ইসরায়েলের বোমার চালান আটকানোর কারণ জানাল যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি বোমার একটি বড় চালান ইসরায়েলে পাঠানোর সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছে বাইডেন প্রশাসন। গত সপ্তাহেই বিষয়টি বিভিন্ন সূত্রে জানা গিয়েছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা এর কারণ নিয়ে মুখ খুলছিলেন না।  এবার সিবিএস নিউজকে ইসরায়েলের বোমার চালান আটকে দেওয়ার কারণ জানালেন যুক্তরাষ্ট্রের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিবিসির মিডিয়া অংশীদার সিবিএস নিউজ ওই কর্মকর্তার নাম প্রকাশ করেনি। গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েলের হামলা শুরুর পর এই প্রথম ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ আটকে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। অস্ত্রের চালানটি গত সপ্তাহে ইসরায়েলে পাঠানোর কথা থাকলেও সেটি আপাতত পাঠানো হচ্ছে না বলে ইসরায়েলকে জানিয়েছেন ওয়াশিংটনের কর্মকর্তারা। ওই চালানে কয়েক হাজার কেজি বোমা ছিল।  যুক্তরাষ্ট্রের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তার বরাতে সিবিএস নিউজ জানায়, দক্ষিণ গাজার রাফায় স্থল অভিযান চালাতে ইসরায়েলকে নিষেধ করে যুক্তরাষ্ট্র। এ অভিযানে মানবিক বিপর্যয় নিয়ে মার্কিন প্রশাসন উদ্বিগ্ন ছিল। বিষয়টি ইসরায়েলকে জানানোর পরও তারা পাত্তা দেয়নি। ইসরায়েল সব ধরনের অনুরোধ ও আহ্বান উপেক্ষা করে রাফায় বড় ধরনের হামলা চালাতে প্রস্তুতি নেয়। ইসরায়েলের অগ্রগতি নিশ্চিত হয়ে যুক্তরাষ্ট্র চালানটি স্থগিত করে। ওই কর্মকর্তা আরও জানান, রাফা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের চাহিদা ইসরায়েল পুরোপুরি পূরণ করেনি। ইসরায়েল রাফায় ওই বোমা ব্যবহারের করতে পারে বলে শঙ্কায় ছিল যুক্তরাষ্ট্র। এদিকে চালান স্থগিতের বিষয়ে ইসরায়েল কোনো মন্তব্য করেনি। তারা মঙ্গলবার (৭ মে) রাফায় স্থল অভিযান শুরু করে। ইতোমধ্যে রাফা সীমান্ত ক্রসিংয়ের গাজা অংশের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে দখলদাররা। সেখানে বিশাল ট্যাংকবহর নিয়ে ইসরায়েলি বাহিনী অবস্থান করছে।
০৮ মে, ২০২৪

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রমাণ পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
ফিলিস্তিনে তথাকথিত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযানের নামে ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ বেশ পুরোনো। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সংস্থা এ অভিযোগ তুলেছে। এবার ইসরায়েলের পরীক্ষিত বন্ধু যুক্তরাষ্ট্র মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা স্বীকার করেছে।  যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ইসরায়েলের সেনাবাহিনী কর্তৃক মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রমাণ পেয়েছে তারা। সেনাবাহিনীর পাঁচটি ইউনিট ব্যাপকভাবে নিষ্ঠুর কাজের সঙ্গে জড়িত। খবর বিবিসির। এ ব্যাপারে কিছুটা ধারণাও দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তাদের দাবি, এসব চলমান গাজা যুদ্ধের আগে ঘটেছে। ধারণা করা হচ্ছে, এসব সাম্প্রতিক বছরগুলোয় অধিকৃত পশ্চিম তীর ও জেরুজালেমে ঘটেছে। তবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ায় ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীকে সমর্থন ও সহায়তা অব্যাহত রাখবে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী চারটি সেনা ইউনিটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে ইসরায়েল। তাদের সংশোধন করা হচ্ছে। বাকি একটি ইউনিটের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের চাহিদামতো ‘অতিরিক্ত তথ্য’ দিয়েছে ইসরায়েল। তাই  ব্যাপারটি সহায়তা বন্ধ করার মতো বড় বিষয় মনে করা হচ্ছে না। মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক শক্তিতে ইসরায়েলের আজকের অবস্থানের পেছনে আছে যুক্তরাষ্ট্র। শুরু থেকে তাদের সব ধরনের সামরিক সহায়তা অব্যাহত রেখেছে মার্কিন প্রশাসন। প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ৩৮০ কোটি ডলারের অস্ত্র ও প্রতিরক্ষাব্যবস্থা পায় ইসরায়েল। এ ছাড়া কারিগরি ও কূটনৈতিক সমর্থনও পাচ্ছে। মানবাধিকার লঙ্ঘন বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বিশেষ আইন রয়েছে। আইন অনুযায়ী, মার্কিন সহায়তা পাওয়া কোনো ভিনদেশি সেনা ইউনিট ব্যাপকভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করলে সেই ইউনিট সহায়তা পাওয়ার যোগ্যতা হারায়। ওই আইনে