গ্রামীণ ব্যাংকে ড. ইউনূসের কোনো মালিকানা নেই : চেয়ারম্যান
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৯৯০ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত গ্রামীণ ব্যাংকের নানা খতিয়ান ধ্বংস ও বিলুপ্ত করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে এম সাইফুল মজিদ। শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি। তিনি বলেন, ১৯৯০ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত গ্রামীণ ব্যাংকের বিভিন্ন খতিয়ান হারিয়ে গেছে। ড. ইউনূস যাওয়ার আগে এসব ধ্বংস ও বিলুপ্ত করে দিয়ে গেছেন। অধ্যাপক সাইফুল মজিদ বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ৫১-৫২টি। প্রতিষ্ঠানের মালিক সরকার এবং ঋণদাতা জনগণ। ড. ইউনূসের কোনো ধরনের মালিকানা বা শেয়ার নেই। ‘গ্রামীণ টেলিকম, গ্রামীণ কল্যাণ, গ্রামীণ ফান্ড, গ্রামীণ মৎস্য ফাউন্ডেশন, গ্রামীণসামগ্রী, গ্রামীণ উদ্যোগ ও গ্রামীণ শক্তি; এই ৭টি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও পরিচালনা পর্ষদ গঠন করেছে গ্রামীণ ব্যাংক। গ্রামীণ টেলিকম, গ্রামীণ কল্যাণ, গ্রামীণ ফান্ড- এই ৩টি কোম্পানি থেকে ড. ইউনূসের চেয়ারম্যান পদের মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। এখন নতুন করে চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যোগ করেন সাইফুল মজিদ। এর আগে বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সংবাদ সম্মেলন করে ড. মুহাম্মদ ইউনূস অভিযোগ করেন, গ্রামীণ ব্যাংক তাদের ৮টি প্রতিষ্ঠান জবরদখল করেছে। তবে তার এ অভিযোগ সম্পূর্ণ অসত্য ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে গ্রামীণ ব্যাংক।
১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

ফ্রান্সে শহীদ মিনারের মালিকানা দাবি করে উকিল নোটিশ
ফ্রান্সের তুলুজে নির্মিত প্রথম স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণের ৩ বছর পর হঠাৎ শহিদ মিনারের মালিকানা দাবি করে উদ্যোক্তাদের বিরুদ্ধে মামলার হুমকিসহ উকিল নোটিশ পাঠিয়েছেন ভাস্কর নভেরা আহমেদ এর স্বামী দো ব্রোন গ্রেগোয়ার।  বুধবার (৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় প্যারিসে আয়েবা সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে উকিল নোটিশের বিষয়টি জানান শহীদ মিনারের উদ্যোক্তা ফখরুল আকম সেলিম ও আয়েবার মহাসচিব কাজী এনায়েত উল্লাহ।  সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করে শহীদ মিনারের উদ্যোক্তা ফখরুল আকম সেলিম বলেন, নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে শহীদ মিনারের স্বত্বাধিকারীর বিনা অনুমোতিতে বেআইনিভাবে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। গত ১৮ জুলাই ২০২৩ ইং সালে তুলুজের মেয়র জন লুক মুদেনকে এ ব্যাপারে নোটিশ পাঠান ভাস্কর নভেরা আহমেদ এর স্বামী দো ব্রোন গ্রেগোয়ার । পরবর্তীতে একই ব্যাক্তি শহীদ মিনারের উদ্যোক্তা ফখরুল আকম সেলিমকে একইভাবে গত ১৫ ডিসেম্বর উকিল নোটিশ পাঠান।  শহীদ মিনারের অন্যতম উদ্যোক্তা কাজী এনায়েত উল্লাহ বলেন, একুশ মানে মাথা নত না করার গৌরবময় ইতিহাস। শহীদ মিনার আমাদের বাঙ্গালীর সংগ্রাম, শোক, শপথ ও স্বাধীন সার্বভৌমত্বের প্রতীক। তুলুজে স্থায়ী শহীদ মিনার প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ৩ বছর পর ভাষ্কর নভেরা আহমেদর স্বামী উল্লেখ করে যিনি শহীদ মিনারের একক মালিকানা দাবি করে উকিল নোটিশ পাঠিয়েছেন তার উদ্দেশ্য কী, তার পেছনে আন্তর্জাতিক কোনো চক্রান্ত রয়েছে কি না তা আমরা খতিয়ে দেখছি। শহীদ মিনার ও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে কোনো ধরনের অপশক্তি, চক্রান্ত রুখে দিতে আমরা বদ্ধ পরিকর। বিশ্বব্যাপী শহীদ মিনার নির্মাণের প্রক্রিয়ায় আমাদের সহযাগীতা অব্যাহত থাকবে।  সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ফ্রান্স আওয়ামী লীগের প্রধান উপদেষ্টা নাজিম উদ্দিন আহমেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক নৌ কমান্ডো এনামুল হক, ফ্রান্স আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি মো. আবুল কাশেম, উপদেষ্টা সালেহ আহমদ চৌধুরী, ফ্রান্স আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আলী আযম,আয়েবার যুগ্ম মহাসচিব শরীফ আল মমিন,প্যারিস শহীদ মিনারের অন্যতম উদ্যোক্তা টি এম রেজা, সহকারী ট্রেজারার তাপস বড়ুয়া রিপন, একুশ উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব এমদাদুল হক স্বপন, বাংলাদেশি কমিউনিটি অ্যাসোসিয়েশন তুলুজ ফ্রান্সের সিনিয়র সহসভাপতি তাজিম উদ্দিন খোকন, সাধারন সম্পাদক শাকের চৌধুরী, ফ্রান্স আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আসাদুজ্জামান সুমন, কামাল সিকদার, কামাল পাশা প্রমুখ।
০৫ জানুয়ারি, ২০২৪

ফ্রান্সে শহীদ মিনারের মালিকানা দাবি করে উকিল নোটিশ
ফ্রান্সের তুলুজে নির্মিত প্রথম স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণের ৩ বছর পর হঠাৎ শহীদ মিনারের মালিকানা দাবি করে উদ্যোক্তাদের বিরুদ্ধে মামলার হুমকিসহ উকিল নোটিশ পাঠিয়েছেন ভাস্কর নভেরা আহমেদের স্বামী দো ব্রোন গ্রেগোয়ার ।  বুধবার (৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় প্যারিসে আয়েবা সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করা হয়। উকিল নোটিশের বিষয়টি তুরে ধরেন শহীদ মিনারের উদ্যোক্তা ফখরুল আকম সেলিম ও আয়েবার মহাসচিব কাজী এনায়েত উল্লাহ। সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করে শহীদ মিনারের উদ্যোক্তা ফখরুল আকম সেলিম। তিনি বলেন, বিনা অনুমোতিতে বেআইনিভাবে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। এর আগে গত বছরের ১৮ জুলাই তুলুজের মেয়র জন লুক মুদেনকে এ ব্যাপারে নোটিশ পাঠান ভাস্কর নভেরা আহমেদের স্বামী দো ব্রোন গ্রেগোয়ার । পরবর্তীতে একই ব্যাক্তি শহীদ মিনারের উদ্যোক্তা ফখরুল আকম সেলিমকে একইভাবে গত ১৫ ডিসেম্বর উকিল নোটিশ পাঠান।  শহীদ মিনারের অন্যতম উদ্যোক্তা কাজী এনায়েত উল্লাহ বলেন, একুশ মানে মাথা নত না করার গৌরবময় ইতিহাস। শহীদ মিনার আমাদের বাঙালির সংগ্রাম, শোক, শপথ ও স্বাধীন সার্বভৌমত্বের প্রতীক। এ ঘটনার পেছনে আন্তর্জাতিক চক্রান্ত রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হবে। শহীদ মিনার ও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে কোন ধরনের অপশক্তি, চক্রান্ত রুখে দিতে আমরা বদ্ধপরিকর। বিশ্বব্যাপী শহীদ মিনার নির্মাণের প্রক্রিয়ায় আমাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।  সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ফ্রান্স আওয়ামী লীগের প্রধান উপদেষ্টা নাজিম উদ্দিন আহমেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক নৌ কমান্ডো এনামুল হক, ফ্রান্স আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি মো. আবুল কাশেম, উপদেষ্ঠা সালেহ আহমদ চৌধুরী, ফ্রান্স আওয়ামীলীগের সহসভাপতি আলী আযম, আয়েবার যুগ্ম মহাসচিব শরীফ আল মমিন,প্যারিস শহীদ মিনারের অন্যতম উদ্যোক্তা টি এম রেজা, সহকারী ট্রেজারার তাপস বড়ুয়া রিপন, একুশ উদযাপন পরিষদের সদস্যসচিব এমদাদুল হক স্বপন, বাংলাদেশি কমিউনিটি অ্যাসোসিয়েশন তুলুজ ফ্রান্সের সিনিয়র সহসভাপতি তাজিম উদ্দিন খোকন, সাধারন সম্পাদক শাকের চৌধুরী, ফ্রান্স আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আসাদুজ্জামান সুমন, কামাল সিকদার, কামাল পাশা প্রমুখ।
০৪ জানুয়ারি, ২০২৪

একটি গাছের মালিকানা পেতে প্রতিবেশীকে হত্যা করলেন অভিনেতা!
