যমুনার বুকে দৃশ্যমান বঙ্গবন্ধু রেলসেতু
যমুনার বুকে পুরোপুরি দৃশ্যমান হলো উত্তরাঞ্চলবাসীর স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু। ৫০টি পিলারের ওপর ৪৯টি স্প্যান বসিয়ে এ সেতুর পুরো ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার সুপার স্ট্রাকচার পুরোই দৃশ্যমান হয়েছে। চলছে এডজাস্টমেন্টের কাজ। তবে উভয়পাশের স্টেশন নির্মাণ, স্লিপারবিহীন রেলপথ স্থাপনসহ কিছু কাজ বাকি রয়েছে। রেলসেতুতে ডুয়েলগেজ ডাবল লাইন নির্মাণও শেষের দিকে। আগামী ডিসেম্বরেই সেতুটি নির্মাণকাজ সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।  সোমবার (৬ মে) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু প্রকল্প অফিস সূত্রে জানা গেছে, জাপান ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এর নির্মাণ ব্যয় ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা। ডব্লিউডি-১ ও ডব্লিউডি-২ নামে দুটি প্যাকেজে জাপানি ৫টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।  ডব্লিউডি-১ প্যাকেজটি বাস্তবায়ন করছে জাপানি আন্তর্জাতিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওবাইসি, টোআ করপোরেশন ও জেইসি (ওটিজে) জয়েন্ট ভেনচার। ডব্লিউডি-২ প্যাকেজটি বাস্তবায়নে রয়েছে জাপানের আইএইচআই ও এসএমসিসি জয়েন্ট ভেনচার। এ ছাড়া সেতুর উভয়প্রান্তের দুই স্টেশনে সিগন্যালিং সিস্টেম স্থাপনে ডব্লিউডি-৩ নামে অপর একটি প্যাকেজের কাজও চলছে। সেতুটি নির্মাণে জাপান, ভিয়েতনাম, নেপাল, অস্ট্রেলিয়া, ফিলিপাইন ও বাংলাদেশের প্রায় কর্মীরা নিয়োজিত আছেন।  রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩০০ মিটার উজানে যমুনার বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো এ সেতুটি ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগে নতুন দিগন্ত সূচিত করবে। ঢাকার সাথে রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা অঞ্চলের রেল যোগাযোগে বর্তমান যে বিড়ম্বনা রয়েছে সেটা আর থাকবে না। নির্মাণের পর সেতুটি দিয়ে প্রতিদিন অন্তত ৮৮টি যাত্রীবাহী ও মালবাহী ট্রেন চলাচল করবে। কমে যাবে পরিবহন খরচও। সেই সঙ্গে মহাসড়কের ওপর চাপও অনেকটা কমে আসবে। উত্তরবঙ্গ থেকে বিভিন্ন পণ্য সহজেই ঢাকাসহ সারা দেশ রপ্তানি করা সম্ভব হবে। ফলে এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটবে।  বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতুর পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ওরিয়েন্টাল কনসালটেন্ট গ্লোবাল লি. এর সাব স্ট্রাকচার ইঞ্জিনিয়ার রবিউল আলম কালবেলাকে বলেন, সেতুর ৫০টি পিলারের মধ্যে সবকটি বসানো হয়েছে। প্রতি দুটি পিলারের মাঝখানে একটি করে মোট ৪৯টি স্প্যান বসানো শেষ হয়েছে। সেতুর উপরে রেললাইন স্থাপন শেষ হয়েছে ২ দশমিক ২৫ কিলোমিটার।  তিনি বলেন, ডব্লিউডি-১ প্যাকেজের ৯৬ দশমিক ১৫ শতাংশ, ডব্লিউডি-২ প্যাকেজের ৯০ শতাংশ ও ডব্লিউডি-৩ প্যাকেজের প্রায় ৬৬ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে ডব্লিউডি-১ প্যাকেজে ২ হাজার ৯৭৯ ও ডব্লিউডি-টু প্যাকেজে ২ হাজার ৮৪১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত আছেন।  