মরা গরুর মাংস বিক্রি করছিলেন সোহেল
এবার মরা গরুর মাংস বিক্রির অভিযোগ উঠেছে সোহেলের বিরুদ্ধে। এতে র‍্যাবের হাতে আটক হন তিনি। বুধবার (১৭ এপ্রিল) সকালে কিশোরগঞ্জের ভৈরব শহরের কমলপুর গাছতলা ঘাট বাজারে এ ঘটনা ঘটে। আটকের ঘণ্টাখানেক পর অভিযুক্ত সোহেলকে উপজেলার কান্দিপাড়া গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট আতাউর রহমানের মাধ্যমে মুচলেকা দিয়ে ছাড়িয়ে নেওয়া হয়। স্থানীয়রা জানান, ভৈরব গোস্ত হাউসের মালিক খোকন মিয়া দীর্ঘদিন ধরে শহরের গাছতলা ঘাট বাজারে মরা গরু ও চোরাই গরুর মাংস বিক্রি করলেও থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। বুধবার সকালে র‍্যাব-১৪ ভৈরব ক্যাম্পের সদস্যরা মাংস কিনতে এসে মরা গরুর মাংস সন্দেহে ভৈরব গোস্ত হাউসের কর্মচারী সোহেলকে আটক করে নিয়ে যায়। তখন মালিকসহ অন্য কর্মচারীরা কৌশলে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা আরও জানান, অভিযুক্ত খোকন মিয়া গরু চোর চক্রের সঙ্গে জড়িত। ফেরিঘাট বাজারে আগে তিনি মাংসের দোকানে চাকরি করতেন। গত দুই বছর ধরে গাছতলা ঘাট বাজারে নিজে ব্যবসা শুরু করেন। আনুমানিক তিন-চার মাস আগে গাছতলা ঘাটে মরা গরুর মাংস বিক্রি করায় সাধারণ ক্রেতা ও স্থানীয়রা খোকন মিয়াকে আটক করেন। আটকের পর স্থানীয় যুবক ও এক প্রভাবশালী নেতাকে ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে ঘটনা ধামাচাপা দেন বলে অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি তাকে শেল্টার দেওয়ার কারণে এসব অপকর্ম করেও তিনি বীরদর্পে ব্যবসা করে যাচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে, গাছতলা বাজারের ৮-১০টি মাংসের দোকান রয়েছে। এর মধ্যে ভৈরব গোস্ত হাউসসহ আরও কয়েকটি মাংসের দোকানে এসব অপকর্মে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। ভৈরব গোস্ত হাউসের মালিক খোকন মিয়া জানান, তার কর্মচারী সোহেল ও ছেলে রুবেল দোকানে ছিল। এ সময় র‍্যাব সদস্যরা মাংস কিনতে আসলে কর্মচারী সোহেলের সঙ্গে তর্কবিতর্ক হয়। এ ঘটনায় তার কর্মচারীকে র‍্যাব ধরে নিয়ে যায়। ঘণ্টাখানেক পর তার কর্মচারীকে র‍্যাব ছেড়ে দিয়েছে বলে জানান তিনি। তার দোকানে মরা গরু ও চোরাই গরুর মাংস বিক্রির অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ষড়যন্ত্র করে তাকে ফাঁসাতে হয়তো এসব অভিযোগ কেউ কেউ সামনে আনছে। এ বিষয়ে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট আতাউর রহমান জানান, তিনি ৮ বছর আগে অবসর নেন। এ ঘটনায় আটককৃত ব্যক্তিকে মুচলেকার মাধ্যমে তিনি ছাড়িয়ে নেন বলে স্বীকার করেন। এ বিষয়ে ঘটনার পর র‍্যাব-১৪ ভৈরব ক্যাম্পের ডিএডি মো. ইকবাল হোসেনের সঙ্গে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি ভৈরব গোস্ত হাউসের নাম বলেন এবং একজন আটকের কথা স্বীকার করেন। ভৈরব পৌরসভার স্যানিটারি ইন্সপেক্টর নাছিমা বেগম জানান, ভৈরবে স্লট হাউস না থাকায় যত্রতত্রভাবে গরু জবাই করে বিক্রি করছে। প্রাণিসম্পদ অফিস পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে জানালে তিনি সিল দিয়ে ক্লিয়ারেন্স দেবেন। তারপরও মাংস সতেজ ও ভালো কি না সপ্তাহে দুই দিন বাজার তদারকি করেন তিনি। এ বিষয়ে ভৈরব উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান তরফদার বলেন, বিভিন্ন সময় মাংস বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে। মাংস অব্যবস্থাপনার অভিযোগে র‍্যাব একজনকে আটক করেছে বলে শুনেছি। তিনি বলেন, ভৈরবে কোনো স্লটার হাউস নেই। তারপরও উপজেলা প্রশাসনকে নিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা জানান তিনি।
১৭ এপ্রিল, ২০২৪
X