হত্যার অপরাধে গ্রেপ্তার হয়েছেন ‘মহাভারত’ খ্যাত অভিনেতা ভূপিন্দর সিং। তার হাতে খুন হয়েছেন গোবিন্দ সিং নামে এক তরুণ। তারা পরস্পরের প্রতিবেশী ছিলেন। নিহত তরুণের সঙ্গে গাছকাটা নিয়ে বিরোধ ছিল অভিনেতার। ভারতের উত্তরপ্রদেশের বিজনোরে ঘটেছে এ ঘটনা। খবর এনডিটিভির। জানা যায়, রাগের মাথায় নিজের লাইসেন্সপ্রাপ্ত বন্দুক থেকে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে বসেন অভিনেতা ভূপিন্দর সিং। এ সময় তাৎক্ষণিক নিহত হন প্রতিবেশী গোবিন্দ। নিহতের মামা অভিনেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয় ভূপিন্দরকে। অভিযুক্ত অভিনেতার সহযোগীরা পলাতক আছেন। পুলিশ তাদের খুঁজছে। ভারতের উত্তরপ্রদেশের কুয়ানখেদা গ্রামের বাসিন্দা ভূপিন্দর। সেখানে তার একটি খামারবাড়ি আছে। সেটির পাশেই প্রতিবেশী গুরদীপ সিংয়ের বাড়ি। সেখানে একটি ইউক্যালিপট্যাস গাছ ছিল। গাছটির মালিকানা নিয়ে ওই বাড়ির মালিকের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় ভূপিন্দরের। একপর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। তখন লাইসেন্সধারী বন্দুক এনে গুলি চালান ভূপিন্দর। এতে গুরদীপ সিং, তার স্ত্রী মীরাবাই এবং এক ছেলে বুটা সিং গুরুতর আহত হন। ঘটনাস্থলেই গুরদীপ সিংয়ের ২২ বছর বয়সী ছেলে গোবিন্দ সিংয় মারা যায়। আহতদের জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই ঘটনায় অভিনেতার বিরুদ্ধে মামলা হয়। টিভি শো ‘জয় মহাভারত’ দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন ভূপিন্দর।। এ ছাড়াও ‘৮৫৭ ক্রান্তি’, ‘ইয়ে পেয়ার না হোগা কাম’, ‘মধুবালা—এক ইশক এক জুনুন’, ‘এক হাসিনা থি’, ‘তেরে শেহের মে’, ‘কালা টিকা’ ও ‘রিশতেঁ কা চক্রব্যূহ’র মতো টিভি ধারাবাহিকে অভিনয় করতে দেখা গেছে তাকে। ‘সোচ এল’ ও ‘যুবরাজ’-এর মতো জনপ্রিয় হিন্দি সিনেমায়ও অভিনয় করেছেন। ১৯৯৮ সালে ‘শাম ঘনশাম’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বলিউডে কাজ শুরু করেন তিনি।
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৩

চ্যাটজিপিটির মালিকানা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআইয়ের নতুন সিইও মুসলিম নারী
আলোচিত চ্যাটজিপিটির মালিকানা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআইয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) স্যাম অল্টম্যানকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। তার স্থলে নিয়োগ পেয়েছেন ৩৫ বছর বয়সী মীরা মুরাতি নামের এক মুসলিম নারী। তিনি প্রতিষ্ঠানটির প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্যদ তাকে এ পদে নিয়োগ দিয়েছে। খবর রয়টার্সের।  নতুন নিয়োগ পাওয়া এই মুসলিম নারী আলবেনিয়ার এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়াশোনা করেছেন। ডার্টমুথ কলেজে স্নাতকের পড়াশোনা করার সময় একটি হাইব্রিড রিঅ্যাক্টর তৈরি করে সবাইকে অবাক করে দিয়েছেন মীরা। এরপর এনালিস্ট হিসেবে গোল্ডম্যান স্যাকস ব্যাংকে যোগ দিয়েছিলেন। এ ছাড়া এক এরোস্পেস কোম্পানিতে হার্ডওয়্যার প্রোডাক্ট ম্যানেজার হিসেবেও তিনি কাজ করেছেন।  এসব প্রতিষ্ঠান ছাড়াও ইলন মাস্কের সঙ্গে টেসলায় প্রধান সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করেছেন এ মুসলিম নারী। এরপর দালি নামের আর্টিফিশিয়াল আর্টিস্ট প্রকল্পের প্রধান হিসেবে কাজ করেছেন মীরা।  ২০১৮ সালে ওপেনএআইতে যোগ দিয়েছিলেন মীরা। গত বছরই তাকে ওপেনএআইয়ের সিটিও করা হয়েছিল। অন্তর্বর্তীকালীন পরিস্থিতিতে সংস্থার প্রধান হয়ে সংস্থার কর্মীদের হতবুদ্ধি না হয়ে কাজ চালিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।  নতুন দায়িত্ব গ্রহণের পর  কর্মীদের উদ্দেশে একটি মেমো লিখেছেন মীরা। সেখানে তিনি জানান, আমরা এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে রয়েছি। আমাদের এই টুল ব্যাপকভাবে গৃহীত হচ্ছে। ডেভেলপাররা সক্রিয়ভাবে আমাদের প্ল্যাটফর্মে কাজ করছে এবং নানা জিনিস তৈরি করছেন এবং নীতিনির্ধারকরা এই সিস্টেমগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করার সর্বোত্তম উপায়গুলো নিয়ে আলোচনা করছেন। আমাদের তাই এগিয়ে যেতে হবে।  