প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী তানভীরুল ইসলাম বলেন, প্রতিটি স্প্যানের ওপর জাপানিদের অত্যাধুনিক প্রযুক্তির রেললাইন বসানো হচ্ছে। ফলে সেতুর ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চলাচল করতে পারবে। সমান্তরাল ডুয়েল গেজ ডাবল ট্র্যাকের এ সেতুটির নির্মাণকাজ ডিসেম্বরেই শেষ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মাসুদুর রহমান কালবেলাকে বলেন, ইতোমধ্যে সেতুর ৮৪ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এখন শুধু এডজাস্টমেন্ট বাকি রয়েছে। এলাইনমেন্ট ও লেভেল ঠিক করা হচ্ছে। বিভিন্ন ড্রেইনে কাজ, কালভার্টগুলো শেষ হয়ে গেছে। দুই পাশের স্টেশন বিল্ডিংয়ের কাজ, প্ল্যাটফর্ম স্থাপনের কাজ ও ট্র্যাকের কাজ চলছে। ছোট ছোট কিছু পেরিমিটার ফেল্ট বাকি আছে। আশা করছি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই সব কাজ শেষ হয়ে যাবে।  ১৯৯৮ সালে বঙ্গবন্ধু সেতু চালু হওয়ার পরই ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ স্থাপিত হয়। তবে ২০০৮ সালে সেতুটিতে ফাটল দেখা দেওয়ায় কমিয়ে দেওয়া হয় ট্রেনের গতিসীমা। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ৩৮টি ট্রেন ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতিতে সেতু পারাপার হওয়ায় সময়ের অপচয়ের পাশাপাশি ঘটছে সিডিউল বিপর্যয়। বাড়ছে যাত্রী ভোগান্তি। এসব সমস্যা সমাধানে সরকার যমুনা নদীর ওপর আলাদা রেল সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়।  ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতুটি নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এর পিলার নির্মাণে পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয় ২০২১ সালের মার্চ মাসে।
০৭ মে, ২০২৪

ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক
গাজীপুরের জয়দেবপুরে ট্রেন দুর্ঘটনার প্রায় ৩১ ঘণ্টা পর লাইনচ্যুত সব বগি উদ্ধার করা হয়েছে। এতে করে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়েছে। শনিবার (৪ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ওই রুটে ট্রেন যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়। এ বিষয়ে জয়দেবপুর জংশন রেলওয়ে স্টেশনের উপসহকারী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম জানান, বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে উদ্ধারকাজ সম্পন্ন হওয়ার পর দুর্ঘটনাকবলিত লাইনে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক ঘোষণা করা হয়েছে। এখন দুই লাইন দিয়েই ট্রেন চলাচল করতে পারবে। এর আগে, শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে স্টেশনের দক্ষিণে আউটার সিগন্যালে টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনের সঙ্গে তেলবাহী ওয়াগনের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে দুটি ট্রেনের ৯টি বগি লাইনচ্যুত হয়। এ ঘটনায় লোকোমাস্টারসহ চারজন আহত হন। এরপর ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রুটের ট্রেন চলাচল ২ ঘণ্টা বন্ধ হয়ে যায়। পরে বিকল্প লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। বিকেলে রিলিফ ট্রেন ঘটনাস্থলে পৌঁছার পর উদ্ধার তৎপরতা শুরু হয়। রাত দিন উদ্ধার অভিযানে তেলবাহী ওয়াগনের লাইনচ্যুত ৪টি বগি অপসারণ করে পার্শ্ববর্তী স্টেশনে সরিয়ে নেওয়া হয়। এছাড়া যাত্রীবাহী টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনের ক্ষতিগ্রস্ত ৪টি বগি রেললাইনের পাশে ফেলে রাখা হয়েছে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে দুটি ইঞ্জিন ও ওয়াগনের বগি সরিয়ে ফেলে রেলওয়ে বিভাগ। স্থানীয়রা বলছেন, রেলকর্মীদের গাফিলতির কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ভয়াবহ সিডিউল বিপর্যয়ে পড়েছেন যাত্রীরা। রাজধানীর কমলাপুরের ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন থেকে