মুক্তিপণ দেওয়ার দৃশ্য সিনেমার হতে পারে
সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজের নাবিকদের মুক্ত করতে ব্যাগে করে মুক্তিপণ দেওয়ার ভিডিও চিত্র নিয়ে সন্দেহ পোষণ করেছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, এটা কোনো সিনেমার দৃশ্য হতে পারে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এটা এখন কোন সিনেমার ছবি, আমি তো জানি না। এমন ছবি তো আমরা অনেক চলচ্চিত্রে দেখি। কোন ছবি কোথায় গিয়ে কীভাবে যুক্ত হয়েছে, কোনটার সঙ্গে কোনটা এডিট হয়েছে আমি জানি না।’ তিনি বলেন, জানতাম পরিত্যক্ত জিনিস পানিতে ফেলে। এত দামি জিনিস পানিতে ফেলে জানা ছিল না। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মুক্তিপণ প্রসঙ্গ প্রশ্নে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল ২৩ জন নাবিককে নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনা এবং সেটা সম্ভব হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবসময় এ বিষয়ে সজাগ ছিলেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন অধিদপ্তর, আন্তর্জাতিক নৌ উইংগুলো কাজ করেছে। দ্রুত আমরা নাবিকদের মুক্ত করতে পেরেছি। এ অর্জন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। মুক্তির পর জাহাজটি এখন দুবাইয়ের উদ্দেশে যাচ্ছে জানিয়ে নৌপ্রতিমন্ত্রী বলেন, সেটি ১৯ বা ২০ এপ্রিল দুবাইয়ে পৌঁছাবে। এর পরের পুরো বিষয়টি জাহাজ এবং নাবিকদের সঙ্গে সমঝোতার বিষয়। নাবিকরা কত দিনের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়ে গেছে, সেই চুক্তি তারা বহাল রাখবে, নাকি তারা ফিরে আসবে। খালিদ মাহমুদ চৌধুরী আরও বলেন, তবে মালিকরা গতকাল (রোববার) খুব ভালো একটি কথা বলেছে, আমি শুনেছি তারা যদি চায় বাংলাদেশে ফিরে আসবে, তবে তাদের বিমানে করে আনা হবে। সেখানে তাদের রিপ্লেস যারা হবে, সেটা নিয়েও হয়তো তারা কাজ করছে। কীভাবে সমুদ্রপথ নিরাপদ করা যায়, সে লক্ষ্যে বাংলাদেশ একটি প্রস্তাব তৈরির কাজ করছে বলে জানান নৌপ্রতিমন্ত্রী। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক নৌ-সংস্থা (আইএমও) নির্বাচিত ‘সি’ ক্যাটাগরির সদস্য জানিয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে বিশ্বের ১৭৪টি দেশ আইএমওর সদস্য। বাণিজ্যিক জাহাজগুলো যাতে বিভিন্ন ধরনের সংকটের সময়ে সমুদ্রপথে চলাচল করতে পারে, সে লক্ষ্যে একটি প্রস্তাব তৈরির কাজ চলছে। শিগগিরই সেটি আইএমও-তে পাঠানো হবে। সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে দুর্ঘটনার বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ঈদের দিন ঢাকার সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে লঞ্চের রশি ছিঁড়ে পাঁচজন নিহত হওয়ার ঘটনায় সার্ভেয়ারদের দুর্বলতা থাকলে তাদেরও শাস্তির আওতায় আনা হবে। অভ্যন্তরীণ নৌপথে যত ঘটনা ঘটেছে, প্রতিটির জন্য আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।
১৬ এপ্রিল, ২০২৪

বাংলাদেশি জাহাজ জিম্মি / মুক্তিপণ নিয়ে উপকূলে গিয়েই ৮ জলদস্যু গ্রেপ্তার
বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর ২৩ নাবিক জিম্মির ঘটনায় মুক্তিপণ দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরেই ৮ সোমালিয়ান জলদস্যুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দেশটির উত্তর-পূর্ব ফেডারেল রাজ্য পান্টল্যান্ডের পূর্ব উপকূল থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, জলদস্যুদের গ্রেপ্তারের জন্য আগেই ফাঁদ পেতে রাখা হয়েছিল। দেশটির স্থানীয় সংবাদমাধ্যম গারো অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। গত তিন মাস ধরে জলদস্যুদের ধরার জন্য বিভিন্ন অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে সোমালিয়ার পুলিশ ও উপকূলরক্ষীরা। একাধিক সূত্র অনুসারে জলদস্যুরা আল শাবাব জঙ্গিদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছিল।  