বেড়িবাঁধে ভাঙন, চার ইউনিয়ন প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা
সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার আনুলিয়া ইউনিয়নের বিছট বাজার সংলগ্ন খোলপেটুয়া নদীর দীর্ঘ বেড়িবাঁধে ভাঙন ধরায় চারটি ইউনিয়ন প্লাবিত হওয়ার আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয়দের মধ্যে। রোববার (২১ এপ্রিল) সরেজমিন ঘুরে ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আনুলিয়া ইউনিয়নের বিছট বাজার থেকে হাজরাখালি খেয়াঘাটগামী খোলপেটুয়া নদীর বেড়িবাঁধ দীর্ঘ কয়েক বছর যাবত জরাজীর্ণ হয়ে রিংবাঁধে পরিণত হয়েছে। নদীর প্রবল জোয়ারের চাপ বা জোয়ারের সময় দমকা হাওয়া বা ঝড় বৃষ্টির কারণে যে কোনো মুহূর্তে ভেঙে যেতে পারে জরাজীর্ণ এ বেড়িবাঁধটি। এর ফলে প্লাবিত হতে পারে প্রতাপনগর, আনুলিয়া, খাজরা ও বড়দল ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা। স্থানীয়রা জানান, কয়েক বছর আগে সংস্কারের নামে সাধারণ মানুষের রেকর্ডীয় জমির মধ্য দিয়ে বিকল্প বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়েছিল। এরপর থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় আনুলিয়ার নদী রক্ষাবাঁধ আবারও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। স্থানীয় বিকাশ চন্দ্র সরকার বলেন, বেড়িবাঁধ স্থায়ীভাবে সংস্কার না হওয়ায় প্রতিবছর নদীর প্রবল জোয়ারের পানির আঘাতে নদী রক্ষাবাঁধ ভেঙে রিং বেড়িবাঁধে পরিণত হয়। এলাকা প্লাবিত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে বাধ্য হয়ে সাধারণ মানুষের রেকর্ডীয় সম্পত্তির ওপর দিয়ে বিকল্প বেড়িবাঁধ দিতে হয়েছে। এ সময় তিনি নদীর অধিগ্রহণকৃত সম্পত্তির ওপর দিয়ে স্থায়ী, টেকসই নদী রক্ষাবাঁধ নির্মাণের দাবি জানান। স্থানীয়রা আরও বলেন, আমরা ত্রাণ বা অনুদান চাই না, চাই নদীর টেকসই বেড়িবাঁধ। তা না হলে প্রতিবছর নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে মৎস্য ঘের ও ফসলি জমি নদীর জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়ে একাকার হয়ে যাবে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়বে চার ইউনিয়নের অসহায় সাধারণ মানুষ। সাতক্ষীরা-৩ আসনের এমপির প্রতিনিধি তৌষিকে কাইফু বলেন, খোলপেটুয়া নদীর আদি গতিপথ হারিয়ে বিছট গ্রামের নদী সংলগ্ন কৃষি জমি ভাঙতে শুরু করেছে। বিষয়টি সাতক্ষীরা-৩ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. আফম রুহুল হককে অবহিত করা হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড পৌর বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আশিকুর রহমান বলেন, উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মেহেদী হাসান মিশুককে সঙ্গে নিয়ে ভাঙনকবলিত স্থান পরিদর্শন করা হয়েছে। একই সঙ্গে ভাঙন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। অতি দ্রুতই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মোতাবেক সংস্কার কাজ শুরু করা হবে। এ ছাড়া টেকশই বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য ওয়ার্ল্ড ব্যাংককে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
২১ এপ্রিল, ২০২৪

মক্কায় ভারি বৃষ্টিতে প্লাবিত রাস্তাঘাট (ভিডিও)
সৌদি আরবের বিভিন্ন অঞ্চলে ভারি বৃষ্টি ও বজ্রপাত হয়েছে। দেশটির জাতীয় আবহাওয়া অফিস রোববার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।  খালিজ টাইমস জানায়, অনলাইনে ছড়ানো ভিডিওগুলোতে দেখা গেছে, এ অঞ্চলে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে মক্কার রাস্তাগুলো প্লাবিত হয়েছে ৷ ন্যাশনাল সেন্টার ফর মেটিরিওলজি দেশের বিভিন্ন স্থানে হলুদ সতর্কতা জারি করেছে। দেশটির আবহাওয়া অফিসের মতে, বুধবার পর্যন্ত বৃষ্টি, বজ্রঝড় এবং ধূলিঝড় অব্যাহত থাকবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।  সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জনপ্রিয় ‘আরব স্টর্মস’ নামের একটি পেজে প্রকাশিত বেশকিছু ভিডিওতে দেখা যায়, গাড়িগুলো বৃষ্টিতে প্লাবিত রাস্তা পার হওয়ার চেষ্টা করছে। পার্ক করা গাড়িগুলোর জানালার কাছে পানি পৌঁছে গেছে। আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, কাবার কাছে তীর্থযাত্রীরা প্রচণ্ড বৃষ্টি এবং প্রবল বাতাসের ভেতরে ইবাদত করছেন। এ সময় কিছু লোককে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আশ্রয় খুঁজতে দেখা যায়। এ ছাড়া, সৌদি আরবের আরেক গুরুত্বপূর্ণ শহর জেদ্দায়ও মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত হয়েছে।   
১১ ডিসেম্বর, ২০২৩

টানা বৃষ্টিতে সাতক্ষীরার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের ফলে গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে সাতক্ষীরার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বাড়িঘরে পানি ওঠায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন শহরের নিম্নাঞ্চলে বসবাসকারী অধিবাসীরা। একইসঙ্গে বৃষ্টির কারণে বিপাকে পড়েছে নিম্নআয়ের মানুষ। বিশেষ করে দৈনন্দিন উপার্জনের ওপর নির্ভরশীল দরিদ্র পরিবারগুলো কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। বৃষ্টির কারণে উপার্জন বন্ধ থাকায় স্ত্রী-সন্তান নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তারা। এদিকে বৃষ্টিতে আগাম শীতকালীন সবজির ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা কৃষি বিভাগ। বৃষ্টির পরিমাণ আরও বাড়লে আমন ধানের ক্ষতি হবে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। অন্যদিকে, মানুষের উপস্থিতি কম থাকায় বেচাকেনা কম বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। সাতক্ষীরা পৌরসভাসহ সদর উপজেলার ধুলিহর, ব্রহ্মরাজপুর, লাবসা, ফিংড়ি, বল্লী, ঝাউডাঙ্গাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের অধিকাংশ নিম্নাঞ্চলের বিলগুলোতে রোপা আমন পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। বেশকিছু মাছের ঘের ও পুকুর ভেসে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে বেশ কিছু এলাকার ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে এসব এলাকার মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়তে পারে। সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির যুগ্ম সদস্যসচিব ও জেলা গণফোরামের সভাপতি আলীনুর খান বাবুল জানান, টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে পৌর এলাকার কামালনগর, ইটাগাছা, পলাশপোল, বাঁকাল, খড়িবিলা, বদ্দিপুর কলোনিসহ পৌরসভার বিভিন্ন স্থানের নিম্নাঞ্চল। পানি অপসারণের কোনো পথ না থাকায় বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে পৌরসভার এসব নিম্নাঞ্চল। পানিতে ভেসে গেছে বেশকিছু মাছের ঘের ও পুকুর। নিমজ্জিত হয়েছে নিম্নাঞ্চলের বেশকিছু ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট। তিনি আরও জানান, নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে পানি অপসারণের দাবিতে জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কাছে আহ্বান জানানো হয়েছে। শহরের মুনজিতপুর এলাকার ভ্যানচালক ওয়াজেদ আলী জানান, রোজগার করতে না পারলে সংসার চলে না। গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে ভ্যান নিয়ে শহরে বের হলেও কেউ ভ্যানে উঠেনি। ফলে খালি হাতেই বৃষ্টিতে ভিজে বাড়ি ফিরতে হয়েছে। বৃষ্টি হলে যাত্রীরা কেউ ভ্যানে উঠতে চান না। সকলেই ইজিবাইকে ওঠেন। বৃষ্টির কারণে আমরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছি। শুক্রবার সারাদিন বৃষ্টি না হওয়ায় কিছু টাকা রোজগার করেত পেরেছি। বৃষ্টি আবার হলে সংসার চালানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে। দিন মজুর সাহেব আলী বলেন, প্রতিদিন সকালে সাতক্ষীরা শহরের পাকাপুলের মোড়ে গিয়ে কাজের জন্য বসে থাকি। সেখান থেকে কাজের চুক্তিতে কাজ করি জীবিকা নির্বাহ করি। কিন্তু বৃষ্টির কারণে গত কয়েক দিন ধরে কেউ কাজে নিতে আসছেন না। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছি আমরা। সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তালার নগরঘাটা গ্রামের টমেটো চাষি রবিউল ইসলাম রবি জানান, আমি পাঁচ বিঘা জমিতে টমেটো চাষ করে থাকি। সারা বছর ওই একটা সবজি চাষ করে আমার সংসার চালয়ে কয়েক লাখ টাকা উদ্বৃত্ত থাকে। কিছুদিন আগে থেকে টমেটো তুলে সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর বড়বাজারের আড়তে আনতে শুরু করেছি। ভালো দাম ও পাচ্ছিলাম। কিন্তু গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে টমেটো ক্ষেতের বেশ ক্ষতি হয়েছে। গাছেই অনেক টমেটো পচে যাচ্ছে। ফলে এবার আমাকে লোকসানের মুখে পড়তে হতে পারে বলে ধারণা করছি। সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম জানান, অন্য বছরের তুলনায় এবারও অক্টোবর মাসের শুরতেই বৃষ্টির পরিমাণ বেশি। বৃষ্টির কারণে এবার শীতকালীন ফসল ভালো হবে না। তবে বৃষ্টির পরিমাণ আরও বাড়লে আমন ধানেরও বেশ ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। সাতক্ষীরা জেলা আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা জুলফিকার আলী রিপন বলেন, গত ৪ দিনে সাতক্ষীরায় ৯৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তবে শনিবার (৭ অক্টোবর) থেকে অবস্থার কিছুটা উন্নতি হতে পারে।
০৭ অক্টোবর, ২০২৩

বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপরে কুড়িগ্রামে তিস্তার পানি
উজান থেকে নেমে আসা ঢলে কুড়িগ্রামে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সকাল থেকে তিস্তার পানি প্রবল স্রোতে প্রবাহিত হওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে দুই পাড়ের মানুষ। এদিকে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার রাজারহাট ও উলিপুর উপজেলার তিস্তার অববাহিকার চরাঞ্চলগুলোর ঘরবাড়ি ও ফসলি জমিতে পানি উঠতে শুরু করেছে।  বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) সকালে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, তিস্তার পানি দুপুর পর্যন্ত আরও কিছুটা বৃদ্ধি পেয়ে কমার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে গতকাল তিস্তার দুই পাড়ের মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য মাইকিং করেন রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাবেরী রায়, কিন্তু মানুষজন তাদের ঘরবাড়িতে এখনো অবস্থান করছেন। শুধু চরাঞ্চলের কিছু পরিবার আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন।  তিস্তা নদীর অববাহিকার গড়াইপিয়ার এলাকার নয়ন মিয়া বলেন, ‘গতকাল থেকে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বড় নাকি বন্যা হবে, এই চিন্তায় রাতে ঘুমাতে পারি নাই আমরা।’ স্থানীয় প্রশাসন গতকাল এসে সাবধান থাকতে মাইকিং করে গেছে। তিস্তা নদীর অববাহিকার ঘড়িয়াডাঙ্গা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মেম্বার মামুনুর রশীদ বলেন, তিস্তার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। আমার এলাকার কিছু বাড়িঘরে পানি উঠেছে। তবে এখন পর্যন্ত সবকিছু স্বাভাবিক রয়েছে।  কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় কুড়িগ্রামে ৬০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাবেরী রায় উপজেলার ঘড়িয়ালডাঁঙ্গা ইউনিয়নের খিতাবখাঁ, গতিয়াশাম ও মাঝের চর এবং বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের কালিরহাটে নিজে নৌকাযোগে পরিদর্শন ও হ্যান্ড মাইকিং দিয়ে এলাকাবাসীকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে অবস্থান নেওয়ার নির্দেশ প্রদান করেন এবং স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা সজাগ থাকতে বলেছেন। এ ছাড়া তথ্য অফিসের পক্ষ থেকে নাজিমখাঁন ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমেও একই প্রচার করা হয়। জানা গেছে, ইতোমধ্যে ১৪টি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।  কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্যাহ আল মামুন বলেন, ভারতের উত্তর সিকিমে তিস্তা নদীর চুংথাং হ্রদে পানির পরিমাণ অনেক বেশি বৃদ্ধি পাওয়ায় সেখানকার বাঁধটি খুলে দেওয়া হয়েছে। ফলে ভারতীয় অংশে তিস্তা নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে এবং কুড়িগ্রাম জেলা তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আমরা ক্যালকুলেশন করে দেখেছি তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে যেতে পারে। স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় আমরা মানুষকে সচেতন করছি। কোথাও কোনো সমস্যা হলে পানি উন্নয়ন বোর্ড তা মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে।
০৬ অক্টোবর, ২০২৩

বাড়ছে যমুনার পানি, ফের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা
একদিনের ভারি বর্ষণে যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ ও কাজিপুর পয়েন্টে যথাক্রমে ৩২ ও ৩৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে তৃতীয় দফা যমুনার চরাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। শুক্রবার (৬ অক্টোবর) সকালে সিরাজগঞ্জ হার্ড পয়েন্টে যমুনা নদীর পানির সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ২৪ মিটার। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩২ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১ দশমিক ৬৬ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে (বিপৎসীমা: ১২ দশমিক ৯০ মিটার)। অপরদিকে কাজিপুরের মেঘাই পয়েন্টে বুধবার সকালে পানির সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৮২ মিটার। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৪ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১ দশমিক ৯৮ মিটার নিচ প্রবাহিত হচ্ছে (বিপৎসীমা ১৪.৮০ মিটার)। সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী নাজমুল হোসাইন বলেন, ‘কয়েকদিন ধরে প্রচুর বৃষ্টিপাতের কারণে যমুনা নদীতে ব্যাপকভাবে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আরও দুদিন পানি বাড়বে। তার পরেই বোঝা যাবে চরাঞ্চল প্লাবিত হবে কি না।’
০৬ অক্টোবর, ২০২৩

নওগাঁয় বাঁধ ভেঙ্গে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত
নওগাঁর আত্রাই নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় একের পর এক ভেঙ্গে যাচ্ছে নদীর বাঁধ। গত বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত নতুন করে আত্রাই উপজেলার অন্তত আরো তিনটি স্থানে পাকা সড়ক ও বাধ ভেঙ্গে গেছে। এতে আত্রাই উপজেলা সদরের সাথে পূর্বাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেকটা ভেঙ্গে পড়েছে। এ ছাড়া মাঠের পাকা আউশ এবং রোপনকৃত আমন ধান পানিতে নিমজ্জিত হয়ে গেছে। পানিবন্দি আরও প্রায় ১০-১২ হাজার পরিবার। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষ। আত্রাই উপজেলার কাশিয়াবাড়ী বলরামচক চৌধুরীপাড়া গ্রামের নুরুল ইসলাম জানান, আত্রাই নদীতে গত কয়েক দিনের তুলনায় বুধবার রাতে আরও পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে কাশিয়াবাড়ী-সমস পাড়া পাকা সড়কের বলরামচক শ্মশান ঘাট এলাকায় বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ পাকা সড়ক ভেঙ্গে যায়। এতে সোনাইডাঙ্গা, বাঁকা, কাশিয়াবাড়ীসহ কয়েকটি মাঠের পাকা আউশ ধান এবং রোপনকৃত আমন ধান পানির নিচে নিমজ্জিত হয়েছে। এ ছাড়া শত শত পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।  