মহেশখালী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন মন্ত্রিসভায় উঠতে পারে আজ
কক্সবাজারের মহেশখালী এলাকাকে শিল্প ও বাণিজ্যিক অঞ্চল হিসেবে রূপ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ জন্য ‘মহেশখালী সমন্বিত উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ’ গঠনের জন্য একটি আইন প্রণয়ের কাজ শেষ করেছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। স্থানীয় সম্পদ কাজে লাগিয়ে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি করতে কাজ করবে এ কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষ গঠনে খসড়া আইনটির নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিতে আজ মন্ত্রিসভার বৈঠকে উঠতে পারে বলে জানা গেছে। মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিলে সেটি পাসের জন্য জাতীয় সংসদে উঠবে। তারপরই গেজেট জারির মধ্য দিয়ে আইনটির কার্যকারিতা শুরু হবে। আইনের খসড়া পর্যালোচনায় দেখা গেছে, কর্তৃপক্ষের প্রধান কার্যালয় কক্সবাজার জেলার মহেশখালীতে থাকবে। তবে কর্তৃপক্ষ, গভর্নিং বোর্ডের অনুমোদনক্রমে প্রয়োজনে দেশের যে কোনো স্থানে প্রধান কার্যালয়ের একটি লিয়াজোঁ অফিস করা যাবে। গভর্নিং বোর্ড গঠন: আইনের উদ্দেশ্য, প্রয়োজনীয় নির্দেশনা, পরামর্শ ও উপদেশ প্রদান এবং কর্তৃপক্ষ ও নির্বাহী পরিষদের কার্যাবলি অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে চেয়ারম্যান করে গভর্নিং বোর্ড গঠিত হবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান হবেন। এ ছাড়া সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী, শিল্পমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রী নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী কিংবা উপমন্ত্রী, স্থানীয় সরকার বিভাগের মন্ত্রী, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, মুখ্য সমন্বয়ক, বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, এফবিসিসিআইর সভাপতি, সরকার কর্তৃক মনোনীত ব্যবসায়ী বা শিল্প বাণিজ্য সংশ্লিষ্ট চারজন প্রতিনিধি গভর্নিং বোর্ডের সদস্য হবেন। নির্বাহী পরিষদের চেয়ারম্যান গভর্নিং বোর্ডের সদস্য-সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব নির্বাহী পরিষদের চেয়ারম্যান হবেন। তিনি কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী হবেন। যেসব কাজ করবে কর্তৃপক্ষ: ভূমির যৌক্তিক ব্যবহার নিশ্চিত করে মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন বিনিয়োগ উন্নয়নের লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট কৌশল উদ্ভাবন ও বাস্তবায়ন; কর্তৃপক্ষের অধিক্ষেত্রের মধ্যে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত নকশা ও পরিকল্পনা অনুযায়ী ভবন, রাস্তা, অবকাঠামো, ইত্যাদি নির্মাণ নিশ্চিতকরণ এবং অননুমোদিত অবকাঠামো নির্মাণ রোধকরণ ও এ রূপে নির্মিত অবকাঠামো অপসারণ; শিল্প ও বাণিজ্যের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত সুবিধা নিশ্চিতকরণ; কর্তৃপক্ষের অধিক্ষেত্রাধীন ভূমি, স্থান ও ভবন অধিকতর উপযোগী অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যবহারের জন্য দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীকে বরাদ্দ প্রদান; দ্রুত শিল্পায়নের উদ্দেশ্যে দেশি ও বিদেশি পুঁজি বিনিয়োগে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা প্রদানের ভূমি বরাদ্দ গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজের অগ্রগতি মূল্যায়ন ও পরিবীক্ষণ; কর্তৃপক্ষের অধিক্ষেত্রাধীন এলাকার উন্নয়নের উদ্দেশ্যে দেশি বা বিদেশি ব্যক্তি এবং সরকারি বা সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের ভিত্তিতে বিনিয়োগ কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন; কর্তৃপক্ষের অধিক্ষেত্রাধীন এলাকায় পর্যটন এলাকা চিহ্নিতকরণ, উন্নয়ন, পরিচালনা ও সংরক্ষণ; পানি সরবরাহ ও নিষ্কাশন, জলাধার নির্মাণ ও সংরক্ষণ এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পয়ঃনিষ্কাশন; কোনো উদ্যোক্তা বা বিনিয়োগকারীকে প্রয়োজনীয় যে কোনো সেবা, সুবিধা, প্রণোদনা, লাইসেন্স, অনুমতি, পারমিট, ছাড়পত্র, তা যে নামেই অভিহিত হোক না কেন- নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রদানের জন্য ওয়ান স্টপ সার্ভিস প্রবর্তন; জননিরাপত্তা নিশ্চিত করণার্থে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ; শিল্প-বাণিজ্যের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ, সংকলন, বিশ্লেষণ, বিতরণ এবং তদুদ্দেশ্যে তথ্যভাণ্ডার স্থাপন; কর্তৃপক্ষের অধিক্ষেত্রাধীন এলাকার উন্নয়ন, পরিচালনা, ব্যবস্থাপনা এবং নিয়ন্ত্রণবিষয়ক আবশ্যকীয়। নীতিমালা প্রস্তুত; কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম সুষ্ঠু ও সুচারুভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ; কর্তৃপক্ষের অধিক্ষেত্রাধীন এলাকার ভূমি ও স্থাপনা বরাদ্দ, ভাড়া ও ইজারা প্রদানের শর্তাবলি ও হার নির্ধারণ করবে। এ ছাড়াও কর, রেট, টোল, ফি, সার্ভিস চার্জ, ইত্যাদি নির্ধারণ ও আদায়; শ্রমিক-কর্মচারীদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করা, তাদের কল্যাণ নিশ্চিত করা এবং মালিক ও শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে সুষ্ঠু সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা; কর্তৃপক্ষের অধিক্ষেত্রাধীন এলাকার উন্নয়ন ও বিকাশের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় ঘটাবে এ কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষের তহবিল: সরকারের কাছ থেকে প্রতি অর্থবছরে নির্দিষ্ট পরিমাণ অনুদান পাবে কর্তৃপক্ষ। এর বাইরে কর্তৃপক্ষের এলাকাধীন প্লট বা ভবন বরাদ্দ বা ইজারা থেকে আসবে অর্থ। কর, রেট, টোল, ফি ও সার্ভিস চার্জ বাবদ মিলবে টাকা। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের মুনাফা এবং বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত যে কোনো উৎস থেকে অর্থ পাবে মহেশখালী সমন্বিত উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।
১৭ এপ্রিল, ২০২৪

ঘূর্ণিঝড় হামুনের তাণ্ডব শুরু, লন্ডভন্ড মহেশখালী
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় হামুন কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করছে। বিশেষ করে মহেশখালী, কুতুবদিয়া, কক্সবাজার শহরের দিকে প্রবল বেগে বাতাস ও ঝোড়ো বৃষ্টি হচ্ছে। আজ মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে ঘূর্ণিঝড়টি অতিক্রম করা শুরু করেছে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত রাত সাড়ে ৯টার দিকেও প্রবল বেগে বাতাস বয়ে যাচ্ছে। এতে মানুষের ঘরবাড়ি ভেঙে টিন উড়ে যাচ্ছে, গাছপালা ভেঙে ডালপালা উড়ে যাচ্ছে। বাসাবাড়ির দরজা-জানালা খোলা যাচ্ছে না ঝড়ের ঝাপটায়। মানুষের জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে বলে জানা গেছে এবং মহেশখালী প্রধান সড়কে গাছপালা ভেঙে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে।  মাতারবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু হায়দার জানান, আমরা ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার জন্য পূর্ব প্রস্তুতি সভা করেছি। অনিরাপদ স্থানে যারা রয়েছে তাদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি।  মহেশখালী-কুতুবদিয়ার এমপি আশেক উল্লাহ রফিক বলেন, ঘূর্ণিঝড় হামুন মোকাবিলার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে পূর্ব প্রস্তুতিমূলক সচেতনতামূলক সভা করা হয়েছে। মহেশখালী-কুতুবদিয়াবাসীকে ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব শুরু হওয়ার আগেই নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে চলে যাওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে এবং প্রশাসনসহ সবাইকে দুর্যোগ মোকাবিলায় কাজ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।  
২৪ অক্টোবর, ২০২৩
X