পান্টল্যান্ড পুলিশের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তারা বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ছিনতাই করা জলদস্যু দলের ৮ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। অভিযানে জলদস্যুদের দেওয়া মুক্তিপণের টাকা উদ্ধার করা হয়েছে কি না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।  গত ৪ মার্চ আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিকের মাপুটো বন্দর থেকে কয়লা নিয়ে যাত্রা শুরু করে জাহাজটি। ১৯ মার্চ সেটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের হামরিয়াহ বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল। এর মধ্যে ১২ মার্চ দুপুর দেড়টার দিকে ভারত মহাসাগরে জলদস্যুদের কবলে পড়ে জাহাজটি। জাহাজটিতে ৫৫ হাজার টন কয়লা ছিল। জাহাজে থাকা ২৩ নাবিকের সবাই বাংলাদেশি। পরে দস্যুরা মুক্তিপণের জন্য জাহাজের মালিকপক্ষ কেএসআরএম গ্রুপের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ঈদের আগেই জাহাজটির মালিকপক্ষ নানা পর্যায়ে দরকষাকষির পর দস্যুদের সঙ্গে সমঝোতা আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছানোর আভাস দিয়েছিল। এর আগে মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) সচিবালয়ে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, সোমালিয়ায় জলদস্যুর কবলে পড়া বাংলাদেশি ২৩ নাবিককে উদ্ধারের তৎপরতা চলছে। বিষয়টি আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। আশা করি, অল্প কিছুদিনের মধ্যে তাদের সুস্থ অবস্থায় দেশে ফিরিয়ে আনতে পারব। আমাদের একটা লক্ষ্য ছিল- পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে তাদের যেন আনতে পারি। কিন্তু সেই টার্গেটটা পূরণ করা যায়নি। তবে আশা করছি, অল্প কিছু দিনের মধ্যেই তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে পারব। জলদস্যুরা কিছু একটা পাওয়ার জন্য জিম্মি করেছে নাবিকদের। কিন্তু তাদের কত টাকা দিতে হবে এটা বলা যাচ্ছে না। মুক্তিপণ পাওয়ার পর নাবিকসহ বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ছেড়ে দেয় জলদস্যুরা। মুক্তি পাওয়ার পর জাহাজটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল হারমিয়া বন্দরের উদ্দেশে রওনা হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের দুটি যুদ্ধজাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে পাহারা দিয়ে নিয়ে যায়। পান্টল্যান্ড পোস্টের অনলাইনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, পাঁচ মিলিয়ন ডলার মুক্তিপণ আদায়ের পর দস্যুরা জাহাজটি ছেড়ে দিয়েছে। জলদস্যুরা তীরে অবতরণের সময় সেখানে দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নিয়েছিলেন। সোমালিয়ার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ডেইলি সোমালিয়া অনলাইনের এক্স বার্তায় বলা হয়, পাঁচ মিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে জাহাজটি ছেড়ে দিয়েছে জলদস্যুরা। আরেকটি স্থানীয় সংবাদমাধ্যম পান্টল্যান্ড মিররের এক্স বার্তায় স্থানীয় সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হয়, পাঁচ মিলিয়ন ডলার মুক্তিপণ নেওয়ার পর জলদস্যুরা জাহাজটি ছেড়ে দিয়েছে। এরআগে ২০১০ সালের ডিসেম্বরে আরব সাগরে সোমালীয় জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল বাংলাদেশি জাহাজ জাহান মণি। ওই সময় জাহাজের ২৫ নাবিক এবং প্রধান প্রকৌশলীর স্ত্রীকে জিম্মি করা হয়। নানাভাবে চেষ্টার পর ১০০ দিনের চেষ্টায় জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্তি পান তারা।
