‘চামড়াশিল্পকে বাঁচাতে পরিবেশবান্ধব বিনিয়োগ বাড়াতে হবে’
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, চামড়াশিল্পকে বাঁচাতে হলে পরিবেশবান্ধব বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। চামড়াশিল্পের মান রক্ষায় কোন ছাড় দেয়া হবে না। চামড়াশিল্প পরিবেশবান্ধব না হলে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না। এ ছাড়াও চামড়াশিল্প লাভজনক করতে কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার বা সিইটিপি নতুন করে তৈরি করারও আহ্বান জানান তিনি। বৃহস্পতিবার (১৬ মে) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত ‘ন্যাশনাল হাই-লেভেল ডায়লগ ফর গ্রিনিং দ্য ট্যানারি অ্যান্ড লেদার সেক্টর’ শীর্ষক উচ্চপর্যায়ের জাতীয় সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশমন্ত্রী এসব কথা বলেন। পরিবেশমন্ত্রী বলেন, নদী মারা গেলে এ ক্ষতি কোনও কিছু দিয়েই পূরণ হবার নয়। পানিতে বিওডি ৩০ এর মধ্যে থাকতে হয়, ধলেশ্বরীর পানিতে আছে চার গুণের বেশি। হেভি মেটাল ২ গুণের বেশি। এতে মানুষের ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এসব ক্ষতির দায় কে নেবে? ব্লেম গেম করা যাবে না। সমস্যার অংশ না হয়ে সমাধান করতে হবে। যাত্রা নতুনভাবে করতে হবে। ভুল থেকে শিখতে হবে। বাংলাদেশ অনেক ক্ষেত্রেই রোল মডেল, চামড়াশিল্পেও রোল মডেল হতে চাই। অর্থনীতিকে পরিবেশবান্ধব করা আমাদের অগ্রাধিকার। সরকার প্রয়োজনীয় সহায়তা করবে। বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা, ইনস্টিটিউট অব লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজির পরিচালক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, বিসিকের চেয়ারম্যান সঞ্জয় কুমার ভৌমিক, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের ড ফাহমিদা খানম, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির প্রাক্তন ভাইস চ্যান্সেলর এবং যৌথ নদী কমিশনের সদস্য প্রফেসর ইমেরিটাস ড. আইনুন নিশাত এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মিনিস্টার কাউন্সেলর ও হেড অব ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন ড. মিশাল ক্রেজা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এই সংলাপে ট্যানারি ও চামড়া খাতের বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার, পরিবেশবিদ এবং সরকারি প্রতিনিধিরা অংশ নেন এবং খাতটিকে আরও পরিবেশবান্ধব করার জন্য বিভিন্ন প্রস্তাবনা ও সুপারিশ পেশ করেন।
১৪ ঘণ্টা আগে

ঈদ উপলক্ষে ওয়ালটনের বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব পণ্য উন্মোচন
আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে ক্রেতাদের জন্য বিশেষ চমক হিসেবে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও ফিচারের ব্যাপক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী নতুন মডেলের পণ্য উন্মোচন করেছে দেশের ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট ওয়ালটন।  নতুন মডেলের পণ্যের মধ্যে রয়েছে ইনভার্টার প্রযুক্তির মাল্টি-কালার ডিজাইনের সাইড বাই সাইড রেফ্রিজারেটর, ইউরোপিয়ান ডিজাইনের কম্বি মডেলের রেফ্রিজারেটর, ভার্টিকাল ফ্রিজার, চকোলেট কুলারসহ মোট ৭টি মডেলের ফ্রিজ।  এ ছাড়াও আছে সোলার হাইব্রিড প্রযুক্তির স্প্লিট টাইপ এসি, ৪ ও ৫ টনের সিলিং এবং ক্যাসেট টাইপ লাইট কমার্শিয়াল এসি, ৬৫ ইঞ্চির ওএলইডি টিভি, ওয়াশিং মেশিন ও বিএলডিসি ফ্যান।  বৃহস্পতিবার (১৬ মে) সকালে রাজধানীর বসুন্ধরায় ওয়ালটন করপোরেট অফিসের কনফারেন্স হলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে নতুন মডেলের প্রোডাক্টস উন্মোচন করেন ওয়ালটন প্লাজার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ রায়হান।  অনুষ্ঠানে সারা দেশে একযোগে চলমান ডিজিটাল ক্যাম্পেইন সিজন-২০ এর ‘ননস্টপ মিলিয়নিয়ার’ অফারের বর্ণাঢ্য র‌্যালি উদ্বোধন করা হয়।  নতুন মডেলের পণ্য উন্মোচন অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন হাই-টেকের অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর মেজর জেনারেল (অব.) ইবনে ফজল শায়েখুজ্জামান, ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. ইউসুফ আলী, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর দিদারুল আলম খান (চিফ মার্কেটিং অফিসার), মফিজুর রহমান, ফিরোজ আলম, মো. তানভীর রহমান, তাহসিনুল হক, সোহেল রানা, মোস্তফা কামাল প্রমুখ।   এ ছাড়া ভার্চুয়াল মাধ্যমে সারা দেশ থেকে ওয়ালটন প্লাজা ম্যানেজার ও পরিবেশকরা অনুষ্ঠানে যোগ দেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চলনা করেন, জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ও ওয়ালটনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আমিন খান। অনুষ্ঠানে ওয়ালটন প্লাজার এমডি মোহাম্মদ রায়হান বলেন, প্রতি বছরই ঈদকে সামনে রেখে ক্রেতাদের জন্য বিশেষ চমক নিয়ে আসে ওয়ালটন। এরই ধারাবাহিকতায় এবারও ঈদ উপলক্ষে গ্রাহকদের জন্য বিশেষ চমক হিসেবে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও ফিচারের বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী নতুন মডেলের পণ্য উন্মোচন করেছি। নতুন মডেলের এসব পণ্যে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ইনভার্টার প্রযুক্তিসহ ইন্টারনেট অব থিংগস (আইওটি) বেজড স্মার্ট ফিচার সংযোজন করা হয়েছে। আশা করি নতুন মডেলের এসব পণ্য গ্রাহক পর্যায়ে ব্যাপক সাড়া ফেলবে।  ওয়ালটনের চিফ মার্কেটিং অফিসার দিদারুল আলম খান বলেন, গ্রাহকদের হাতে বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও ফিচারসমৃদ্ধ নতুন উদ্ভাবিত পণ্য তুলে দিতে সামর্থ্যের সবটুকু দিয়ে গবেষণা চালাচ্ছে ওয়ালটনের রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন (আরঅ্যান্ডআই) টিমের প্রকৌশলীরা।  ওয়ালটন আর অ্যান্ড আই টিমের দেশি-বিদেশি প্রকৌশলীরা, প্রোডাকশন, কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্টসহ সব বিভাগের সদস্যরা সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও ফিচার নিয়ে নিরলসভাবে কাজ করেছেন। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে আমরা প্রতিনিয়ত বিশ্বের সর্বাধুনিক ডিজাইন, প্রযুক্তি ও ফিচারের ইলেকট্রনিক্স পণ্য গ্রাহকদের হাতে তুলে দিতে সক্ষম হচ্ছি। আমাদের এ ধরনের উদ্ভাবনী প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। ওয়ালটন ডিস্ট্রিবিউটর নেটওয়ার্কের হেড অব সেলস ফিরোজ আলম জানান, গ্রাহকদের হাতে উচ্চ গুণগতমানের পণ্য তুলে দেওয়ার পাশাপাশি সর্বোচ্চ ক্রেতা সুবিধা প্রদানেও বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে ওয়ালটন। এরই প্রেক্ষিতে ঈদে ওয়ালটন ফ্রিজ, টিভি, এসি, ওয়াশিং মেশিন ও ফ্যানের ক্রেতাদের মিলিয়নিয়ার হওয়ার সুবিধা দিচ্ছে ওয়ালটন।  