গবেষণা / সিজারিয়ানে জন্ম নেওয়া শিশুর শরীরে হামের টিকা কম কার্যকর
সিজারিয়ানের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া শিশুদের ক্ষেত্রে হামের ভ্যাকসিন কম কার্যকর বলে জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক।  সোমবার (১৩) গবেষণাপত্রটি নেচার জার্নালের মাইক্রোবায়োলজি (অণুজীববিজ্ঞান) বিভাগে প্রকাশিত হয়েছে। এদিন টেলিগ্রাপের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। গবেষণামূলক ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিজারিয়ান শিশুদের ক্ষেত্রে টিকা কম কার্যকর হওয়ার মানে হচ্ছে- প্রথম ডোজের টিকা গ্রহণের পরও শিশুর রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা হামের সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য অ্যান্টিবডি তৈরি করতে না পারা। এই কারণে শিশুরা এই রোগের ক্ষেত্রে সংবেদনশীল থাকে। তবে, হামের দ্বিতীয় ডোজের টিকা সিজারিয়ান এসব শিশুদের শরীরে দিলে হামের বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিরোধব্যবস্থা গড়ে তোলে।  গবেষণাপত্রটির কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের জিনবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও যুগ্ম প্রধান লেখক হেনরিক সালজে বলেন, সিজারিয়ান অনেক শিশুর হামের টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয় না, যা শিশুর নিজের জন্য ও বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর জন্য বিপজ্জনক। কারণ সিজারে জন্ম নেওয়া শিশুর শর‍ীরে প্রথম ডোজের টিকার সেভাবে কোনো কার্যকারিতা থাকে না। তাই সিজারে জন্ম হওয়া শিশুদের দ্বিতীয় ডোজের হামের টিকা দেওয়া নিশ্চিত করতে হবে। অনেক সময় প্রথম ডোজের টিকা দেওয়ার পরও শিশুর হাম হলে, অভিভাবকরা আর দ্বিতীয় ডোজ দিতে আগ্রহী হয় না। গবেষক সালজে বলেন, স্বাভাবিকভাবে জন্ম নেওয়া শিশুদের মতো সিজারের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া শিশুরা একইভাবে মায়ের মাইক্রোবায়োমের সংস্পর্শে আসে না। ফলে তাদের অন্ত্রের মাইক্রোবায়োম বিকাশে বেশি সময় লাগে। এ কারণে হামসহ বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে এসব শিশুকে অবশ্যই পূর্ণ ডোজ টিকা দিতে হবে।  সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানগুলো থেকে জানা গেছে, যুক্তরাজ্যে মাত্র ৮৯.১ শতাংশ শিশু তাদের হাম, মাম্পস এবং রুবেলা (এমএমআর) ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ দুই বছর বয়সের মধ্যে পেয়েছে এবং পাঁচ বছর বয়সের মধ্যে মাত্র ৮৫ শতাংশ দুই ডোজ পেয়েছে। যেখানে হাম নিয়ন্ত্রণে জনসংখ্যার অন্তত ৯৫ শতাংশ শিশুকে এই টিকা দেওয়া দরকার। এই বিষয়টি পর্যবেক্ষণের জন্য চীনের হুনান প্রদেশের ১ হাজার ৫০০টিরও বেশি শিশুর পূর্ববর্তী গবেষণার ডেটা ব্যবহার করেন গবেষকরা। জন্ম থেকে ১২ বছর পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহে এসব শিশুর রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এর মাধ্যমে জীবনের প্রথম কয়েক বছরে তাদের রক্তে হামের অ্যান্টিবডির মাত্রা কতটুকু পরিবর্তন হয়েছে তা দেখা যায়। এ ছাড়া টিকা দেওয়া পরও অ্যান্টিবডির মাত্রা পর্যবেক্ষণ করা হয়। গবেষণায় দেখা যায়, হামের টিকা নেওয়ার পর স্বাভাবিকভাবে জন্ম নেওয়া ৫ শতাংশ শিশুর মধ্যে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়নি। বিপরীতে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া ১২ শতাংশ শিশুর মধ্যে প্রথম ডোজের টিকার কার্যকারিতা পরিলক্ষিত হয়নি। অর্থাৎ সিজারের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া শিশুদের প্রথম টিকার বিপরীতে তুলনামূলক কম প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়। প্রসঙ্গত, ১৯৬৩ সালে হামের টিকা আবিষ্কার হয়। ১৯৭১ সালে এটি সহজলভ্য হয়। এর আগে কয়েক বছর পরপর হাম মহামারির আকার ধারণ করত। হামের প্রাদুর্ভাবে প্রতিবছর লাখ লাখ মানুষের প্রাণহানি হতো।  