১৪ এপ্রিল, ২০২৪

মুক্তিপণ জোগাড়ের পর বাবা জানলেন ছেলে বেঁচে নেই
গাজীপুরের শ্রীপুরে অপহরণের পর মুক্তিপণ না পেয়ে এক শিশুর মরদেহ মিলেছে গভীর গজারি বনে। এ ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (১০ এপ্রিল) দুপুর ১২টায় শ্রীপুর থানার ওসি মো. আকবর আলী কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গ্রেপ্তার আসামির নাম মো. রনি মিয়া। তিনি শ্রীপুর উপজেলার গোসিঙ্গা ইউনিয়নের সাভারচালা গ্রামের বাসিন্দা।  নিহত শিশু মো. মেহেদী হাসান মাহিম টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর থানার বেড়িবাইদ গ্রামের মো. আমিনুল ইসলামের ছেলে। আমিনুল পরিবার নিয়ে শ্রীপুর পৌরসভার মাধখলা গ্রামে ভাড়া থেকে দিনমজুরের কাজ করেন। ওসি মো. আকবর আলী বলেন, অপহরণের পর মুক্তিপণ না পেয়ে তাকে গভীর গজারি বনে নিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে ঘাতক রনি। আসামিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মরদেহ উদ্ধারের পর সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আসামি রনি একজন পেশাদার চোর ও অপহরণকারী। তার বিরুদ্ধে আগেও শ্রীপুর থানার মামলা রয়েছে। শিশু মেহেদীর বাবা আমিনুল ইসলাম বলেন, ছেলে নিখোঁজ হওয়ার পর বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করি। আশপাশের লোকজনের মাধ্যমে জানতে পারি, মাহিমকে রনি মিয়ার সঙ্গে দেখা গেছে। পরে রনির বাড়িতে গিয়ে তার খোঁজ পাওয়া যায়নি। এরপর রাতে মেহেদীর মায়ের মুঠোফোনে অজ্ঞাতপরিচয়ে এক ব্যক্তি ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। মুক্তিপণের টাকা জোগাড় করে ফোন দিলে ওই নম্বর বন্ধ পাই। পরে পুলিশ আমার ছেলের মরদেহ উদ্ধার করে। শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ইসমাইল বলেন, গত সোমবার (৮ এপ্রিল) সন্ধ্যার দিকে শ্রীপুর পৌরসভার মাধখলা গ্রাম থেকে মাহিমকে অপহরণ করে ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। এ ঘটনায় মাহিমের বাবা শ্রীপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়। মামলার পর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় শ্রীপুরের কাওরাইদ রেলস্টেশন এলাকা থেকে রনিকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।  তিনি বলেন, আসামি রনি জানায়, মাহিমকে মুক্তিপণের জন্য অপহরণ করা হয়েছে। মাহিম তাদের কাছে এক জায়গায় আছে। পরে রনিকে নিয়ে উপজেলার গোসিঙ্গা ইউনিয়নের মহাখারী বাগানের টেক গ্রামের গজারি বনের ভেতর থেকে বুধবার সকাল ৮টার দিকে মো. মেহেদী হাসান মাহিমের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
১০ এপ্রিল, ২০২৪

চাকরির কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে নির্যাতন, মুক্তিপণ দাবি
দালালের মাধ্যমে লিবিয়ায় যাওয়া রুবেল হোসেনকে সে দেশের অজ্ঞাত স্থানে আটকে রেখে হাত-পা বেঁধে ও মুখে কাপড় গুঁজে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করছে একজন। তখন শুধু গোঙানির শব্দ শোনা যাচ্ছে। এমন একটি ভিডিও বাংলাদেশে রুবেলের শ্যালিকা আক্তারুনের মোবাইল ফোনে পাঠিয়ে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছে। ওই ভিডিওতে রুবেলের চেহারা দেখা গেলেও নির্যাতনকারীর মুখমণ্ডল দেখানো হয়নি। এরপর রুবেলের স্বজন উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। নির্যাতনের শিকার রুবেল হোসেনের বাড়ি বগুড়ার গাবতলীর আমেশ্বপুর নিশিপাড়া গ্রামে। তার শ্যালিকা আক্তারুনের বাড়ি জয়পুরহাটের আক্কেলপুরের তেমারিয়ায়। রুবেলকে লিবিয়ায় পাঠানো দালাল মিজানুর রহমান ওরফে ধলুর বাড়িও তেমারিয়া গ্রামে। আক্তারুন তার ভগ্নিপতি রুবেলকে গ্রামের দালাল মিজানুর ও তার বাবা আব্দুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করে