এরইমধ্যে ওয়ালটন ডিজিটাল ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে মিলিয়নিয়ার হয়েছেন ৩৫ জন গ্রাহক। ওয়ালটন থেকে পাওয়া ১০ লাখ টাকায় পরিবর্তন হয়েছে তাদের প্রত্যেকের ভাগ্য। গ্রাহকদের ওয়ালটনের এই ননস্টপ মিলিয়নিয়ার ক্যাম্পেইন সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে মাঠ পর্যায়ে ব্যাপক প্রচার কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।  ঈদ উপলক্ষে বাজারে আসা ওয়ালটনের নতুন মডেলের ফ্রিজের মধ্যে রয়েছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স অব থিংগস বেজড ৬৪৬ লিটার ধারণক্ষমতার সাইড বাই সাইড গ্লাস ডোর রেফ্রিজারেটর, ৩৪৩ লিটারের ইউরোপিয়ান ডিজাইনের কম্বি মডেলের রেফ্রিজারেটর, ৩৩৪ লিটারের ভার্টিকাল ফ্রিজারসহ মোট ৭টি মডেল। নান্দনিক ডিজাইনে তৈরি ওয়ালটনের নতুন মডেলের এসব ফ্রিজ বাড়িয়ে দেবে ঘরের আভিজাত্য।  নতুন মডেলের এসব ফ্রিজ যেমন ব্যাপক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী, তেমনি পরিবেশবান্ধবও। এসব ফ্রিজের কম্প্রেসারে ব্যবহার করা হয়েছে বিশ্ব স্বীকৃত সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব আর৬০০এ গ্যাস। এ ছাড়াও এসব ফ্রিজের রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজার কমপার্টমেন্টের জন্য রয়েছে টারবো ও ইকো ফিচারসমৃদ্ধ ডুয়ো কুলিং টেকনোলজি।  এসব ফ্রিজের ম্যাট্রিক্স স্পিড অপটিমাইজেশন (এমএসও) ইনভার্টার টেকনোলজি বাইরের তাপমাত্রা অনুযায়ী স্বয়ংক্রিয়ভাবে সবচেয়ে কম বিদ্যুৎ খরচে ফ্রিজের অভ্যন্তরীণ সর্বোচ্চ কুলিং পারফরমেন্স নিশ্চিত করে।  রেফ্রিজারেটরের ফ্রিজ ও ফ্রিজার কম্পার্টমেন্টের কুলিং পারফরমেন্স গ্রাহক তার পছন্দমতো সেট করতে পারবেন। এতে বিদ্যুৎ খরচ হবে অনেক কম। এসব ফ্রিজ নিশ্চিত করবে ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণুমুক্ত স্বাস্থ্যকর সতেজ খাবার।  এ ছাড়াও এসব ফ্রিজে রয়েছে ইন্টেলিজেন্ট জার্ম টার্মিনেটর (আইজিটি), স্মার্ট কন্ট্রোল, ডোর ওপেনিং অ্যালার্ম, চাইল্ড লক, থ্রি লেয়ার ওডোর গার্ড ও হিউম্যান ডিটেক্টর। স্মার্ট কন্ট্রোল ফিচার থাকায় ফ্রিজের দরজা না খুলেই হাতের স্পর্শের মাধ্যমেই ফ্রিজ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।  ওয়ালটনের উন্মোচিত নতুন মডেলের এসির মধ্যে রয়েছে ১ ও ১.৫ টনের সোলার হাইব্রিড স্প্লিট টাইপ এসি। ওয়ালটনের নতুন এই এসিটি সুপার সেভিংস মডেলের। এই এসি দিনের বেলায় সোলার পাওয়ারের মাধ্যমে চলবে। যদি সোলার পাওয়ার কম থাকে, তখন সোলার পাওয়ার থেকে আগে বিদ্যুৎ নিয়ে তারপর প্রয়োজন অনুযায়ী বৈদ্যুতিক লাইনের মাধ্যমে হাইব্রিড পদ্ধতিতে চলবে এই এসি।  এতে বিদ্যুৎ খরচ হবে অনেক কম। এ ছাড়া রাতের বেলায় সোলার পাওয়ার ব্যাটারির মাধ্যমে বা বৈদ্যুতিক লাইনেও চলবে এটি। এতে আরও ব্যবহার করা হয়েছে মরিচা প্রতিরোধক কোটেক ইন্ডাস্ট্রিয়াল সলিউশন প্রযুক্তি। এই এসির কম্প্রেসারে ব্যবহার করা হয়েছে সিএফসি এবং এইচসিএফসি গ্যাসমুক্ত সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব আর-৩২ রেফ্রিজারেন্ট। ইনভার্টার প্রযুক্তির বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ১.৫ টন থেকে শুরু করে ৫ টনের সিলিং টাইপ এবং ক্যাসেট টাইপের নতুন মডেলের ইনভার্ট্রনিক্স সিরিজের লাইট কমার্শিয়াল এসি উন্মোচন করেছে ওয়ালটন।  বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার আলোকে ওয়ালটনের এই লাইট কমার্শিয়াল এসিগুলো ডিজাইন করা হয়েছে। এসব এসি ৫৫ ডিগ্রি তাপমাত্রা পর্যন্ত ফাংশনাল থাকবে। ইন্ডাস্ট্রিয়াল কাস্টমারদের কথা বিবেচনা করে মরিচা প্রতিরোধক ফিচার যুক্ত করা হয়েছে। কম্প্রেসারের দীর্ঘস্থায়িত্বের পাশাপাশি হাই কুলিং এফিশিয়েন্সি নিশ্চিত করতে অ্যাকুমুলেটর ব্যবহার করা হয়েছে। লাইট কমার্শিয়াল ইনভার্টার মডেলগুলোকে সিঙ্গেল ফেজ পাওয়ার সাপ্লাই দিয়ে চালানো যাবে। এ ছাড়া সিস্টেমকে রক্ষা করার জন্য সার্জ প্রোটেকশন, হাই ও লো প্রেশার প্রোটেকশন, ইন্টারনাল প্রেশার রিলিভ ভাল্ব ব্যবহার করা হয়েছে। গ্রাহক মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমেও ইনভার্ট্রনিক্স সিরিজের এসি পরিচালনা করতে পারবেন।  ঈদকে সামনে রেখে ওয়ালটন উন্মোচন করেছে ৬৫-ইঞ্চির আল্ট্রা স্লিম ডিজাইনের ওএলইডি টিভি। গ্রাহকরা তাদের ভিউং অ্যাঙ্গেল অনুযায়ী ইচ্ছামতো ঘুরিয়ে নিতে পারবেন ওয়ালটনের নতুন মডেলের এই টিভি। এতে রয়েছে হ্যান্ডস ফ্রি ভয়েস কমান্ড সুবিধা। আছে ৩ জিবি র‌্যাম এবং ৩২ জিবি রম। এ ছাড়াও রয়েছে ১২০ হার্টজ রিফ্রেশ রেট, গেমিং মুড, এমইএমসি, ডলবি এটমস ও ডলবি ভিশন সাউন্ড সিস্টেম।  এ ছাড়াও ওয়ালটন বাজারে এনেছে নতুন মডেলের ওয়াশিং মেশিন। এতে ব্যবহৃত হয়েছে বিএলডিসি ইনভার্টার মটর। ফলে বিদ্যুৎ খরচ যেমন কম হয়, তেমনি দীর্ঘস্থায়িত্বও অনেক বেশি। এই ওয়াশিং মেশিনে কাপড় ওয়াশ করার সময় যদি লোডশেডিং হয় তখন বিদ্যুৎ আসার পর সর্বশেষ অবস্থা থেকে ওয়াশের কাজ সম্পন্ন হয়। পানির হিটিং লেভেল নির্দিষ্ট মাত্রায় পৌঁছালে হিটার স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে। ওয়াশিং মেশিন চালানোর সময় কোনো ধরনের সমস্যা দেখা দিলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডিসপ্লেতে এরোর কোড দেখা যাবে।        ওয়ালটন ঈদ কার্নিভালে বাজারে এসেছে নতুন মডেলের বিএলডিসি প্রযুক্তির সিলিং ফ্যান। বাজারের নরমাল ফ্যানগুলো হয় ৯০ থেকে ১০০ ওয়াটের। আর ওয়ালটনের বিএলডিসি প্রযুক্তির ফ্যান মাত্র ৩৫ ওয়াটের। ফলে ওয়ালটনের এই ফ্যানে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে প্রায় ৬৫ শতাংশ। এতে করে বছরে বিশাল অঙ্কের বিদুৎ বিল সাশ্রয় হবে গ্রাহকের। ওয়ালটনের বিএলডিসি ফ্যান রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে সহজেই চালাতে পারবেন গ্রাহক।
১৬ ঘণ্টা আগে

পরিবেশবান্ধব স্থাপত্য গড়ে বৈশ্বিক তালিকায়
