সুনামগঞ্জে অগ্নিকাণ্ডে নিঃস্ব ২০ পরিবার
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলায় লাকড়ির চুলা থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ২০টি পরিবার নিঃস্ব হয়েছে। শনিবার (১৮ মে) বিকেল ৫ টার দিকে উপজেলার বেহেলী ইউনিয়নের আহসানপুর গ্রামের কবির মিয়ার রান্না ঘরের চুলা থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত ঘটে। এতে প্রায় ৮০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।   ক্ষতিগ্রস্তরা হলেন, আব্দুল হান্নানের ছেলে আল আমিন, আব্দুল কাদিরের ছেলে মাসুক মিয়া, সেজুল মিয়া, সাচ্চু মিয়া, আব্দুল করিমের ছেলে হুমায়ুন, সদরুল আমিন সদরুল আমিন, আমিরুল ইসলামের ছেলে বাবিল, আব্দুল হাসিমের ছেলে কবির মিয়া, জহুর আলম, আকবর আলীর ছেলে আলী হায়দার, আবুল কালামের ছেলে ইসপা, আব্দুল মল্লিকের ছেলে বাচ্চু মিয়া, ইমান আলীর ছেলে ইউনুছ আলী, আব্দুর বর ছেলে সুলতান মিয়া, মাসুক মিয়ার ছেলে সোয়েব আলম, আব্দুল মল্লিকের ছেলে মনির মিয়া, মকরম আলীর ছেলে আবুল কাহার, আলম মিয়া, আব্দুল গফুরের ছেলে মতি মিয়া। স্থানীয়রা জানান, বিকেলে কবির মিয়ার রান্না ঘরের লাকড়ির চুলা থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। একটি ঘরের সঙ্গে আরেকটি ঘর পাশাপাশি থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আগুন দেখে আহসানপুরসহ পাশের মাহমুদপুর, হরিনাকান্দি, হরিপুর গ্রাম থেকে দলে দলে লোকজন এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। পরবর্তীতে ফায়ার সার্ভিসও এসে যোগ দেয়। প্রায় ৩ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কেউ আহত না হলেন ক্ষতিগ্রস্তদের স্বর্ণালংকার, আসবাবপত্র, ধানসহ ৮০ লাখ টাকা। রাত ৯টার দিকে ইউএনও মুশফিকীন নূর ও ওসি দিলীপকুমার দাস ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বেহেলী ইউপি চেয়রম্যান সুব্রত সামন্ত সরকার বলেন, অগ্নিকাণ্ডের খবর পাওয়ার পর তাৎক্ষণিক জামালগঞ্জ থেকে স্পিডবোডে ফায়ার সার্ভিসের ৯ সদস্য গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। ফায়ার সার্ভিস ও গ্রামবাসীরা প্রায় ৩ ঘণ্টার চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। না হলে পুরো গ্রামই পুড়ে ছাই হয়ে যেতো। আমি সংসদ সদস্য অ্যাড. রনজিত চন্দ্র সরকার এবং ইউএনও মুশফিকুন নূরকে বিষয়টি অবহিত করেছি। জামালগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের লিডার বিজয় সিংহ বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান সুব্রত সামন্ত সরকার আমাদের জানালে তাৎক্ষণিক আমাদের ৯সদস্য ঘটনাস্থলে ছুটে যান। প্রায় ৩ ঘণ্টার চেষ্টার পর আগুন নেভাতে সক্ষম হই। 
১৯ মে, ২০২৪

জীবিকা নির্বাহের একমাত্র সম্বল ভ্যান হারিয়ে দিশেহারা পরিবার
ভ্যানের আয়ের টাকায় স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন তৌহিদুল ইসলাম বাবু (৫০)। উপার্জনের একমাত্র ভ্যানগাড়িটি রাতে চুরি হয়ে যাওয়ায় দিশেহারা হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন তিনি। তার জীবিকা নির্বাহ যেন অনিশ্চয়তায় পড়েছে। কান্নাবিজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন তার স্ত্রী মাহফুজা বেগম। শুক্রবার (১৭ মে) রাতে যশোরের মনিরামপুর পৌরসভাধীন দূর্গাপুর গ্রামের বাড়ি থেকে সংসারের একমাত্র উপার্জনের মাধ্যম ব্যাটারিচালিত ভ্যানটি চুরি হয়েছে। এতে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন তারা। তৌহিদুল ইসলাম (বাবু) বয়সের ভারে নুইয়ে পড়েছেন। স্ত্রী, ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে তার। ভ্যান চালিয়ে চারজনের সংসার চালাতেন তিনি। শুক্রবার রাতের কোন এক সময় নিজের বাড়ি থেকে তার ভ্যানটি চুরি হয়েছে। সম্ভাব্য সব স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তিনি ভ্যানের সন্ধান পাননি। ঘটনার দিন বিকেলে মনিরামপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন তিনি। জরাজীর্ন চারচালা দুই কক্ষের টিনশেড ঘরে স্ত্রী, ছেলে নিয়ে থাকেন তৌহিদুল ইসলাম। সম্প্রতি এনজিও (আ-দ্বীন) থেকে ৬০ হাজার টাকা লোন নিয়ে উপর্জানের একমাত্র ভ্যানটি কিনেছিলেন তিনি। ভ্যান চালক তৌহিদুল ইসলাম বাবু বলেন, সেদিন ফজরের নামাজ পড়তে উঠে দেখি ভ্যানটি নেই। পরে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও ভ্যান না পেয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি। তার ভাষ্য, বয়স হয়েছে। স্ত্রী-ছেলে নিয়ে ভ্যান চালিয়ে সংসার চলে। লোনের টাকায় ভ্যানটি কিনেছিলাম। নতুন একটি ভ্যান কেনার জন্য সবার সহযোগীতা চান তিনি। দূর্গাপুর-স্বরুপদাহ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আদম আলী বলেন, ভ্যান চালক বাবু জীবিকার তাগিদে বৃদ্ধ বয়সেও ভ্যান চালান। ভ্যানটি চুরি হওয়ায় মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে পরিবারটি। মণিরামপুর থানার উপ-পরির্দশক আতিকুজ্জামান বলেন, ভ্যান চুরির বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ভ্যানটি উদ্ধারে চেষ্টা চলছে।
১৯ মে, ২০২৪

গান্ধী পরিবার চার প্রজন্ম ধরে সংবিধান ধ্বংস করেছে