জগদাস গ্রামের জুয়েল হোসেন বলেন, বুধবার রাত অনুমান সাড়ে ৯টার দিকে আত্রাই-সিংড়া পাকা সড়কের জগদাস বটতলী এবং এর সামান্য অদুরে শিকারপুর নামক স্থানে পানির চাপে এই দুই জায়গায় পাকা সড়ক ভেঙ্গে যায়। সড়ক ভেঙ্গে রাত থেকে ওই এলাকার জগদাস, খঞ্জর, বাকিওলমা, ওলমা, বিপ্রোবোয়ালিয়া ও জয়সারাসহ কয়েকটি মাঠের পাকা আউশ এবং রোপনকৃত আমন ধান পানিতে নিমজ্জিত হয়ে গেছে। তিনি বলেন, তার প্রায় সাত বিঘা জমির পাকা ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া পুকুর ডুবে পুকুর থেকে মাছ ভেসে গেছে।  তিনি আরও বলেন, গত বুধবার সকাল ১০টা থেকে ওই এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার পরিবার। ফলে চরম দুরাবস্থার মধ্যে পড়েছেন তারা। আত্রাই উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জিয়া উদ্দীন আহম্মেদ বলেন, নুতন করে পাকা সড়ক ভেঙ্গে যাওয়ায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে নতুন করে আরও আট হাজারসহ গত দুই দিনে প্রায় ১০-১২ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। কৃষি কর্মকর্তা পলাশচন্দ্র বলেন, বন্যায় দুপুর পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৪৮৫ হেক্টর জমির ধান আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে বেশ কিছু পাকা ধানও রয়েছে।  আত্রাই উপজেলা পল্লীবিদ্যুৎ অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) আব্দুল আলিম বলেন, বন্যার পানির তোরে কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙ্গে গেছে। ফলে বেশ কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। তবে পানির কিছুটা চাপ কমলেই ভাঙ্গা খুঁটি পরিবর্তন করে দ্রুতই বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হবে। আত্রাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্চিতা বিশ্বাস বলেন, বন্যা দুর্গতদের সহায়তা করতে ইতোমধ্যে ১৬ মেট্রিক টন চাল বরাদ্ধ পাওয়া গেছে। চাহিদা অনুযায়ী সহায়তা অব্যাহত থাকবে। নওগাঁ-৬ (আত্রাই-রাণীনগর) আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন হেলাল বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা, উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সেচ্ছাসেবকদের নিয়ে ভেঙ্গে যাওয়া অংশগুলো মেরামত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ ছাড়া বন্যা দুর্গতদের সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। এর আগে বুধবার সকাল সাড়ে ৬টার মধ্যে আত্রাই নদীর নন্দনালী বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যায় এবং আত্রাই-বান্দাইখাড়া পাকা সড়কের নন্দনালী সরদারপাড়া তালতলা এলাকায় পাকা সড়ক পানির তোরে ভেঙ্গে যায়। এতে অন্তত এক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পরে। এ ছাড়া বুধবার গভীর রাতে রাণীনগর উপজেলার নান্দাইবাড়ী হাফেজিয়া নূরাণী মাদ্রাসা এলাকায় নদীর বেড়িবাঁধ এবং এর আধা কিলোমিটার দূরেই দক্ষিণ নান্দাই বাড়ী বেরিবাধ ভেঙ্গে যায়। এ ছাড়া বুধবার বিকেলে আত্রাই-নওগাঁ সড়কের নান্দাইবাড়ী নামকস্থানে পাকা সড়ক ভেঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় সড়ক যোগাযোগ। এতে প্রায় পাঁচ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পরে।  
৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

রাজবাড়ীতে বাড়ছে পদ্মার পানি, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