বাংলাদেশি স্থপতি মেরিনা তাবাসসুম। এ বছর যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক টাইম ম্যাগাজিনের ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন। লিখেছেন রীতা ভৌমিক মেরিনা তাবাসসুম আর্কিটেক্টসের প্রধান স্থপতি। জলবায়ু পরিবর্তনে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মানুষের জীবন, সম্পদ রক্ষায় কাজ করছেন। তার এ কাজ সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এ বছর যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক টাইম ম্যাগাজিনের ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় তিনি জায়গা করে নিয়েছেন। আমেরিকান স্থপতি সারাহ হোয়াইটিং টাইম ম্যাগাজিনে তাবাসসুমকে ‘নিঃস্বার্থ স্থপতি’ উল্লেখ করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘তাবাসসুমের নকশা করা ভবনগুলোর মধ্যেও তার স্বার্থহীনতার পরিচয় দেখা যায়। পৃথিবীর সম্পদে ভাগ বসানো প্রাণিকুলের অংশ হিসেবে তিনি তার নিজের সৃষ্টির প্রতি যত্নশীল।’ টাইম ম্যাগাজিন লিখেছে, সাধারণত পুরস্কারজয়ী স্থপতিদের সঙ্গে তাদের নিঃস্বার্থ কাজের বিষয়টি তেমন উল্লেখ করা হয় না। কিন্তু মেরিনা তাবাসসুম সাধারণ নন। তিনি স্থাপত্যচর্চায় এমন একটি রীতি তৈরি করেছেন, যেখানে স্থানীয় সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের পাশাপাশি আমাদের এ পৃথিবী যে বিপদের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তা অগ্রাধিকার পেয়েছে। তাবাসসুমের নকশা করা ভবনগুলোর মধ্যেও তার নিঃস্বার্থ কাজের পরিচয় প্রকাশ পেয়েছে। এ প্রসঙ্গে মেরিনা তাবাসসুম বলেছেন, কৃত্রিম কোনো সাহায্য ছাড়াই একটি ভবনকে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে দিতে হবে। এখানেই থেমে নেই মেরিনা তাবাসসুমের জয়যাত্রা। এবার তিনি পর্তুগালের মানুষের হৃদয়ও জয় করেছেন। পর্তুগালের রাজধানী লিসবনের প্রাণকেন্দ্র বেলেম কালচারাল সেন্টারে নিচতলার প্রদর্শনী হলে মেরিনা তাবাসসুমের একক স্থাপত্য নকশার প্রদর্শনী চলছে। এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে চলতি বছরের ১৮ এপ্রিল। চলবে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত। এ প্রদর্শনীর মাধ্যমে মেরিনা পর্তুগিজ ও বাংলাদেশ কমিউনিটিতে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছেন। প্রদর্শনীর শুরুতেই বাংলাদেশি অধ্যুষিত বেনফরমসো এলাকায় মেরিনার প্রদর্শনীর আমন্ত্রণপত্র ও পোস্টার বিতরণ করেন লিসবনের সেন্ট্রো কালচারাল বেলেমের তিন পর্তুগিজ কর্মকর্তা। তার নকশা ছাড়াও বাংলাদেশের গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী ঢেঁকি, তালগাছের ডোঙ্গা নৌকা, মাছ ধরার সরঞ্জামসহ নানা উপকরণ প্রদর্শিত হয়েছে। বাইতুর রউফ ছাড়াও বাংলাদেশের স্বাধীনতা জাদুঘর ও স্বাধীনতা স্তম্ভ মেরিনা তাবাসসুমের উল্লেখযোগ্য কীর্তি। তিনি ২০১৬ সালে আগা খান অ্যাওয়ার্ড ফর আর্কিটেকচার পুরস্কার পেয়েছেন। ঢাকার উত্তরে দক্ষিণখান এলাকায় দাদির দেওয়া জমিতে স্থাপিত বায়তুর রউফ মসজিদের স্থাপত্যের জন্য মেরিনা তাবাসসুম এ পুরস্কার পান। আগা খান পুরস্কারপ্রাপ্ত ঢাকার বাইতুর রউফ মসজিদ নিয়ে তাবাসসুম বলেছেন, আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে বন্যাঝুঁকি বাড়তে থাকা একটি দেশে এমন বাড়ি নিরাপদ। যেগুলো কম খরচে নির্মাণ করা যায়, সহজে সরিয়ে ফেলা যায়। মেরিনা তাবাসসুমের জন্ম ১৯৬৮ সালে ঢাকায়। তিনি ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক করেন। এর পরের বছরই তিনি স্থপতি কাশেফ চৌধুরীর সঙ্গে গঠন করেন আরবানা। ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠা করেন নিজস্ব স্থাপত্য ফার্ম মেরিনা তাবাসসুম আর্কিটেক্ট। যার প্রধান স্থপতি তিনি। এ ছাড়া পেয়েছেন অনন্যা শীর্ষ দশ পুরস্কার, ২০১৮ সালে জামিল প্রাইজ। ২০২০ সালে ব্রিটিশ সাময়িকী প্রসপেক্টের ৫০ চিন্তাবিদের মধ্যে শীর্ষ ১০ জনের মধ্যে মেরিনা তাবাসসুম ছিলেন তৃতীয়। এ বছরের ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে তিনি মিউনিখের টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি ডিপার্টমেন্ট অব আর্কিটেকচার থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট উপাধি পান। ২০২১ সালে সোন পুরস্কারের জন্য মনোনীত হন তিনি। ২০২২ সালে লিসবন আর্কিটেকচার ট্রিয়নালে মিলেনিয়াম লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হন। কমফোর্ট রিভেরি, ফরিদাবাদের অবকাশ বাড়ি, পানিগ্রাম ইকো রিসোর্ট ও স্পা, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নির্মিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা জাদুঘর ও স্বাধীনতা স্বত্ব মেরিনা তাবাসসুমের উল্লেখযোগ্য কীর্তি।
২২ এপ্রিল, ২০২৪

পরিবেশবান্ধব কারখানা এখন ২১৪
দেশের তৈরি পোশাকশিল্পের আরও একটি কারখানা পরিবেশবান্ধব সনদ পেয়েছে। স্বীকৃতি পাওয়া প্রতিষ্ঠানটি হলো গাজীপুর সদরের পূবাইল এলাকার এপিএস নিট কম্পোজিট।  গতকাল রোববার বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) এ তথ্য জানিয়েছে। ফলে এখন দেশে পরিবেশবান্ধব কারখানার সংখ্যা বেড়ে হলো ২১৪। যুক্তরাষ্ট্রের ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিলের (ইউএসজিবিসি) পরিবেশবান্ধব সনদ পাওয়ার ৯ শর্ত পরিপালনে মোট ১১০ নম্বরের মধ্যে কোনো কারখানা ৮০-এর বেশি পেলে ‘লিড প্লাটিনাম’, ৬০-৭৯ পেলে ‘লিড গোল্ড’, ৫০-৫৯ নম্বর পেলে ‘লিড সিলভার’ এবং ৪০-৪৯ নম্বর পেলে ‘লিড সার্টিফায়েড’ সনদ দেওয়া হয়। এপিএস নিট কম্পোজিট গোল্ড সনদ পেয়েছে। কারখানাটি ইউএসজিবিসি থেকে ১১০ নম্বরের মধ্যে পেয়েছে ৭১। বিজিএমইএ তথ্যানুযায়ী, তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাতে বর্তমানে লিড সনদ পাওয়া পরিবেশবান্ধব কারখানা বেড়ে হয়েছে ২১৪। এর মধ্যে ৮০টি লিড প্লাটিনাম সনদধারী। এ ছাড়া ১২০টি গোল্ড, ১০টি সিলভার ও ৪টি কারখানা সার্টিফায়েড সনদ পেয়েছে। বিশ্বের শীর্ষ ১০ পরিবেশবান্ধব কারখানার ৯টিই বাংলাদেশে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে বিশ্বের শীর্ষ পরিবেশবান্ধব কারখানার স্বীকৃতি পেয়েছে গাজীপুরের কোনাবাড়ীর এসএম সোর্সিং। ১১০ নম্বরের মধ্যে কারখানাটি ১০৬ পেয়েছে। দেশের অন্য পরিবেশবান্ধব কারখানাগুলো হচ্ছে ময়মনসিংহের গ্রিন টেক্সটাইল, গাজীপুরের নিট এশিয়া ও ইন্টিগ্রা ড্রেসেস, নারায়ণগঞ্জের রেমি হোল্ডিংস ও ফতুল্লা অ্যাপারেলস, গাজীপুরের লিডা টেক্সটাইল অ্যান্ড ডাইং ও লিজ ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিজ এবং মানিকগঞ্জের তারাসিমা অ্যাপারেলস। পোশাকশিল্পের উদ্যোক্তা সাজ্জাদুর রহমান মৃধার হাত ধরে ২০১২ সালে দেশে পরিবেশবান্ধব কারখানার যাত্রা শুরু হয়।
২৫ মার্চ, ২০২৪

তরুণ উদ্যোক্তারা দিল বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের পরিবেশবান্ধব সমাধান
