বঙ্গবন্ধু মে দিবসকে জাতীয় দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন
১৮৮৬ সালের ৪ মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটে দৈনিক ৮ ঘণ্টা শ্রমের দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর গুলি চালিয়ে ১০-১২ জন শ্রমিককে হত্যার ঘটনার প্রেক্ষাপটে বিশ্ব মে দিবস পালন করা হয়ে থাকে। তখন কাজ করতে হতো ১২-১৪ ঘণ্টা। ১৮৮৯ সালে ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব সোশ্যালিস্ট গ্রুপস এবং ট্রেড ইউনিয়নস যৌথভাবে পহেলা মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেয়।  মে দিবস সারা বিশ্বে শ্রমিকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন এই দিনে শ্রমিক আন্দোলনের ইতিহাস প্রতিফলিত হয়েছে এবং একটি ন্যায্য, অধিকতর ন্যায়সঙ্গত সমাজ বিনির্মাণের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত হয়েছে। মে দিবসের মূল চেতনার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে, বাংলাদেশ এবং সারা বিশ্বের শ্রমিকদের সংগঠিত হওয়ার এবং শ্রমিক শ্রেণির ক্ষমতায়নের সপক্ষে সোচ্চার হওয়ার জন্য ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের অধিকার পাওয়া নিঃসন্দেহে শ্রমিক অধিকারের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিক। শ্রমিকদের একত্রিত হওয়া দুনিয়ার মজদুর এক হও এবং অবস্থার পরিবর্তনের দাবি করার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম প্রদান করা মে দিবসের তাৎপর্য উপলব্ধির এক ফলিত দিক।  আমরা যাকে ঐতিহাসিক মে দিবস হিসেবে জানি, তা আবার আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস নামেও পরিচিত। বিশ্বব্যাপী শ্রমিক আন্দোলনের দীর্ঘ সংগ্রাম এবং তার অর্জনকে স্মরণ করার জন্যে প্রতিবছর পহেলা মে বিশ্বজুড়ে এই দিবস পালিত হয়। দিবসটির শেকড় নিহিত আছে শ্রমিকদের ঐতিহাসিক সংগ্রামের মধ্যে, যারা উন্নত কর্মপরিবেশ, ন্যায্য মজুরি এবং সংগঠিত হওয়ার অধিকারের জন্য লড়াই করেছিলেন যুগের পর যুগ ধরে। প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন অকাতরে।  বিশ্বের সব শ্রমিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট আন্দোলনের প্রেরণা হিসেবে কার্যকর ভূমিকা পালন করে আসছে। সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণের জন্য চলমান লড়াই বাস্তবায়নের ক্ষেত্র প্রসারিত করছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং শ্রমিক আন্দোলনের ভূমিকার সাথে জড়িত। বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমশক্তির উৎস, কোটি কোটি শ্রমিক দেশে-বিদেশে বিভিন্ন শিল্প, যেমন-টেক্সটাইল, কৃষিসহ রকমারি উৎপাদনে নিযুক্ত। বাংলাদেশের গার্মেন্ট চীনের পর বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রফতানিকারক শিল্প।  ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিলের রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় ১১৭৫ জন শ্রমিক নিহত এবং ২ হাজারেরও বেশি আহত হয়েছিলেন, যা বিশ্বের ইতিহাসে তৃতীয় বৃহত্তম শিল্প দুর্ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হয়। এই ঘটনা বাংলাদেশের শ্রমবাজারে মারাত্মকভাবে এক নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে আসে। একবিংশ শতাব্দীর রকমারি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার সঙ্গে সঙ্গে মে দিবস শ্রমিকদের অধিকারের জন্য চলমান সংগ্রাম এবং আরও ন্যায্য ও ন্যায়সঙ্গত সমাজের জন্য লড়াইয়ে চালক হিসেবে কাজ করে। সমাজে শ্রমিকদের মৌলিক ভূমিকার স্বীকৃতি এবং তাদের প্রতি ন্যায্য আচরণ ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তার নিশ্চয়তা বিধান মে দিবসের তাৎপর্য বর্ধন করে।  বিশ্বজুড়ে শ্রমিকদের অবস্থান ঐতিহাসিকভাবে প্রান্তিক হয়ে পড়ছে। শ্রমিকরা আজও নানামুখী শোষণ, অনিরাপদ কাজের পরিস্থিতি এবং মৌলিক অধিকার ও  অন্যান্য আনুষঙ্গিক সুবিধা বঞ্চিত থেকেই যাচ্ছে। মে দিবসের ঐতিহ্যপুষ্ট শ্রমিক জাগরণ সমস্যাগুলোর সমাধান নিশ্চিত করে শ্রমিকদের প্রাপ্য মর্যাদা ও যথাযথ সম্মান প্রদর্শনের পথ সুগম করে। আন্তর্জাতিক শ্রমিক আন্দোলন ও শ্রম অধিকার আদায়ের এ দিনটি বছরের পর বছর ধরে বিশ্বব্যাপী যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয়ে আসছে। শ্রমিকদের সম্মানে মে দিবস বা পয়লা মে জাতীয় ছুটির দিন হিসেবে পালন করে বিশ্বের শতাধিক দেশ। কিন্তু যাদের নিয়ে এই দিবস, তারা এ সম্পর্কে কতটা অবগত? অনেক শ্রমিক জানেনই না এর ইতিহাস। শ্রমিকদের অধিকার ও দাবির প্রতি সম্মান দেখিয়ে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পে মে দিবস পালিত হয়। স্বাধীনতার পর মে দিবস রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পায়। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে মহান মে দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে মে দিবসকে জাতীয় দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। এরপর থেকে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয় মে দিবস। এই দিবস পালনের মূল উদ্দেশ্য থাকে শ্রমিকদের তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করা। যাতে করে তারা মে দিবসের প্রকৃত ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারেন ও নিজ অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারেন। কিন্তু যে উদ্দেশ্যে আমরা মে দিবস পালন করি, সেটি কতটা সফল হয়, তা নিতে প্রশ্ন আসতে পারে। আসাটা বেশ স্বাভাবিক। শ্রমিকরা তাদের দাবি মালিকপক্ষ বা সরকারের কাছে তুলে ধরতে পারে। তাতে শ্রমিক ও মালিকপক্ষের দূরত্ব অনেকখানি লাঘব হচ্ছে। শ্রম আইনগুলো কঠোরতার সঙ্গে বাস্তবায়ন করতে হবে। সেই সঙ্গে তৈরি করতে হবে শ্রমিকবান্ধব আইন, যা শ্রমিকদের স্বার্থে কথা বলবে। এর মাধ্যমে গড়ে উঠবে একটি বৈষম্যহীন শ্রমিক সংঘ এবং এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের অর্থনীতি। ১৮৮৬ থেকে ২০২৪। শ্রমের মর্যাদা, মূল্য ও ন্যায্য মজুরি শুধু নয়, যুক্তিসঙ্গত কর্ম সময় নির্ধারণের আন্দোলনের ১৩৮ বছর। গত ১৩৮ বছরে অনেক পরিবর্তন হয়েছে মানুষের সমাজ ও সভ্যতার। কিন্তু, এই প্রশ্নের আজো উত্তর খুঁজতে হয়, এতো উন্নতি-অগ্রগতি সাধিত হলেও শ্রমিকের অধিকার কতটুকু প্রতিষ্ঠিত হয়েছে? বাংলাদেশে স্বাধীনতার পর থেকেই মে দিবস সরকারি ছুটির দিন হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। মে দিবসের প্রধান দাবি ৮ ঘণ্টা কর্মদিবস ২২ লাখের বেশি সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারীদের ক্ষেত্রে বাস্তবায়িত হলেও কোটি কোটি বেসরকারি শ্রমিক কর্মচারীরা এখনও ৮ ঘণ্টা কর্মদিবসের সুফল পায় না। বরং কৌশলে ১০ ঘণ্টা কাজের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। নিম্ন মজুরির ফাঁদে শ্রমজীবী মানুষ এমনভাবে আটকে যায় যে শ্রমিকরা এখন বাধ্য হয় ওভার টাইম করতে, তা না হলে তার সংসার চালানো অসম্ভব। শ্রমিকের শ্রম, সময় বাড়ানো আর যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ানো। ফলে কর্মঘণ্টা বাড়ছে, উৎপাদন বাড়ছে। সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বেকারত্ব।  প্রতি বছর শ্রমবাজারে কাজ প্রত্যাশী ২০ থেকে ২২ লাখ তরুণ-যুবক আসে যাদের মাত্র দুই-তিন লাখ লাখের মতো কর্মসংস্থান রাষ্ট্র করতে পারে। এরপর, সাত থেকে ১০ লাখ মানুষ পাড়ি জমায় বিদেশে কাজ করতে। আর বাকিরা দেশে কোনোমতে কাজ খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা করে। দেশের ছয় কোটি ৩৪ লাখ শ্রমজীবীর মধ্যে প্রায় তিন কোটি কাজ করে কৃষিখাতে। যেখানে বছরে ৩ মাসের বেশি কাজ থাকে না ফলে বহু ধরনের অপ্রাতিষ্ঠানিক কাজের মাধ্যমে তারা টিকে থাকার চেষ্টা করে। এর বাইরে ৪০ লাখ শ্রমিক গার্মেন্টসে; ৩০ লাখের বেশি নির্মাণ খাতে; ৫০ লাখ পরিবহন খাতে; ১০ লাখের বেশি দোকান কর্মচারী; পাট, চা, চামড়া, তাঁত, রি রোলিং, মোটর মেকানিক, লবণ, চিংড়ি, সংবাদমাধ্যম, হাসপাতাল-ক্লিনিক, পুস্তক বাঁধাই, হকার, রিকশাভ্যান চালক, ইজি-বাইক চালক, সিকিউরিটি গার্ডসহ বিভিন্ন খাতে কাজ করছে। শ্রম শক্তির ১ কোটি ২ লাখ প্রাতিষ্ঠানিক খাতে আর বাকিরা অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করে থাকে। মজুরি বোর্ডের মাধ্যমে ৪৩টি সেক্টরের শ্রমজীবীদের নিম্নতম মজুরি নির্ধারণের ব্যবস্থা থাকলেও বাকি কোটি কোটি শ্রমিকের কাজ নাই তো মজুরি নাই নীতিতে কাজ করানো হয়ে থাকে। শ্রমিকদের সংগঠিত হওয়ার পথে আইনি এবং আইন বহির্ভূত অসংখ্য বাধা।  