পহেলা বৈশাখ অসাম্প্রদায়িকতার প্রতীক : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, অসাম্প্রদায়িকতা আমাদের জাতির মূল চালিকাশক্তি আর পহেলা বৈশাখ উৎসব অসাম্প্রদায়িকতার প্রতীক। শুক্রবার (১০ মে) সন্ধ্যায় রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ফরেন অফিস স্পাউসেস অ্যাসোসিয়েশনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘বৈশাখী উৎসব ১৪৩১’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন তিনি।  পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র গড়ার লক্ষ্যে তৎকালীন পাকিস্তানের সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রব্যবস্থা ভেঙে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের জন্ম। আর বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হওয়া পহেলা বৈশাখের উৎসব আজ আমাদের অসাম্প্রদায়িকতার মূর্ত প্রতীক। ড. হাছান বলেন, স্বাধীনতাযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে আমাদের প্রথম পরিচয় আমরা বাঙালি, আর দ্বিতীয় পরিচয় আমরা কে কোন ধর্মের। আর বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার মন্ত্র- ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। সে কারণেই আজ বাংলাদেশে ঈদ, পূজা, প্রবারণা পূর্ণিমা সব উৎসবে সকল ধর্মের মানুষ একাত্ম হয়ে যায়। এর আগে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।   মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন রাষ্ট্রদূত হিসেবে ডেভিড স্লেটন মিলের নাম মনোনয়ন দিয়েছেন- এ নিয়ে প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ মনোনয়নকে স্বাগত জানান। নতুন রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। এ সময় সম্প্রতি হোয়াইট হাউসের ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে প্রশ্নোত্তর বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান বলেন, আমাদের দেশে মানবাধিকার অনেক দেশের চেয়ে ভালো। বিশ্বের কোনো দেশেই মানবাধিকার আদর্শ অবস্থানে নেই।  তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে যেভাবে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে পুলিশ দমন করছে, সেটি আমরা টিভির পর্দায় দেখছি। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে নাগরিক আন্দোলনকে কীভাবে পুলিশ দমন করছে, সেটিও আমরা দেখছি। সব দেশেরই উচিত মানবাধিকার উন্নয়নে একযোগে কাজ করা, আমরাও আমাদের উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে মানবাধিকার উন্নয়নে কাজ করতে চাই উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ড. এ কে আবদুল মোমেন ও পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য শাহরিয়ার আলম, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ফরেন অফিস স্পাউসেস অ্যাসোসিয়েশনের (ফোসা) সদস্যরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে ফোসা’র শিল্পীদের মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা উপভোগ করেন।
১০ মে, ২০২৪

৪ দিন পর জবিতে পহেলা বৈশাখ উদযাপন, বন্ধ থাকবে ক্লাস-পরীক্ষা 
