সোমবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ২১ আশ্বিন ১৪৩২
রাজশাহী ব্যুরো
প্রকাশ : ১০ মে ২০২৪, ০৯:০৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

রাজশাহীতে বই পড়ে পুরস্কার পেল ২২১২ শিক্ষার্থী

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের উদ্যোগে বই পড়া কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের পুরস্কৃত করা হয়। ছবি : কালবেলা
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের উদ্যোগে বই পড়া কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের পুরস্কৃত করা হয়। ছবি : কালবেলা

বই পড়ে পুরস্কার পেল রাজশাহীর ২ হাজার ২১২ শিক্ষার্থী। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের উদ্যোগে তাদের পুরস্কৃত করা হয়েছে। ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে মহানগরীর ৫১টি স্কুলের প্রায় ৬ হাজার ছাত্র-ছাত্রী বই পড়া কর্মসূচিতে অংশ নেয়। এসব স্কুলের যেসব ছাত্র-ছাত্রী মূল্যায়নপর্বে কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছে আজ তাদের পুরস্কৃত করা হয়েছে।

শুক্রবার (১০ মে) রাজশাহী শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এ পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এ পুরস্কার বিতরণীতে সহযোগিতায় ছিল গ্রামীণফোন।

এক বর্ণাঢ্য উৎসবের মধ্য দিয়ে চারটি পর্বে মোট ২ হাজার ২১২ জন ছাত্র-ছাত্রীকে পুরস্কার প্রদান করা হয়। এরমধ্যে ১ হাজার ৬৬০ জন শিক্ষার্থী সরাসরি মঞ্চ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করে এবং ৫৫২ জন শিক্ষার্থীর পক্ষে সংশ্লিষ্ট স্কুলের শিক্ষক পুরস্কার গ্রহণ করেন।

দিনব্যাপী পুরস্কার বিতরণ উৎসবে প্রথম পর্বে প্রধান অতিথি ছিলেন রাজশাহী বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর। বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের অন্যতম ট্রাস্টি ও অবসরপ্রাপ্ত সচিব আমিনুল ইসলাম ভুঁইয়া, বিশিষ্ট অভিনেতা, লেখক ও অনুবাদক খায়রুল আলম সবুজ, গ্রামীণফোনের সার্কেল মার্কেটিং হেড শাহিনুর রহমান এবং বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের পরিচালক শামীম আল মামুন।

এ ছাড়া অন্যান্য পর্বে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের নাটোর শাখার সংগঠক অধ্যাপক অলোক মৈত্র, কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক জুলফিকার মতিন, লেখক, উপন্যাসিক ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শহীদ ইকবাল, বিশ্ব-পরিব্রাজক ও লেখক তারেক অণু, রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড সরকারি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. মোয়াজ্জেম হোসেন এবং সুজন এর সভাপতি ও বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র রাজশাহী শাখার সাবেক সংগঠক আহমেদ শফিউদ্দিন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের পরিচালক শামীম আল মামুন তার স্বাগত বক্তব্যে পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানান এবং এই বিশাল আয়োজনে ও পুরস্কারের বই স্পন্সরের জন্য গ্রামীণফোনকে ধন্যবাদ দেন। তিনি বলেন, বই মানুষের মনঃস্তাত্ত্বিক বিকাশে সহায়তা করে। বইপড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে জীবনে সার্বিক উন্নয়ন অনেকটাই সহজতর হয়। সে জন্য তিনি বেশি বেশি বই পড়তে শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাজশাহী বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র বিগত ৪৫ বছর ধরে আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যারের নেতৃত্বে সারা দেশে বইপড়া আন্দোলনকে ছড়িয়ে দিয়েছেন। বই পড়ার মাধ্যমে অনেক কিছু জানা যায়। বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থেও বই পড়ার গুরুত্ব তুলে ধরেন। একটি উন্নত ও সুশৃঙ্খল জাতি গঠনে বই পড়ার গুরুত্ব অপিরসীম বলে উল্লেখ করেন এবং সবাইকে বইপড়ার আহবান জানান।

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ও অবসরপ্রাপ্ত সচিব আমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া পুরস্কারপ্রাপ্ত সকল শিক্ষার্থীসহ আগত সকলকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। তিনি আরও বলেন, একটি দেশের জাতিসত্ত্বা নির্মাণ করার জন্য বই পড়ার গুরুত্ব অপরিসীম। আমরা বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের মাধ্যমে সেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বই পড়ার গুরুত্ব আমরা সবাই যদি অনুধাবন করি তাহলে আগামীতে আমাদের সন্তানরা নৈতিক ও মানবিক মানুষ হিসেবে গড়ে উঠবে এ প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