তিনি বলেন, ভবিষ্যতের জন্য আমাদের সামনে একটি সুযোগ রয়েছে। সেখানে যাতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা) এমনভাবে তৈরি করা হয় যা ভালোর জন্যই ব্যবহার করা হয়। তিনি ওপেনএআইয়ে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী সংস্থা মাইক্রোসফটের সঙ্গে তাদের জুটি অক্ষত থাকবে বলেও জানিয়েছেন। এর আগে এক বিবৃতিতে ওপেনএআইয়ের পরিচালনা পর্ষদ জানিয়েছে, যথাযথ পর্যালোচনা প্রক্রিয়া মেনেই স্যামকে চাকরিচ্যুত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি (স্যাম) পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে খোলাখুলি যোগাযোগ করছিলেন না। ফলে প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় পর্ষদের সক্ষমতা বাধাগ্রস্ত হচ্ছিল। ওপেনএআইয়ের পরিচালনা পর্ষদের এমন সিদ্ধন্তের পর এক এক্সবার্তায় স্যাম বলেন, ওপেনএআইয়ে আমার সময়টা বেশ ভালো লেগেছে। ব্যক্তিগতভাবে এটা আমার জন্য পরিবর্তন বয়ে নিয়ে এসেছে। আশার কথা হলো বিশ্বেও এটি পরিবর্তন এনেছে। এমন ধরনের প্রতিভাবান মানুষের সঙ্গে কাজ করতে পেরে আমার বেশ ভালো লেগেছে।
১৮ নভেম্বর, ২০২৩

ব্রিকসের ব্যাংকে ১ শতাংশ মালিকানা পাচ্ছে বাংলাদেশ
ব্রিকসের নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের ১ শতাংশ শেয়ার (মালিকানা) পাচ্ছে বাংলাদেশ। এ লক্ষ্যে নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, ২০২৩-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। সভা শেষে বিকেলে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন এ তথ্য জানান। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আমরা এই ব্যাংকের সদস্য হয়েছি এবং আমরা মনে হয় এক শতাংশ শেয়ার পাবো। এ রকম বহুজাতিক ব্যাংকের যদি এখানে কাজ শুরু করতে হয়, তাহলে ফাইনের কভারেজ তাদের দিতে হয়। ইতোমধ্যে ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, এডিবির কিছুটা দেওয়া আছে। ঠিক সে রকমভাবে নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকে কভারেজ দেওয়ার জন্য এই আইনের খসড়া  ইআরডিতে উপস্থাপন হয়েছে এবং সেই আইনের খসড়ায় ক্যাবিনেট চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। তিনি বলেন, এই আইনের মাধ্যমে এই ব্যাংকের যে অর্থ বাংলাদেশ নেবে, সেটি সংযুক্ত তহবিলে যুক্ত হবে, বাংলাদেশ ব্যাংকে সেটি বলা থাকে। আর একটি হলো, বাংলাদেশ ব্যাংকে এনডিবির যতো অর্থ এবং পরিসম্পদ... তার আমানতদার হবে বাংলাদেশ ব্যাংক। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, এই আইনের আওতায় যেসব স্টাফ থাকে, কনসালটেন্ট থাকে তাদের বেতন-ভাতাদি, তারা যে সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন, ট্যাক্স ফ্রি, সেগুলো তারা পাবেন। বিশেষ করে কোনো আমদানি পণ্য যদি তারা ইমপোর্ট করেন, তাদের ব্যবহারের জন্য, সেগুলো তারা ভ্যাট ও ট্যাক্স ফ্রি পাবেন। তারা যখন চলে যাবেন ওই জিনিস ফেরত নিয়ে যেতে হবে। যদি ফেরত না নিয়ে বাংলাদেশে তা বিক্রি করতে চান, তাহলে আমাদের আইন অনুযায়ী নির্ধারিত ট্যাক্স বা ভ্যাট দিতে হবে।   মাহবুব হোসেন বলেন, আমাদের প্রায় ৮০০ মিলিয়ন ডলারের দুটি প্রজেক্ট চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। এই আইন পাস হলে, সেই প্রজেক্টের অর্থায়ন হয়তো আমরা পাবো, আশা করছি। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, কোনো ইন্টারন্যাশনাল ব্যাংকের মাধ্যমে, যেটিকে আমরা ডেভেলপমেন্ট পার্টনার বলি, তারা যদি কোনো দেশে কার্যক্রম চালাতে চায়, সে দেশে একটি আইনি কাঠামোর মধ্যে তাদের কিছু প্রটেকশন দিতে হয়। সেই প্রটেকশন দেওয়ার জন্য এই আইন। সাধারণত আমাদের দেশে এ ধরনের যত কোম্পানি আছে, ব্যাংক আছে প্রত্যেকটিকে এরকম প্রটেকশন দেওয়া হয়েছে। বিশ্বব্যাংক, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, ইসলামী ডেভেলপমেন্ট ব্যাংককে দেয়া হয়েছে। সব সময় এটি দেওয়া হয়। তারই ধারাবাহিকতাই এটি দিতে হচ্ছে। প্রকল্প দুটির বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, একটি প্রকল্প হলো ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ গ্যাস পাইপলাইন প্রকল্প। আরেকটি হলো বসিলায় ওয়াসার পানি সরবরাহ প্রকল্প।   গত ১৭ জুলাই অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকে যোগ দিতে ‘অ্যাগ্রিমেন্ট অন দ্য নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক’ শীর্ষক চুক্তি অনুসমর্থনের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়।
২৮ আগস্ট, ২০২৩

বিড়ালের মালিকানা নিয়ে তুলকালাম
একটি পোষ্য বিড়ালের মালিকানা নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে লঙ্কাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এই বিবাদটি নিজেরা সমঝোতা করতে না পারায় অবশেষে অভিযোগটি গিয়েছে আইজিপির কাছে। জানা যায়, অসুস্থ অবস্থায় একটি বিড়াল ছানাকে পাঁচ মাস আগে কোলে তুলে নিয়েছিলেন রিজিয়া বেগম নামে এক গৃহিণী। বিড়াল ছানাটিকে যত্ন করে বড় করেন তিনি। নাম রাখেন ‘লিওন’। ধীরে ধীরে মায়া যেমন বাড়তে থাকে, তেমনি বাড়তে থাকে লিওনের চঞ্চলতা, দুষ্টুমি। রিজিয়া বেগমের মনের ভাষাও যেন বুঝতে শিখে যায় লিওন। খাবার খেতে টেবিলে বা সোফায় বসা, নিজে নিজে বাথরুমে যাওয়া, ঘুম থেকে জাগার সময়, নামাজের সময় কর্তাকে ডেকে তোলার কাজও করে লিওন। ডাকলে মিউ মিউ শব্দে দ্রুত সাড়া দেওয়া লিওন বেশ জনপ্রিয় পুরো ভবনের বাসিন্দাদের কাছে। আকস্মিকভাবে একদিন লিওনের মালিকানার দাবি তোলেন ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার কনস্টেবল মো. অনিক। রিজিয়া বেগম যে ভবনে থাকেন ওই ভবনের একটি ফ্ল্যাটে থাকেন কনস্টেবল অনিক। লিওনের পালিতা ভুক্তভোগী নারী রিজিয়া বেগম জানান, এই বিল্ডিংয়ে একটি ফ্ল্যাটের বাসিন্দা পুলিশ কনস্টেবল অনিকের দাবি আমাকে খুবই হতবিহ্বল করেছে। তার মালিকানা দাবিতে আমি তাজ্জব। তার এ দাবি আমার একটি মেয়েকে কেড়ে নেওয়ার চেষ্টারই নামান্তর। রিজিয়ার পরিবারের দাবি, লিওনকে না দিলে তাদের ক্ষতি করা এবং বড় ধরনের বিপদ ঘটানোর হুমকি দিয়েছেন কনস্টেবল অনিক ও তার পরিবার। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় কর্মরত কনস্টেবল মো. অনিকের ক্ষমতার অপব্যবহার, বিড়াল লিওনকে বল প্রয়োগ করে নিয়ে যেতে চাওয়া ও নানা হুমকির প্রতিকার চেয়ে গত ১৩ আগস্ট জেলা পুলিশ কার্যালয়, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি ও পুলিশ সদর দপ্তরের আইজিপিস কমপ্লেইন মনিটরিং সেলে লিখিত অভিযোগ করেছেন রিজিয়া বেগম।  দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহ্জামান জানান, এ ব্যাপারে আমার কিছু জানা নেই। এ সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ কেউ করেননি। তবে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান জানিয়েছেন, এ ধরনের একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল অনিক বলেছেন, বিড়াল ছানাটি আমাদেরই। এমন না আমি বিড়াল খুব পছন্দ করি। উনি পালার কথা বলে বিড়ালটি মাঝে গ্রামে পাঠিয়েছিলেন। সেটি জেনেই আমার স্ত্রী কথা বলতে গেলে কথাকাটাকাটি হয়েছিল। আমিই পরে বলেছি বিড়াল ফেরত দিতে হবে না। কিন্তু বিষয়টি অনেক বড় করা হয়েছে। হুমকির অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। ওই ভবনে আরও অনেকেই থাকেন। কেউ যদি প্রমাণ দিতে পারে, তদন্তে যদি আমি দোষী হই, শাস্তি মাথা পেতে নেব।
১৭ আগস্ট, ২০২৩

নারী কৃষকের ঋণে বাধা জমির মালিকানা
