বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
এনএসইউতে বাংলা নববর্ষ উদযাপন
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে (এনএসইউ) বর্ষবরণ উৎসব ও বৈশাখী মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার মঙ্গল শোভাযাত্রা দিয়ে শুরু হয় বর্ষবরণ। এরপর হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন এনএসইউর উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম। আরও ছিলেন এনএসইউর কোষাধ্যক্ষ ও উপ-উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক আবদুর রব খান এবং এনএসইউ রেজিস্ট্রার ড. আহমেদ তাজমীন। অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্সের ডিরেক্টর ড. সাঈদ উজ জামান খান। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি সাংস্কৃতিক সংগঠন। বৈশাখী মেলার আয়োজক ছিল নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি সোশ্যাল সার্ভিসেস ক্লাব।
১২ মে, ২০২৪

মালয়েশিয়ায় বাংলা নববর্ষ ১৪৩১-এর বর্ণিল উদযাপন
মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশ হাইকমিশন বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বাংলা নববর্ষ-১৪৩১ উদযাপন করেছে।  বৃহস্পতিবার (২ মে) এ উপলক্ষে রাজধানী কুয়ালালামপুরের ক্রাফট কমপ্লেক্সে মঙ্গল শোভাযাত্রা, আলোচনা ও বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সুমধুর গান, দৃষ্টিনন্দন নাচ, ফ্যাশন শো, মূকাভিনয়, একক অভিনয় এবং ঐতিহ্যবাহী দেশীয় খাবারের মাধ্যমে আবহমান বাংলার ঐতিহ্য ও সমৃদ্ধ সংস্কৃতি তুলে ধরা হয় এ বর্ণিল আয়োজনে। হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান ও তার সহধর্মিণী পেন্ডোরা চৌধুরী আমন্ত্রিত অতিথিদের বৈশাখের উত্তরীয় দিয়ে তাদের উষ্ণভাবে বরণ করে নেন এবং সকলের সাথে নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। মালয়েশিয়ার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের মহাপরিচালক মিজ জুবাইদাহ বিনতি মুখতার অনুষ্ঠানে ‘গেস্ট অব অনার’ হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। মালয়েশিয়ার বিভিন্ন দপ্তরের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা, কুয়ালালামপুরে  বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত/স্থায়ী প্রতিনিধি, শতাধিক কূটনীতিক ছাড়াও কুয়ালালামপুরে প্রশিক্ষণে আসা বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস একাডেমির ২৭ জন প্রশিক্ষণার্থী/ প্রশিক্ষক, প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটি নেতারা, সাংবাদিক এবং হাইকমিশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।   কুয়ালালামপুরে ক্রাফট কমপ্লেক্সে আয়োজিত বাংলার ঐতিহ্যবাহী মঙ্গল শোভাযাত্রায় বিদেশি অতিথিসহ দূতাবাস পরিবার এর সদস্যরা বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনার সঙ্গে অংশগ্রহণ করেন। হাই কমিশনার মো. শামীম আহসান বলেন, ইউনেস্কো কর্তৃক মঙ্গল শোভাযাত্রাকে মানবজাতির বিমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি বাংলাদেশের নববর্ষ উদযাপনে একটি নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে। দেশে ও প্রবাসে বসবাসরত বাংলাদেশের সকল নাগরিকের জন্য নববর্ষ আরও সুখ ও স্বাচ্ছন্দ্য বয়ে আনবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। হাইকমিশনার তার বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক পহেলা বৈশাখকে সরকারি