টেকনাফ সীমান্তের ওপারে যুদ্ধ পরিস্থিতির অবনতির শঙ্কা
টেকনাফের সীমান্তবর্তী মিয়ানমারে যুদ্ধ পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর ফলে দেশটির রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী এবং বিজিপি সদস্যদের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা আরও বাড়তে পারে। এ ছাড়া বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের অরক্ষিত স্থল এবং জল সীমান্তে নিরাপত্তা ঝুঁকিও রয়েছে। গতকাল রোববার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকের এক প্রতিবেদনে এমন আশঙ্কার কথা উঠে এসেছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা জোরদারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা বেনজীর আহমদের সভাপতিত্বে সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিটির সদস্য ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সামছুল হক দুদু, ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল, ময়েজ উদ্দিন শরীফ, মো. ছানোয়ার হোসেন, চয়ন ইসলাম, মো. সাদ্দাম হোসেন (পাভেল) এবং হাছিনা বারী চৌধুরী অংশ নেন। বৈঠকে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে উপস্থাপিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালের মে নাগাদ টেকনাফ সীমান্তবর্তী অঞ্চলে যুদ্ধ পরিস্থিতি আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। মিয়ানমারের সীমান্ত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের যেসব ঝুঁকি রয়েছে, তা উল্লেখ করা হয় এ প্রতিবেদনে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো মিয়ানমারের নাগরিকদের (রোহিঙ্গা) অবৈধ অনুপ্রবেশ নিয়ন্ত্রণ; বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের অরক্ষিত স্থল ও জল সীমান্তে নিরাপত্তা; রোহিঙ্গাদের অবৈধ পাচাররোধ; মাদকের বিনিময়ে রেশন সরবরাহের ফলে মাদক ও চোরাচালানকৃত পণ্যের সরবরাহ বৃদ্ধি পেতে পারে; সীমান্তে যুদ্ধাবস্থায় আগ্নেয়াস্ত্র সহজলভ্য হওয়ায় সন্ত্রাসী গোষ্ঠী তা সংগ্রহ করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ব্যবহার করতে পারে। স্থানীয় আদিবাসী ও মগ সম্প্রদায়ের সঙ্গে আরাকান আর্মির সখ্য থাকায় বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে। বৈঠক থেকে মাদক নির্মূলে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি কঠোর হস্তে কিশোর গ্যাং দমনের সুপারিশ করেছে কমিটি। এ ছাড়া কমিটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সব বাহিনীকে আরও সচেতন ও সতর্ক থেকে কাজ করার সুপারিশ করে। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, কমিটির আগের বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব অগ্নিকাণ্ডের পর দায়ীদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা হয় না বলে উল্লেখ করেন। বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, এমন দুর্ঘটনা ঘটলে প্রায়ই কিছু লোকের বিরুদ্ধে মামলা হয় এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। পরে সব গতানুগতিকভাবে চলতে থাকে। এজন্য সব সংস্থার একটি কমন প্ল্যাটফরম করতে হবে। এতে যেসব প্রতিষ্ঠান নিয়ম না মেনে কার্যক্রম চালাবে, সেসব প্রতিষ্ঠান সিলগালা করে তাদের বন্ধ করে দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব।
২৯ এপ্রিল, ২০২৪

টেকনাফ সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশে আরও ১৩ বিজিপি সদস্য
কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত এলাকা দিয়ে আবারও মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ১৩ সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের বর্তমানে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের বিজিবির নাইক্ষ্যংছড়ি ব্যাটালিয়নের (১১ বিজিবি) হেফাজতে রাখা হয়েছে।  বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) রাতে টেকনাফের নাফ নদী সীমান্ত দিয়ে তারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে কোস্টগার্ডের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। পরে তাদের নিরস্ত্র করে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়। এর আগে মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) রাতে মিয়ানমারের ৪৬ জন বিজিপি সদস্য বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। এ নিয়ে মোট ২৭৪ জন বিজিপি ও সেনা সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। বিজিবির সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, নাফ নদী সীমান্ত অতিক্রম করে তারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেন। এ সময় তারা কোস্টগার্ডের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। পরবর্তীতে কোস্ট গার্ড বিজিপি সদস্যদের বিজিবির নাইক্ষ্যংছড়ি ব্যাটালিয়নের (১১ বিজিবি) নিকট হস্তান্তর করে। বর্তমানে মোট ২৭৪ জন বিজিপি ও সেনা সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণ করে আছেন। উল্লেখ্য, চলতি বছরের শুরুতে ৩৩০ জন বিজিপি সদস্য এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করেন। পরে ১৫ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার নৌ-সীমান্ত দিয়ে তাদের ফেরত পাঠানো হয়। এরপর নতুন করে আরও ২৭৪ জন বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এসব বিজিপি সদস্যদের আগামী সপ্তাহে ফেরত পাঠানো হতে পারে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
১৯ এপ্রিল, ২০২৪

টেকনাফ সীমান্তে আবারও বেড়েছে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ
বাংলাদেশ সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাত আরও ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। ওপার থেকে আবার ভেসে আসছে গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ। এমন অবস্থায় আতঙ্কে রয়েছে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সীমান্ত এলাকায় বসবাসরত বাংলাদেশিরা। মাঝখানে কয়েক দিন রাখাইনের পরিস্থিতি বেশ শান্তই ছিল। সোমবার (৮ এপ্রিল) ভোর রাত থেকে দুপুর পর্যন্ত টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন সীমান্তে, হোয়াইক্যং, হ্নীলা ও সাবরাং সীমান্তসহ পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় বিকট শব্দ শোনা যাচ্ছে। এতে এপারের বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। জানা যায়, হোয়াইক্যং ও হ্নীলা সীমান্তের পূর্বদিকে মিয়ানমার থেকে মর্টার শেল বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ভেসে আসছে। ধারণা করা হচ্ছে, ওইসব এলাকায় নতুন করে সংঘাত ছড়িয়েছে। সীমান্তের এসব এলাকায় শনিবার ভোররাত পর্যন্ত অর্ধশতাধিক বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ভেসে আসে। বিশেষ করে সাবরাং ইউনিয়ন, সেন্টমার্টিন, শাহপরীর দ্বীপ, হোয়াইক্যংয়ের খারাংখালী, ঝিমংখালী, হ্নীলা ইউনিয়নের মৌলভীবাজার, ওয়াব্রাং, পুরানবাজার, ফুলের ডেইল, চৌধুরীপাড়া, টেকনাফ সদরের আলীখালি, লেদা, মুচনী, জাদীমুড়া, দমদমিয়া, টেকনাফ পৌরসভার নাইট্যং পাড়া, চৌধুরীপাড়া, কেকে পাড়া, জালিয়াপাড়াসহ অন্তত ৩০টি গ্রামে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা যায়। সকাল থেকে ভারী গোলার বিকট শব্দ পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী। তিনি বলেন, ‘রাখাইনের চলমান যুদ্ধে এপারে অনেক ভারী গোলার বিকট শব্দ শোনা যাচ্ছে। প্রতিদিন এ ধরনের গোলার বিকট আওয়াজ এখানকার মানুষের মাঝে আতঙ্ক বাড়াচ্ছে।’  নয়াপাড়া সীমান্তের নবী হোসেন জানান, ওপার থেকে আসা বোমার ভয়ঙ্কর কয়েকটি শব্দ শুনেছি। এছাড়া গুলির শব্দে রীতিমতো অভ্যস্থ হয়ে পড়েছি।’ সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার আব্দুস সালাম বলেন, সোমবার সীমান্তের লোকজন মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গোলাগুলির শব্দ শুনতে পাচ্ছেন। নাফ নদের সীমান্তে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলম বলেন, 'সকাল থেকে সীমান্তে ভারী গোলার বিকট শব্দ পাওয়া গেছে। অন্যদিনের তুলনার আজকের গোলার শব্দ বিকট।' এদিকে মিয়ানমার মংডু ও বুথেডংয়ে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মির সঙ্গে দেশটির সেনাবাহিনীর তুমুল সংঘর্ষ চলছে। টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং থেকে শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার নাফনদীতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের সদস্যরা দিনরাত নাফ নদী ও সীমান্ত সড়কে টহল বৃদ্ধি করেছে। এ বিষয়ে কোস্ট গার্ডের সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার খন্দকার মুনিফ তকি সাংবাদিকদের বলেন, ‘রাখাইনে সংঘাত মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তবে সংঘাতের জের ধরে যাতে রোহিঙ্গা বা অন্য কোনো গোষ্ঠী বাংলাদেশে ঢুকতে না পারে সে জন্য নাফ নদে কোস্ট গার্ডের টহল জোরদার করা হয়েছে।’
০৮ এপ্রিল, ২০২৪

কয়েকদিন শান্ত থাকার পর ফের কাঁপল টেকনাফ
কয়েকদিন শান্ত থাকার পর মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের বিকট শব্দে ফের কেঁপে উঠল টেকনাফ সীমান্ত। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, রাত হলেই সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের ভেতরে গোলাগুলি ও মর্টার শেল বিস্ফোরণের শব্দ বেড়ে যায়। তখন এপারেও আতঙ্ক বেড়ে যায়। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের উনছিপ্রাং, ঝিমংখালী, খারাংখালীর হ্নীলা ইউনিয়ন, সাবারাং ইউনিয়ন এলাকায় শুক্রবার সকাল থেকে মুহুর্মুহু গুলির আওয়াজ ভেসে আসে। মাঝেমধ্যে শোনা যায় গোলা বিস্ফোরণের বিকট শব্দ। টেকনাফ পৌরসভার নাইট্যংপাড়ার সীমান্তের বাসিন্দা মো. ইদ্রিস জানান, সকালে তিনি বাড়ির উঠানে বসে ছিলেন। হঠাৎ বিকট শব্দে ভয়ে বাড়ির ভেতর ঢুকে পড়েন। বিস্ফোরণের শব্দে মাটি কেঁপে ওঠে। উনছিপ্রাং এলাকার বাসিন্দা জুলফিকার আলী বলেন, শুক্রবার ভোর থেকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ব্যাপক গুলির শব্দ শোনা গেছে। তবে এখানকার মানুষ স্বাভাবিক দিনের মতো কাজে ফিরেছেন। হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ আনোয়ারী বলেন, শুক্রবার ভোর থেকে মিয়ানমার থেকে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ ভেসে আসে। তবে শব্দগুলো স্থানীয়দের কাছে এখন অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে গেছে। হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী জানান, কয়েক দিন সীমান্ত পরিস্থিতি শান্ত ছিল। বৃহস্পতিবার বেশ কয়েকটি বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেলেও গতকাল ভোর থেকে তা বাড়ে। তবে সীমান্তের বাসিন্দাদের মধ্যে এর তেমন প্রভাব পড়েনি। টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, কিছুদিন বন্ধ থাকার পর রাখাইনে নতুন করে গোলাগুলি ও মর্টার শেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটছে। এদিকে, হোয়াইক্যং ও হ্নীলা সীমান্তের পূর্ব দিকে মিয়ানমারের বলিবাজার, শিলখালী, নাফপুরা গ্রামে সংঘাতময় পরিস্থিতির খবর পেয়ে এপারে টেকনাফের হোয়াইক্যং থেকে শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার নাফ নদে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের টহল বাড়ানো হয়েছে। টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, রাখাইনের পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবির প্রচেষ্টা অব্যাহত।
০৬ এপ্রিল, ২০২৪

আবারও বিস্ফোরণের শব্দে কাঁপছে টেকনাফ সীমান্ত
মিয়ানমারের গোলাগুলির শব্দে কেঁপে উঠল টেকনাফ সীমান্ত। রাত হলেই সীমান্তে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বেড়ে যায় গোলাগুলি ও মর্টারশেলের বিকট শব্দ; যার কারণে আতঙ্ক বাড়ে সীমান্তবাসীর।  নাফ নদীর তীরবর্তী সীমান্তের ওপারে রয়েছে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির ঘাঁটি। একটি-দুটি নয়; রয়েছে অসংখ্য ঘাঁটি। এসব ঘাঁটি দখলে নিতে মরিয়া দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। যার জন্য দেড় মাসের বেশি সময় ধরে মিয়ানমারের রাখাইনে বিজিপির সঙ্গে আরাকান আর্মির সংঘাত চলছে। টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের উনছিপ্রাং, ঝিমংখালী, খারাংখালীর হ্নীলা ইউনিয়ন, সাবারাং ইউনিয়ন এলাকায় ওপারে মিয়ানমারের ভেতর আজ (শুক্রবার) সকাল থেকে মুহুর্মুহু গুলির আওয়াজ ভেসে