ফুটসাল প্রতিযোগিতা বয়কট করল ঢাবি ছাত্রলীগ
দেশের সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ৬৪টি দল নিয়ে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ফুটসাল প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। সোমবার (৪ মার্চ) সকাল ৮টা থেকে প্রতিযোগিতাটি শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ এই প্রতিযোগিতাটি বয়কট করেছে।  বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ক্রীড়া সম্পাদক পারভেজ মুন্সি। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ থেকে যে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ফুটসাল টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়েছে, সেটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ বয়কট করেছে।  এ প্রসঙ্গে মন্তব্য জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বলেন, আমি অসুস্থ। এই মুহূর্তে আমি কিছু বলতে পারছি না। আমাদের ক্রীড়া সম্পাদক এ বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারবেন।  বয়কটের কারণ জানতে চাইলে পারভেজ মুন্সি কালবেলাকে বলেন, রোববার (৩ মার্চ) টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ছিল। এখানে প্রত্যেকটা বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলোয়াড় বা নেতাকর্মীদের সঙ্গে তাদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। কিন্তু, আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ ফুটসাল দল সেখানে গেলে আমাদের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে দেখতে পাইনি। এরপর আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি, আমাদের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে আমন্ত্রণই জানানো হয়নি। প্রায় অর্ধশত বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ নেতারা এখানে এসেছেন, কিন্তু আমাদের দুই নেতাকে এখানে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এটি দুঃখজনক। এজন্য আমরা এই টুর্নামেন্টকে বয়কট করেছি।   সার্বিক বিষয়ে মন্তব্য জানতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়নের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাদেরকে পাওয়া যায়নি। এর আগে, ১৩ ফেব্রুয়ারি দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে ‘মাদক, বাল্যবিবাহ, যৌতুক রুখবই-স্মার্ট বাংলাদেশ গড়বই’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দলগুলোকে নিয়ে এই ফুটসাল প্রতিযোগিতার ঘোষণা দেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন। তখন তিনি বলেন, আগামী ৪ মার্চ সকাল ৮টা থেকে প্রতিযোগিতাটি শুরু হবে। ১০ মার্চ বিকেল ৫টায় সমাপনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে প্রতিযোগিতাটির পর্দা নামবে। সবগুলো ম্যাচ রাজধানীর মিরপুরে শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে আয়োজিত হবে। ৬৪ দল নিয়ে আয়োজিত হবে। প্রত্যেক দলে পাঁচজন করে খেলোয়াড় অংশগ্রহণ করবেন। দুইজন করে অতিরিক্ত খেলোয়াড় দলে সংযুক্ত থাকবেন। তিনি আরও বলেন, সমাজে মাদক, যৌতুক ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে কাজ করে এমন কয়েকটি সংগঠনকে টুর্নামেন্টে পুরস্কৃত করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বদ্ধপরিকর। তারই অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীদের চিন্তার উৎকর্ষতা সাধন, নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক ও সমঝোতা বৃদ্ধি, সুষ্ঠু প্রতিযোগিতার পরিবেশ তৈরি, মেধা ও মননের সংমিশ্রণ ঘটানো, সর্বোপরি স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে তরুণ প্রজন্মকে দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করার উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে আড়ম্বরপূর্ণভাবে আয়োজিত হবে বিএসএল আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ফুটসাল প্রতিযোগিতা। সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন, সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতসহ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
০৪ মার্চ, ২০২৪

সাংবাদিকদের কটূক্তি ঢাবি ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদকের
ছাত্রলীগের কর্মসূচি কাভারেজের সময় গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক কর্মসূচি বয়কট করেছেন উপস্থিত ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার কর্মীরা। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-ছাত্র কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আয়োজিত ছয় দফা দিবসের আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে এমন অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন হাসান সৈকত। সংবাদকর্মীরা জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত মঞ্চে বক্তব্য দিচ্ছিলেন। এ সময় ইলেকট্রনিক মিডিয়ার কর্মরত কয়েকজন ক্যামেরাপারসন অডিয়েন্সের ভিডিও ফুটেজ নিচ্ছিলেন। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন সৈকত। এক ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, মঞ্চে বক্তব্য দেওয়ার সময় ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বলছেন, আমাদের সাংবাদিকদের বিবেক দিন দিন কমে যাচ্ছে। আমি কথা বলছি। আমার সামনে এসে দাঁড়াচ্ছে। এটি মূলবোধের অবক্ষয়। সাংবাদিকদের মানবিক দৃষ্টিকোণ ও দূরদর্শিতার প্রয়োজন রয়েছে। এ সময় বিষয়টি নিয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসাইনের সঙ্গে কয়েকজন সাংবাদিক কথা বলতে গেলে তাদের উদ্দেশে সৈকত বলেন, দিস ইজ ব্লগ। আপনি সাংবাদিকতা সম্পর্কে যদি জানেন ব্লগ বা ব্লগিং সম্পর্কে আপনাকে জানতে হবে। এ সময় সাদ্দাম তাকে বাধা দিলে, তিনি সাদ্দামের সঙ্গেও তর্ক করতে থাকেন। এক পর্যায়ে উপস্থিত সাংবাদিকরা ওই কর্মসূচি বয়কট করে চলে যান। পরে কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসাইন এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন। ঘটনার সময় মঞ্চে সাদ্দাম হোসাইন ছাড়াও সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন উপস্থিত ছিলেন। ঘটনার পরপরই অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করেন সভার প্রধান অতিথি ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মো. আব্দুর রাজ্জাক। এ বিষয়ে সময় টেলিভিশনের আওয়ামী লীগ বিটের রিপোর্টার রোজিনা রোজি কালবেলাকে বলেন, আমাদের কয়েকজন ক্যামেরাম্যান মঞ্চে দাঁড়িয়ে অডিয়েন্সের ছবি নিচ্ছিলেন। তখন সৈকত সাংবাদিক সমাজকে নিয়ে কথা বলার কারণে সাংবাদিকরা তাৎক্ষণিক এ ঘটনার প্রতিবাদ জানান। পরে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় দুই নেতা বলেছেন, তারা সৈকতকে নিয়ে বসবেন। যদি কোনো সিদ্ধান্ত আসে, সেটি জানিয়ে দেবেন। মোহনা টিভি রিপোর্টার মনিরুল ইসলাম মনি বলেন, আমরা প্রতিবাদ জানিয়ে ছাত্রলীগের এ কর্মসূচি বয়কট করেছি। তবে, এ বিষয়ে ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বলেন, আমি গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করিনি। চারজন ক্যামেরাম্যান আমাকে ব্লক করে ভিডিও ফুটেজ নিয়েছিল। কয়েকবার বলার পরও তারা সরেনি। এটি তো ন্যূনতম ম্যানার। কমনসেন্স। মানবিকতার অবক্ষয় নিয়ে আমি কোনো ধরনের কথা বলিনি।
০৭ জুন, ২০২৩
X