পানিশূন্য যমুনা নদী, যতদূর চোখ যায় বালু আর বালু
জামালপুর ইসলামপুরে এক সময়ের খরস্রোতা যমুনা এখন আর নদীর অবস্থায় নেই। শুকিয়ে পরিণত হয়েছে খালে। কোথাও কোথাও হেঁটেই পার হওয়া যাচ্ছে। যমুনার অভ্যন্তরীণ অনেক রুটেই খেয়াপারের জন্য এখন আর নৌকার প্রয়োজন হয় না। ডানে বাঁয়ে যতদূর চোখ যায়, শুধুই বালুচর। নদীর গতিপথে কচ্ছপের পিঠের মতো হাজারো ডুবোচরে পরিণত হয়েছে যমুনা। যতদূর চোখে দেখা যায়, শুধুই বালুর চর। এটা কি আগের সেই উত্তাল তরঙ্গের যমুনা নদী। দৃশ্যপটে সেটা মনে হয় না। এখন সেগুলো শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। এক সময় যে নদীর প্রশস্ততা ছিল ২/৩ কিলোমিটারেরও বেশি। সে সময়ে যমুনার ভরা যৌবনের তর্জন গর্জনে মানুষের বুকে কাঁপন সৃষ্টি করত। নদী পাড়ের মানুষের রাতের ঘুম উড়ে যেত। সেই যমুনা ক্রমেই তার যৌবন হারিয়ে নিস্তেজ হয়ে পড়েছে। অন্য দিকে চরাঞ্চলের গরু ও মহিষের বাথান এলাকাগুলোর শ্রমিক ও গবাদি পশুর জীবন চরম গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। চরাঞ্চলের মানুষের যেন দুঃখের সীমা নেই। মাঠঘাট জমি জমা ফেটে চৌচির। গাছপালা তেমন না থাকায় গরমে চলছে লু-হাওয়া। ফলে আবহাওয়ার বিরূপ প্রভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যমুনা নদীর পানি কমে যাওয়ায় কয়েকটি রুটে নৌকা চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। মুরাদাবাদ ঘাট থেকে প্রতিদিন গাইবান্ধা সাগাটা ঘাট লোকজন যাতায়াতের একটা রুট এবং গোঠাইল ঘাট থেকে, শিয়ালদহ, আমতলী, মন্নিয়াচর, বরুল, প্রজাপতি, কাসারিডোবা কটাপুর মণ্ডলপাড়া ও বগুড়ার সারিয়াকান্দিসহ বিভিন্ন উপজেলার বিভিন্ন চরে ইঞ্জিনচালিত নৌকা চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। নদীর নাব্য কমে চর জেগে ওঠায় অনেক দূর দিয়ে ঘুরে নৌকা চলাচল করছে। এতে তেল খরচ বেড়ে যাচ্ছে। সময়ও লাগছে বেশি। ফলে যাত্রী ভাড়া ও মালামাল পরিবহনের খরচ বেড়ে যাচ্ছে। এসব রুটে অন্য কোনো যাতায়াত ব্যবস্থা না থাকায় যাত্রীরা বিপাকে পড়ছেন। নদীর পানি কমে নৌ ঘাট দূরে সরে যাওয়ায় তপ্ত বালুচর ভেঙে যাত্রীদের যাতায়াত করতে হচ্ছে। এক্ষেত্রে মালামাল পরিবহনসহ শিশু ও নারী যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। নৌ রুট বন্ধ থাকায় অনেক মাঝি যেমন বেকার হয়ে পড়েছেন, তেমনি মৎস্যজীবীরাও পড়েছেন বিপাকে। যমুনা নদীর পানি হ্রাস পেলে তিন কিলোমিটার পথ বেড়ে ১৫ কিলোমিটারে পৌঁছে। এতে পরিবহন খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইসলামপুর উপজেলার চরাঞ্চলের সাপধরী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ আলম মণ্ডল ও বেলগাছা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মালেক জনগণের চরম ভোগান্তির কথা স্বীকার করেন। এদিকে মণ্ডল পারা, উলিয়া, সাপধরী ও আমতুলী অনেক নদী ঘাটে খেয়ার পরিবর্তে ঘোড়ার গাড়ি ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
১৩ ঘণ্টা আগে

মর্মান্তিক / জায়েদের অশ্রুঝরা চোখ খুঁজে ফিরছে মাকে