অটোমেশনের কারণে অনেক শ্রমভিত্তিক কাজ যন্ত্রনির্ভর হবে। যন্ত্রের শক্তি মানুষের শ্রমকে লাঘব করবে। ফলে অল্প সময়ে বেশি উৎপাদন হবে- এই প্রত্যাশা থাকলেও বাস্তবে শ্রমিকের শ্রম সময় কমছে না। নারী শ্রমিকের শিল্পে আগমন বেড়েছে কিন্তু তাদের মাতৃত্ব, সংসারের কাজ নিয়ে দ্বিগুণ চাপ বহন করতে হচ্ছে। কর্মক্ষেত্রে অতিরিক্ত পরিশ্রম এবং একঘেঁয়ে সাংসারিক কাজ নিংড়ে নিচ্ছে নারীদের শ্রমশক্তি।  মুনাফা এবং মজুরির যে বিরোধ- সেই বিরোধে শ্রমিক সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও দুর্বল এবং শোষিত। ফলে সারাদুনিয়াতে খাদ্য-পণ্য ও ব্যবহারিক পণ্য উৎপাদন বাড়লেও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। পুষ্টিকর খাদ্যদ্রব্য তা সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। আয়ের বড় অংশ খাদ্য, বাড়িভাড়া, পোশাক, চিকিৎসায় ব্যয় হয়ে যাওয়ার ফলে সঞ্চয় যেমন থাকছে না তেমনি দক্ষতা অর্জনের জন্য বাড়তি খরচ করাও শ্রমিকের জন্য সম্ভব হয়ে উঠছে না। তবে শ্রমিকদের কল্যাণে কাজ করছে সরকার। তাদের জীবনমান উন্নয়ন এবং সুরক্ষায় আইনগত কাঠামো সূদৃঢ় করা হয়েছে। মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরির নিশ্চয়তা, চাকরির নিরাপত্তা এবং শ্রমিক কল্যাণ ও ট্রেড ইউনিয়ন অধিকারের স্বীকৃতি প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে সরকার। এছাড়া পুরুষ ও নারী শ্রমিকদের বেতন বৈষম্য দূর করতে নেওয়া হয়েছে কার্যকরী উদ্যোগ। শ্রমিক-মালিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে সরকারের উদ্যোগের পাশাপাশি দেশে ৪৩টি শিল্প সেক্টরের মধ্যে ৪০টি সেক্টরে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি শতভাগ বৃদ্ধি করে ৮ হাজার ৩০০ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার।  বাংলাদেশ কৃষিভিত্তিক অর্থনীতির দেশ। কৃষিকে শিল্পে রূপান্তরের পাশাপাশি সরকার কৃষি কাজে নিয়োজিতদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। পোশাক শিল্পে পরিকল্পিত অন্তর্ঘাত এবং ফ্যাক্টরিতে উপর্যুপরি দুর্ঘটনা রোধ করতেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে শ্রম আইন নীতিমালা, শিশু  শ্রম নিরসন, গৃহকর্মী সুরক্ষা ও পেশাগত নিরাপত্তা বিধানে আইনগত কাঠামো সূদৃঢ় করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে দেশের শ্রমজীবী মানুষের জীবন-মান উন্নয়ন ও কল্যাণে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। বিশ্বের শ্রমজীবী ও মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার গৌরবোজ্জ্বল ত্যাগের ঐতিহাসিক দিন মহান মে দিবসে ১৮৮৬ সালের পহেলা মে।  সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন শোষিত, বঞ্চিত ও শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছেন। শোষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি ১৯৭২ সালে শ্রমনীতি প্রণয়ন করেন। তিনি পরিত্যক্ত কল-কারখানা জাতীয়করণ করে দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী এবং শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করেন।  মালিক-শ্রমিকের মধ্যে সৌহার্দ্য ও সুসম্পর্ক বজায় রাখার মাধ্যমে নিরাপদ কর্মপরিবেশ, সামাজিক নিরাপত্তা ও শ্রমিক কল্যাণ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ শ্রম আইন যুগোপযোগী ও আধুনিকায়ন করে বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) আইন-২০১৮ প্রণয়ন করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন খাতে কর্মরত শ্রমিকদের কল্যাণ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন গঠন করা হয়েছে।  এই তহবিল থেকে যেকোনো শ্রমিক কর্মরত অবস্থায় দুর্ঘটনাজনিত কারণে স্থায়ীভাবে অক্ষম হলে অথবা মৃত্যুবরণ করলে, জরুরি চিকিৎসা ব্যয়নির্বাহ ও দুরারোগ্য ব্যাধির চিকিৎসার জন্য এবং শ্রমিকদের সন্তানের উচ্চ শিক্ষার জন্যেও আর্থিক সহায়তা পাচ্ছেন। আমরা রপ্তানিমুখী গার্মেন্টস শিল্পে কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীদের সার্বিক কল্যাণে আর্থিক সহায়তা প্রদানে একটি কেন্দ্রীয় তহবিল গঠন করেছে এবং সহযোগিতা অব্যাহত রাখা হয়েছে। সব সেক্টরে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বাড়ানো হয়েছে।  