লেখক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব খায়রুল আলম সবুজ বলেন, পুরস্কারপ্রাপ্ত ছাত্রছাত্রীদের বই পড়ে চিন্তার জায়গায় সৎ হওয়ার পরামর্শ দেন কারণ আলোকিত মানুষ হতে হলে সৎ হওয়ার কোনো বিকল্প নেই বলে জানান।

গ্রামীণফোনের সার্কেল মার্কেটিং হেড শাহিনুর রহমান তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, তরুণরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তাই গ্রামীণফোন সবসময়ই তরুণদের দক্ষতা বাড়ানোর দিকে মনোযোগী। এরই ধারাবাহিকতায় বই পড়ার সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে শিক্ষার্থীদের হাতে পুরস্কার তুলে দিতে এবং বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের এই মহতী উদ্যোগের সঙ্গে থাকতে পেরে তারা আনন্দিত বলে জানান।

এদিকে আজকের উৎসবে প্রতিটি স্কুলের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের স্বাগত পুরস্কার, শুভেচ্ছা পুরস্কার, অভিনন্দন পুরস্কার ও সেরাপাঠক পুরস্কার শিরোনামে চারটি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার প্রদান করা হয়। আজকে ৫১টি স্কুলের ২ হাজার ২১২ জন ছাত্রছাত্রী পুরস্কার প্রদান করা হয়। তাদের মধ্যে স্বাগত পুরস্কার পেয়েছে ৭৫৫ জন, শুভেচ্ছা পুরস্কার পেয়েছে ৫৭৫ জন, অভিনন্দন পুরস্কার পেয়েছে ৭২৬ জন এবং সেরাপাঠক পুরস্কার পেয়েছে ১৫৬ জন।

বিজয়ী ১৬৬০ জন শিক্ষার্থীকে সরাসরি মঞ্চ থেকে পুরস্কার প্রদান করা হয় এবং ৫৫২ জন শিক্ষার্থীর পক্ষে সংশ্লিষ্ট স্কুলের শিক্ষকের হাতে পুরস্কার প্রদান করা হয়। সেরা পাঠক বিজয়ীদের মধ্যে লটারির মাধ্যমে প্রতি ১০ জনে একটি হিসেবে মোট ১৫টি বিশেষ পুরস্কারও প্রদান করা হয়। বিশেষ পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হয় ১০টি মূল্যবান বইয়ের একটি করে সেট।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের যুগ্ম পরিচালক (প্রোগ্রাম) মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ সুমন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কাশিয়ানীতে বিএনপির ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ

দাবি আদায়ে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ চান মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও বস্তিবাসীরা

নির্বাচনের জন্য দীর্ঘ ১৭ বছর আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি : লায়ন ফারুক 

সাইফ ঝড়ে আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ

আফগানদের বিরুদ্ধে জয়ের স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ

বৃষ্টিসহ আগামী ৫ দিনের পূর্বাভাস দিল আবহাওয়া অফিস

প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি ও কার্টিন ইউনিভার্সিটির চুক্তি স্বাক্ষর

স্মার্ট কার্ডের সংকট কাটাতে আসছে ‘ব্ল্যাংক কার্ড’

সেই বিয়ের কথা স্বীকার করলেন পরীমনি

দুর্গোৎসবে টাইমস স্কয়ারে ঢাকেশ্বরী মন্দিরের আবহ

১০

‘নির্বাচন কমিশন সচিবালয় আইন ২০০৯’ সংশোধন করে অধ্যাদেশ জারি

১১

জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষার নীতিমালা সংশোধন

১২

কর্মবিরতিতে ভেঙে পড়েছে টিকাদান কর্মসূচি

১৩

আ.লীগ নেতাকে ছিনতাই, ২২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

১৪

রাজশাহীতে মা-ছেলেসহ তিন মাদক কারবারি গ্রেপ্তার

১৫

নীতি-আদর্শের পরিবর্তন করতে পারলেই শান্তি আসবে : ফয়জুল করীম

১৬

সেভিয়ার মাঠে বিধ্বস্ত বার্সা

১৭

আন্তঃশিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিতর্কে চ্যাম্পিয়ন কাঞ্চন একাডেমি

১৮

একই দিনে বজ্রপাতে ৯ জনের মৃত্যু

১৯

বিএনপিতে যোগ দিলেন ৫ শতাধিক সনাতন ধর্মাবলম্বী

২০
X