দাম ভালো হওয়ায় তিল চাষে ঝুঁকছে কৃষকরা
ফলন ও দাম ভালো হওয়ায় ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি তিলের আবাদের প্রতি ঝুঁকছে কৃষকরা।  অল্প পরিশ্রমের ফসল তিল। অন্যান্য ফসলের মতো তিল চাষে তেমন ঝামেলা নেই বললেই চলে। কীটনাশক ও সারও প্রয়োগ করতে হয় না। ফলন ভালো হলে বিঘাপ্রতি ৫ থেকে ৬ মণ তিল পাওয়া যায়।    উপজেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে, এ বছর সদরপুর উপজেলায় ১ হাজার ২৬২ হেক্টর জমিতে তিল চাষ হয়েছে। উপজেলার সব এলাকাই তিল চাষের উপযোগী। তার মধ্যে চরবিষ্ণুপুর, আকটের চর, নারিকেলবাড়ীয়া, চর নাসিরপুর ও চর মানাইর ইউনিয়নের চরাঞ্চল তিল চাষের জন্য বেশি উপযোগী।  তিল চাষি আমিন সরদার (৫০) জানান, এক একর জমিতে তিল আবাদ করেছি। বারি তিল-৩ ও বারি তিল-৪ বীজ বপন করেছিলাম। ভালো ফলন হয়েছে, ফুলও এসেছে। আশা করছি, বিঘা প্রতি ৫-৬ মণ করে তিল পাব। সরকারি সহযোগিতা পেলে তিলের আবাদ বাড়াব। সদরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নিটুল রায় জানান, এ বছর ১ হাজার ২৬২ হেক্টর জমিতে বারি তিল-৩ ও বারি তিল-৪ আবাদ করেছেন চাষিরা। ফলন ভালো হয়েছে। এ ফসল নিয়ে কৃষকদের মধ্যে বেশ আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। আমরা তিল চাষিদের আগ্রহ বাড়াতে সরকারি সুযোগ সুবিধা অব্যাহত রাখব। তিল একটি লাভজনক ফসল হওয়াতে সদরপুর উপজেলায় দিনদিন তিলের আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২৭ এপ্রিল, ২০২৪

সিলেটের পর্যটন / তিল ঠাঁই নাইরে, সন্তুষ্ট ব্যবসায়ীরাও
এবারের ঈদুল ফিতরের লম্বা ছুটিতে পর্যটকের ঢল নেমেছে সিলেটে। কোথাও যেন ঠাঁই নাই। পর্যটন স্পট কিংবা হোটেল-মোটেল সবখানে ছিল উপচেপড়া ভিড়।  ঈদের দিন ও ঈদের দ্বিতীয় দিনে সিলেটের সবকটি হোটেল পূর্ণ হয়ে যায়। ঈদের দিন সিলেট নগরীর ধোপাদিঘির পাড়স্থ ওয়াক ওয়ে বঙ্গবীর ওসমানী শিশু উদ্যানে কয়েক হাজার দর্শনার্থী ঘুরে বেড়িয়েছেন। সিলেট শহরের মধ্যে এ শিশু উদ্যানটি একমাত্র বিনোদনের জায়গা। তাই বেশিরভাগ বাবা-মা শিশুদের নিয়ে ঘুরতে যান এখানে। সিলেটের চা বাগান ঈদের দ্বিতীয় দিনে সিলেটের প্রথম চা বাগান মালনীছড়ায় দর্শনার্থীদের ঢল নামে। চা-বাগানের এ দৃশ্য দেখে কেউ বইয়ের পাতায় চা-বাগানের ছবির থেকে বেশি সুন্দর বলে মন্তব্য করেছেন। আবার কেউ কবিতার পঙক্তি ও গানের মাধ্যমে চা বাগান নিয়ে মনের ভাব প্রকাশ করছেন। এ ছাড়া সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সামনে লাক্কাতুরা ন্যাশনাল টি ও তারাপুর চা বাগান ঘুরে দেখা গেছে, চা বাগানগুলোর উঁচু-নিচু, আঁকা-বাঁকা পথ ঘুরে বেড়াচ্ছেন পর্যটকরা। কেউ একতারা হাতে নিয়ে গান গাইছেন। কেউবা কবিতা আবৃত্তি করছেন। আবার অনেকেই সুন্দর মুহূর্তটি স্মরণীয় করে রাখতে মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় ও ডিএসএলআর ক্যামেরায় ফ্রেমবন্দি করতে দেখা যায়। ছয় বছরের মেয়ে আনিশা জান্নাতকে নিয়ে ঘুরতে আসা শামীমা আক্তার বলেন, মেয়ের বাবা প্রবাসী। একে ৩টি ড্রেস কিনে দেওয়া হয়েছে। তবুও তার বায়নার শেষ নাই। এখন এটা, তখন ওটা লাগবে বলে কান্নাকাটি শুরু করে। বিকেল থেকে পার্কে আসবে বলে বায়না ধরে, তাই নিয়ে এলাম। বেসরকারি চাকরিজীবী বিশ্বদেব বলেন, সিলেটে এমন একটি জায়গা, যা কোনো কবিতা বা বইয়ের মাধ্যমে প্রকাশ করা যায় না। প্রকৃতির কাছাকাছি না এলে বোঝা যায় না প্রকৃতির সৌন্দর্য। আসলে সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত চমৎকার এই প্রকৃতি মনে হয় সিলেট ছাড়া আর কোথাও পাব না। সুনামগঞ্জ থেকে বেড়াতে আসা আরেক পর্যটক আমিনুল ইসলাম জানান, এখানকার সবুজ প্রকৃতি আর রূপ-লাবণ্যতায় বিমুগ্ধ হয় পর্যটক-দর্শনার্থীরা। এখানে ঘুরতে এসে আমরা বন্ধু-বান্ধব সবাই অত্যন্ত খুশি। পরিবার পরিজন নিয়ে এখানে ঘুরতে পারার মতো পরিবেশ রয়েছে। শিশু উদ্যানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহনাজ চৌধুরী বলেন, এটা গরিবের পার্ক নামে পরিচিত। প্রায় দুই যুগ থেকে আমরা শিশুদের সুস্থ বিনোদন দিয়ে যাচ্ছি। বিভিন্ন দিবসে এখানে অনেক লোকের সমাগম হয়। এই জায়গা অনেক নিরাপদ। আমাদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা লোকজন খুবই দক্ষ। এখন পর্যন্ত আল্লাহর রহমতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। জাফলং  বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন স্পট সিলেটের জাফলং। সিলেট শহর থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে এ পর্যটন স্পটটিতে যেতে হয়। এ ছাড়া জাফলংয়ে তেমন ভালো মানের হোটেল না থাকায় বাধ্য হয়ে পর্যটকরা সিলেটে অবস্থান নেন। ফলে সিলেটের হোটেলগুলোতে জায়গা না পেয়ে অনেকে জাফলংয়ের ছোট ছোট হোটেলগুলোতে রাত কাটান। জাফলংয়ের ব্যবসায়ী রতন মিয়া জানান, এবার স্মরণকালের সবচেয়ে বেশি পর্যটক জাফলংয়ে এসেছেন। এতে আমাদের ব্যবসা অন্যান্য বছরের তুলনায় ভালো হয়েছে। সাদাপাথর  বর্তমান সময়ে পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণের জায়গা কোম্পানীগঞ্জের সাদা পাথর। এখানেও পর্যটকরা সিলেট থেকে রওয়ানা হয়ে স্পটে যান। সেখানে পা রাখার জায়গায় ছিল না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসেও নৌকা পাননি পর্যটকরা। বাধ্য হয়ে হেঁটে সাদা পাথরে যান পর্যটকরা। রাতারগুল সিলেটের অদূরে এ পর্যটন স্পটে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার পর্যটক এসেছেন বেশি। ঢাকা থেকে আসা আরিফ হোসেন জানান, এবার আবহাওয়া বেশ ভালো থাকায় এবং প্রশাসন তৎপর থাকায় বেশ ভালো কেটেছে। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনের পক্ষে সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বিনোদনকেন্দ্রের ভেতরে না থাকলেও কেন্দ্রগুলোর বাইরে আমাদের পুলিশ সব সময় থাকে। কারও কোনো সমস্যা হলে আমাদের জানালে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়াও তাৎক্ষণিক কোনো অভিযোগ থাকলে স্থানীয় থানার ওসি বা ৯৯৯ এ কল দিয়ে অভিযোগ জানানোর জন্য আহবান জানান তিনি।
১৫ এপ্রিল, ২০২৪

চট্টগ্রামে মার্কেটে তিল ধারণের ঠাঁই নেই
ঘনিয়ে এলো ঈদ। চট্টগ্রামের বিপণিবিতানগুলোতে বাড়ছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ক্রেতাদের আনাগোনা। সোমবার (৮ এপ্রিল) নগরের নিউমার্কেট, জহুর হকার, রিয়াজউদ্দিন বাজার, লালখান বাজার, জিইসি, চকবাজার এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে এমন দৃশ্য। অভিজাত শ্রেণির ক্রেতাদের ভিড় মিমি সুপার মার্কেটে জমকালো শাড়ি, পোশাক ও গহনার টানেই অভিজাত শ্রেণির ক্রেতারা ভিড় করেছেন মিমি সুপার মার্কেটে। মার্কেটটি ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি দোকানে ঈদ উপলক্ষে নতুন শাড়ি, থ্রিপিস, বাচ্চাদের পোশাক, গয়না, জুতার বিপুল সম্ভার রয়েছে। তরুণী, মহিলা ও শিশুদের পোশাকের আধিক্য বেশি। এ ছাড়া শার্ট-প্যান্ট, পাঞ্জাবিসহ অভিজাত শ্রেণির পুরুষদের পোশাকের সম্ভারও রয়েছে। বিভিন্ন দোকানে মহিলা ও শিশুদের পোশাক কেনাকেনা চলছে। থ্রিপিস ও জুতার দোকানেও ছিল ভিড়।  মিমি সুপার মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি মো. জাকির হোসেন বলেন, শিশু, তরুণী ও মহিলাদের পোশাক বেচাকেনা ভালো হলেও শাড়ির ব্যবসা খারাপ। শাড়ি এখন বিয়ে-পার্টি নির্ভর হয়ে গেছে। বিক্রেতারা বলেন, গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার বেচাকেনা ভালো হয়েছিল। তবে শনিবার থেকে ক্রেতা কমে গেছে। আমাদের দোকান হচ্ছে এক দামের। তারপরও আমরা শাড়ির দাম অনেক কমিয়ে নির্ধারণ করেছি। কারণ এখন তো প্রতিযোগিতার বাজার। তাই দামটা নাগালের মধ্যে রেখেছি।  তারুণরা ভিড়ছেন ফিনলে স্কয়ারে ওয়েস্টার্ন পোশাকের বিপুল সমাহারের কারণে তরুণ-তরুণীরা ভিড়ছেন নগরীর বিপ্লব উদ্যান সংলগ্ন ফিনলে স্কয়ারে। দুই নম্বর গেট এলাকার অভিজাত এই শপিংমলে গিয়ে দেখা যায়, তরুণ-তরুণীদের ফ্যাশনেবল এবং ওয়েস্টার্ন পোশাকগুলোর ভালো কালেকশন রয়েছে। আরও আছে মেয়েদের ভারতীয়, পাকিস্তানি বাহারি পোশাক। তবে ক্রেতাদের মধ্যে সুতির কাপড়ের চাহিদা বেশি। পোশাকগুলো একটু বেশি দামেই বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। ছেলেদের শোরুমে দেখা যায় শার্ট, প্যান্ট, টিশার্ট, পাঞ্জাবিসহ ফতুয়ার সমাহার রয়েছে।  নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শৈল্পিকের এক বিক্রেতা বলেন, ২৭ রোজা শেষ হলো। ঈদের আর মাত্র কয়েক দিন বাকি। এখনো বেচাবিক্রি আশানুরূপ শুরু হয়নি। তিনি বলেন, ছেলেদের পাঞ্জাবির মধ্যে সিকুয়েন্স ফেব্রিকের পাঞ্জাবি বেশি চলছে। পাশাপাশি দু’একটা ডিজিটাল প্রিন্টের বিক্রি হচ্ছে। শার্ট, টিশার্ট, ফতুয়ার বেচাবিক্রি কম। এখানে ছেলেদের পাঞ্জাবি ১২৯০ টাকা থেকে ৪২৫০ টাকায় চাওয়া হচ্ছে, শার্ট ১০৯০ টাকা থেকে ১৭৫০ টাকায় এবং টিশার্ট ৫৯০ থেকে ১৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে অলস সময় পার করছে জুতা, কসমেটিকস, হিজাব ও বোরকার দোকানগুলো। এসব দোকানের কর্মচারীরা কেউ কেউ বসে বসে মোবাইল ফোন টিপছেন, কেউ বা আড্ডা দিচ্ছেন।  নারীদের প্রিয় মার্কেট সেন্ট্রাল প্লাজা নগরীর জিইসি মোড় সেন্ট্রাল প্লাজায় ঘুরে দেখা যায়, সাজানো রয়েছে দেশি-বিদেশি কাপড়, স্যান্ডেল ও ব্যাগের সমাহার। তবে চোখ ধাঁধানো আলোকসজ্জা নেই। এখানে মিলছে দিল্লি, বোম্বের হাতের কাজ করা পোশাক। পাওয়া যাচ্ছে পাকিস্তানের তৈরি আগানুর, সাদা বাহার, নুরস, বিন হামিদ গুলবানু কিংবা শেভরনের নাম করা থ্রিপিস। এগুলোর মূল্য ৭শ থেকে ২৫ হাজার টাকার মধ্যে। তবে পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় অতীতের তুলনায় গ্রাহকরা খরচ কাটছাঁট করে কেনাকেটা করছেন বলে জানান ব্যবসায়ীরা। বাহারি ডিজাইনের দেশি-বিদেশি থান কাপড়, থ্রিপিস, ভ্যানিটি ব্যাগ, মেয়েদের জুতা সংগ্রহ বেশি এ মার্কেটে। রয়েছে বেশ কিছু নামকরা টেইলার্সও।  মনির হোসেন নামে এক বিক্রেতা বলেন, দেশীয় থ্রিপিস, থান কাপাড়ের পাশাপাশি এখনে ভারত ও পাকিস্তানি থ্রিপিস ও থান কাপড়ের সংগ্রহ রয়েছে। রয়েছে চীন, থাইল্যন্ড ও ভিয়েতনামের তৈরি বেশ কয়েকটি জুতা ও ব্যাগের দোকান।  ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেখা গেছে, মা দীর্ঘদিন ধরে কেনাকাটা করেছে। মা, মেয়ের দেখাদেখি তৃতীয় প্রজন্মে এসে নাতি-নাততিও কেনাকেটা করছে। তাই এ মার্কেটকে বলা হয় প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের মার্কেট। সব শ্রেণির ক্রেতার পছন্দ রিয়াজউদ্দিন বাজার মাথার টুপি, পায়ের জুতা, ক্রোকারিজ, কাঁচা পণ্য, সেমাই-পায়েস সবই মিলে রিয়াজউদ্দিন বাজার। চট্টগ্রামে  অনেক মার্কেট গড়ে ওঠলেও এ মার্কেটের কদর কমেনি। সব শ্রেণির মানুষের কাছে ঈদের কেনাকাটায় রিয়াজউদ্দিন বাজারের জুড়ি নেই।  দেখা গেছে, অলি-গলি আর দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড়। দম ফেলার ফুরসত নেই ব্যবসায়ীদেরও। ছোট-বড় বিভিন্ন মার্কেটের সমন্বয়ে প্রায় ১০ হাজার দোকান রয়েছে এখানে। এখানে চাহিদা রয়েছে বেনারসি ও কাতানের। থ্রি-পিস, লুঙ্গি, জুতো, প্যান্ট, জুয়েলারি, প্রসাধনীসহ পাইকারি ও খুচরা পণ্যের বিপুল সম্ভার রয়েছে। গৃহসজ্জা, প্লাস্টিক সামগ্রী, চেয়ার-টেবিল, শাক-সবজি, মাছ-মাংস সবই মিলছে রিয়াজউদ্দিন বাজারে। এখানে আসা ক্রেতারাও কেউ ফিরছেন না খালি হাতে।  