শ্রমিকদের সামাজিক মর্যাদা, স্বাস্থ্য ও সেইফটি নিশ্চিতকল্পে জাতীয় শ্রমনীতি-২০১২, জাতীয় শিশুশ্রম নিরসন নীতি-২০১০, জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি নীতিমালা ২০১৩, বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা-২০১৫ এবং গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি-২০১৫ প্রণয়ন করা হয়েছে; যা বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে স্থিতিশীল শিল্পসম্পর্ক এবং উদীয়মান অর্থনীতির দেশ হিসেবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক এবং কার্যক্রম আরো সুদৃঢ় হয়েছে। শিল্প-কারখানায় কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করতে কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন পরিদপ্তরকে অধিদপ্তরে উন্নীত করা হয়েছে। শ্রমিক ও তাদের পরিবারের কল্যাণে বিভিন্ন সেবার সম্প্রসারণ ও জোরদারকরণে শ্রম পরিদপ্তরকে অধিদপ্তরে রূপান্তর করা হয়েছে। শ্রমিক ভাই-বোনদের যেকোনো সমস্যা সংক্রান্ত অভিযোগ গ্রহণ, অভিযোগ নিষ্পত্তি ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদানের জন্য সার্বক্ষণিক টোল ফ্রি হেল্প লাইন (১৬৩৫৭) চালু করা হয়েছে। শিল্প কারখানায় বিশেষ করে গার্মেন্টস শিল্পে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যথাযথ পরিদর্শন ও মনিটরিং ব্যবস্থা চলমান রয়েছে। এছাড়া শ্রমিকদের জন্য শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার প্রয়াসের অংশ হিসেবে রাজশাহীতে জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তাবিষয়ক গবেষণা এবং প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট নির্মাণ করা হচ্ছে। মহান মে দিবসের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে শ্রমিক এবং মালিক পরস্পর সুসম্পর্ক বজায় রেখে জাতীয় উৎপাদন বৃদ্ধিতে নিবেদিত হবেন। আমরা শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণ ও দেশের সার্বিক উন্নয়নের মধ্য দিয়ে জাতির পিতার স্বপ্নের উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে উঠবে। (লেখক : প্রাবন্ধিক, গবেষক ও কলামিস্ট)
২৯ এপ্রিল, ২০২৪

হাসপাতালে জাতীয় দিবস পালন না করায় শোকজ
ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস এবং ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস পালন না করায় হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক শামিম আহমেদকে কারণ দর্শাতে (শোকজ) বলা হয়েছে। গত বুধবার বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল স্বাক্ষরিত চিঠিতে জাতীয় দিবস যথাযথভাবে পালন না করার কথা উল্লেখ করা হয়। নোটিশে বলা হয়, গত ১৭ মার্চ জাতির পিতার জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস এবং ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে সরকারি নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও ঝালকাঠি হাসপাতালে কোনো আলোকসজ্জা করা হয়নি। টানানো হয়নি ব্যানার। জাতীয় দিবসে সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়ন না করা কোনোভাবেই কাম্য নয় উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়েছে, কী কারণে যথাযথভাবে জাতীয় দিবস পালন করা হয়নি, তার সুস্পষ্ট জবাব তিন কর্মদিবসের মধ্যে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ককে দিতে হবে।
৩০ মার্চ, ২০২৪

আইএসইউতে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড ইউনিভার্সিটিতে (আইএসইউ) আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আইএসইউ উপাচার্য প্রফেসর ড. আব্দুল আউয়াল খানের সভাপতিত্বে বুধবার (২৭ মার্চ) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মহাখালী ক্যাম্পাসে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আইএসইউ উপাচার্য প্রফেসর ড. আব্দুল আউয়াল খান বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ও দর্শন ছিল শোষণমুক্ত সমাজ গড়া। তার ঐতিহাসিক ভাষণ ও বলিষ্ঠ নেতৃত্ব আমাদেরকে এই অর্জিত স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সুদৃঢ় নেতৃত্বের কারণেই তিনি জনমানুষের হৃদয়ের নেতা হয়েছেন। তার স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আমাদের সবাইকে কাজ করতে