দুর্নীতি নিয়ে প্রশ্ন করায় ক্ষেপে গেলেন ট্রাফিক ইন্সট্রাক্টর
ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় মহাসড়কের পাশে পুলিশ বক্সের সামনেই দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল অবৈধ অটোরিকশা। চালকরা বলছিলেন, ‘মাসিক টাকা দিয়ে মহাসড়কে অটোরিকশা চালান তারা।’  বিষয়টি নিয়ে বাইপাইল ট্রাফিক পুলিশের ইন্সট্রাক্টর খসরু পারভেজের কাছে প্রশ্ন করতেই ক্ষেপে যান তিনি। সোজা জানিয়ে দেন, ‘তিনি এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে বাধ্য নন। এ জন্য এসপি ও হাইওয়ের ওসির সঙ্গে কথা বলেন।’ তথ্য বলছে, ২০২৩ সালেও একবার ট্রাফিক পুলিশ বক্সের ভেতরে শ্রমিককে মারধর ও অটোরিকশা থেকে সরকারি জরিমানার কথা বলে রসিদ ছাড়া টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছিল ট্রাফিকের পুলিশের এ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। রোববার (৫ মে) উপজেলার বাইপাইল ত্রি মোড় সড়কে গিয়ে দেখা যায়, অটোরিকশায় সয়লাব পুরো মহাসড়ক। স্বল্পপাল্লা ও দূরপাল্লার পরিবহনের সঙ্গে মহাসড়কে দাপটের সঙ্গে চলছে অটোরিকশা। এগুলোর যাত্রী ওঠানামা করানো হচ্ছে পুলিশ বক্সের সামনেই। পাশেই দুই পুলিশ সদস্যকে দায়িত্বরত দেখা যায়। ট্রাফিক পুলিশের ছাউনির নিচে দাঁড়িয়ে গল্পে ব্যস্ত তারা। কয়েকজন অটোরিকশাচালকের সঙ্গে কথা হয়। তারা জানান, অটোরিকশা চালাতে গেলেই মামলা দেয় পুলিশ। তবে মাসিকভাবে টাকা দিলে সেগুলো ধরা হয় না। বাইপাইল ট্রাফিক পুলিশ বক্সের সামনে অটোরিকশা নিয়ে যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করছিলেন মো. রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, পুলিশ ধরে। ধরলে ১ হাজার টাকা দিলে ছেড়ে দেয়। জাকারুল ইসলাম নামে আরেক চালক বলেন, মহাসড়কে ওঠা নিষেধ। মাসে মাসে টাকা নেয়। গত ২৪ এপ্রিল ১ হাজার টাকা দিয়েছি। আবার আগামী মাসে দিতে হবে। তাহলে ধরবে না। এদিকে এসব বিষয় নিয়ে কথা বলতে বাইপাইল পুলিশ বক্সের ভেতরে যান কালবেলা প্রতিবেদক। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, এসি করা পুলিশ বক্সের কক্ষে মোবাইল ফোনে ভিডিও দেখায় ব্যস্ত তিনি। তাকে ঘিরে বসা আরও ২ পুলিশ সদস্য। তার কাছে অটোরিকশা চলাচল নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি চেয়ার থেকে উঠে ডাকতে থাকেন রেকার অপারেটরকে। রেকার অপারেটর এলে তার কাছ থেকে জরিমানার স্লিপের বই নিয়ে এ প্রতিবেদককে দেখান তাদের কাজের ফিরিস্তি। এরপর পুলিশ বক্সের সামনেই অটোরিকশার স্টপেজ করার বিষয়ে প্রশ্ন করতেই তিনি ক্ষেপে যান। এরপরই বক্তব্য দেবেন না বলে জানান তিনি। সেই স্লিপ দেখিয়ে বলেন, আমরা ধরি, রেকার করি, ডাম্পিং করি। এই যে তার প্রমাণ। একপর্যায়ে নিজের মোবাইল ফোনের ক্যামেরা চালু করে এ প্রতিবেদকের ভিডিও ধারণ করতে থাকেন ও বলেন, ‘আপনাকে বক্তব্য নিতে হলে জেলার এসপিরটা নেন। আপনার কী অথরিটি আছে আমাকে ব্লেম দেবেন। হোয়াই ইউ আর ব্লেমিং মি। ইউ আর মাই অথরিটি?’ এ প্রতিবেদকের কাছে বক্তব্য রয়েছে এমন কথা বললে তিনি বলেন, ‘সেটা আপনি প্রমাণ করবেন। আমার অথরিটির কাছে যাবেন।’ এ ছাড়া টাকা নেওয়ার কথাও অস্বীকার করেন তিনি। এ বিষয়ে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার, মো. আসাদুজ্জামান বলেন, এসব বিষয়ে আমরা কাজ করছি। কীভাবে অটোরিকশা সমস্যা সমাধানে কাজ করা যায় তা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। পুলিশ টাকা নিয়ে চালাতে দিচ্ছে এমন প্রশ্ন বিব্রতকর। এসবের প্রমাণ থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শুধু বাইপাইল না, অনেক জায়গায় কাজ করছি। কীভাবে এসব নিয়ন্ত্রণে নেওয়া যায় সে বিষয়ে জেলা ট্রাফিক কাজ করছে।
০৫ মে, ২০২৪

দুর্নীতি মামলায় এসকে সিনহার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন ২৬ জুন
ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজউকের প্লট বরাদ্দ ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার (এস কে সিনহা) বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ পিছিয়ে আগামী ২৬ জুন ধার্য করেছেন আদালত। বুধবার  (২৪ এপ্রিল) শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালত এ তারিখ ধার্য করেন। এদিন মামলাটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ধার্য ছিল। কিন্তু এদিন দুদক প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি। এজন্য বিচারক পরবর্তী প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নতুন করে এই তারিখ ধার্য করেন। ২০২১ সালের ১০ অক্টোবর দুদকের উপ-পরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১-এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় এস কে সিনহার বিরুদ্ধে সাত কোটি ১৪ লাখ টাকার সম্পদ অর্জন করে তা নিজের ভাই ও আত্মীয়ের নামে স্থানান্তর ও হস্তান্তরের অভিযোগ আনা হয়। মামলার অভিযোগে বলা হয়, সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) থেকে উত্তরা আবাসিক এলাকায় নিজের নামে একটি প্লট বরাদ্দ নেন। পরে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ভাই নরেন্দ্র কুমার সিনহার নামেও রাজউকের পূর্বাচল প্রকল্পে তিন কাঠার একটি প্লট বরাদ্দ করান। এরপর প্রভাব খাটিয়ে তিন কাঠার প্লটটি পাঁচ কাঠায় উন্নীত করান। একপর্যায়ে পূর্বাচলের প্লটটিকে উত্তরার চার নম্বর সেক্টরের ৬ নম্বর সড়কে (বাড়ি নম্বর ১/এ) স্থানান্তর করিয়ে রাজউকের অনুমোদন করান। বরাদ্দ পাওয়ার পর এসকে সিনহা প্লটটির ‘পাওয়ার অব অ্যাটর্নি’ নিয়োগ করেন তারই আত্মীয় জনৈক শঙ্খজিৎ সিংহকে। সুরেন্দ্র কুমার সিনহা নিজেই উত্তরার ওই প্লটের অনুকূলে রাজউকে ৭৫ লাখ টাকা পরিশোধ করেন। পরে তার তত্ত্বাবধানেই ওই প্লটে নয়তলা ভবন নির্মাণ হয়। ভবনটি নির্মাণে ব্যয় হয় ছয় কোটি ৩১ লাখ ৫ হাজার ৮৬৫ টাকা। নিরপেক্ষ প্রকৌশলীর মাধ্যমে এ নির্মাণ ব্যয় প্রাক্কলন করে দুদক।
২৪ এপ্রিল, ২০২৪

খালেদা জিয়ার গ্যাটকো মামলার চার্জ শুনানি ২৫ জুন
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ গঠন শুনানির তারিখ পিছিয়ে আগামী ২৫ জুন ধার্য করেছেন আদালত।  বুধবার (২৪ এপ্রিল) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক আলী হোসাইনের আদালতে খালেদা জিয়ার অব্যাহতির বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য ছিল। কিন্তু খালেদা জিয়ার প্রধান আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার দেশের বাইরে থাকায় অভিযোগ শুনানি পেছাতে সময়ের আবেদন করা হয়। আদালত সময় আবেদন মঞ্জুর করে অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য নতুন করে এ তারিখ ধার্য করেন। খালেদা জিয়ার আইনজীবী আব্দুল হান্নান ভূঁইয়া সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। জানা যায়, মামলাটিতে ১৫ জন আসামির মধ্যে ১৪ জনের অব্যাহতির বিষয়ে শুনানি শেষ হয়েছে। গত ২৪ জানুয়ারি খালেদা জিয়ার অব্যাহতি চেয়ে শুনানি শুরু হয়। ২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর দুদকের উপপরিচালক মো. গোলাম শাহরিয়ার ১৩ জনের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে তেজগাঁও থানায় মামলাটি দায়ের করেন। ২০০৮ সালের ১৩ মে মামলাটি তদন্ত করে জোট সরকারের প্রভাবশালী ৯ জন সাবেক মন্ত্রী ও উপমন্ত্রীসহ মোট ২৪ জনের বিরুদ্ধে দুদকের উপপরিচালক মো. জহিরুল হুদা অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২৪ আসামির মধ্যে সাবেক মন্ত্রী এম সাইফুর রহমান, আব্দুল মান্নান ভুইয়া, সাবেক মন্ত্রী ও জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো, এম কে আনোয়ার, সাবেক মন্ত্রী এম শামছুল ইসলাম, বন্দরের প্রধান অর্থ ও হিসাবরক্ষক কর্মকর্তা আহমেদ আবুল কাশেমের মৃত্যুর পর মামলায় বর্তমানে আসামির সংখ্যা ১৫ জন। অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান কমোডর জুলফিকার আলী, সাবেক মন্ত্রী কর্নেল আকবর হোসেনের (প্রয়াত) স্ত্রী জাহানারা আকবর, দুই ছেলে ইসমাইল হোসেন সায়মন এবং এ কে এম মুসা কাজল, এহসান ইউসুফ, সাবেক নৌ সচিব জুলফিকার হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক সদস্য এ কে রশিদ উদ্দিন আহমেদ এবং গ্লোবাল এগ্রোট্রেড প্রাইভেট লিমিটেডের (গ্যাটকো) পরিচালক শাহজাহান এম হাসিব, সাবেক মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন।
২৪ এপ্রিল, ২০২৪

দুর্নীতি ও ব্যাংকের দুরবস্থাকে ইস্যু করতে চায় বিএনপি