দিয়েছিলেন। এরপর রুবেল নিজেই দালাল মিজানুরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। রুবেল তার জমি বিক্রি করে চার লাখ টাকা দালাল মিজানুরের স্বজনদের দিয়েছিলেন। গত জানুয়ারিতে রুবেল লিবিয়ায় যান। আক্তারুন বলেন, মিজানুর রুবেলকে লিবিয়ায় নিয়ে বসিয়ে রেখেছিল। রুবেলকে ভালো কাজ দেওয়ার কথা বলে ১০ দিন আগে লিবিয়ার আরেকটি জায়গায় নিয়ে যায়। তারা সেখানে রুবেলকে আটকে রেখে মারধর করছে। অচেনা কণ্ঠের এক বাংলাদেশি লিবিয়া থেকে আমাকে কল করে রুবেলের মুক্তির জন্য ১০ লাখ টাকা চেয়েছে। অন্যথায় রুবেলকে হত্যার হুমকি দিয়েছে। তারা ২৭ মার্চ হোয়াটসঅ্যাপে একটি ভিডিও পাঠিয়েছে। তাতে দেখা যায়, একটি ঘরে রুবেলকে আটকে রেখে হাত-পা একসঙ্গে বেঁধে ও মুখে কাপড় গুঁজে লাঠি দিয়ে তাকে মারধর করা হচ্ছে। এ সময় রুবেলকে গোঙাতে শোনা যাচ্ছে। এ ঘটনার পর লিবিয়ায় থাকা দালাল মিজানুরের কাছে বারবার ফোন করে তাকে পাইনি। ঘটনার পর থেকে মিজানুরের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। তার বাবা-মাকে বিষয়টি বলা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, গত শনিবার সকালে আবার আমার ছোট বোন তথা রুবেলের স্ত্রীর কাছে কল করে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়েছে। যখন ফোনে কথা হচ্ছিল তখন পাশ থেকে রুবেল বলছিলেন, টাকা পাঠাও, টাকা পাঠাও, নইলে ওরা আমাকে মেরে ফেলবে। আতঙ্কে আমাদের দিন কাটছে। এ ঘটনার পর গতকাল সোমবার লিবিয়াপ্রবাসী মিজানুরের গ্রামের বাড়ি গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। তেমারিয়াগ্রামে তাদের বাড়ির মূল ফটকে তালা দেওয়া ছিল। তার বাবার মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন করলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। স্থানীয়রা জানান, মিজানুর সৌদি আরব ১০ বছর থাকার পর তিন বছর আগে দেশে ফেরে। তখন সে গ্রামের বাড়িতে মাছ চাষ ও মুরগির খামার করে। দেড় বছর আগে সে লিবিয়ায় যায়। এরপর সে লিবিয়ায় লোকজন নিয়ে যেতে শুরু করে। তার বাবা আব্দুর রহমান ও ছোট ভাই শাহিন লিবিয়ায় পাঠানোর জন্য লোক সংগ্রহ করত। লিবিয়ায় চট্টগ্রামের আনোয়ারার চার তরুণকে নির্যাতনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর বিভিন্ন স্থানের লোক মিজানুরদের বাড়িতে আসতে শুরু করে। গত মঙ্গলবার দুপুরে ২০ থেকে ২৫ জন অপরিচিত ব্যক্তি আটটি মোটরসাইকল নিয়ে মিজানুরদের বাড়িতে আসে। তারা মিজানুরের ছেলে রমিমকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। ওইদিন রাতেই স্বজনরা মিজানুরের ছেলেকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসে। এরপর শুক্রবার থেকে ওই বাড়ির মূল ফটকে তালা লাগিয়ে মিজানুরের বাবা-মা ও ভাই চলে যায়। তেমারিয়া গ্রামের বাসিন্দা ও সংরক্ষিত নারী সদস্য (মেম্বার) ফজিলাতুন নেছা বলেন, কয়েক দিন ধরে মিজানুরের খোঁজে লোকজন বাড়িতে আসছে। এরপর তার পরিবারের সদস্যরা কেউ বাড়িতে থাকছে না। মিজানুর অনেক মানুষকে লিবিয়ায় নিয়ে গেছে। এখন শুনছি সে লিবিয়ায় লোকজন আটকে মুক্তিপণ চাচ্ছে। আক্কেলপুর থানার ওসি নয়ন হোসেন বলেন, মিজানুরের বাড়িতে গিয়ে তাকে বা তার পরিবারের কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া শামীম হোসেনকে লিবিয়ায় নেওয়া-সংক্রান্ত আরেক ঘটনায় তার বাবা নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার মিঠাপুর পালপাড়া গ্রামের আফজাল হোসেন মিজানুরের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ মামলায় গ্রেপ্তারের জন্য মিজানুরকে খুঁজছে পুলিশ।
০২ এপ্রিল, ২০২৪

লিবিয়ায় বাংলাদেশি যুবককে নির্যাতনের ভিডিও পাঠিয়ে মুক্তিপণ দাবি