সড়ক দুর্ঘটনায় মা জায়েদা মারা গেলেও বেঁচে আছে দেড় বছরের শিশুপুত্র জায়েদ। মা সারাজীবনের জন্য তাকে ছেড়ে চলে গেছেন, সেটি বোঝার ক্ষমতা নেই তার। আধো আধো বুলিতে মা মা বলে কেঁদে চলেছে শিশুটি। পাশে থাকা চিকিৎসক-নার্স কেউই তার কান্না থামাতে পারছেন না। এমন চিত্র ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে। শনিবার রাতে নিহত নারী ও তার শিশুপুত্রের পরিচয় মিললে গতকাল রোববার সকালে হাসপাতালে ছুটে আসেন ওই নারীর ভাই। গত বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ভালুকার স্কয়ার মাস্টারবাড়ি এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন জায়েদা (৩২) ও তার শিশুপুত্র জায়েদ। ভোররাতে কে বা কারা তাদের আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। এরপর সেখান থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার রাতে জায়েদার মৃত্যু হয়। হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে শিশু জায়েদ। ঘটনার পর থেকে তাদের পরিচয় মিলছিল না। স্বজনের খোঁজে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শিশুটির ছবি পোস্ট করেন অনেকে। সেই ছবিতে দেখা যায়, স্ট্রেচারে নারীর নিথর দেহ। মাথায় ব্যান্ডেজ। তার বুকের ওপর শুয়ে কাঁদছে ছোট্ট শিশু। তার মাথায়ও ব্যান্ডেজ। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনের এ দৃশ্য দেখে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি কেউ। শিশুটির কান্নার ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শনিবার রাতে স্বজনের খোঁজ মেলে। জায়েদা সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার কুশিউড়া গ্রামের রমিজ উদ্দিনের মেয়ে। ছেলে জায়েদকে নিয়ে তিনি ময়মনসিংহের ভালুকার স্কয়ার মাস্টারবাড়ি এলাকায় থাকতেন। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্য তারিকুল ইসলাম আহত শিশু জায়েদ ও তার মাকে ময়মনসিংহ মেডিকেলে ভর্তি করেছিলেন। তারিকুল বলেন, শিশুটিকে হাসপাতালের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে এবং তার মাকে ১০ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে জায়েদা মারা যান। ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের এক রোগীর স্বজন বেদেনা আক্তার জানান, ওই নারী যখন অজ্ঞান অবস্থায় ছিলেন তখনো শিশুটি তার মায়ের বুকের দুধ পান করেছে। এ দৃশ্য দেখে কেউ চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ হস্তান্তর জায়েদার মৃত্যুর ঘটনায় ভরাডোবা হাইওয়ে থানা পুলিশের পক্ষ থেকে অজ্ঞাতপরিচয় গাড়ির বিরুদ্ধে গতকাল কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা হয়েছে। পুলিশ জায়েদার ময়নাতদন্ত শেষে ভাই রবিন মিয়ার কাছে লাশ হন্তান্তর করেছে বলে নিশ্চিত করেন কোতোয়ালি থানার এসআই আবুল কাশেম। গতকাল বোনের লাশ ও ভাগ্নেকে নিতে আসেন রবিন মিয়া। তিনি জায়েদার বড় ভাই দাবি করেন। রবিন জানান, জায়েদার একাধিক বিয়ে হয়েছে। ভালুকা এলাকায় থেকে কখনো গার্মেন্টে, কখনো জুতার কারখানায় কাজ করে জীবন চালাতেন। রবিন শিশুটিকে নিতে চাইলে দুপুরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও সমাজসেবা বিভাগ শিশুটির বিষয়ে বৈঠক করে। শিশুটির প্রকৃত অভিভাবক নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত হস্তান্তর না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সমাজসেবা অধিদপ্তরের ময়মনসিংহের উপপরিচালক আ. কাইয়ুম বলেন, বিষয়টি যেহেতু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসেছে, তাই অনেকে পরিচয় দিয়ে শিশুটিকে নিতে আসতে পারে। আমরা উপযুক্ত কাগজপত্র ছাড়া হস্তান্তর করলে বিষয়টি ঝুঁকিপূর্ণ হয়। পর্যাপ্ত কাগজপত্র নিয়ে এলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়ে হস্তান্তর করবে।
১৩ মে, ২০২৪

১০ টাকায় টিকিট কেটে চোখ দেখালেন প্রধানমন্ত্রী
