চলাচলের রাস্তায় ঘর নির্মাণ করলেন আ.লীগ নেতা
মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে নিজ সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে সমর্থন না করায় প্রতিবেশির চলাচলের রাস্তায় ঘর নির্মাণ করেছেন সেলিম দেওয়ান নামে এক আওয়ামী লীগ নেতা।  তিনি উপজেলা কুমারভোগ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রশিদ শিকদারের সমর্থক। জানা গেছে, মুন্সীগঞ্জ লৌহজং উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের দেওয়ানকান্দি গ্রামের রাসেল হোসেনের পরিবারসহ অন্তত ১০ থেকে ১২টি পরিবারের চলাচলের পথে ঘর নির্মাণ করে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেন এ নেতা। ভুক্তভোগী রাসেল হোসেন বলেন, উপজেলা নির্বাচনে আমার পরিবার ও আমার বাড়ির আশেপাশের বেশকিছু পরিবার বিএম শোয়েবের পক্ষে কাজ করছি। নির্বাচন একটি গণতান্ত্রিক অধিকার। যে যার যার মতো সমর্থন করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমরা সেলিম দেওয়ানের কারণে তা করতে পারছি না। তিনি আমাদের আব্দুর রশিদ শিকদারের পক্ষে কাজ করতে বলে। আমরা তাতে রাজি না হলে বুধবার (৮ মে) রাতে মাটির সড়কটিতে বাঁশ-টিন দিয়ে ঘর নির্মাণ করে। সেই সময় আমরা কয়েকজন বাঁধা দিলে তার লাঠিয়াল বাহিনীর জিয়াউর রহমানসহ বেশ কয়েকজন আমাকে মারধর করে। তিনি বলেন, এ ঘটনায় আমি বৃহস্পতিবার (৯ মে) সকালে উপজেলা সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছি। পাশাপাশি একই বিষয়ে মারধরের ঘটনায় লৌহজং থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছি। অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কায়েসুর রহমান রাস্তার উপর নির্মিত ঘর ভেঙ্গে দেন। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কায়েসুর রহমান বলেন, কেউ ইচ্ছে করলেই সরকারি রাস্তায় ঘর নির্মাণ করে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারে না। এটি যেহেতু চলাচলের রাস্তা সেহেতু এটি উন্মুক্ত থাকবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাকির হোসেন কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, জনগণের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে কিছু ভিডিও ফুটেজ ও ছবি পাই। যাচাই বাছাই করতে এসিল্যান্ডকে ঘটনাস্থলে পাঠাই। তিনি সরেজমিনে তার সত্যতা পেয়ে জনসাধারণের চলাচলের রাস্তায় নির্মিত ঘর অপসারণ করে দেন। তিনি বলেন, যারা ঘর নির্মাণ করেছে তাদের দাবি এ জায়গা তাদের। আমি তাদের কাগজপত্র নিয়ে ভূমি অফিসে আসতে বলেছি। তা যাচাই-বাছাই করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। স্থানীয় কয়েকজন অভিযোগ করে বলেন, সেলিম দেওয়ান কুমারভোগ ইউনিয়নের নেতা হলেও বসবাস করেন হলদিয়া ইউনিয়নের দেওয়ানকান্দি গ্রামে। তিনি আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুর রশিদ শিকদারের পক্ষে কাজ করছে। তবে আমরা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বিএম শোয়েবের সমর্থক হওয়াতে গত রাতে তার লোকজন আমাদের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেয়। এর আগেও নির্বাচনে পক্ষপাতিত্বের কারণে তিনি হলদিয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের দেওয়ানকান্দি এলাকার অপর একটি রাস্তার উপরে ইটের প্রাচীর নির্মাণ করে বেশকিছু পরিবারের চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন। পরবর্তীতে স্থানীয় প্রশাসন তা ভেঙ্গে দেয়। তারা আরও বলেন, নির্বাচনে পক্ষ বিপক্ষ থাকবেই। তাই বলে চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দিবে। এ কেমন শত্রুতা। সেলিম দেওয়ানের অত্যাচার থেকে বাঁচতে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই। এ বিষয়ে জানতে আওয়ামী লীগ নেতা সেলিম দেওয়ানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
১০ মে, ২০২৪

ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ২৪ হাজার ঘর নির্মাণ ইসরায়েলের
অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বসতি রেকর্ড পরিমাণে সম্প্রসারিত হয়েছে। এর ফলে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের বাস্তব সম্ভবনা নির্মূলের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। শুক্রবার (৮ মার্চ) এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক এসব কথা বলেছেন। খবর রয়টার্সের। শুক্রবার বিবৃতির পাশাপাশি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন ভলকার তুর্ক। এই প্রতিবেদনটি মার্চের শেষের দিকে জেনেভায় মানবাধিকার কাউন্সিলে উপস্থাপন করা হবে। জাতিসংঘের নিজস্ব পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি অন্যান্য উৎসেরর ওপর ভিত্তি করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। ১৬ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবরের শেষ পর্যন্ত এক বছরের মধ্যে অধিকৃত পশ্চিম তীরে ২৪ হাজার ৩০০ নতুন ইসরায়েলি আবাসন ইউনিট (ঘর) রেকর্ড করা হয়েছে, যা ২০১৭ সালে পর্যবেক্ষণ শুরু হওয়ার পর থেকে সর্বোচ্চ। ভলকার তুর্ক বলেছেন, ইসরায়েল যে পরিমাণ জনসংখ্যা স্থানান্তর করছে সে পরিমাণ বসতি বৃদ্ধি করছে। এটি একটি যুদ্ধাপরাধ। গত মাসে ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীরে নতুন বসতি নির্মাণের পরিকল্পনা ঘোষণা করলে তা আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে অসঙ্গত বলে মন্তব্য করেছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন। শুক্রবার দেওয়া বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, বসতি স্থাপনকারী ও বসতি স্থাপন সংক্রান্ত সহিংসতা ভয়াবহভাবে নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে। এর ফলে একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বাস্তব সম্ভাবনা নির্মূল হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। বাড়ছে সহিংসতা অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী ও রাষ্ট্রীয় সহিংসতার তীব্রতা ও ঘটার হার নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে গত অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর থেকে এই সংখ্যা বেশি বেড়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। হামাসের হামলার পর থেকে ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী বা বসতি স্থাপনকারীদের হাতে ৪০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এক বিবৃতিতে জেনেভায় ইসরায়েলের কূটনৈতিক মিশন বলেছে, এই প্রতিবেদনে ২০২৩ সালে ৩৬ জন ইসরায়েলি নাগরিকের মৃত্যুর বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা উচিত ছিল। মানবাধিকার সর্বজনীন বিষয়। তবুও ফিলিস্তিনি সন্ত্রাসের শিকার ইসরায়েলিদের কথা হাইকমিশনার অফিস বারবার উপেক্ষা করে।
০৯ মার্চ, ২০২৪
X