রাজবাড়ীতে পদ্মায় ফের পানি বাড়তে শুরু করেছে। তবে পানি বাড়তে থাকলেও পদ্মার পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া পানি বাড়ায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধের নিচু ফসলি জমি প্লাবিত হচ্ছে। এতে বিভিন্ন ধরনের সবজি ক্ষেত পানি তলিয়ে নষ্ট হচ্ছে এবং গোয়ালন্দ উপজেলার নদীতীরবর্তী বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পদ্মায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৫ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেলেও ২১ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার নিচে আছে পদ্মা পানি। রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, উজান থেকে নেমে আসা পানির কারণে পদ্মার পানি বাড়ছে। আরো কয়েকদিন পানি বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে তারা ধারণা করছে, উজান থেকে নেমে আসা ঢলে গোয়ালন্দ পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে অল্প কয়েক দিনের মধ্যে বিপৎসীমা অতিক্রম করবে। এদিকে বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাট ব্যবস্থাপক মো. সালাউদ্দিন জানিয়েছেন, পদ্মায় পানি বৃদ্ধির কারণে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে প্রবল স্রোতের সৃষ্টি হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবে চলতে পারছে না ফেরি। এর ফলে আগের তুলনায় দ্বিগুণ সময় লাগছে ফেরি পারাপারে।  লঞ্চঘাট কতৃপক্ষ জানিয়েছে, স্বাভাবিকভাবে লঞ্চ চলাচল করছে কিন্তু আগের তুলনায় এখন নদী পার হতে বেশি সময় লাগছে।  এ ব্যাপারে গোয়ালন্দ উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী ইকবাল সরদার জানান, এখনো বিপৎসীমার নিচে রয়েছে পদ্মার পানি এবং গত ২৪ ঘণ্টায় ৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেলেও বর্তমানে ২১ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে পদ্মার পানি। তবে প্রতিদিনই বাড়ছে এ পদ্মা নদীর পানি।
০৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

সিরাজগঞ্জে যমুনায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত, চরাঞ্চল প্লাবিত
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১২ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার মাত্র ১৭ সেন্টিমিটার নিচে প্রবাহিত হচ্ছে।  সোমবার (২৮ আগস্ট) সিরাজগঞ্জ হার্ড পয়েন্টে যমুনা নদীর পানির সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৭৩ মিটার। ২৪ ঘণ্টায় ১২ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে কাজিপুরের মেঘাই পয়েন্টে পানির সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ দশমিক ৫৫ মিটার। ২৪ ঘণ্টায় ১৮ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ নিয়ে গত দুই মাসে তিন দফায় যমুনার পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হলো।  এদিকে দফায় দফায় পানি বাড়ায় আবাদি জমি প্লাবিত হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন চরের কৃষকরা। কাওয়াকোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জিয়া মুন্সী বলেন, কয়েকদিন আগে চরাঞ্চলের জমি থেকে পানি নেমে গিয়েছিল। কিছু কিছু স্থানে কৃষকরা চাষাবাদের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। কিন্তু আবারও পানি বাড়ায় বিপাকে পড়েছে এখানকার কৃষকরা। এখন শীতকালীন সবজি চাষের মৌসুম। দফায় দফায় পানি বেড়ে চরের আবাদযোগ্য জমিগুলো প্লাবিত হওয়ায় চাষাবাদ করতে পারছে না এ অঞ্চলের কৃষক।  মেছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ মাস্টার বলেন, ইতিমধ্যে চরের আবাদি জমি তলিয়ে বাড়িতেও পানি উঠতে শুরু করেছে। এ নিয়ে তিন দফায় পানি বেড়ে চাষাবাদ ব্যহত হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে এ অঞ্চলের কৃষক।  সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের  উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রনজিত কুমার সরকার জানান, উজানে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে যমুনায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। আরও দু-একদিন বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিপৎসীমা অতিক্রমও করতে পারে। তবে বন্যার আশঙ্কা নেই। দুদিন পর থেকে পানি কমতে শুরু করবে।
২৮ আগস্ট, ২০২৩
X