ফের বন্দর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হলেন ছালিমা হোসেন
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে বন্দর (নারায়ণগঞ্জ) উপজেলায় টানা দ্বিতীয়বারের মতো মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ছালিমা হোসেন (শান্তা)। তিনি ফুটবল প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ২৯ হাজার ৪৫৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মাহমুদা আক্তার পেয়েছেন ২৬ হাজার ২৮৪ ভোট।  বুধবার (৮ মে) রাতে উপজেলা অডিটরিয়াম থেকে বেসরকারি ফল ঘোষণা করা হয়।  ঘোষিত তথ্য অনুযায়ী, চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছেন মো. মাকসুদ হোসেন।  আনারস প্রতীক নিয়ে তিনি পেয়েছেন ২৯ হাজার ৮৭৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী এম এ রশিদ দোয়াত-কলম প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ১৪ হাজার ৮৩৮ ভোট। বাকিদের মধ্যে চিংড়ি প্রতীক নিয়ে মো. আতাউর রহমান (মুকুল) পেয়েছেন ১২ হাজার ৬২২ ভোট। মো. মাহমুদুল হাসান হেলিকপ্টার প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২৫৫ ভোট।  ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন মো. আলমগীর। তিনি মাইক প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ১৭ হাজার ৬০৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সানাউল্লাহ (সানু) উড়োজাহাজ প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ১৭ হাজার ১ ভোট। বাকি দুই প্রার্থীর মধ্যে শহিদুল ইসলাম (জুয়েল) টিউবওয়েল প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ১৩ হাজার ৪২৮ ভোট। মো. মোশাঈদ রহমান তালা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৮ হাজার ৪০৬ ভোট।  বন্দর উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে ৫৪টি কেন্দ্রের ৩৫৭টি ভোটকক্ষে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলে। মোট ভোটার ছিল ১ লাখ ১৫ হাজার ৫৬৪ জন। নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী নির্বাচনে মোট ভোট পেড়েছে ৬০ হাজার ৩৪০ ভোট। এর মধ্যে বৈধ ভোটের সংখ্যা ৫৬ হাজার ৪৪১ ভোট। বাতিল হয়েছে ৩ হাজার ৮৯৯ ভোট।    
০৮ মে, ২০২৪

চিকিৎসক সংকটে ভুগছে বন্দর উপজেলা হাসপাতাল
প্রাচ্যের ডান্ডি হিসেবে পরিচিত এবং দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে শিল্প বাণিজ্যের দিক দিয়ে এগিয়ে থাকা জেলা নারায়ণগঞ্জের একটি উপজেলা বন্দর। পাঁচটি ইউনিয়ন ও সিটি করপোরেশনের ৭টি ওয়ার্ডের জনগণের চিকিৎসা সেবা প্রদানের লক্ষ্যে  গড়ে ওঠে বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর যাবত চিকিৎসক সংকটে জনগণের কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে পারছে না বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। ৮ জন চিকিৎসকসহ বিভিন্ন পদে লোকবল সংকট ৪১ জন। শনিবার (১৩ জানুয়ারি) সকালে সরেজমিনে বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, রোগীরা চিকিৎসা নেওয়ার জন্য ভিড় করে আছে। কিন্তু কয়েকটি বিভাগের ডাক্তার না থাকায় রোগীরা চিকিৎসা না নিয়েই ক্ষোভ নিয়ে চলে যাচ্ছে। জরুরি বিভাগে একজন চিকিৎসক একের পর এক রোগী দেখছেন। রোগীদের লম্বা সিরিয়াল লেগে থাকায় পাশাপাশি সহকারী বা ওয়ার্ড বয় রোগীদের ইনজেকশন পুস করা ও ড্রেসিংসহ যাবতীয় সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। চিকিৎসক না থাকায় সারা হাসপাতালজুড়ে রোগীদের আহাজারি ও ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। তাছাড়া যে সকল রোগী ভর্তি আছে তারাও সঠিকভাবে সেবা পাচ্ছেন না। চিকিৎসকদের পাশাপাশি নার্স, আয়া ও ওয়ার্ড বয় সংকটের কারণে ভর্তিকৃত রোগীরাও সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে কথা হয় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমাদের এখানে মোট ৮ জন চিকিৎসক ৪ জন নার্স ২১ জন ৩য় শ্রেণির কর্মচারী এবং ১০ জন ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারীর পদ শূন্য রয়েছে। চিকিৎসকদের মধ্যে সহকারী সার্জন ডা. সারমিন সুলতানা মিতা আমাদের হাসপাতালে নিয়োগকৃত। তিনি বেতনও পান এই হাসপাতাল থেকে। কিন্তু তিনি কয়েক বছর যাবত রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্ব পালন করেন। ফলে এই এলাকার রোগীরা সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন। গুরুত্বপূর্ণ বিভাগগুলো যেমন জুনিয়র কনসালটেন্ট অ্যানেস্থেসিয়া, জুনিয়র কনসালটেন্ট ইএনটি, জুনিয়র কনসালটেন্ট অপথালমোলজি, জুনিয়র কনসালটেন্ট অর্থোপেডিক্স, জুনিয়র কনসালটেন্ট কার্ডিওলজি, আরএমও, সহকারী সার্জন ইউএইচসি ও ডেন্টাল সার্জন এই চিকিৎসকের পদগুলো বছরের পর বছর শূন্য রয়েছে। তাছাড়া জুনিয়র কনসালটেন্ট পিডিয়াট্রিক্স ডা. রওশন জাহান তিনিও প্রায় ৩ বছর যাবত বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়োগকৃত থেকেও প্রেষণে নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করছেন। একটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এতটি চিকিৎসক না থাকার পরও যে কয়েকজন চিকিৎসক আছেন তাদের নিয়ে আমি প্রাণপণ চেষ্টা করছি রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য। চিকিৎসা সেবা নিতে আসা জামিলা বেগম জানান, এখানে আমার প্রতিবন্ধী মেয়ে বিউটির ৩ বছরের অসুস্থ সন্তান রকিবকে নিয়ে এসেছি। কিন্তু এখন দেখি এখানে ডাক্তার নেই। বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিসংখ্যান ইউএনসি মো. হাসান জানান, নার্সিং সুপারভাইজার, নার্স, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ল্যাব, পরিসংখ্যানবিদ, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার, স্বাস্থ্য সহকারী, এমএলএসএস, ওয়ার্ড বয়, নিরাপত্তা প্রহরী, আয়া, পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও মালি এই পদগুলো শূন্য অবস্থায় রয়েছে। লোকবলের অভাবে সঠিকভাবে চিকিৎসা সেবা দেওয়া যাচ্ছে না। তবে যেসকল চিকিৎসক দায়িত্ব পালন করছেন তাদের রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। নারায়ণগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডা. মুশিউর রহমান মুঠোফোনে জানান, চিকিৎসক সংকটের বিষয়টি আমি মন্ত্রণালয়ে জানিয়েছি। আমি আশা করি, এ মাসের মধ্যেই স্থানীয় সংসদ সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে চিকিৎসকসহ অন্যান্য পদে লোকবল নিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
১৩ জানুয়ারি, ২০২৪
X