হবে। বক্তারা বলেন, জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর শহীদরা মৃত্যুর যন্ত্রণা তিলে তিলে ভোগ করে আমাদেরকে স্বাধীনতার মধুর স্বাদ এনে দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নগুলো বাস্তবায়নে দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা ও দেশপ্রেম থাকতে হবে। বিশ্বের যে প্রান্তেই থাকি না কেন, দেশের জন্য কাজ করতে হবে। তরুণ সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে আইএসইউর শিক্ষার্থী আতিকা নওশীন বলেন, বঙ্গবন্ধুর আপসহীন নেতৃত্বে, তারুণ্যের শক্তিতে ভর করে আমরা একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছি, এই তারুণ্যের শক্তিকে কাজে লাগিয়েই বাংলাদেশকে নিয়ে যেতে হবে উন্নত দেশের কাতারে। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইএসইউ রেজিস্ট্রার মো. ফাইজুল্লাহ কৌশিক। বিশেষ অতিথি ছিলেন, ভারপ্রাপ্ত ট্রেজারার এইচ. টি. এম. কাদের নেওয়াজ। বিশেষ আলোচক ছিলেন, ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর মোহাম্মদ আলী।  জ্যেষ্ঠ প্রভাষক সুলতানা মুশফিকা রহমানের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন, আইএসইউ ইংরেজি বিভাগের উপদেষ্টা প্রফেসর মো. আসাদ উল্লাহ-আল-হোসেন, মানবিক ও সামাজিকবিজ্ঞান অনুষদ এর ডিন ও ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. আবুল কালাম আজাদ, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারপারসন প্রফেসর ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল বাসেদ মিয়া, ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের চেয়ারপারসন ড. মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারপারসন সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী।  অনুষ্ঠানে বিভিন্ন প্রোগ্রামের শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষার্থী ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন ।
২৭ মার্চ, ২০২৪

উৎসবমুখর পরিবেশে মিলানে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন
ইতালির বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রস্থল মিলানে বিপুল সংখ্যক প্রবাসীর অংশগ্রহণে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল, মিলানের উদ্যোগে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপিত হয়েছে। দিবসট উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় ব্যাপক সংখ্যক প্রবাসী নেতারা অংশগ্রহণ করেন। স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের পাশাপাশি বাংলাদেশে রেমিট্যান্স প্রেরণে কৃতিত্বপূর্ণ অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ কয়েকজন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে রেমিট্যান্স অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) সকালে কনস্যুলেট জেনারেল প্রাঙ্গণে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। কনস্যুলেটের সব কর্মকর্তা ও কর্মচারী ওই পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।  দিনের দ্বিতীয়ার্ধে কনসাল জেনারেল এম জে এইচ জাবেদের নেতৃত্বে কনস্যুলেটের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।  দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী কর্তৃক প্রেরিত বাণীসমূহ পাঠ করা হয়। মহান মুক্তিযুদ্ধ ও ২৬ মার্চের ওপর নির্মিত একটি বিশেষ প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। কনস্যুলেট মিলনাতয়নে মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে মিলানসহ উত্তর ইতালিতে বসবাসরত প্রবাসীদের মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে তিনজনকে ও ব্যক্তি পর্যায়ে দুজনকে রেমিট্যান্স অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।  কনস্যুলেট কর্তৃক আয়োজিত আলোচনা সভায় কনস্যুলেটের কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়াও বাংলাদেশ কমিউনিটি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ব্যবসায়ীসহ সর্বস্তরের প্রবাসী বাংলাদেশিরা উপস্থিত ছিলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সফল নেতৃত্বের বিভিন্ন দিকের ওপর আলোকপাত করে কনসাল জেনারেল এম জে এইচ জাবেদ বলেন, জাতির জনকের উদাত্ত আহ্বানে সাড়া দিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধারা মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন এবং তাদের চরম আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় আমদের স্বাধীনতা। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে আমাদের প্রত্যেককে দেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করতে হবে এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবে পরিণত করতে হবে। তিনি কূটনৈতিক অঙ্গণে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন সাফল্যের কথা তুলে ধরেন। এ ছাড়াও বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে ইতালি প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি স্বাধীনতাকে অর্থবহ করে তোলার লক্ষ্যে এবং বর্তমান সরকার ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে শিক্ষা কূটনীতি ও বিজ্ঞানমুখী শিক্ষাব্যবস্থা বাস্তবায়নের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন।  এ প্রসঙ্গে এম জে এইচ জাবেদ বলেন, কনস্যুলেটের উদ্যোগে ইতালির ত্রিয়েস্তেতে খ্যাতিমান পদার্থবিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার স্মৃতিধন্য The International Centre for Theoretical Physics-এর সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের একটি সমঝোতা স্মারক চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এ উদ্যোগ বাংলাদেশে বিজ্ঞান শিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।  তিনি আরও উল্লেখ করেন, ইতালিতে বাংলাদেশের একটি পেশাজীবী শ্রেণি গড়ে তোলার লক্ষ্যে কনস্যুলেটের উদ্যোগে The Association of Bangladeshi Students in Northern Italy (ABSNI) কাজ করছে। মহান স্বাধীনতার সুফল পেতে একটি সুশিক্ষিত ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই। এ লক্ষ্যে প্রবাসীদের অবদান রাখার জন্য এম জে এইচ জাবেদ বিশেষভাবে আহ্বান জানান।   পরিশেষে, মিলানের রিপামন্তি ইসলামিক সেন্টারের ইমাম মাওলানা কবির আহমেদ বিশেষ দোয়া পরিচালনা করেন। প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্বে ২০৪১ সালের মধ্যে ‘অসাম্প্রদায়িক, বিজ্ঞান-মনস্ক স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মানের জন্য একটি বিশেষ দোয়া পরিচালনা এবং ইফতার মাহফিল আয়োজনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি ঘটে।
২৭ মার্চ, ২০২৪

স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আ.লীগের আলোচনা সভা আজ
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে আজ। বুধবার (২৭ মার্চ) বেলা ১১টায় রাজধানীর তেজগাঁওয়ে অবস্থিত ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবনে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে। দলটির দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।  বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের আয়োজনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সংশ্লিষ্ট সবাইকে যথাসময়ে সভায় উপস্থিত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন।
২৭ মার্চ, ২০২৪

সৌদি আরবে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপিত
সৌদি আরবের রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপিত হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) সকালে দূতাবাস চত্বরে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার)। এরপর দূতাবাসে স্থাপিত অস্থায়ী স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রদূত। এ সময় দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া রিয়াদের বাংলাদেশ কমিউনিটির বিভিন্ন সংগঠন, রিয়াদে অবস্থিত বাংলাদেশ কমিউনিটি স্কুলের পক্ষ থেকে স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়। এ সময় রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই পূর্ব পাকিস্তান অঞ্চলের মানুষ অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষা, চাকরিসহ সব ক্ষেত্রেই বঞ্চিত হয়েছে, নিপীড়িত হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই বঞ্চনা ও শোষণের বিরুদ্ধে বরাবরই রুখে