১৪ মে, ২০২৪

বাজার থেকে টিকা তুলে নিচ্ছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা
বাজার থেকে কভিড-১৯ টিকা তুলে নিচ্ছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা। কোম্পানিটি ভ্যাক্সজেভ্রিয়া বা কোভিশিল্ড টিকা তুলে নেবে। করোনা মহামারির সময় অ্যাস্ট্রাজেনেকা অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে কভিভ-১৯-এর যে টিকা উৎপাদন করে, তার ব্র্যান্ড নাম ভ্যাক্সজেভ্রিয়া। এর পর ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট সেই টিকা উৎপাদনের লাইসেন্স পায়। তারা কোভিশিল্ড নামে সেই টিকা বাজারজাত করে। সিএনএন ও দ্য গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়, গত মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে অ্যাস্ট্রাজেনেকা বলেছে, চাহিদা হ্রাস পাওয়ার কারণে কভিড টিকা প্রত্যাহার করা হচ্ছে। বাজারে বর্তমানে কভিডের অনেক টিকা এসেছে। ফলে ভ্যাক্সজেভ্রিয়ার চাহিদা কমে যাওয়ায় উদ্বৃত্ত থাকছে। তাই এই টিকা আর উৎপাদন বা সরবরাহ করা হবে না। এ ছাড়া ভাইরাসের অনেক উপধরনের কারণে কভিড-১৯ এখন দুর্বল হয়ে পড়েছে। এই ভাইরাস এখন আর আগের মতো প্রাণঘাতী নয়। এসব বিবেচনা করে অ্যাস্ট্রাজেনেকা বাজার থেকে টিকা প্রত্যাহার করে নেওয়া শুরু করেছে। তারা দাবি করেছে, শুধুমাত্র বাণিজ্যিক কারণেই বাজার থেকে টিকা প্রত্যাহার করা হচ্ছে। এর সঙ্গে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। যদিও এর আগে অ্যাস্ট্রাজেনেকা আদালতে স্বীকার করেছিল, এই টিকার কারণে রক্ত জমাট বাঁধা ও রক্তচাপ কমে যাওয়ার মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। চলতি বছরের মার্চে অ্যাস্ট্রাজেনেকা এই টিকা বাজার থেকে তুলে নেওয়ার আবেদন করে। মঙ্গলবার থেকে তা কার্যকর হয়। যদিও অন্যান্য দেশ এরই মধ্যে এই টিকা প্রয়োগ বন্ধ করে দিয়েছে। ২০২৩ সালের মার্চে অস্ট্রেলিয়ায় এই টিকার প্রয়োগ বন্ধ হয়। কোম্পানিটি বাণিজ্যিক কারণে টিকা তুলে নেওয়ার কথা বললেও তাদের বিরুদ্ধে মামলা চলমান। মামলায় বলা হয়েছে, কোভিশিল্ডের টিকা নেওয়ার পর একাধিক মৃত্যু ও গুরুতর অসুস্থতার ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। ভারতে করুনিয়া নামে এক তরুণী কোভিশিল্ড টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় মারা গেছেন বলে অভিযোগ করেছেন তার বাবা। এদিকে বিশ্বব্যাপী অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা প্রত্যাহারের ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশেও গ্রহীতারা কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ভুগছেন কি না জানতে জরিপ চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। গতকাল বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সর্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকরণে টিকাদান কর্মসূচিকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। স্বাস্থমন্ত্রী বলেন, এটা (টিকা তুলে নেওয়ার বিষয়) আমরা শুনেছি। তবে, আমাদের দেশে এ ধরনের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার রিপোর্ট আমরা এখনো পাইনি। বিষয়টি জানার পর এরই মধ্যে ডিজি হেলথকে নির্দেশনা দিয়েছি। তারা এটা জরিপ করছে। মানে যাদের এ টিকা দেওয়া হয়েছে, তাদের ওপর জরিপ চারিয়ে আমাকে রিপোর্ট দেবে। আমরা বিষয়টি নিয়ে কনসার্ন করব। উল্লেখ্য, কভিড-১৯-এর টিকা আবিষ্কারের পর তা বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। এর পর এই টিকা ২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বর ব্রিটেনে ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়। এর পর প্রথম টিকা দেওয়া হয় ২০২১ সালের ৪ জানুয়ারি। এক হিসাবে, ২০২১ সালেই ৬৫ লাখের বেশি মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে এই টিকা বিশ্বব্যাপী সরবরাহ করা হয় ৩০০ কোটিরও বেশি ডোজ।