সরকারকে চাপে ফেলতে এবার দুর্নীতি ও ব্যাংকসহ অর্থনীতির দুরবস্থাকে ইস্যু করতে চায় বিএনপি। সভা-সেমিনারসহ নানা প্রক্রিয়ায় দেশের মানুষের কাছে এসব ক্ষেত্রের বিদ্যমান চিত্র তুলে ধরবে দলটি। গত সোমবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এ ছাড়া বৈঠকে ফরিদপুরের মধুখালী মন্দিরে অগ্নিসংযোগের ঘটনা, বিএনপি নেতাকর্মীদের মামলা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম থেকে মাহবুব উদ্দিন খোকনের অব্যাহতিসহ বিভিন্ন বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে বিভিন্ন এলাকায় দলীয় নেতাকর্মীদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে স্থায়ী কমিটি কোনো আলোচনা করেনি বলে জানা গেছে। এদিকে ফরিদপুরের মধুখালী মন্দিরে অগ্নিসংযোগ এবং পার্শ্ববর্তী প্রাইমারি স্কুলে দুই শ্রমিককে নির্মমভাবে নির্যাতনের ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করেছে বিএনপি। গতকাল দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এই কমিটি গঠনের কথা জানানো হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। সভায় গত ১৮ এপ্রিল ফরিদপুরের মধুখালীতে একটি মন্দিরে অগ্নিসংযোগ ও পার্শ্ববর্তী প্রাইমারি স্কুলে শৌচাগার নির্মাণের কাজ করার সময়ে সহোদর দুজন শ্রমিককে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় এবং ঘটনার নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্তের জন্য দলের পক্ষ থেকে এই তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে আগামী ৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক হচ্ছেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী। কমিটির সদস্যরা হলেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য বিজন কান্তি সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, ধর্মবিষয়ক সহ-সম্পাদক অমলেন্দু দাশ অপু ও নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। বিএনপির নীতিনির্ধারকরা মনে করেন, দেশের ব্যাংকিং খাতে এখন লুটপাট চলছে। দেশের অর্থনীতিতেও এক ধরনের দুরবস্থা বিরাজ করছে। এজন্য তারা সরকারকে দায়ী করছেন। দলটির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। দেশবাসীর কাছে এ খাতের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরতে চায় বিএনপি। শিগগির সংবাদ সম্মেলন কিংবা বিবৃতির মাধ্যমে এ বিষয়ে দলের বক্তব্য তুলে ধরা হতে পারে। এ ছাড়া সভা-সেমিনারেও বিষয়টি তুলে ধরতে পারেন দলটির নেতারা। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে করা কোনো মামলাই রাজনৈতিক নয়। অগ্নিসংযোগ, গ্রেনেড হামলা, আগ্নেয়াস্ত্র, চোরা চালান ও দুর্নীতির মতো সুনির্দিষ্ট ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্তরাই মামলার আসামি হয়েছেন।’ প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হওয়া মামলার ধরন ও প্রকৃত চিত্র তুলে ধরবে বিএনপি। এ ইস্যুতে দলীয় অবস্থান তুলে ধরে বিবৃতি কিংবা সংবাদ সম্মেলন করা হতে পারে। বিএনপির দাবি, গত ১৫ বছরে সারা দেশে এক লাখের অধিক মামলায় তাদের ৫০ লাখের বেশি নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। আর এসব মামলাকে গায়েবি, মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবে আখ্যায়িত করছে দলটি। বৈঠকে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম থেকে মাহবুব উদ্দিন খোকনের অব্যাহতি বিষয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। খোকন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, স্থায়ী কমিটির বৈঠকে অন্তত দুজন সদস্য খোকনের বিষয়টি উত্থাপন করেন। তারা বলেন, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের একটি সংগঠন। সুতরাং খোকন ইস্যুতে বিএনপিকেও নানা প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। তাই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এটি (খোকনকে অব্যাহতি) জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তারা তাদের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি নিয়ে এখানে আলোচনার কিছু নেই। এরপর দলের হাইকমান্ডও সে আলোচনা আর বাড়ায়নি। খোকনকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব পদ থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হতে পারে বলে রাজনৈতিক অঙ্গনে যে গুঞ্জন চলছে, দলের নীতিনির্ধারণী বৈঠকে সে ধরনের কোনো আলোচনা