লিবিয়ায় রুবেল হোসেন নামে বাংলাদেশি এক যুবককে আটকে রেখে নির্যাতনের ভিডিও পাঠিয়ে তার পরিবারের কাছে মুক্তি পণের দাবি করেছে দুর্বৃত্তরা।  ভিডিওতে দেখা যায়, হাত-পা একসঙ্গে বেঁধে ও মুখে কাপড় গুজে রুবেলকে লাঠি দিয়ে বেদম প্রহার করছে এক ব্যক্তি। নির্যাতনের এ ভিডিও চিত্র বাংলাদেশে রুবেলের স্ত্রীর বড় বোন আক্তারুনের মুঠোফোনে পাঠানো হয়। চার দিন আগে ওই ভিডিও পাঠিয়ে রুবেলের মুক্তিপণের জন্য আক্তারুনের কাছে দশ লাখ টাকা দাবি করা হয়েছে।  ভিডিতে নির্যাতনের শিকার রুবেলের চেহারা স্পষ্ট দেখা গেলেও নির্যাতনকারী ব্যক্তির চেহারা দেখা যাচ্ছিল না। রুবেল হোসেনের বাড়ি বগুড়ার গাবতলী উপজেলার আমেশ্বপুর নিশিপাড়া গ্রামে। রুবেলের স্ত্রীর বড় বোন আক্তারুনের বাড়ি জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার তেমারিয়া গ্রামে। রুবেলকে লিবিয়ায় পাঠানো দালাল মিজানুর রহমান ওরফে ধলুর বাড়িও তেমারিয়া গ্রামে। আক্তারুন তার ভগ্নিপতি রুবেলকে গ্রামের দালাল মিজানুর ও তার বাবা আব্দুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করে দিয়েছিলেন। এরপর রুবেল নিজেই দালাল মিজানুরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। রুবেল তার জমি-জমা বিক্রি করে চার লাখ টাকা দালাল মিজানুর রহমানের স্বজনদের হাতে দিয়েছিলেন। গত জানুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে রুবেল লিবিয়ায় পাড়ি জমান। রুবেলের স্ত্রীর বড় বোন আক্তারুন বলেন, আমি আমার ছোট বোনের স্বামী রুবেল হোসনকে দালাল মিজানুর ও তার বাবা আব্দুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করে দিয়েছিলাম। গত জানুয়ারি মাসে মিজানুর আমার ছোট বোনের স্বামী রুবেলকে লিবিয়ায় নিয়ে গেছেন। তিনি আরও বলেন, মিজান রুবেলকে লিবিয়ায় নিয়ে বসিয়ে রেখেছিলেন। রুবেলকে ভালো কাজ দেওয়ার কথা বলে দশ দিন আগে লিবিয়ার আরেকটি জায়গায় নিয়ে যায়। তারা সেখানে রুবেলকে আটকে রেখে মারধর করছেন। অচেনা কণ্ঠের একজন বাংলাদেশি লিবিয়া থেকে আমাকে কল করে রুবেলের মুক্তিপণের জন্য দশ লাখ টাকা চেয়েছেন। এছাড়া রুবেলকে মেরে ফেলবেন বলে হুমকি দিয়েছেন। তারা গত ২৭ মার্চ আমার মুঠোফোনের হোয়াটসঅ্যাপে একটি ভিডিও পাঠিয়েছেন।  এ বিষয়ে জানতে মিজানুরদের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। বাড়ির মূল ফটকে তালা ঝুলছিল। তেমারিয়া গ্রামের বাসিন্দা ও গোপীনাথপুর ইউনিয়নের সংরক্ষিত নারী সদস্য ফজিলাতুন নেছা বলেন, কয়েক দিন ধরে মিজানুরের খোঁজে লোকজন বাড়িতে আসছেন। এই ভয়ে মিজানুরের পরিবারের সদস্যরা কেউ বাড়িতে থাকছেন না। মিজানুর অনেক মানুষকে লিবিয়ায় নিয়ে গেছেন। এখন শুনছি মিজানুর লিবিয়ায় লোকজন আটকে মুক্তিপণ চাচ্ছেন।
০১ এপ্রিল, ২০২৪

টেকনাফে ফের ৮ জনকে অপহরণ, মুক্তিপণ দাবি
কক্সবাজারের টেকনাফে পাহাড়ি এলাকা থেকে চার কিশোরসহ আটজনকে অপহরণ করেছে দুর্বৃত্তরা। তাদের মুক্তিপণ হিসেবে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করা হয়েছে। বুধবার (২৭ মার্চ) বিকেলে টেকনাফ হোয়াইক্যং ইউনিয়নের উনচিপ্রাং ২২ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পশ্চিমের পাহাড়ি এলাকায় সবজিক্ষেতে কাজ করার সময় ছয়জনকে অপহরণ করা হয়। এর আগের দিন মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) সন্ধ্যায় একই ইউনিয়নের খারাংখালি কম্বনিয়া পাড়া পাহাড় থেকে দুই রাখালকে অপহরণ করে দুর্বৃত্তরা। অপহরণের শিকার ব্যক্তিরা হলেন হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড কম্বনিয়া পাড়ার ফিরোজ আহমেদের ছেলে মোহাম্মদ নুর (১৫) ও হ্নীলা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের রোজার ঘোনা এলাকার অলী আহমেদ (৩০), ৫ নম্বর ওয়ার্ডের করাচি পাড়ার লেদু মিয়ার ছেলে শাকিল মিয়া (১৫), বেলালের ছেলে মো. জুনায়েদ (১৩), নুরুল আমিনের ছেলে মো. সাইফুল (১৪), শহর আলীর