ফরিদপুরে ট্রাক-বাইক সংঘর্ষে বাবা ছেলেসহ নিহত ৩
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় ট্রাক ও মোটরসাইকেল সংঘর্ষে বাবা-ছেলেসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন কাশেম শিকদার (৪০), তার ভাই নাজমুল শিকদার (৩৭) ও তার ছেলে মোরসালিন (৮)। নিহতদের বাড়ি গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার কোয়ালদিয়া গ্রামে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল বাকি। তিনি বলেন, শনিবার ভাঙ্গা থেকে মোটরসাইকেলে বাবা-ছেলে ও তার ভাই ফরিদপুর যাচ্ছিল। পথে ভাঙ্গা উপজেলার হামিরদীতে ট্রাকের সঙ্গে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে মোরসালিনের মৃত্যু হয়। পরে আহত কাশেম ও নাজমুলকে ভাঙ্গা থেকে ফরিদপুর মেডিকেলে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। অন্যদিকে, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে জেলার কৈডুবি এলাকায় ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়কে একটি ইজিবাইককে অজ্ঞাত একটি গাড়ি ধাক্কা দেয়। এতে ইজিবাইকের যাত্রী ভাঙ্গা কেএম কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী শ্রাবন্তী (১৭) আহত হয়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত শ্রাবন্তী ভাঙ্গা উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের খামিনারবাগের শাহাদত মোল্লার মেয়ে।
১৭ ঘণ্টা আগে

মাছ বিক্রি করে এসে ছেলে দেখল বাবা নেই
বাবা-ছেলে মিলে মাছ ধরে তা বিক্রি করতে গিয়েছিল ছেলে। পরে ফিরে দেখে তার বাবা নেই। অনেক খোঁজাখুঁজি করে পরদিন জাল টানলে নদী থেকে তার বাবার মরদেহ পাওয়া যায়। শুক্রবার (১০ মে) সকালে নওগাঁর রাণীনগরে নদীর দহ (গভীরতম স্থান) থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মাছ ধরতে গিয়ে পানিতে ডুবে মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম আনছার আলী (৬৯)। তিনি নওগাঁ সদর উপজেলার দারিয়াপুর গ্রামের মৃত মহর আলীর ছেলে। পেশায় তিনি জেলে ছিলেন। মাছ বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন।  স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ২-৩ দিন ধরে জেলে আনছার ও তার ছেলে ছোট যমুনা নদীর আতাইকুলা এলাকায় দয়া পালের দহে মাছ ধরছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবারও বাবা-ছেলে মাছ ধরছিলেন। সন্ধ্যা ৭টার দিকে আনছারের ছেলে মাছ বিক্রির জন্য বেতগাড়ি বাজারে যান। আর আনছার দহেই ছিলেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে আনছারের জন্য খাবার নিয়ে যায় তার ছেলে। এ সময় বাবাকে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। একপর্যায়ে শুক্রবার সকালে ওই দহের পানিতে জাল টানলে জেলে আনছারের মৃতদেহ পাওয়া যায়। রাণীনগর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মেহেদী মাসুদ বলেন, ওই জেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। নিহতের পরিবার দাবি করেছেন আনছার দীর্ঘদিন ধরে মৃগী রোগে ভুগছিলেন এবং নদীর দহের পানিতে ডুবে তিনি মারা গেছেন। তাই পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় লাশ দাফনের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
১০ মে, ২০২৪

আমিরাতে ড্রাইভারের ভুলে শিশুর মৃত্যু, চালককে ক্ষমা বাংলাদেশি বাবার
