উচ্চ ঝুঁকিতে রাঙামাটি বান্দরবান ও কক্সবাজার
চট্টগ্রাম বিভাগের পার্বত্য অঞ্চলের তিন জেলা ও কক্সবাজারে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ কমছেই না। রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে তিন বছর ধরে ম্যালেরিয়ার রোগী বাড়ছে। বান্দরবানে ২০২৩ সালে রোগীর সংখ্যা আগের বছরের চেয়ে কম হলেও এই সংখ্যা ২০২১ সালের তুলনায় বেশি। কোনো এলাকায় এক বছরে প্রতি হাজার মানুষের মধ্যে একজনের বেশি ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়, তবে তা উচ্চ ঝুঁকির এলাকা হিসেবে চিহ্নিত হয়। এ হিসেবে পার্বত্য তিন জেলার মধ্যে বর্তমানে বান্দরবান ও রাঙামাটি বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। খাগড়াছড়িতে আক্রান্তের সংখ্যা তুলনামূলক কম হলেও এখানে ঝুঁকি কম নয়। এর মধ্যে নতুন করে যোগ হয়েছে কক্সবাজার জেলা। দেশে ম্যালেরিয়া আক্রান্তের ৯৫ শতাংশই পার্বত্য চট্টগ্রামে। ২০৩০ সালের মধ্যে সরকার দেশ থেকে ম্যালেরিয়া নির্মূল করতে চায়। আক্রান্ত বাড়ার প্রবণতা সরকারের লক্ষ্য পূরণে বাধা হয়ে উঠতে পারে বলেই ধারণা সংশ্লিষ্টদের। মাঠপর্যায়ের চিকিৎসক, কীটতত্ত্ববিদ ও গবেষকদের মতে, ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধির পেছনে তিনটি কারণ রয়েছে। এক. পার্বত্য এলাকায় মশা প্রতিরোধে বিতরণ করা কীটনাশক যুক্ত মশারি কাজ করছে না। দুই. পার্বত্য চট্টগ্রামের সীমান্তবর্তী এলাকায় সংক্রমণ বেশি হওয়ার পরও প্রতিবেশী দেশগুলোর দিকে নজরদারির অভাব। তিন. প্রকৃতি, মশা ও মানুষের আচরণে পরিবর্তন। এমন পরিস্থিতিতে দেশে আজ পালিত হবে বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস। চলতি বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হলো—ন্যায়সংগত বিশ্বের জন্য ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই আরও গতিশীল করতে হবে। দিবসটি ২০০১ সালের ২৫ এপ্রিল প্রথম পালন করা হয় আফ্রিকায়। ২০০৭ সালে ওয়ার্ল্ড হেলথ অ্যাসেমব্লির ৬০তম অধিবেশনে বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবসের প্রস্তাবনা করা হয়। এরপর থেকে প্রতি বছর ২৫ এপ্রিল দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। সরকারের ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত দশ বছরে দেশে ২ লাখ ৫৭ হাজার ৮ জনের ম্যালেরিয়া শনাক্ত হয়। তার মধ্যে ১৫৩ জনের মৃত্যু হয়। দেশের ১৩টি জেলা ম্যালেরিয়া প্রবণ। এর মধ্যে উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে রাঙামাটি, বান্দরবান ও কক্সবাজার। দেশের মোট ম্যালেরিয়া সংক্রমণের ৯৫ শতাংশের বেশি এই তিন জেলায়। বাকি ১০ জেলা হলো চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, শেরপুর, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, কুড়িগ্রাম, সিলেট, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজার তুলনামূলকভাবে নিম্ন ঝুঁকির এলাকা হিসেবে চিহ্নিত। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত দেশে ১ হাজার ১৫৮ জন রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে রাঙামাটিতে সর্বোচ্চ ৫০৩ জন। বান্দরবানে ৪৬০ জন এবং কক্সবাজারে ১৩৮ জন রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এ ছাড়া খাগড়াছড়িতে ৪০, চট্টগ্রামে ১৩, হবিগঞ্জে দুই এবং সিলেট ও নেত্রকোনায় একজন করে রোগী শনাক্ত হন। এ সময় কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। পার্বত্য তিন জেলার মধ্যে বান্দরবানে প্রকোপ সবচেয়ে বেশি। ২০২৩ সালে দেশে ১৬ হাজার ৫৬৭ জন রোগী শনাক্ত হন। তার মধ্যে ৬০ দশমিক ৩৭ শতাংশ বান্দরবানের। ২৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ রাঙামাটি, ৭ দশমিক ৬১ শতাংশ কক্সবাজারে, ২ দশমিক ৫২ শতাংশ খাগড়াছড়ির বাসিন্দা। ২০২২ সালে ১৮ হাজার ১৯৫ জনের ম্যালেরিয়া শনাক্ত হয়। তার মধ্যে ৭৫ দশমিক ৯ শতাংশ বান্দরবানের। রাঙামাটির ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ আর কক্সবাজারে ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। এর আগে ২০২১ সালে সারা দেশে ম্যালেরিয়া শনাক্ত হয় ৭ হাজার ২৯৪ জনের। তার মধ্যে বান্দরবানের ৭১ দশমিক ৭ শতাংশ। রাঙামাটির ২১ দশমিক ৩ শতাংশ। কক্সবাজারের ৪ দশমিক ৯ শতাংশ আর খাগড়াছড়ির ১ দশমিক ৪ শতাংশ। ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ রয়েছে—এমন ১৩ জেলার মধ্যে ১২টি জেলার ৩৬ উপজেলার সঙ্গে ভারতের আন্তঃসীমান্ত রয়েছে। আর কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সঙ্গে প্রতিবেশী মিয়ানমারের আন্তঃসীমান্ত রয়েছে। পাহাড়ে ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ কমাতে সেখানে কীটনাশকযুক্ত মশারি দেওয়া হয়। তবে সেই মশারি এখন মশা প্রতিরোধে কাজে আসছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অ্যানোফিলিস জাতীয় মশার কামড়ে ম্যালেরিয়া হয়। দেশে অন্তত ৩৭ প্রজাতির অ্যানোফিলিস মশা রয়েছে। এর মধ্যে সাতটির অধিক প্রজাতি বেশি ম্যালেরিয়া ছড়ায়। ইনক্রিমিনেশন অব ম্যালেরিয়া ভেক্টর মসকিউটোস ইন বাংলাদেশ: সিজনাল প্রিভিলেন্স অব অ্যানোফিলিস মসকিউটোস অ্যান্ড দেয়ার ডিস্ট্রিবিউশন ম্যাপস’ শীর্ষক পিএইচডি গবেষণা করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কবিরুল বাশার। তিনি বলেন, লক্ষ্যমাত্রার নির্ধারিত সময়ে ম্যালেরিয়া নির্মূল খুবই কঠিন কাজ। পার্বত্য অঞ্চলে ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে কীটনাশক যুক্ত যে মশারি বিতরণ করা হয়, তাতে ডেলটামেট্রিন কীটনাশক ব্যবহার করা হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, বেশ কয়েক বছর ধরে এটি মশা প্রতিরোধ করতে পারছে না। কীটনাশক পরীক্ষা করলেও আমরা মশারি পরীক্ষা করিনি। কারণ, কীটনাশকই যেখানে কাজ করছে না, সেখানে মশারির কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। পার্বত্য অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হচ্ছেন—যারা বনে গাছ কাটেন, জুম বাগান রক্ষণাবেক্ষণ করেন এবং সীমান্তে চোরাচালানে জড়িত। তারা বাইরে প্রতিরোধ ব্যবস্থা ছাড়া কাজ ও ঘোরাঘুরি করেন। মশাবিরোধী ক্রিম হাতে-পায়ে ব্যবহার করতে পারেন। এ ছাড়া ভারত, মিয়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যে আন্তঃদেশীয় সমঝোতার মাধ্যমে একযোগে মশক নিধনে কাজ করলে পার্বত্য অঞ্চলের ম্যালেরিয়া ২০৩০ সালের মধ্যে নির্মূল করা সম্ভব। আইইডিসিআর’র সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও কীটতত্ত্ববিদ মুশতাক হোসেন বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ যেসব অঞ্চলে ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব এখনো সক্রিয়, সেখানে মশা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। যতদূর জানি, ওষুধের ঘাটতি নেই। সম্ভবত ওষুধ অকার্যকর হয়ে গেছে।
২৫ এপ্রিল, ২০২৪

মুখর খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি, ম্লান বান্দরবান
ঈদুল ফিতর, বাংলা নববর্ষ আর বৈসাবী উৎসবের টানা ছুটিতে পর্যটকের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে ঝরনা-ঝিরি-হ্রদ খ্যাত পর্যটন জনপদ খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি। ঈদের দিন থেকে এ দুটি জেলার বিভিন্ন পর্যটন স্পটে পর্যটকদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে উল্টো চিত্র দেখা গেছে অন্য পাহাড়ি জনপদ বান্দরবানে। সম্প্রতি সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) ব্যাংকে হামলা ও অস্ত্র লুটের ঘটনার পর পর্যটন খাতে কালো ছায়া পড়েছে। ভয়ে ও আতঙ্কে পর্যটকরা বুকিং বাতিল করছেন। এতে ভরা মৌসুমে লোকসান গুনছেন পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা। খাগড়াছড়ির পার্বত্য জেলা পরিষদ পার্ক (হর্টিকালচার সেন্টার), রিছাং ঝরনা, মায়াবিনী লেক, জলপাহাড়সহ খাগড়াছড়ির সবকটি পর্যটনকেন্দ্র পর্যটকদের পদচারণায় মুখর থাকলেও