আসছে এ পারে। নিয়মিত বিরতিতে শোনা যাচ্ছে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ। টেকনাফ পৌরসভার নাইট্যংপাড়ার সীমান্তের বাসিন্দা মো. ইদ্রিস জানান, সকালে তিনি বাড়ির উঠানে বসে ছিলেন। হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণ শুনে ভয় পেয়ে বাড়ির ভেতর ঢুকে পড়েন। বিস্ফোরণের শব্দে মাটি কেঁপে ওঠে। পরে বুঝতে পারেন মিয়ানমারে বিস্ফোরণ হয়েছে। সীমান্তে স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক বিরাজ করছে। তবে সীমান্ত থাকা চিংড়ি চাষিরা বলছেন, বিকট বিস্ফোরণের শব্দ তাদের কাছে এখন স্বাভাবিক হয়ে গেছে। উনছিপ্রাং এলাকার বাসিন্দা জুলফিকার আলী বলেন, ভোর থেকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ব্যাপক গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। তবে এখানকার মানুষ স্বাভাবিক দিনের মতো কাজে ফিরেছেন। হোয়াইক্ষং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ আনোয়ারী বলেন, শুক্রবার ভোর ৫টা থেকে মিয়ানমার থেকে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ ভেসে আসছে। তবে শব্দগুলো স্থানীয়দের কাছে এখন অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে গেছে। হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী বলেন, কয়েক দিন সীমান্ত পরিস্থিতি শান্ত ছিল। গতকাল বেশ কয়েকটি বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেলেও আজ ভোর থেকে একটু বেশি হচ্ছে। তবে সীমান্তের বাসিন্দাদের মধ্যে এর তেমন প্রভাব পড়েনি। টেকনাফের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, কিছুদিন বন্ধ থাকার পর রাখাইনে নতুন করে গোলাগুলি ও মর্টারশেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটছে। আজ সকাল থেকেও মর্টারশেল, গ্রেনেড বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। হোয়াইক্যং ও হ্নীলা সীমান্তের পূর্ব দিকে মিয়ানমারের বলিবাজার, শিলখালী, নাফপুরা গ্রামে সংঘাতময় পরিস্থিতির খবর পেয়ে এপারে টেকনাফের হোয়াইক্যং থেকে শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার নাফ নদীতে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের টহল বাড়ানো হয়েছে। টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, রাখাইনের পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। একইসঙ্গে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবির প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
০৫ এপ্রিল, ২০২৪

টেকনাফ সীমান্তে থেমে থেমে বিস্ফোরণ, সেন্টমার্টিন-শাহপরীর দ্বীপে আতঙ্ক
কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত কয়েক দিন শান্ত থাকার পর আবারও গোলাগুলি ও ভারি অস্ত্রের বিকট শব্দে কেঁপে উঠেছে। টানা পাঁচ দিন শান্ত থাকার পর বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) সকাল থেকে টেকনাফ সীমান্তের পৌরসভা, শাহপরীর দ্বীপ সেন্টমার্টিন হ্নীলা ইউনিয়নের চৌধুরী পাড়া ও হোয়াইক্ষ্যং ইউনিয়নের মিনাবাজার, খারাংখালী এলাকা থেকে থেমে থেমে গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শুনতে পায় সীমান্তের লোকজন। সীমান্তের স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের মৌলভীবাজার, ওয়াব্রাং, পুরানবাজার, ফুলের ডেইল, চৌধুরীপাড়া, সাইটপাড়া, রঙ্গিখালী, লেদা, মুচনী, দমদমিয়া, টেকনাফ পৌরসভার চৌধুরীপাড়া, কেকে পাড়া, জালিয়াপাড়া থেকে শুরু করে সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপের নাফনদের ওপারে বিকট শব্দের বিস্ফোরণ হচ্ছে। যা বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দারা। নাফনদের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরের উত্তরের বলিবাজার, নাকপুরা, দক্ষিণে হাস্যুরাতা, নাইক্ষ্যংদিয়া, মাঝামাঝি সিকদারপাড়া, দলিয়াপাড়া, কদিরবিল, নুরুল্যাহপাড়াকে ঘিরে মর্টার শেলসহ নানা বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে। সীমান্ত এলাকার মানুষের ধারণা এবং টেকনাফ-মিয়ানমার সীমান্ত বাণিজ্য সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের অধিকাংশ এলাকাই এখন আরাকান