রিয়াজউদ্দিন বাজারের ব্যবসায়ী তাহের বলেন, বেনারসি ও কাতানের চাহিদা বেশি। ভারত, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড থেকে আমদানি করা শাড়ি, থ্রিপিসের কদর বেশি।  ব্র্যান্ডের পণ্য বালি আর্কেডে আফরোজা, তাহিয়া, আশা তিন কাজিন বেশ কয়েকটা দোকান ঘুরে পাঁচটি পোশাক ও কিছু ব্র্যান্ডের কসমেটিক কিনেছেন। যেগুলো নগরীর চকবাজার বালি আর্কেড শপিংমলে পাওয়া যায়। তাই তারা নগরীর কাট্টলী এলাকা থেকে শপিং করতে এসেছেন চকবাজারের অভিজাত শপিংমল বালি আর্কেডে।  ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ মার্কেটে ২৭৫টা দোকান আছে। বেশিরভাগই তরুণদের। পুরুষদের মত সমপরিমাণ নারী উদ্যোক্তারা এখানে ব্যবসা করছে। ভালো ব্র্যান্ডের পণ্য সব শ্রেণির মানুষের জন্য আছে। এক ছাদের নিচে সব কিছুই পাবে। এ ছাড়া ক্রেতাদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে নিজস্ব সিকিউরিটির পাশাপাশি চকবাজার থানা পুলিশ পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিচ্ছেন।  দেখা গেছে, তরুণ উদ্যোক্তারা ব্যবসা করছেন অনলাইন ও অফলাইনে। রয়েছে নারী উদ্যোক্তাও।  মো. সাহেদ নামে এক বিক্রেতা বলেন, যারা ব্র্যান্ড ব্যবহার করে তারা এখানে ভালো কালেকশন পাবে স্বল্প মূলে। বিভিন্ন স্টলে দেখা যায়, মেয়েদের পশ্চিমা পোশাকের ভালো কালেকশন। রয়েছে ভারতীয় ও পাকিস্তানি নানারকম পোশাক। এসব পোশাকগুলো অনলাইনেও মিলছে। রেডিমেন্ট পোশাকের মধ্যে সারারা, গারারা, কাফতান, কাফতান, শিপনের গাউনগুলো বেশি বিক্রি হচ্ছে।চকবাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক জোন হওয়ায় বেশিরভাগ ক্রেতা শিক্ষার্থী।  মধ্য-নিম্ন আয়ের মানুষের ভিড় হকার মার্কেটে ছোট একটি দোকানে নানা রঙের পাঞ্জাবির পসরা সাজিয়ে ক্রেতা ডাকছেন হকার মার্কেটের দোকানি মোহাম্মদ আজম। বেছে নেন, দেখে নেন- ভালো মানের পাঞ্জাবিসহ ক্রেতা টানতে নানা বুলি তার মুখে। পছন্দের পোশাক সাধ্যের মধ্যে মিললেই কিনে নিচ্ছেন অনেকে। শুধু ইদ্রিসের দোকান নয় মধ্য-নিম্ন আয়ের মানুষের মার্কেট হিসেবে পরিচিত জহুর হকার মার্কেটের প্রায় প্রতিটি দোকানেই ভিড় ক্রেতাদের। বেতন-বোনাস পাওয়ার পর গভীর রাত পর্যন্ত ক্রেতারা হকার মার্কেটে আসছেন। শার্ট, প্যান্ট, পাঞ্জাবি, ছোটদের পোশাক, মেয়েদের টপস, ওয়ান পিস, পর্দা, বেডসিট, বেল্ট কিনছেন ক্রেতারা।  দোকানি মোহাম্মদ আসি বলেন, ১৫ রমজানের পর থেকেই ঈদের কেনাকাটা বেড়েছে। রবিবার অফিস-আদালত খোলার দিন হওয়ায় অন্য দিনের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি। ফ্যাশন ও শাড়ি প্রিয় নারী-পুরুষের পছন্দ নিউ মার্কেট বিপনি বিতান ব্লু মুনে তরুণদের ভিড়। তরুণরা শার্ট, জিন্স প্যান্টসহ গেঞ্জি কিনছেন। দর কষাকষি করছেন তারা। নিউমার্কেট বিপণি বিতান এমন দৃশ্য দেখা যায়। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ৫০০ উপরে স্টল রয়েছে। নারীদের পোশাক, প্রশাধনী, জুতা, ব্যাগ, জুয়েলারি শপসহ টেইলার্সের দোকান রয়েছে। ছেলেদের ব্র্যান্ডের পোশাকের ভালো ভালো কালেকশন রয়েছে। আরও আছে শিশুদের কালেকশন।  মো. রিদওয়ান নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, অন্যান্যবারের চেয়ে বেচাকেনা কম দেখে ব্যবসায়ীরা বেশি দাম হাকাচ্ছেন না। ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ১২ হাজার টাকার মধ্যে মিলছে শাড়ি। দেশীয় তাত, জামদানি, ঢাকা শাড়ির সমাহার রয়েছে।  এগুলো বিক্রি হচ্ছে ১২শ থেকে ১৫ হাজার টাকা দামে।  বিক্রেতারা বলছেন, দেশীয় তাঁত, জামদানি শাড়ির কদর বেশি নারীদের কাছে। এ শাড়িগুলোর তুলনামূলক দামও বেশি।  নকশি বাংলা শাড়ি ও জামদানি শাড়ির দোকানের বিক্রয় কর্মীরা বলেন, এখনে শাড়ি নেন ফ্যাশন সচেতন নারী বা তরুণীরা। কিছু বিক্রি হয় উপহারের শাড়ি। খুব ভালো ভালো দেশীয় শাড়ির কালেকশন আছে। বিদেশি উন্নতমানের শাড়িগুলোও রয়েছে। বিদেশি শাড়িগুলো এক হাজার থেকে ২০ হাজারের উপরেও আছে। 
০৮ এপ্রিল, ২০২৪

‘অবন্তিকা নয় তিল তিল করে গড়া স্বপ্নের লাশ’
‘এটা অবন্তিকা নয়, এ তো তিল তিল করে গড়ে ওঠা আমার স্বপ্নের লাশ। আমার স্বামীকে নিল, মেয়েকেও নিল। আমি কী নিয়ে বাঁচব, আল্লাহ, তুমি আমারেও নিয়ে যাও।’ গতকাল শনিবার বিকেলে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স থেকে মেয়ে অবন্তিকার লাশ দেখে এভাবেই কান্নায় ভেঙে পড়েন ফাইরুজ অবন্তিকার মা তাহমিনা শবনম। এ সময় বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন তিনি। আত্মীয়স্বজনরা বারবার তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। আবার কিছুক্ষণ পর জ্ঞান ফিরলে মাতম করতে থাকেন। তাহমিনা শবনম কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন, ‘হায় রে অবন্তিকা, তুই আমারে কত বলছিলি মা একটা জিডি করো, মা একটা জিডি করো। আমি বলেছি মা এগুলা করব না। আল্লায় বিচার করবে। আল্লাহ আমার কাছ থেকে তোরেই নিয়ে গেল! আরে তোরে নিয়ে গেল অবন্তিকা? আমি কত কষ্ট করলাম। আমি এই জন্যই কষ্ট করলাম।’ তিনি অভিযোগ করেন, ‘রাফি, আম্মান, মাহিয়া, লাকি, রিমি তারপর আঁখি, বন্যা, দ্বীন ইসলাম এ ঘটনার জন্য মূল দায়ী। তারা বিভিন্নভাবে আমার মেয়েকে হয়রানি করে আজকের অবস্থার সৃষ্টি করেছে।’ অবন্তিকার মা বলেন, ‘যৌন হয়রানির অভিযোগ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছে গিয়েও আমার মেয়ে কোনো বিচার পায়নি। উল্টো তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হয়েছে, অপমান করা হয়েছে। আমার মেয়ে বিচার পেলে আজকের দিনে তাকে চলে যেতে হতো না।’ তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘আমি বিভাগের চেয়ারম্যান ও প্রক্টর সবার সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, বিষয়টির সুরাহার জন্য। আমার মেয়ে যাতে ভালোভাবে পড়াশোনা শেষ করতে পারে, সেটি আর হলো না। ওদের জন্য আমি মেয়ে হারিয়েছি, আমি তাদের বিচার চাই।’ তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘এটাই বুঝি আমার প্রাপ্য ছিল। একটা বিধবা নারীর প্রাপ্য ছিল। আমি এখন সন্তানহারা। আমি এর বিচার কার কাছে দেব? আমি জীবনে কারও ক্ষতি করি নাই। কুমিল্লা শহরের কেউ বলতে পারবে না আমি কারও ক্ষতি করেছি। আমি সবসময় চেষ্টা করেছি ১ টাকা ভাগ করে খেতে। আজকে আল্লাহ আমার এত বড় ক্ষতি করল?’
১৭ মার্চ, ২০২৪

তিল চাষে আগ্রহ বাড়ছে জয়পুরহাটের কৃষকদের
জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলায় তিল চাষে আগ্রহ বাড়ছে প্রান্তিক কৃষকদের। কম খরচে বেশি লাভবান হওয়ায় দিন দিন এই চাষের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছেন কৃষকরা। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পতিত জমি, রাস্তার পাশে, জমির আইলসহ বিভিন্নভাবে তিলের চাষাবাদ হচ্ছে।  উপজলায় তিল চাষের সঠিক তথ্য কৃষি অফিসের জানা নেই। তবে, এ বছর উপজেলায় প্রায় ২০/২২ হেক্টর জমিতে তিলের চাষাবাদ হচ্ছে বলে ধারণা করা হয়। কৃষকরা জানান, প্রতি বিঘা তিল চাষে প্রায় ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা খরচ হয়। প্রতি বিঘা জমি থেকে ৪ থেকে ৫ মণ তিল পাওয়া যায়। আর বাজারে মান অনুযায়ী প্রতি মণ তিল ৮ হাজার থেকে ১১ হাজার দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে করে খরচের কয়েক গুণ বেশি লাভ হচ্ছে। উপজেলার দমদমা গ্রামের তিল চাষি আনিছুর রহমান বলেন, এ বছর ৪ বিঘা জমিতে তিল চাষ করেছেন তিনি। তিল চাষে সার ও কীটনাশক তেমন লাগে না বললেই চলে। গরু-ছাগলে তিল তেমন একটা খায়ও না, তাই রক্ষণাবেক্ষণে খরচ হয় সামান্যই। ধরঞ্জী গ্রামের তিল চাষি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমি প্রায় এক বিঘা জমির আইলে তিল বুনেছি। মাঝে অন্যান্য সবজি রয়েছে। তিলের গাছ জমির বেড়া হিসাবে কাজ করে। এ কারণে ক্ষেতে গরু-ছাগল প্রবেশ করতে পারে না। পাঁচবিবি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. লুৎফর রহমান বলেন, তিলের বহুবিধ ব্যবহার থাকলেও ভোজ্যতেল হিসেবে কোলেস্টেরলমুক্ত উন্নতমানের তিলের তেল। সম্প্রতি উপজেলায় বিভিন্ন অঞ্চলে তিলের চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি বিভাগ কৃষকদের সার্বিক পরামর্শ ও তিল চাষে উৎসাহিত করছে।
২৮ নভেম্বর, ২০২৩

শীতের শুরুতেই ময়মনসিংহ মেডিকেলে শিশু ওয়ার্ডে তিল ঠাঁই নেই