ছেলে মো. ফরিদ (২৫), নাজির হোসেনের ছেলে সোনা মিয়া (২৪) ও শহর মুল্লুকের ছেলে গুরা পুইত্যা (৩২)। হোয়াইক্যং ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ নুর আহমেদ আনোয়ারী কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বুধবার বিকেলে সবজিক্ষেত পাহারা দিতে গিয়ে ছয়জন অপহরণের শিকার হন। তাদের পরিবারের কাছ থেকে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছে। চেয়ারম্যান আরও বলেন, আর মঙ্গলবার সকালে মোহাম্মদ নুর পাহাড়ের পাশে গরু চরাতে যান। দুপুরের দিকে একদল দুর্বৃত্ত তাকে ও অলী আহমেদ নামের এক কাঠুরিয়াকে ধরে পাহাড়ের ভেতর নিয়ে যায়। পরে মোবাইলে কল করে দুজনের মুক্তিপণ হিসেবে দুই লাখ টাকা দাবি করা হয়। তিনি আরও বলেন, দিনের পর দিন এভাবে অপহরণের ঘটনা বাড়ার কারণে কৃষক, শ্রমিকসহ পাহাড়ে বসবাসকারী মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছেন। টেকনাফ মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ ওসমান গণি বলেন, অপহরণের খবর পেয়ে অপহৃতদের উদ্ধারে পুলিশের দল পাহাড় অভিযান চালাচ্ছে। অভিযান অব্যাহত রয়েছে। হ্নীলা ইউনিয়নের পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী বলেন, বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) ভোরে হ্নীলার পানখালীর পাহাড়ি এলাকা থেকে পাঁচ কৃষককে অপহরণ করা হয়। পরে মুক্তিপণ দিয়ে ফেরত আসেন তারা। তিনি আরও বলেন, এর আগে শনিবার (৯ মার্চ) হ্নীলার পূর্ব পানখালী এলাকা থেকে মাদ্রাসাছাত্র ছোয়াদ বিন আব্দুল্লাহকে (৬) অপহরণ করা হয়। তবে এখনো তাকে উদ্ধার করা যায়নি। পুলিশের তথ্যমতে, গত এক বছরে টেকনাফের পাহাড়ি এলাকা থেকে ১০৩ জনকে অপহরণ করা হয়। তাদের মধ্যে ৫২ জন স্থানীয় বাসিন্দা এবং ৫১ জন রোহিঙ্গা।
২৮ মার্চ, ২০২৪

চাকরি দেওয়ার ফাঁদে ফেলে মুক্তিপণ দাবি, গ্রেপ্তার ১
চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে মাকসিদুল গাজী (২৭) নামে এক যুবককে ময়মনসিংহের গৌরীপুরের ভাংনামারী ইউনিয়নের সুতিরপাড়া গ্রামে এনে টর্চার সেলে আটকে নির্যাতন করে মুক্তিপণ দাবি করে একটি প্রতারকচক্র। কিন্তু মুক্তিপণ দিতে রাজি না হওয়ায় ওই যুবককে নিয়ে মোটরসাইকেল যোগে অজ্ঞাতস্থানে রওনা হয় প্রতারক চক্র। পথিমধ্যে মাকসিদুল চলন্ত গাড়ি থেকে লাফ দিয়ে চিৎকার শুরু করলে স্থানীয়রা এসে প্রতারকচক্রের সদস্যকে শাহজাহান মিয়াকে (৩৭) আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মাকসিদুলকে উদ্ধার ও শাহজাহানকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসে।  গ্রেপ্তার শাহজাহান ভাংনামারী ইউনিয়নের সুতিরপাড়া গ্রামে মৃত সেকান্দর আলীর ছেলে। মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) রাতে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটেছে ময়মনসিংহের গৌরীপুরের ভাংনামারী ইউনিয়নে। এ ঘটনায় বুধবার (২৭ মার্চ) গৌরীপুর থানায় মাকসিদুল বাদী হয়ে শাহজাহানসহ নাম উল্লেখ তিনজন ও অজ্ঞাত ২-৩ জনকে আসামিকে করে মামলা করেন। জানা গেছে, মাকসিদুল গাজীর বাড়ি খুলনার কয়রা উপজেলার হাবিবুর রহমানের ছেলে। সম্প্রতি একটি দৈনিক পত্রিকায় ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের সেকশন অফিসার পদে লোক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেখে আবেদন করেন তিনি। আবেদনের পর মাকসিদুলকে গত ২৪ মার্চ চাকরির সাক্ষাৎকারের জন্য খুলনা থেকে ডেকে ময়মনসিংহের নান্দাইল আনে। সেখান থেকে প্রতারক চক্র তাকে মোটরসাইকেল যোগে গৌরীপুরের ভাংনামারী ইউনিয়নের সুতিরপাড় গ্রামের নির্জন বাড়ির টর্চার সেলে নিয়ে যায়। তারা হাত-পা শিকলে বেঁধে নির্যাতন চালিয়ে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। গৌরীপুর থানার ওসি সুমন চন্দ্র রায় বলেন, চাকরির কথা বলে যুবককে ডেকে এনে মুক্তিপণ চাওয়ায় ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। অন্যদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তাদের অপকর্ম জানতে ও ঘটনার তদন্তে এই চক্রের বিস্তারিত জানাতে পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করতে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।