দেশের সংবিধান পাল্টে দেওয়ার লক্ষ্যেই ‘চারশ পার’-এর স্লোগান তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। লোকসভা ভোটের প্রচারে ধারাবাহিকভাবে এই অভিযোগ তুলেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীসহ বিরোধীরা। ‘জবাবে’ এবার ভারতীয় সংবিধান বদলের ইতিহাস তুলে ধরে গান্ধী-নেহরু পরিবারকে নিশানা করলেন মোদি। শুক্রবার ইন্ডিয়া টুডেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, ‘নেহরু-গান্ধী পরিবার চার প্রজন্ম ধরে সংবিধানকে ধ্বংস করেছে।’ খবর আনন্দবাজার অনলাইনের। রাহুল বৃহস্পতিবার উত্তর প্রদেশের ঝাঁসিতে বিরোধী দলের জোট ‘ইন্ডিয়া’-র সভায় বলেছিলেন, ‘বিজেপি এবার লোকসভা ভোটে জিতে গেলেই ভারতের সংবিধানকে ধ্বংস করবে। বাবাসাহেব অম্বেদকরের আদর্শকে মুছে দিয়ে সংবিধানে সাম্প্রদায়িকতার ছোঁয়া আনতেই মোদি ৪০০ আসনে জেতার কথা বলছেন। তাই এ ভয়ংকর কাজ যাতে করতে না পারে, সেজন্য বিজেপিকে বর্জন করতে হবে। রাহুলের ওই মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টা পরই ‘ইন্ডিয়া টুডে’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মোদির মন্তব্য, ‘দেশে প্রথমবার সংবিধান বদল করেছিলেন কে? জওহরলাল নেহরু। বাকস্বাধীনতার ওপর রাশ টানতেই প্রথমবার সংশোধন করা হয়েছিল সংবিধান।’ ইন্দিরা গান্ধী আদালতের রায়কে উল্টে দিয়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছিলেন বলে অভিযোগ করেন মোদি। সেই সঙ্গে তার মন্তব্য, ‘ওর (রাহুল) পিতা রাজীব গান্ধী কী করেছিলেন? শাহবানো মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায় এড়ানোর জন্য সংবিধান সংশোধনের বিল পাস করিয়েছিলেন।’ ২০১৩ সালে রাহুল গান্ধী যে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকারেরই অর্ডিন্যান্স ছিঁড়ে ফেলার কথা প্রকাশ্যে বলেছিলেন, সে কথাও মনে করিয়ে দেন মোদি। প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, কোনো মামলায় দুই বছরের বেশি সাজা পেলে বিধায়ক বা সংসদ সদস্যের সদস্যপদ তখনই খারিজ হয়ে যায়। শুধু তা-ই নয়, সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ছয় বছর আর ভোটে দাঁড়াতে পারেন না তারা। কিন্তু ২০১৩-এ পশুখাদ্য কেলেঙ্কারির একটি মামলায় আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদের জেলের সাজা হওয়ার পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সরকার তাকে বাঁচাতেই সুপ্রিম কোর্টের রায় কার্যকর করা ঠেকাতে সক্রিয় হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। সরকার অর্ডিন্যান্স জারি করার পরে রাহুল প্রকাশ্যে তা ছিঁড়ে ফেলতে বলেছিলেন। এর পরই পিছু হটে অর্ডিন্যান্স প্রত্যাহার করেছিল মনমোহন সরকার।
১৮ মে, ২০২৪

নিখোঁজ মোহাম্মদ আলীর সন্ধান চায় পরিবার
রাজধানীর চকবাজার থেকে নিখোঁজ হওয়া মোহাম্মদ আলীর সন্ধান চায় পরিবার। গত ৮ মে থেকে বাসা থেকে বের হওয়ার পর তাকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। নিখোঁজ মোহাম্মদ আলীর বয়স ৪০ বছর। ঠিকানা-৪৭/৭ এ পূর্ব ইসলামবাগ, গ্রাম-পূর্ব ইসলামবাগ, ইউনিয়ন/ওয়ার্ড-২৯ ইসলামবাগ, থানা-চকবাজার, জেলা-ঢাকা। পরিবার ও স্বজনরা সম্ভাব্য সব স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তার কোনো সন্ধান না পেয়ে গত ১১ মে চকবাজার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন তার স্ত্রী। জিডিতে বলা হয়েছে- ৮ মে ভোর ৪টার দিকে চকবাজার থানাধীন ২৯নং ওয়ার্ড ইসলামবাগ ইউনিয়ন/ওয়ার্ড এর পূর্ব ইসলামবাগ এলাকা থেকে আমার স্বামী নিখোঁজ হয়েছেন। সম্ভাব্য সকল জায়গায় খোঁজাখুঁজি করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত খোঁজাখুঁজি করেও কোনো সন্ধান পাওয়া যায় নাই। খোঁজাখুঁজি অব্যাহত আছে। মোহাম্মদ আলীর গায়ের রং কালো, উচ্চতা ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি, মুখের আকৃতি গোলাকার। তার কেউ সন্ধান পেয়ে থাকলে চকবাজার থানায় কিংবা উপরের ঠিকানায় যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হয়েছে।
১৪ মে, ২০২৪

পরিবার পরিকল্পনার ভারপ্রাপ্ত ডিজি আসিব আহসান
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রশাসন শাখার পরিচালক যুগ্ম সচিব মো. আসিব আহসান। নতুন মহাপরিচালক যোগদান না করা পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্ব পালন করবেন। গতকাল রোববার মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব (প্রশাসন-১) রাহেলা রহমত উল্লাহ স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে এ কথা বলা হয়েছে। গত ৮ মে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাহান আরা বানুকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বদলি করা হয়। যুগ্ম সচিব আসিব আহসান বিসিএসের ২১তম ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। তিনি রংপুরের জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সর্বশেষ ২০২২ সালে আসিব আহসান যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতি পান।
১৩ মে, ২০২৪

সাক্ষী নেই, আপসে পরিবার খালাস পান চালকরা
সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ির চাপায় মৃত্যু হলেই শুরু হয় তোলপাড়। বিচারের জন্য ওঠে নানা দাবি। ন্যায়বিচার চেয়ে মামলা করে ভুক্তভোগীর পরিবার। তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ। শুরু হয় আনুষ্ঠানিক বিচার। তবে প্রায় ক্ষেত্রে সাক্ষী খুঁজে পাওয়া যায় না। একপর্যায়ে আসামিপক্ষের সঙ্গে আপস করে ভুক্তভোগীর পরিবার। এতে নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে মামলায় দায় থেকে বেকসুর খালাস পান চালকরা। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ির চাপায় গত তিন বছরে ১৪ জন মারা গেছেন। এসব ঘটনায় রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ১৩টি মামলা করেছেন তাদের স্বজনরা। তবে খিলগাঁওয়ে ডিএসসিসির ময়লার গাড়ির চাপায় নাসরিন খানম নামে এক নারী মারা গেলেও তার পরিবার মামলা করেনি। এসব মামলার মধ্যে ১০টিতে চার্জশিট এবং এক মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশ। এ ছাড়া অন্য মামলাগুলো তদন্তাধীন। একটি বাদে অন্য ৯টি মামলায় অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হয়। যার মধ্যে তিনটি মামলায় আপসে নিষ্পত্তি হয়েছে এবং অভিযুক্তরা নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে খালাস পেয়েছেন। এ ছাড়া বিচারাধীন পাঁচ মামলার মধ্যে মাত্র একটি মামলায় একজনের সাক্ষ্য গ্রহণ হয়েছে। তবে অন্য চার মামলায় এখন পর্যন্ত কোনো সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়নি। চাকরির বিনিময়ে আপস, খালাস চালক: তিন বছর আগে রাজধানীর শাহজাহানপুর টিটিপাড়ায় উত্তর সিটি করপোরেশনের ময়লার ট্রাকের চাপায় স্বপন আহমেদ নামে এক ব্যাংক কর্মচারী নিহত হন। এ ঘটনায় ২০২১ সালের ২ মে নিহতের স্ত্রী পাপিয়া খাতুন মামলা করেন। তদন্ত শেষে চালক নূরুল ইসলামকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ। পরে ২০২২ সালের ৮ মার্চ ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত আপস-মীমাংসায় আসামিকে খালাস দেন। রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে, রাষ্ট্রপক্ষ দুজন সাক্ষীকে আদালতে উপস্থাপন করে। মামলার বাদী পাপিয়া তার জবানবন্দিতে বলেন, বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে তাদের আপস-মীমাংসা হয়েছে। আসামিপক্ষ তাকে চাকরির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। আসামি খালাস পেলে তার কোনো আপত্তি নেই বলে জানান। পরে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে মামলার দায় থেকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। আপসে মামলা চালাতে ইচ্ছুক নয়, খালাস চালক: রাজধানীর ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স ট্রেড অ্যান্ড টেকনোলজির বিবিএ শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন সাব্বির আহম্মেদ রকি। ২০২২ সালের ১৩ জুলাই বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে মোটরসাইকেল ইউটার্ন করার জন্য কাফরুল থানাধীন পুলিশ স্টাফ কলেজের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন। তখন উত্তর সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ি এসে ধাক্কা দিলে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় বাচ্চু মিয়া মামলা করেন। তদন্ত শেষে গত বছরের ৩১ মার্চ চালক আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় পুলিশ। পরে ওই বছরের ২১ মে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন বিচারক। বিচার চলাকালে আদালত একমাত্র মামলার বাদীর সাক্ষ্য নেন। তখন বাদী তার জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন, আসামির সঙ্গে তার স্থানীয়ভাবে আপস হয়েছে। তিনি মামলা চালাতে ইচ্ছুক নন। আসামি খালাস পেলে তার আপত্তি নেই বলে আদালতকে জানান। পরে ওই বছরের ৩১ মে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরফাতুল রাকিবের আদালত এ মামলায় রায় ঘোষণা করেন। রায়ে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় আসামি আব্দুস সালামকে মামলার দায় থেকে বেকসুর খালাস দেন। চার্জশিটে অভিযুক্ত, রায়ে খালাস: ২০২২ সালের ২৩ জানুয়ারি মহাখালী ফ্লাইওভারের মুখে রাত ২টার দিকে রাস্তা ঝাড়ু দিচ্ছিলেন পরিচ্ছন্নতাকর্মী শিখা রানী ঘরামি। এ সময় সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ি তাকে ধাক্কা দিলে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহত শিখা রানীর ছেলে খোকন ঘরামি তেজগাঁও থানায় মামলা করেন। তদন্ত শেষে ২০২২ সালের ২৪ জুলাই চালক সাদ্দাম হাওলাদারকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেন। পরে একই বছরের ৬ নভেম্বর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আহমেদ রায়ে আসামিকে বেকসুর খালাস দেন। চার মামলায় বিচার শুরু হলেও সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি: ২০২১ সালের ২৫ নভেম্বর মোটরসাইকেলে আহসান কবির খান অফিসে যাচ্ছিলেন। তিনি পান্থপথে পৌঁছলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ি এসে মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয়। এতে তিনি নিচে পড়ে যান। তখন চালক তার মাথার ওপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে চলে যান। আহসান কবির মারা গেলে তার স্ত্রী নাদিরা পারভীন কলাবাগান থানায় মামলা করেন। তদন্ত শেষে কলাবাগান থানা পুলিশের উপপরিদর্শক মো. আরিফ হোসেন আদালতে চার্জশিট দেন। গত বছরের ২৮ মার্চ চালক হানিফ ফটিকের বিচার শুরু হয়। এক বছরে এ মামলায় কোনো সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি। ২০২১ সালের ২০ জানুয়ারি গেণ্ডারিয়ার দয়াগঞ্জ মোড়ে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ির ধাক্কায় নিহত হন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) টেলিফোন অপারেটর ইনচার্জ মো. খালিদ। এ ঘটনায় তার ছোট ভাই মাহমুদ আলম মামলা করেন। ২০২২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় চালক রনির বিচার শুরু হয়। দুই বছর পার হলেও এ মামলায় কোনো সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি। ২০২১ সালের ২৩ ডিসেম্বর ওয়ারী এলাকায় ময়লার গাড়ির ধাক্কায় স্বপন কুমার সরকার নামে একজন নিহত হন। এ ঘটনায় তার ভাই তপন কুমার মামলা করেন। তদন্ত শেষে মোর্শেদ আলমের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় পুলিশ। ২০২৩ সালের ৭ মার্চ অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে এ মামলার বিচার শুরু হয়। গত এক বছরে মোট ১৫ সাক্ষীর কারও সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি। ২০২৩ সালের ৬ মার্চ মারা যান আবু তৈয়ব নামের এক কাপড় ব্যবসায়ী। এ ঘটনায় মাহমুদুল হাসান মামলা করেন। তদন্ত শেষে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক মঞ্জুরুল হক চালক আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেন। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শেখ সাদীর আদালত অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন। আগামী ১৬ মে এ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য রয়েছে। একমাত্র তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্য গ্রহণ: ২০২২ সালের ৩১ মে রাতে মুগদার টিটিপাড়া মোড়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ির ধাক্কায় নাজমা আক্তার নামে এক পথচারী নিহত হন। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী আ. রহিম মুন্সি মামলা করেন। তদন্ত শেষে চালক সোহেল রানার বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় পুলিশ। এ মামলায় বিচার শুরু হলেও সাতজন সাক্ষীর মধ্যে একমাত্র তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক শামীম আকতার সরকারের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। সর্বশেষ গত ১৪ ফেব্রুয়ারি এ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য থাকলেও কোনো সাক্ষী আদালতে উপস্থিত হননি। আগামী ৯ জুলাই সাক্ষ্য গ্রহণের পরবর্তী দিন ধার্য রয়েছে। চার্জশিট হলেও বিচার শুরু হয়নি: ২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর গুলিস্তানে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়িচাপায় নটর ডেম কলেজের ছাত্র নাঈম হাসান নিহত হন। এ ঘটনায় নিহতের বাবা শাহ আলম দেওয়ান পল্টন মডেল থানায় মামলা করেন। ২০২২ সালের ৯ নভেম্বর চালকসহ তিন জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা পল্টন মডেল থানার এসআই আনিছুর রহমান। পরে মামলাটি বিচারের জন্য ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে করা হয়েছে। সেখানে চার্জশিট আমলে গ্রহণ শেষে অভিযোগ গঠনের জন্য দিন ধার্য করেন আদালত। পরে গত বছরের ৯ নভেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত মামলাটি অভিযোগ গঠন শুনানি থেকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফেরত পাঠান। এরপর থেকে মামলাটির বিচার কাজ আটকে রয়েছে। এক মামলা তদন্তাধীন, আরেকটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন: ২০২১ সালের ১৬ এপ্রিল যাত্রাবাড়ীর বিবির বাগিচায় দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ির ধাক্কায় নিহত হন রিকশাচালক মোস্তফা। এ ঘটনায় জয়নাল আবেদিন অজ্ঞাতপরিচয় চালকের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন। এ ছাড়া ২০২১ সালের ৯ আগস্ট শ্যামপুরের দোলাইরপাড় এলাকায় তৈরি পোশাক কারখানার এক কর্মী নিহত হন। এ ঘটনায় মো. রাজু বাদী অজ্ঞাতপরিচয় ময়লার গাড়ির চালকের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তবে তদন্ত শেষে ২০২২ সালের ২ আগস্ট আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ।
০৯ মে, ২০২৪

উত্তর কোরিয়ার কিম পরিবারের ‘পেছনের কারিগর’ মারা গেছেন
উত্তর কোরিয়ার আজকের কিম পরিবারের পেছনের কারিগর কিম কি নাম মারা গেছেন। বুধবার (৮ মে) উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সির (কেসিএনএ) বরাতে বিবিসি খবরটি জানায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ৯৪ বছর বয়সী কিম কি নাম বার্ধক্যজনিত কারণে মারা গেছেন। তার বিভিন্ন অঙ্গ কাজ করছিল না। তিনি ২০২২ সাল থেকে চিকিৎসাধীন ছিলেন। উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন বুধবার সকালে তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দেন। তিনি এ প্রবীনের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন এবং তার অবদান স্বীকার করে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। রাষ্ট্রীয়ভাবে তাকে ‘প্রবীণ বিপ্লবী, যিনি শাসনের প্রতি সীমাহীন অনুগত ছিলেন’ বলে বর্ণনা করা হয়। কিম কি নাম উত্তর কোরিয়ায় তিন প্রজন্মের ক্ষমতাধরে সঙ্গে কাজ করেন। তিনি কিম শাসকদের একটি আলাদা অবস্থান তৈরি এবং রাজনৈতিক বৈধতা দৃঢ় করতে তাদের পক্ষে প্রচার চালানোর দায়িত্বে ছিলেন। বিবিসি তাকে কিম পরিবারের ‘প্রপাগান্ডার মাস্টার’ বলে অভিহিত