আর্মির দখলে। সম্ভবত এটা এলাকা পুনঃরুদ্ধারে মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী চেষ্টা করছে। এর জের ধরে হামলা হচ্ছে। টেকনাফ পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নুরুল বশর নৌরশাদ বলেন, আমার বাড়ির পূর্ব পাশে নাফ নদী ওপারে মিয়ানমার সীমান্ত দুপুর ২টার দিকে বিকট শব্দে ভয় পেয়ে উঠান থেকে বাড়ির ভেতরে ঢুকে পরি। উঠানে বসে ছিলাম, হঠাৎ একটা বিকট শব্দে মাটি কেঁপে ওঠে। পরে বুঝতে পারি- মিয়ানমারের গোলার বিকট শব্দ এপারে পাওয়া যাচ্ছে। পর পর দুটি বড় বিকট শব্দ পাওয়া যায়। এতে আমার মতো আরও আশপাশের লোকজন ভয়ে আতঙ্কে রয়েছেন। সাবরাং শাহপরীর দ্বীপ বেড়ি বাঁধ উত্তর পাড়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ বেলাল উদ্দিন বলেন, ‘দুপুরে দ্বীপে বিকট শব্দ পাওয়া গেছে। পর পর দুটি শব্দ শুনেছি। তখন আমি সীমান্ত সড়কের পাশে ছিলাম। মনে হয়েছে নাফনদ কেঁপে উঠেছে।’   টেকনাফের হোয়াইক্যংয়ের ইউপি সদস্য মো. শাহাজালাল বলেন, সীমান্তে ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত থেমে মিয়ানমারের গোলার বিকট শব্দ এপারে পাওয়া গেছে। কয়েক দিন শান্ত থাকার পর আবারও সীমান্তে থেমে থেমে গোলা ও বিস্ফোরণের শব্দ এপারে ভেসে আসছে। টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী জানান, গত ৫ দিন ধরে হ্নীলা ও মিয়ানমারের সীমান্তের ওপারে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়নি। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আবারও থেমে থেমে বিকট শব্দ শোনা যাচ্ছে। সাবরাং ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম জানান, ৫ দিন পর সকাল থেকে বিকট শব্দ শোনা যাচ্ছে। নাফনদের ওপারে আবারও সংঘর্ষ চলছে। সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আক্তার কামাল বলেন, গত ৫ দিন ওপার থেকে বিস্ফোরণের শব্দ আসছে। দ্বীপে বসেই শোনা যাচ্ছে এসব শব্দ। দুপক্ষের মধ্যে আবারও সংঘাত শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে টেকনাফ ২-বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, সীমান্তের এ পরিস্থিতিতে বিজিবি সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। পাশাপাশি অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নাফনদ ও সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্টে বিজিবির টহল বাড়ানো হয়েছে।
০৪ এপ্রিল, ২০২৪

টেকনাফ সীমান্তবাসীর ঘুম ভাঙল ওপারের ভারী গোলার শব্দে
কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত কয়েক দিন শান্ত থাকার পর আবারও গোলাগুলি ও ভারী অস্ত্রের বিকট শব্দে কেঁপে উঠেছে। রোববার (২৪ মার্চ) রাত থেকে সোমবার (২৫ মার্চ) সকাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের চৌধুরীপাড়া ও হোয়াইক্ষ্যং ইউনিয়নের মিনাবাজার, খারাংখালী এলাকা থেকে গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এ শব্দেই সীমান্তবাসীদের ঘুম ভেঙেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি করছেন, রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরের উত্তরে নাকপুরা এলাকা এবং পূর্বে ধনখালী, হাসুরাতা, নাইক্ষ্যংদিয়া, গর্জনদিয়া ও সংক্ষদাবিল এলাকায় চলমান সংঘাতই এসব বিস্ফোরণের কারণ। হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘কয়েক দিন সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। রোববার রাত থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত টানা ভারী অস্ত্রের বিকট শব্দে কেঁপে উঠেছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে সাধারণ মানুষ।’ হোয়াইক্ষ্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ আনোয়ারী বলেন, ‘বেশ কয়েক দিন সীমান্ত শান্ত থাকার পর আবারও হোয়াইক্ষ্যং ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় মিয়ানমারের ওপার থেকে ব্যাপক গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। নাফ নদীতে যারা মাছ শিকার করছিলেন তারা প্রাণ ভয়ে পালিয়ে আসেন। জেলেদের আতঙ্ক কাটছে না।’ এই বিষয়ে জানতে টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহিউদ্দীন আহমেদের মোবাইল ফোনে একাধিক বার কল করা হয়। কিন্তু তিনি তা রিসিভ না করায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