২৮ মার্চ, ২০২৪

জেলে দেওয়ার হুমকি দিয়ে পুলিশ পরিচয়ে মুক্তিপণ দাবি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে ছেলেকে জেলে পাঠানোর হুমকি দিয়ে মায়ের কাছে পুলিশ পরিচয়ে মুক্তিপণ দাবির অভিযোগ উঠেছে। ওই ঘটনায় মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) রাতে নাসিরনগর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন এক স্কুল শিক্ষিকা। এ বিষয়ে স্কুল শিক্ষিকা মোছা. ছায়েমা আক্তার জানান, মঙ্গলবার সকালে আমার ফোনে অপরিচিত একটি নম্বর থেকে ফোন আসে। ফোনকারী ব্যক্তি নিজেকে ধানমন্ডি থানার এসআই ফারুক হিসেবে দাবি করেন। তিনি বলেন আমার বড় ছেলে মো. আব্দুল মন্নান সামি তাদের কাছে মাদকসহ আটক আছে এবং ৩০ মিনিটের মধ্যে ৩০ হাজার টাকা বিকাশে না পাঠালে আমার ছেলেকে জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এসময় তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় কিংবা কণ্ঠ নকল করে আমার ছেলের মতো করে কেউ একজন কান্নাকাটি করে আমার সঙ্গে কথা বলে। এতে আমি বিচলিত হয়ে দ্রুত থানায় যোগাযোগ করি। পথিমধ্যে আমার ছেলের ফোনে কল করলে জানতে পারি সে বাসায় নিরাপদে আছে এবং তার সঙ্গে এ-সংক্রান্ত ব্যাপারে কারোর কোনো কথা বা দেখাও হয়নি। পরে নাসিরনগর থানার কর্তব্যরত পুলিশ এসআই তৌহিদুল ইসলাম হুমকিদাতা ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে বিভিন্ন প্রশ্ন করলে সে সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেয়।  জানা যায়, মোছা. ছায়েমা আক্তার উপজেলার গোকর্ণ সৈয়দ ওয়ালী উল্লাহ স্কুল অ্যান্ড কলেজের ইংরেজি বিষয়ের সহকারী শিক্ষক। তার বড় ছেলে মো. আব্দুল মন্নান সামি ঢাকার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। সামির বাবা এম এ হান্নান নাসিরনগর উপজেলার বিএনপির বর্তমান সভাপতি। নাসিরনগর থানার সহকারী পুলিশ পরিদর্শক তৌহিদুল ইসলাম জানান, ওই স্কুল শিক্ষিকা পরিবারের লোকদের নিয়ে থানায় আসলে আমি তাকে হুমকি দেওয়া ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলি। সে নিজেকে ধানমন্ডি থানার এসআই ফারুক হিসেবে পরিচয় দেয়। আমি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাকে বিভিন্ন প্রশ্ন করলে একপর্যায়ে সে ফোনটি কেটে দেয়। আমার কাছে এটি একটি প্রতারক চক্রের কাজ বলে মনে হয়েছে। এ ধরনের প্রতারক চক্র আগে থেকে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে এমন ফাঁদ পাতে। নাসিরনগর বিষয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহাগ রানা বিষয়টি নিশ্চিত করে  জানান, এ বিষয়ে নাসিরনগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
২৭ মার্চ, ২০২৪

মুক্তিপণ দিয়ে ফিরলেন অপহৃত পাঁচ কৃষকের চারজন
কক্সবাজারের টেকনাফ হ্নীলা থেকে অপহৃত পাঁচ কৃষকের মধ্যে চারজন ১ লাখ ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়ে বাড়ি ফিরেছে। অপর একজন এখনো অপহরকারীদের হতে বন্দি রয়েছে।  রোববার (২৪ মার্চ) রাত সাড়ে ১২টার দিকে অপহৃতদের ফেরত দিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ভূক্তভোগীর পরিবার। মুক্তি পেয়ে পরিবারের কাছে ফেরত আসা কৃষকরা এখন পুলিশ হেফাজতে রয়েছে বলেও জানান তারা। তারা হলেন, হ্নীলা পানখালী এলাকার ফকির মোহাম্মদের ছেলে মো. রফিক (২২), শাহাজানের ছেলে জিহান (১৩), ছৈয়দ উল্লাহর ছেলে শাওন (১৫) ও নুরুল আমিনের ছেলে আব্দুর রহমান (১৫)।  