সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৪৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ঐক্যবদ্ধ বাঙালিকে বারবার বিভাজিত করার চেষ্টা হয়েছিল: রবি উপাচার্য

বর্ষবরণ উৎসবে বক্তব্য দেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শাহ্ আজম। ছবি : কালবেলা
বর্ষবরণ উৎসবে বক্তব্য দেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শাহ্ আজম। ছবি : কালবেলা

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শাহ্ আজম বলেছেন, দীর্ঘকাল ধরে নববর্ষ পালনের বাঙালি সংস্কৃতিটি একটি অসাম্প্রদায়িক উৎসব হিসেবে পালিত হয়ে এসেছে। কিন্তু বারবার ঐক্যবদ্ধ বাঙালিকে বিভাজিত করতে এটিকে সাম্প্রদায়িক রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেছিল বিদেশি শাসক গোষ্ঠী।

তিনি বলেন, আইয়ুব খান তার অশুভ রাজনীতির লক্ষ্য পূরণ করতে বাঙালির সাংস্কৃতিক আয়োজনকে হিন্দু সংস্কৃতি বলে প্রচার করে বিভেদের দেয়াল তুলতে চেয়েছিল। ভারতবর্ষে উপনিবেশিক শাসনামলেও এই কাজটি করার চেষ্টা করেছিল ব্রিটিশ শাসকরা। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনকে দুর্বল করার জন্য বিভাজন নীতি প্রয়োগ করে তারা। এসব কাজে সমাজে ভাঙন তৈরির জন্য সুবিধালোভী মোল্লা ও পুরোহিতদের মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ বাঙালিকে বিভাজিত করার চেষ্টা করা হয়েছে।

রোববার (১৪ এপ্রিল) রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে দিনব্যাপী বাংলা নববর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানের উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।

তিনি আরও বলেন, পহেলা বৈশাখ উৎসবের অনিবার্য অনুষঙ্গ মঙ্গল শোভাযাত্রা। মঙ্গল শোভাযাত্রার সাংস্কৃতিক সৌন্দর্যের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মিলেছে। এটি ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে যুক্ত হয়েছে। বাঙালি হিসেবে এটি আমাদের জন্য গর্বের ও পরমানন্দের।

রবি উপাচার্য বলেন, সরল বাঙালির প্রকৃত ধর্মচর্চার সীমাবদ্ধতাকে পুঁজি করে একদিকে মনস্তাত্ত্বিক ভাঙন তৈরি করা হয়েছে, অন্যদিকে তাদের আচরণে নিজ নিজ ধর্মের সৌন্দর্য কালিমালিপ্ত হয়েছে। পাকিস্তানি স্বৈরশাসক আইয়ুব খান ছিলেন ইংরেজদের এই উপনিবেশিক মানসিকতার উত্তরাধিকার। ভাষা আন্দোলনের সাফল্যে পাকিস্তানি শাসকদের উর্দু চাপিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র বাস্তবায়িত না হলেও হাল ছাড়েননি আইয়ুব খান। আবার ধর্মকে অপব্যবহার করে বিভ্রান্ত করতে চেয়েছেন বাঙালি মুসলমানকে। প্রচার করার চেষ্টা করেছেন বাংলা ‘হিন্দুর’ ভাষা আর উর্দু ‘কোরআনে’র ভাষা বলে।

আবার উনিশ শতকে হিন্দু সমাজপতিরা ব্রাহ্ম আদর্শের অনুসারীদের হিন্দু বলে মানতে চায়নি। সেই ব্রাহ্ম পরিবারে জন্ম নেওয়া কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে পূর্ব পাকিস্তানে নিষিদ্ধ করার চেষ্টা করা হয়েছিল। এভাবে বাঙালি সংস্কৃতির ওপর আঘাত হানার আরেক অশুভ চেষ্টা দেখেছিলেন এ দেশের সংস্কৃতিকর্মীরা।

এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন-৩ থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শাহ্ আজমের নেতৃত্বে বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা আরম্ভ হয়। শোভাযাত্রাটি শাহজাদপুরের প্রধান সড়কসমূহ প্রদক্ষিণ করে। বর্ষবরণের দ্বিতীয় অংশে ছিল অতিথিদের সঙ্গে রবীন্দ্র উপাচার্য শাহ্ আজমের সাংস্কৃতিক বিনিময় ও বাঙালির ঐতিহ্যবাহী খাবার পরিবেশন।

উৎসবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় সুধীজন অংশ নেন। উপস্থিত ছিলেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. ফখরুল ইসলামসহ বিভাগসমূহের চেয়ারম্যানরা। আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে পরিবেশিত হয় মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ল্যাপটপকে দীর্ঘদিন টিকিয়ে রাখার ৫ টিপস

চীনে গড় আয়ু বেড়ে ৭৯ বছর

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ

পরীক্ষা বন্ধের উসকানি : প্রাথমিকের ৩ শিক্ষকের বিরুদ্ধে নোটিশ

ব্যস্ত সড়কে ৬ বছর ধরে বেলালের নীরব প্রতিবাদ

১৭ ঘণ্টার ব্যবধানে এক পরিবারে ৩ জনের মৃত্যু

নীরবে আপনার স্বাস্থ্যের ক্ষতি করছে যে ১২ অভ্যাস

ঢাকায় শীতের আমেজ

ইউক্রেনকে সমুদ্র থেকে বিচ্ছিন্ন করার হুমকি পুতিনের

আজ পীরগঞ্জ হানাদারমুক্ত দিবস

১০

আজ রাজধানীর কোথায় কী?

১১

সেলস অফিসার পদে নিয়োগ দিচ্ছে অ্যাপেক্স

১২

বুধবার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ

১৩

সিপিডির ফাইন্যান্স বিভাগে চাকরির সুযোগ

১৪

সীমান্তে স্বর্ণের বারসহ বাংলাদেশি যুবক আটক

১৫

নিজ আসনের প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াত প্রার্থীর বাড়িতে সালাহউদ্দিন আহমদ

১৬

বিকল্প রাজনৈতিক বলয় গঠনের আহ্বান আপ বাংলাদেশের

১৭

বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় কোরআন খতম ও দোয়া মাহফিল

১৮

কেমন আছেন ইমরান খান, সাক্ষাতের পর জানালেন বোন উজমা

১৯

মোদিকে ধন্যবাদ জানাল বিএনপি

২০
X