করেছে। উত্তর কোরিয়া সরকারের প্রচার বিভাগের (প্রপাগান্ডা মেশিন) প্রধান সফল পরিকল্পনাকারী ছিলেন তিনি। কিম শাসকদের এ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি দক্ষিণ কোরিয়াও সফর করেছেন। সাধারণত দেশটির রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তাদের দক্ষিণ কোরিয়ায় যাওয়া বিরল। স্টিমসন সেন্টারের উত্তর কোরিয়াবিষয়ক বিশেষজ্ঞ মাইকেল ম্যাডেনের মতে, কিম কি নাম উত্তর কোরিয়ার নীতিমালা ও কর্মীদের ওপর ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেছিলেন। তিনি ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক ভিত্তির গুরুত্বপূর্ণ স্থপতি ছিলেন। উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম ইল সাংয়ের শাসন টিকিয়ে রাখতে অভূতপূর্ব প্রপাগান্ডা চালান তিনি। পরে কিম জং ইলের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন কিম কি নাম। বর্তমান নেতা কিম জং উনের কাছে তিনি ছিলেন বেশ সম্মানিত।
০৮ মে, ২০২৪

স্বাস্থ্য শিক্ষার এডিজি হলেন স্বাচিপ মহাসচিব
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের নতুন অতিরিক্ত মহাপরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) মহাসচিব অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান মিলন। বর্তমানে তিনি জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে কর্মরত আছেন।  বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের পারসোনেল-১ শাখার উপসচিব দূর-রে-ওয়াজ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এই তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারের কর্মকর্তা ডা. কামরুল হাসানকে পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত তার নামের পার্শ্বে বর্ণিত পদে ও কর্মস্থলে পদায়ন করা হলো। অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান মিলন বর্তমানে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগে কর্মরত আছেন।  এ ছাড়াও তিনি সরকারি দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের কেন্দ্রীয় মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করছেন।
২৫ এপ্রিল, ২০২৪

পরনের কাপড় ছাড়া দরিদ্র ৫ পরিবারের সর্বস্ব পুড়ে ছাই
নাটোরে অগ্নিকাণ্ডে দরিদ্র ৫ পরিবারের সর্বস্ব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৫টি বসতঘর, ৫টি রান্না ঘরসহ ১টি গোয়াল ঘর একেবারেই পুড়ে ভস্মীভূত হয়ে গেছে। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) দুপুর ১টার দিকে সদর উপজেলার তেবাড়িয়া ইউনিয়নের লোচনগড় গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অগ্নিকাণ্ডে কৃষক আছের উদ্দিন, অটো রিকশাচালক আফজাল হোসেন, রিকশাচালক গোলাম রসুল, ভ্যানচালক আনোয়ার হোসেন ও মো. রাজুর বসতবাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ঘরে থাকা এসব পরিবারের নগদ টাকা, গহনা, আসবাবপত্র ও খাদ্যসামগ্রী পুড়ে যায়। দরিদ্র এই পরিবারগুলো শেষ সম্বলগুলো হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। নাটোর ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, রান্নাঘরের চুলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। ভুক্তভোগী ৫ পরিবারের দাবি অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ১২ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর প্রতিবেশী বাচ্চু মিয়া বলেন, দুপুর ১টার দিকে হঠাৎ চিৎকার চেঁচামেচি শুনে দৌড়ে এসে দেখি দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। বাড়িগুলো ঘিঞ্জি হওয়ায় নিমৈষেই আগুন সবগুলো ঘরে ছড়িয়ে যায়। আগুনের এত তাপ, কেউ কাছে যেতে পারছিল না। পরে ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে তারা এসে দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।  ভ্যানচালক আনোয়ারের স্ত্রী তিথি খাতুন বলেন, রান্না ঘরের আগুন থেকে গোয়াল ঘর হয়ে সব ঘরে ছড়িয়ে যায়। আমার স্বামী ভ্যান চালিয়ে সংসার চালায়। অনেক কষ্ট করে কিছু গহনা কিনেছিলাম। সেগুলোও আর পাচ্ছি না। ঘরে খাবারের যেগুলো ছিল ওগুলোও পুড়ে গেছে। ঘরের আসবাবপত্র, কাপড়-চোপড় সব পুড়ে গেছে। কিছুই আর রইল না। স্থানীয় ইউপি সদস্য শাহাবুদ্দিন বলেন, ৫টি পরিবার আগে থেকেই হতদরিদ্র। আগুনে সবকিছু পুড়ে এরা একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেল। পরনের কাপড় ছাড়া দরিদ্র ৫ পরিবারের আর কিছুই রইল না। ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম রমজান সরকারি সহায়তায় ভুক্তভোগীদের বাড়ি করে দেওয়ার আশ্বাস দেন।  এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক আবু নাছের ভূঁঞা বলেন, খবর পাওয়ার পরেই ঘটনাস্থলে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার গেছেন। তাৎক্ষণিক ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে শুকনো খাবারসহ অন্যান্য ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেছেন। নিয়ম অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সরকারি সহায়তার আওতায় আনা হবে।
২৪ এপ্রিল, ২০২৪

থমকে গেছে পরিবার পরিকল্পনা
দেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরকে বড় নিয়ামক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। পাঁচ দশক আগে একজন মা গড়ে ৬ থেকে ৭ জন সন্তান জন্ম দিতেন। সেই সংখ্যা কমিয়ে আনার নেপথ্যের কারিগর অধিদপ্তরের কর্মীরা। তাদের প্রচেষ্টায় পাঁচ দশকে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। তবে দীর্ঘদিনে অর্জিত সেই সাফল্য এখন হুমকির মুখে। চাহিদা অনুযায়ী উপকরণ না থাকায় পরিবার পরিকল্পনার সরকারি সেবা কার্যক্রম প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। বেশ কিছুদিন ধরেই সারা দেশে কনডম, মুখে খাওয়া বড়ি ও কিটের মারাত্মক সংকট চলছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের জনবল সংকট। প্রতিষ্ঠানটির মোট পদের প্রায় চার ভাগের এক ভাগই বর্তমানে শূন্য হয়ে আছে, যার সংখ্যা ১১ হাজারের বেশি। পরিবার পরিকল্পনা দপ্তর সূত্রে জানা যায়, এক বছর ধরে জন্মনিয়ন্ত্রণের অস্থায়ী উপকরণ সামগ্রীর সরবরাহ আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এসব উপকরণের মজুদ খুব সীমিত পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। বিশেষ করে দীর্ঘমেয়াদি পদ্ধতি ইনজেকশন ও চলমান পদ্ধতির উপকরণ কনডম ও মুখে খাবার বড়ি এবং কিটের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এই সুযোগে বাজারে বেসরকারি কোম্পানির বিভিন্ন উপকরণের দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। ফলে নিম্নবিত্ত দম্পতিদের মধ্যে পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহণে অনীহা সৃষ্টি হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি এবং উপকরণ বিতরণের জন্য দেশের প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌর এলাকায় একজন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক ও তিনজন পরিবারকল্যাণ সহকারী দায়িত্ব পালন করেন। এই কর্মীদের সপ্তাহে চার দিন বাড়ি বাড়ি গিয়ে দম্পতিদের সঙ্গে আলোচনা ও সামগ্রী বিতরণ করার কথা। উপকরণ ঘাটতির কারণে পরিবার পরিকল্পনা কর্মীদের অনেকেই নিয়মিত বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন না। আবার যারা যাচ্ছেন তারাও দম্পতিদের বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ কিংবা ঘাটতি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত বাজার থেকে উপকরণ সংগ্রহের পরামর্শ দিচ্ছেন। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সাবেক এক কর্মকর্তা জানান, শীর্ষ কর্মকর্তাদের উদাসীনতা, কেনাকাটায় স্বেচ্ছাচারিতা এবং পরিকল্পনার অভাবে এই ঘাটতির সৃষ্টি হয়েছে। ঘাটতি এতই বেশি যে, গত ১৫ বছরে অধিদপ্তর এমন সংকটে পড়েনি। এর প্রভাবে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারকারী দম্পতির মধ্যে অনীহা সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত এই উপকরণের সরবরাহ স্বাভাবিক না হলে ব্যবহারকারীর সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে হ্রাস পাবে। এতে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হতে পারে। গত চার দশকেরও বেশি সময় ধরে দেশের পরিবারকল্যাণ সেবা ও মাতৃস্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করছেন সরকারের জনস্বাস্থ্যবিষয়ক পরামর্শক কমিটির সদস্য ও পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট (ইলেক্ট) অধ্যাপক ড. আবু জামিল ফয়সাল। কালবেলাকে তিনি বলেন, ‘পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের কার্যক্রম এখন মুখ থুবড়ে পড়েছে। জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী ও লোকবল সংকট দীর্ঘদিনের। যারা সরকারি সরবরাহের জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী ব্যবহার করতেন, তারা যদি এখন বিনামূল্যে উপকরণ না পান তাহলে অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ বেড়ে যেতে পারে। অনেকেই এই সন্তান রাখতে চাইবেন না। এজন্য অ্যাবরশন করাতে যাবেন। এতে মাতৃমৃত্যু হারও বাড়তে পারে।’ তিনি বলেন, ‘সরকারের কাছে পর্যাপ্ত টাকা রয়েছে। কিন্তু তার পরও দীর্ঘদিন ধরে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী সংকট মোকাবিলায় কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। কেনাকাটায় ভূত তাড়াতে গিয়ে এখন কেনাকাটাও হচ্ছে না।’ কনডম-বড়ি-ইনজেকশন-কিটের সংকট: সরকারের সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট পোর্টালে দেখা যায়, বিভিন্ন ধরনের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সামগ্রীর মজুত কমে এসেছে। গত ১৮ এপ্রিল এই ওয়েবসাইটে দেখা যায়, ৪১৮টি উপজেলা স্টোরে কোনো কনডম নেই। আরও ৬৮টি উপজেলায় শিগগিরই মজুতশূন্য হবে। ৭৭টি উপজেলা স্টোরে ‘সুখী’ ব্র্যান্ডের তৃতীয় প্রজন্মের খাবার বড়ি নেই। ১৬০টি উপজেলা স্টোরে এই উপকরণের মজুত সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। ১৫১টি উপজেলা স্টোরে বড়ির মজুত শিগগিরই শূন্য হবে। ‘সুখী’ ব্র্যান্ডের দ্বিতীয় প্রজন্মের খাবার বড়ি নেই ৩৫৩টি উপজেলা স্টোরে। ৪৮টি উপজেলা স্টোরে শিগগিরই এই বড়ি শেষ হয়ে যাবে। আরও ২৬টি উপজেলা স্টোরে মজুত সর্বনিম্ন অবস্থায় আছে। ‘আপন’ ব্র্যান্ডের বড়ি নেই ১৭০টি উপজেলা স্টোরে। ১২৫টি উপজেলা স্টোরে দ্রুতই এর মজুত শূন্য হয়ে যাবে। আরও ৯৬টি উপজেলা স্টোরে মজুত সর্বনিম্ন পর্যায়ে। ইনজেকশনের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। দেশের ৪৭৬টি উপজেলা স্টোরে কোনো ইনজেকশন নেই। ১১টি উপজেলা স্টোরে এর মজুত শেষ পর্যায়ে। মা ও শিশু স্বাস্থ্যসেবার বিভিন্ন উপকরণের সমন্বয়ে তৈরি প্যাকেজ ‘ডিডিএস কিট’-এর ক্ষেত্রেও তীব্র সংকট তৈরি হয়েছে। দেশের ৪৪টি উপজেলা স্টোরে কোনো ডিডিএস কিট নেই। ৯০টি উপজেলার স্টোরে এই কিট শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আরও ২০০টি উপজেলা স্টোরে কিটের মজুত সর্বনিম্ন অবস্থায় রয়েছে। স্বাভাবিক প্রসব সেবা নিশ্চিতকল্পে প্রয়োজনীয় সাধারণ ডেলিভারি কিট ৪৫০টি উপজেলা স্টোরে মজুত শেষ, ১১টি উপজেলা স্টোরে খুব দ্রুত মজুতশূন্য হবে এবং ১৪টি উপজেলা স্টোরে সর্বনিম্ন মজুত রয়েছে। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপকরণ ও সরবরাহ ইউনিটের পরিচালক মো. মতিউর রহমান সংকটের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণ সামগ্রীর সংকট তৈরি হয়েছে সত্য। তবে সংকট মোকাবিলায় প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব উপকরণ সামগ্রীর সংকট সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে কতদিন সময় লাগবে, তা সুনির্দিষ্টভাবে বলা যাচ্ছে না। উপকরণ কেনাকাটা অব্যাহত রয়েছে। আশা করছি, দ্রুত এই সংকট কেটে যাবে।’ সারা দেশে ১১ হাজার ১৪৫টি পদ শূন্য: স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ হিসাব বলছে, সারা দেশে পরিবারকল্যাণ পরিদর্শক বা মাঠকর্মীর পদ খালি আছে ৪ হাজার ৩৩৪টি। পরিবারকল্যাণ পরিদর্শকের কাজ তদারকি করেন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক। সারা দেশে এই পদ শূন্য আছে ৩৫০টি। ফলে সেসব এলাকায় মাঠকর্মীদের কাজের কোনো তদারকি নেই। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের প্রশাসন বিভাগের সূত্র বলছে, কেন্দ্র থেকে শুরু করে মাঠপর্যায়ে ৩২ ধরনের (ক্যাটাগরি) কর্মকর্তা ও কর্মচারী রয়েছেন। তাদের মোট পদ ৪৮ হাজার ৮৭টি। এর মধ্যে বর্তমানে শূন্য আছে ১১ হাজার ১৪৫টি পদ। সেই হিসাবে মোট পদের ২৩ শতাংশ শূন্য রেখেই কাজ চালাচ্ছে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর। পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট (ইলেক্ট) অধ্যাপক ড. আবু জামিল ফয়সাল বলেন, তিনি বলেন, ‘পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের লোকবল সংকটের কারণে সেবার মান এখন তলানিতে। যে লোকবল আছে, সেটা দিয়ে পরিপূর্ণভাবে সেবাও দেওয়া যাচ্ছে না। লোকবলের অভাবে সবার কাছে সেবা পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। এর প্রভাব পড়বে দেশের জনসংখ্যা ব্যবস্থার ওপর।’ সারা দেশে সংকটের চিত্র: কালবেলার ঝিনাইদহ ব্যুরো জানায়, জেলায় জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণ সরবরাহ আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে। এর প্রভাবে পরিবার পরিকল্পনা দপ্তরের ওপর নির্ভরশীল নিম্ন আয়ের মানুষ ও গ্রামাঞ্চলের দম্পতিদের মধ্যে পদ্ধতি ব্যবহারে অনীহা বাড়ছে। জেলার হরিণাকুণ্ডু উপজেলার ফলসী ইউনিয়নের পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক পারবতী বালা জানান, তার ইউনিয়নে দুই হাজার ৮৫৭ দম্পতি জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করেন। সরবরাহ ঘাটতি থাকায় এ মুহূর্তে তাদের চাহিদা অনুযায়ী সামগ্রী সরবরাহ করা যাচ্ছে না। একই তথ্য জানান জোড়াদাহ ইউনিয়নের পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক ইমরুল কায়েস। সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তানিয়া আক্তার তৃপ্তি বলেন, ‘দম্পতিদের জন্মনিয়ন্ত্রণের বিভিন্ন ব্যবস্থার বিষয়ে ধারণা দেওয়া হয়। দম্পতিরা তাদের সুবিধামতো ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। এ মুহূর্তে উপকরণের স্বল্পতা রয়েছে।’ তিনি অবশ্য মনে করেন, মানুষ এখন অনেক সচেতন হয়েছে। ঘাটতির সময়ে তারা বাইরে থেকে উপকরণ সংগ্রহ করে পদ্ধতি ব্যবহার চলমান রাখবেন। ঝিনাইদহ জেলা পরিবার পরিকল্পনা দপ্তরের উপপরিচালক মোজাম্মেল করিম জানান, সরকারিভাবে উপকরণ সরবরাহে ঘাটতি তৈরি হওয়ায় যাতে পদ্ধতি ব্যবহারে কারও মধ্যে অনীহা সৃষ্টি না হয় সেজন্য জেলার ৬টি পৌরসভা ও ৬৭টি ইউনিয়নের কর্মীরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।’ জেলার সিভিল সার্জন শুভ্রা রানী দেবনাথ বলেন, ‘মানুষ এখন অনেক সচেতন। মাঠকর্মীরা যদি সঠিকভাবে মানুষকে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে বোঝাতে পারেন তাহলে সংকটকালেও জন্মহার ধরে রাখা সম্ভব হবে।’ মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, জেলার ৬টি উপজেলার ৬৭টি ইউনিয়নে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে কর্মকর্তা থেকে শুরু করে আয়া পর্যন্ত ৭০৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদ থাকলেও অর্ধেকের কম জনবল দিয়ে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। সহকারী উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, সহকারী পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তাসহ (এমসিএইচ) মেডিকেল অফিসারের পদগুলো রয়েছে শূন্য। উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার, ফার্মাসিস্ট, পরিবার কল্যাণ পরিদর্শন, পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক, পরিবার কল্যাণ সহকারী ও নিরাপত্তা প্রহরীসহ ১২টি পদে আরও ৩৬৪ জন লোকবল প্রয়োজন জেলাতে। এক প্রকার খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে এই কার্যক্রম। মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ফাহিম আহমেদ কালবেলাকে বলেন, ‘মাঠপর্যায়ে অনেক স্বল্পতা রয়েছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা জনবল সংকট। সদর উপজেলায় মাঠ পর্যায়ে কাজের জন্য ৬৫ জন কর্মী প্রয়োজন। সেখানে কাজ করছে ৩৭ জন।’ তিনি জানান, ‘বতর্মান স্বল্প মেয়াদি পদ্ধতি মুখে খাওয়ার বড়ি, কনডম সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। শুধু দীর্ঘমেয়াদি কিছু উপকরণ সরবরাহ রয়েছে।’ এ বিষয়ে জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপপরিচালনা মো. আব্দুস সালাম (ভারপ্রাপ্ত) বলেন, ‘মুন্সীগঞ্জে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারের হার কিছুটা কম হলেও অন্যান্য জেলার তুলনায় সন্তোষজনক। তা ছাড়া পর্যাপ্ত লোকবলের অভাব রয়েছে। জনবল নিয়োগের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।’ নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, জনবল ও উপকরণ সংকটের কারণে জেলায় জন্মনিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। দম্পতিরা ব্যক্তিগত উদ্যোগে উপকরণ সংগ্রহ করে ব্যবহার করছেন। সেখানেও বিপত্তি, উপকরণের দাম বৃদ্ধির কারণে শিল্প কারখানার শ্রমিকসহ স্বল্প আয়ের মানুষের ওপর বাড়তি খরচের চাপ বেড়ে যাচ্ছে। শহরের চাষাঢ়া এলাকার বাসিন্দা আবু আলিম বলেন, ‘দুজনে চাকরি করে সংসার চালাই। তার মধ্যে এসব জিনিসের (কনডম ও পিল) দাম বেড়ে গেছে। সরকারিভাবে যদি পাওয়া যেত তাহলে আমাদের মতো মানুষের উপকার হতো।’ নারায়ণগঞ্জ পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপপরিচালক স্বপন শর্মা বলেন, ‘কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলমান রয়েছে। একটি জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণের স্বল্পতা রয়েছে। যখন এই উপকরণ কেন্দ্রীয়ভাবে সরবরাহ করা হবে, আমরাও তখন ব্যবহারকারীদের সরবরাহ করতে পারব। এ ছাড়াও মাঠকর্মীর কিছুর স্বল্প রয়েছে।’ বরগুনা প্রতিনিধি জানান, সদরসহ ছয় উপজেলায় সরকারি সরবরাহ থেকে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর ব্যবহার ও পদ্ধতি গ্রহণের চাহিদা বেড়েছে। তবে অস্থায়ী পদ্ধতি সামগ্রীর সরবরাহ সংকট রয়েছে। মাঠকর্মীরা এখন স্থায়ী পদ্ধতি গ্রহণে দম্পতিদের উদ্বুদ্ধ করেন। বরগুনা সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, ‘দক্ষ মাঠকর্মীদের মাধ্যমে মানসম্পন্ন সেবায় প্রতিবছর বরগুনায় জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারকারী বৃদ্ধি পাচ্ছে। চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে অস্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সামগ্রীর মজুত একেবারে নেই। এতে কার্যক্রম কিছুটা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তবে ইনজেকশনসহ স্থায়ী পদ্ধতির উপকরণের মজুত আছে।’ সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি জানান, উপজেলায় জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণ সামগ্রী ও জনবল সংকট চরমে পৌঁছেছে। এতে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। গত মার্চের প্রতিবেদন বলছে, সাপাহারে সক্ষম দম্পতি ৪০ হাজার ৫৪৪ জন। তার মধ্যে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী ব্যবহারকারীর হার ৮০ দশমিক ৮৪ শতাংশ। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার দম্পতিরা জানান, পরিবার পরিকল্পনা অফিসের কোনো মাঠকর্মী তাদের খোঁজ নেন না। দীর্ঘদিন ধরে তারা জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী থেকে বঞ্চিত। এখানেই শেষ নয়। আট মাসের বেশি সময় ধরে উপজেলায় নেই পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা। পাশের পত্নীতলা উপজেলার পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাসুদ রানা অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি সাপাহারে সপ্তাহে এক দিন অফিস করেন। এই কর্মকর্তা কালবেলাকে জানান, ‘উপজেলা ও মাঠ পর্যায়ের দীর্ঘদিন ধরেই জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী ইমপ্ল্যান্ট ইনজেকশন ও কনডম নেই। প্রতিনিয়ত হেড অফিসে চাহিদা পাঠাচ্ছি। জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী সরবরাহে ঘাটতি থাকলে দরিদ্র মানুষ বেসরকারি খাতের দিকে ঝুঁকতে পারে। এতে পদ্ধতি ব্যবহার কমে যেতে পারে। এর ফলে অপূর্ণ চাহিদার হার বাড়তে পারে। এ ছাড়া মাঠকর্মী সংকট থাকায় একজন কর্মীকেই নিতে হচ্ছে তিনটি এলাকার দায়িত্ব।’ দিনাজপুরের পার্বতীপুর, ঘোড়াঘাট ও খানসামা প্রতিনিধিরা জানান, সরকারিভাবে জন্মনিয়ন্ত্রণ সেবার মধ্যে মুখে খাওয়ার বড়ি, কনডম, দীর্ঘমেয়াদি পদ্ধতি ইনজেকশন সামগ্রীর ঘাটতি দেখা দিয়েছে। তিন উপজেলায়ই রয়েছে লোকবল সংকট। ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তৌহিদুর আনোয়ার জানান, ‘জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারকারীর হার কমে যাচ্ছে। জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী সরবরাহে ঘাটতি রয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে কেনার ক্ষেত্রেও দাম বেড়েছে।’
২৩ এপ্রিল, ২০২৪
X