পর্যটকদের কাছে টানছে নান্দনিকতার ছোঁয়ায় বদলে যাওয়া আলুটিলা পর্যটনকেন্দ্র। খাগড়াছড়ির হোটেল-মোটেলগুলোর প্রায় ৬০-৭০ ভাগ বুকিং হওয়ার কথা জানিয়েছেন গ্রিন ভ্যালির স্বত্বাধিকারী আবু বক্কর। রাঙামাটির বিভিন্ন পয়েন্টেও পর্যটকের ঢল নেমেছে। কটেজ মালিক সমিতি অব সাজেকের সাংগঠনিক সম্পাদক রাহুল চাকমা জন বলেন, আমাদের ১১৬টি ছোট-বড় রিসোর্ট রয়েছে, যার বেশিরভাগই ১০-১৬ তারিখ পর্যন্ত বুকিং রয়েছে। এদিকে বান্দরবান জেলায় পর্যটকদের সবচেয়ে দর্শনীয় স্থানগুলো হচ্ছে রোয়াংছড়ি, রুমা ও থানচি উপজেলা। কেএনএফ ইস্যুতে বিরাজমান পরিস্থিতিতে এই তিন উপজেলায় যৌথবাহিনীর অভিযান পরিচালনা করায় দর্শনীয় স্থানে যাতায়াত করা পর্যটকদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। অধিকাংশ এলাকায় দোকানপাট বন্ধ। যানবাহন চলাচল সীমিত। সন্ধ্যার আগেই লোকজন ঘরবন্দি হয়ে যাচ্ছে। বান্দরবান জেলা শহরের বাসস্ট্যান্ড-সংলগ্ন হিলভিউ হোটেলে সব মৌসুমে পর্যটকের আনাগোনা বেশি। এই হোটেলের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ পারভেজ বলেন, ঈদের পরদিন থেকে প্রায় এক সপ্তাহ আবাসিক হোটেলে পর্যটকের চাপ থাকত। রুমা ও থানচির ঘটনায় এবার অনেকে তিন দিনের বুকিং দিয়ে এক দিন বান্দরবান থেকে চলে গেছে। হোটেল-মোটেল-রিসোর্ট মালিক সমিতির তথ্য অনুযায়ী, জেলা শহর ও শহরতলিতে ৭০টিসহ রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলায় শতাধিক হোটেল-মোটেল ও অবকাশ যাপনকেন্দ্র আছে। পর্যটনের বিরূপ প্রভাবে হোটেল-মোটেলের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রায় ১ হাজার কর্মচারী, ২৫০ জন ট্যুরিস্ট গাইড, ৫ শতাধিক গাড়িচালক, চালকের সহকারী, ১৫০ জন যন্ত্রচালিত নৌকাচালক সরাসরি বেকার হয়ে পড়েছেন। বান্দরবানের নীলাচল পর্যটনকেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা আদিব বড়ুয়া জানান, তেমন পর্যটকের সমাগম ঘটেনি। যারা এসেছেন তার বান্দরবানের স্থানীয় এবং আশপাশের উপজেলা থেকে। হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, গত ১০ থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় শতভাগ বুকিং ছিল। কিন্তু রুমা ও থানচির ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে প্রায় ৮০ ভাগ বুকিং বাতিল করেছে। যার কারণে পর্যটন ব্যবসা তেমন হয়নি। ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে ব্যবসায়ীরা। জেলার পর্যটন সেলে দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হক বলেন, রুমা ও থানচির ঘটনায় মানুষের মাঝে আতঙ্কে ছড়িয়েছে। সেই কারণে গত বছরের চেয়ে পর্যটক কম এসেছে। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে আছে। সবাই বান্দরবান নিরাপদে ঘুরতে পারবেন। তবে যৌথ বাহিনীর অভিযানের কারণে রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলা ভ্রমণের ক্ষেত্রে পর্যটকদের কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হচ্ছে। ওই তিন উপজেলা ভ্রমণে কোনো নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়নি। তবে অন্যান্য উপজেলায় পর্যটকরা স্বাভাবিকভাবে ঘুরতে পারবেন।
১৬ এপ্রিল, ২০২৪

সিদ্ধান্ত থেকে সরে দাঁড়াল বান্দরবান প্রশাসন
বান্দরবানের রুমা উপজেলা ভ্রমণে পর্যটকদের দেওয়া নির্দেশনা স্থগিত করেছে রুমা উপজেলা প্রশাসন। শুক্রবার (১২ এপ্রিল) নির্দেশনা স্থগিত করে পত্রাদেশ জারি করে রুমার ইউএনও মো. দিদারুল আলম (রুটিন দায়িত্ব)। এর আগে মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) রুমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. দিদারুল আলম পর্যটকদের চারটি নির্দেশনা দিয়ে পরিপত্র দেন। জারি হওয়া নির্দেশনায় ছিল, যৌথ বাহিনী অভিযান পরিচালনাকালে কোনো হোটেলে পর্যটকের রুম ভাড়া দেওয়া যাবে না। কোনো পর্যটক পথপ্রদর্শক ও পর্যটকদের কোনো পর্যটন কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া যাবে না। কোনো পর্যটন কেন্দ্রের