প্রধানমন্ত্রী মাদারীপুর যাচ্ছেন শনিবার, এলাকাজুড়ে উৎসবের আমেজ
মাদারীপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী জনসভায় শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টায় যোগদান করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার আগমন উপলক্ষে মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এ জনসভাকে ঘিরে সতর্ক ও তৎপর অবস্থানে রয়েছে প্রশাসনের কর্মকর্তারা এবং বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। সে সঙ্গে গত সপ্তাহজুড়ে সাজ সাজ রব চলছে পুরো উপজেলা সদরে। স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। উপজেলা ও পৌরসভা আওয়ামী লীগের ব্যানারে এ জনসভার আয়োজন করা হচ্ছে।  দলীয় ও প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সংসদ নির্বাচনে প্রচারের অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের বিভিন্ন জেলায় নির্বাচনী জনসভায় যোগদান করছেন। তারই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী মাদারীপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগে নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিয়ে ভাষণ দেবেন।  প্রধানমন্ত্রীর এ আগম উপলক্ষে কালকিনি সৈয়দ আবুল হোসেন কলেজ মাঠে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এ মাঠের চার দিকে বাঁশের বেড়া দিয়ে আটকিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি এ কলেজ মাঠের জনসভায় ভাষণ দেবেন। এ সময় তার সঙ্গে থাকবেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতারা। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর আগমনে প্রায় দেড় লাখ লোক সমাগম ঘটতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। উপজেলার গোপালপুর থেকে থানার মোড় পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার পথে জনসাধারণের চলাচল সীমিত করা হয়েছে। জরুরি কোনো যানবাহন ছাড়া ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে জনসভাস্থলের আশপাশসহ উপজেলা সদরের অনেক দোকান বন্ধ রাখা হয়েছে। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর আগমনে কালকিনিবাসীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে দফায় দফায় আনন্দ মিছিল করা হচ্ছে। মাদারীপুর-৩ (কালকিনি-ডাসার-সদর একাংশ) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে লড়ছেন দলটির কেন্দ্রীয় প্রচার-প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপ। কিন্তু তার বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে দাপটের সঙ্গে লড়ছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি- সংরক্ষিত আসনের এমপি তাহমিনা বেগম। তার প্রতীক ঈগল। এ ছাড়া অন্যরা হলেন জাতীয় পার্টির খালেকুজ্জামান খোকন (লাঙ্গল), কণ্ঠশিল্পী নকুল কুমার বিশ্বাস (গামছা), তৃণমূল বিএনপির প্রবীর হালদার (সোনালি আশ) ও নিতাই চক্রবর্তীসহ (একতারা) ছয়জন। উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. লোকমান সরদার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বরণ করার জন্য আওয়ামী লীগসহ সব সহযোগী সংগঠন আমরা প্রস্তুত রয়েছি। তার আগমন উপলক্ষে  উপজেলাজুড়ে উৎসব আমেজ সৃষ্টি হয়েছে। এই জনসভা জনসমুদ্রে পরিণত হবে। কালকিনি থানার ওসি (তদন্ত) মাগরুব হাসান জানান, প্রধানমন্ত্রীর আগম উপলক্ষে পুলিশসহ প্রসাসনের বিভিন্ন বাহিনী কঠোর অবস্থানে রয়েছে। সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে সবাই মিলে মিশে মাঠে কাজ করছে। কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলাকে ছাড় দেওয়া হবে না। এ ব্যাপারে মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন,  প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে কালকিনিতে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সব প্রস্তুতিও  ইতিমধ্যে  সম্পন্ন  করা  হয়েছে।  