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান আগামী বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) উদযাপন করা হবে। এতে ওই দিনে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান উদ্‌যাপন উপলক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বর্ণাঢ্য বর্ষবরণ অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে। এ প্রেক্ষিতে আগামী ১৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ করা হলো। এ ছাড়া অনুষ্ঠান সূচিতে বলা হয়, এদিন সকালে  মঙ্গল শোভাযাত্রা জবি ক্যাম্পাস থেকে শুরু হয়ে পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজার, ভিক্টোরিয়া পার্ক ঘুরে আবার জবি ক্যাম্পাসে শেষ হবে। এরপর একাত্তরের গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি ভাস্কর্য চত্বর সামনে আলোচনা সভা, সংগীত বিভাগের আয়োজনে সংগীতানুষ্ঠান এবং নাট্যকলা বিভাগের আয়োজনে যাত্রাপালা অনুষ্ঠিত হবে। পরে বিকালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, আবৃত্তি সংসদও উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর পরিবেশনা এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ব্যান্ড মিউজিক অ্যাসোসিয়েশনের প্রযোজনায় রাত ৮টা পর্যন্ত ব্যান্ড সংগীত পরিবেশিত হবে। এদিন বর্ষবরণের বর্ণাঢ্য এসব অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে অংশগ্রহণ করতে বলা হয়েছে। উল্লেখ্য, এবারের পহেলা বৈশাখ উদযাপন উপলক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে শুরু করে চারিপাশের দেয়ালে পেইন্টিং করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা। ইউনেস্কোর অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া রিকশাচিত্রকে উপপাদ্য করে এ চিত্রাঙ্কন করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের আঁকা দেয়ালচিত্রে ফুটে উঠেছে ফুল, মাছ, নৌকা, বাঘ, ময়ূরসহ নানা ধরনের চিত্র। 
১৬ এপ্রিল, ২০২৪

চীনে পহেলা বৈশাখ উদযাপন
চীনের নানজিং শহরের নানজিং ইউনিভার্সিটি অব পোস্ট অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশনের (এনজেইউপিটি) বাংলাদেশি কমিউনিটির আয়োজনে পহেলা বৈশাখ- ১৪৩১ উদযাপন হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, দেশীয় ঘরোয়া খেলা, কবিতা আবৃত্তি, বাংলা লোকসংগীত পরিবেশনসহ বাংলাদেশি নানা পদের খাবারের আয়োজন করা হয়। এতে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে নানা পর্বে বিদেশিদের অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে। রোববার (১৪ এপ্রিল) চীনের নানজিং শহরের নানজিং ইউনিভার্সিটি অব পোস্ট অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশনের বাংলাদেশি কমিউনিটির এই আয়োজনে চীন, পাকিস্তান, ভারত, মরক্কো, আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের বিদেশি শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিল। মরক্কোসহ কয়েকটি দেশের শিক্ষার্থীরা বাংলা ভাষায় গান ও নাচে অংশগ্রহণ করেন। এনজেইউপিটির পিএইচডি শিক্ষার্থী নাঈম মণ্ডল অনুষ্ঠানের সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেন। সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন মাস্টার্স শিক্ষার্থী তাজবিদ শ্রিজন। অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ-চায়না ইয়ুথ স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ বি সিদ্দিক, সাবেক সেক্রেটারি খাইরুল ইসলাম, প্রথম আলো বন্ধুসভার সভাপতি আহনাফ আনন, সেক্রেটারি আশরাফুল ইসলাম প্রমুখ। অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ-চায়না ইয়ুথ স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও নানজিং ইউনিভার্সিটির পিএইচডি গবেষক এ বি সিদ্দিক বলেন, ‘দেশীয় সংস্কৃতি সবার মাঝে আমরা ছড়াতে চাই। আমরা যে তা করতে পারছি এর প্রমাণ হলো আজকের অনুষ্ঠানে বিদেশিদের অংশগ্রহণ।’   চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, কবিতা আবৃত্তি ও লোক সংগীতে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণের মাধ্যমে ‘পহেলা বৈশাখ উদযাপন’ অনুষ্ঠানে শেষ হয়।