জিপ গাড়ি নিয়ে যাওয়া যাবে না এবং নৌ পথেও পর্যটকের কোনো পর্যটন কেন্দ্রে না নিয়ে যেতে বলা হয়েছে এই নির্দেশনায়। উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২ এপ্রিল বান্দরবানের রুমা উপজেলার সোনালী ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সশস্ত্র সদস্যরা ব্যাংকের নিয়োজিত গ্রাম পুলিশ ও ব্যারাকে থাকা আনসার সদস্যদের ১৪টি অস্ত্র ও গুলি লুট করে নিয়ে যায়। এছাড়াও ডাকাতির সময় ব্যাংক ম্যানেজার নেজামউদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায় কেএনএফের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। পরে অভিযানে ব্যাংক ম্যানেজারকে উদ্ধার করা হয়। ওই সময় ব্যাংক সংলগ্ন মসজিদে সশস্ত্র অবস্থায় প্রবেশ করে তারাবি নামাজ আদায়রত মুসল্লিদের জিম্মি করে মারধর করা হয়। পরদিন ৩ এপ্রিল দিন-দুপুরে উপজেলা থানচিতে কৃষি ও সোনালী ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ওই সময় ১৭ লাখ ৪৫ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায় সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী কেএনএফের সশস্ত্র সদস্যরা। এ ঘটনায় রুমা ও থানচি থানায় একাধিক মামলা দায়ের করা হয়। এসব ঘটনায় যৌথবাহিনীর অভিযানে এখন পর্যন্ত ১৯ জন নারীসহ ৫৮ জনকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। পরদিন ৩ এপ্রিল দিনদুপুরে উপজেলা থানচিতে কৃষি ও সোনালী ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ওই সময় ১৭ লাখ ৪৫ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায় সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী কেএনএফ' এর সশস্ত্র সদস্যরা।  এ ঘটনায় রুমা ও থানচি থানায় একাধিক মামলা দায়ের করা হয়। পরে যৌথবাহিনীর অভিযানে এখন পর্যন্ত ১৯ জন নারীসহ ৫৮ জনকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। 
১২ এপ্রিল, ২০২৪

বান্দরবান ভ্রমণে প্রশাসনের নতুন বার্তা
বান্দরবানের রুমায় যৌথ অভিযান পরিচালনাকালে রুমা উপজেলার পর্যটন এলাকাসমূহে যে কোনো ধরনের পর্যটক ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। এক্ষেত্রে পর্যটন সংশ্লিষ্টদের ৪টি নির্দেশনা মেনে চলার জন্য বলা হয়েছে।  মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) রুমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. দিদারুল আলমের (রুটিন দায়িত্বে) স্বাক্ষরিত এক পত্রে এ তথ্য জানা যায়। স্বাক্ষরিত নির্দেশনায় আরও বলা হয়, যৌথ বাহিনী অভিযান পরিচালনাকালে কোনো হোটেলে পর্যটকের রুম ভাড়া দেওয়া যাবে না। কোনো ট্যুরিস্ট গাইড ভ্রমণকারীদের কোনো পর্যটন কেন্দ্রে নিয়ে যাবে না। কোনো পর্যটন কেন্দ্রের জিপ গাড়ি নিয়ে যাওয়া যাবে না। এ ছাড়া নৌ-পথেও পর্যটকের কোনো পর্যটন কেন্দ্রে না নিয়ে যেতে বলা হয়েছে এই নির্দেশনায়। শুক্রবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (রুটিন দায়িত্বে) মো. দিদারুল আলম বলেন, জেলা আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও সমন্বয় সংক্রান্ত কোর কমিটির সিদ্ধান্তের আলোকে তিনি এ নির্দেশনা দেন। উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২ এপ্রিল বান্দরবানের রুমা উপজেলার সোনালী ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সশস্ত্র সদস্যরা ব্যাংকের নিয়োজিত গ্রাম পুলিশ ও ব্যারাকে থাকা আনসার সদস্যদের ১৪টি অস্ত্র ও গুলি লুট করে নিয়ে যায়। এছাড়াও ডাকাতির সময় ব্যাংক ম্যানেজার নেজামউদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায় কেএনএফের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। পরে অভিযানে ব্যাংক ম্যানেজারকে উদ্ধার করা হয়। ওই সময় ব্যাংক সংলগ্ন মসজিদে সশস্ত্র অবস্থায় প্রবেশ করে তারাবি নামাজ আদায়রত মুসল্লিদের জিম্মি করে মারধর করা হয়। পরদিন ৩ এপ্রিল দিন-দুপুরে উপজেলা থানচিতে কৃষি ও সোনালী ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ওই সময় ১৭ লাখ ৪৫ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায় সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী কেএনএফের সশস্ত্র সদস্যরা। এ ঘটনায় রুমা ও থানচি থানায় একাধিক মামলা দায়ের করা হয়। এসব ঘটনায় যৌথবাহিনীর অভিযানে এখন পর্যন্ত ১৯ জন নারীসহ ৫৮ জনকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। 