জলবায়ু পরিবর্তনের বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় পরিবেশবান্ধব সমাধান দিলো বাংলাদেশের তরুণ উদ্যোক্তারা। ব্রিটিশ কাউন্সিলের সহযোগিতায় বাংলাদেশ ইয়ুথ এনভায়রনমেন্টাল ইনিশিয়েটিভ (বিওয়াইইআই) এবং অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘অ্যাকসেলারেটিং গ্রিন ইনোভেশন থ্রু ইয়ুথ অন্টারপ্রনারশি’ (এগিয়ে ২.০) কর্মসূচির আওতায় পরিবেশবান্ধব ব্যবসার এসব বিভিন্ন ধারণা উঠে এসেছে। ‘বিল্ডিং এজেন্সি ফর ইয়ুথ ইন ক্লাইমেট অ্যাকশন’ কার্যক্রমের আওতায় এগিয়ে ২.০-এর গ্র্যান্ড ফিনালে রাজধানীর হোটেল বেঙ্গল ক্যানারি পার্কে অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে চূড়ান্ত ১০ প্রতিযোগীর মধ্য থেকে সেরা ৪টি আইডিয়া বাছাই করেন জুরি প্যানেলের বিজ্ঞ ও অভিজ্ঞ বিচারকমণ্ডলী। এতে মোহাম্মদ আজিজুল হকের ইকোকাটলার’ প্রথম, ফারহা বিনতে ফিরোজের ‘থার্স্ট রিলিফ’ দ্বিতীয়, ফারহান বিন হাবিবের ‘নিরাপদ শুঁটকি ঘর’ তৃতীয় এবং মালবিকা দীপান্বিতা রয়ভেলির ‘গুণবতী’ শীর্ষক ব্যবসায় আইডিয়া চতুর্থ স্থান অর্জন করে। ‘ইকোকাটলার’ প্লাস্টিকের ছুরি-চামচের বিকল্প হিসেবে বাঁশ, কাঠ, পাটের খড়ি, এবং পুনঃব্যবহারযোগ্য বাঁশের খড়ের ব্যবহার উৎসাহিত করে। ‘থার্স্ট রিলিফ’ লবণাক্ততা-প্রবণ উপকূলের মানুষের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে পানি বিশুদ্ধকরণের প্রস্তাবনা রাখে।  ‘নিরাপদ শুঁটকি ঘর’ রাসায়নিকমুক্ত উপায়ে শুঁটকি মাছ প্রক্রিয়াকরণ এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট স্থানীয় সম্প্রদায়কে ক্ষমতায়নের সুযোগ তৈরি করে। আর ‘গুণবতী’ কারুশিল্পকে প্লাস্টিকের পরিবেশ-বান্ধব বিকল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠা এবং ঐতিহ্যবাহী শিল্পের কারিগরদের ক্ষমতায়নে কাজ করে। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বিভিন্ন শিল্পখাতের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত জুরি প্যানেলের বিবেচনায় নির্বাচিত এ ৪টি ব্যবসায় ধারণাকে বাস্তব রূপদান ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ভবিষ্যতে সিড ফান্ডিংয়ের মাধ্যমে অর্থায়ন ও দিকনির্দেশনা দেয়া হবে। এ প্রতিযোগিতায় মোট ১৩৫টি পরিবেশবান্ধব ব্যবসার ধারণা (গ্রিন বিজনেস আইডিয়া) জমা পড়ে। এর মধ্য থেকে সেরা ২০টি ধারণার উদ্যোক্তাদের নিয়ে ৯-১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আয়োজিত হয় ‘গ্রিন অনট্রেপ্রনারশিপ বুটক্যাম্প’ (জিইবি)। ক্যাম্পে অংশগ্রহণকারীদেরকে পরিবেশবান্ধব ব্যবসায় পরিচালনার ক্ষেত্রে পরিবেশগত পরিস্থিতি বিশ্লেষণের পাশাপাশি বিপণন, বন্টন, ও অর্থ সংস্থানসহ নানা ব্যবসায় সংক্রান্ত বিষয়ে গভীর প্রশিক্ষণ দান করা হয় ও প্রাসঙ্গিক দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়। চূড়ান্ত পর্যায়ে শীর্ষ ১০টি আইডিয়া আয়োজনের গ্র্যান্ড ফিনালে’তে পৌঁছায়। সেরা আইডিয়াগুলোর কেন্দ্রে ছিল দেশের ভিন্ন ভিন্ন জেলার বৈশিষ্ট্য ও প্রাসঙ্গিকতা, যার মধ্য দিয়ে দেশের কুমোর, নানা ঐতিহ্যবাহি শিল্পের কারিগর এবং চট্টগ্রামের পার্বত্য অঞ্চলের আদিবাসী কৃষকসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের উন্নত সক্ষমতা তৈরির উদ্দেশ্য ফুটে ওঠে। কয়েকটি আইডিয়ায় প্লাস্টিক ও অন্যান্য অটেকসই উপকরণের জৈবিকভাবে পচনশীল বিকল্প তৈরির পরিবেশগত সুবিধার ওপর জোর দেয়া হয়। রাসায়নিক সার এবং কীটনাশকের ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর লক্ষ্যেও কার্যকরী ব্যবসায় পরিকল্পনার ধারণা দেন শীর্ষ প্রতিযোগিরা। এছাড়াও, তাদের আইডিয়ায় লবণাক্ততার সম্মুখীন অঞ্চলসমূহে সুপেয় পানির অভাব, নিরাপদ খাদ্য সংস্থানের অভাবসহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের প্রচেষ্টা উঠে আসে। জুরি প্যানেলের সদস্য হিসেবে ছিলেন লাইটক্যাসেল পার্টনার্সের সিইও বিজন ইসলাম, ফিউচার স্টার্টআপের সিইও রুহুল কাদের, বিকাশ ও ব্র্যাক ব্যাংকের পরিচালক ফাহিমা চৌধুরী, ইউবিআইএনআইজির এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ফরিদা আক্তার এবং জেডএ ক্যাপিটাল অ্যাডভাইজরির ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ শাকিবুল ইসলাম। বাংলাদেশে ব্রিটিশ কাউন্সিলের ডিরেক্টর অব প্রোগ্রামস ডেভিড নক্স আয়োজনে অংশগ্রহণকারীদের সনদ ও ক্রেস্ট প্রদান করেন। তার বক্তব্যে জনমিতিক লভ্যাংশের সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে একটি জলবায়ু-সচেতন যুবপ্রজন্ম গড়ে তোলা এবং পরিবেশবান্ধব ব্যবসায় উদ্যোগ সমূহ আরও উৎসাহিত করার মাধ্যমে বাংলাদেশের ধারাবাহিক আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি নিশ্চিতের প্রয়োজনীয়তা উঠে আসে। বাংলাদেশের নানাবিধ সমস্যার সম্ভাব্য সমাধান উপস্থাপন করায় জুরি প্যানেলের অন্যতম সদস্য ফাহিমা চৌধুরী শীর্ষ ১০টি আইডিয়ার প্রশংসা করেন। এগিয়ের মতো কার্যক্রম কীভাবে তরুণ উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের অভিজ্ঞতাকে আরও সমৃদ্ধ করতে পারে এবং এর মাধ্যমে তারা কীভাবে ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন সুযোগ অনুসন্ধান করতে পারেন – সে প্রসঙ্গে জোর দেন ফাহিমা চৌধুরী। বিওয়াইইআই-এর কো-এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর সৈয়দ মুনতাসির রিদওয়ান প্রান্তিক সমাজের তরুণদের মধ্যে নিহিত অপার সম্ভাবনার উল্লেখ করে বলেন, ‘ব্যবসায় উদ্যোগ এবং উদ্ভাবনীকে কাজে লাগিয়ে তারা তৃণমূল পর্যায়ে অর্থনীতি এবং পরিবেশগত ভারসাম্যহীনতায় পরিবর্তন আনতে পারে। তবে তাদেরকে সহযোগিতা করার জন্য আমাদের একটি পূর্ণাঙ্গ ব্যবস্থার প্রয়োজন।’ ‘এগিয়ে’ ব্রিটিশ কাউন্সিলের ‘বিল্ডিং এজেন্সি ফর ইয়ুথ ইন ক্লাইমেট অ্যাকশন’ কার্যক্রমের একটি অংশ, যা টেকসই জীবিকা নিশ্চিতের লক্ষ্যে তরুণদের দক্ষতা উন্নয়ন এবং জলবায়ুগত ঝুঁকির মুখে থাকা সমাজ ও সম্প্রদায়ের মানুষদের টিকে থাকার সক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বারোপ করে কার্যক্রম পরিচালনা করে।
১৩ মার্চ, ২০২৪

পরিবেশবান্ধব সনদ পেল আরও ২ কারখানা
যুক্তরাষ্ট্রের ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল (ইউএসজিবিসি) থেকে পরিবেশবান্ধব সনদ পেল দেশের আরও দুটি রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক কারখানা। কারখানাগুলো হলো আশুলিয়ার প্রীতি কম্পোজিট টেক্সটাইলস এবং টঙ্গীর ইউনিয়ন স্পোর্টসওয়্যার। সনদ পাওয়ার ৯টি শর্ত পরিপালনের ক্ষেত্রে এ কারখানা দুটি মোট ১১০ নম্বরের মধ্যে যথাক্রমে ৮১ ও ৬৯ নম্বর পেয়ে ‘লিড গোল্ড’ তালিকাকাভুক্ত হয়। এর মধ্য দিয়ে দেশে এখন পর্যন্ত পরিবেশবান্ধব কারখানার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২১১-তে। ইউএসজিবিসির তথ্যমতে, কোনো কারখানা ৮০-এর বেশি পেলে ‘লিড প্লাটিনাম’, ৬০-৭৯ পেলে ‘লিড গোল্ড’, ৫০-৫৯ নম্বর পেলে ‘লিড সিলভার’ এবং ৪০-৪৯ নম্বর পেলে ‘লিড সার্টিফায়েড’ সনদ দেওয়া হয়। অন্যদিকে বিজিএমইএর তথ্য বলছে, তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাতে বর্তমানে লিড সনদ পাওয়া পরিবেশবান্ধব কারখানা বেড়ে হয়েছে ২১১। তার মধ্যে ৮০টিই লিড প্লাটিনাম সনদধারী।
০৮ মার্চ, ২০২৪

‘বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশে বেশি পরিবেশবান্ধব কারখানা রয়েছে’
