ছাত্রলীগের কর্মসূচি কাভারেজের সময় গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক কর্মসূচি বয়কট করেছেন উপস্থিত ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার কর্মীরা। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-ছাত্র কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আয়োজিত ছয় দফা দিবসের আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে এমন অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন হাসান সৈকত।
সংবাদকর্মীরা জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত মঞ্চে বক্তব্য দিচ্ছিলেন। এ সময় ইলেকট্রনিক মিডিয়ার কর্মরত কয়েকজন ক্যামেরাপারসন অডিয়েন্সের ভিডিও ফুটেজ নিচ্ছিলেন। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন সৈকত। এক ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, মঞ্চে বক্তব্য দেওয়ার সময় ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বলছেন, আমাদের সাংবাদিকদের বিবেক দিন দিন কমে যাচ্ছে। আমি কথা বলছি। আমার সামনে এসে দাঁড়াচ্ছে। এটি মূলবোধের অবক্ষয়। সাংবাদিকদের মানবিক দৃষ্টিকোণ ও দূরদর্শিতার প্রয়োজন রয়েছে।
এ সময় বিষয়টি নিয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসাইনের সঙ্গে কয়েকজন সাংবাদিক কথা বলতে গেলে তাদের উদ্দেশে সৈকত বলেন, দিস ইজ ব্লগ। আপনি সাংবাদিকতা সম্পর্কে যদি জানেন ব্লগ বা ব্লগিং সম্পর্কে আপনাকে জানতে হবে। এ সময় সাদ্দাম তাকে বাধা দিলে, তিনি সাদ্দামের সঙ্গেও তর্ক করতে থাকেন। এক পর্যায়ে উপস্থিত সাংবাদিকরা ওই কর্মসূচি বয়কট করে চলে যান। পরে কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসাইন এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন।
ঘটনার সময় মঞ্চে সাদ্দাম হোসাইন ছাড়াও সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন উপস্থিত ছিলেন। ঘটনার পরপরই অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করেন সভার প্রধান অতিথি ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মো. আব্দুর রাজ্জাক।
এ বিষয়ে সময় টেলিভিশনের আওয়ামী লীগ বিটের রিপোর্টার রোজিনা রোজি কালবেলাকে বলেন, আমাদের কয়েকজন ক্যামেরাম্যান মঞ্চে দাঁড়িয়ে অডিয়েন্সের ছবি নিচ্ছিলেন। তখন সৈকত সাংবাদিক সমাজকে নিয়ে কথা বলার কারণে সাংবাদিকরা তাৎক্ষণিক এ ঘটনার প্রতিবাদ জানান। পরে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় দুই নেতা বলেছেন, তারা সৈকতকে নিয়ে বসবেন। যদি কোনো সিদ্ধান্ত আসে, সেটি জানিয়ে দেবেন।
মোহনা টিভি রিপোর্টার মনিরুল ইসলাম মনি বলেন, আমরা প্রতিবাদ জানিয়ে ছাত্রলীগের এ কর্মসূচি বয়কট করেছি। তবে, এ বিষয়ে ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বলেন, আমি গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করিনি। চারজন ক্যামেরাম্যান আমাকে ব্লক করে ভিডিও ফুটেজ নিয়েছিল। কয়েকবার বলার পরও তারা সরেনি। এটি তো ন্যূনতম ম্যানার। কমনসেন্স। মানবিকতার অবক্ষয় নিয়ে আমি কোনো ধরনের কথা বলিনি।
মন্তব্য করুন