০৯ মে, ২০২৪

বাজার থেকে করোনা টিকা তুলে নিচ্ছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা
বাজার থেকে নিজেদের তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা তুলে নিচ্ছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা। মঙ্গলবার (৭ মে) তারা এ ঘোষণা দেয়। কোম্পানিটি নতুন করে আর কোভিড-১৯-এর টিকা উৎপাদনও করবে না। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনা টিকায় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ধরা পড়ে। ব্রিটিশ-সুইডিশ ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানটি সম্প্রতি আদালতের প্রেরণ করা নথিতে স্বীকার করেছে, টিকাটি গ্রহণকারীর দেহে রক্ত​জমাট বাঁধা এবং রক্তের প্ল্যাটিলেট সংখ্যা কম হওয়ার মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। কিন্তু মঙ্গলবারের বিবৃতিতে অ্যাস্ট্রাজেনেকা এসবের কিছুই উল্লেখ করেনি। বাজার থেকে টিকা প্রত্যাহারের কারণ হিসেবে তারা জানায়, করোনার বিভিন্ন ধরন মোকাবিলায় বাজারে যথেষ্ট টিকা আছে। সেসব সাম্প্রতিক হওয়ায় বেশি কার্যকর। এতে অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি টিকার চাহিদা কমে গেছে। এ জন্য তারা নতুন উৎপাদনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সে সঙ্গে বাজারে থাকা টিকাগুলোও কোম্পানিটি তুলে নেবে। এর আগে গত মার্চে অ্যাস্ট্রাজেনেকা স্বেচ্ছায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারজাতকরণ অনুমোদন চুক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়। মূলত এই চুক্তি ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে ওষুধ বাজারজাত করার অনুমতি দেয়। এবার পুরো বিশ্ব থেকে টিকা সরিয়ে নিচ্ছে তারা। ওই কোভিড ভ্যাকসিনটি ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সীদের ব্যবহারের জন্য অনুমোদিত ছিল। সাধারণত তিন মাসের ব্যবধানে বাহুর পেশিতে দুটি ইনজেকশন হিসেবে টিকাটি দেওয়া হতো। কিছু দেশে বুস্টার ডোজ হিসেবে তৃতীয় ইনজেকশনে টিকা দেওয়া হয়েছে। পরে টিকাটি নিয়ে বিতর্ক উঠতে থাকে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর হলো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ‘খুব বিরল টিটিএস’-এর ঘটনা। এর ফলেই রক্তে প্ল্যাটিলেট কমে যাওয়া এবং রক্ত জমাট বেঁধে যেতে পারে। খবরটি প্রচার পেলে বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক তৈরি হয়। অনেকে ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করেন। অ্যাস্ট্রাজেনেকার বিরুদ্ধে ব্রিটিশ হাইকোর্টে ৫১টি মামলা চলছে। এদিকে বাংলাদেশ ও ভারতের অনেকে এ টিকা গ্রহণ করেছেন। টিকা গ্রহণকারীরা কতটা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ভারতের সংবাদ সংস্থা আইএএনএস-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দেশটির সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ঈশ্বর গিলাদা জানিয়েছেন, থ্রোম্বোটিক থ্রম্বোসাইটোপেনিক সিনড্রোম হলো বিরল। কিন্তু এর প্রভাব গুরুতর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। মাত্র ০.০০২ শতাংশ ক্ষেত্রেই এ ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে। অর্থাৎ প্রতি ৫০ হাজার লোকের মধ্যে একজনেরও কম মানুষ এমন ঝুঁকিতে পড়তে পারেন। ভারতের মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের ন্যাশনাল কোভিড-১৯ টাস্কফোর্সের কো-চেয়ারম্যান ডা. রাজীব জয়দেব জানান, এ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া শুধু প্রথম ডোজ নেওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে দেখা গেছে। এরপর আর দেখা যায়নি। এ ছাড়া ভারতে ‘থ্রম্বোসিস থ্রোম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোম’ হওয়ার কোনো খবর নেই বলেও জানান তিনি।
০৮ মে, ২০২৪

২১৭ বার নিলেন করোনার টিকা