২৫ মার্চ, ২০২৪

মিয়ানমারে সংঘাত : মর্টার শেলের বিস্ফোরণে কাঁপল টেকনাফ সীমান্ত
কক্সবাজারের টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের চৌধুরীপাড়া। এপারে প্যারাবনের পর নাফনদের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে টেকনাফ সীমান্তে রাখাইন রাজ্যে গত তিন দিন থেমে থেমে গোলাগুলি চললেও মর্টার শেলের বিস্ফোরণ ঘটেনি। তবে রোববার (১৭ মার্চ) রাত ৯টা ২৫ মিনিট থেকে ৯টা ৫৮ মিনিট পর্যন্ত ৩৩ মিনিটে ২১টি মর্টার শেলের বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে এপারের টেকনাফ সীমান্তের কয়েকটি গ্রাম।  রাখাইন রাজ্যের জেলা শহর মংডু টাউনশিপের কিছুটা উত্তরে নাকপুরা এলাকায় হঠাৎ রাতে মর্টার শেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। তবে রোববার রাত ১০টার পর থেকে সোমবার সকাল ১০টা পর্যন্ত আর বিস্ফোরণের শব্দ এপারের লোকজন শুনতে পাননি। নাগপুরা এলাকার বিপরীতে (নাফনদের এপারে) টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের রাখাইনপল্লি চৌধুরীপাড়া ও ফুলের ডেইল গ্রাম। রাতে ৩৩ মিনিটে ২১টি মর্টার শেলের বিকট শব্দ এপারের লোকজনের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে জানিয়ে হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী বলেন, দেড় মাসের বেশি সময় ধরে রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)। এতদিন রাত ও দিনে দুপক্ষের মধ্যে লড়াই চলেছে। উভয়পক্ষ থেকে গোলাগুলি, মর্টার শেল, গ্রেনেড বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছে। তাতে লণ্ডভণ্ড হয়ে পড়ে মংডু টাউনশিপের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা। টেকনাফ হ্নীলা ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী বলেন, গত ছয় দিন মংডুর আশপাশের গ্রামগুলোতে দিনের বেলায় গোলাগুলি-মর্টার শেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেনি। তবে রাতের বেলায় কয়েকটি গ্রামে থেমে থেমে গুলির শব্দ শোনা যেত। কিন্তু গতকাল রাতে হঠাৎ একসঙ্গে ২১টি মর্টার শেলের বিস্ফোরণ এপারের লোকজনকে ভাবিয়ে তুলেছে। সীমান্তের বাসিন্দারা জানান, গতকাল সন্ধ্যায় আরাকান আর্মি স্থলপথে নাকপুরা এলাকার বিজিপি সেক্টর ঘিরে ফেলে এবং হামলা চালায়। এরপর বিজিপি সদস্যরাও পাল্টা জবাব দেয়। তখন রাত ৯টা ২৫ মিনিট থেকে টানা ৩৩ মিনিট মর্টার শেলের বিস্ফোরণ ঘটে। ধারণা করা হচ্ছে, আরাকান আর্মির অবস্থানের ওপর মর্টার শেলগুলো নিক্ষেপ করে সরকারি বাহিনী। টেকনাফ পৌরসভার প্যানেল মেয়র হাফেজ এনামুল হাসান বলেন, রাতের বেলায় বিকট শব্দের মর্টার শেলের বিস্ফোরণে কেঁপে উঠে টেকনাফ পৌরসভার জালিয়াপাড়া, চৌধুরীপাড়া, কুলালপাড়া, ডেইলপাড়া, হাঙ্গারডেইলসহ অন্তত ১৩টি গ্রাম। এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আদনান চৌধুরী বলেন, ‘সীমান্তে গত তিন চার দিন শান্ত থাকার পর হঠাৎ করে রবিবার রাতে গুলাগুলি বিস্ফোরণের ঘটনা জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি, তবে আজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তেমন গোলাগুলি শব্দ শোনা যায়নি। অনেকটা স্বাভাবিকতা বিরাজ করছে সীমান্তে। সংঘাতের বিষয়টি মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সমস্যা। তবে সংঘাতময় পরিস্থিতির কারণে যাতে এখানে কোনো সমস্যা না হয়, এ জন্য বিজিবি ও কোস্টগার্ডের টহল বাড়ানো হয়েছে। সীমান্তে বসবাসরত মানুষকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। টেকনাফ ২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, রাখাইন পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। সেখানকার কাউকে বাংলাদেশে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বাংলাদেশ সীমান্তে কঠোর অবস্থানে বিজিবি। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর অনেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ছোট ছোট দলে আসা এসব রোহিঙ্গার বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা ইতোমধ্যে রুখে দিয়েছে বিজিবি।