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড.কামাল উদ্দীন আহমেদ বলেছেন, সারা বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি পরিবেশ বান্ধব গ্রিন কারখানা রয়েছে। রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় পোশাক কারখানা পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতিকে বাঁচিয়ে রাখতে তৈরি পোশাকশিল্প অবদান রাখছে, এটি দেশের গর্ব। যারা এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত সে শ্রমিকরা তাদের সঠিক কর্মপরিবেশ পাচ্ছে কিনা সেটি দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি শ্রমিক সঠিক মজুরি, কল্যাণমূলক ব্যবস্থা, নিরাপত্তা প্রদানসহ বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হয়। কারণ শ্রমিকদের কল্যাণ হলেই এ শিল্প বেঁচে থাকবে। ফতুল্লায়  রপ্তানিমুখী চারটি পোশাক কারখানায় শ্রমিকদের কর্মপরিবেশ পরিদর্শন করেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদসহ একটি প্রতিনিধি দল। এ সময় তারা কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের নানা বিষয়ে খোঁজ খবর নেন। 
১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তিতে হবে সরকারি স্থাপনা : পরিবেশমন্ত্রী
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ও উপাদান ব্যবহার করে সরকারি স্থাপনা নির্মিত হবে। বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ ও কৃষিজমির মূল্যবান মাটির অপচয় বন্ধ করতে সরকার এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। বুধবার (৩১ জানুয়ারি) রাজধানীর খিলগাঁও এর গোড়ান শেখ রাসেল মাঠ সংলগ্ন সামাজিক অনুষ্ঠান কেন্দ্র নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তুর স্থাপনকালে পরিবেশমন্ত্রী এসব কথা বলেন।  তিনি বলেন, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাসহ সরকারের নির্মাণ ও পূর্ত কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, দপ্তরসমূহের নির্মাণের ক্ষেত্রে পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের লক্ষ্যমাত্রা অনুসরণ করে কাজ করবে।  পরিবেশমন্ত্রী বলেন, গোড়ান সামাজিক অনুষ্ঠান কেন্দ্র নির্মাণের ফলে এলাকার মানুষের অনেক মৌলিক চাহিদা পূরণ হবে। এই কেন্দ্রটিতে তারা বিভিন্ন ধরনের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন। এছাড়াও, এই কেন্দ্রটি এলাকার মানুষের জন্য একটি মিলনস্থল হিসেবেও কাজ করবে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নুর তাপস বলেন, এই সামাজিক অনুষ্ঠান কেন্দ্র হবে পরিবেশবান্ধব, অগ্নি ও ভূমিকম্প সহনশীল। এখানে পার্কিং, আন্ডারগ্রাউন্ড ওয়াটার রিজার্ভার, পানির পাম্প, অগ্নি নির্বাপক রুম, কাউন্সিলর রুম, হেল্থ কেয়ার, টয়লেট, ব্যায়ামাগর, গোসলখানা, ভোজ হল, লিফটসহ আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থাকবে।  উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী অফিসার মো. মিজানুর রহমান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনিসুর রহমান, ২, ৩ ও ৪ ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ফারজানা ইয়াসমিন বিপ্লবীসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। পরে পরিবেশমন্ত্রী ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র দুটি গাছের চারা রোপণ করেন। 
৩১ জানুয়ারি, ২০২৪

বিশেষ সাক্ষাৎকারে এম জাকির হোসেন খান / প্রকৃতি ও পরিবেশবান্ধব অবকাঠামো আবশ্যক
এম জাকির হোসেন খান আন্তর্জাতিক জলবায়ু অর্থায়ন বিশেষজ্ঞ এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের প্রধান নির্বাহী। সদ্য শেষ হওয়া কপ-২৮ সম্মেলন, বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও তা মোকাবিলায় করণীয়সহ নানা বিষয়ে কালবেলার সঙ্গে কথা বলেন তিনি। কালবেলা: বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন (কপ-২৮) শেষ হয়েছে। কেমন হলো এবারের সম্মেলন? এম জাকির হোসেন খান: ২৮তম আন্তর্জাতিক জলবায়ু সম্মেলন শেষ হয়েছে। বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনের প্রধান টার্গেটগুলো অর্জনের জন্য আমাদের হাতে সময় খুব বেশি নেই। এই পরিপ্রেক্ষিতে এবারের সম্মেলন ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রধান টার্গেট হলো, বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে নামিয়ে রাখা। সম্প্রতি জাতিসংঘ মহাসচিব বলেছেন, আমরা গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের যুগ থেকে গ্লোবাল বয়েলিংয়ের যুগে প্রবেশ করেছি। অর্থাৎ তাপমাত্রা বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে নিয়ন্ত্রণ রাখা সম্ভব হবে কি না, সেটা প্রশ্নের সম্মুখীন। ১৮৬০ সালের পর গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে প্রথম বিশ্বে এত বেশি তাপমাত্রা দেখা গেছে। সুতরাং প্যারিস চুক্তির আলোকে প্রতিটি স্বাক্ষরকারী দেশ ও প্রধান কার্বন নিঃসরণকারী কোম্পানিদের কার্যকর অবদান নিশ্চিতে সুনির্দিষ্ট জবাবদিহিতা পদ্ধতি থাকা দরকার। যার মাধ্যমে বৈশ্বিকভাবে প্রধান কার্বন নিঃসরণকারী দেশ, তারা কে কতটুকু কার্বন নিঃসরণ এবং তা কী অনুপাতে ২০৩০ সাল নাগাদ কমাবে; ক্ষতিপূরণ হিসেবে জলবায়ু তহবিল কী পরিমাণে প্রদান করবে, সেটা ২০২৪ সালের মধ্যে নির্দিষ্ট করা দরকার। শুধু প্রতিশ্রুতি দিলে হবে না, বরং জলবায়ু তহবিল হিসেবে ক্ষতিপূরণের প্রয়োজনীয় অনুদানভিত্তিক অর্থ কখন প্রদান করা হবে এবং একই সঙ্গে সেই অর্থ কীভাবে, কোথায় কতটুকু ব্যয় করা হবে, সেটা নির্ধারণ করাও জরুরি। বহুজাতিক কোম্পানিগুলো পুরো পৃথিবীতে কার্বন নিঃসরণ কতটুকু কখন কমাবে সেটা স্পষ্ট করার পাশাপাশি কীভাবে স্বচ্ছতার সঙ্গে বাস্তবায়ন করতে হবে। দ্বিতীয়ত গ্লোবাল ক্লাইমেট অ্যাডাপটেশন গোল নির্ধারণ করতে হবে। এটা এমন হওয়া উচিত যাতে পুরো বিশ্বের মানুষের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে। প্যারিস চুক্তিতে বলা হয়েছে, প্রতিটি দেশের অভিযোজন হতে হবে সেই দেশের চাহিদা অনুযায়ী এবং সেটা স্থানীয় জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা, প্রকৃতি ও প্রতিবেশের সুরক্ষাকে প্রাধান্য দিয়ে স্বচ্ছতার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দেশের মানুষের অংশগ্রহণমূলক হতে হবে। নৃতাত্ত্বিক ও আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে অবশ্যই অভিযোজন বা এ সম্পর্কিত সিদ্ধান্ত গ্রহণে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এসব কার্যক্রমে স্থানীয় ইকোসিস্টেমকে মূল্যায়ন করতে হবে। প্রশ্ন হলো, বাস্তবে কোন দেশ কতখানি তা নিশ্চিত করছে, কিংবা যথাযথ ঝুঁকি যাচাই করে কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে কি না, তা নিশ্চিত না করলে দুর্বল বা খারাপ অভিযোজনের কারণে অর্থের অপচয় হবে। জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি দেশ প্রয়োজনীয় অভিযোজন তহবিলের দাবিদার। বাংলাদেশ সরকার এরই মধ্যে জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা তৈরি করেছে, এটা বাস্তবায়ন করতে বাংলাদেশের প্রতিবছর কমপক্ষে ৮.