ছুটি ঘোষণা ও দিনটি সাড়ম্বরে উদযাপনের কথা উল্লেখ করে তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। আলোচনাসভার পরে প্রবাসী বাংলাদেশি শিল্পী ও হাইকমিশন পরিবারের সদস্যদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অতিথিদের মুগ্ধ করে। নববর্ষ উপলক্ষে হাইকমিশন কর্তৃক একটি রঙিন প্রকাশনা অতিথিদের মাঝে বিতরণ করা হয় যা উপস্থিত সকলের মাঝে বাংলা নববর্ষের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ও ঐতিহ্যগত দিকগুলো ফুটিয়ে তোলে। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের ঐতিহ্যবাহী রকমারি বাংলাদেশি খাবার এবং মিষ্টি দিয়ে আপ্যায়িত করা হয়। অনুষ্ঠান প্রাঙ্গণে স্থাপিত বাংলাদেশ কর্নার, পালকি, মেহেদী, সাজঘর, ফুচকা, পান ও ঝাল-মুড়ির স্টল, পিঠা ঘর উপস্থিত বিদেশি অতিথিবৃন্দের মাঝে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়। এ ছাড়া স্টলে বাংলাদেশি কোম্পানি প্রাণ, মৈত্রী তাদের পণ্য প্রদর্শন করে এবং ন্যাশনাল ব্যাংক ও সিটি ব্যাংক রেমিট্যান্স হাউস তাদের সেবা প্রবাসীদের অবহিত করে। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে ক্রাফট কমপ্লেক্সকে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির অনেক অনুষঙ্গ দিয়ে সুসজ্জিত করা হয় যা সহজেই সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবং সকলের মাঝে উৎসবের আমেজ তৈরি করে। উল্লেখ্য, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে মালয়েশিয়ায় বিভিন্ন সরকারি দপ্তরসমূহ বন্ধ থাকায় বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠানটি ১৪ এপ্রিলের পরিবর্তে ২ মে উদযাপন হয়।
০৩ মে, ২০২৪

নববর্ষ সবার জীবনে ধ্রুবতারা হয়ে জ্বলুক
এবারও নববর্ষের মূল আয়োজনে ছিল রমনার বটমূলে প্রভাতি সংগীত, চারুকলার মঙ্গল শোভাযাত্রা। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নববর্ষের উৎসবকে বৈশ্বিক মাত্রা দিয়েছে মঙ্গল শোভাযাত্রা। ইউনেস্কো মঙ্গল শোভাযাত্রাকে বিশ্ব সংস্কৃতির অন্যতম সম্পদ, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণা করেছে। ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে বাংলাদেশ দূতাবাসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মঙ্গল শোভাযাত্রার এ স্বীকৃতি সম্পর্কে জানানো হয়। ইথিওপিয়ার আদ্দিস আবাবায় বিশ্বের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষায় আন্তঃদেশীয় কমিটির একাদশ বৈঠকে ‘রিপ্রেজেন্টেটিভ লিস্ট অব ইনট্যানজিয়েবল কালচারাল হেরিটেজ অব হিউম্যানিটি’র তালিকায় বাংলাদেশের মঙ্গল শোভাযাত্রা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। নববর্ষে মেয়েরা পিচঢালা রাজপথে আলপনা এঁকেছে। রঙের বিন্যাসে রঙিন করে তুলেছে রাজপথ। শত মানুষের পদচারণায় যে রাজপথ বিবর্ণ হয়ে থাকে, নববর্ষের উৎসব সেই রাজপথকে রঙিন শোভায় সাজিয়ে তুলেছে। মেয়েরা ফুলের বর্ণিল বিন্যাসে সেজেছে। এনে দিয়েছে এক ছন্দিত মাত্রা। তারপরও কিছু কিছু অশোভন আচরণ যারা করে তারা উৎসবের আমেজকে বিঘ্নিত করে। এ বিঘ্নিত আচরণ যারা করে তাদের সাংস্কৃতিক বোধ, শুভ চৈতন্যের দরজা খুলে যায় যেন। কেউ যেন নিকৃষ্টতার পরিচয় দিয়ে নিজের আচরণ লঙ্ঘিত না করে। সমাজ এমন নারী-পুরুষই চায়, যারা বুঝবে চেতনাবোধের জায়গা থেকে নিজের দায়িত্বকে। অনাবিল স্বাচ্ছন্দ্যের জায়গাটুকু ধরে রাখা পুরুষতান্ত্রিক সমাজের একটি বড় দিক। সবাইকেই মনে রাখতে হবে, উৎসবের আমেজ শুধু একদিনের জন্য নয়। প্রচলিত ব্যবস্থায় তা অন্যধারার মতো বয়ে যায় পরিবর্তনের পথে, নতুনের সাধনায়। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে নববর্ষ সবার জীবনে ধ্রুবতারা হয়েই জ্বলুক। আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম আগামী দিনের উৎসবকে পৌঁছে দেবে আন্তর্জাতিক আঙিনায় যেখানে ভিন্ন দেশের, ভিন্ন সংস্কৃতির মানুষ ওদের দিকে তাকিয়ে বলবে, শুভ নববর্ষ বন্ধুরা। তোমাদের উৎসবের দিনে আমরা নিজেদের সাদা-লাল পোশাকে রাঙিয়ে তুলব। আকাশের দিকে তাকিয়ে সূর্যকে বলব, সূর্য তুমি অস্ত যেও না। এ উৎসবের আনন্দ নিয়ে আর একটা দিন আমাদের সঙ্গে থাকো। এভাবেই বাংলা নববর্ষ শিল্পিত হয়ে উঠছে মানুষের জীবনে। আলোকিত হোক মানুষের অন্তর।
২২ এপ্রিল, ২০২৪

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা নববর্ষ উদযাপিত
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্ণিল শোভাযাত্রাসহ নানা আয়োজনে উদযাপিত হয়েছে বাংলা নববর্ষ। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টায় মঙ্গল শোভাযাত্রার মাধ্যমে এর আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এরপর হয় আলোচনা সভা, লোকসংগীত, যাত্রাপালার মতো ছিল বর্ণিল অনুষ্ঠান। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হয়ে পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজার, ভিক্টোরিয়া পার্ক ঘুরে ফের ক্যাম্পাসে শেষ হয়। এতে নেতৃত্ব দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সাদেকা হালিম। বিশ্ববিদ্যালয়ের মঙ্গল শোভাযাত্রায় ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া রিকশাচিত্রকে মূল প্রতিপাদ্য এবং ‘বৈশাখে নূতন করিনু সৃজন/ মঙ্গলময় যত তনু-মন’ স্লোগান সামনে রেখে বাংলা নববর্ষ উদযাপন করা হয়। এতে একটি রিকশা করে নতুন বর-বউয়ের যাত্রার প্রতিকৃতি তুলে ধরা হয়। রিকশাচিত্রের পাশাপাশি সংকটাপন্ন প্রাণি প্রজাতির মধ্যে কুমিরের মোটিফ তুলে ধরা হয়। এ ছাড়া লক্ষ্মীপেঁচা, ফুল, মৌমাছি, পাতা, বাঘের মুখোশ এবং গ্রামবাংলার লোক কারুকলার নিদর্শনসমূহ স্থান পায়। আয়োজনের দায়িত্বে ছিল চারুকলা অনুষদ। মঙ্গল শোভাযাত্রা শেষে সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধান অতিথি হিসেবে আলোচনা সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় না হওয়া সত্ত্বেও সীমিত অবকাঠামো নিয়েও ক্যাম্পাসে বৃহৎ পরিসরে নববর্ষ উদযাপন করা হচ্ছে। দিনব্যাপী বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সভায় আরও বক্তব্য দেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. হুমায়ুন কবীর চৌধুরী, শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রমুখ। পরে শুরু হয় যাত্রাপালা। এ ছাড়া চারুকলা অনুষদ, সংগীত বিভাগ, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, আবৃত্তি সংসদ, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যান্ড মিউজিক অ্যাসোসিয়েশনের নানা আয়োজন ছিল।
১৯ এপ্রিল, ২০২৪

চার দিন পর জবিতে পালিত হবে নববর্ষ