১৮ মার্চ, ২০২৪

মিয়ানমারে সংঘাত / টেকনাফ বন্দরে আমদানি-রপ্তানি কমেছে ৮০ ভাগ
মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে জান্তা বাহিনীর চলমান সংঘাতের প্রভাব পড়েছে টেকনাফ স্থলবন্দরে। আমদানি-রপ্তানিতে নেমেছে স্থবিরতা। বাণিজ্য বন্ধ থাকায় কমেছে সরকারের রাজস্ব আয়। আর বড় ক্ষতির মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, টেকনাফ বন্দরে এখন আমদানি-রপ্তানি কমেছে ৮০ শতাংশ। ফলে মিয়ানমারে বিনিয়োগ করা প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি আটকে আছে। পণ্য আনা-নেওয়া বন্ধ থাকায় বেকার হয়ে পড়েছেন শ্রমিকরা। টেকনাফ বন্দর কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যমতে, গত বছরের ডিসেম্বরে আমদানি ছিল ২০ হাজার ৫০০ টন বিভিন্ন ধরনের পণ্য। জানুয়ারিতে এসে তা নেমে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৩১৮ টনে। আর ফেব্রুয়ারিতে তা অনেকটা শূন্যের কোটায়। ব্যবসায়ীদের দেওয়া তথ্যমতে, টেকনাফ বন্দরে প্রায় ১০০ আমদানিকারক রয়েছেন। টেকনাফ বন্দর দিয়ে মিয়ানমার থেকে কাঠ, সুপারি, মাছ, আদা, হলুদ, মরিচ, পেঁয়াজ, শুঁটকি, ছোলা, ডাল, চাল, আচার আমদানি করা হয়। আর রপ্তানি করা হয় প্লাস্টিক সামগ্রী, তৈরি পোশাক, চিপস, অ্যালুমিনিয়াম সামগ্রী, ওষুধ, প্রসাধনী ও বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী। এখন মিয়ানমার থেকে পণ্য আমদানি করতে না পারলে ব্যবসায়ীরা বিপদে পড়বে। পণ্য আনা-নেওয়া বন্ধ থাকায় বেকার হয়ে পড়েছেন তিন শতাধিক শ্রমিক। স্থলবন্দরে শ্রমিকদের দলনেতা আজগর মাঝি বলেন, স্বাভাবিক সময়ে বন্দরে প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫টি ট্রাক লোড-আনলোড হয়। কিন্তু মিয়ানমারে সংঘাতের কারণে এক মাসে চার-পাঁচটির বেশি ট্রাক বন্দর ছেড়ে যাচ্ছে না। বন্দরের ব্যবসায়ী ও আমদানিকারক আব্দু শুক্কুর বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণে আমাদের ব্যবসা প্রায় ৮০ শতাংশ কমেছে। ব্যবসায়ীদের প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ মিয়ানমারে আটকে আছে। আকিয়াব বন্দরে কিনে রাখা শত শত টন আদা, নারকেল, মাছ ও সুপারি মজুত আছে। এগুলো না আনতে পারলে ব্যবসায়ীদের অনেক ক্ষতি হবে। বন্দরের সিএনএফ সভাপতি আব্দুল আমিন বলেন, ঝুঁকি নিয়ে দু-একটি জাহাজ মিয়ানমার থেকে আদা, নারকেল ও শুঁটকি নিয়ে এসেছে। এর বাইরে প্রায় আড়াই মাস ধরে ব্যবসা বন্ধ রয়েছে। এতে আমরা যেমন ক্ষতির মুখে পড়ছি, তেমনি সরকারও রাজস্ব হারাচ্ছে। আর শ্রমিকও বেকার জীবনযাপন করছে। আমরা আশা করছি দ্রুত সময়ে ইয়াংগুন থেকে ব্যবসা শুরু হবে। টেকনাফ স্থলবন্দরের পরিচালক জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, মিয়ানমারে সাম্প্রতিক পরিস্থিতির কারণে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম এক প্রকার স্থবিরই বলা চলে। অথচ আগে প্রতি মাসে দেড়শ থেকে দুইশ ইঞ্জিনচালিত বড় নৌকা পণ্য আনা-নেওয়া করত। টেকনাফ রাজস্ব কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ মাসুম বলেন, বন্দরে আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক থাকলে দৈনিক ৩ কোটির টাকা রাজস্ব আয় করা সম্ভব। সে হিসাবে যদি পণ্য আনা-নেওয়া নিয়মিত থাকে, তাহলে প্রতি মাসে অন্তত ৬০ থেকে ৭০ কোটি টাকা আয় করা সম্ভব। তিনি বলেন, মিয়ানমানেরর মংডু এবং আকিয়াব কর্মাশিয়াল ব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশের একটা চুক্তি ছিল। কিন্তু মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মি ব্যাংকে হামলা চালালে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাদের শাখা বন্ধ করে দেয়। ফলে ব্যাংক ড্রাফটও বন্ধ রয়েছে। সরকারের পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে বিষয়টি সমাধানের দাবি জানান তিনি।
১৩ মার্চ, ২০২৪

টেকনাফ বন্দরে আমদানি-রপ্তানি কমেছে ৮০ ভাগ
মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মি এবং জান্তা বাহিনীর মধ্যে চলমান সংঘাতের ফলে টেকনাফ স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানিতে নেমেছে স্থবিরতা। বাণিজ্য বন্ধ থাকায় কমেছে সরকারের রাজস্ব আয়। ক্ষতির মুখে পড়েছে ব্যবসায়ীরা।  ব্যবসায়ীরা বলছে, টেকনাফ বন্দরে এখন আমদানি-রপ্তানি কমেছে ৮০ শতাংশ। ফলে মিয়ানমারে বিনিয়োগ করা প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি আটকে আছে বলে দাবি তাদের। পণ্য আনা-নেওয়া বন্ধ থাকায় বেকার হয়ে পড়ছে শ্রমিক। বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণে মূলত বন্ধ রয়েছে আমদানি-রপ্তানি। টেকনাফ বন্দর কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য মতে, গেল বছরের ডিসেম্বরে আমদানি ছিল ২০ হাজার ৫০০ টন পণ্য। জানুয়ারিতে এসে তা নেমে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৩১৮ টনে। আর ফেব্রুয়ারিতে তা অনেকটা শূণ্যের কোটায়।  রাজস্ব বিভাগ বলছে, টেকনাফ স্থলবন্দরের ২০২২-২৩ অর্থবছরে আমদানি হয়েছে ১ লাখ ৯৯ হাজার ২১৯ টন, রপ্তানি হয়েছে ৩ হাজার ৫২৩ টন আর রাজস্ব আয় হয়েছে ৭ দশমিক ৬৩ কোটি টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছরে আমদানি হয়েছে ২ লাখ ৩৩ হাজার ৪০২ টন, রপ্তানি হয়েছে ১১ হাজার ৪ টন আর রাজস্ব আয় হয়েছে ৯ দশমিক ২৩ কোটি টাকা। ব্যবসায়ীদের দেওয়া তথ্য মতে, টেকনাফ বন্দরে প্রায় ১০০ জন আমদানিকারক রয়েছে। টেকনাফ বন্দর দিয়ে মিয়ানমার থেকে কাঠ, সুপারি, মাছ, আদা, হলুদ, মরিচ, পেঁয়াজ, শুঁটকি, ছোলা, ডাল, চাল, আচার আমদানি করা হয়। আর রপ্তানি করা হয় প্লাস্টিকসামগ্রী, তৈরি পোশাক, চিপস, অ্যালুমিনিয়ামসামগ্রী, ওষুধ, প্রসাধনী ও বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী। এখন মিয়ানমার থেকে পণ্য আমদানি করতে না পারলে ব্যবসায়ীরা বিপদে পড়বে। পণ্য আনা-নেওয়া বন্ধ থাকায় বেকার হয়েছে প্রায় তিন শতাধিক শ্রমিক। স্থল বন্দরের শ্রমিকদের দলনেতা আজগর মাঝি বলেন, স্বাভাবিক সময়ে বন্দরে প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫টি ট্রাক লোড-আনলোড হয়। কিন্তু মিয়ানমারে ওপারে সংঘাতের কারণে এক মাসে চার-পাঁচটির বেশি ট্রাক বন্দর ছেড়ে যাচ্ছে না। বন্দর ব্যবসায়ী ও আমদানিকারক আব্দু শুক্কুর সিআইপি বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণে আমাদের ব্যবসা প্রায় ৮০ ভাগ কমেছে। ব্যবসায়ীদের প্রায়ক দশ থেকে পনের হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ মিয়ানমারে আটকে আছে। আকিয়াব বন্দরে কিনে রাখা শত শত টন আদা, নারকেল, মাছ ও সুপারি মজুত আছে। এগুলো না আনতে না পারলে ব্যবসায়ীদের অনেক ক্ষতি হবে। বন্দরের সিএনএফ সভাপতি আব্দুল আমিন বলেন, ঝুঁকি নিয়ে দুএকটি জাহাজ মিয়ানমার থেকে আদা, নারকেল এবং শুঁটকি মাছ এসেছে। এর বাইরে গেল প্রায় আড়ই মাস ধরে ব্যবসা বন্ধ রয়েছে। এতে আমরা যেমন ক্ষতির মুখে পড়ছি তেমনি সরকারও রাজস্ব হারাচ্ছে। আর শ্রমিকও বেকার জীবনযাপন করছে। তবে আমরা আশা করছি দ্রুত সময়ে ইয়াংগুন থেকে ব্যবসা শুরু হবে। টেকনাফ স্থল বন্দর পরিচালক জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, মিয়ানমারে সাম্প্রতিক পরিস্থিতির কারণে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম একপ্রকার স্থবিরই বলা চলে। অথচ আগে প্রতি মাসে দেড়শ থেকে দুইশ ইঞ্জিনচালিত বড় বোট পণ্য আনা-নেওয়া করত। টেকনাফ রাজস্ব কর্মকর্তাস আব্দুল্লাহ মাসুম বলেন, বন্দরে আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক থাকলে দৈনিক তিন কোটির টাকা রাজস্ব আয় করা সম্ভব। সে হিসেবে যদি পণ্য আনা-নেওয়া নিয়মিত থাকে তাহলে প্রতিমাসে অন্তত ৬০-৭০ কোটি টাকা আয় করা সম্ভব। তিনি বলেন, মিয়ামানেরর মংডু এবং আকিয়াব কর্মাশিয়াল ব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশের একটা চুক্তি ছিল। কিন্তু মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মি ব্যাংকে হামলা চালালে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাদের শাখা বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে ব্যাংক ড্রাফটও বন্ধ রয়েছে। যার কারণে বন্দরে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। সরকারের পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে এটি সুরাহা করতে হবে।
১২ মার্চ, ২০২৪
X