দাঁড়িয়েছেন। ভাষা আন্দোলন, যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৬৬ এর ছয় দফা, ’৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান ও ’৭০ সালের নির্বাচনের ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ মুক্তিকামী লাখো জনতার সামনে তার বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ডাকে সাড়া দিয়ে বাংলার আপামর জনগণ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। দীর্ঘ নয় মাসের সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত হয় আমাদের মহান স্বাধীনতা। রাষ্ট্রদূত বলেন, বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ, বাংলাদেশকে জানতে হলে বঙ্গবন্ধুকে জানতে হবে। তিনি প্রবাসে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মকে বাংলাদেশের ইতিহাস ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও আদর্শ সম্পর্কে জানার আহ্বান জানান। রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, বঙ্গবন্ধু একটি সুখী, সমৃদ্ধ স্বপ্নের সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখতেন। তার এই স্বপ্নকে বাস্তবায়নের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশে বিভিন্ন মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে একটি উচ্চ আয়ের দেশে উন্নীত করার রূপকল্প গ্রহণ করেছেন এবং তা অর্জনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি সবাইকে বৈধ পথে রেমিট্যান্স বাংলাদেশে প্রেরণের মাধ্যমে দেশের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।  মহান স্বাধীনতা দিবসে তিনি প্রবাসীদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নিজ নিজ অবস্থান থেকে দেশের উন্নয়নে ও ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।  দূতাবাসের কাউন্সিলর মো. বেলাল হোসেনের সঞ্চালনায় আলোচনা অনুষ্ঠানে দিবসটি উপলক্ষ্যে দেওয়া রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়। দিবসটি উপলক্ষ্যে প্রবাসীদের পক্ষ থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রকৌশলী মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, এম আর মাহবুব, মো. মনিরুল ইসলাম ও হাফিজুল ইসলাম পলাশ আলোচনায় অংশ নেন।  বক্তারা মহান মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর অবদান ও তার দর্শন, রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়ন ও দেশের উন্নয়নে প্রবাসীদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন। অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের সকল শহিদ, জাতির পিতা ও তার পরিবারের শহিদ সদস্য এবং দেশ জাতির মঙ্গল কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়।
২৬ মার্চ, ২০২৪

ঝিনাইদহে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন
ঝিনাইদহে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) সকাল ৭টায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ঝিনাইদহ জেলা শাখার  উদ্যোগে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের সদ্য দায়িত্ব প্রাপ্ত সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য সফিকুল ইসলাম অপু, সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু ও সহসভাপতি আলহাজ নজরুল ইসলাম দুলালসহ জেলা আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।   পরে সকাল ৯টায় শৈলকুপার কবিরপুরে মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভ ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মোরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আলহাজ নজরুল ইসলাম দুলাল। এ সময় আওয়ামী লীগ নেতা ও শৈলকুপা পৌর মেয়র  কাজী আশরাফুল আজম, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সরোয়ার জাহান বাদশা, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নায়েব আলী জোয়ার্দার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা আরিফ রেজা মন্নু, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জুলফিকার কায়সার টিপু, মোস্তাক শিকদারসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত  ছিলেন।
২৬ মার্চ, ২০২৪