নববর্ষের  জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পহেলা বৈশাখ উদযাপন করা হবে আগামী বৃহস্পতিবার। নানা আয়োজনে এদিন পহেলা বৈশাখ উদযাপন করবে বিশ্ববিদ্যালয়টি। সোমবার (১৫ এপ্রিল) উপাচার্যের আদেশক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম (ভারপ্রাপ্ত) স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলা ১৪৩১ সনের পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠান আগামী ১৮ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) উদযাপন করা হবে। এদিন বর্ষবরণ উপলক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে। এদিন সকালে মঙ্গল শোভাযাত্রা জবি ক্যাম্পাস থেকে শুরু হয়ে পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজার, ভিক্টোরিয়া পার্ক ঘুরে আবার জবি ক্যাম্পাসে শেষ হবে। এরপর একাত্তরের গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি ভাস্কর্য চত্বরের সামনে আলোচনা সভা, সংগীত বিভাগের আয়োজনে সংগীতানুষ্ঠান এবং নাট্যকলা বিভাগের আয়োজনে যাত্রাপালা অনুষ্ঠিত হবে। বিকালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, আবৃত্তি সংসদও উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর পরিবেশনা এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ব্যান্ড মিউজিক অ্যাসোসিয়েশনের প্রযোজনায় রাত ৮টা পর্যন্ত ব্যান্ড সংগীত পরিবেশিত হবে।  এদিন বর্ষবরণের বর্ণাঢ্য এসব অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে অংশগ্রহণ করতে বলা হয়েছে।
১৫ এপ্রিল, ২০২৪

সরকারের নির্দেশ অমান্য করে শাহবাগে অনুষ্ঠান 
বাংলা বর্ষবরণ আয়োজনের সময় সংকোচন করা সরকারের সিদ্ধান্ত মানেনি বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। রোববার (১৪ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা থেকে শাহবাগ প্রজন্ম চত্বরে ‘বর্ষবরণ মানে না শৃঙ্খল’ শিরোনামে উদীচীর আয়োজনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। বাংলা বর্ষবরণ আয়োজনের অনুষ্ঠান সরকার নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার পরপরই শুরু হয় উদীচীর এ আয়োজন।    উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহসভাপতি হাবিবুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের শুরুতেই সময় সংকোচনসহ দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে একটি ছোট নাটিকা পরিবেশন করেন উদীচীর শিল্পীরা। এরপর একক সংগীত পরিবেশন করেন হাবিবুল আলম, হরেকৃষ্ণ দেবনাথ এবং সাজেদা বেগম সাজু।  অনুষ্ঠানে উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে বলেন, কয়েক বছর ধরেই বর্ষবরণ উৎসবকে নির্দিষ্ট সময়ের ঘেরাটোপে বেঁধে দেওয়ার একতরফা পদক্ষেপ নিয়ে আসছে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় এবারও সারা দেশে আয়োজিত পহেলা বৈশাখের সব উন্মুক্ত অনুষ্ঠান সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে শেষ করার বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে। কিন্তু উদীচী মনে করে, এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপনে হঠকারী সিদ্ধান্ত প্রকৃতপক্ষে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির কাছে নির্জলা আত্মসমর্পণ ছাড়া কিছুই নয়। এর মাধ্যমে পক্ষান্তরে আবহমান বাংলার সংস্কৃতিবিরোধী অন্ধকারের শক্তিকেই আস্কারা দেওয়া হচ্ছে। এ ধরনের অযাচিত সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই মেনে নেওয়ার মতো নয়।  তিনি আরও বলেন, সরকারের এ ধরনের অযাচিত সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে পহেলা বৈশাখ সন্ধ্যা ৬টায় ‘বর্ষবরণ মানে না শৃঙ্খল’ শিরোনামে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে উদীচী।  এ ছাড়া, সারা দেশে উদীচীর আয়োজনে সমমনা সংগঠনগুলোকে সাথে নিয়ে যে বর্ণাঢ্য বর্ষবরণ উৎসব হয় তা-ও যথানিয়মেই আয়োজন করা হয় বলে জানান অমিত রঞ্জন দে।  সভাপতির বক্তব্যে হাবিবুল আলম বলেন, পহেলা বৈশাখ আবহমান বাংলার এক অনন্য অসাম্প্রদায়িক উৎসব। এ উৎসবকে অযথা সীমিত করার অপচেষ্টা কোনোভাবেই মেনে নেবে না উদীচীসহ দেশের শিল্পী ও সংস্কৃতি কর্মীরা। তাই এর প্রতিবাদে বারবারই গান, নাচ, নাটকের মতো সৃজনশীল হাতিয়ার নিয়ে মাঠে নামবে উদীচী। 
১৪ এপ্রিল, ২০২৪

বাংলাদেশের স্বাধীনতা রক্ষার জন্যই বিএনপির জন্ম : সালাম
পাকিস্তানের স্বাধীনতা রক্ষা করার জন্য আওয়ামী লীগের আর বাংলাদেশের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য বিএনপির জন্ম হয়েছে বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম। বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে রোববার (১৪ এপ্রিল) বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলের অন্যতম অঙ্গ-সংগঠন জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা-জাসাসের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ দাবি করেন। আব্দুস সালাম বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কথায় কথায় শুধু পাকিস্তান খোঁজেন। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বলব- আপনারা পাকিস্তান পাকিস্তান করবেন, এটাই স্বাভাবিক। কারণ, পাকিস্তানের স্বাধীনতা রক্ষা করার জন্যই আপনাদের জন্ম হয়েছে আর বিএনপির জন্ম হয়েছে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে রক্ষা করার জন্য। তিনি আরও বলেন, শহীদ জিয়াউর রহমানের রাজনৈতিক জন্ম হয়েছিল ২৬ মার্চ কালুরঘাট বেতারকেন্দ্রে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণার মধ্য দিয়ে। এ কারণেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার যে ধারাবাহিকতা সেটা বিএনপির মধ্যেই বেশি থাকে।  বিএনপি চেয়ারপারসনের এই উপদেষ্টা বলেন, দেশবাসীকে দ্বিধান্বিত করার জন্যই পাকিস্তান পাকিস্তান বলে ধুয়ো তোলে আওয়ামী লীগ। দেশবাসীর জিজ্ঞাসা- যুদ্ধের পরে শহীদদের রক্ত শুকানোর আগেই ইয়াহিয়ার অনুচরদের বাংলাদেশে কারা এনেছিলেন, কারা শহীদদের রক্তে ভেজা লাল গালিচায় তাদের হাঁটিয়েছিলেন। তারা বারবার যে পাকিস্তানের কথা বলেন- সেই পাকিস্তানে প্রথম বন্ধুত্ব স্থাপনের জন্য কারা উড়ে গিয়েছিলেন? সালাম বলেন, তারা বাঙালি জাতীয়তাবাদের কথা বলেন, কিন্তু সংবিধানে কী আছে? সংবিধান অনুযায়ী এখনো আমরা বাংলাদেশি। পাসপোর্টেও লেখা হয় বাংলাদেশি। কিন্তু তারা মানুষকে ধোঁকা দিয়ে বলে- আমরা বাঙালি আর বিএনপি হলো বাংলাদেশি। এ সমস্ত মিথ্যাচার একমাত্র আওয়ামী লীগই করতে পারে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির এই আহ্বায়ক বলেন, আওয়ামী লীগ যদি ক্ষমতায় থাকে- আমার ভাষা, আমার সংস্কৃতি, আমার ঐতিহ্য, আমার গণতন্ত্র, আমার স্বাধীনতা কোনোটাই নিরাপদ নয়। আমার ভাষা, আমার সংস্কৃতি আজ কাদের আগ্রাসনে হারিয়ে যাচ্ছে? আজকে আকাশপথে আমার সংস্কৃতির ওপর, আমার ভাষার ওপর যে আগ্রাসন- সেটাকে কিন্তু আমরা রোধ করতে পারছি না।  আবদুস সালাম অভিযোগ করে  বলেন, বর্তমান জনবিচ্ছিন্ন সরকার শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য আধিপত্যবাদী শক্তির কাছে সবকিছু বিকিয়ে দিচ্ছে। তাই দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আন্দোলনে এই সরকারকে বিদায় করতে হবে।  জাসাসের যুগ্ম আহবায়ক লিয়াকত আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভার পর জাসাসের শিল্পীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।