নির্যাতন, বিচারবহির্ভূত হত্যা, জোরপূর্বক গুম এবং ধর্ষণকে মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছিল। এদিকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সত্যতা পাওয়ার পরও সামরিক সহায়তা বন্ধ না করায় প্রশ্ন উঠেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, পঞ্চম যে ইউনিটটির কথা বলা হচ্ছে সেটি নেতজাহ ইয়েহুদা ব্যাটালিয়ন। ১৯৯৯ সালে শুধু পুরুষ সেনাদের নিয়ে এ ইউনিট গঠন করা হয়েছিল। আল্ট্রা–অর্থোডক্স ইহুদিরা এ ইউনিটের সদস্য। স্বভাবতই ইউনিটটি উগ্র হিসেবে বিবেচিত। অথচ যুক্তরাষ্ট্র ‘অতিরিক্ত তথ্য’ পেয়েছে বলে ইউনিটটির ব্যাপারে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ পিছিয়ে দিয়েছে। অপরদিকে ইসরায়েলের সংশোধনমূলক ব্যবস্থায় সন্তুষ্ট হয়ে ওপর চারটি ইউনিটকে সহায়তা বন্ধ করা হবে না বলে সাফ জানিয়েছে। কিন্তু অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রকৃতপক্ষে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না তা স্পষ্ট করেনি যুক্তরাষ্ট্র।
৩০ এপ্রিল, ২০২৪

কৌশিক বসুর নিবন্ধ / যেভাবে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ করছে যুক্তরাষ্ট্র
প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সম্পর্কের অবনতির কারণে বিশ্বব্যাপী স্বৈরাচারী নেতৃত্ব এবং চরমপন্থি আন্দোলন গতিলাভ করেছে। বিশ্বের বেশিরভাগ অংশে গণতন্ত্র পশ্চাদপসরণ করেছে। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা যখন চাপের মধ্যে পড়ে, তখন আমাদের লালিত আদর্শ, যেমন সকলের জন্য সমান স্বাধীনতা এবং অধিকার নিশ্চিত করার মতো বিষয় ক্রমবর্ধমান ঝুঁকির মধ্যে পড়ে।  গণতান্ত্রিক চর্চা পিছিয়ে পড়ার অনেক কারণ রয়েছে, যার মধ্যে বড় বড় প্রযুক্তির আবির্ভাব এবং ভুল তথ্য ও বিভ্রান্তিকর খবরের দ্রুত বিস্তার অন্যতম। তবে যেটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে তা হলো অনিয়ন্ত্রিত অর্থনৈতিক বিশ্বায়ন এবং রাজনৈতিক বলকানায়নের অদ্ভুত সম্মিলন। এর ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো বড় শক্তিগুলো বিশ্বব্যাপী কোটি কোটি মানুষের জীবনের ওপর অসম প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু ওই সব মানুষের কোনো রাজনৈতিক কণ্ঠস্বর নেই বিশেষত তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্ব নির্ধারণে কোনো ভূমিকাই রাখতে পারেন না। অথচ তাদের ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ করছে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব।  গণতন্ত্রের মূল নীতি হলো, রাজনৈতিক নেতাদের সিদ্ধান্তের দ্বারা প্রভাবিত ব্যক্তিদের সেই নেতাদের নির্বাচন করার ক্ষেত্রে প্রভাব থাকতে হবে। এই ধারণাটি এতটাই মৌলিক যে এমনকি রাশিয়া এবং উত্তর কোরিয়ার মতো কর্তৃত্ববাদী দেশগুলোও নির্বাচন করে, দৃশ্যত নাগরিকদের তাদের নেতা ‘বাছাই’ করার সুযোগ দেয়।  অবশ্য, এই নির্বাচনগুলো বিদ্যমান শাসনব্যবস্থার জন্য সত্যিকারের কোনো হুমকি হয়ে ওঠে না। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, উত্তর কোরিয়ার ২০২৩ সালের নির্বাচনে কিম জং-উনের ওয়ার্কার্স পার্টি ৯৯ দশমিক ৯১ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। এখান থেকেই প্রতীয়মান হয় কর্তৃত্ববাদী দেশগুলোর নির্বাচনগুলো প্রহসন মাত্র।  সমস্যাটি বোঝার জন্য, একটি দৃশ্য কল্পনা করা যেতে পারে যে মার্কিন প্রেসিডেন্টরা শুধু কলম্বিয়া প্রদেশের ভোটারদের দ্বারা নির্বাচিত হবেন। ওয়াশিংটনের প্রতিটি বাসিন্দাদের ভোট দেওয়ার অধিকার থাকবে এবং সবচেয়ে বেশি ভোট পাওয়া প্রার্থী রাষ্ট্রপতি হবেন। বাকি প্রদেশের ভোট প্রদানের অধিকার বা রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের অধিকার থাকবে না। এই প্রক্রিয়াটি যদি প্রতারণা থেকে মুক্ত এবং স্বচ্ছও হয়, তবে এমন পরিস্থিতিতে মার্কিন যুক্তরাষষ্ট্রে গণতন্ত্র রয়েছে বলে বিবেচনা করা কঠিন হবে। কারণ নির্বাচিত নেতারা স্বাভাবিকভাবেই অন্য সব জায়গার আমেরিকানদের চেয়ে ওয়াশিংটনের বাসিন্দাদের স্বার্থকে বেশি প্রাধান্য দেবেন, কারণ বাকিদের অবস্থান তাদের পুনঃনির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনার ওপর সামান্যতম প্রভাব ফেলবে না। যদিও এই দৃশ্যটি অনেক দূরের বলে মনে হতে পারে। তারপরও বিশ্বের লোকজন নিজেদেরকে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য প্রদেশের মতো একই অবস্থানে খুঁজে পাবে, যেখানে নেতা নির্বাচনে তাদের কোনো অধিকার নেই কিন্তু নির্বাচিত নেতা তাদের ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ ও শাসন করছে।। গত চার দশকের