হয়নি। তবে দলটির জ্যেষ্ঠ এক নেতার অভিমত, স্থায়ী কমিটির বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্তমূলক আলোচনা না হওয়ায় মাহবুব উদ্দিন খোকনের বিষয়ে যে কোনো সময় সাংগঠনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। কেননা, আলোচনা হলে ওখানেই বিষয়টির একটি মীমাংসা হয়ে যেত। এদিকে ২২ এপ্রিল প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে অনুষ্ঠিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে দলীয় প্রার্থীদের বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানা গেছে। বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিলেও দলটির অন্তত ৩৮ জন সাবেক-বর্তমান নেতা কিংবা তাদের স্বজন চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করছেন। প্রথম দফার নির্বাচনে তারা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি। তাদের মধ্যে ১৮ জন বিএনপির স্থানীয় পর্যায়ের পদধারী নেতা। বিএনপি সূত্র জানিয়েছে, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে যারা নির্বাচনে থাকছেন, শিগগির তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় গত রোববার পটুয়াখালী ও কক্সবাজারের দুই নেতা এবং গতকাল মুন্সীগঞ্জের এক নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এটি উপজেলা নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়া নেতাদের প্রতি একটি বার্তা বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
২৪ এপ্রিল, ২০২৪

দুদককে স্বেচ্ছায় সাভারের রাজীব সমরের দুর্নীতি তদন্তের নির্দেশ
সাভার উপজেলা চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজীব ও তার ভাই ইউপি চেয়ারম্যান ফখরুল আলম সমরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগটি দুদককে স্বেচ্ছায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। তাদের অবৈধ সম্পদের বিষয়ে তদন্ত চেয়ে করা এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসাইনের বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট জামিউল হক ফয়সাল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট কামরুন নেছা রত্না। অ্যাডভোকেট ফয়সাল পরে সাংবাদিকদের বলেন, হাইকোর্ট রাজীব-সমরের ব্যাপারে দুদককে তদন্ত স্বেচ্ছাধীনভাবেই করতে বলেছেন। তদন্ত করে যদি সত্যতা মেলে তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মানিক বলেন, দুদক বলেছে, আবেদনটি করা হয়েছ মাত্র এক মাস হয়েছে। তাই সময় দিলে তারা ব্যবস্থা নেবে। পরে আদালত স্বেচ্ছাধীন তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। এখানে দুদক যদি মনে করে তাহলে তদন্ত করবে। রাজীব-সমরের অবৈধভাবে অর্জিত বিপুল পরিমাণ সম্পদ ও বাড়ি-গাড়ি নিয়ে গত ৬ ফেব্রুয়ারি কালবেলাসহ দুটি পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। ওই প্রতিবেদনে দুই ভাইয়ের প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের নানা তথ্য দেওয়া হয়। এ ছাড়া সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত হওয়া হলমার্ক গ্রুপের বিপুল পরিমাণ সম্পদ বিক্রি করে দেওয়ার তথ্য প্রকাশ করা হয়। চেয়ারম্যান হওয়ার পর সাভারে ১৩টি হত্যায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দুই ভাইয়ের জড়িত থাকার তথ্য তুলে ধরা হয়। পরে ওই প্রতিবেদন সংযুক্ত করে সাভার বগাবাড়ি এলাকার সজিব হোসেন নামের এক ব্যক্তি দুদক, ঢাকার ডিসি ও এসপি বরাবর তদন্ত চেয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। তারা ব্যবস্থা না নেওয়ায় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নিস্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে তিনি হাইকোর্টে রিট পিটিশন করেন। ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গতকাল হাইকোর্ট আদেশ দেন।
২৩ এপ্রিল, ২০২৪

বড় দুর্নীতি করেও বহাল তবিয়তে ‘ছোট’ ছামিদুল