রাজধানীর আগারগাঁও চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ১০ টাকায় টিকিট কেটে চিকিৎসাসেবা নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল শুক্রবার টিকিট কেটে হাসপাতালের ১১৭ নম্বর রুমে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে দেখান তিনি। প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব এ বি এম সরওয়ার-ই-আলম সরকার গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সরওয়ার-ই-আলম বলেন, নিয়মিত আগারগাঁও চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসা নেন প্রধানমন্ত্রী। এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবারও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের চিকিৎকসাসেবা নিয়েছেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সাবেক স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. গোলাম মোস্তফা এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য ও চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. দীন মো. নূরুল হক উপস্থিত ছিলেন।
০৪ মে, ২০২৪

প্রকৃতি থেকে বিলুপ্তির পথে চোখ ধাঁধানো পারিজাত ফুল
বসন্তে যে ফুলগুলো প্রকৃতিকে মনোমুগ্ধকর করে তোলে তাদের মধ্যে মান্দার বা পারিজাত অন্যতম। কথিত স্বর্গীয় ফুল মান্দারের অগ্নিসদৃশ লাল রং মানুষকে যেমন মুগ্ধ করে তেমনি মুগ্ধ করে বিভিন্ন পাখ-পাখালিকেও। তাই বৃক্ষ জাতীয় সপুষ্পক উদ্ভিদ মান্দার বা পারিজাত গাছে বসন্তে যেন বসে পাখিদের মিলনমেলা। পারিজাত ফুল নিয়ে কবি লেখকরা লিখেছেন অনেক গান ও কবিতা। সাহিত্যে ঠাঁই হলেও কাঁটাযুক্ত মাঝারি আকৃতির দেশি মান্দারের ঠাঁই হচ্ছে না আমাদের দেশে। পারিজাতের আদি নিবাস গাঙ্গেয় সমভূমি অঞ্চল ও মিয়ানমারে। বাংলাদেশের দক্ষিণ, দক্ষিণ-পূর্ব ও মধ্যাঞ্চল ছাড়াও অনেক এলাকায় কম বেশি মান্দার গাছ দেখতে পাওয়া যায়। তবে, ক্রমশই কমছে এ গাছের সংখ্যা। সময়ের স্রোতে হারিয়ে যাচ্ছে চোখ ধাঁধানো পারিজাত বা মান্দার ফুল। ইরিথ্রিনা গণভুক্ত মান্দার বা পারিজাত ফুলের বৈজ্ঞানিক নাম Erythrina variegata। ইরিথ্রিনা গণভুক্ত উদ্ভিদগুলো মাদার বা মান্দার নামে পরিচিত। বিভিন্ন এলাকার মানুষ ভিন্ন ভিন্ন নামে এ ফুলকে চেনেন। এলাকা ভেদে কেউ এ ফুলকে মাদার, কেউ মান্দার, কেউবা কাঁটা মান্দারও বলে থাকেন। কেউ ডাকেন ভিন্ন নামে। ধুসর রঙের শাখা বিশিষ্ট মান্দার গাছ প্রায় ১৫ থেকে ২০ মিটার উঁচু হতে পারে। শীতকাল শুরুর দিকে এ গাছের পাতা ঝরে যায়। এ সময় গাড় লাল রঙের গন্ধহীন ফুলে ছেয়ে যায় মাদার গাছ। শাখার অগ্রভাগে ফুলের মঞ্জরি হয়। এক একটি মঞ্জরিতে কয়েকটি ফুল হয়। মার্চ-এপ্রিলে গাছে নতুন পাতা গজায়। গ্রাম এলাকায় এখন খুব কমসংখ্যক মান্দার গাছ চোখে পড়ে। বহু বছর বেঁচে থাকে বলে কেউ কেউ জমির আইল চিহ্নিত করে রাখার জন্য মান্দার গাছের শাখা লাগান। কেউ কেউ বাড়ির চার পাশের বেড়া দিতে খুঁটি হিসেবে মান্দার গাছ লাগিয়ে থাকেন। কেউ কেউ মাছ ধরার উদ্দেশ্যে নদী জলাশয়ের স্বল্প পানিতে মান্দার গাছ ফেলে রাখেন। নিরাপদ আবাস ভেবে পানিতে ফেলে রাখা মান্দার গাছের মধ্যে মাছ বসবাস করতে শুরু করে। কয়েক দিন পর পর মানুষ পানিতে ফেলে রাখা মান্দার গাছের চারপাশ জাল দিয়ে ঘিরে মাছ ধরেন। অন্যান্য কাঠের মতো দামি না হওয়ায় অনেকে মান্দার গাছ লাগাতে উৎসাহী হন না। অল্প কিছু শোখিন মানুষ ফুলের প্রতি ভালোবাসার স্মারক হিসেবে এবং সৌন্দর্য বাড়াতে বাড়ির সামনে মান্দার গাছ লাগান। পারিজাতের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হন