢাবিতে বিক্ষোভ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংহতি সমাবেশ। ছবি : কালবেলা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংহতি সমাবেশ। ছবি : কালবেলা

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যা বন্ধ ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের দাবিসহ তিন দফা দাবিতে সংহতি সমাবেশ ও মানব পতাকা প্রদর্শনের আয়োজন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘মার্চ ফর প্যালেস্টাইন’ ব্যানারে শিক্ষার্থীরা এই আয়োজন করেন।

মানব পতাকা প্রদর্শনের পাশাপাশি সমাবেশে তারা ৩টি দাবি জানান। সেগুলো হলো- গাজায় গণহত্যা বন্ধ করা; বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দমননীতি বন্ধ করা এবং ইসরায়েলে সামরিক সহায়তা বন্ধ করা।

এসময় সমাবেশে যুক্ত হয়ে বক্তব্য প্রদান করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনে আজকে যা হচ্ছে তা মানব সভ্যতার ইতিহাসে সবচেয়ে বর্বর ঘটনা। গাজায় ইতোমধ্যে ইসরায়েলি বাহিনীর আক্রমণে ৬৭ শতাংশ বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যা একটি নির্দিষ্ট এলাকায় সবচেয়ে বড় ধ্বংসযজ্ঞের রেকর্ড ভেঙেও অনেক উপরে চলে গেছে। ৩৫ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করেছে ইসরায়েলিরা। যার মধ্যে ৭০ শতাংশ হচ্ছে নারী-শিশু এবং ৮০ শতাংশ সাধারণ নাগরিক। যাদের সঙ্গে গাজা যুদ্ধের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

তিনি আরও বলেন, গতকাল ইসরায়েলি বাহিনী কর্তৃক মিসর সীমান্তে অবস্থিত রাফা দখলের মাধ্যমে আরও খারাপ অবস্থায় পড়বে গাজাবাসী। রাফা দখলের মাধ্যমে ইসরায়েলীরা মিসর-ইসরায়েলের যে ডেভিড চুক্তি সেটি ভঙ্গ করেছে। এটিই একমাত্র সীমানা যেখান দিয়ে আহত ফিলিস্তিনি নাগরিকদের জন্য এইড আসতো, ক্ষুধার্ত লোকদের জন্য খাবার আসত। আজ সেই রাস্তাও বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল। আমরা আশা করবো ফিলিস্তিন একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাবে এবং জাতিসংঘের স্থায়ী সদস্য হবে।

মানবাধিকারকর্মী শারমিন মুরশিদ বলেন, ইসরায়েলকে সুস্পষ্ট মদদদাতা হল যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিনিদের রক্তে-রন্ধ্রে জমে আছে গণহত্যা ও দখলদারিত্ব। তারা একটার পর একটা দেশ ও জাতিকে শেষ করে আসছে। ইরাক, লিবিয়া আফগানিস্তানের মতো দেশকে কতগুলো মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে তারা নিধন করেছে। তাদের হাতে রয়েছে মিডিয়া, তাদের হাতে তথ্যের শক্তি এবং তাদের হাতে রয়েছে অর্থ। আর তারা সেটাকে অপব্যবহার করে প্রতিবার মিথ্যের দোহাই দিয়ে মানুষ খুন করেছে।

লেখক ও অ্যাক্টিভিস্ট রাখাল রাহা বলেন, এই আগ্রাসন শুরু হয়েছে ২য় বিশ্বযুদ্ধের পরপরই। তারপর থেকেই নানা চড়াই উতরাই পার করে আজকের এই অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে ফিলিস্তিনকে জাতিগত উচ্ছেদ বা জাতিগত নির্মূলের অবস্থায় নিয়ে গেছে ইসরায়েল। এই উচ্ছেদ আয়োজন অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। এই হামলায় সরাসরি মদদদাতা যুক্তরাষ্ট্রকে এটার প্রতি সমর্থন থেকে ফিরে আসতে হবে।

ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক ও গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির আহ্বায়ক আখতার হোসেন বলেন, আজকের এই আয়োজনে আমরা ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী জনতার সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছি। বিশ্ব পরিমণ্ডলে আমাদের কয়েকটি দাবি থাকবে। তা হল- গাজায় গণহত্যা বন্ধ করতে করতে হবে; আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অত্যাচার ও দমননীতি বন্ধ করতে হবে এবং ইসরায়েলকে সব প্রকার সামরিক সহায়তা বন্ধ করতে হবে।

উল্লেখ্য, সমাবেশ শেষে ফিলিস্তিনের একটি মানব পতাকা প্রদর্শনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনের আপামর জনতার সঙ্গে সংহতি প্রদর্শন এবং নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

শজিমেক হাসপাতালের উপ-পরিচালকের পদায়ন স্থগিতের দাবি

সিলেটে পাথর লুটে ১৩৭ নাম

মির্জা ফখরুলের শারীরিক অবস্থার সর্বশেষ তথ্য জানালেন ডা. জাহিদ

ইতালিতে বাড়ছে অনিয়মিত অভিবাসী, শীর্ষে যে দেশ

ফেব্রুয়ারির নির্বাচন পৃথিবীর কেউ ঠেকাতে পারবে না : খোকন

ভারতে পালিয়ে থাকা আ.লীগ নেতাদের নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ

আমলাতন্ত্র সংস্কারের উদ্যোগ স্তিমিত হয়ে গেছে : বিআইপি

চাকরি দিচ্ছে দারাজ, কাজ করতে পারবেন নিজ নিজ জেলায়

তারেক রহমানের নেতৃত্বে ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে : টুকু

‘জুলাই সনদ’ নিয়ে লিখিত মতামত দিল বিএনপি

১০

‘সিলেটে পাথর লুটে জড়িতদের পুরো তালিকা প্রকাশ করবে প্রশাসন’

১১

নির্ধারিত সময়ে হয়নি ওষুধের তালিকা হালনাগাদ ও মূল্য নির্ধারণ প্রতিবেদন

১২

পরশু, তরশু নাকি আজই?

১৩

রাতে ফোন চার্জে রেখে ঘুমালে কি ফোনে আগুন লাগতে পারে?

১৪

স্ত্রীর প্রতারণার ভয়ংকর বর্ণনা দিলেন শওকত

১৫

যে ৩৩ ওষুধের দাম কমিয়েছে ইডিসিএল

১৬

ইসরায়েলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী!

১৭

বিএনপির চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শিমুল বিশ্বাস হাসপাতালে ভর্তি

১৮

দ্বিতীয় ধাপে কলেজ পেতে যা করতে হবে শিক্ষার্থীদের, জানাল শিক্ষা বোর্ড

১৯

দেশকে আর তাঁবেদার রাষ্ট্র বানাতে দেব না : চরমোনাই পীর

২০
X