‘রূপান্তর’ বিতর্ক : বিজ্ঞাপনী প্রতিষ্ঠানকে ওয়ালটনের আইনি নোটিশ, চুক্তি বাতিল
বিষয়বস্তু সম্পর্কে না করে ওয়ালটনের আদর্শ ও নীতিমালার পরিপন্থিভাবে ‘রূপান্তর’ শিরোনামের একটি নাটক প্রচার করায় বিজ্ঞাপনী প্রতিষ্ঠান ‘লোকাল বাস এন্টারটেইনমেন্ট’-কে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছে ওয়ালটন। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে সব ধরনের বিজ্ঞাপনী চুক্তিও বাতিল করা হয়েছে। একইসঙ্গে বিষয়টির জন্য ওয়ালটন গ্রুপ সম্মানিত ক্রেতা ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের নিকট আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) বিজ্ঞাপনী প্রতিষ্ঠানের ‘লোকাল বাস এন্টারটেইনমেন্ট’ স্বত্বাধিকারী মোহন আহমেদকে ওই আইনি নোটিশ পাঠানো হয়। ওয়ালটনের পক্ষে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট মো. রাইসুল ইসলাম রিয়াদ স্বাক্ষরিত আইনি নোটিশে বলা হয়েছে, আপনি লোকাল বাস এন্টারটেইনমেন্ট বিজ্ঞাপনী প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী। আপনার প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে আপনার নির্মিত ৬টি নাটকে ওয়ালটন ফ্রিজ ব্র্যান্ডিং করতে সম্মত হয়।  শর্ত অনুযায়ী, নাটকগুলোতে দেশের আইন, নীতি, নৈতিকতা বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হয় এরকম কোনো বিষয় অন্তর্ভুক্ত হবে না। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক, ওই নাটকসমূহের মধ্যে ‘রূপান্তর’ নাটকটিতে এমন কিছু বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যাতে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে ও মানুষের অনুভূতিতে আঘাত লেগেছে। নোটিশে আরও বলা হয়েছে, ওয়ালটন কর্তৃপক্ষকে নাটকটির বিষয়বস্তু সম্পর্কে পূর্বে না জানিয়ে রূপান্তর নাটক প্রচার করায় আপনার সঙ্গে চুক্তি বাতিল করা হলো এবং সেইসঙ্গে কেন আপনার বিরুদ্ধে ওয়ালটনের আদর্শ ও নীতিমালার পরিপন্থিভাবে নাটক প্রচারের জন্য আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা নোটিশ প্রাপ্তির ৭ দিনের মধ্যে জানানোর জন্য বলা হলো। এর আগে, ফেসবুক-ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিকমাধ্যম থেকে ‘রূপান্তর’ নাটকটি প্রত্যাহারের জন্য বিজ্ঞাপনী সংস্থাকে নির্দেশ দেয় ওয়ালটন। তাৎক্ষণিকভাবে ফেসবুক-ইউটিউবসহ সব মাধ্যম থেকে নাটকটি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।    এরপরই বিজ্ঞাপনী সংস্থার সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে ওয়ালটন গ্রুপের আদর্শ ও নীতিমালার পরিপন্থি নাটকে বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য কেন আইনিব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা জানতে চেয়ে বিজ্ঞাপনী সংস্থা ‘লোকাল বাস এন্টারটেইনমেন্ট’-কে লিগাল নোটিশ দেয় ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ। এদিকে, আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে ওয়ালটন জানিয়েছে দেশের মানুষের ধর্মীয় ও সামাজিক অনুভূতিতে আঘাত করে এমন কোনো কর্মকাণ্ড কখনো সমর্থন করে না এবং এসব কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকে না। অনাকাঙ্ক্ষিত এ বিষয়টির জন্য ওয়ালটন গ্রুপ মর্মাহত এবং সম্মানিত ক্রেতা ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের নিকট আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছে। এ ধরনের ঘটনা যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সেজন্য তদন্ত অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে ওয়ালটন।