১২ এপ্রিল, ২০২৪

উত্তপ্ত পরিস্থিতি, বান্দরবান যাচ্ছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
পার্বত্য জেলা বান্দরবানের পাহাড়ি অঞ্চলে বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সন্ত্রাস আর লুটপাটের কারণে আতঙ্কে পাহাড়ি জনগোষ্ঠী। সার্বিক পরিস্থিতি পরিদর্শনে যাচ্ছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। শুক্রবার (৫ এপ্রিল) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা মো. শরীফ মাহমুদ অপু জানান, শনিবার (৬ এপ্রিল) ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারযোগে বান্দরবানে যাবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। মন্ত্রী বান্দরবানের রুমাসহ বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করবেন। এ সময় তিনি বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। শনিবার দুপুরে বান্দরবান সার্কিট হাউসে মতবিনিময় শেষে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করবেন তিনি। ঢাকা থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে যাবেন বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী। এদিকে অপহরণের ৪৮ ঘণ্টা পর সোনালী ব্যাংকের বান্দরবানের রুমা শাখার ম্যানেজার নেজাম উদ্দীনকে সম্পূর্ণ সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। র‌্যাব বলছে, ব্যাংক ম্যানেজারকে নিরাপদে উদ্ধারে কোনো ঝুঁকি নেননি সদস্যরা। গোয়েন্দা কার্যক্রমের বিভিন্ন কৌশলের মধ্যে একটি কৌশল অবলম্বন করে তাকে উদ্ধার করা হয়। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রাতে সোনালী ব্যাংকে হামলা চালায় কেএনএফের সন্ত্রাসীরা। তারা স্থানীয় বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশনটি বন্ধ করে দেয়। পরে স্থানীয় চা দোকানে থাকা ব্যাংক ক্যাশিয়ারের কাছ থেকে ভল্টের চাবি ছিনিয়ে নেয়। কিন্তু তারাবি নামাজের জন্য মসজিদে থাকা ব্যাংক ম্যানেজারের কাছ থেকে চাবির অপর গোছাটি না পেয়ে তাকে তুলে নিয়ে যায় কেএনএফ সদস্যরা। বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) বিকেলে তাকে ছাড়তে ১৫-২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে তারা। সন্ধ্যায় র‌্যাব তাকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। সোনালী ব্যাংক ম্যানেজারকে উদ্ধারের পর রাত ৮টার দিকে থানচিতে যৌথবাহিনীর সঙ্গে কেএনএফ সন্ত্রাসীদের ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
০৫ এপ্রিল, ২০২৪

পরপর ব্যাংক ডাকাতিতে থমথমে বান্দরবান
থানচি থানা থেকে ব্যাংক দুটির দূরত্ব ২০০ গজ। উপজেলা পরিষদের দূরত্ব ৩০০ গজ। থানার কাছে দিনদুপুরে ডাকাতির ঘটনায় স্থানীয় লোকজন হতভম্ব। এ ঘটনার পর বান্দরবানের রুমা উপজেলায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। সন্ধ্যার আগেই বাজারের অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। থানচিতেও চলছে একই অবস্থা। এ দুটি উপজেলার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক, উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। যে কোনো সময় সশস্ত্র সংগঠনের সদস্যরা আরও বড় ধরনের হামলা চালাতে পারে—এ আশঙ্কায় সেখানে নিরাপত্তা জোরদার করেছেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। পুলিশ, সেনাবাহিনী ও আনসার বাহিনীর বাড়তি সদস্য বিভিন্ন জায়গা থেকে আনা হয়েছে উপজেলায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সন্ত্রাসীরা ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে ব্যাংকে ঢোকার পরপরই বাজারে বিজিবি ও পুলিশ এসে পড়লে সন্ত্রাসীরা সেখান থেকে পালিয়ে যায়। ঠিক এমন একটি সময়ে এ ঘটনা ঘটল, যখন রুমা উপজেলার সোনালী ব্যাংকে লুটপাটের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছিলেন পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন। তিনি রুমা উপজেলা সদরে প্রবেশের আগ মুহূর্তেই এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় মহম্মদ আরমান বলেন, তিনি সোনালী ব্যাংকে টাকা জমা দিতে যান। বের হওয়ার সময় দেখেন অস্ত্রধারী লোকজন ব্যাংকে ঢুকছে। তারা ক্যাশিয়ারের সামনে থেকে টাকা লুট করে নিয়ে যায়। ঘটনার পর রুমা এবং থানচি উপজেলায় নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতি বাড়িয়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এ দুটি উপজেলায় সোনালী ব্যাংক এবং কৃষি ব্যাংকের লেনদেন বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া বান্দরবানের প্রতিটি ব্যাংক এবং এটিএম বুথে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আপাতত লেনদেন বন্ধ রয়েছে সোনালী ব্যাংকটিতে। এদিকে ঘটনার প্রতিবাদে রুমা উপজেলার সঙ্গে বান্দরবানের সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ম্যানেজারের মুক্তির দাবিতে রুমা উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গতকাল উপজেলা প্রাঙ্গণে মানববন্ধন করেছেন। তারা অবিলম্বে ম্যানেজারকে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। কেএনএফ শান্তি আলোচনা চালালেও তারা রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় ব্যাপক চাঁদাবাজি চালাচ্ছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন। কাঠ ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে ঠিকাদার, সবজি ব্যবসায়ী, পরিবহন ব্যবসায়ী কোনো কিছু বাদ যাচ্ছে না তাদের কাছ থেকে। এ সংগঠনটির তৎপরতায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও এলাকার স্থানীয়রা উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা: মঙ্গলবার রাতে বান্দরবানের রুমা উপজেলার সোনালী ব্যাংকের শাখায় ডাকাতির পাশাপাশি ব্যাংকের পাশে অবস্থিত মসজিদের মুসল্লিদেরও কিছু সময়ের জন্য জিম্মি করে রাখে নতুন সশস্ত্র গোষ্ঠী কেএনএফ সদস্যরা। সে ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বারবারই কেঁপে উঠছিলেন ওই মসজিদের ইমাম নুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘সবাই মনে করেছিলাম জীবনের শেষ দিন। অনেকে তওবা পড়ে নেন।’ ঘটনার আরেক প্রত্যক্ষদর্শী মসজিদের খতমে তারাবির হাফেজ মোহাম্মদ সাঈদ বলেন, ‘কান্না করার মতো অবস্থাও ছিল না। কাউকে টুঁ শব্দ করতে দেয়নি অস্ত্রধারীরা। যতক্ষণ তারা মসজিদে ছিল, সবাই মাথা নিচু করেছিলেন। বেঁচে আছি, এটাই আল্লাহর কাছে শুকরিয়া।’
০৪ এপ্রিল, ২০২৪

বান্দরবান সীমান্তে আতঙ্ক, ৫ স্কুল বন্ধ
মিয়ানমার সীমান্ত থেকে তীব্র গোলাগুলির শব্দ ভেসে আসছে। সেখান থেকে বাংলাদেশে ছুড়ে আসছে গুলি। ইতিমধ্যে এক বাংলাদেশির বাড়িতে মর্টাল শেল আঘাত হেনেছে। অপর ঘটনায় গুলিতে আহত হয়েছেন একজন। এ পরিস্থিতিতে সীমান্তে আতঙ্ক বিরাজ করছে। বন্ধ রাখা হয়েছে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ও তুমব্রু সীমান্তের কাছে পাঁচটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো হলো- তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভাজাবনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাইশারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তুমব্রু পশ্চিমকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ওই এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে স্কুলগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন ।  তিনি বলেন, সীমান্তে বেশ উত্তেজনা বিরাজ করছে। পাঁচটি স্কুল এরই মধ্যে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
০৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

যুব হ্যান্ডবলে বান্দরবান চ্যাম্পিয়ন
ওয়ালটন জাতীয় যুব (অনূর্ধ্ব-১৭) হ্যান্ডবল প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বান্দরবান জেলা। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে দলটি ৩৭-২২ গোলে ঢাকা জেলাকে পরাজিত করে। বিজয়ী দল প্রথমার্ধে ১৬-৮ গোলে এগিয়ে ছিল। বান্দরবান জেলা ক্রীড়া সংস্থার অংটাইমং মার্মা ফাইনালে সর্বোচ্চ ১৪ গোল করেছেন। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে পুরস্কার বিতরণ করেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসির জ্যেষ্ঠ নির্বাহী পরিচালক এফ এম ইকবাল বিন আনোয়ার ডন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হ্যান্ডবল ফেডারেশনের সহসভাপতি মো. হাসান উল্লাহ খান রানা, সহকারী সাধারণ সম্পাদক এস এম খালেকুজ্জামান এবং মো. সালাউদ্দিন আহম্মেদ, কোষাধ্যক্ষ মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, প্রতিযোগিতার সাংগঠনিক কমিটির চেয়ারম্যান মো. নূরুল ইসলাম, প্রতিযোগিতার সাংগঠনিক কমিটির সম্পাদক মো. সেলিম মিয়া বাবুসহ ফেডারেশনের অন্য কর্মকর্তারা।
০২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

বিস্ফোরণের শব্দে প্রকম্পিত বান্দরবান সীমান্ত, সতর্ক বিজিবি
মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘর্ষে গোলাগুলি, হাল্কা ও ভারি অস্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে। বিস্ফোরণের শব্দে কম্পিত হচ্ছে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু, বাইশফারি, ফাত্রাঝিরি, রেজু আমতলি, গর্জবনিয়াসহ সীমান্ত লাগোয়া গ্রাম। এতে স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ফাটল ধরেছে মাটি দিয়ে তৈরি ঘরের দেয়াল। প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না কেউ। বাংলাদেশের ঘুমধুম তুমব্রু  কাছাকাছি মিয়ানমারের হেলিকপ্টার মহড়া দিচ্ছে। সংঘর্ষ বেড়ে যাওয়ায় মিয়ানমার থেকে আবারও বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এরইমধ্যে তুমব্রু, উখিয়া ও টেকনাফ সীমান্তে কয়েকশ রোহিঙ্গা অবস্থান করছে বলে দাবি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। রোহিঙ্গাদের সম্ভাব্য অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিজিবি।  বুধবার (৩১ জানুয়ারি) ঘুমধুম বাইশফাঁড়ি বিওপির বিশেষ টহল দল অবৈধ অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে মিয়ানমারের উপজাতি এক নারীসহ ২ সন্তানকে আটকের ২ ঘণ্টা পর পুশব্যাক করা হয়েছে। ৩৪ বিজিবির অধীনস্থ সীমান্ত ৩৭ নাম্বার পিলার এলাকা থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মগপাড়া ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা থেকে তাদের আটক করে বিজিবি।  বৃহস্পতিবার (১ল ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মিয়ানমারের বেশ কয়েকটি হেলিকপ্টার সীমান্ত এলাকায় মহড়া দিয়েছে। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু বাজার থেকে হেলিকপ্টার উড়তে দেখেছেন সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা। তুমব্রু খোনার পাড়া এলাকার বাসিন্দারা জানান, মিয়ানমারের মংডু ও বলিবাজার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশের সীমানার কাছাকাছি অবস্থান করছে রোহিঙ্গারা। আবার কিছু রোহিঙ্গা ডিঙি নৌকা করে নাফ নদীতে অবস্থান করছে। মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি) রোহিঙ্গাদের কোনো বাধা দিচ্ছে না। এতে বাংলাদেশ সীমান্তে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, বেশ কয়েকদিন ধরে মিয়ানমারে আবারও উত্তেজনা শুরু হয়েছে। প্রতিদিন গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে সীমান্তের কাছাকাছি বসবাস করা মানুষরা। এরইমধ্যে অনেক মানুষ ঘর ছেড়েছে। মিয়ানমারে উত্তেজনা শুরু হলে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ নিয়ে শঙ্কা থাকে। শুনেছি কিছু রোহিঙ্গা সীমান্তের কাছাকাছি আছে। বিষয়টি আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি।  নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু কোনারপাড়া এলাকার বাসিন্দা জলাল জানান, গত রোববার দুপুর ১টার পর তুমব্রুর কোণারপাড়া, ভাজাবনিয়া এবং তুমব্রু বাজার থেকে ওপারে হেলিকপ্টার মহড়া দিতে দেখা গেছে। অন্তত ২৫ মিনিটেরও বেশি সময় হেলিকপ্টার চক্কর দেয়। এ সময় গোলাগুলির শব্দও শোনা গেছে। তার আগে গত শনিবারে ২টি মর্টার শেল তুমব্রু পশ্চিম কূলের অধিবাসী আবদুর রহিম প্রকাশ বাহাদুল্লাহর বাড়ির পাশে এসে পড়ে। এতে পুরো এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।  ৩৪ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গাদের সম্ভাব্য অনুপ্রবেশ নিয়ে সতর্ক অবস্থানে আছে বিজিবি। সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। একজন রোহিঙ্গাকেও প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। আমরা সবসময় সজাগ আছি।  নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, সীমান্তের কাছাকাছি মিয়ানমারের ওপারে গোলাগুলি হচ্ছে। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এটি মিয়ানমারের অভ্যন্তরের ঘটনা। রোহিঙ্গাদের সম্ভাব্য অনুপ্রবেশ নিয়ে বিজিবি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
০১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

ওয়ালটন জাতীয় যুব হ্যান্ডবলে চ্যাম্পিয়ন বান্দরবান
‘ওয়ালটন অনূর্ধ্ব-১৭ জাতীয় যুব হ্যান্ডবল প্রতিযোগিতা-২০২৪’ এ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বান্দরবান জেলা ক্রীড়া সংস্থা। রানার্স আপ হয়েছে ঢাকা জেলা ক্রীড়া সংস্থা। বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর পল্টনের শহীদ (ক্যাপ্টেন) এম. মনসুর আলী জাতীয় হ্যান্ডবল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে বান্দরবান জেলা ক্রীড়া সংস্থা ৩৭-২২ গোলে ঢাকা জেলা ক্রীড়া সংস্থাকে পরাজিত করে। ওয়ালটন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, বিজয়ী দল প্রথমার্ধে ১৬-০৮ গোলে এগিয়ে ছিল। বান্দরবানের অংটাইমং মার্মা ফাইনাল খেলায় সর্বোচ্চ ১৪টি গোল করেন এবং প্রতিযোগিতার সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন। প্রতিযোগিতার চ্যাম্পিয়ন, রানার্স আপ ও তৃতীয় হওয়া দলকে ট্রফি ও মেডেল দেওয়া হয়। এ ছাড়া পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান ওয়ালটনের পক্ষ থেকে পুরস্কৃত করা হয়। সেরা খেলোয়াড়ের হাতেও পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। ফাইনাল শেষে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে পুরস্কার বিতরণ করেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের যুগ্ম সচিব মো. আমিনুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসির সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর এফএম ইকবাল বিন আনোয়ার (ডন)। এ সময় বাংলাদেশ হ্যান্ডবল ফেডারেশনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পাঁচ দিনব্যাপী জাতীয় যুব হ্যান্ডবল প্রতিযোগিতার এবারের আসরে মোট ৬টি জেলার যুব দল অংশ নেয়। দলগুলোর মধ্যে ছিল- ঢাকা জেলা ক্রীড়া সংস্থা, বান্দরবান জেলা ক্রীড়া সংস্থা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ক্রীড়া সংস্থা, চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থা, পঞ্চগড় জেলা ক্রীড়া সংস্থা ও কুষ্টিয়া জেলা ক্রীড়া সংস্থা। ছয়টি দলকে নিয়ে লিগ পদ্ধতিতে খেলা অনুষ্ঠিত হয়। পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষে থাকা দুটি দল ঢাকা ও বান্দরবান সরাসরি ফাইনাল খেলে। এই প্রতিযোগিতার সহযোগিতায় ছিল জনপ্রিয় ব্র্যান্ড মার্সেল এবং অনলাইন পার্টনার হিসেবে ছিল রাইজিংবিডি ডটকম। 
০১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
X