ত্বরান্বিত অর্থনৈতিক বিশ্বায়ন, ক্রমবর্ধমান আন্তঃসংযুক্ত সরবরাহ চেইন এবং ডিজিটাল প্রযুক্তির দ্রুত অগ্রগতি পুঁজি ও পণ্যের অবাধ প্রবাহকে সহজতর করেছে। এর মানে এই যে বড় শক্তিগুলো এখন মাত্র কয়েকটি ক্লিকের মাধ্যমে সারা বিশ্বে ব্যক্তি ও সম্প্রদায়কে প্রভাবিত করতে সক্ষম। কোটি কোটি মানুষের ভাগ্য বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করে। যদিও আমেরিকান নেতা নির্বাচনে তাদের কোনো ভূমিকাই নেই। সাপ্লাই চেইন ছিন্ন করে বা আর্থিক প্রবাহে হেরফের করে অসংখ্য অর্থনীতিকে ধসিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর নাগরিকদের মার্কিন নির্বাচনের ওপর কোনো প্রভাব নেই।  একইভাবে, ইউক্রেনীয় বা জর্জিয়ান নাগরিকরা রাশিয়াকে শাসন করবে তা নির্ধারণে কোনো প্রভাব রাখতে পারে না, যদিও রাশিয়াকে কে শাসন করবে তার ওপর তাদের ভাগ্য ও মঙ্গল অনেকটাই নির্ভর করে।  বৈশ্বিক গণতন্ত্রের এই অবক্ষয়ের প্রভাব সুদূরপ্রসারী। এর ভূরাজনৈতিক পরিণতি হবে ভয়াবহ। যদিও মার্কিন সরকার অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিকে কার্যকরভাবে পরিচালনা করার জন্য যথেষ্ট প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র বৈদেশিক নীতি গ্রহণের ক্ষেত্রে অশ্বারোহী পন্থা অবলম্বন করেছে। মধ্যপ্রাচ্যের চলমান সংকট আমাদের জন্য একটি জ্বলন্ত উদাহরণ। গত ছয় মাস ধরে হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যুদ্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নিঃশর্ত সমর্থন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে উপকৃত করেছে। মার্কিন সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স এবং এলিজাবেথ ওয়ারেন যেমন উল্লেখ করেছেন, সাধারণ ইসরায়েলিদের লক্ষ্য, যারা যুদ্ধের অবসান ঘটাতে এবং জিম্মিদের দেশে ফিরিয়ে আনতে চান, নেতানিয়াহু এবং তার উগ্র ডানপন্থি রাজনৈতিক মিত্রদের থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে ভিন্ন, যারা যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করতে চান। ক্ষমতা নিজেদের দখলে রাখতে সংঘর্ষ আরও প্রলম্বিত করতে ইচ্ছুক নেতানিয়াহু ও তার উগ্র ডানপন্থি মিত্ররা।  এতে গণতন্ত্র বিরোধী ও আধিপত্যবাদী শক্তিগুলো শক্তিশালী হচ্ছে। যদি ইসরায়েলের নাগরিকরা মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দিতে পারত, তাহলে আমেরিকার মধ্যপ্রাচ্য নীতি সম্ভবত ভিন্ন হতো। এই ধরনের নীতি নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক এজেন্ডার পরিবর্তে ইসরায়েলি এবং ফিলিস্তিনি উভয়ের স্বার্থের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত হতো। তবে ট্রাম্প মার্কিন নির্বাচনে জিতলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। কিন্তু আমি আশা করি, মার্কিন নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক পার্টি জিতবে। সেক্ষেত্রে আমরা একটি ভিন্ন মধ্যপ্রাচ্য নীতি দেখতে পাব।  এই জটিলতার কোনো সহজ সমাধান নেই। ইসরায়েলিরা মার্কিন নির্বাচনে ভোট দেবে না এবং ইউক্রেনীয়রা রাশিয়ার পরবর্তী নেতা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে পারবে না।। ডিজিটাল প্রযুক্তি এবং বিশ্বায়নের প্রসার এবং এর ফলে বিশ্ব গণতন্ত্রের ক্ষয়, বর্তমান আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার অন্তর্নিহিত দুর্বলতাগুলো আমাদের সামনে তুলে ধরে। আমি যেমন আমার বই দ্য রিপাবলিক অব বিলিফসে বলেছি, রাষ্ট্রের সরাসরি হস্তক্ষেপ ছাড়াই বাধ্যতামূলক আইন ও প্রবিধান বাস্তবায়ন করা সম্ভব। এরিক পসনার এবং ক্যাস সানস্টেইন সঠিকভাবে বলেছেন,  মূল বিষয় হলো যথাযথ নিয়ম প্রণয়ন করা গেলে ব্যক্তি নিজ উদ্যোগে সেটি বাস্তবায়ন করে। বর্তমান পরিস্থিতি এই বার্তাই দেয় যে, বিশ্বব্যাপী গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার লক্ষে আমাদের আরও কার্যকর বহুপাক্ষিক সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক সনদ তৈরি করতে সচেষ্ট হতে হবে। কৌশিক বসু: বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ এবং ভারত সরকারের সাবেক প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা, কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক এবং ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের একজন অনাবাসিক সিনিয়র ফেলো। কপিরাইট: প্রজেক্ট সিন্ডিকেট, ২০২৪
২৭ এপ্রিল, ২০২৪

বাংলাদেশকে অন্য দেশের চোখ দিয়ে দেখে না যুক্তরাষ্ট্র : মার্কিন কর্মকর্তা