পাবনার ঈশ্বরদীর বক্তারপুর গ্রামের ঝর্ণা খাতুনের স্বামী পেশাগত কারণে ভিন্ন শহরে থাকেন। পারিবারিক জমিজমায় চাষাবাদের কাজটা তাই ঝর্ণাকেই করতে হয়। দীর্ঘদিন একটি এনজিওর সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন তিনি। নিজের আয়ে পরিবারের জন্য কয়েক বিঘা জমিও কিনেছেন। কিন্তু সব জমির কাগজপত্র স্বামীর নামে থাকায় ব্যাংক থেকে কৃষিঋণ পাচ্ছেন না তিনি। ঝর্ণা খাতুন জানান, ঋণের জন্য বারবার যোগাযোগ করলেও ব্যাংক থেকে সাড়া পাইনি। পুরুষ কৃষকরা ব্যাংকের ঋণ ছাড়াও সরকারি-বেসরকারি নানা সহায়তা পান। অনেক সময় সেসব সহায়তার জন্য লটারির মাধ্যমে নাম ঠিক করা হয়। কিন্তু সেখানে নারীদের বাদ রাখা হয়। শুধু ঝর্ণা খাতুন নন, সারা দেশে বেশিরভাগ নারী কৃষকের অবস্থাই এমন। কৃষিতে গ্রামীণ নারীর অংশগ্রহণ দিন দিন বাড়লেও ব্যাংকে ঋণ পেতে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন তারা। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) শ্রমশক্তি জরিপ ২০১০ অনুযায়ী, কৃষিতে গ্রামীণ নারীর অংশগ্রহণের হার ছিল ৬৪ দশমিক ৮৪ শতাংশ। ২০১৭ সালের জরিপে তা বেড়ে ৭২ দশমিক ৬ শতাংশে দাঁড়ায়। কৃষিতে নারীর অবদান: জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) ‘কৃষি ব্যবস্থায় নারীর ভূমিকা ২০২৩’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের কৃষিতে ২০০৫ সালে নারীর ভূমিকা ছিল ৩৬ দশমিক ২ শতাংশ। ২০১৯ সালে তা ৯ দশমিক ১ শতাংশ বেড়ে ৪৫ দশমিক ৩ শতাংশে দাঁড়ায়। কৃষিতে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধির হারের দিক থেকে বিশ্বে এটিই সর্বোচ্চ। পুরুষরা চাকরি ও ব্যবসার দিকে বেশি ঝুঁকে যাওয়ায় কৃষিতে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে বলে মনে করছেন গবেষকরা। বিভিন্ন গবেষণা বলছে, চাষের জন্য জমি উপযোগী করে গড়ে তোলা থেকে শুরু করে ফসল ঘরে তোলা এবং বাজারজাতকরণের আগ পর্যন্ত কৃষি খাতে ২১ ধরনের কাজের মধ্যে ১৭টিতে নারীর সক্রিয় অংশগ্রহণ রয়েছে। বলা হয়, দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। এতে দেশের গ্রামীণ নারীদের রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ অবদান। শস্য উৎপাদন থেকে প্রক্রিয়াজাতকরণ, সংরক্ষণ ও বাজার ব্যবস্থাপনায় নারীর অংশগ্রহণ পুরুষের প্রায় কাছাকাছি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে পুরুষের চেয়ে নারীদের অবদান ১৫ থেকে ২০ শতাংশ বেশি। পারিবারিক গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগি পালন, মৎস্য চাষ এবং শাকসবজি-ফলমূল উৎপাদনে মূল ভূমিকা তাদের। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস কালবেলাকে বলেন, ‘সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপেই কৃষিতে নারীর সংখ্যা বাড়ছে। বিভিন্ন সময়ে চালু হওয়া সরকারের বাণিজ্যিক কৃষি কর্মসূচি ও প্রকল্পগুলোতে প্রশিক্ষণের জন্য ৩০ শতাংশ নারী থাকা বাধ্যতামূলক। প্রশিক্ষণ পেয়ে নারীরা কৃষিতে যুক্ত হতে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। বসতবাড়ির আঙিনায় ও আশপাশে ফল উৎপাদন, হাঁস-মুরগি পালনে উৎসাহিত করার কারণেও নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে।’ কৃষিঋণে নারী কৃষকের বঞ্চনা: কৃষি অর্থনীতিতে নারীরা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখলেও কোনো ক্ষেত্রেই এর স্বীকৃতি বা মূল্যায়ন নেই। রাষ্ট্রীয় প্রণোদনার অংশ হিসেবে কৃষক কার্ড বিতরণ করা হলেও সেই তালিকায় নারী কৃষকের জায়গা হয় না। একইভাবে কৃষিঋণ থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন নারী কৃষকরা। ফলে প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে কৃষি উৎপাদনে কাঙ্ক্ষিত ভূমিকা রাখতে পারছেন না তারা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মূলত জমির মালিকানা না থাকার কারণেই ব্যাংকগুলো নারী কৃষককে ঋণ দিতে চায় না। কৃষি কার্ড, ভর্তুকিসহ অন্যান্য সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখে একই প্রতিবন্ধকতা। ব্যক্তি উদ্যোগে ফসলের জন্য জমি লিজ ও বর্গা নেওয়ার ক্ষেত্রে