মহামারির ধাক্কা কাটলেও এখনও স্বাভাবিক হয়নি করোনার আতঙ্ক। বিভিন্ন দেশে করোনার টিকার আবির্ভাব হলেও এ নিয়ে ভীতি এখনও মানুষের মাঝে রয়ে গেছে। এমন সময় সামনে এসেছে এক বিচিত্র ঘটনা। ২১৭ বার করোনার টিকা নিয়েছেন এক ব্যক্তি। বুধবার (০৬ মার্চ) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মেডিকেলের পরামর্শ উপেক্ষা করে ওই ব্যক্তি নিজে এমন কাজ করেছেন। ৬২ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি জার্মানির বাসিন্দা। তিনি মোট ২১৭ বার করোনার টিকা নিয়েছেন। আর অদ্ভুত এ ঘটনাটি বিশ্বখ্যাত ল্যানসেট ইকফেকশাস ডিজিজেস সাময়িকীতে উঠে এসেছে।  প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জার্মানের ওই ব্যক্তি করোনার টিকা নিজে ব্যক্তিগতভাবে কিনেছেন। এরপর তিনি তা নিজে শরীরে প্রয়োগ করেছেন। ২৯ মাসে তিনি ২১৭ বার এ টিকা নিয়েছেন। যদিও তার নাম পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।   ইউনিভার্সিটি অব এরলানজেন– নুরেমবার্গের গবেষকরা জানিয়েছেন, এতবার টিকা নেওয়ার পরও তার শরীরে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়নি। এজন্য তার কোনো প্রকার দুর্ভোগও পোহাতে হয়নি। তিনি পুরোপুরি সুস্থ আছেন।  বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের ড. কিলিয়ান সোবার বলেন, আমরা পত্রিকা পড়ে ঘটনার বিষয়ে জানতে পারি। এরপর আমরা তার সঙ্গে যোগাযোগ করি। আমরা তাকে বিভিন্ন শারীরিক পরীক্ষার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। তিনি আগ্রহের সঙ্গে আমাদের ডাকে সাড়া দিয়েছেন।  গবেষকরা জানান, ওই ব্যক্তি নিজের রক্ত ও লালার নমুনা জমা দিয়েছেন। এ ছাড়া আগে থেকে হিমায়িত তার রক্তের নমুনাও পরীক্ষা করা হয়েছে। গত কয়েক বছরে তার কাছ থেকে এসব নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল।  ড. কিলিয়ান বলেন, আমরা ওই ব্যক্তির কাছ থেকে নমুনা নিতে পেরেছিলাম। গবেষণা চলাকালে নিজের আগ্রহে তিনি করোনার টিকা নিয়েছেন। টিকা নেওয়ার পর শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায় তা নিয়ে গবেষণার জন্য তার নমুনা ব্যবহার করা হয়েছে।  ম্যাগদেবুর্গ শহরের সরকারি কৌঁসুলি ওই ব্যক্তির কাছ থেকে টিকা নেওয়ার জন্য ব্যবহৃত ১৩০টি ইনজেকশন জব্দ করেছেন। তিনি ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে জালিয়াতিসংক্রান্ত তদন্ত করছেন। তবে এতবার টিকা নেওয়ার আগে বা পরে কখনও ওই ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হননি বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। 
০৬ মার্চ, ২০২৪

মস্তিষ্ক হৃৎপিণ্ডে জটিলতা বাড়ায় করোনা টিকা
করোনা টিকা ফাইজার-মডার্না ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার ডোজের প্রভাবে মস্তিষ্ক, হৃৎপিণ্ড ও রক্তে জটিলতার ঝুঁকি বাড়ে বলে জানা গেছে এক গবেষণায়। বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ বহুজাতিক সংস্থা গ্লোবাল ভ্যাকসিন ডেটা নেটওয়ার্কের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এক গবেষণায় এ তথ্য জানা গেছে। গবেষণা কাজের অংশ হিসেবে বিশ্বের ১৩টি দেশের ৯ কোটি ৯০ লাখ মানুষের তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে ডেটা নেটওয়ার্ক। গত সপ্তাহে গবেষণা প্রবন্ধটি প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সাময়িকী ‘ভ্যাকসিন’। খবর দ্য নিউইয়র্ক পোস্টের। প্রবন্ধে গবেষকরা বলেন, এই ৯ কোটি ৯০ লাখ মানুষের মধ্যে যারা এমআরএনএ টিকা ফাইজার এন বায়োএনটেক কিংবা মডার্না টিকার দ্বিতীয় ও তৃতীয় ডোজ সম্পূর্ণ করেছেন, তাদের একাংশ ইতোমধ্যে মায়োকার্ডিটি নামে হৃৎপিণ্ডের সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছেন। এই সমস্যায় আক্রান্তরা হার্টের মাংসপেশির সার্বক্ষণিক প্রদাহে ভোগেন। আর অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৃতীয় ডোজ যারা সম্পূর্ণ করেছেন, তাদের একাংশ আক্রান্ত হয়েছেন পেরিকার্ডিটিতে। এই