১৭ এপ্রিল, ২০২৪

গাজা ইস্যুতে চুক্তি বাতিল ডাচ ফুটবলার
গাজা গণহত্যা ইস্যুতে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করায় জার্মান ক্লাব মেইনজ সাময়িক বহিষ্কার করেছিল উইঙ্গার আনোয়ার এল গাজিকে। বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহারের পর আরেক পোস্টের কারণে এ ডাচ ফুটবলারের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করেছে ক্লাব। তাতে অবশ্য বিচলিত নন এল গাজি, সত্যর পক্ষে শক্ত অবস্থানের ঘোষণা দিয়েছেন এ ফুটবলার। ‘আমি নিজের অবস্থানের জন্য মোটেও অনুতপ্ত নই। মোটেও অনুশোচনা করছি না। আমি যা লিখেছি, তা মনেপ্রাণে ধারণ করি। শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত আমি নিপীড়িতদের পক্ষে থাকব’— নিজের অবস্থান সম্পর্কে বলছিলেন আনোয়ার এল গাজি। মেইনজ চুক্তি বাতিল করার পর মোটেও বিচলিত নন ২৮ বছর বয়সী সাবেক আয়াক্স উইঙ্গার। এ সম্পর্কে তিনি বলেছেন, ‘গাজার নিরপরাধ ও অরক্ষিত মানুষের ওপর যে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হচ্ছে, সে তুলনায় আমার জীবিকার ক্ষতি কিছুই নয়।’ এদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় আনোয়ার এল গাজি এ-সংক্রান্ত পোস্টে লিখেছেন, ‘সত্যর পক্ষে দাঁড়ান। সেটা একা হলেও দাঁড়ানো উচিত।’  
০৫ নভেম্বর, ২০২৩

ফিলিস্তিনের পক্ষ নেওয়ায় চুক্তি বাতিল ডাচ ফুটবলারের
ফিলিস্তিন-ইসরায়েল যুদ্ধে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর অভিযানে প্রতিদিনই সেখানে মৃত্যুবরণ করছেন হাজার-হাজার নিরীহ মানুষ। সামরিক বাহিনীর নৃশংসতা থেকে রক্ষা পাচ্ছে না ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালও। বিশেষ করে প্রতিদিন শিশুদের মৃত্যু নাড়া দিয়ে গিয়েছে সর্বস্তরের মানুষকে। সবাই যার যার জায়গা থেকে ইসরায়েলের নৃশংসতার প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। ক্রীড়াঙ্গনও তার বাহিরে নয় ফুটবলে এই যুদ্ধের প্রভাব বেশ ভালোভাবেই পড়তে শুরু করেছে। মুসলিম ফুটবলারদের মধ্যে অনেকেই সরাসরি ফিলিস্তিনের সমর্থনে মুখ খুলতে শুরু করেছেন। কিন্তু এই মুখ খোলাই কাল হয়ে দাঁড়াল জার্মান বুন্দেসলিগায় খেলা ডাচ ফুটবলার আনোয়ার এল ঘাজির। ফিলিস্তিনের পক্ষ নিয়ে পোস্ট দেওয়ায় তার সাথে চুক্তি বাতিল করেছে জার্মান বুন্দেসলিগার ক্লাব মেইঞ্জ।   জার্মান ফুটবল ক্লাব মেইঞ্জ ০৫ শুক্রবারে (০৩ নভেম্বর) ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত সম্পর্কিত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্টের জন্য আনোয়ার এল ঘাজির চুক্তি বাতিল করে। বিবৃতিতে অবশ্য মেইঞ্জ বলে যে এল গাজির চুক্তি “সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খেলোয়াড়ের ক্লাবের স্বার্থবিরোধী মন্তব্য এবং পোস্ট এর কারণে বাতিল করা হয়েছে” কী ধরনের পোস্ট এই সম্পর্কে অবশ্য আর কোনো তথ্য তারা সরবরাহ করেনি।    ২৮ বছর বয়সী এই ফুটবলার এর আগে মধ্যপ্রাচ্যে চলমান ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত সম্পর্কে একটি পোস্টের জন্য ক্লাব দ্বারা সাসপেন্ডেড হয়েছিল, তবে পরে ওই পোস্ট মুছে ফেললে এই সপ্তাহের শুরুতে তাকে আবার অনুশীলনে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। ক্লাব তার চুক্তি বাতিলের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্টে তিনি বলেন, “যা ঠিক তার পক্ষে দাঁড়ান, এমনকি যদি এর অর্থ হয় একা দাঁড়ানো। গাজায় নিরপরাধ এবং দুর্বলরা যে নরকের ওপর দিয়ে যাচ্ছে তার তুলনায় আমার জীবিকার ক্ষতি কিছুই নয়।”               View this post on Instagram                       A post shared by Anwar El Ghazi (@elghazi21) অবশ্য ২৭ অক্টোবর ক্লাব দ্বারা সাসপেন্ডেড হওয়ার পর একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে তিনি স্পষ্ট করে বলেন “সোশ্যাল মিডিয়াতে আমার আগের বিবৃতিগুলোকে যতটা ভুল বোঝানো হয়েছে, আমি স্পষ্ট করতে চাই যে আমি সবসময় সবার জন্য শান্তি এবং মানবতার পক্ষে দাঁড়িয়েছি।” মেইঞ্জ সোমবার (৩০ অক্টোবর) বিবৃতিতে বলেছিল যে তারা ঘাজির স্থগিতাদেশ তুলে নিয়েছে এবং তাকে দ্বিতীয় সুযোগ দিচ্ছে, তিনি বলেছেন যে তিনি হামাস সহ সব ধরণের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন এবং ইসরায়েলের রাষ্ট্র হিসেবে অস্তিত্বের অধিকার নিয়েও প্রশ্ন তোলেননি। তবে এরপর আবার বুধবার আরও একটি সামাজিক মিডিয়া পোস্টে, এল ঘাজি ইঙ্গিত দেন যে ক্লাবটি তার অনুমতি ছাড়াই এই বিবৃতি জারি করেছে। তিনি সামাজিক মাধ্যমে এরপর লেখেন যে “আমি আমার অবস্থানের জন্য অনুশোচনা করি না। আমি যা বলেছি তা থেকে আমি কখনোই নিজেকে দূরে রাখি না এবং আমি আজ এবং সর্বদা আমার শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত, মানবতা এবং নিপীড়িতদের জন্য দাঁড়িয়ে আছি এবং থাকব।" তিনি আরেকটি বিবৃতি পোস্ট করেছেন যেখানে তিনি ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের সকল নিরপরাধ নাগরিকদের হত্যার নিন্দা করেছেন। “গত তিন সপ্তাহে গাজায় সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি শিশুকে হত্যার কোনো যৌক্তিকতা থাকতে পারে না। আমি এবং আমরা বিশ্ব হিসেবে বিবেকবানভাবে কখনোই নীরব থাকতে পারি না। আমাদের এখনই গাজায় হত্যাকাণ্ড বন্ধ করার আহ্বান জানাতে হবে” তিনি তার পোস্টে এটি যোগ করেন। শুক্রবার এল ঘাজির চুক্তি বাতিলের আগে, জার্মান প্রসিকিউটররা তার সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টগুলির মাধ্যমে ‘ঘৃণার প্ররোচনার সাথে অপরাধমূলক কাজ দ্বারা জনসাধারণের শান্তিকে বিঘ্নিত করার’ অভিযোগে অভিযুক্ত করেছিলেন।  ফিলিস্তিনের পক্ষ নেওয়ায় অবশ্য এ্রল ঘাজি ছাড়াও আরেক ফুটবলার তার ক্লাব দ্বারা শাস্তির মুখোমুখি হয়েছেন। তিনি হলেন ফ্রান্সের লিগ ওয়ানের ক্লাব নিসে খেলা আলজেরিয়ান প্লেয়ার ইউসেফ অটল। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে তথাকথিত ইহুদিবিদ্বেষী বক্তব্য রি-পোস্ট করায় আজ আলজেরিয়ান ফুটবলার ইউসেফ অটলকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বরখাস্ত করেছে ফরাসি ক্লাব নিস।
০৪ নভেম্বর, ২০২৩
X