শীতের শুরুতেই তিল ধারণের ঠাঁই নেই ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে। ঠাণ্ডাজনিত রোগের সংক্রমণ বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে। শিশু ওয়ার্ডে বিছানা, মেঝে এমনকি বারান্দাতেও জায়গা নেই। শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি হচ্ছে শিশুরা। অতিরিক্ত রোগীর চাপে চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম অবস্থা নার্সসহ চিকিৎসকদের। আবহাওয়া পরিবর্তনজনিত সময়ে জ্বর-ঠাণ্ডা লাগলেই চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। মমেক হাসপাতালের তথ্য মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ১৩৫ জন শিশু ভর্তি হয়েছে। এই নিয়ে ৭২ শয্যার বিপরীতে বর্তমানে তিন ইউনিটে ভর্তি শিশু রোগীর সংখ্যা ৪২৬। ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালের ৭ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। অতিরিক্ত রোগীর চাপের কারণে ওয়ার্ডের বিছানা, মেঝে ও বারান্দাসহ করিডোরেও রোগীদের রাখতে হচ্ছে। ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালে আসা পূর্বধলার মো. নুরুল ইসলাম বলেন, আমার ছেলে উলিউল্লাহ প্রথমে জ্বর, ঠান্ডা সর্দি পরে শ্বাস কষ্ট শুরু হলে পূর্বধলার হাসপাতালের ভর্তি করান। পরে উন্নত চিৎসার জন্য ময়মনসিংহ হাসপালে শিশু ওয়ার্ডে এনে ভর্তি করেন। ভর্তির পরে পরীক্ষা করে দেখা যায় তার নিউমোনিয়া হয়ে গেছে। এরপর থেকেই ইনজেকশনসহ অন্যান্য ওষুধ চলছে। গৌরীপুর থেকে আসা শিশু রোগী আয়ানের মা শারমীন সুলতানা সাথী বলেন, গ্রামে শীত শুরু হয়ে গেছে, ভোরে কুয়াশা পড়ে। সেই কুয়াশা থেকে তার ছেলের ঠান্ডা-সর্দি ও জ্বর শুরু হয়। পরে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে গেলে হাসপাতালে এনে শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করেন তিনি। শিশু ওর্য়াডের সহকারী অধ্যাপক ডা. বিশ্বজিৎ চৌধুরী বলেন, শীতের শুরুতে বিশেষ করে অক্টোবরের শেষে এবং নভেম্বরে শিশু রোগীর সংখ্যা প্রতি বছরই বাড়তে থাকে। এবারও শ্বাসকষ্ট ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিনই রোগী হাসপাতালে এসে ভর্তি হচ্ছে। অতিরিক্ত রোগীর চাপ সামলাতে হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ ও নার্সসহ কর্মরত চিকিৎসকদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে আমরা আন্তরিকভাবেই রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল গোলাম ফেরদৌস বলেন, শিশু ওয়ার্ডে রোগীদের মানসম্মত চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য হাসপাতালে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। বিশেষ করে সরকারিভাবে সরবরাহ করা হাসপাতাল থেকে সব ওষুধই রোগীদের দেওয়া হচ্ছে। কর্মরত নার্স ও চিকিৎসকরা আন্তরিকভাবেই তাদের দায়িত্ব পালন করছেন।
০৬ নভেম্বর, ২০২৩
X