পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে সম্পর্ক গভীর করতে চীনে পুতিন
চীনে পৌঁছেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। দুদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১৬ মে) চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে পৌঁছান তিনি। এ সময় তাকে আড়ম্বরপূর্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে পশ্চিমা শক্তির বিপরীতে বন্ধু হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় শি বন্ধু পুতিনের আগমনে প্রস্তুতির কোনো কমতি রাখেননি। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে জানানো অভ্যর্থনা ছিল রাজকীয়। যথারীতি ছিল লালগালিচা সংবর্ধনা। সঙ্গে ছিল মোটরবাইক শোভাযাত্রা। দেওয়া হয় গার্ড অব অনার। পুতিনের আগমনে রঙিন সাজে সাজানো হয়েছে চীনের পথঘাট।  পঞ্চম দফায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর এটাই পুতিনের প্রথম বিদেশ সফর। আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, সফরকালে পুতিন ব্যস্ত সময় পার করবেন। শির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসবেন। দিনের পরের ভাগে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংয়ের সঙ্গে দেখা করবেন পুতিন। আগামীকাল শুক্রবার চীনের ঐতিহাসিক শহর হারবিনে দুটি দ্বিপক্ষীয় ব্যবসায়িক সম্মেলনে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে পুতিনের। সেই সঙ্গে সেখানে একটি বরফ উৎসবেও যোগ দেবেন তিনি। এর মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্কের ৭৫তম বার্ষিকী উদ্‌যাপন করা হবে। ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা রাশিয়াকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন চীন। এ পরিস্থিতিতে চীন-রাশিয়ার দুই নেতার বৈঠকের দিকে তীক্ষ্ণ নজর রাখছে পশ্চিমা বিশ্ব। ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রার সামরিক হামলা চালানোর নির্দেশ দেন পুতিন। এর কয়েক দিন আগে বেইজিংয়ে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক হয় তার। এরপর দুজন একসঙ্গে ঘোষণা দেন চীন ও রাশিয়ার মধ্যে ‘সীমাহীন’ বন্ধুত্ব থাকবে। পুতিনের চীন সফরের ব্যাপারে রুশ প্রেসিডেন্টের দপ্তর ক্রেমলিন বলেছে, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের আমন্ত্রণে ভ্লাদিমির পুতিন সেখানে সফর করছেন।
১৬ মে, ২০২৪

আমেরিকায় ১০ ডলার হলেই ভোট কেনা যায় : পুতিন
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ের পর যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রকে কটাক্ষ করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এমনকি আমেরিকায় মাত্র ১০ ডলার দিয়ে একটি ভোট কেনা যায় বলেও মন্তব্য করেন তিনি। খবর বিবিসির। রুশ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ ১৫ থেকে ১৭ মার্চ অনুষ্ঠিত হয়। সোমবার থেকে ভোটের ফলাফল আসতে শুরু করে। প্রাথমিক ফলাফলে বিপুল ভোটের ব্যবধানে নির্বাচনে জয় পেয়েছেন পুতিন। নির্বাচনের ইতিবাচক ফলাফলের পরই সংবাদ সম্মেলনে আসেন পুতিন। সেখানে তিনি বলেন, রাশিয়ার গণতন্ত্র পশ্চিমের অনেকের চেয়ে বেশি স্বচ্ছ। রাশিয়ার অনলাইন ভোটিং পদ্ধতির কথা উল্লেখ করে পুতিন বলেন, রুশ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে অনেক বেশি উন্নত। এবারের নির্বাচনে রাশিয়ার ৮০ লাখ ভোটার অনলাইনে ভোট দিয়েছেন। পুতিন বলেন, এটি স্বচ্ছ ও পুরোপুরি বস্তুনিষ্ঠ। এটা যুক্তরাষ্ট্রের মেইল-ইন ভোটিংয়ের মতো নয়। আপনি সেখানে ১০ ডলার দিয়ে একটি ভোট কিনতে পারবেন। সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন একটি সংবাদমাধ্যম পুতিনের কাছে জানতে চায়, তার পুনর্নির্বাচিত হওয়া গণতান্ত্রিক কি না। এমন প্রশ্নের জবাবে আমেরিকার রাজনৈতিক ও বিচার ব্যবস্থার তুমুল সমালোচনা করেন তিনি। পুতিন বলেন, মার্কিন নির্বাচন ব্যবস্থা গণতান্ত্রিক না। সেখানে যা ঘটছে তাতে পুরো বিশ্ব হাসছে। এটি শুধু বিপর্যয় মাত্র। কোনো গণতন্ত্র নয়। পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে একজন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীকে আক্রমণ করার জন্য প্রশাসন, বিচার ব্যবস্থাসহ অন্যান্য বিষয়ের ব্যবহার করা কি গণতান্ত্রিক? নিজের বক্তব্যে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও বিরোধী দল রিপাবলিকান পার্টি থেকে সম্ভাব্য প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের নাম না নিলেও তিনি ট্রাম্পকেই বুঝিয়েছেন। আগামী নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে বেশ কয়েকটি মামলা ও আইনি জটিলতার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে ট্রাম্পকে।