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের চোখ দিয়ে দেখে না বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ম্যাক্সওয়েল মার্টিন। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসে ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় কৌশল (আইপিএস) নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।  আইপিএস ও বাংলাদেশের জন্য এর তাৎপর্য নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস। ম্যাক্সওয়েল মার্টিন বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক দুই দেশের অভিন্ন ইতিহাস, মূল্যবোধ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ভিত্তিতে পরিচালিত। এই সম্পর্ক ভারত, চীন, রাশিয়া বা তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে পরিচালিত নয়। বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কটা আমরা দ্বিপক্ষীয় প্রেক্ষাপট থেকেই দেখি। এই সম্পর্ককে আমরা অন্য দেশের লেন্স (দৃষ্টি) দিয়ে দেখি না। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ফোর্সেস গোল-২০৩০ কে সমর্থন করে যুক্তরাষ্ট্র। এই লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশকে নানাভাবে সহায়তা করা হচ্ছে। আইপিএসের প্রেক্ষাপট বিবেচনায় রেখেই বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাড়তি পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি আগের সহযোগিতাগুলো এগিয়ে নিয়ে চলেছে যুক্তরাষ্ট্র। এক প্রশ্নের জবাবে ম্যাক্সওয়েল মার্টিন বলেন, চীনের মতো কয়েকটি দেশ নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এমনকি ভবিষ্যতেও জোর খাটাতে পারে। যেটা দক্ষিণ চীন ও তাইওয়ানের ক্ষেত্রে ঘটেছে। আইপিএসের ক্ষেত্রে আমরা এ ধরনের আধিপত্যপাদী আচরণ দেখতে চাই না। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে দুর্যোগ মোকাবিলায় বিভিন্ন অংশে কাজ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের মতো অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা করেছে।  ম্যাক্সওয়েল মার্টিন বলেন, আইপিএসের মানচিত্রের দিকে তাকালে দেখবেন বিশ্বের বাণিজ্যের বড় অংশটা হয় এই অঞ্চলজুড়ে। অর্থনৈতিক উন্নয়নও হচ্ছে এই অঞ্চল ঘিরে। তাই বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল অবাধ ও মুক্ত ভবিষ্যৎ, অর্থনীতি এবং সমৃদ্ধির স্বার্থের বিষয়গুলোতেই জোর দেওয়া হচ্ছে। 
২৫ এপ্রিল, ২০২৪

ইউক্রেনকে গোপনে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
ইউক্রেনকে গোপনে দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ইতিমধ্যে অন্তত একবার সেটি রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয়েছে। মার্কিন কর্মকর্তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, গত মার্চ মাসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনের জন্য ৩০০ মিলিয়ন ডলারের সহায়তা প্যাকেজ অনুমোদন করে। এর অংশ হিসেবে এই ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়া হয়। চলতি মাসে সেগুলো ইউক্রেনে পৌঁছে। এরপরই সেটি ব্যবহার করে রাশিয়ার সামরিক স্থাপনায় অন্তত একবার হামলা করা হয়।  ধারণা করা হচ্ছে, ক্রিমিয়ায় রাশিয়ার লক্ষ্যবস্তুতে ইউক্রেন যে হামলা করেছিল সেখানে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। এবার বাইডেন ইউক্রেনকে ৬১ বিলিয়ন ডলারের নতুন সহায়তা দিচ্ছেন। এসবও উন্নত অস্ত্র কেনায় ব্যয় করা হবে। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে মধ্যপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করেছিল। সে সময়ই দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়া হতে পারে বলেও গুঞ্জন ওঠে।  যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ৩০০ কিলোমিটার পর্যন্ত দূরে আঘাত হানতে পারে। তছনছ করে দিতে পারে শত্রুপক্ষের ঘাঁটি। স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বলেন, ‘আমি নিশ্চিত করতে পারি যে, রাষ্ট্রপতির সরাসরি নির্দেশে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে দূরপাল্লার এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েছে। তখন সেটি ইউক্রেনের অনুরোধে অপারেশনাল নিরাপত্তা বজায় রাখার স্বার্থে সেটি গোপন রাখা হয়।’ এ বিষয়ে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান বলেন, ইতিমধ্যে কতগুলো অস্ত্র পাঠানো হয়েছে তা স্পষ্ট নয়। তবে ওয়াশিংটন আরও পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে। যুদ্ধের শুরু থেকে ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা করে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু সম্প্রতি ইউক্রেন যুদ্ধে মার্কিন অস্ত্র ধ্বংস হওয়ার বিষয়টি একটি মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে আমেরিকানদের জন্য। রাশিয়ার সঙ্গে সংঘাত শুরু হওয়ার পর এ পর্যন্ত ইউক্রেনের মোট ৭৯৮টি ট্যাংক ধ্বংস হয়েছে। এসব ট্যাংকের বেশিরভাগই আমেরিকা ও অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনকে দান করেছিল। এই প্রসঙ্গে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস লিখেছে, সামরিক বিশেষ অভিযানের সময় আমেরিকার তৈরি ট্যাংকগুলোর বেশিরভাগই রুশ ড্রোনের মাধ্যমে লক্ষ্যবস্তু করা হয় এবং ধ্বংস করা হয়। এটিকে ক্রেমলিনের অন্যতম সাফল্যই বলা যেতে পারে। এবার দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ইউক্রেন যুদ্ধের মোড় বদলে দিতে পারে। এতে রাশিয়ার সঙ্গে পশ্চিমাদের বৈরী ভাব আরও বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।  
২৫ এপ্রিল, ২০২৪

ইসরায়েল ও ইউক্রেনকে ৯৫ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র ও সামরিক সহায়তা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
ইউক্রেন, ইসরায়েল ও তাইওয়ানকে সামরিক সহায়তা দেওয়ার জন্য আলোচিত ৯৫ বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক সহায়তা প্যাকেজ অনুমোদন করেছে মার্কিন সিনেট। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভসে পাস হওয়া এই প্রস্তাবকে অনুমোদন করে সিনেট। বিলটি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের স্বাক্ষরের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে।  আলোচিত এই সামরিক সহায়তা প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে, ইউক্রেনের জন্য ৬১ বিলিয়ন ডলারের সামরিক সরঞ্জাম অনুমোদন। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই কিয়েভকে এসব যুদ্ধ সরঞ্জাম দেওয়া শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছে পেন্টাগন। এছাড়া এই প্রস্তাবে ইসরায়েলের জন্য রয়েছে ২৬ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা।  এর আগেও গত ফেব্রুয়ারিতে একই সহায়তা প্যাকেজ পাস করেছিল সিনেট। কিন্তু একদল কনজারভেটিভস ইউক্রেনের জন্য নতুন সহায়তা প্রস্তাবের বিরোধিতা করায় হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে এই বিল ভোটাভুটিতে আসতে বাধা পায়। গত সপ্তাহে, নিম্নকক্ষে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানেরা একজোট হয়ে এই বিরোধিতাকে পাশ কাটিয়ে সহায়তা প্যাকেজের পক্ষে ভোট দেন।  বিবিসির প্রতিবেদন অনুসারে, দ্বিদলীয় ৭৯–১৮ ভোটে বিলটি পাস হয়।   সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের ডেমোক্র্যাট নেতা চাক শ্যুমার বলেছেন, হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের রিপাবলিকান স্পিকার মাইক জনসন তাঁর চেম্বারে বৈদেশিক সহায়তা বিলটি পাসের জন্য চাপ দেওয়াকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেছিলেন। গতকাল মঙ্গলবার তিনি বলেন, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শী থাকা সত্ত্বেও আমাদের দ্বিদলীয় মনোভাব হাত মেলানোর কারণে কংগ্রেসে এই বড় ও কঠিন বিলটি পাস করানো সম্ভব হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার পাস হওয়া বৈদেশিক সহায়তা প্যাকেজের মধ্যে আরও রয়েছে: •    ইউক্রেনের জন্য ৬১ বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা। •    ইসরায়েলের জন্য ২৬.৪ বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা, এর মধ্যে ৯.১ বিলিয়ন ডলার গাজায় মানবিক সহায়তার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে । •    ‘কমিউনিস্ট চীন মোকাবিলায়’ তাইওয়ানসহ এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মিত্রদের জন্য ৮.১ বিলিয়ন ডলারের তহবিল বরাদ্দ। গাজায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যেই ইসরায়েলকে এই সামরিক সহায়তা দিতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ইতোমধ্যে গাজায় ইসরায়েলের সর্বাত্মক, নির্বিচার হামলার প্রায় সাত মাস হতে চলেছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত এই হামলায় ৩৪ হাজার ১৮৩ জন নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।  ১৩ বিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তা বরাদ্দের জন্য ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল ক্যাটজ মার্কিন সিনেটকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এই উদ্যোগের মাধ্যমে ইসরায়েলের শত্রুদের 'কড়া বার্তা' দেওয়া হয়েছে।    
২৪ এপ্রিল, ২০২৪

