সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার আনুলিয়া ইউনিয়নের বিছট বাজার সংলগ্ন খোলপেটুয়া নদীর দীর্ঘ বেড়িবাঁধে ভাঙন ধরায় চারটি ইউনিয়ন প্লাবিত হওয়ার আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয়দের মধ্যে।
রোববার (২১ এপ্রিল) সরেজমিন ঘুরে ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আনুলিয়া ইউনিয়নের বিছট বাজার থেকে হাজরাখালি খেয়াঘাটগামী খোলপেটুয়া নদীর বেড়িবাঁধ দীর্ঘ কয়েক বছর যাবত জরাজীর্ণ হয়ে রিংবাঁধে পরিণত হয়েছে। নদীর প্রবল জোয়ারের চাপ বা জোয়ারের সময় দমকা হাওয়া বা ঝড় বৃষ্টির কারণে যে কোনো মুহূর্তে ভেঙে যেতে পারে জরাজীর্ণ এ বেড়িবাঁধটি। এর ফলে প্লাবিত হতে পারে প্রতাপনগর, আনুলিয়া, খাজরা ও বড়দল ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা।
স্থানীয়রা জানান, কয়েক বছর আগে সংস্কারের নামে সাধারণ মানুষের রেকর্ডীয় জমির মধ্য দিয়ে বিকল্প বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়েছিল। এরপর থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় আনুলিয়ার নদী রক্ষাবাঁধ আবারও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
স্থানীয় বিকাশ চন্দ্র সরকার বলেন, বেড়িবাঁধ স্থায়ীভাবে সংস্কার না হওয়ায় প্রতিবছর নদীর প্রবল জোয়ারের পানির আঘাতে নদী রক্ষাবাঁধ ভেঙে রিং বেড়িবাঁধে পরিণত হয়। এলাকা প্লাবিত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে বাধ্য হয়ে সাধারণ মানুষের রেকর্ডীয় সম্পত্তির ওপর দিয়ে বিকল্প বেড়িবাঁধ দিতে হয়েছে। এ সময় তিনি নদীর অধিগ্রহণকৃত সম্পত্তির ওপর দিয়ে স্থায়ী, টেকসই নদী রক্ষাবাঁধ নির্মাণের দাবি জানান।
স্থানীয়রা আরও বলেন, আমরা ত্রাণ বা অনুদান চাই না, চাই নদীর টেকসই বেড়িবাঁধ। তা না হলে প্রতিবছর নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে মৎস্য ঘের ও ফসলি জমি নদীর জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়ে একাকার হয়ে যাবে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়বে চার ইউনিয়নের অসহায় সাধারণ মানুষ।
সাতক্ষীরা-৩ আসনের এমপির প্রতিনিধি তৌষিকে কাইফু বলেন, খোলপেটুয়া নদীর আদি গতিপথ হারিয়ে বিছট গ্রামের নদী সংলগ্ন কৃষি জমি ভাঙতে শুরু করেছে। বিষয়টি সাতক্ষীরা-৩ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. আফম রুহুল হককে অবহিত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড পৌর বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আশিকুর রহমান বলেন, উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মেহেদী হাসান মিশুককে সঙ্গে নিয়ে ভাঙনকবলিত স্থান পরিদর্শন করা হয়েছে। একই সঙ্গে ভাঙন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। অতি দ্রুতই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মোতাবেক সংস্কার কাজ শুরু করা হবে। এ ছাড়া টেকশই বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য ওয়ার্ল্ড ব্যাংককে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
মন্তব্য করুন