সমস্যায় আক্রান্ত হলে হৃৎপিণ্ডের কার্ডিয়াক মাংসপেশিতে প্রদাহ হয়। গ্লোবাল ভ্যাকসিন ডেটা নেটওয়ার্কের গবেষকদের মতে, ফাইজার ও মডার্নার দ্বিতীয় ডোজ মায়োকার্ডিটির ঝুঁকি ২ দশমিক ৯ গুণ এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৃতীয় ডোজ পেরিকার্ডিটির ঝুঁকি ৬ দশমিক ৯ গুণ বৃদ্ধি করে। মায়োকার্ডিটি ও পেরিকার্ডিটি উভয়ই বেশ বিরল শারীরিক জটিলতা। এ ছাড়া অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও অন্যান্য ভাইরাল-ভেক্টর করোনা টিকা এবং এমআরএনএ টিকা ফাইজার-মডার্নার ডোজে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়া, গুলিয়ান-ব্যারে সিন্ড্রোম এবং মায়েলিটিসের মতো শারীরিক সমস্যার ঝুঁকি বাড়ে ২ দশমিক ৫ গুণ। গুলিয়ান ব্যারে সিন্ড্রোমে আক্রান্ত রোগীরা স্নায়ুবিক সমস্যায় ভোগেন আর মায়েলিটিসে আক্রান্তরা ভোগেন মস্তিষ্ক ও মেরুদণ্ডের প্রদাহে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে বিশ্বের প্রথম করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। করোনায় প্রথম মৃত্যুর ঘটনাটিও ঘটেছিল চীনে। তারপর অত্যন্ত দ্রুতগতিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটি। পরিস্থিতি সামাল দিতে ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। কিন্তু তাতেও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় অবশেষে ওই বছরের ১১ মার্চ করোনাকে মহামারি হিসেবে ঘোষণা করে ডব্লিউএইচও। মহামারি শুরু হওয়ার পর অবিশ্বাস্য দ্রুততার সঙ্গে ২০২০ সালের আগস্টে প্রথম করোনা টিকা স্পুটনিক ৫ বাজারে আনে রাশিয়া। তবে জরুরি অবস্থায় এই টিকার ব্যবহারবিষয়ক ছাড়পত্রের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছে আবেদন করেনি মস্কো। ডব্লিউএইচওর ছাড়পত্র পাওয়া প্রথম করোনা টিকার নাম ফাইজার এন বায়োএনটেক। ২০২০ সালের নভেম্বরে এই টিকাটি বাজারে আসে। এরপর একে একে বাজারে আসে মডার্না, অ্যাস্ট্রাজেনেকা, জনসন অ্যান্ড জনসনসহ বিভিন্ন করোনা টিকা। টিকা আবিষ্কারের পর থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে মোট ১ হাজার ৩৫০ কোটি ডোজ ব্যবহার করা হয়েছে বলে গবেষণা প্রতিবেদনে জানিয়েছে গ্লোবাল ভ্যাকসিন নেটওয়ার্ক। ডব্লিউএইচওর অন্যতম গবেষণা অংশীদার নিউজিল্যান্ডভিত্তিক সংস্থা জিভিডিএন জানিয়েছে, করোনা টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে এ পর্যন্ত ১৩ ধরনের শারীরিক জটিলতা ও সমস্যা তারা রেকর্ড করেছেন। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে টিকা নেওয়ার পর এসব সমস্যায় রোগীরা আক্রান্ত হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন জিভিডিএন গবেষকরা। গ্লোবাল ভ্যাকসিন ডেটা নেটওয়ার্কের যে বিজ্ঞানী দলটি এ গবেষণা পরিচালনা করেছে, সেই দলের অন্যতম সদস্য এবং ডেনমার্কের স্টাটেন্স সিরাম ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ক্রিস্টিনা ফেকসোভা এক বিবৃতিতে নিজেদের গবেষণা প্রবন্ধ সম্পর্কে বলেন, ‘ব্যাপারটি এমন নয় যে আমরা করোনা টিকার ডোজকে ক্ষতিকর বলে প্রচার করছি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কোটি কোটি মানুষ বিভিন্ন করোনা টিকার ডোজ নিয়েছেন এবং তাদের অধিকাংশই হয়তো কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনুভব করেননি। কিন্তু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ভুগেছেন বা ভুগছেন—এমন মানুষের সংখ্যা কম হলেও তারা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, তাদের এসব সমস্যা টিকা প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলোকে এই বার্তা দেয় যে, করোনা টিকাগুলো আরও নিরাপদ ও নিখুঁত হওয়া প্রয়োজন।’
২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

করোনার দুই ডোজ টিকা নিলেও আক্রান্তের শঙ্কা রয়েছে : বিএসএসএমইউ
