‘বিস্ফোরণে’ টুকরো টুকরো হয়ে যায় টাইটান
পর্যটকদের নিয়ে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে যাওয়া ডুবোযান টাইটান ‘বিপর্যয়কর বিস্ফোরণে’ ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। মারা গেছেন এতে থাকা পাঁচ আরোহীই। গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় দুপুরে ডুবোযানটি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসে যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ড এ ধারণা প্রকাশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র কোস্টগার্ডের কর্মকর্তা রিয়ার অ্যাডমিরাল জন মগার বলেন, টাইটান কীভাবে বিধ্বস্ত হলো তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে ধারণা করা হচ্ছে যানটি তলিয়ে যাওয়ার সময় তাতে আকস্মিক একটি বিস্ফোরণ হয়েছে। ডুবোযানের ভেতর ব্যাপকভাবে চাপ কমে যাওয়ায় এই বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভাঙা টুকরোগুলোর ধরন ও আকৃতি থেকে বোঝা যাচ্ছে, ডুবোযানটিতে ‘বিপর্যয়কর বিস্ফোরণ’ ঘটেছিল। ১৯১২ সালে আটলান্টিক মহাসাগরে ডুবে যাওয়া টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গত রোববার পর্যটকদের নিয়ে ডুব দিয়েছিল পর্যটন সংস্থা ওশানগেইটের ডুবোযান টাইটান। কিন্তু পৌনে দুই ঘণ্টার মাথায় টাইটানের সঙ্গে পানির ওপরে থাকা নিয়ন্ত্রক জাহাজ পোলার প্রিন্সের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তারপর থেকে চলছিল টাইটানের উদ্ধার অভিযান। উদ্ধারকারীদের আশা ছিল, হয়তো টাইটান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। যে কারণে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে উদ্ধারকর্মীরা ডুবোযানের অবস্থান শনাক্ত করে সেটাকে তুলে আনতে চাইছিলেন। তাদের ভয় ছিল, টাইটানে সংরক্ষিত অক্সিজেন বৃহস্পতিবার শেষ হয়ে গেলে আরোহীরা দম বন্ধ হয়ে মারা পড়তে পারেন। তাই সেদিন ডুবোযানটির খোঁজে একটি রিমোটলি অপারেটেড ভেহিকেল বা আরওভি আটলান্টিকের তলদেশে পৌঁছায়। পানির তলদেশে চলাচলে সক্ষম ওই রোবটযানটি কানাডার জাহাজ হরাইজন আর্কটিক থেকে পরিচালনা করা হচ্ছিল। এর মধ্যেই স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে খবর আসে, আটলান্টিকের তলদেশে পাঠানো রোবটযানটি টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের কাছে অন্য কিছুর ধ্বংসস্তূপ খুঁজে পেয়েছে। পরে রোবটযানের পাঠানো তথ্য বিশ্লেষণ করে সংবাদ সম্মেলন ডাকে যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ড। সেই সংবাদ সম্মেলনে রোবটযানের খুঁজে পাওয়া ধ্বংসস্তূপ ডুবোযান টাইটানের বলে নিশ্চিত করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, যে এলাকায় ধ্বংসস্তূপ খুঁজে পাওয়া গেছে, সেটি টাইটানিকের ধ্বাংসাবশেষ থেকে প্রায় ১৬০০ ফুট দূরে এবং সেখানে টাইটানিকের কোনো ধ্বংসাবশেষ পড়ে নেই। পাঁচ আরোহীর মরদেহ খুঁজে পাওয়া নিয়ে কোনো আশা দেখাতে পারেননি কর্তৃপক্ষ। এর আগে ওশানগেইট থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, টাইটানের আরোহীরা ‘দুঃখজনকভাবে হারিয়েই গেছেন’। টাইটানের ক্যাপসুলে থাকা পাঁচ আরোহীর মধ্যে ওশানগেইটের সহপ্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্টকটন রাশও ছিলেন। এ ছাড়া ছিলেন ব্রিটিশ ধনকুবের, বিমান সংস্থা অ্যাকশন এভিয়েশনের চেয়ারম্যান হামিশ হার্ডিং, পাকিস্তানের এংরো করপোরেশনের ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাদা দাউদ ও তার ছেলে সুলেমান দাউদ, ফরাসি পর্যটক পল অঁরি নারজিলে।
২৪ জুন, ২০২৩
X