৫ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। যে দেশগুলো অভিযোজন করছে সেই অভিযোজনের জন্য যেরকম তহবিল প্রয়োজন, বাস্তবে তার মাত্র ৫ থেকে ১০ শতাংশ পাচ্ছে, তাও অধিকাংশ ঋণ। অথচ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে উন্নয়নশীল দেশগুলো প্রতিবছর যে ক্ষয়ক্ষতির শিকার হচ্ছে, সেটা রিকভার করতে বছরে কমপক্ষে ১৫০ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। সেখানে জলবায়ু চুক্তির অ্যাডাপটেশন ফান্ডে রয়েছে মাত্র ৩ বিলিয়ন ডলার। সামনে যত দুর্যোগ বাড়বে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও তত বাড়বে। একটা পর্যায়ে অভিযোজন তহবিলের চাহিদা প্রগতিশীল হারে বাড়বে। সুতরাং বৈশ্বিক অভিযোজনের লক্ষ্যমাত্রা বিশেষ করে প্রতিটি পরিবার বা কমিউনিটিতে টেকসই অভিযোজন কতটুকু অর্জিত হলো এবং তা ২০৩০-এর মধ্যে বাস্তবায়নযোগ্য লক্ষ্যমাত্রা, সেটা কপ-২৯-এ সুনির্দিষ্টভাবে আসা উচিত। উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য বছরে কমপক্ষে ১০০ বিলিয়ন ডলার প্রদান করতে হবে। জি২০-ভুক্ত দেশগুলো যদি জীবাশ্ম জ্বালানিবাবদ প্রদত্ত ভর্তুকির মাত্র ১০ শতাংশ কমালে প্রায় বছরে ১৩০ বিলিয়ন ডলার অর্থায়ন জলবায়ু অভিযোজন বা ক্ষয়ক্ষতি কমাতে ব্যয় করা যায়। একই সঙ্গে কার্বন নিঃসরণ কমবে এবং জলবায়ু তহবিলের ঘাটতি পূরণ হবে। বৈশ্বিক জলবায়ু ফান্ড ক্ষতিপূরণ হিসেবে দেশগুলোর জন্য যে অর্থ ধার্য করা হয় তা দেশভিত্তিক না হয়ে ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কার্বন নিঃসরণের হারের ভিত্তিতে ধার্য করা উচিত। শিল্পোন্নত দেশের নেতাদের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয়, যুদ্ধ অর্থায়নের ন্যায় অগ্রাধিকার প্রদান করলেই বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের জীবন ও জীবিকার সুরক্ষা পেতে পারে। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কোন দেশ কতটুকু ক্ষতিগ্রস্ত সেই অনুযায়ী অর্থ বিতরণ করতে হবে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, অ্যাডাপটেশনের অর্থ অনুদানভিত্তিক না দিয়ে ঋণ হিসেবে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু আমরা এটা চাই না। ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে এরই মধ্যে ঋণভারে জর্জরিত, সেটা মাফ করে দিয়ে অনুদান হিসেবে জলবায়ু অর্থায়ন না করলে অদূর ভবিষ্যতে ক্রয়ক্ষমতা কমে বৈশ্বিকভাবে মন্দা ব্যাপক আকারে দেখা দিতে পারে। কালবেলা: বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণ কমানোর ব্যাপারে এবারের জলবায়ু সম্মেলনে তেমন কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কি? এম জাকির হোসেন খান: বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণ কমাতেই হবে। বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণের মাত্রা এখন বিপজ্জনক মাত্রার থেকেও দ্বিগুণ বেশি। এরই মধ্যে বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১.৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেয়েছে। আগামী ২০৩০ সাল নাগাদ তা বৃদ্ধি পেয়ে ২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছলে যেমনটা বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করেছেন, তার ফলে পৃথিবী অবধারিতভাবে ধ্বংস হতে বাধ্য। বর্তমানে যেভাবে ভোগ করছে পৃথিবীর মানুষ তাতে এরকম তিনটি পৃথিবী দরকার, যেটা আদতেই অসম্ভব। সুতরাং আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, আগামী সাত বছরের মধ্যে তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামিয়ে আনতেই হবে। যদি কোনো ফলপ্রসূ পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হয়, তাহলে এটা সম্ভব নয়। ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মানুষ এবং প্রকৃতির সুরক্ষা প্রদানে সামনে শুধু একটাই রাস্তা খোলা। হয়তো জলবায়ু পরিবর্তনের দায়ী দেশগুলো ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে অথবা আমাদের নিজেদের বাঁচার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। পৃথিবীতে যে ঝুঁকির পরিমাণ বাড়ছে, সেটা কমাতে এবং ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর ক্ষতিপূরণ প্রদানে শিল্পোন্নত দেশগুলো সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ না নিলে, উন্নয়নশীল এবং দরিদ্র দেশগুলোর উচিত ধনী দেশগুলোর জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের ওপর সম্মিলিতভাবে দূষণ করারোপ করা। কালবেলা: আমাদের বিদ্যুৎ দরকার এবং তার জন্য আমরা না চাইলেও কয়লা, গ্যাস বা জ্বালানি তেল ব্যবহার করতে বাধ্য হই। এই পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের কী করণীয়? এম জাকির হোসেন: কাদম্বিনী মরিয়া প্রমাণ করিতে হইবে কী যে বিশ খাওয়া ভূল ছিলো, এটা কোনো যুক্তিবাদী দেশগুলোর অবস্থান হতে পারেনা। আমরা সকলেই জানি যে শিল্পবিপ্লবের কারণেই সারা পৃথিবী উত্তপ্ত হয়েছে, যার ফলে উন্নয়নের মডেল ভূল ছিলো এবং সে কারণেই টেকসি উন্নয়ন সামনে এসেছে। উন্নয়নের এই রাস্তাটি সঠিক ছিল না। সেই ভুল রাস্তাটি অবলম্বন করে কেনসামনে এগোতে চাইবো, এটা এক ধরনের আত্মহূতি। সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্টের মূল কথা হলো—প্রকৃতি ও পরিবেশকে সুরক্ষা দিয়ে অবকাঠামোভিত্তিক উন্নয়ন। বন ধ্বংস, নদী দূষণ ও খাল-বিল দখল চালিয়ে তো এনভায়রনমেন্টাল বা ক্লাইমেট জাস্টিস অর্জন হতে পারে না। স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে দূষণ বা প্রকৃতি ও পরিবেশবিরোধী কার্যক্রমের পেছনে শিল্পোন্নত দেশগুলোরও দায় রয়েছে, যেমন বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে চিংড়ি চাষ হয়। সেই চিংড়ির প্রধান ভোক্তা ইউরোপের দেশগুলো। চিংড়ি রপ্তানি করে বছরে মাত্র ৩ হাজার কোটি টাকার বিনিময়ে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের প্রকৃতি ও পরিবেশের বা কৃষির যে ক্ষতি হয়, তার পরিমাণ কত হাজার কোটি টাকা সে হিসাব করতে হবে। আমরা এই অর্থনৈতিক অপরচুনিটি কস্টগুলো হিসাব করি না। আমরা এখন যে জিডিপির ভিত্তিতে উন্নয়নের মাপকাঠি নির্ধারণ করি, এটা টেকসই উন্নয়ন পরিমাপের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ। সুস্থভাবে বাঁচতে হলে আমাদের সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট পাথওয়েতে যেতে হবে। আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে যখন মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়, সেটা সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়নে বা টেকসই জীবিকা অর্জনে তেমন ভূমিকা রাখে না। আমরা যদি নিজেরাই পরিবেশ প্রকৃতি সুরক্ষার শর্তগুলো না মানি তাহলে আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিবেশ ও পরিবেশ সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ পাওয়ার যৌক্তিকতা হারাবে। আমরা যে তহবিল পাই সেটা যদি সঠিকভাবে ব্যবহার না করি বা দুর্নীতি হয় তাহলে সেটা খারাপ অভিযোজনের উদাহরণ হবে, যা বেড়ে গেলে জলবায়ু দুর্যোগজনিত ক্ষয়ক্ষতি বাবদ প্রস্তাবিত অর্থ পাওয়ার যৌক্তিক অবস্থান হারায়। কালবেলা: জলবায়ু দুর্যোগের পরিমাণ বাড়ছে, ক্ষয়ক্ষতির তুলনায় আন্তর্জাতিক অনুদানভিত্তিক তহবিলের বরাদ্দ অনেক কম, এ পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের মতো স্বল্পোন্নত দেশগুলোর কী করণীয়? এম জাকির হোসেন খান: আগে যখন ডিজিটাল প্রযুক্তি ছিল না, স্যাটেলাইট ইমেজ ছিল না তখন যতটা সহজে ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স পাওয়া যেত এখন দিনে দিনে সেটা আরও জটিল প্রক্রিয়ায় ঢুকছে। এখন আমাদেরকে আগে প্রমাণ করতে হবে যে আমরা সত্যিকারার্থে ভুক্তভোগী,  দেশের পরিবেশ প্রকৃতির বিপর্যয়ে আমাদের নিজেদের কোন অবদান নেই, বাস্তবে যা কঠিন। যেমন দক্ষিণাঞ্চলে লবণাক্ততার পরিমাণ কতটুকু, এটা প্রশমনযোগ্য কিনা, কতটুকু প্রাকৃতিক কারণে হয়েছে আর কতটুকু চিংড়ি ঘেরের কারণে নিজেদের সৃষ্টি সেটা প্রমাণ করতে হবে, আন্তর্জাতিকভাবে অর্থ পাওয়ার এখতিয়ার বলবৎ রাখতে হলে।  বাংলাদেশের মতো স্বল্পোন্নত দেশগুলোর মানুষকে সুরক্ষায় সুনির্দিষ্টভাবে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। আমি সর্বশেষ দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক জলবায়ু সম্মেলনে সাউথ এশিয়ান রেসিলিয়েন্স ফান্ডের (সার্ফ) ফ্রেমওয়ার্ক উপস্থাপন করেছি। দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় দুই বিলিয়ন মানুষের জন্য আমাদের নিজস্ব তহবিল ব্যবস্থাপনা দাঁড় করাতে হবে। প্রতিনিয়ত আমাদের এ অঞ্চলে দুর্যোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২৩ সালে সৃষ্টি হয়েছে আটটি ঘূর্ণিঝড়, অর্থাৎ আমাদের এ অঞ্চল আরও বেশি বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। অনিশ্চিত আন্তর্জাতিক অর্থ সহায়তা কখন আসবে তার জন্য তো আমরা বসে থাকতে পারি না। জলবায়ুতাড়িত মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণে অর্থাৎ খাদ্য, বাসস্থান, শিক্ষা, নিরাপদ পানির জন্য যাতে আমরা তাৎক্ষণিক কার্যক্রম গ্রহণ করতে পারি তার জন্য সাউথ এশিয়ান রেসিলিয়েন্স ফান্ড (সার্ফ) দরকার। দক্ষিণ এশিয়ার দুর্যোগের ঝুঁকি মোকাবিলায় সেখানেই এ অর্থ কাজে লাগাতে হবে। বিভিন্নভাবে এই ফান্ড এর অর্থ সংগ্রহ করা যেতে পারে। যেমন- কর্পোরেট সোশ্যাল রেস্পন্সিবিলিটি, কার্বন ট্যাক্স, যাকাত এর পাশাপাশি আমরা দূষণ কর বসাতে পারি। ব্যাক্তিগত অনুদান সহ নানাভাবে অর্থ সংগ্রহ করা যেতে পারে। বাংলাদেশ থেকে যারা দেশের বাইরে অবস্থান করেন অন্তত এক কোটি মানুষের কাছ থেকে বছরে কমপক্ষে ১০০ ডলারের বন্ড দিয়ে এক বিলিয়ন ডলার জলবায়ু ফান্ড তহবিল সংগ্রহ করা সম্ভব। দক্ষিণ এশিয়ার প্রত্যেকটা রাষ্ট্র এই ফান্ড গঠন করতে পারে।  আমাদের যথার্থ পাবলিক ফাইন্যান্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম তৈরি করতে হবে। ঢাকায় বসবাসরত একজন ব্যক্তি তার গ্রামের জন্য কোন উদ্যোগে অর্থ সহায়তা করবেন। এরকম অর্থ সহায়তা সব সময় দেখা যায়। এলাকাভিত্তিক বা গ্রাম ভিত্তিক জলবায়ু রেজিলিয়েন্স এর জন্য তারা  সহায়তা করতে পারেন। তেমনি দিল্লি বা কাঠমুন্ডু তে যারা বসবাস করেন তারাও সেসব দেশের গ্রামাঞ্চলে জলবায়ু ফান্ডে অর্থ প্রদান করতে পারেন, শুধু দরকার বিশ্বাসযোগ্য পাবিলিক ফাইন্যান্স ব্যাবস্থাপনার মাধ্যমে সরকারি-বেসরকারি পার্টনারশীপ পদ্ধতিতে বিনিয়োগ এবং সবুজ উদ্যোক্তার মাধ্যমে পরিবেশ দূষন ও জলবায়ু দুর্যোগের টেকসই সমাধান সম্ভব। বাংলাদেশে যাকাতের পরিমাণ মোট জিডিপির প্রায় তিন-চার শতাংশ। এই অর্থটি এলোমেলোভাবে খরচ হয়। পাবলিক ফান্ড হিসেবে এই অর্থটি আমরা ব্যায় করতে পারিনি। সরাসরি সরকারি ব্যবস্থাপনায় নয় বরং পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ মডেলে যেখানে যেটা প্রয়োজন সেখানেই এই অর্থটি খরচ করা যেতে পারে। যেকোনো ধরনের দুর্যোগ ঝুঁকিতে বা দুর্যোগের কারণে সৃষ্ট স্বাস্থ্য বা দুর্যোগ বা অন্যান্য খাতে আমরা ভর্তুকি-ভিত্তিক বীমা সেবা চালু করতে পারি। সেই ফান্ডের অর্থ যাকাত থেকেও যেতে পারে। অর্থাৎ এখানে এক হাজার টাকা প্রিমিয়াম দিয়ে লক্ষ টাকার চিকিৎসা সেবা প্রদানের ব্যাবস্থা করা যেতে পারে। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় এভাবে প্রত্যেকটা মানুষকে আমরা ঝুঁকির বাইরে নিয়ে আসতে পারি। স্বল্পোন্নত দেশগুলোর প্রয়োজন নিয়ে আলোচনা বেশি হওয়া উচিত, যাতে প্রত্যেকটা দেশ এই ইনোভেশনের সুযোগ গ্রহণ করতে পারে।  কপ-২৮ এ ক্লাইমেট এন্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপ নামে বাংলাদেশে ৮ বিলিয়ন ডলারের ফান্ড তৈরি করা হবে, মূলতঃ আগেই প্রতিশ্রুত তহবিল প্রধান ভূমিকা রাখবে। কিন্তু তহবিল তৈরি করাটাই বড় বিষয় নয়, এর সঠিক ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ। ৭ম পঞ্চবার্ষিকীতে বলা হলেও  এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের কোন জলবায়ু তহবিল কৌশল প্রণ্যন করা হয়নি, জরুরী ভিত্তিতে এটা প্রণয়ন করা উচিত।  কপ-২৮ এ লস এন্ড ড্যামেজ ফাইন্যান্সের কথা বলা হচ্ছে তা নির্দিষ্টভাবে উন্নয়নশীল দেশের অভিযোজন এবং ক্ষয়-ক্ষতি বাবদ প্রতিবছর নির্ধারিত হারে প্রদান করতে হবে। চাহিদাভিত্তিক নয় বরং দেশ ভিত্তিক যে পরিকল্পিত কার্যক্রম অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন দেশগুলোকে অগ্রাধিকার প্রদান করতে হবে। এর বাইরে যে দেশের গভর্ননেন্স  পারফরম্যান্স ভালো থাকবে তারা চাইলেই ঋণ হিসেবে নিতে পারবে। এই ফান্ড থেকে কেনন্দ্রীয়  সরকার সরাসরি নিতে না পারলেও ভালো পারফরমেন্স করা স্থানীয় সরকার নিতে পারে। এনজিও এবং কম্যুনিটিভিত্তিক সংস্থাগুলো তহবিল নিয়ে কম্যুনিটি সবুজ উদ্যোক্তা সৃষ্টির মাধ্যমে টেকসই সহনীয়তা নিশ্চিত করতে পারে। যতক্ষণ না পর্যন্ত আমরা এই বিষয়কে এনসিওর করতে না পারব ততক্ষণ পর্যন্ত ক্লাইমেট ভালনারেবিলিটি কমবে না বরং বিভিন্ন কর্পোরেটদের বিজনেস অপরচুনিটি তৈরি হবে। আমরা যদি সত্যিই মনে করি মানুষের ক্ষয়ক্ষতি কমানো উচিত তাহলে আমাদেরকে এভাবেই এগোতে হবে।  প্রতি কপ সম্মেলনের আগে সরকারের একটি অবস্থানপত্র তৈরি করা হয়। । প্রত্যেক দেশেই কপ শুরু হওয়ার কমপক্ষে দুই মাস আগে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনা করে এই অবস্থানপত্র তৈরি করা হয়। প্রত্যেক দেশ এই অবস্থানপত্র জনগণের সামনে উন্মুক্ত করে এবং পরামর্শ গ্রহণ করে। পরামর্শ গ্রহণ করা জরুরি,কারণ যত বেশি মানুষ মতামত প্রদান করবে জাতীয় অবস্থান তত বেশি সমৃদ্ধ হবে, গণতান্ত্রিক চ্ররচা শক্তিশালী হবে। কিন্তু বাংলাদেশে দেখা যায় জনপরামর্শ গ্রহণে সরকারের নীতিনির্ধারকদের একধরনের অনিহা।  বাংলাদেশের যারা এই অবস্থানপত্র তৈরি করেন তারা এটা মিডিয়াতে বা জনসমক্ষে শেয়ার করেন না। অথচ প্যারিস চুক্তিতে স্পষ্টভাবেই বলা হয়েছে ভুক্তভোগী স্থানীয় জনগণের মতামতকে গ্রহণ ও তাকে প্রাধান্য দিতে হবে। জেন্ডার রেস্পন্সিভ হতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশে সেগুলোর কোনোটিই যথাযথভাবে করা হয় না।  আমরা যখন জলবায়ু তহবিল নিচ্ছি, যখন জলবায়ু অভিযোজন এর প্রকল্প নিচ্ছি তখন চুক্তির প্রত্যেকটা ধারা ইমপ্লিমেন্ট করার বাধ্যবাধকতা আমাদের রয়েছে। প্যারিস চুক্তি মানা আন্তর্জাতিকভাবে যতটুকু বাধ্যতামূলক তার চেয়ে বেশি বাধ্যতামূলক রাষ্ট্রীয়ভাবে। ক্লাইমেট জাস্টিস এর জন্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এই জায়গায় এসে আমরা গুরুত্ব কম দিচ্ছি। নীতিনির্ধারকরা নির্দেশনা দেয়ার পর অধিদপ্তর থেকে উদ্যোগ কম।   যেকোনো ধরনের পরিবেশ দূষণ বা কার্বন নিঃসরণ এর সমাধান হতে হবে ক্রস বাউন্ডারি। অর্থাৎ আন্তঃদেশীয় সমাধান হতে হবে। কিন্তু পানি, বায়ু দূষণের ক্ষেত্রে আমরা এ অঞ্চলের জন্য কোন ক্রস বর্ডার এগ্রিমেন্ট করতে পারিনা। ভারতের গঙ্গা নদীতে যখন দূষণ হয় বাংলাদেশ তার ভুক্তভোগী হয়, জাপান বা চীন যখন কয়লা বিদ্যুত কেন্দ্র তৈরি করে তখন বাংলাদেশের জনগন দূষণের শিকার বা ভুক্তভোগী হলেও  দেশগুলো আর্থিক সুবিধা নিলেও দূষনের দায় দায় নিচ্ছে না। ক্রস বর্ডার সমাধানের সিদ্ধান্ত ছাড়া এককভাবে প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যাবস্থাপনা বিজ্ঞানভিত্তিক বা প্রকৃতির নিয়মবিরুদ্ধ অবস্থান। সুতরাং এলডিসি দেশগুলোকে সীমিত প্রাকৃতিক সম্পদের সমন্বিত ব্যাবহার করে টেকসই অগ্রগতি নিশ্চিতে একটি সুনির্দিষ্ট অবস্থান গ্রহণ করতে হবে যে, ক্রস বর্ডার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যেমন ব্রাজিল দাবি করতে পারে আমাজন জঙ্গল তাদের অংশ তারাই একক সিদ্ধান্ত নেবে। কিন্তু প্ররথিবীর ফুস্ফুস আমাজন বনের কোন ক্ষতি হলে তার নেতিবাচক প্রভাব সারা পৃথিবীর উপরেই পড়বে। চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের বন শুধুমাত্র নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর জন্য না, বরং সমগ্র বাংলাদেশের এবং এই অঞ্চলের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ।  নীতিনির্ধারকরা যখন বলেন জীবাশ্ম জ্বালানি সস্তা‌ তখন তারা এখানে অর্থনীতির কথা এড়িয়ে যান। অপরচুনিটি কস্ট বিচার করলে জীবাশ্ম জ্বালানি সবচেয়ে বেশি খরচ বয়ে নিয়ে আসে। তেমনি অভিযোজন এর ক্ষেত্রেও একই রকম। অভিযোজনের অর্থ সময়মতো না পেয়ে পাঁচ বছর পরে পেলে অর্থনৈতিক ব্যায় বেড়েজলবায়ু সহনশীলতা অনেক বেশি কস্ট বার্ডেন হয়ে যাচ্ছে।  দেখা গেছে দুর্যোগের পরে সারা পৃথিবীতে যেকোনো দেশের ঋণ গ্রহণের হার বেড়ে যায় ১০০%-২০০% পর্যন্ত। সুতরাং লস অ্যান্ড ড্যামেজ ও এডাপটেশন বাবদ অনুদানের অর্থ সঠিক সময়ে দেওয়া না হলে দেশটি আলটিমেটলি ঋণ-ফাদের দিকে আগাবে। একবার এই ঋণ ফাঁদে পড়লে তা থেকে দেশটি আর বেরোতে পারবে না। ফলে আমরা তো সেটা চাচ্ছি না, আমরা চাই জলবায়ু তহবিল দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে জলবায়ু এবং ঋণ উভয় ফাঁদ থেকে বের করতে।  আমরা যদি ব্যক্তিগতভাবে সচেতন না হই, যদি ব্যক্তিগতভাবে কার্বন নিঃসরণ কমানোর ব্যাপারে সচেতন না হই তাহলে অন্যকে বলার নৈতিক অধিকার থাকে না। কপ-২৮ আমাদেরকে পুনরায় সুযোগ এনে দিয়েছিলো - হয়তো আমরা এনার্জি ট্রানজিশনের দিকে যাব, জলবায়ু ন্যায্যতা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় অর্থ দেওয়া হবে এবং একই সময়ে মানুষকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করা হবে। প্যারাডাইম শিফট এর দিকে যেতে হবে অন্যথায় আমরা একটি বৈশ্বিক বিপর্যয়ের দিকে এগুতে থাকবে  আমরা এখন একটি টিপিং পয়েন্টের কাছে রয়েছি। একবার তাতে পৌঁছে গেলে আমরা চাইলেও পৃথিবীর সার্বিক ধ্বংশ থেকে কেউ ফিরতে পারবো না। আমরা যদি যুদ্ধবাজ আর মুনাফাখোরদের কবল থেকে পৃথিবীটাকে সুরক্ষা দিতে পারি তাহলেই পৃথিবী টিকবে এবং এর মানুষ ও প্রকৃতি বাঁচতে পারবে।    
২৫ জানুয়ারি, ২০২৪

পরিবেশবান্ধব গণপরিবহন ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে : পরিবেশমন্ত্রী
পরিবেশবান্ধব মেট্রোরেলে চড়ে পরিবেশ অধিদপ্তর পরিদর্শনে গেলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী। সোমবার, (২২ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টায় তিনি বাংলাদেশ সচিবালয় মেট্রো স্টেশন থেকে মেট্রোতে চড়ে আগারগাঁও মেট্রো স্টেশনে নামেন এবং পরিবেশ অধিদপ্তর কার্যালয়ে যান। মেট্রোরেলে ভ্রমণকালে পরিবেশমন্ত্রী যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং পরিবেশবান্ধব গণপরিবহন ব্যবহারের জন্য জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, পরিবেশ সংরক্ষণে জনসাধারণের অংশগ্রহণ অপরিহার্য। পরিবহন মালিকরা পরিবেশবান্ধব পরিবহন পরিচালনা করলে এবং জনসাধারণ পরিবেশবান্ধব যানবাহন ব্যবহার করলে বায়ুদূষণ পরিস্থিতির উন্নতি হবে। এসময় অন্যদের মধ্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ডক্টর ফারহিনা আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) ইকবাল আব্দুল্লাহ হারুন, অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ) সঞ্জয় কুমার ভৌমিক, অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) ড ফাহমিদা খানমসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।   পরিবেশ অধিদপ্তর পরিদর্শন শেষে তিনি পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড আবদুল হামিদ সহ সদর দপ্তর ও মাঠ পর্যায়ের সকল কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় করেন। এসময় তিনি পরিবেশ সংরক্ষণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের এবং জনগণকে ঝামেলা মুক্তভাবে সেবা প্রদানের জন্য কর্মকর্তদের প্রতি নির্দেশ প্রদান করেন। তিনি বলেন, সকল প্রকার দুর্নীতিমুক্ত থেকে আইন, বিধিবিধান মোতাবেক সরকারি কর্মকাণ্ড সম্পাদন করতে হবে।  
২২ জানুয়ারি, ২০২৪
X