টিকটক নিষিদ্ধে আরও একধাপ এগোলো যুক্তরাষ্ট্র
জনপ্রিয় চীনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাপ টিকটক নিষিদ্ধে আরও একটি বিল পাস করেছে যুক্তরাষ্ট্র। নতুন এই বিলে বলা হয়েছে, টিকটক আগামী ৯ মাসের মধ্যে হয়ত তার মালিকানা হস্তান্তর করবে না হলে যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক নিষিদ্ধ করা হবে। বিলটি এখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে হস্তান্তর করা হবে এবং তিনি স্বাক্ষর করলে এটি আইনে পরিণত হবে।  টিকটকের মালিকানা হস্তান্তর অথবা নিষিদ্ধের বিধান রেখে বিলটি পাস করেছে মার্কিন সিনেট। চলতি সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের ‘হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস’-এ দ্বিতীয়বারের মতো চীনা মালিকানাধীন অ্যাপটির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়াকে আইনে পরিণত করার প্রচেষ্টা চালানো হলো। মার্কিন হাউজে বিলটির পক্ষে ভোট পড়েছে ৩৬০-৫৮। এতে উল্লিখিত একটি শর্তে টিকটকের মালিক কোম্পানি বাইটড্যান্সকে এক বছরের মধ্যে কোম্পানি বিক্রি করে দেওয়ার বাধ্যবাধকতা দেওয়া হয়েছে। না হলে যুক্তরাষ্ট্রের সব অ্যাপ স্টোর থেকে অ্যাপটি সরিয়ে ফেলা হবে। তবে, এরপরও ব্যবহারকারীদের জন্য অন্যান্য উৎস থেকে অ্যাপে প্রবেশ করার সুযোগ আগের মতোই থাকবে।  মার্কিন আইনপ্রণেতারা দাবি করে আসছেন, চীনা মালিকানাধীন টিকটক যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য একটি হুমকি। যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, অ্যাপটির মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের ওপর নজরদারি করছে চীন সরকার। আর এই কারণেই তরুণদের মধ্যে টিকটকের জনপ্রিয়তা ও ব্যবহার নিয়ে উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো। শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই টিকটকের ১৭ কোটি ব্যবহারকারী রয়েছেন। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের এই অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে চীন। তবে ধারণা করা হচ্ছে, বাইটড্যান্সের অ্যাপটি বিক্রি করে দেওয়ার যে কোনো ধরনের প্রচেষ্টা আটকে দিতে পারেন চীনা কর্মকর্তারা।  মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও ইঙ্গিত দিয়েছেন, টিকটকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার আইনি নথিপত্র তার ডেস্কে পৌঁছালেই তিনি এতে স্বাক্ষর করে দেবেন। বাইডেন বিলটিকে আইনে পরিণত করার নথিতে স্বাক্ষর করলে কোম্পানিটির জন্য নতুন ক্রেতা খুঁজতে বা বিষয়টি আদালতে চ্যালেঞ্জ জানাতে ১২ মাসের সময় পাবে বাইটড্যান্স। এদিকে, বিলটি পাস হলে কোম্পানি যে মামলা করবে, তা এক রকম নিশ্চিত। এর আগে অ্যাপটি নিষিদ্ধ করার প্রচেষ্টাটি এসেছিল ট্রাম্প প্রশাসনের আমলে। টিকটক বরাবরই বলে আসছে, তাদের কোম্পানি কখনো মার্কিন ব্যবহারকারীদের তথ্য শেয়ার করেনি এবং করবেও না।  গত মাসে ব্যবহারকারীদের উদ্দেশ্যে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে টিকটকের সিইও শউ জি চিউ জোর দিয়ে বলেছেন, তিনি এ আইনের বিপক্ষে লড়ে যাবেন। এমনকি কংগ্রেসকে উদ্দেশ্য করে প্ল্যাটফর্মে একটি ঝুঁকিপূর্ণ প্রচারণাও চালায় কোম্পানিটি, যেখানে এই আইনের বিপক্ষে স্থানীয় প্রতিনিধিদের অভিযোগ করার আহ্বান জানানো হয় ব্যবহারকারীদের।  যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়নও টিকটকের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের ইঙ্গিত দিয়েছে৷ অ্যাপের লাইট সংস্করণের কারণে কম বয়সীদের ক্ষতির আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
২৪ এপ্রিল, ২০২৪

গাজা পরিস্থিতি ঘিরে উত্তেজনা বাড়ছে / ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ ঠেকাতে হিমশিম খাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে ইয়েল ও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে গাজা যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়েছে। ক্রমবর্ধমান এসব প্রতিবাদ নিয়ন্ত্রণে আনতে কর্তৃপক্ষ হিমশিম খাচ্ছে। সোমবার রাতে ম্যানহাটনের নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের একটি প্রতিবাদ ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ এ সময় বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে তারা। একইদিন এর আগে কনেক্টিকাটের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে বহু শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাসে ব্যক্তিগত উপস্থিতি বাতিল করেছে। এ পর্যন্ত মোট শতাধিক শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। খবর বিবিসির। বিবিসি জানিয়েছে, একই ধরনের প্রতিবাদ বার্কলে, এমআইটি ও দেশজুড়ে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও ছড়িয়ে পড়েছে। গত সপ্তাহে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউইয়র্ক সিটি ক্যাম্পাসে তাঁবু শিবির স্থাপন করে ধারাবাহিক প্রতিবাদ চালিয়ে যায়। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়টির কর্তৃপক্ষ ক্লাস অব্যাহত রাখলেও এতে ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হওয়া বাতিল করে। এরপর পুলিশ ক্যাম্পাসে তাঁবু গেড়ে অবস্থান নেওয়া প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালায়। কনেক্টিকাটের নিউ হ্যাভেনে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিবাদকারী শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের চারপাশের রাস্তাগুলোতে যান চলাচল আটকে দেয়। সামরিক অস্ত্র প্রস্তুতকারকদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পর্ক ঘুচানোর দাবিতে স্লোগান দেয় তারা। শিক্ষার্থীদের পরিচালিত ইয়েল ডেইলি নিউজের ভাষ্য অনুযায়ী, পুলিশ এখান থেকে ৪৫ জনেরও বেশি প্রতিবাদকারীকে গ্রেপ্তার করে। নিউইয়র্কে নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের একটি খোলা চত্বর দখল করে সেখানে তাঁবু গেড়ে অবস্থান নেয় প্রতিবাদকারী শিক্ষার্থীরা। কর্তৃপক্ষ তাদের চত্বরটি ছেড়ে দিতে বলে, না ছাড়লে পরিনাম ভোগ করতে হবে বলে সতর্ক করে। কিন্তু কয়েকশ প্রতিবাদকারী এসব অগ্রাহ্য করে প্রতিবাদ চালিয়ে যায়। রাত নামার কিছুক্ষণ পর পুলিশ কর্মকর্তারা সেখানে অভিযান চালান। সামাজিক মাধ্যমে আসা ভাইরাল ভিডিওতে দেখা গেছে, পুলিশ বিক্ষোভকারীদের শিবিরের তাঁবু খুলে নিয়ে যাচ্ছে। পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়া শিক্ষার্থীরা স্লোগান তোলে, ‘আমরা থামব না, আমরা বিশ্রাম নেব না। প্রকাশ করুন, পরিত্যাগ করুন।’ নিউইয়র্ক পুলিশের এক মুখপাত্র জানান, কর্তৃপক্ষ পুলিশকে ডাকার পর তারা ক্যাম্পাসে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের গ্রেপ্তার করে। রয়টার্স জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে মোট কতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তা অনেকক্ষণ পর্যন্ত জানা যায়নি। সেখানে কেউ জখম হয়েছে বলেও তাৎক্ষণিকভাবে কোনো খবর হয়নি। ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলি নজিরবিহীন হামলা চালায়। এর জবাবে হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজায় ইসরায়েল হিংস্র আক্রমণ শুরু করলে ইয়েল, কলম্বিয়া, নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয় ও যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবাদ শুরু হয়। সোমবার শিক্ষার্থী ও কর্মীদের প্রতি পাঠানো এক ইমেইলে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি নেমাত মিনুচে শফিক জানান, বিশ্ববিদ্যালয় ব্যক্তিগতভাবে ক্লাসে উপস্থিতি বাতিল করে অনলাইন ক্লাসে যাচ্ছে। কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের মূল চত্বরে অবস্থান নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কিত বিনিয়োগ পরিত্যাগ করার দাবি জানায়। বিশ্ববিদ্যালয়টির কিছু ফ্যাকাল্টি প্রতিবাদকারীদের এ দাবির নিন্দা জানায়। গত সপ্তাহে এখান থেকে প্রতিবাদকারীদের সরিয়ে দিতে ক্যাম্পাসে পুলিশ ডেকে এনেছিলেন সভাপতি শফিক। বৃহস্পতিবার পুলিশ এই ক্যাম্পাস থেকে শতাধিক শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করে। প্রতিবাদে জড়িত কয়েক ডজন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
২৪ এপ্রিল, ২০২৪

রেমিট্যান্স কমেছে সৌদি ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে
চলতি অর্থবছরের ৯ মাসে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৭০৭ কোটি ডলার। ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১ হাজার ৬০৩ কোটি ডলার। সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), সিঙ্গাপুর ও যুক্তরাজ্যের মতো দেশ থেকে রেমিট্যান্স আয়ে বড় উল্লম্ফনের সুবাদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় রেমিট্যান্স বেড়েছে প্রায় ১০০ কোটি ডলার। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরব থেকে রেমিট্যান্স আসা কমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, অর্থবছরের ৯ মাসে ইউএই থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ৩২৭ কোটি ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ২২০ কোটি ডলার। সেই হিসাবে দেশটি থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে প্রায় ৪৮ শতাংশ। এর সুবাদে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স আসা দেশের তালিকায় গত অর্থবছর তৃতীয় স্থানে থাকা ইউএই এবার প্রথম স্থানে চলে এসেছে। পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর কালবেলাকে বলেন, বেশি শ্রমিক বিদেশে গেলেও সেই অনুপাতে রেমিট্যান্স আসছে না বা আসতে দেওয়া হচ্ছে না। কারণ অর্থ পাচারকারীরা তা কিনে সমপরিমাণ অর্থ সুবিধাভোগীর কাছে পৌঁছে দিচ্ছে। নির্বাচনের কারণে ২০২৩ সালে এই প্রবণতা বেশি দেখা গেছে। ফলে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স খুব বেশি বাড়েনি। অর্থ পাচার রোধে সরকার কিছুই করছে না। এমনকি ডলার সংকটের মধ্যেও জোরপূর্বক এর দর কমিয়ে রাখছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুসারে, স্বাভাবিক সময়ে ইউএই থেকে মাসে ২৫-৩০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স আসে। তবে নভেম্বর থেকে দেশটি থেকে রেমিট্যান্স আসা বাড়তে থাকে। ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়ে ইউএই থেকে প্রতি মাসে রেমিট্যান্স এসেছে গড়ে ৪৫ কোটি ডলারের বেশি। মার্চেও ৩৫ কোটি ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে দেশটি থেকে। একই প্রবণতা দেখা গেছে যুক্তরাজ্য থেকে রেমিট্যান্স আয়েও। বেশি রেমিট্যান্স আসা দেশের তালিকার চতুর্থ অবস্থান থেকে দেশটি উঠে এসেছে দ্বিতীয় স্থানে। ৯ মাসে যুক্তরাজ্য থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ২১৪ কোটি ডলার; যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৪৬ শতাংশ বেশি। সিঙ্গাপুর থেকে রেমিট্যান্স বেড়েছে প্রায় ৪৮ শতাংশ। এ ছাড়া মালয়েশিয়া, ওমান, ইতালি, জার্মানি ও বাহরাইন থেকে রেমিট্যান্স গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় অনেক বেড়েছে। বাংলাদেশ থেকে বেশ কিছু বিনিয়োগ যুক্তরাজ্যে যাওয়ার কারণেও দেশটি থেকে রেমিট্যান্স বাড়তে পারে বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
২৪ এপ্রিল, ২০২৪

এবার পাকিস্তানের ওপর চটেছে যুক্তরাষ্ট্র
বর্তমানে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে পাকিস্তানে অবস্থান করছেন ইরানের প্রেসেডন্ট ইব্রাহিম রাইসি। ইতিমধ্যে দুই দেশের সম্পর্ক ও বাণিজ্য জোরদারে বিভিন্ন ইস্যুতে আটটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে ইসলামাবাদ ও তেহরান। তবে মুসলিম বিশ্বের শক্তিধর এই দুই দেশের এমন উষ্ণ সম্পর্ক ভালোভাবে নেয়নি যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি ইরানের সঙ্গে ব্যবসায়িক চুক্তি সই করায় পাকিস্তানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি পর্যন্ত দিয়েছে ওয়াশিংটন। খবর জিও নিউজের। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের নাম উল্লেখ না করে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক মুখপাত্র বলেছেন, ইরানের সঙ্গে কোনো দেশ ব্যবসায়িক চুক্তি করার আগে তাদের মার্কিন নিষেধাজ্ঞার সম্ভাব্য ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি। ওয়াশিংটনের সঙ্গে ইসলামাবাদের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের বিষয়ে এই মুখপাত্র বলেছেন, পাকিস্তানের বৃহত্তম রপ্তানি বাজার ও দেশটিতে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগকারী দেশ হলো যুক্তরাষ্ট্র। আমরা গত ২০ বছর ধরে পাকিস্তানে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগকারী। পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সাফল্যের সঙ্গে আমাদের দুই দেশের স্বার্থ জড়িত। আমরা আমাদের এই অংশীদারত্ব অব্যাহত রাখব। তবে তেহরানের সঙ্গে ইসলামাবাদের ঘনিষ্ঠতা এবং দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত দ্বিপাক্ষিক চুক্তির কারণে পাকিস্তান-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে ফাটল দেখা দিতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এই কর্মকর্তা। এমনকি বিশ্বে ইরানের অবস্থানের কারণে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আরোপের সম্ভাবনার কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন। গতকাল সোমবার তিনদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে পাকিস্তানে আসেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। ইতিমধ্যে তিনি ইসলামাবাদে দক্ষিণ এশিয়ার পরমাণু শক্তিধর দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নের পাশাপাশি বাণিজ্য বৃদ্ধির ওপর জোর দিয়েছেন রাইসি।  
২৩ এপ্রিল, ২০২৪
X