এলাকাজুড়ে নিরাপত্তায় জেলা পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রীকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য যা যা করার দরকার আমরা সব করে রেখেছি। আমরা নিরাপত্তার চাদর বিছিয়ে রেখেছি। বাতাস ঢোকার মতো কোনো ছিদ্র নেই।
২৯ ডিসেম্বর, ২০২৩

কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত মাদারীপুর বিসিকের অর্ধেক প্লটও বরাদ্দ হয়নি
প্রায় ৬১ কোটি টাকা ব্যয় করে মাদারীপুর সদর উপজেলার মহিষেরচর এলাকায় মাদারীপুর সম্প্রসারিত বিসিক নির্মাণ করা হয়। নির্মাণকাজ শেষ হলেও বরাদ্দ হয়নি অর্ধেক শিল্প প্লট। বরাদ্দকৃত প্লটও খালি পড়ে আছে। খালি পড়ে থাকায় যেখানে থাকবার কথা শিল্প প্লট সেখানে গজিয়েছে ঘাস আর ঝোপ-জঙ্গল। বর্তমানে জায়গাটি মাদকসেবীসহ অপরাধীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। তবে ব্যবসায়ীদের দাবি, নতুন বিসিকের শিল্প প্লটের দাম অনেক বেশি। নেই কোনো গ্যাস সংযোগ। এসব কারণে আগ্রহ নেই ব্যবসায়ীদের।  আর মাদারীপুর বিসিকের শীর্ষ কর্মকর্তার দাবি, আগামী দু-এক বছরের মধ্যেই গড়ে উঠবে কলকারখানা। সংশ্লিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র কুটিরশিল্প করপোরেশন (বিসিক) ১৯৮৭ সালে মাদারীপুরে একটি শিল্পনগরী প্রতিষ্ঠা করে। এরপর ২০১৪ সালে মাদারীপুরের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও শিল্পায়নের লক্ষ্যে মাদারীপুর বিসিক শিল্পনগরীর সস্প্রসারণের উদ্যোগ নেয় সরকার। এতে ব্যয় ধরা হয় ৬০ কোটি ৬০ লাখ টাকা। সে মোতাবেক ২০ একর জমি অধিগ্রহণ করে। শুধু ভূমি অধিগ্রহণ খাতেই ব্যয় হয় ৩০ কোটি ২৪ লাখ ১৫ হাজার টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মেয়াদকাল ধরা হয়েছে ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত। শুরু করা হয় শিল্পনগরী স্থাপনের কাজ। ১৮টি শিল্প ইউনিটে ৪৬টি প্লট করা হয়। নির্মাণকাজ শেষ করে ২১ এপ্রিল ২০২২ সালে মাদারীপুর সম্প্রসারিত বিসিক উদ্বোধন করা হয়। কাগজে কলমে উদ্বোধন করা হলেও গড়ে উঠেনি কোনো শিল্প কলকারখানা। ৪৬টি প্লটের মধ্যে বরাদ্দ হয়েছে ২২টি প্লট। বাকি ২৪টি প্লট এখনও বরাদ্দ হয়নি। বরাদ্দকৃত ২২টি প্লটও ফাকা পড়ে আছে। গড়ে উঠেনি কোনো শিল্প কলকারখানা।  শিল্প উদ্যোক্তদের দাবি, ভূমি উন্নয়ন, রাস্তা, পানি সরবরাহ, বিদ্যুৎ, পয়োনিষ্কাশন, গ্যাস সংযোগ প্রভৃতি সুযোগ-সুবিধা না থাকলে কারখানা গড়ে তোলা সম্ভব নয়। এ ছাড়াও প্লটের দাম অতিরিক্ত হওয়ার কারণে বরাদ্দ হয়নি অনেক প্লট। মাদারীপুর পুস্তক ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও উদ্যোক্তা অলিউল আহসান কাজল বলেন, নতুন বিসিকের শিল্প প্লটের দাম বেশি। নেই গ্যাস, বিদ্যুৎ সুবিধা। আমাদের শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার ইচ্ছে থাকলেও বিভিন্ন সমস্যার কারণে আগ্রহ নেই। মাদারীপুর বিসিক শিল্পনগরীর ভারপ্রাপ্ত এজিএম পার্থ সারথী দাস বলেন, কর্মসংস্থানের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনে সহায়তাসহ জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখবে এই বিসিক। তবে উৎপাদনে যেতে দুই এক বছর সময় লাগবে।  
২৯ আগস্ট, ২০২৩
X