মালয়েশিয়ায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালিত
যথাযোগ্য মর্যাদা ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে ৫৪তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদ্‌যাপিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) হাইকমিশনে দিবসটি উপলক্ষে নানা আয়োজন করা হয়। আয়োজনের প্রথম পর্বে মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান সকালে প্রবাসী বাংলাদেশি এবং হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। এরপর, তিনি উপস্থিত সবাইকে নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাণী পাঠ, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী, আলোচনা সভা ও বিশেষ মোনাজাত। অনুষ্ঠানের মূল আলোচনা পর্বে, হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের সব শহীদকে সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করেন এবং ঐতিহাসিক এই দিনটির প্রেক্ষাপট ও তাৎপর্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু সারাজীবন তার স্বপ্নের সোনার বাংলার জন্য সংগ্রাম করেছেন। বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শী নেতৃত্ব ও অসাধারণ ব্যক্তিত্ব সমগ্র বাঙালি জাতিকে এক সুতায় সংযুক্ত করে ৯ মাসে বাংলাদেশের দীর্ঘ লালিত স্বাধীনতা অর্জনে সহায়তা করেছে। হাইকমিশনার বলেন, বঙ্গবন্ধুর ‘সোনার বাংলা’ নির্মাণের স্বপ্নকে অনুসরণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি সমৃদ্ধ ও জ্ঞানভিত্তিক স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বদ্ধপরিকর। এজন্য তিনি স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছেন। তার কার্যকর পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশ একটি গতিশীল অর্থনীতি ও সম্ভাবনার দেশে পরিণত হয়েছে। দারিদ্র্যবিমোচন, নারীর ক্ষমতায়ন, পরিবেশ সুরক্ষা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা বিভিন্ন সামাজিক সূচকে বাংলাদেশের অগ্রগতি ঈর্ষণীয়। বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। গৌরবময় স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের এ আনন্দঘন অনুষ্ঠানে হাইকমিশনার মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে ঐক্যের আহ্বান জানান এবং মিশনের কাঙ্ক্ষিত সেবা সম্প্রসারণে আন্তরিক সহযোগিতা ও পরামর্শ কামনা করেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়তে প্রবাসীদের একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে মালয়েশিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশ কমিউনিটি, রাজনৈতিক নেতা, সাংবাদিক এবং হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, গত ৮ মার্চ বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার ৫৩তম বার্ষিকী এবং জাতীয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ হাইকমিশন একটি কূটনৈতিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে যাতে মালয়েশিয়ার প্রভাবশালী মানবসম্পদ মন্ত্রী স্টিভেন সিম চি কিয়ং সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
২৬ মার্চ, ২০২৪

সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের জাতীয় দিবস প্যারেডে বাংলাদেশি কন্টিনজেন্ট
সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের জাতীয় দিবস প্যারেডে অংশ নিয়েছে বাংলাদেশি কন্টিনজেন্ট। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিত বাংলাদেশ স্পেশাল ফোর্স কন্টিনজেন্ট-৮-এর ২৬ সদস্যের একটি দল গত ১ ডিসেম্বর প্যারেডে অংশ নেয়। মঙ্গলবার বিজ্ঞপ্তিতে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, প্যারেডে প্রধান অতিথি সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের প্রেসিডেন্ট ফস্টিন-আরচাংগে তৌদেরা এবং সেনাপ্রধান জেনারেল যেফিরিন মামাদৌ অভিবাদন গ্রহণ করেন। এই প্যারেডে বাংলাদেশ ছাড়া সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের ৪৮ কন্টিনজেন্ট অংশ নেয়। জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের সশস্ত্র বাহিনীতে ব্যবহৃত বিভিন্ন অস্ত্র সরঞ্জামাদি এবং বিভিন্ন আর্মাড ভেহিক্যাল সর্বসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়।
২০ ডিসেম্বর, ২০২৩
X