১৪ এপ্রিল, ২০২৪

দেশবাসীকে সাকিব আল হাসানের নববর্ষের শুভেচ্ছা
বছর পেরিয়ে আবার এসেছে বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। রোববার (১৪ এপ্রিল) নতুন বর্ষ ১৪৩১ এ পা দিয়েছে বাংলাদেশ। নতুন বছরে সব ক্লেদ, জীর্ণতা দূর করে নতুনকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত বাঙালি সমাজ। বিদায়ী ১৪৩০ এর সব ভুল-ত্রুটি, ব্যর্থতা, গ্লানি আর না পাওয়াকে ভুলে নতুন উদ্যমে ১৪৩১ কে স্বাগত জানাচ্ছে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে পুরো জাতি। বাঙালির জীবনে পহেলা বৈশাখ কেবল নতুন বছরের শুরু নয়। নতুন বছরের নতুন দিনটি উদযাপিত হয় সবচেয়ে বড় উৎসবের উপলক্ষ হিসেবে। বৈশাখ আর বাঙালি মিলেমিশে একাকার বাংলায়। তাই পহেলা বৈশাখ নিয়ে উচ্ছ্বাসের যেন শেষ নেই বাঙালির। বাঙালির এই উচ্ছ্বাসের সমুদ্রে যোগ দিয়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানও। শনিবার (১৩ এপ্রিল) নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে সাকিব লিখেছেন, ‘শুভ নববর্ষ! আশা করি আমাদের সবার জীবনে এই নতুন বছর অঢেল সুখ, শান্তি এবং আনন্দ নিয়ে আসবে।’ বর্তমানে অবশ্য সাকিব বাংলাদেশে নেই। পরিবারের সঙ্গে আমেরিকাতে অবস্থান করছেন। পবিত্র ঈদুল ফিতরও তিনি সেখানে পালন করেছেন। সাকিব শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শেষ টেস্ট খেলেই পবিত্র মক্কা নগরীতে ওমরা হজ পালন করে সেখান থেকেই আমেরিকা যান এই ক্রিকেটার। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে কবে নাগাদ দেশে ফিরবেন সাকিব সেটি এখনো জানা যায়নি। তবে জিম্বাবুয়ের সাথে টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগেই দেশে ফেরার কথা তারা। ২৮ এপ্রিল বাংলাদেশে এসে পৌঁছাবে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দল।
১৪ এপ্রিল, ২০২৪

বাংলা নববর্ষ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্থান করে নিতে যাচ্ছে : পলক
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, বাংলা নববর্ষ আমাদের জীবনে নতুন মাত্রা দিয়েছে। যেটা আমাদের জাতীয় গণ্ডি পেরিয়ে এই নববর্ষের উদযাপনটি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে স্থান করে নিতে যাচ্ছে। তিনি বলেন, পহেলা বৈশাখ উদযাপন করা আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের একটি মূল অংশ। আজকে বিশ্বের দীর্ঘতম আলপনা অঙ্কনের মাধ্যমে পহেলা বৈশাখের সঙ্গে আমরা আমাদের সংস্কৃতিকে বিশ্বের কাছে আরও সুন্দরভাবে তুলে ধরতে পারছি। এই ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ আলপনাটি করতে ৬৫০ এর বেশি শিল্পী গত কয়েকদিন ধরে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এটি ১২ হাজার লিটারেরও বেশি রং ব্যবহার করে আঁকা হয়েছে। রোববার (১৪ এপ্রিল) কিশোরগঞ্জ মিঠামইনে বাংলালিংকের উদ্যোগে আয়োজিত পহেলা বৈশাখ উদযাপন উপলক্ষে বিশ্বের দীর্ঘতম আলপনা উপভোগকালে এসব কথা বলেন জুনাইদ পলক। এ সময় তিনি ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ আলপনার শেষ আঁচড় প্রদান করেন। প্রতিমন্ত্রী পলক জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন আমাদের রাজনৈতিক মুক্তিকে নিশ্চিত করতে গেলে আমাদের প্রয়োজন অর্থনৈতিক মুক্তি। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তি তখনই টেকসই হবে যখন আমরা সাংস্কৃতিক বিপ্লব সঠিকভাবে সম্পাদন করতে পারব। তিনি আরও বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক মুক্তি এবং স্বাধীন সার্বভৌমত্ব বাংলাদেশ পেয়েছি। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত স্বপ্ন অর্থনৈতিক মুক্তি প্রদান করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  তিনি বলেন, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক মুক্তিকে টেকসই করার জন্য আমরা ৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক বিপ্লবের পথে আছি। নববর্ষের সর্বজনীন উদযাপনের মধ্য দিয়ে সকল ধর্ম, বর্ণ, জাতি ও গোষ্ঠী নির্বিশেষে আমাদের একটি আনন্দের উৎসবের দিন হচ্ছে বাংলা নববর্ষ, পহেলা বৈশাখ।  পলক আরও বলেন, বাংলাদেশে মোবাইল ফোনের মনোপলি ছিল। ১৯৯৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম যখন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন, তখন তিনি মোবাইলের মনোপলি ভেঙে দেন।  তিনি বলেন, সেই সময় বিএনপির একজন তৎকালীন নেতা সরকারের মন্ত্রীর একমাত্র মোবাইল টেলিফোন কোম্পানি ছিল, আর অন্য কোনো লাইসেন্স বাংলাদেশের ছিল না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কিন্তু মোবাইলের মনোপলি ভেঙে দিয়ে বাংলাদেশে মোবাইলে বিপ্লব করেছেন। টেলিকম সেক্টর অন্যতম একটি সফল প্রতিষ্ঠান বাংলালিংক উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় বাংলালিংক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। তারা একদিকে যেমন গ্রাম-গ্রামান্তরে ফোরজি নেটওয়ার্ক পৌঁছে দিয়েছে, অপরদিকে সরকারি সেবাগুলো দেওয়ার জন্য ভূমিকা রেখেছে। আজকে বাংলাদেশে ১৯ কোটি মোবাইল সিম ব্যবহারকারী, ১৩ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী রয়েছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আইসিটিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের নেতৃত্বে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে সক্ষম হয়েছি। এখন ২০৪১ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথে এগিয়ে যাচ্ছি। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাস ঐতিহ্য সংস্কৃতি নববর্ষের উৎসবটাকে বিশ্ব অঙ্গনে আলপনা আঁকার মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে এবং এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে আমরা অসাম্প্রদায়িক ও প্রবৃদ্ধিশীল প্রজন্ম গড়ে তুলতে চাই। ঐতিহ্যবাহী হাওরের মিঠামইন, অষ্টগ্রাম এবং ইটনা ঐতিহাসিক একটি অর্জন উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের নেতৃত্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই হাওরে বিস্ময়কর রাস্তা করে দিয়েছেন। যার ফলে আজকে হাওরবাসী যে রকম একটি আধুনিক সড়ক ব্যবস্থায় সংযুক্ত হয়েছে, অপরদিকে হাওর এলাকাটি একটা অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।  তিনি বলেন, হাওরে এই পর্যটন কেন্দ্রটি একসময় শুধু জাতীয় পর্যায়ে নয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অনেক বিদেশি পর্যটকদের পরিদর্শনের জন্য আকর্ষণ করবে।  এ সময় কিশোরগঞ্জের স্থানীয় সংসদ সদস্য, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপারসহ অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
১৪ এপ্রিল, ২০২৪

ঐক্যবদ্ধ বাঙালিকে বারবার বিভাজিত করার চেষ্টা হয়েছিল: রবি উপাচার্য