পদের দিক থেকে তিনি ছোট কর্মকর্তা। কিন্তু প্রভাব-প্রতিপত্তিতে ছাড়িয়ে গেছেন মন্ত্রণালয়ের অনেক বড় কর্মকর্তাকে। দুর্নীতি, আত্মসাৎ ও প্রতারণার মাধ্যমে গড়ে তুলেছেন বিপুল সম্পদ। ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করেছিলেন আদালত। তবে মামলা বহাল থাকলেও এখন পর্যন্ত কিছুই হয়নি ওই কর্মকর্তার। ফেরত দেননি আত্মসাৎ করা টাকাও। উল্টো আতঙ্কে আছেন তার অপকর্মের ভুক্তভোগী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। কারণ শাস্তির পরিবর্তে ঊর্ধ্বতনদের ম্যানেজ করে ভালো গুরুত্বপূর্ণ পদায়নের পাশাপাশি বাগিয়ে নিয়েছেন অতিরিক্ত দায়িত্ব। আলোচিত এই ব্যক্তি হলেন বস্ত্র অধিদপ্তরের ইন্সট্রাক্টর মো. ছামিদুল হক। নথিপত্র ঘেঁটে দেখা যায়, ছামিদুল হক বস্ত্র অধিদপ্তরের আওতাধীন নারায়ণগঞ্জের টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটের ইন্সট্রাক্টর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সরকারি বেতন স্কেল অনুযায়ী ওই পদটি দশম গ্রেডের। ২০১৫ সালে ওই প্রতিষ্ঠানের সুপারিনটেনডেন্ট স্বাভাবিক অবসরে গেলে ওই পদে অতিরিক্ত দায়িত্ব নেন জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর ছামিদুল হক। যদিও নিয়ম অনুযায়ী দশম গ্রেডের একজন কর্মকর্তা ষষ্ঠ গ্রেডের ওই পদে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে পারেন না। তবে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা অভিযোগ করেন, বস্ত্র অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের অসাধু কর্মকর্তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকায় নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ছামিদুলকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে, টাইম স্কেল মঞ্জুর করার আশ্বাস দিয়ে ছামিদুলের নেতৃত্বে কয়েকজন মিলে প্রায় তিনশ কর্মচারীর কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। জানা গেছে, সানারপাড়ে অবস্থিত নারায়ণগঞ্জের টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটে একজন উচ্চমান সহকারী কাম হিসাবরক্ষক থাকলেও ছামিদুল হক একই পদে নোয়াখালী থেকে নিজের হাসান ইমাম নামে আরেকজনকে নিয়ে আসেন। এরপর ২০১৮-১৯ অর্থবছরে তিনটি খাতে প্রায় ৩ কোটি টাকার অনিয়মের ঘটনা ঘটে। বাণিজ্যিক অডিট অধিদপ্তরের নিরীক্ষায় এই অনিয়ম ধরা পড়ে। পরে নারায়ণগঞ্জের জেলা অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড ফিন্যান্স অফিসারের মাধ্যমে সম্পূর্ণ অর্থ ফেরত দিয়ে অডিট আপত্তি নিষ্পত্তির ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়। তবে এখন পর্যন্ত সেই নির্দেশনা মানা হয়নি। শুধু সরকারি অর্থ আত্মসাৎই নয়, ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে প্রতিষ্ঠানের ছয় শিক্ষক-কর্মচারীর সাধারণ ভবিষ্য তহবিলের (প্রভিডেন্ড ফান্ড) প্রায় ৩৫ লাখ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। সেই টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য বস্ত্র অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। অভিযোগপত্রে বলা হয়, জিপিএফ হিসাবের স্থিতি দেখতে অনলাইন থেকে জিপিএফ হিসাব স্লিপ বের করে দেখা যায়, অগ্রিম ঋণ উত্তোলন করা হয়েছে। অথচ তারা ঋণের টাকার জন্য কোনো আবেদনই করেননি। পরে জেলা অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড ফিন্যান্স অফিসের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে নিশ্চিত হন যে, টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটের প্রধান ছামিদুল হকের স্বাক্ষরিত জিপিএফ মঞ্জুরি আদেশের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের উচ্চমান সহকারী কাম হিসাবরক্ষক হাসান ইমাম হিসাবরক্ষণ অফিসের অডিটর মো. মাসুমের কাছ থেকে চেক উত্তোলন করেছেন। কিন্তু এ ব্যাপারে ওই কর্মকর্তারা কিছুই জানেন না। জানা যায়, জিপিএফ ফান্ডের টাকা উত্তোলনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রধানের লিখিত পত্র দিতে হয়। এ ছাড়া স্বাক্ষর মিলিয়ে নেওয়া হয়। কিন্তু টাকা উত্তোলনকারী টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটের উচ্চমান সহকারী কাম হিসাবরক্ষক হাসান ইমাম প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী কর্মচারী নন। তাকে ছামিদুল হক নিজস্ব ক্ষমতাবলে প্রতিষ্ঠানে রেখেছিলেন। ভুক্তভোগীদের মধ্যে সোহেল রানা নামে একজন ছামিদুল হকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। তবে ছামিদুল নিজেকে নির্দোষ দাবি করায় আদালত ভুয়া কিংবা জাল কাগজপত্রে তার স্বাক্ষর যাচাই-বাছাই করার জন্য ঢাকায় সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপারের (ফরেনসিক) কাছে পাঠান। সেখানে পরীক্ষা করে দেখা যায়, ওই কাগজপত্রের স্বাক্ষরগুলো ছামিদুল হকের। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এসব অনিয়ম জানার পরও বস্ত্র অধিদপ্তর এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নিয়ে পিরোজপুরে প্রতিষ্ঠান প্রধানের দায়িত্বসহ বদলি করে। তবে বদলির সেই আদেশও তিনি দীর্ঘদিন আমলে নেননি। সর্বশেষ স্ট্যান্ড রিলিজ করার পর যোগ দেন পিরোজপুরে। শুধু এসব অপকর্মই নয়, প্রতিষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রেও তিনি ব্যর্থতার পরিচয় দেন। তার সময়ে সানারপাড়ের ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটে মাত্র দেড়শতে নেমে আসে। বর্তমানে সেখানে শিক্ষার্থী সংখ্যা সাড়ে তিনশ। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের বৃত্তির টাকা পরিশোধ না করে আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে ছামিদুলের বিরুদ্ধে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, বস্ত্র অধিদপ্তরের একজন পরিচালকের সঙ্গে সম্পর্ক থাকায় ছামিদুল নানা অপকর্ম করেও পার পেয়ে যাচ্ছেন। এ নিয়ে বস্ত্র অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ থাকলেও ভয়ে কেউ উচ্চবাচ্চ করেন না। জানা যায়, এত অপকর্মের পরও ছামিদুলের বিরুদ্ধে কোনোরকম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নিয়ে ফের পুরস্কৃত করার আয়োজন চলছে। বস্ত্র অধিদপ্তর থেকে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠিতে তাকে সানারপাড়ের ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটে বদলির প্রস্তাব করা হয়। সঙ্গে দেওয়া হচ্ছে প্রতিষ্ঠান প্রধানের অতিরিক্ত দায়িত্বও। গত বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ে এ-সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে সূত্র জানায়। সার্বিক বিষয়ে ছামিদুল হকের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি কালবেলাকে বলেন, ‘এত অনিয়ম করে কি বাংলাদেশে বাঁচা যায়! এত অনিয়মের পর ডিপার্টমেন্ট কি আমাকে আস্ত রাখত। আমাকে তো এতদিনে তুলাধুনা করে ফেলার কথা। আপনারা আরও যাচাই-বাছাই করে দেখুন, সবই আসলে ষড়যন্ত্র।’ বস্ত্র অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. নুরুজ্জামান কালবেলাকে বলেন, ‘ছামিদুল হকের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগের তদন্ত চলছে। তাকে পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে না। আগের কর্মস্থলে ফিরিয়ে এনে চলতি দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে।’ এত অভিযোগ থাকার পরও তাকে কেন আগের কর্মস্থলে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সুপারিনটেনডেন্ট সংকট রয়েছে। তাই চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়।’ যোগাযোগ করা হলে পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুর রউফ ওই কর্মকর্তাকে না চেনায় তার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
২১ এপ্রিল, ২০২৪

রাজধানীর ন্যাশনাল মেডিকেলের দুর্নীতি বন্ধের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি
রাজধানীর ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালে যন্ত্রপাতি ক্রয়ে দুর্নীতি, নিয়োগ বাণিজ্য, প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসক কর্মকর্তাদের চিকিৎসাসংক্রান্ত সুযোগ সুবিধা বন্ধ, বিনা কারণে কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত করার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে চিকিৎসক কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে হাসপাতালের মূল ফটকে টানা তৃতীয় দিনের মতো তারা এ কর্মসূচি পালন করেন। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউটটে একটি সিন্ডিকেট চক্র দীর্ঘদিন ধরে যন্ত্রপাতি ক্রয়ে অনিয়ম করে টাকা আত্মসাৎ করে আসছে। হাসপাতালের পরিচালক, উপপরিচালক, সহকারী পরিচালকসহ আরও কয়েকজন মিলে জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন ব্যতিত নিজেদের পছন্দমতো কোম্পানির কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ দিয়ে সিটি স্ক্যান, এমআরআইএর মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যয়বহুল যন্ত্রপাতি ক্রয় করে হাসপাতালের কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করছে।  