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে ড্রাইভারের ভুলে গাড়িতে আটকা পড়ে এক বাংলাদেশি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (৬ মে) আরব আমিরাতের শারজাহতে এ ঘটনা ঘটে। সাত বছর বয়সী শিশুটি স্কুলে যাওয়ার জন্য গাড়িতে উঠেছিল। তবে এ ঘটনায় চালককে ক্ষমা করে দিয়েছেন শিশুটির বাবা।  মঙ্গলবার (৭ মে) মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ড্রাইভারের খেয়ালের ভুলে একটি শিশু স্কুলে যাওয়ার গাড়িতে আটকা পড়ে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা গেছে।  পুলিশ জানিয়েছে, আল শাহবা এলাকায় গাড়ির ভেতরে একটি শিশু মারা গেছে বলে তারা একটি রিপোর্ট পায়। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছে তারা।  গালফ নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিশুটির বাবা-মা তার সন্তানদের স্কুলে নিয়ে যাওয়ার জন্য একজন মহিলা চালককে চুক্তিবদ্ধ করেছিলেন। প্রতিদিনের মতো সেদিনও তারা স্কুলের জন্য রওনা হয়। কিন্তু স্কুলে পৌঁছালে ৭ বছরের শিশুটি ছাড়া সবাই গাড়ি থেকে নেমে পড়ে।  চালক গাড়িটি স্কুলের পাশে পার্ক করেন এবং ভেতরে কেউ রয়ে গেছে কি না সেটা খেয়াল না করেই গাড়ি লক করে দেন।  স্কুলের ছুটির সময় চালক যখন গাড়িতে ফিরে আসেন তিনি শিশুটিকে গাড়ির ভেতরে অচেতন অবস্থায় দেখতে পান। শিশুটিকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে।  গালফ নিউজ বলছে, ঘটনাটির তদন্ত করছে ওয়াসিত থানা পুলিশ। পুলিশ বলেছে, ছেলেটির বাবার ‘ক্ষমা এবং ছেলের মৃত্যুর কারণ হিসেবে তাকে ড্রাইভারকে অভিযুক্ত করতে না চাওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি; তবে নিয়মমাফিক ড্রাইভারকে অন্য কোথাও ভ্রমণে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। ঘটনাটির পর শিশুদের স্কুলে আনা-নেওয়ার জন্য লাইসেন্সবিহীন ড্রাইভারদের চুক্তিবদ্ধ করার বিপদ সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সতর্ক করেছে শারজাহ পুলিশ জেনারেল কমান্ড। নিরাপত্তা পদ্ধতি সম্পর্কে এই ধরনের চালকদের অজ্ঞতার কারণে এগুলো শিশুদের জীবনের জন্য গুরুতর ঝুঁকি তৈরি করে বলে সতর্ক করেছে পুলিশ।  পরিবর্তে শিশুদের পরিবহনের জন্য নির্দিষ্ট স্কুল বাসগুলো ব্যবহার করতে অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে। কারণ এই ধরনের বাসগুলো শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ ও সুরক্ষিত এবং কর্তৃপক্ষ এসব বাসগুলোর নিরাপত্তার বিষয়ে সর্বদা খেয়াল রাখে।   
০৮ মে, ২০২৪

মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঠিক আগে ছেলের খুনিকে ক্ষমা করলেন বাবা
ছেলেকে হত্যার জন্য বিচারপ্রর্থী ছিলেন বাবা। খুনির সাজার রায়ও ঘোষণা হয়েছিল আদালতে। কিন্তু মৃত্যুদণ্ডের সেই রায় কার্যকর করার ঠিক আগেই নিজের সন্তানের হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দিয়েছেন এক ব্যক্তি। ঘটনাটি ঘটেছে সৌদি আরবে। সেখানে হত্যার শাস্তি হত্যার মাধ্যমেই দেওয়া হয়।  শোকাহত পিতার মহানুভবতার ঘটনাটি সম্প্রতি গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছে। খুনের অপরাধে এক তরুণের মৃত্যুদণ্ড হতে দেখে খারাপ লাগে ছেলেহারা বাবার। তাই নিজের সন্তানের হত্যাকারীকেই জীবন ভিক্ষা দেন তিনি।  মঙ্গলবার (৭ মে) গালফ নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, আল হুমাইদি আল হারবি নামের ওই বাবা হঠাৎ করে দণ্ড কার্যকরের স্থানে যান। সেখানে গিয়ে ঘোষণা দেন ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দিয়েছেন তিনি। তার এমন উদারতা দেখে অবাক হয়েছেন উপস্থিত কর্মকর্তারা।  ওই হত্যাকারীর দণ্ড কার্যকরের প্রস্তুতি নেওয়ার আগে আল হুমাইদি আল হারবির কাছে একাধিকবার গিয়েছিলেন সরকারি কর্মকর্তারা। কিন্তু ওই সময় তিনি ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করতে চাননি। তবে পরে নিজের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। ক্ষমা ঘোষণার পর, তরুণ অপরাধীকে মৃত্যুদণ্ডের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য আল হারবির চারপাশে জড়ো হয়ে উপস্থিত জনতা তার সহানুভূতিশীল কাজের জন্য প্রশংসা এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।  