১৫ এপ্রিল, ২০২৪

ইতালি প্রবাসীদের পহেলা বৈশাখ উদযাপন
ইতালির ভিসেনজা প্রভিন্সের থিয়েনে শহরে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান পহেলা বৈশাখ উদযাপন হয়েছে। থিয়েনে বসবাসরত তরুণরা আয়োজন করে এ উৎসবের। প্রবাসের মাটিতে বেড়ে ওঠা শিশু-কিশোরদের বাংলাদেশের নিজস্ব কৃষ্টি কালচার ও উৎসবের সঙ্গে পরিচিতি ও যুক্ত থাকার জন্যই মূলত এ উৎসবের উদ্দেশ্য। উৎসবের প্রধান আকর্ষণ পান্তা ইলিশ ও ভাবিদের নিজেদের হাতে তৈরি করা নানাবিধ ভর্তা ও পিঠা প্রদর্শন ও পরিবেশন হয় এ অনুষ্ঠানে। পরিবার-পরিজনসহ আগত প্রবাসীরা প্রবাসের মাটিতে উৎসবটিকে খুব প্রাণভরে উপভোগ করেন। এ সময় অতিথিদের মধ্যে কাজী সাত্তার, শাহাদাত হোসেন, রুহুল আমিন মান্না, সোহেল পাটোয়ারী, মশিউর রহমান সুমন, ইব্রাহিম ইবু, হাসান আহমেদ, কবির হোসেন, সাক্ষাৎকারে সবার উদ্দেশে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সুলতান সরকার, হেলাল উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন, মতিউর রহমান, এমদাদ বেপারী, সাদ্দাম হোসেন, হুমায়ুন কবির, রাশেদ ভূঁইয়া, রাহেল, সোহেল রানা, ইমরান শুক্কুর আলম, ইকবাল হোসেন, আব্দুল কাহার, সাকিব, আমির, মহিন প্রমুখ।
১৫ এপ্রিল, ২০২৪

চবিতে বর্ণাঢ্য আয়োজনে পহেলা বৈশাখ বর্ষবরণ উৎসব উদযাপন
‘এই বৈশাখে বৈশ্বিক বৈভবে’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) অনুষ্ঠিত হয়েছে ঐতিহ্যবাহী ‘বর্ষবরণ উৎসব পহেলা বৈশাখ’ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ। রোববার (১৪ এপ্রিল) বাংলা নববর্ষকে উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে উদযাপন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গ্রামবাংলার ইতিহাস ও ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন বর্ণাঢ্য আয়োজনের মাধ্যমে দিনব্যাপী এ বর্ষবরণ উৎসবে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের। কেন্দ্রীয় উদযাপন কমিটির সদস্য হয়ে ছিলেন অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন উপউপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক বেনু কুমার দে ও উপউপাচার্য (প্রশাসনিক) অধ্যাপক ড.  মো. সেকান্দর চৌধুরী। দিনব্যাপী কর্মসূচি বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের শুরুতেই সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মরণ চত্বর থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হয়ে জারুলতলায় এসে শেষ হয়। পরে বেলা ১১টায় জারুলতলায় বৈশাখী মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় সংগীত, বৈশাখের গান ও নৃত্য অনুষ্ঠান। অতঃপর বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। অনুষ্ঠানে উপাচার্য ও উপউপাচার্যরা ‘শুভ নববর্ষ ১৪৩১’ উপলক্ষে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন।  আলোচনা সভায় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আবদুল হক বলেন, নববর্ষের একটাই ভাব সেটা হচ্ছে সার্বজনীনতা। একটি জাতি শিক্ষা, গবেষণা, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক দিক দিয়ে যত বেশি উন্নত সেই জাতি তত বেশি এগিয়ে থাকে। এই বিশ্ববিদ্যালয়কে যদি প্রকৃতার্থেই প্রগতিশীল করতে হয় তাহলে এই সাংস্কৃতিক ধারা বজায় রাখতে হবে।  শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী বলেন, গত বছরের সব অন্যায় অবিচারকে ঝেড়ে ফেলে নতুন বছরে আবার নতুন করে শুরু করব। যাদের জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয় আজ তলানিতে এসে ঠেকেছে তাদের প্রতি সজাগ দৃষ্টিপাত রাখার জন্য অনুরোধ করছি মাননীয় উপাচার্যকে। উপউপাচার্য (প্রশাসনিক) অধ্যাপক ড. মো. সেকান্দর চৌধুরী বলেন, আজকের এই বাংলা নববর্ষ যাদের জন্যে পেয়েছি তাদের প্রাণভরে স্মরণ করছি। পুরাতনের গ্লানি মুছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সুযোগ্য উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের স্যারের নেতৃত্বে এগিয়ে যাব আমরা।  উপউপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক বেনু কুমার দে বলেন, সব ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে আমরা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলার প্রত্যয়ে এগিয়ে যাব। যে যাই বলুক না কেন, এই নববর্ষকে নিয়ে যতোই ব্যাঙ্গাত্মক করুক না কেন আমরা আমাদের অনাগত ভবিষ্যতের কাছে এই সংস্কৃতি ছড়িয়ে দিয়ে যাব। প্রধান অতিথির বক্তব্যে চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এই নববর্ষ উৎসবের সূচনা করেন সাবেক উপাচার্য আবু ইউসুফ স্যার। তিন দিনব্যাপী সেই আয়োজন চলতে থাকে। অনেকেই আমাকে বলেছিলেন ঈদের পরপরই এই উৎসব কীভাবে পালন করবেন? আমি তাদের বলেছিলাম, যদি ঈদের দিনেও নববর্ষ হতো তাহলেও আমরা এই উৎসব পালন করতে দ্বিধাবোধ করতাম না। আমি কথায় বিশ্বাসী না কর্মে বিশ্বাস করি। বিশ্ববিদ্যালয়কে তার আপন গতিতে উন্নতির চূড়ান্ত শিখরে নিয়ে যাব।  আলোচনা শেষে দুপুর ১২টা থেকে ১টা ৩০ পর্যন্ত  গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী বলীখেলা (মুক্ত মঞ্চে), কাবাডি খেলা (বুদ্ধিজীবী চত্বরে) এবং বউচি খেলা (চাকসু প্রাঙ্গণে) অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল ফারুক, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নাসিম হাসান, কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. আলী হোসাইন, কর্মচারী সমিতির সভাপতি সুমন মামুন, অফিসার সমিতির সভাপতি রশীদুল হায়দার জাবেদ।  সঞ্চালনায় ছিলেন ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সুকান্ত ভট্টাচার্য ও অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তন্ময়ী হাসান অয়ন।
১৪ এপ্রিল, ২০২৪

পহেলা বৈশাখ উদযাপনে চবিতে বর্ণাঢ্য আয়োজন
‘এই বৈশাখে বৈশ্বিক বৈভবে’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী ‘বর্ষবরণ উৎসব পহেলা বৈশাখ’ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ। রোববার (১৪ এপ্রিল) বাংলা নববর্ষকে উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গ্রাম বাংলার ইতিহাস ও ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন বর্ণাঢ্য আয়োজনের মাধ্যমে দিনব্যাপী এ বর্ষবরণ উৎসবে সভাপতিত্ব করবেন কেন্দ্রীয় উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের। কেন্দ্রীয় উদযাপন কমিটির সদস্য হিসেবে রয়েছেন অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী। এতে আরও উপস্থিত থাকবেন উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক বেনু কুমার দে, ও উপ-উপাচার্য (প্রশাসনিক) অধ্যাপক ড.  মো. সেকান্দর চৌধুরী। দিনব্যাপী কর্মসূচি অনুষ্ঠানের শুরুতেই সকাল সাড়ে ১০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মরণ চত্বর থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হয়ে জারুলতলায় এসে শেষ হবে। পরে বেলা ১১ টায় জারুলতলায় বৈশাখী মঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় সংগীত, বৈশাখের গান ও নৃত্য অনুষ্ঠান। এ ছাড়া বেলা সাড়ে ১১ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে আলোচনা সভা। অনুষ্ঠানে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যরা ‘শুভ নববর্ষ ১৪৩১’ উপলক্ষে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেবেন।  