১৮ মার্চ, ২০২৪

সত্তরেও ‘তরুণ’ পুতিন, ছড়ি ঘোরাচ্ছেন বিশ্ব রাজনীতিতে
৭০ বছর বয়সেও তারুণ্য ধরে রেখেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। শুধু তাই নয়, এই বয়সেও রীতিমতো ছড়ি ঘোরাচ্ছেন বিশ্ব রাজনীতিতে। এই পুতিনই এখন পশ্চিমা বিশ্বের সবচেয়ে বড় মাথাব্যথার কারণ। এক নজরে দেখুন তার জীবনের আদ্যোপান্ত। পুতিনের জীবনের প্রথম ভাগ ১৯৫২ সালের ৭ অক্টোবর পুতিনের জন্ম। আইন বিষয়ে পড়াশোনা করা এই নেতা বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবিতে যোগ দেন। এটাই মূলত তার কর্মজীবনের শুরু। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের রাজনৈতিক জীবন ১৯৯০ সালে লেলিনগ্রাদের মেয়র হিসেবে রাজনীতিতে পা রাখেন তিনি। তীক্ষ্ণ বুদ্ধিমত্তার কারণে দুই দশক ধরে রাশিয়ার একচ্ছত্র ক্ষমতা পুতিনের হাতে। ১৯৯৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর প্রথম ক্ষমতায় আসেন সাবেক এই গোয়েন্দা প্রধান। এরপর থেকে চার দফা প্রেসিডেন্ট আর একবার ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এর মধ্যে ২০০০ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন প্রেসিডেন্ট হিসেবে। আর ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। যদিও ক্ষমতার লাগাম ছিল তার হাতেই। আবারও ২০১২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত টানা ক্ষমতায় রয়েছেন তিনি।  যদিও রুশ সংবিধান অনুযায়ী, আর প্রেসিডেন্ট হওয়ার সুযোগ ছিল না পুতিনের। ওই সময় নিয়মনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সংবিধানই পরিবর্তন করেন তিনি। পুতিনের সাংসারিক জীবন সংসার জীবনে খুব একটা সফল ছিলেন না পুতিন। ২০১৩ সালে পুতিনের সঙ্গে তার স্ত্রীর বিবাহবিচ্ছেদ হয়। অবসান হয় তাদের ৩০ বছরের দাম্পত্য জীবনের। স্ত্রীর অভিযোগ ছিল, পুতিন শুধুই কাজের মধ্যে ডুবে থাকতেন। কাজই ছিল তার নেশা। পরিবারে তার ছোট মেয়ে মস্কো স্টেট ইউনিভার্সিটির প্রশাসনে উচ্চপদে চাকরি করেন। আর বড় মেয়ে একজন শিক্ষাবিদ।  এই রাজনীতিবিদের বাবা একটি কারখানায় কাজ করতেন এবং তার দাদা ছিলেন একজন বাবুর্চি। সেই পরিবার থেকেই আজ বিশ্ব শাসন করছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। শরীরে নেই বয়সের ছাপ ৭০ বছর বয়সী সাবেক এই গোয়েন্দা শারীরিকভাবে এখনো দারুণ ফিট। শারীরিক কসরত বা খেলাধুলার জন্য বিভিন্ন সময় হয়েছেন খবরের শিরোনাম। এখনো নিয়মিত জিম করেন মার্শাল আর্টে ব্ল্যাকবেল্টধারী এই নেতা। পশুপ্রেমি হিসেবেও পরিচিতি রয়েছে পুতিনের। শখ হলেই চলে যান অবকাশ যাপনে। নেমে পড়েন মাছ শিকারে। সবকিছু যেন প্রকাশ্যে করতেই বেশি ভালোবাসেন তিনি। তাই তো ক্যামেরার সামনে কখনো গ্লাইডারে চড়ে আকাশ ছুঁতে চেয়েছেন, আবার কখনো সবমেরিনে ডুব দিয়েছেন সাগরের গভীরে। এসব কর্মকাণ্ড পুতিনকে আরও জনপ্রিয় করে তুলেছে বলে মনে করা হয়। ক্ষমতায় থাকতে মরিয়া পুতিন তার বিরুদ্ধে ক্ষমতায় টিকে থাকতে বিরোধীদের দমন-পীড়নের অভিযোগ রয়েছে। এমনকি তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পান না রুশ নাগরিকরাও। যদিও বরারই তা নাকোচ করে আসছে পুতিন সরকার। সম্প্রতি রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে গুঞ্জন ছড়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন পুতিন। তবে এসবকে গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছে মস্কো। বরং সমালোচকদের জবাব দিতে প্রায় প্রতি দিনই গণমাধ্যমের সামনে হাজির হচ্ছেন তিনি। এমনকি সেনাদের মনোবল চাঙ্গা করতে ছুটে যাচ্ছেন ইউক্রেনে যুদ্ধের ময়দানেও।  
১২ নভেম্বর, ২০২৩
X