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শাহ্ আজম বলেছেন, দীর্ঘকাল ধরে নববর্ষ পালনের বাঙালি সংস্কৃতিটি একটি অসাম্প্রদায়িক উৎসব হিসেবে পালিত হয়ে এসেছে। কিন্তু বারবার ঐক্যবদ্ধ বাঙালিকে বিভাজিত করতে এটিকে সাম্প্রদায়িক রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেছিল বিদেশি শাসক গোষ্ঠী।  তিনি বলেন, আইয়ুব খান তার অশুভ রাজনীতির লক্ষ্য পূরণ করতে বাঙালির সাংস্কৃতিক আয়োজনকে হিন্দু সংস্কৃতি বলে প্রচার করে বিভেদের দেয়াল তুলতে চেয়েছিল। ভারতবর্ষে উপনিবেশিক শাসনামলেও এই কাজটি করার চেষ্টা করেছিল ব্রিটিশ শাসকরা। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনকে দুর্বল করার জন্য বিভাজন নীতি প্রয়োগ করে তারা। এসব কাজে সমাজে ভাঙন তৈরির জন্য সুবিধালোভী মোল্লা ও পুরোহিতদের মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ বাঙালিকে বিভাজিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। রোববার (১৪ এপ্রিল) রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে দিনব্যাপী বাংলা নববর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানের উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।  তিনি আরও বলেন, পহেলা বৈশাখ উৎসবের অনিবার্য অনুষঙ্গ মঙ্গল শোভাযাত্রা। মঙ্গল শোভাযাত্রার সাংস্কৃতিক সৌন্দর্যের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মিলেছে। এটি ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে যুক্ত হয়েছে। বাঙালি হিসেবে এটি আমাদের জন্য গর্বের ও পরমানন্দের। রবি উপাচার্য বলেন, সরল বাঙালির প্রকৃত ধর্মচর্চার সীমাবদ্ধতাকে পুঁজি করে একদিকে মনস্তাত্ত্বিক ভাঙন তৈরি করা হয়েছে, অন্যদিকে তাদের আচরণে নিজ নিজ ধর্মের সৌন্দর্য কালিমালিপ্ত হয়েছে। পাকিস্তানি স্বৈরশাসক আইয়ুব খান ছিলেন ইংরেজদের এই উপনিবেশিক মানসিকতার উত্তরাধিকার। ভাষা আন্দোলনের সাফল্যে পাকিস্তানি শাসকদের উর্দু চাপিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র বাস্তবায়িত না হলেও হাল ছাড়েননি আইয়ুব খান। আবার ধর্মকে অপব্যবহার করে বিভ্রান্ত করতে চেয়েছেন বাঙালি মুসলমানকে। প্রচার করার চেষ্টা করেছেন বাংলা ‘হিন্দুর’ ভাষা আর উর্দু ‘কোরআনে’র ভাষা বলে।  আবার উনিশ শতকে হিন্দু সমাজপতিরা ব্রাহ্ম আদর্শের অনুসারীদের হিন্দু বলে মানতে চায়নি। সেই ব্রাহ্ম পরিবারে জন্ম নেওয়া কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে পূর্ব পাকিস্তানে নিষিদ্ধ করার চেষ্টা করা হয়েছিল। এভাবে বাঙালি সংস্কৃতির ওপর আঘাত হানার আরেক অশুভ চেষ্টা দেখেছিলেন এ দেশের সংস্কৃতিকর্মীরা।  এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন-৩ থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শাহ্ আজমের নেতৃত্বে বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা আরম্ভ হয়। শোভাযাত্রাটি শাহজাদপুরের প্রধান সড়কসমূহ প্রদক্ষিণ করে। বর্ষবরণের দ্বিতীয় অংশে ছিল অতিথিদের সঙ্গে রবীন্দ্র উপাচার্য শাহ্ আজমের সাংস্কৃতিক বিনিময় ও বাঙালির ঐতিহ্যবাহী খাবার পরিবেশন।  উৎসবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় সুধীজন অংশ নেন। উপস্থিত ছিলেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. ফখরুল ইসলামসহ বিভাগসমূহের চেয়ারম্যানরা। আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের  শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে পরিবেশিত হয় মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
১৪ এপ্রিল, ২০২৪
X