শুধু তাই নয় বিগত দিনে হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ গরিব রোগীদের ফ্রি বেডসহ চিকিৎসা বাবদ ৪০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় পেত সেটাও বন্ধ করে দিয়েছে হাসপাতাল পরিচালকসহ একটি মহল। অবিলম্বে আমাদের সেই সুবিধাগুলো আবারও ফিরিয়ে দিতে হবে। এ ছাড়াও কোনো ধরনের কারণ দর্শনের নোটিশ ছাড়াই যখন ইচ্ছে তাকেই চাকরি থেকে ছাঁটাই করা হয়েছে বিগত দিনে তাদের আবারও চাকরিতে ফিরিয়ে আনার দাবি জানানো হয়।   এ সময় তারা নবনিযুক্ত গর্ভনিং বোডির চেয়ারম্যান ঢাকা-৫ আসনের এমপি সাঈদ খোকনের কাছে বিগত দিনে চলমান সব ধরনের দুর্নীতির সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি প্রদান করে চিকিৎসার একটি সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি জানান।  মানববন্ধনে ন্যাশনাল মেডিকেল স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. মোস্তাফিজুর রহমান মিজান বলেন, আমরা চাই ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট ও ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজে চলমান সব দুর্নীতির সুষ্ঠু তদন্ত করে অতি দ্রুত জড়িতদের শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। আমরা জানি প্রধানমন্ত্রীর একটা অঙ্গীকার হচ্ছে দুর্নীতির মুক্ত বাংলাদেশ উপহার দিবেন। এই হাসপাতালের বর্তমান গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এই আসনের সংসদ সদস্য সাঈদ খোকন সাহেব। তিনি ঘোষণা করছেন দুর্নীতি মুক্ত ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ উপহার দিবেন আমাদের।
০৪ এপ্রিল, ২০২৪

নাইকো দুর্নীতি মামলায় খালেদার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ আটজনের বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ১৪ মে দিন ধার্য করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত অস্থায়ী ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯ এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমানের আদালতে মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ছিল। এদিন খালেদা জিয়া অসুস্থ থাকায় আদালতে হাজির হতে পারেননি। তারপক্ষে আইনজীবী জিয়া উদ্দিন জিয়া হাজিরা দেন। এদিন জব্দ তালিকার সাক্ষী আব্দুল বাকী ও চুক্তির সময় খসড়া তালিকার সদস্য এ কে এম আনোয়ারুল ইসলাম আদালতে সাক্ষ্য দেন। এরপর আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাদের জেরা করেন। এর মধ্যে আনোয়ারুলের জেরা শেষ হলেও অপর সাক্ষী আব্দুল বাকীর জেরা শেষ হয়নি। আদালত আংশিক জেরা ও পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ১৪ মে দিন ধার্য করেন। উল্লেখ্য, কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা করেন। ২০১৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। এতে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়। এরপর গত ১৯ মার্চ আদালত অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে এ মামলার বিচার শুরুর আদেশ দেন। মামলার অন্য সাত আসামি হলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল করপোরেশনের চেয়ারম্যান সেলিম ভূঁইয়া ও নাইকোর দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ। এ ছাড়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন ও বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান মারা যাওয়ায় মামলার দায় থেকে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
০৪ এপ্রিল, ২০২৪

জেলে গিয়ে সাড়ে ৪ কেজি ওজন কমেছে কেজরিওয়ালের
আবগারি দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে দুই সপ্তাহ ধরে কারাগারে বন্দি রয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। আরও সপ্তাহ দুয়েক তাকে কারাগারেই থাকতে হচ্ছে। তবে জেলের ভেতরে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে দাবি করেছেন দিল্লির ক্ষমতাসীন দল আম আদমি পার্টি (আপ)। এমনকি জেলে গিয়ে তার ওজন সাড়ে চার কেজি কমে গেছে বলেও দাবি করেছে দলটি। যদিও কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, কেজরিওয়াল ঠিক আছেন। তার ওজন কমেনি। খবর এনডিটিভির। আজ বুধবার (৩ এপ্রিল) আপের নেত্রী ও মন্ত্রী অতীশি এক এক্সবার্তায় বলেছেন, কেজরিওয়াল গুরুতর ডায়াবেটিক রোগী। স্বাস্থ্য সমস্যা সত্ত্বেও তিনি দেশবাসীর সেবায় দিন-রাত কাজ করেন। গ্রেপ্তারের পর কেজরিওয়ালের ওজন সাড়ে চার কেজি কমেছে। এটি খুবই উদ্বেগজনক। বিজেপি তার স্বাস্থ্যকে বিপদে ফেলছে। তার কিছু হলে, শুধু দেশবাসী নয়, ঈশ্বরও ক্ষমা করবেন না। তবে কারা সূত্রের বরাতে এনডিটিভি জানিয়েছে, তিহার জেলে আনার সময় কেজরিওয়ালের ওজন ৬৫ কেজি ছিল। তার ওজন এখনো অপরিবর্তিত রয়েছে। তার রক্তে শর্করার মাত্রাও এখন স্বাভাবিক। আজ সকালেও তিনি যোগ ব্যায়াম করেছেন। সেলের ভেতরে হাঁটা-চলা করেছেন। গত ২১ মার্চ রাতে আবগারি দুর্নীতি মামলায় কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তার করে ভারতীয় কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা ইডি। দেশটির ইতিহাসে তিনিই প্রথম মুখ্যমন্ত্রী, যিনি পদে থাকাকালীন গ্রেপ্তার হয়েছেন। গ্রেপ্তারের আগে তাকে ৯ বার সমন পাঠিয়েছিল সংস্থাটি। তবে কোনো সমনেই তিনি হাজিরা দেননি। এমনকি বারবার সমন পাঠিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করার পরিকল্পনা করছে ইডি, এই অভিযোগ তুলে আগাম জামিন পেতে দিল্লি হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন কেজরিওয়াল। বৃহস্পতিবার সেই আবেদন খারিজ করে দেন আদালত। এরপর রাতেই তাকে গ্রেপ্তার করে ইডি। গত সোমবার ইডির রিমান্ডের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে মেয়াদ শেষের আগেই এদিন সকালে তাকে দিল্লির রাউজ অ্যাভিনিউ আদালতে হাজির করে ইডি। এদিন ইডির তরফ থেকে কেজরিওয়ালকে নতুন করে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়নি। বরং তাকে কারাগারে পাঠানোর আবেদন করে সংস্থাটি। তাই তাকে তিহার জেলে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। আগামী ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত তিনি এই কারাগারে থাকবেন। তবে আদালতে আগাম জামিন আবেদন করেছেন কেজরিওয়াল। তার আবেদনের ওপর আজ বুধবার শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
০৩ এপ্রিল, ২০২৪

অধিকাংশ লোক দুর্নীতিকে দুর্নীতি মনে করে না
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈন উদ্দীন আবদুল্লাহ বলেছেন, অধিকাংশ মানুষ দুর্নীতিকে এখন আর দুর্নীতি মনে করে না। এক সময় দুর্নীতিবাজরা সন্ধ্যার পরে বাসা থেকে বের হয়ে রাস্তার পাস দিয়ে হাঁটত। এখন তারা দিনের আলোয় প্রকাশ্যে রাস্তার মাঝ দিয়ে হাঁটে। গতকাল মঙ্গলবার দুদকের সম্মেলন কক্ষে রিপোর্টার্স অ্যাগেইনস্ট করাপশনের (র‌্যাক) স্মরণিকা ‘সুপথ’-এর মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কাজ করতে গিয়ে কাদের সঙ্গে রাখব, সেটাও দেখতে হবে। দুর্নীতিবাজদের সহায়তা নিয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কাজ করলে প্রশ্ন তৈরি হয়। তিনি সাংবাদিকদের কাছে দুর্নীতি প্রতিরোধে সহযোগিতা চান। দুদকের কমিশনার (অনুসন্ধান) মোছা. আছিয়া খাতুন বলেন, মামলার চার্জশিট ছাড়াও প্রতিরোধের কাজ এগিয়ে নিতে হবে। পূর্ণাঙ্গ তথ্য-উপাত্ত দিয়ে খবর প্রকাশ করুন। একসময় রাস্তা দিয়ে অসৎ মানুষ হেঁটে গেলে সবাই তাকে নিয়ে কথা বলত। এখন বিষয়টি উল্টো হয়ে গেছে। পরবর্তী প্রজন্মের জন্য দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়তে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। সাংবাদিক বলেন, দুদক এবং সাংবাদিকদের লক্ষ ও উদ্দেশ্য এক। তা হলো দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়া। এ সময় সাংবাদিকরা দুদকে কাজ করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কথা বলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে দুদক চেয়ারম্যান সব সীমাবদ্ধতা সমাধানের আশ্বাস দেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন র‌্যাকের সভাপতি জেমসন মাহবুব। সঞ্চালনায় ছিলেন র‌্যাকের সাধারণ সম্পাদক শাফি উদ্দিন আহমদ। উপস্থিত ছিলেন দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন, উপপরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা আখতারুল ইসলাম প্রমুখ।
০৩ এপ্রিল, ২০২৪
X