করোনাভাইরাসের দুই ডোজ ভ্যাকসিন নিলেও ভাইরাসটির নতুন জেএন.১ সাব-ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা থেকে যায় বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএসএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক শরফুদ্দিন আহমেদ। মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) করোনার সর্বশেষ জিনোম সিকোয়েন্সিং গবেষণার ফলাফল জানানোর সময় তিনি এ তথ্য জানান। অধ্যাপক শরফুদ্দিন বলেন, গবেষণায় যাদের শরীরে কোভিডের নতুন জেএন.১ সাব-ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে তাদের ক্ষেত্রে তেমন প্রকট লক্ষণ দেখা যায়নি। তিনি আরও বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ বছরের শুরুতে নতুন এই সাব-ভ্যারিয়েন্টের কথা জানিয়েছে। বিএসএমএমইউ গত জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহ থেকে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত কোভিড আক্রান্ত ৪৮ রোগীর নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং করেছে। গবেষণায় তিনজনের নমুনায় সাব-ভ্যারিয়েন্ট জেএন.১ শনাক্ত করা হয়েছে। এই তিনজনের মধ্যে একজন সম্প্রতি দেশের বাইরে গিয়েছিলেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি। অধ্যাপক শরফুদ্দিন বলেন, এই সাব-ভ্যারিয়েন্টের উপসর্গ করোনার অন্যান্য ধরনের মতোই। তাদের অবশ্য জ্বর, ঠান্ডা, গলাব্যথা, মাথাব্যথা এবং হালকা কাশির হালকা উপসর্গ ছিল। তবে এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব জানতে গবেষণা চালিয়ে যাওয়ার বিকল্প নেই। গবেষণার প্রধান পৃষ্ঠপোষক (সুপারভাইজার) অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ জানান, করোনার নতুন উপধরন জেএন-ওয়ান বাংলাদেশে শনাক্ত হয়েছে। দুই ডোজ ভ্যাকসিন নেওয়ার পরও যে কেউ এটিতে আক্রান্ত হতে পারেন। জেএন-ওয়ান অতটা ক্ষতিকর না হলেও এটি দ্রুত ছড়ায় জানিয়ে তিনি বলেন, এই উপধরনে আক্রান্ত হলে মৃদু উপসর্গ দেখা দেয়। তবে এতে সংক্রমণের মাত্রা বেশি হওয়ায় জ্বর, ঠান্ডা হলেই করোনা পরীক্ষা করা উচিত। তিনি আরও বলেন, আমাদের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, নতুন এই উপধরনে আক্রান্ত রোগীর লক্ষণের তীব্রতা কম। সব জেএন.ওয়ান উপধরনে আক্রান্ত রোগীর কমপক্ষে দুই ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়া ছিল। তৃতীয়বারের মতো আক্রান্ত হয়েছেন এরকম রোগীর মধ্যেও এই ধরন পাওয়া গেছে। মৃদু উপসর্গের কারণে এটি দ্রুত ছড়ায়। বিএসএমএমইউ ২০২১ সালের ২৯ জুন থেকে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের ওপর গবেষণা চালাচ্ছে। গবেষণায় প্রায় এক হাজার ৫০০ কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগীর ন্যাযোফ্যারিনজিয়াল সোয়াব স্যাম্পল থেকে নেক্সট জেনারেশন সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে করোনা ভাইরাসের জেনোম সিকোয়েন্সিং করা হয়।
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

ভ্লাদিমির পুতিনের দাবি রাশিয়া ক্যান্সারের টিকা তৈরির দ্বারপ্রান্তে
রাশিয়া ক্যান্সারের টিকা তৈরির দ্বারপ্রান্তে বলে মন্তব্য করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। একই সঙ্গে এই টিকা শিগগির রোগীরা পেতে পারেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। বুধবার ভবিষ্যতের প্রযুক্তির ওপর আয়োজিত মস্কো ফোরামে বক্তৃতা দেওয়ার সময় তিনি এ কথা জানান। খবর বিবিসির। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ান বিজ্ঞানীরা ক্যান্সারের টিকা তৈরির কাছাকাছি রয়েছেন এবং এটি শিগগির রোগীদের জন্য সহজলভ্য হতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। তিনি বলেন, ‘আমরা নতুন প্রজন্মের তথাকথিত ক্যান্সার টিকা এবং ইমিউনোমোডুলেটরি ওষুধ তৈরির খুব কাছাকাছি চলে এসেছি। আমি আশা করি, শিগগির এই টিকা কার্যকরভাবে রোগীদের চিকিৎসা থেরাপির পদ্ধতি হিসেবে ব্যবহার করা হবে।’ অবশ্য প্রস্তাবিত টিকাগুলো ঠিক কোন ধরনের ক্যান্সারকে লক্ষ্য করে চিকিৎসার কাজ করবে বা কীভাবে সেটি হবে, তা নির্দিষ্ট করেননি পুতিন। রয়টার্স বলছে, বিশ্বের অনেক দেশ ও কোম্পানি ক্যান্সারের টিকা নিয়ে কাজ করছে। গত বছর যুক্তরাজ্য সরকার ‘ব্যক্তিগত ক্যান্সার চিকিৎসা’ দিতে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালু করার জন্য জার্মানভিত্তিক বায়োএনটেকের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। দেশটি এই কাজে ২০৩০ সালের মধ্যে ১০ হাজার রোগীর কাছে পৌঁছানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এ ছাড়া ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি মডার্না এবং মেরর্ক অ্যান্ড কোম্পানিও একটি পরীক্ষামূলক ক্যান্সারের টিকা তৈরি করছে। এই টিকার কার্যকারিতা সম্পর্কে মধ্য-পর্যায়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, মেলানোমায় আক্রান্ত রোগীদের তিন বছরের চিকিৎসার পর ফের এই রোগের পুনরাবৃত্তি বা মৃত্যুর সম্ভাবনা অর্ধেক কমে গেছে। মূলত মেলানোমা হচ্ছে সবচেয়ে মারাত্মক ত্বকের ক্যান্সার।
১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

করোনার টিকা নিয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়েছিলেন বলসোনারো
ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারো করোনাভাইরাসের টিকা নেওয়ার ব্যাপারে মিথ্যা তথ্য দিয়েছিলেন। তার টিকা কার্ডে ভুয়া তথ্য থাকা সংক্রান্ত অভিযোগের তদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার ব্রাজিলের কম্পট্রোলার জেনারেলের কার্যালয় এ কথা জানায়। কভিড-১৯ এর ব্যাপারে সন্দেহপ্রবণ বলসোনারো প্রকাশ্যে করোনা টিকার বিরোধিতা করেন। তার টিকা সংক্রান্ত নথিতে উল্লেখ আছে, সাবেক এই প্রেসিডেন্ট ২০২১ সালে সাও পাওলোর একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এক ডোজ টিকা নিয়েছিলেন। কিন্তু তদন্তে দেখা গেছে, নথিতে যে তারিখের উল্লেখ আছে, তার আগের দিন তিনি সাও পাওলো ছেড়েছিলেন। এর পরের তিন দিন তিনি ব্রাসিলিয়াতেই ছিলেন। নথিতে বলসোনারোকে টিকা প্রয়োগকারী হিসেবে যে নার্সের নাম উল্লেখ আছে, তিনি এখন আর ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চাকরি করেন না।
২০ জানুয়ারি, ২০২৪

আবারও করোনা টিকা দেওয়ার নির্দেশ, অগ্রাধিকার পাবেন যারা
দেশে আবারও বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। নতুন ভ্যারিয়েন্টের না হলেও দ্রুত টিকা দিতে নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বুধবার (১৭ জানুয়ারি) অধিদপ্তরের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ব্যবস্থাপনা টাস্কফোর্স বিভাগের সদস্য সচিব ডা. মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, দেশব্যাপী করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে ফাইজার কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন কার্যক্রমের ১ম, ২য় এবং বুস্টার ডোজ (৩য়, ৪র্থ ডোজ) বিতরণ এবং প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। শিগগিরই কোভিড-১৯ টিকাদান কার্যক্রম শুরু করতে হবে। নির্দেশনায় বলা হয়, ভ্যাকসিন প্রদানের ক্ষেত্রে সম্মুখসারির স্বাস্থ্যকর্মী, ৬০ বছর এবং তদূর্ধ্ব বয়সী জনগোষ্ঠী, দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত ১৮ বছর এবং তদুর্ধ্ব বয়সী জনগোষ্ঠী, স্বল্প রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন প্রাপ্ত বয়স্ক (১৮ বছর এবং তদূর্ধ্ব) জনগোষ্ঠী ও গর্ভবর্তী নারীদের প্রাধান্য দেওয়া হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে ঢাকা শহরের ৮টি কেন্দ্রে বুস্টার ডোজ অর্থাৎ ৩য় এবং ৪র্থ ডোজ ফাইজার ভিসিভি (VCV) ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে। কেন্দ্রগুলো হলো- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিডফোর্ড হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ফুলবাড়িয়া সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল। পরে ধাপে ধাপে ঢাকার বিভিন্ন বিশেষায়িত ইনস্টিটিউট ও সরকারি হাসপাতাল, ঢাকার বাইরের সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং জেলা পর্যায়ের হাসপাতালসমূহে ভ্যাকসিন বিতরণের মাধ্যমে কোডিড-১৯ টিকাদান কার্যক্রম পরিচালিত হবে। কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ১ম এবং ২য় ডোজের ক্ষেত্রে ফাইজার আরটিইউ (RTU) ভ্যাকসিন ব্যবহার করতে হবে। প্রাথমিকভাবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কোডিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল, মহাখালী এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নয়াবাজার ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতালে এই টিকা প্রদান করা হবে। ফাইজার ভিসিভি এবং আরটিইউ টিকার ডোজের পরিমাণ- ০.৩ এম এল (০৬ ডোজের ভায়াল) টিকা প্রদানের জন্য ব্যবহৃত সিরিঞ্জ : ০.৩ এম এল প্রয়োগপথ : ডান বা বাম বাহুর উপরিভাগের ডেল্টয়েড মাংসপেশির মধ্যভাগে ৯০ ডিগ্রি কোণে পরিবহনের তাপমাত্রা : +২০ থেকে ৮০ সেলসিয়াস সংরক্ষণ : গলানোর তারিখ থেকে ৭০ দিন পর্যন্ত ২০ থেকে ৮০ সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এই ভ্যাকসিন সরংক্ষণ এবং ব্যবহার করা যাবে। গলানো ভ্যাকসিন কোনোভাবেই পুনরায় জমানো যাবে না। ভায়াল খোলার ০৬ ঘণ্টার মধ্যে ভ্যাকসিন ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। টিকা পরবর্তী বিরূপ প্রতিক্রিয়ার (AEFI) ক্ষেত্রে পূর্বে সরবরাহকৃত AEFI গাইডলাইনের নির্দেশনা মোতাবেক যথাযথ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে। ১ম এবং ২য় ডোজ টিকা পাওয়ার প্রমাণস্বরূপ ভ্যাকসিনের নাম এবং তারিখ উল্লেখপূর্বক কোভিড-১৯ টিকাদান কার্ড সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে প্রদান করা হবে। ৩য় এবং ৪র্থ ডোজ টিকার ক্ষেত্রে সুরক্ষা ওয়েবসাইট অথবা অ্যাপ থেকে টিকাকার্ড ডাউনলোড করে সাথে আনতে হবে; MIS, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পূর্ব নির্ধারিত উপায়ে কোভিড-১৯ ভ্যাক্সিনেশনের রিপোর্ট প্রদান করতে হবে।
১৮ জানুয়ারি, ২০২৪

গাজায় ঢুকল হাজার হাজার টিকা
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় শিশুদের বিভিন্ন শৈশবকালীন রোগের হাজার হাজার টিকা প্রবেশ করেছে। সোমবার (১ জানুয়ারি) মিসরের সীমান্তবর্তী রাফাহ ক্রসিং দিয়ে এসব টিকা সেখানে প্রবেশ করেছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স। অক্টোবরে ইসরায়েলের স্থল অভিযান শুরু হলে গাজার স্বাস্থ্যব্যবস্থা কার্যত ভেঙে পড়ে। ফলে শিশুদের মাঝে উচ্চ সংক্রামক বিভিন্ন রোগের টিকাদানও বন্ধ হয়ে যায়। যদিও যুদ্ধ শুরুর আগে গণটিকাদান কর্মসূচির মাধ্যমে এসব রোগ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছিল। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় যে পরিমাণ টিকা এসেছে সেগুলো দিয়ে ৮ থেকে ১৪ মাস টিকাদান কর্মসূচি পরিচালনা করা যাবে। রাফাহ সীমান্ত ক্রসিং দিয়ে এসব টিকা গাজায় প্রবেশ করেছে। মূলত রুবেলা, পোলিও, হাম, মাম্পসসহ বেশ কয়েকটি রোগের টিকা গাজায় এসেছে। এসব টিকার কিছু ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কেনা। আবার জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক তহবিল ইউনিসেফও কিছু দান করেছে। রামাল্লার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রধান ইয়াসির বাউজিয়া বলেছেন, গাজায় বর্তমানে প্রায় ৬০ হাজার নবজাতক রয়েছে। তাদের সাধারণত টিকা পেয়ে যাওয়ার কথা ছিল। তবে স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় তাদের টিকা দেওয়া যায়নি। তিনি বলেন, শিশুদের টিকা দেওয়া বেশ কঠিন হবে। কারণ গাজার বেশিরভাগ মানুষকে বাড়িঘর ছাড়া করা হয়েছে। লাখ লাখ ফিলিস্তিনি তাঁবু বা অন্যান্য অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে বসবাস করছেন।
০২ জানুয়ারি, ২০২৪
X