কিশোর-কিশোরীসহ নানা বয়সী মানুষ। হিন্দু পুরাণ মতে, অমৃতের সন্ধানে দেবতা ও অসুররা সমুদ্র থেকে অনেক আশ্চর্য বস্তু তুলে এনেছিলেন। সমুদ্র মন্থনে উঠে আসা সেই আশ্চর্য বৃক্ষের নাম পারিজাত। তাই স্বর্গের বর্ণনায় এ বৃক্ষের নাম উঠে এসেছে বার বার। ইন্দ্রের বাগানেরও প্রধান গাছ ছিল এই পারিজাত। পুরাণে পারিজাতকে কল্পতরু হিসেবে অভিহিত করা হয়। চাটমোহর পৌর সদরের উদ্ভিদপ্রেমী বায়েজীদ বোস্তামী জানান, ভেষজ গুণসম্পন্ন মান্দার নামক এ উদ্ভিদ কেউ চাষ করে না। বন জঙ্গলে প্রাকৃতিকভাবেই জন্মে এবং অযত্ন অবহেলায় বেড়ে ওঠে। উপকূলীয় যেসব এলাকায় জোয়ার-ভাটা আসা যাওয়া করে সেসব এলাকায় মান্দার গাছের আধিক্য দেখা যায়। দেশের অন্যান্য এলাকায় এ গাছ খুব একটা চোখে পড়ে না।    পরিণত বয়সের মান্দার গাছ চিরে দেশলাইয়ের শলাকা তৈরি ও ইট ভাটার জ্বালানি কাঠ হিসেবে মান্দার গাছ ব্যবহার করায় পরিণত বয়স্ক মান্দার গাছ এখন আর প্রায় চোখে পড়ে না বললেই চলে। সময়ের বিবর্তনে মূল্যের প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে সাহিত্য, পুরাণে স্থান পাওয়া পারিজাত বা মান্দার হয়ে উঠছে দুর্লভ বৃক্ষ ও ফুল।
০৩ মে, ২০২৪

১০ টাকার টিকিট কেটে চোখ দেখালেন প্রধানমন্ত্রী
রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে সাধারণ রোগীর মতো ১০ টাকায় টিকিট কেটে চিকিৎসা নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার (৩ মে) সকালে টিকিট কেটে তিনি চক্ষু পরীক্ষা করান। প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব এ বি এম সারওয়ার ই আলম সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। প্রসঙ্গত, এর আগে ২০২৩ সালের ১৫ জুলাই মাত্র ১০ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে চোখের চিকিৎসা করিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে সময় হাসপাতালের বহির্বিভাগের নার্স, রোগী ও হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর স্বজনদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি হাসপাতালের চিকিৎসা বিষয়ক খোঁজ-খবর নিয়েছিলেন এবং তাদের সঙ্গে ছবি তুলেছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক উপমহাদেশের প্রখ্যাত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী তার চোখের চিকিৎসা জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল থেকেই করিয়ে থাকেন।
০৩ মে, ২০২৪

ক্যাবরেরার চোখ মাঠে সমালোচনায় নয়
বিশ্বকাপ বাছাইয়ে সর্বশেষ দুই ম্যাচের পর হাভিয়ের ক্যাবরেরার সমালোচনায় সরব হয়েছিলেন কাজী মো. সালাউদ্দিন। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) প্রধানের সমালোচনাকে স্বাভাবিকভাবেই নিয়েছেন এ কোচ। সমালোচনার বিষয় নিয়ে নয়, সবকিছু ইতিবাচকভাবে নিচ্ছেন স্পেনের এ কোচ। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশের সামনে দুই ম্যাচ। দুটিই জুনে খেলবে লাল-সবুজরা। ৬ জুন ঢাকায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হোম ম্যাচ। ১১ জুন লেবাননের বিপক্ষে খেলতে হবে অ্যাওয়ে ম্যাচ। যুদ্ধবিগ্রহের কারণে লেবানন এ ম্যাচ খেলবে কাতারে। ম্যাচ দুটির আগে প্রস্তুতির খুব বেশি সময় পাবে না বাংলাদেশ। কারণ চলমান প্রিমিয়ার লিগ শেষ হবে ২৯ মে। লিগ শেষে ১ জুন ফুটবলাররা জাতীয় দলের ক্যাম্পে রিপোর্ট করবেন, পরদিন থেকে অনুশীলন শুরু—আপাতত এমন পরিকল্পনা নিয়েই এগোচ্ছেন জাতীয় দল-সংশ্লিষ্টরা। সংক্ষিপ্ত অনুশীলন সম্পর্কে বাংলাদেশ কোচ ক্যাবরেরা বলেছেন, ‘এবার আমাদের ক্যাম্প হবে সংক্ষিপ্ত। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের আগে আমরা হয়তো ৪ থেকে ৫টি অনুশীলন সেশন পাব।’ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ খেলেই কাতার যাবে বাংলাদেশ দল। সেখানে কয়েকদিন অনুশীলনের পর বাছাইয়ে ‘আই’ গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচ খেলবে লাল-সবুজরা। এর আগে, আপাতত বিভিন্ন ভেন্যুতে গিয়ে ঘরোয়া ফুটবল কার্যক্রমের ম্যাচগুলো দেখছেন বাংলাদেশ দলের স্প্যানিশ কোচ। ফিলিস্তিনের বিপক্ষে হোম এবং অ্যাওয়ে কোচের কৌশল নিয়ে কাজী মো. সালাউদ্দিন যে সমালোচনা করেছেন, তা নিয়ে ক্যাবরেরা বলেন, ‘বাফুফে সভাপতি হিসেবে তিনি সমালোচনা করার অধিকার রাখেন। নানা প্রসঙ্গ নিয়ে আমাদের মধ্যে কথা হয়েছে। সমালোচনার বিষয় নিয়ে ভাবছি না। বরং বিষয়টি ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছি। আমরা অবশ্যই ভুল থেকে শিক্ষা নিতে চাই।’ বাছাইয়ে দুটি বড় হার ছিল অস্ট্রেলিয়া (৭-০) ও ফিলিস্তিনের (৫-০) বিপক্ষে। দুটিই ছিল অ্যাওয়ে ম্যাচ। হোমে বাংলাদেশকে অবশ্য ভিন্ন রূপে দেখা যাচ্ছে। ঘরের মাঠে লেবাননের সঙ্গে ড্র করা লাল-সবুজরা ফিলিস্তিনের কাছে ১-০ গোলে হেরেছে শেষদিকে গোল হজম করে। বাকি দুই ম্যাচে তরুণদের ঝালিয়ে নেওয়ার ইঙ্গিত দিলেন বাংলাদেশ কোচ, ‘নতুন মুখ দেখা যেতেই পারে। প্রিমিয়ার লিগে আরও কিছু ম্যাচ বাকি। দেখা যাক নতুনরা বিশেষ কিছু করতে পারে কি না। সর্বশেষ সৌদি আরবের ক্যাম্পে কয়েকজন তরুণ ছিল। আমি তাদেরও দেখব।’ মার্চে ফিলিস্তিনের বিপক্ষে দুই ম্যাচ মূল্যায়ন করতে গিয়ে ক্যাবরেরা বলছিলেন, ‘আমরা অ্যাওয়ে ম্যাচে আগ্রাসী ফুটবল খেলা শুরু করেছিলাম। খুব দ্রুতই নিজেদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলাম; কিন্তু বেশি আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে ভুল করেছি। ফিলিস্তিন অনেক শক্তিশালী দল। পরবর্তী সময়ে হোম ম্যাচে আমরা ভালো খেলেছি, কিন্তু শেষ মুহূর্তের গোলে হেরেছি। আমি মনে করি, হারলেও দলগত নৈপুণ্যের দিক দিয়ে আমরা উন্নতি করেছি।’
৩০ এপ্রিল, ২০২৪

পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে আদালতের বারান্দা থেকে আসামির পলায়ন
শরীয়তপুরের নড়িয়ায় আদালতের বারান্দা থেকে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে পালিয়েছে হত্যা মামলার এক আসামি।  শনিবার (২৭ এপ্রিল) বিকেল ৪টার দিকে শরীয়তপুরের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আদালতের এজলাসের সামনে এ ঘটনা ঘটে। জানা যায়, উপজেলার জপসা ইউনিয়নের মাইজপাড়া গ্রামের রাড়ীকান্দি গ্রামের মোহাম্মদ আলী মাদবর হত্যা মামলায় তার স্ত্রী মুন্নি বেগমসহ দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। আদালতের এজলাসে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিচ্ছিল মুন্নি বেগম। এ সময় আদালতের বারান্দায় বসে থাকা অপর আসামি বাবু ফকির (২৫) পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে যায়।  পালং মডেল থানা পুলিশের ওসি মেজবাহ উদ্দিন আহম্মেদ গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার (২৪ এপ্রিল) রাতে উপজেলার জপসা ইউনিয়নের মাইজপাড়া রাড়ীকান্দি গ্রামের মৃত আমিন উদ্দিন মাদবরের ছেলে মোহাম্মদ আলী মাদবর নিখোঁজ হন। পরদিন শরীয়তপুর সদর উপজেলার ডোমসার ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান চাঁন মিয়া মাদবরের বাড়ির সামনের পুকুর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার হয়।  মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। এরপর শুক্রবার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে- এমন অভিযোগ তুলে অজ্ঞাত আসামিদের নামে পালং মডেল থানায় মামলা করেন নিহতের বড় ভাই কেরামত আলী মাদবর।  এ ঘটনায় পুলিশ বাবু ফকিরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে। জিজ্ঞাসাবাদে বাবু ফকির পুলিশকে জানায় নিহতের স্ত্রী মুন্নি বেগমও হত্যার সঙ্গে জড়িত।  অন্যদিকে হাসপাতাল থেকে নিহতের স্বজনরা জানতে পারেন মোহাম্মদ আলী মাদবর ঘুমের ওষুধ খেয়েছিলেন। এরপর বাড়িতে এসে স্বজনরা মুন্নি বেগমের কাছে বিষয়টি জানতে চান। পরে মুন্নি বেগম শুক্রবার বিকেলে তাদেরকে জানায়, ভাতের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে স্বামীকে পরকীয়া প্রেমিক মামুন চৌকিদার ও তার সঙ্গীদের হাতে তুলে দেন তিনি। এরপর মুন্নি বেগমকে আটক করে থানা পুলিশে খবর দেন নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী। পুলিশ মুন্নি বেগমকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়।  পরে শনিবার মুন্নি বেগম ও বাবু ফকিরকে শরীয়তপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আদালতের সামনে আনা হয়। আসামিদের বুঝে নেয় কোর্ট পুলিশ। এরপর বিকেল ৪টার দিকে এজলাসের সামনে থেকে পুলিশ সদস্যদের চোখ ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে যায় আসামি বাবু ফকির। পালং মডেল থানার ওসি মেজবাহ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেওয়ার জন্য আদালতের এজলাসের সামনে থানা ও কোর্ট পুলিশের তত্ত্বাবধানে ছিল আসামিরা। এ সময় বাবু ফকির নামে একজন আসামি পালিয়ে গেছে। শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার মো. মাহবুবুল আলম বলেন, একজন আসামি পালিয়ে গেছে। আসামিকে ধরতে ২০ থেকে ২৫টি টিম কাজ করছে।
২৮ এপ্রিল, ২০২৪

বাংলাদেশকে অন্য দেশের চোখ দিয়ে দেখে না যুক্তরাষ্ট্র : মার্কিন কর্মকর্তা
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের চোখ দিয়ে দেখে না বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ম্যাক্সওয়েল মার্টিন। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসে ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় কৌশল (আইপিএস) নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।  আইপিএস ও বাংলাদেশের জন্য এর তাৎপর্য নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস। ম্যাক্সওয়েল মার্টিন বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক দুই দেশের অভিন্ন ইতিহাস, মূল্যবোধ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ভিত্তিতে পরিচালিত। এই সম্পর্ক ভারত, চীন, রাশিয়া বা তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে পরিচালিত নয়। বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কটা আমরা দ্বিপক্ষীয় প্রেক্ষাপট থেকেই দেখি। এই সম্পর্ককে আমরা অন্য দেশের লেন্স (দৃষ্টি) দিয়ে দেখি না। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ফোর্সেস গোল-২০৩০ কে সমর্থন করে যুক্তরাষ্ট্র। এই লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশকে নানাভাবে সহায়তা করা হচ্ছে। আইপিএসের প্রেক্ষাপট বিবেচনায় রেখেই বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাড়তি পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি আগের সহযোগিতাগুলো এগিয়ে নিয়ে চলেছে যুক্তরাষ্ট্র। এক প্রশ্নের জবাবে ম্যাক্সওয়েল মার্টিন বলেন, চীনের মতো কয়েকটি দেশ নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এমনকি ভবিষ্যতেও জোর খাটাতে পারে। যেটা দক্ষিণ চীন ও তাইওয়ানের ক্ষেত্রে ঘটেছে। আইপিএসের ক্ষেত্রে আমরা এ ধরনের আধিপত্যপাদী আচরণ দেখতে চাই না। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে দুর্যোগ মোকাবিলায় বিভিন্ন অংশে কাজ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের মতো অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা করেছে।  ম্যাক্সওয়েল মার্টিন বলেন, আইপিএসের মানচিত্রের দিকে তাকালে দেখবেন বিশ্বের বাণিজ্যের বড় অংশটা হয় এই অঞ্চলজুড়ে। অর্থনৈতিক উন্নয়নও হচ্ছে এই অঞ্চল ঘিরে। তাই বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল অবাধ ও মুক্ত ভবিষ্যৎ, অর্থনীতি এবং সমৃদ্ধির স্বার্থের বিষয়গুলোতেই জোর দেওয়া হচ্ছে। 
২৫ এপ্রিল, ২০২৪

দুই মাথা ও চার চোখ নিয়ে বাছুরের জন্ম
যশোরের মনিরামপুরে জন্ম নিয়েছে বিরল এক বাছুর। যার মাথা দুটি, মুখও দুটি আর চোখ চারটি। অদ্ভুত এই বাছুরটি দেখতে ভিড় করছেন শতশত মানুষ। রোববার (২১ এপ্রিল) বিকেলে উপজেলার ঢাকুরিয়া ইউনিয়নের বারপাড়া গ্রামে বাচ্চু মিয়ার বাড়িতে দেশি জাতের একটি গাভী এই বাছুরটি জন্ম দিয়েছে।  বাছুরটির মালিক বাচ্চু মিয়া জানান, রোববার বিকেলে স্বাভাবিকভাবেই বাচ্চা হয়েছে। তবে, দুটি মাথা থাকায় জন্মের পর থেকে স্তন্যপান করতে অসুবিধা হচ্ছে বাছুরটির। স্থানীয় বাসিন্দা সাজু আহম্মেদ বলেন, বাছুরটি জন্ম নেওয়ার পর দেখা যায় এর দুটি মাথা। এরমধ্যে চারটি চোখ ও দুটি কান থাকলেও মুখ দুটি আলাদা। বিরল এই বাছুরটি দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে বাচ্চুর বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছে। মনিরামপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. পার্থ প্রতিম রায় বলেন, কনজেনিটাল এনোমালিসের কারণে এ ধরনের বাচ্চা জন্ম নেয়। তবে, জন্ম নেওয়া বাছুর বেশি দিন বেঁচে থাকে না।
২১ এপ্রিল, ২০২৪

বিশ্বের সবচেয়ে বড় নির্বাচনী আয়োজনে চোখ সবার
বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ ভারতে আজ শুক্রবার শুরু হচ্ছে অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচন। লোকসভার ৫৪৩ আসনে মোট সাত দফায় ভোট গ্রহণ শেষে আগামী ৪ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে ফল প্রকাশ করা হবে। এ নির্বাচনে প্রায় ৯৭ কোটি ভোটার ভোট দেবেন, যা ইউরোপের সব দেশ মিলে যে জনসংখ্যা, তার চেয়েও বেশি। বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই নির্বাচনী কর্মযজ্ঞের দিকে তাই সবার চোখ এখন। ২৮টি রাজ্য ও ৮টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্যে আজ নির্বাচন হচ্ছে ১৭টি রাজ্য ও ৪টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ১০২টি আসনে। নির্বাচনে মূল লড়াই হচ্ছে ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট ও ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ‘ইনডিয়া’ জোটের মধ্যে। ক্ষমতাসীন এনডিএ জোটের মূল দল ভারতীয় জনতা পার্টি এককভাবে এবার ৩৭০ আসনের টার্গেট নিয়ে এগোচ্ছে। আর জোটগতভাবে তাদের লক্ষ্য ৪০০ আসন। বেশিরভাগ জনমত জরিপে ফের বিজেপি জোটেরই ক্ষমতায় আসার আভাস মিলেছে। খবর এনডিটিভি ও আনন্দবাজার অনলাইনের। আজ যে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলোতে ভোট হবে সেগুলো হলো পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখন্ড, ত্রিপুরা, তামিলনাড়ু, সিকিম, রাজস্থান, পদুচেরি, নাগাল্যান্ড, মিজোরাম, মেঘালয়, মণিপুর, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, লাক্ষাদ্বীপ, জম্মু ও কাশ্মীর, ছত্তিশগড়, আসাম, অরুণাচল প্রদেশ এবং আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার, জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ার এ তিন আসনে আজ ভোট হবে। গত ১৬ মার্চ ভারতের প্রধান নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার লোকসভা নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা করেন। তপশিল অনুযায়ী, মোট সাত দফায় এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম দফার ভোট আজ ১৯ এপ্রিল, এরপর ২৬ এপ্রিল, ৭ মে, ১৩ মে, ২০ মে, ২৫ মে এবং ১ জুন সবশেষ দফার ভোট হবে। ৪ জুন ভোটের ফল প্রকাশ করা হবে। লোকসভা আসন কম এমন কয়েকটি রাজ্যে মাত্র এক দিনেই ভোট হবে। কিন্তু যেসব রাজ্যে আসন বেশি সেখানে কয়েক দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ভারতের জনসংখ্যা; তার সঙ্গে সঙ্গে নির্বাচনের সময়ও দীর্ঘ হয়েছে। যেমন ১৯৮০-এর দশকে ভোটের পুরো সময়টা ছিল মাত্র চার দিন, ২০১৯ সালে হয় ৩৯ দিনব্যাপী আর ২০২৪ সালে এসে তা হচ্ছে ৪৪ দিনব্যাপী। ২০১৯ সালের সর্বশেষ লোকসভা নির্বাচনে ৫৪৩টি আসনের মধ্যে বিজেপি জিতেছিল ৩০৩টি, কংগ্রেস ৫২টি, সমাজবাদী পার্টি ৫টি, বহুজন সমাজ পার্টি ১০, তৃণমূল ২২, ডিএমকে ২৩, ওয়াইএসআর কংগ্রেস ২২ এবং টিডিপি ২টি আসনে জিতেছিল। গত নির্বাচনে গোটা দেশে নারী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন বিজেপির ৪০ জন, তৃণমূলের ৯ জন, কংগ্রেসের ৬ জন, ওডিশার বিজেডির ৫ জন মিলিয়ে সর্বমোট ৭৮ জন। আর এ বছর ভারতে প্রথম ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন (১৮-১৯ বছর) ১ কোটি ৮০ লাখ ভোটার। এবারের অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনে ৯৬ কোটি ৯০ লাখ অর্থাৎ প্রায় ৯৭ কোটি ভোটার ভোট দেবেন। অংশ নিচ্ছে ২ হাজার ৬৬০ টি রাজনৈতিক দল। ১০ লাখ ভোটকেন্দ্রে থাকবেন দেড় কোটি ভোটগ্রহণ কর্মী। ভোট নেওয়া হবে ৫৫ লাখ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)। এবারের নির্বাচনী ব্যয় ১৪.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা গত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ব্যয়ের সমান। নির্বাচনী এ মহাযজ্ঞের সব প্রস্তুতিও শেষ হয়েছে। ভারতজুড়ে ভোটারদের কাছে পৌঁছানোর জন্য নির্বাচনী কর্মকর্তারা সুউচ্চ পাহাড়ে চড়ছেন, নদী পাড়ি দিচ্ছেন, সহিংস বিদ্রোহী তৎপরতা প্রবণ এলাকাগুলোর ভেতর দিয়েও গন্তব্যে পৌঁছাচ্ছেন তারা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভারতের নির্বাচন কমিশন বলেছে, বিশ্বের সবচেয়ে বড় নির্বাচনী আয়োজনের চেষ্টা চলছে। মাওবাদী সহিংসতাপূর্ণ হিমালয় ও মধ্য ভারতীয় নির্বাচনী এলাকা গাদচিরোলি-চিমুরের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বহুসংখ্যক নির্বাচন কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়েছে। ৮৫০ জন ভোট গ্রহণ কর্মীও সেখানে পাঠানো হচ্ছে। দেড় মাসব্যাপী এ নির্বাচনী মহাযজ্ঞ যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা যায় তার সব রকমের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
১৯ এপ্রিল, ২০২৪
X