আল হারবির এই পদক্ষেপ সামাজিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোতে ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করে। ছেলের হত্যারকারীকে ক্ষমা করা ওই বাবার এমন উদারতার সাধারণ মানুষের হৃদয় ছুয়ে যায়। তারা এটিকে ক্ষমার একটি অন্যান্য উদাহরণ হিসেবে অভিহিত করেছেন।  উল্লেখ্য, সৌদি আরবে হত্যাকাণ্ডের সর্বোচ্চ শাস্তি হলো মৃত্যুদণ্ড। দেশটিতে শিরশ্ছেদের মাধ্যমে দণ্ড কার্যকর করা হয়। তবে দণ্ড কার্যকরের আগে হত্যার শিকার হওয়া ব্যক্তির পরিবারের কাছে হত্যাকারীর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা হয়। পরিবার ক্ষমা করলে মৃত্যুদণ্ড রহিত করা হয়।  
০৭ মে, ২০২৪

সুজনকে পিটিয়ে হত্যা ঘটনায় বাবা ও ভাই গ্রেপ্তার
ঝালকাঠিতে পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরে সুজন নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বাবা ও ছোট ভাইকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। শুক্রবার (৩ মে) দুপুরে রাজধানী ঢাকার কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে নিহতের ছোট ভাইকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে বাবাকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। গ্রেপ্তার দুজন হলেন নিহতের ছোট ভাই প্রধান আসামি স্বপন তালুকদার ও দ্বিতীয় আসামি বাবা আফজাল তালুকদার। শনিবার (৪ মে) বরিশাল র‌্যাব-৮ এর উপপরিচালক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মুহতাসিম কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ঝালকাঠি সদর থানায় মামলা হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অভিযান চালিয়ে তাদের দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তাদের দুজনকে ঝালকাঠি সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এজাহার সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) ঝালকাঠি সদর উপজেলার কীর্তিপাশা ইউনিয়নের গোবিন্দধবল গ্রামে পারিবারিক তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সুজন তালুকদারকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে বাবা ও ভাই। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পাঠায়।  অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এ ঘটনায় সুজনের স্ত্রী রিয়া বেগম বুধবার (১ মে) ঝালকাঠি থানায় দেবর, শ্বশুর-শাশুড়িসহ চারজনকে আসামি করে মামলা করে। ঝালকাঠি সদর থানার ওসি মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, হত্যা মামলার দুই আসামিকে র‌্যাব গ্রেপ্তার করে রাতে থানায় হস্তান্তর করেছে। শনিবার সকালে তাদের ঝালকাঠি আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
০৪ মে, ২০২৪

ছেলের কবরে বেড়া দিতে গিয়ে মারা গেলেন বাবা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় ছেলের কবরে বেড়া দিতে গিয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন সাদেকুর রহমান ভূইয়া নামে এক ব্যক্তি। শুক্রবার (৩ মে) দুপুরের দিকে উপজেলার আনোয়ারপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সাদেকুর রহমান উপজেলার আনোয়ারপুর গ্রামের মলাই উদ্দিন ভূইয়ার ছেলে। সাদেকুর রহমান ভূইয়ার চাচাতো ভাই আবু সাঈদ ভূইয়া কালবেলাকে বলেন, সাদেকুর রহমান ভূইয়ার দুই ছেলে ও এক মেয়ে। বড় ছেলে সৌদি আরব প্রবাসী, ছোট ছেলে শাহাদাৎ হোসেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের পড়াশোনা করত। শাহাদাৎ তার মাকে নিয়ে জেলা শহরে ভাড়া বাসায় বসবাস করত। তিনি বলেন, সম্প্রতি ছোট ছেলে শাহাদাতকে মোটরসাইকেল কিনে দেন সাদেকুর রহমান। গত সোমবার (২৯ এপ্রিল) দুই বন্ধুসহ তেল আনতে গিয়ে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের ভাদুঘরে ট্রাকচাপায় নিহত হয় শাহাদাৎ হোসেন। পরে তাকে গ্রামের বাড়ি আখাউড়ার আনোয়ারপুর গ্রামে দাফন করা হয়। আবু সাঈদ ভূইয়া বলেন, আজ দুপুরে ছেলের কবরে বেড়া দিতে বাগানে বাঁশ কাটতে গিয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন সাদেকুর রহমান। পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আখাউড়া উত্তর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো. রাসেল মিয়া কালবেলাকে বলেন, ছেলের মৃত্যুর চার দিন পর বাবার মৃত্যু খুব দুঃখজনক। মাগরিবের নামাজের পর জানাজা শেষে উনার মরদেহ দাফন করা হবে। ছেলে মৃত্যুর মাত্র চার দিন পর বাবার মৃত্যুতে গ্রামে শোকের ছায়ায় নেমে এসেছে।
০৩ মে, ২০২৪

মেয়ের বাড়ি বেড়াতে এসে লাশ হলেন বাবা
টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন একাব্বর আলী নামে এক ব্যক্তি। রোববার (২৮ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক সড়কের উপজেলার শাহপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত একাব্বর আলী কালিহাতী উপজেলার বীরবাসিন্দা ইউনিয়নের কস্তুরিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। ঘাটাইল থানার ওসি মোহাম্মদ আবু ছালাম মিয়া কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। স্থানীয়রা জানায়, একাব্বর আলীর মেয়ে ঘাটাইল উপজেলার শাহপুর মোড় এলাকায় ভাড়া থাকেন। মেয়েকে দেখতে এসেছিল তিনি। মাগরিবের নামাজ পড়তে ও নাতিদের জন্য আপেল-কমলা কিনতে বাসা থেকে বের হন। এ সময় টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়ক পার হওয়ার সময় মধুপুরগামী একটি বাস তাকে ধাক্কা দিলে গুরুতর আহত হন। তাকে উদ্ধার করে ঘাটাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।   ওসি মোহাম্মদ আবু ছালাম মিয়া বলেন, বাসটিকে জব্দ করা হয়েছে। চালক ও তার সহযোগী পালিয়ে যাওয়ায় আটক করা যায়নি। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
২৯ এপ্রিল, ২০২৪

মৃত্যুর আগে মাহিন / ভাইয়া আমি বাঁচব না, বাবা মাকে দেইখো
‘আমি বুঝতে পারতেছি, আমি আর বাঁচব না ভাইয়া। তুমি বাবা-মাকে দেইখো। বোনের খেয়াল রাইখো। আসো তোমার গালে একটা চুমু দেই।’ চিরবিদায়ের আগে বড় ভাই মাহফুজ আহমেদকে (২১) এভাবেই কথাগুলো বলে গেছে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী মাহিন আহমেদ (১৩)। হাসপাতালে রক্তাক্ত অবস্থায়ও মাহিন ভেবেছে তার পরিবারের কথা। তার চলে যাওয়ায় স্তব্ধ হয়ে পড়েছে গোটা পরিবার। আদরের সন্তানকে হারিয়ে বাবা মাসুম মিয়া ও মা জ্যোৎস্না আক্তার বাকরুদ্ধ। ছোট বোন ফাতেমা আফরিন (৮) বারবার জিজ্ঞেস করছে, মাহিন ভাইয়া কি আর আসবে না? তার এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারছেন না কেউ। সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যুর মিছিলের সর্বশেষ নাম মাহিন। গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে রাজধানীর মুগদার মদিনাবাগে বাসার কাছেই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের একটি ময়লার গাড়ির ধাক্কায় নিহত হয় মাহিন। ওই গাড়িটি চালাচ্ছিলেন রুবেল নামের একজন। তিনি গাড়িটির প্রকৃত চালক নন বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। ময়লার গাড়ির হেলপার হিসেবে কাজ করতেন তিনি। রুবেলকে গ্রেপ্তার ও গাড়িটিও জব্দ করা