আলোচনা শেষে দুপুর ১২ টা থেকে সাড়ে ১২ টা পর্যন্ত  গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী বলী খেলা (মুক্ত মঞ্চে), কাবাডি খেলা (বুদ্ধিজীবী চত্বরে) এবং বউচি খেলা (চাকসু প্রাঙ্গনে) অনুষ্ঠিত হবে। দুপুর সাড়ে ১২ টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত থাকবে বিরতি।  বিরতি শেষে বিকাল সাড়ে ৩ টায় জারুলতলার বৈশাখী মঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। সবশেষে বিকেল সাড়ে ৩ টা থেকে ৫ টা পর্যন্ত ‘বে অব বেঙ্গল’ ব্যান্ড দলের মনোজ্ঞ পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হবে।  দিনব্যাপী এ বর্ণাঢ্য আয়োজন বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের সুবিধার্থে রোববার সকাল ৮ টা ৪৫ মিনিটে একটি বাস নিউমার্কেট থেকে এবং অপর একটি বাস একইসময়ে আগ্রাবাদ থেকে ছেড়ে যথাক্রমে ১ ও ২ নং রুট অনুসরণ করে ক্যাম্পাসে পৌঁছবে এবং অনুষ্ঠান শেষে যথারীতি শহরে ফিরে যাবে। সার্বজনীন প্রাণের এ উৎসবে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সবাইকে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
১৪ এপ্রিল, ২০২৪

আজ পহেলা বৈশাখ
‘এসো, এসো, এসো হে বৈশাখ। মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা, অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা।’ বিশ্বকবির কালজয়ী এই গানের সুরে সুরে বাঙালির জীবনে এসে পড়ল আরেকটি পহেলা বৈশাখ; আরেকটি নতুন বছর। বিদায়ী ১৪৩০। আজ পহেলা বৈশাখ। বাংলা বর্ষপঞ্জিতে যুক্ত হয়েছে নতুন বর্ষ ১৪৩১। নতুন বছরে সব ক্লেদ, জীর্ণতা দূর করে নতুন উদ্যমে বাঁচার অনুপ্রেরণা খুঁজবে সবাই। বাংলা নববর্ষ ১৪৩১ জাঁকজমকপূর্ণভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে সরকার। দিনটি সরকারি ছুটির দিন। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে দিনে দিনে প্রসার ঘটেছে বৈশাখী উৎসবের। পৃথিবীর যে প্রান্তেই বাংলা ভাষাভাষী মানুষ থাকুক না কেন সেখানেই তারা পহেলা বৈশাখে নববর্ষ উদ্‌যাপনের উৎসব আয়োজন করছেন। ফলে পহেলা বৈশাখের এই উৎসব হয়ে উঠেছে বাঙালির জাতিসত্তা ও সংস্কৃতি উদ্‌যাপনের এক বিপুল বর্ণাঢ্য মহোৎসব। বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে বরাবরের মতোই রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তারা দেশবাসীকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়ে দেশের শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তার বাণীতে বলেন, ‘বৈশাখ শুধু উৎসবের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে আমাদের আত্মবিকাশ ও বেড়ে ওঠার প্রেরণা। বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশ, আত্মনিয়ন্ত্রণ ও মুক্তিসাধনায় পহেলা বৈশাখ এক অবিনাশী শক্তি। বাংলাদেশের অভ্যুদয় ও গণতান্ত্রিক বিকাশে সংস্কৃতির এই শক্তি রাজনৈতিকতন্ত্রের চেতনাকে দৃঢ় ও বেগবান করে। ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে সবাই মিলে নাচ-গান, শোভাযাত্রা, আনন্দ-উৎসব, হরেক রকম খাবার ও বাহারি সাজে বৈশাখকে বরণ করে নেয় উৎসবপ্রেমী বাঙালি জাতি। নতুন বছরে যাত্রাপালা, পুতুলনাচ, লোকসংগীত, গ্রামীণ খেলাধুলা, মেলাসহ নানাবিধ বর্ণিল আয়োজন মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেয় আনন্দ ও সম্প্রীতির নতুন বার্তা।’ বাংলা নতুন বছর জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ, উগ্রবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নববর্ষ উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাঙালির চিরায়ত ঐতিহ্যে পহেলা বৈশাখ বিশেষ স্থান দখল করে আছে। বাংলা নববর্ষ উদ্‌যাপনের সূচনা হয় মূলত মোগল সম্রাট আকবরের সময় থেকে। কৃষিকাজের সুবিধার্থে সম্রাট আকবর ফসলি সন হিসেবে বাংলা সন গণনার যে সূচনা করেন, তা কালের পরিক্রমায় সমগ্র বাঙালির কাছে অসাম্প্রদায়িক চেতনার স্মারক উৎসবে পরিণত হয়েছে। পহেলা বৈশাখ বাঙালিয়ানার প্রতিচ্ছবি। এই উদ্‌যাপন আমাদের শিকড়ের সন্ধান দেয়, এর মধ্য দিয়ে খুঁজে পাওয়া যায় জাতিসত্তার পরিচয়।’ দিনটি উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে। ছায়ানট ভোরে রমনা বটমূলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে। এছাড়াও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন যথাযোগ্য মর্যাদায় বাংলা নববর্ষ উদযাপন করবে। বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠান আবশ্যিকভাবে জাতীয় সংগীত ও ‘এসো হে বৈশাখ’ গান পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হবে। বাংলা নববর্ষের তাৎপর্য এবং মঙ্গল শোভাযাত্রার ইতিহাস ও ইউনেস্কোর এটিকে বিশ্ব সংস্কৃতির ঐতিহ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি তুলে ধরে এদিন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও বাংলা একাডেমির উদ্যোগে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে। বাংলা নববর্ষে সব কারাগার, হাসপাতাল ও শিশু পরিবারে (এতিমখানা) উন্নতমানের ঐতিহ্যবাহী বাঙালি খাবারের আয়োজন করা হবে। এদিকে কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা মিঠামইনে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ডে নাম লেখানোর প্রত্যয় নিয়ে অষ্টমবারের মতো শুরু হয়েছে ‘আলপনায় বৈশাখ-১৪৩১’ উৎসব। মিঠামইন জিরোপয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরোপয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার সড়কে শুক্রবার (১২ এপ্রিল) বিকাল ৪টায় আলপনা অঙ্কন শুরু হয়। এশিয়াটিক এক্সপেরিয়েনশিয়াল মার্কেটিং লিমিটেড, বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশনস লিমিটেড ও বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগে এ উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ১৫৫৬ সালে কার্যকর হওয়া বাংলা সন প্রথমদিকে পরিচিত ছিল ফসলি সন নামে। পরে তা পরিচিত হয় বঙ্গাব্দ নামে। কৃষিভিত্তিক গ্রামীণ সমাজের সঙ্গে বাংলাবর্ষের ইতিহাস জড়িয়ে থাকলেও এর সঙ্গে রাজনৈতিক ইতিহাসেরও সংযোগ ঘটেছে। পাকিস্তান শাসনামলে বাঙালি জাতীয়তাবাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয় বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের। আর ষাটের দশকের শেষে তা বিশেষ মাত্রা পায় রমনা বটমূলে ছায়ানটের আয়োজনের মাধ্যমে। এ সময় ঢাকায় নাগরিক পর্যায়ে ছায়ানটের উদ্যোগে সীমিত আকারে বর্ষবরণ শুরু হয়। মহান স্বাধীনতার পর ধীরে ধীরে এই উৎসব নাগরিক জীবনে প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করে। পহেলা বৈশাখের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বাঙালির অসাম্প্রদায়িক এবং গণতান্ত্রিক চেতনার বহিঃপ্রকাশ ঘটতে থাকে। কালক্রমে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান এখন শুধু আনন্দ-উল্লাসের উৎসব নয়, এটি বাঙালি সংস্কৃতির একটি শক্তিশালী ধারক-বাহক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। শুধু তাই নয়, উৎসবের পাশাপাশি অপশক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদও এসেছে পহেলা বৈশাখের আয়োজনে। ১৯৮৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে বের হয় প্রথম মঙ্গল শোভাযাত্রা। ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর ইউনেস্কো এ শোভাযাত্রাকে বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মর্যাদা দেয়।