এ ছাড়া আব্দুর রহিমের ছেলে মো নুর (১৮) কে এখনও ফেরত দেয়নি অপহরণকারীরা। জানা যায়, বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) টেকনাফ হ্নীলার পানখালী এলাকা থেকে পাঁচ কৃষককে অপহরণ করে দুর্বৃত্তরা। পরে অপহৃত পরিবারের কাছে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে অপহৃত রফিকের ভাই মো. শফিকের ফোন করে অপহরণকারীরা। কিন্তু আর্থিক সংকটের কারণে তারা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা চেয়ে অপহৃতদের উদ্ধার করতে পারেনি। পরে অপহৃত চার কৃষক পরিবার ১ লাখ ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়ে তাদের সদস্যদের ফিরিয়ে আনেন। এখনো অপহরণকারীদের হাতে জিম্মি রয়েছেন মুহাম্মদ নুর নামে আরেকজন। টেকনাফ মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ ওসমান গনি জানান, মুক্তিপণ দিয়েছে কিনা জানিনা। তবে পুলিশ অপহৃতদের উদ্ধারে ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে আসছে। রাতে অভিযানে গিয়ে চারজনকে উদ্ধার করা হয়। তারা এখন পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। অন্যজনকে উদ্ধারের অভিযান চলছে। স্থানীয়রা জানান, এর আগে রোববার (১০ মার্চ) হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ২২ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন পাহাড়ি এলাকা থেকে ৭ জনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা। একদিন পর ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে তারা ফিরে আসেন। কিন্তু ৯ মার্চ হ্নীলার পূর্ব পানখালী এলাকা থেকে অপহৃত মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্র ছোয়াদ বিন আব্দুল্লাহ (৬) এখনও বাড়ি ফিরেনি। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের মার্চ থেকে ২০২৪ এর মার্চ পর্যন্ত টেকনাফের পাহাড় কেন্দ্রিক ১০৩টি অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। অপহরণের শিকার  ৫২ জন স্থানীয় এবং ৫১ জন রোহিঙ্গা।
২৪ মার্চ, ২০২৪

টেকনাফে ৫ কৃষক অপহরণ, ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি
কক্সবাজার টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নে পাহাড়ের পাদদেশে কৃষিকাজ করার সময় পাঁচ কৃষককে অপহরণ করা হয়েছে। এতে মুক্তিপণ হিসেবে ৩০ লাখ টাকা দাবি করে অপহরণকারীরা। বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) ভোরে হ্নীলার পানখালীর পাহাড়ি এলাকা থেকে অস্ত্রের মুখে তাদের জিম্মি করে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা।  অপহৃতরা হলেন- হ্নীলা পানখালী এলাকার ফকির মোহাম্মদের ছেলে মো. রফিক (২২), শাহাজাহানের ছেলে জিহান (১৩), সৈয়দ উল্লাহর ছেলে শাওন (১৫), আব্দুর রহিমের ছেলে মো. নুর (১৮) ও নুরুল আমিনের ছেলে আব্দুর রহমান (১৫)। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী। তিনি জানান, আমার ইউনিয়নের পাঁচ কৃষককে অপহরণ করে নিয়ে গেছে সন্ত্রসীরা।পরিবারের কাছে মুক্তিপণ হিসেবে ৩০ লাখ টাকা দাবি করা হয়। আমরা বিষয়টি প্রশাসনকে জানিয়েছি। এদিকে মুক্তিপণ চেয়ে অপহৃত রফিকের বড় ভাই মো. শফিকের কাছে মোবাইল ফোনে ৩০ লাখ টাকা দাবি করেছেন অপহরণকারীরা। এ বিষয়ে শফিক বলেন, রফিক প্রতিদিনের মতো জুম চাষে পাহাড়ে যায়। কিন্তু আজকে সেহরি খেতে না আসায় তাকে খুঁজতে বের হই। পরে জানতে পারি তাদের পাচঁজনকে ধরে নিয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে মোবাইল ফোনে মুক্তিপণ চেয়ে ৩০ লাখ টাকা দাবি করে অস্ত্রধারীরা। বিষয়টি আমি জনপ্রতিনিধিকে জানিয়েছি। টেকনাফ মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ ওসমান গণী বলেন, পাঁচ কৃষককে অপহরণের বিষয়টি শুনেছি। এ বিষয়ে পুলিশ কাজ করছে।
২২ মার্চ, ২০২৪
X