চুক্তি হয় পুরুষের সঙ্গে। ফলে এক পরিবারের দুজনে মিলে কাজ করলেও পুরুষ নেতৃত্বের মধ্য দিয়েই কৃষি কর্মকাণ্ডে যুক্ত হন নারী। মূল বাধা জমির মালিকানা: জানা গেছে, দেশে কৃষকদের ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ কাগজপত্রের চাহিদা না থাকলেও জমির দলিল ও খাজনা পরিশোধ বাধ্যতামূলক। কিন্তু দেশের যে কটি খাতে চরম বিশৃঙ্খলা আছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে জমি-জমার রেকর্ড। নারীদের ক্ষেত্রে বিষয়টি আরও বিশৃঙ্খল। এ ছাড়া সমাজেও নারীকে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার প্রবণতা আছে। অনেক ক্ষেত্রে নারীকে জমির মালিকানা বুঝিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রেও অনীহা আছে। ফলে অনেক নারী জমির প্রকৃত ও বৈধ দখলদার হওয়া সত্ত্বেও শুধু দলিলের অভাবে ঋণ নিতে পারেন না। রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের (রাকাব) দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট শাখার ম্যানেজার মো. হাতেম আলী বলেন, ‘ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে ব্যাংক সব সময় নারীদের প্রাধান্য দিয়ে থাকে। কিন্তু তারা অনেক সময় জমিজমার কাগজপত্র দেখাতে না পারায় ঋণ দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।’ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্যাংকের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও প্রান্তিক নারী কৃষকরা কৃষিঋণ পাচ্ছেন না। কৃষিঋণ ছাড়াও কৃষকদের দেওয়া সরকারি অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা থেকেও তারা বঞ্চিত। এই পরিস্থিতি অবহিত করা হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও বেসরকারি সংস্থা উন্নয়ন সমুন্নয়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ড. আতিউর রহমান কালবেলাকে বলেন, কৃষি এ দেশের অর্থনীতির রক্ষাকবচ। কৃষি ভালো করলে পুরো অর্থনীতি ভালো চলে। এই খাতে নারীর অবদান যত বাড়বে, অর্থনীতিও তত চাঙ্গা হবে। কৃষি উৎপাদনে নারীরা যাতে আরও বেশি অবদান রাখতে পারেন, সেজন্য সব ধরনের সহায়ক পদক্ষেপ নিতে হবে। নারী কৃষক তার প্রয়োজন অনুযায়ী ঋণ পাচ্ছেন কিনা—সে বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জোরালোভাবে মনিটরিং করতে হবে। নারী কৃষকদের নামে জমির দলিল না থাকায় তারা ঋণ পাচ্ছেন না—এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংক আরও সহজ করে দিতে পারে। এজন্য বিশেষ নীতিমালা জারি করতে পারে। যেমন, নারীদের নামে জমির দলিল না থাকলেও তাদের আয়-রোজগার আছে কি না, তারা নিয়মিত লেনদেন করেন কি না, মোবাইল ব্যাংকে তাদের নিয়মিত লেনদেন হয় কি না, তারা ঋণের টাকা ফেরত দিতে পারবেন কি না—সেটা যদি বোঝাতে পারেন, তাহলে তো তাকে ঋণ দিতে ব্যাংকগুলোর কোনো আপত্তি থাকা উচিত নয়। এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে কিছু গাইডলাইন তৈরি করতে হবে। সেইসঙ্গে কৃষকদেরও সচেতন করতে হবে যে, এভাবে ঋণের আবেদন করলে সেটা পাওয়া যাবে। এর মাধ্যমে হয়তো খুব বড় ঋণ দেওয়া যাবে না, তবে ছোট অঙ্কের ঋণ দিতেই পারে।’ সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান কালবেলাকে বলেন, ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো গ্যারান্টি চায়। শুধু জমির দলিলকেই গ্যারান্টি হিসেবে বিবেচনা করা ঠিক নয়। কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও বর্তমানে গ্রামীণ নারীরাও শিক্ষিত হচ্ছেন। তারা বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। জমির দলিলের পরিবর্তে এসব প্রশিক্ষণের সার্টিফিকেটকেও কো-লেটারেল হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। তিনি বলেন, ‘শুরুতেই কেউ বড় অঙ্কের ঋণ নেন না। প্রথমে ছোট ছোট ঋণ নেন। এসব লেনদেন দেখেও ব্যাংকগুলো সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এ বিষয়ে সরকারকেই নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে তাতে বেসরকারি খাত এবং ব্যাংকগুলোকে যুক্ত করতে হবে।’ বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালায় নেই বিশেষ ব্যবস্থা: প্রতিবছরই কৃষি ও পল্লি ঋণ নীতিমালা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সর্বশেষ ২০২৩-২৪ অর্থবছরের কৃষি নীতিমালায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অর্থনীতি প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে কৃষিনির্ভর। টেকসই উন্নয়নের অন্যতম লক্ষ্য ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সমাজ গঠনে কৃষি খাত সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখতে পারে। সেই লক্ষ্যে চলতি অর্থবছরে ৩৫ হাজার কোটি টাকা কৃষিঋণ বিতরণে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। আর গত (২০২২-২৩) অর্থবছরে ৩৬ লাখ ১৮ হাজার ৫৪৫ জন কৃষককে মোট ৩২ হাজার ৮২৯ কোটি ৮৯ লাখ টাকা ঋণ দেওয়া হয়। কৃষিঋণ নীতিমালায় এ খাতে পর্যাপ্ত ঋণ সরবরাহ নিশ্চিত করা, কৃষিপণ্যে বৈচিত্র্যকরণসহ নানা বিষয়ে বলা হলেও নারী কৃষকদের বিষয়ে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এমনকি নারী কৃষকদের ব্যাংক ঋণ দিতেও তেমন কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। এই বিষয়ে সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, ‘নীতিমালায় নারীদের কৃষিঋণ দেওয়ার বিষয়ে অবশ্যই সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা থাকা উচিত। আগে তো সেটা ছিল। বিশেষ করে পুনঃঅর্থায়ন তহবিলের অন্তত ১৫ শতাংশ ঋণ নারী কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা বাধ্যতামূলক ছিল।’ জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষিঋণ বিভাগের নির্বাহী পরিচালক মো. নুরুল আমীন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী কৃষি খাতে ঋণ বিতরণ বাড়াতে ব্যাংকগুলোকে সবসময় নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। তবে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে নারী-পুরুষকে আলাদা করে দেখা হয় না। প্রকৃত কৃষক যেন ঋণ পায়, সে বিষয়ে জোরালোভাবে কাজ করা হচ্ছে।’ নারী কৃষকদের ব্যাংক ঋণের সুযোগ সম্পর্কে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব কৃষককের প্রয়োজন অনুযায়ী তাদের ঋণের চাহিদা নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মেনেই নারী কৃষকসহ পুরুষ কৃষকদেরও তালিকা করে ব্যাংকগুলোতে পাঠানো হয়েছে। সব ফসলে কৃষকদের চাহিদা অনুযায়ী ঋণ নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। এর পাশাপাশি প্রণোদনার আওতায় প্রধানমন্ত্রী ৪ শতাংশ সুদে যে বরাদ্দ রেখেছেন, সেখানেও গত দুই বছরে বিভিন্ন জায়গায় মেলা করে নারী-পুরুষ উভয় কৃষকের ঋণ প্রাপ্তি নিশ্চিত করা হয়েছে। সেখানে ৮-১০টি ব্যাংককে একসঙ্গে করে একশ-দেড়শ কোটি টাকার চেক বিতরণ করা হয়েছে।’ দেশের কৃষি খাতে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে নারী কৃষকসহ প্রকৃত কৃষক ও খামারিদের হালনাগাদ তালিকা অনুযায়ী প্রণোদনা, বিনা সুদে হয়রানিমুক্ত ঋণ, সরকারি সহায়তা প্রদানসহ বার্ষিক পরিকল্পনা গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানান বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, দেশের মোট জনগোষ্ঠীর অর্ধেক যেখানে নারী, সেখানে তাদের উন্নয়ন ছাড়া দেশের সার্বিক উন্নয়ন অসম্ভব। কৃষিনির্ভর অর্থনীতির দেশে কৃষিকে যেমন উপেক্ষা করার সুযোগ নেই, তেমনি এ খাতে নারীর অবদানও অস্বীকার করার উপায় নেই। কৃষি খাতে নিয়োজিত নারী শ্রমিকের স্বীকৃতি ও তাদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে পারলে এ কাজে নারীরা আরও আগ্রহী হবেন এবং দেশে কৃষির উৎপাদন আরও বাড়বে। এজন্য কৃষিঋণের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার অন্তত ৩০ শতাংশ ঋণ নারী কৃষককে দেওয়ার দাবি জানান তারা।
১০ আগস্ট, ২০২৩
X