হয়েছে। রাতেই মুগদা কবরস্থানে মাহিনকে দাফন করা হয়। গতকাল শনিবার মাহিনের বাসায় গিয়ে দেখা যায়, পাড়া প্রতিবেশীরা এসে সান্ত্বনা দিচ্ছেন তার পরিবারকে। বাবা-মা মাহিনের জামা-কাপড়, বই-খাতা বুকে নিয়ে বসে আছে। একটু পরপর মাহিন কই গেলি রে বলে চিৎকার করছে মা-বাবা দুজনই। কাঁদতে কাঁদতে তাদের চোখের পানিও শুকিয়ে গেছে। ছোট বোনটিও ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে। এলাকায় বড় থেকে ছোট সবার প্রিয় মাহিনের এই চলে যাওয়া মেনে নিতে পারছেন না কেউ। বড় ভাই মাহফুজ জানান, দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পর জানতে পারেন মাহিনকে মুগদা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। হাসপাতালে গিয়ে দেখি আমার ভাইটাকে রক্তাক্ত অবস্থায় একটা ট্রলিতে শুইয়ে রাখা হয়েছে। আমাকে দেখে বলল, ‘আমি আর বাঁচব না ভাইয়া। তুমি বাবা-মাকে দেইখো। বোনের খেয়াল রাইখো। আসো তোমার গালে একটা চুমু দেই।’ আমি চিৎকার করে ডাক্তারদের ডাকছিলাম। কেউ আসেনি। কোনো প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। চিৎকার করে দৌড়ে গিয়ে অ্যাম্বুলেন্সওয়ালাদের ডাকছিলাম। তারাও কেউ আসেনি। প্রায় ৪০ মিনিট বিনা চিকিৎসায় ছিল। যদি তখন আমার ভাইটাকে একটু চিকিৎসা দেওয়া যেত, মুখে একটু অক্সিজেন দেওয়া যেত, তাহলে হয়তো সে বেঁচে যেত। এরপর আমার ভাইকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মাহিনের প্রতিবেশী শাকিল আহমেদ বলেন, মাহিনের পরিবার খুবই গরিব। তার বড় ভাই এসএসসির পর আর পড়াশোনা করতে পারেনি। মাহিনের বাবা করোনার সময় ব্যবসায় অনেক বড় লস খায়। এরপর থেকে পাইকারি বোতামের ব্যবসা করে চলছে। অনেক কষ্টে তাদের সংসার চলে। এরপরও মাহিনের পড়াশোনা চালাচ্ছিল। এখন তো তার সেই আদরের ছেলেই চলে গেল। স্থানীয়দের অভিযোগ, মুগদা হাসপাতালের অবহেলার কারণেই মাহিনের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় মো. জনি হক বলেন, মুগদা হাসপাতালের লোকজন এ এলাকার কাউকে কোনো চিকিৎসা দেয় না। সামান্য আঙুল কাটলেও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। এই হাসপাতালের অবহেলার কারণেই মাহিনের মৃত্যু হয়েছে। মুগদা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কামরুল হোসাইন কালবেলাকে বলেন, হেলপার রুবেল গাড়ি চালাচ্ছিল। পরে শুনেছি চালক গাড়িটি নিয়ে পালিয়ে যেতে চেয়েছিল। এ ঘটনায় চালককেও আটকের চেষ্টা চলছে।
২৮ এপ্রিল, ২০২৪

চিকিৎসার জন্য সন্তান বিক্রি করলেন বাবা
আধমরা অবস্থায় বিছানায় পড়ে আছেন আল আমিন। দুই পা অচল হয়ে গেছে। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় পচন ধরেছে। কিছুদিন হাসপাতালে থাকলেও টাকার অভাবে ঠিকঠাক চিকিৎসা নিতে পারেননি। নিরুপায় হয়ে ৩ মাস বসয়ী সন্তানকে বিক্রি করে দিয়েছেন। স্বামীর অভাব-অনটন আর অসুস্থতায় পাশে থাকলেও দুধের শিশুকে হারিয়ে পাগলপ্রায় মা বেরিয়ে গেছেন বাড়ি থেকে। আল আমিনের বাড়ি টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার ডুবাইল ইউনিয়নের বর্নী গ্রামে। আহত হয়ে বিছানায় পড়ে যাওয়ার পর থেকে মানুষের কাছে চেয়ে চেয়ে সংসার চালাচ্ছেন। অসুস্থতার মধ্যেও থাকছেন অর্ধাহারে-অনাহারে। অসহায় এ ব্যক্তির স্ত্রী-সন্তানদের ব্যাপারে সমাজের বিত্তবানদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন স্থানীয়রা। জানা গেছে,  স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে ভালোই চলছিল ভ্যানচালক আলামিনের সংসার। একদিন বাড়ির পাশের মারামারির মধ্যে পড়ে গিয়ে মারাত্মকভাবে আহত হন। এরপর অন্ধকার নেমে আসে তার জীবনে। বিনা চিকিৎসায় পড়ে থাকার কারণে তার শারীরিক পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়। নিজের চিকিৎসা করাতে কিছুদিন আগে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার এক ব্যক্তির কাছে সন্তানকে বিক্রি করেন ৫০ হাজার টাকায়। কিন্তু বাবার মন তো মানে না! তাই নিজে সুস্থ হয়ে সন্তানকে ফেরত আনতে চান। ফিরতে চান স্বাভাবিক জীবনে। এ ব্যাপারে প্রশাসনও তাকে সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছে। টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. মিনহাজ উদ্দীন বলেন, দেলদুয়ার উপজেলার একজন অসহায় রোগীর সম্পর্কে জানতে পেরেছি। তার দুই পা প্যারালাইজড হওয়ার কারণে পিঠে ঘা হয়ে গেছে। তার জন্য পরার্মশ হলো প্রথমত তাকে যেন জেলার জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাকে সব ধরনের সহায়তা করা হবে। টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. কায়ছারুল ইসলাম বলেন, জেলা প্রশাসন বরাবরই অসহায়, দুস্থ,পীড়িত মানুষকে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন রকম অনুদান ও সহযোগিতা প্রদান করে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় আল আমিনের সুস্থতার জন্য যা করা প্রয়োজন আমরা তা করব। মানুষ মানুষের জন্য। সমাজের বিত্তবানরা পাশে দাঁড়ালে দীর্ঘদিন ধরে বিছানায় পড়ে থাকা আলামিনও নিশ্চয়ই উঠে দাঁড়াবেন। আবারও ধরবেন সংসারের হাল। আর ছোট্ট শিশু জান্নাতও ফিরে আসবে বাবার কোলে।
২৬ এপ্রিল, ২০২৪

ছেঁড়া নোট না নেওয়ায় ছেলেকে ছুরিকাঘাতে হত্যা, বাবা সংকটাপন্ন
ময়মনসিংহের তারাকান্দায় ১০ টাকার ছেঁড়া নোট না নেওয়ায় দোকানি ও তার ছেলেকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। এ ঘটনায় ছেলে মো. ইকবাল নিহত হয়েছেন। বাবা মো. সাদেক মুন্সিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে উপজেলার বানিহালা ইউনিয়নের মাজিয়াল বাজারে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ইকবাল ও তার বাবা সাদেক মুন্সি বানিহালা ইউনিয়নের দিঘারকান্দা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি মাজিয়াল বাজারের ব্যবসায়ী। তারাকান্দা থানার ওসি মো. ওয়াজেদ আলী কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। স্থানীয়রা জানান, সাদেক মুন্সি তার ছেলে ইকবালকে নিয়ে সন্ধ্যার পর দোকানে ছিলেন। রাত ৮টার দিকে দোকানে সিগারেট কিনতে যান একই গ্রামের ফারুক মিয়া। সিগারেট কিনে তিনি একটি ১০ টাকার ছেঁড়া নোট দেন। ইকবাল নোটটি বদলে দিতে বললে ফারুক ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। দুজনের বাগবিতণ্ডা হলে ফারুক তার ছোট ভাই পারভেজ মিয়াকে ডেকে আনেন। পরে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে পারভেজ ছুরি দিয়ে ইকবালকে এলোপাথাড়ি  আঘাত করে।  এ সময় ইকবালের বাবা সাদেক মুন্সিকেও ছুরিকাঘাত করে। হাসপাতালে নেওয়ার পথেই ইকবাল মারা যান। গুরুতর আহত সাদেক মুন্সিকে ময়মনসিংহ থেকে রাত ১০টায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ওসি মো. ওয়াজেদ আলী বলেন, রাত ৮টার দিকে দোকানে সিগারেট কিনতে গিয়ে ছেঁড়া টাকা দেওয়া নিয়ে বাগবিতণ্ডার জেরে বাবা-ছেলেকে ছুরিকাঘাত করা হয়। গুরুতর আহত বাবা-ছেলেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে ইকবাল মারা যায়। সাদেক মুন্সিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে আশঙ্কাজনক দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুজনকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তবে ফারুক মিয়া ও পারভেজ মিয়াকে আটক করা যায়নি। এ ঘটনায় আইনিব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে।
২৪ এপ্রিল, ২০২৪
X