১৪ এপ্রিল, ২০২৪

বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশে পহেলা বৈশাখ এক অবিনাশী শক্তি : রাষ্ট্রপতি
বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশ, আত্মনিয়ন্ত্রণ ও মুক্তিসাধনায় পহেলা বৈশাখ এক অবিনাশী শক্তি বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন। বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে শনিবার (১৩ এপ্রিল) দেওয়া এক বাণীতে এ কথা বলেন তিনি। রাষ্ট্রপতি বলেন, শুভ নববর্ষ-১৪৩১। পহেলা বৈশাখ বাঙালি জাতির জীবনে একটি পরম আনন্দের দিন। আনন্দঘন এ দিনে আমি দেশে ও দেশের বাইরে বসবাসরত সব বাংলাদেশিকে জানাই বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা। রাষ্ট্রপতি বলেন, বৈশাখের আগমনে বেজে ওঠে নতুনের জয়গান। দুঃখ, জরা, ব্যর্থতা ও মলিনতাকে ভুলে সবাই জেগে ওঠে নব আনন্দে, নব উদ্যমে। ফসলি সন হিসেবে মুঘল আমলে যে বর্ষগণনার সূচনা হয়েছিল, সময়ের পরিক্রমায় তা আজ সমগ্র বাঙালির অসাম্প্রদায়িক চেতনার এক স্মারক উৎসবে পরিণত হয়েছে। পহেলা বৈশাখের মাঝে বাঙালি খুঁজে পায় নিজস্ব ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও চেতনার স্বরূপ।  তিনি বলেন, বৈশাখ শুধু উৎসবের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে আমাদের আত্মবিকাশ ও বেড়ে ওঠার প্রেরণা। বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশ, আত্মনিয়ন্ত্রণ ও মুক্তিসাধনায় পহেলা বৈশাখ এক অবিনাশী শক্তি। বাংলাদেশের অভ্যুদয় ও গণতান্ত্রিক বিকাশে সংস্কৃতির এই শক্তি রাজনৈতিকতন্ত্রের চেতনাকে দৃঢ় ও বেগবান করে। মোঃ সাহাবুদ্দিন বলেন, ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে সবাই মিলে নাচ-গান, শোভাযাত্রা, আনন্দ-উৎসব, হরেক রকম খাবার ও বাহারি সাজে বৈশাখকে বরণ করে নেয় উৎসবপ্রেমী বাঙালি জাতি। নতুন বছরে যাত্রাপালা, পুতুলনাচ, লোকসংগীত, গ্রামীণ খেলাধুলা, মেলাসহ নানাবিধ বর্ণিল আয়োজন মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেয় আনন্দ ও সম্প্রীতির নতুন বার্তা।  তিনি বলেন, ২০১৬ সালে ইউনেস্কো কর্তৃক পহেলা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রা বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। জাতীয় সংস্কৃতির এই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি জাতি হিসেবে বাঙালির জন্য পরম গৌরব ও মর্যাদার। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাষ্ট্রদর্শন ও আদর্শের অন্যতম ভিত্তি ছিল দেশীয় সংস্কৃতির বিকাশ ও জাতীয় চেতনার উন্মেষ। সেই চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে বঙ্গবন্ধু কারারুদ্ধ জীবনে সহবন্দিদের নিয়ে নববর্ষ উদযাপন করেছিলেন।  রাষ্ট্রপতি বলেন, পহেলা বৈশাখ আমাদের উদার হতে শিক্ষা দেয় এবং জাতীয়তাবাদে অনুপ্রাণিত হয়ে বিশ্বমানবের সঙ্গে মিশে যাওয়ার শক্তি জোগায়। এই উদারনৈতিক চেতনাকে ধারণ করে বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্রদর্শন, বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার আদর্শ এবং রাষ্ট্রভাষা চেতনার বহ্নিশিখা অন্তরে ধারণ করে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত, সুখী-সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ হোক আজকের দিনে সবার অঙ্গীকার। তিনি আরও বলেন, সব অশুভ ও অসুন্দরের ওপর সত্য ও সুন্দরের জয় হোক। ফেলে আসা বছরের সব শোক-দুঃখ-জরা দূর হোক, নতুন বছর জাতীয় ও ব্যক্তিজীবনে নিয়ে আসুক অনাবিল সুখ ও সমৃদ্ধি- এ প্রত্যাশা করি।
১৩ এপ্রিল, ২০২৪
X