দৈনিক ৫৩টি ট্রেন ছেড়ে গেলেও মাত্র ৪টি ট্রেন সঠিক সময়ে ছেড়ে যায়। বাকি অর্ধশত ট্রেনের অধিকাংশ ২ থেকে ৭ ঘণ্টা বিলম্বে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। রেলস্টেশনে সময়সূচিতে দেখা গেছে, রংপুর এক্সপ্রেস প্রায় সাত ঘণ্টা বিলম্বে রয়েছে। সকাল ৯টা ১০ মিনিটে এ ট্রেন ছাড়ার কথা থাকলেও বিকেল ৪টায়ও ঢাকা থেকে ছাড়তে পারেনি। বিকেল পর্যন্ত ট্রেনটি বাতিলও করা হয়নি। স্টেশনের ইলেকট্রনিক বোর্ডে বিলম্বে ছাড়ার কথা লেখা ছিল। এ নিয়ে যাত্রীরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। যারা অনলাইনে টিকিট কেটেছেন তারা যাত্রা বাতিল করে টাকা ফেরত পাচ্ছিলেন না। রেল স্টেশন সূত্র বলছে, লাইন ক্লিয়ার না হওয়ার কারণে জয়দেবপুর হয়ে যে ট্রেনগুলো যাতায়াত করে সেগুলোর বিলম্ব হচ্ছে। গতকাল থেকেই এসব ট্রেন বিলম্বে ছাড়ছে। কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার কালবেলাকে বলেন, উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় সব ট্রেনই ২ থেকে ৩ ঘণ্টা বিলম্বে ছাড়ছে। এখনো লাইন পুরোপুরি ঠিক হয়নি। সকাল থেকে এ রুটে ৮টি ট্রেন ছেড়ে গেছে। আর সবই বিলম্বে চলছে। এদিকে ট্রেন বিলম্বে ছাড়ায় ছুটির দিনেও কমলাপুর স্টেশনে ছিল যাত্রীদের ভিড়। সাধারণত দিনে ৫৩টি ট্রেন কমলাপুর স্টেশন থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছেড়ে যায়। তবে জয়দেবপুর দুর্ঘটনার কারণে গতকাল থেকে সব ট্রেনই দেরি করে ছাড়ছে। এসব ট্রেন ঢাকায় পৌঁছেছেও দেরি করে। এর আগে সকাল ৬টার রাজশাহী ধূমকেতু এক্সপ্রেস সকাল ৮টায়, ৬টা ১৫ মিনিটের কক্সবাজারগামী পর্যটন এক্সপ্রেস সকাল সাড়ে ৮টায়, ৬টা ৪৫ মিনিটের চিলাহাটিগামী চিলাহাটি এক্সপ্রেস ৯টায়, ৭টা ১৫ মিনিটের নীলফামারীগামী নীলসাগর এক্সপ্রেস সাড়ে ৯টায়, চট্টগ্রামগামী ৭টা ৪৫ মিনিটের মহানগর প্রভাতী ১০টার দিকে ছেড়ে যায়। রাজশাহী কমিউটার, মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস, কালনী এক্সপ্রেস, উপকূল এক্সপ্রেস, চট্টলা এক্সপ্রেস এর কোনোটিই সময়মতো ছেড়ে যায়নি। স্টেশনে সরেজমিনে দেখা যায়, সন্তান ও স্বজন নিয়ে কেউ বসে আছেন, কেউবা দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর ক্লান্ত হয়ে শুয়ে পড়েছেন বসার জায়গা না পেয়ে। স্টেশনের ভেতর অনেক যাত্রীকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার আনোয়ার হোসেন কালবেলাকে বলেন, জয়দেবপুর হয়ে উত্তর পশ্চিমের সব ট্রেন বিলম্বে ছেড়ে যাচ্ছে। একটি লাইন দিয়ে এ রুটে ট্রেন চলছে। আজকের মধ্যে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
০৪ মে, ২০২৪

আজ থেকে ট্রেনে বাড়তি ভাড়া
নানা জল্পনা-কল্পনার পর যাত্রীবাহী ট্রেনের রেয়াত সুবিধা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ফলে ট্রেনের ভাড়া কিছুটা বেড়েছে, যা আজ শনিবার (৪ মে) থেকে কার্যকর হবে।  গত সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় বাংলাদেশ রেলওয়ে। তবে এখন পর্যন্ত নতুন ভাড়ার হার নির্ধারণ করা হয়নি। চলতি সপ্তাহেই তা চূড়ান্ত হবে বলে জানা গেছে। টানা চতুর্থ মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর রেল মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান জিল্লুল হাকিম। মন্ত্রী হিসেবে যোগদানের পর থেকে তিনি রেলের লোকসান কমানোর কথা বলে আসছিলেন। কীভাবে ভাড়া যৌক্তিক পর্যায়ে নির্ধারণ করা যায় সে পথে হাঁটছিল মন্ত্রণালয়। শেষ পর্যন্ত রেয়াত সুবিধা প্রত্যাহারের কৌশলে ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১৯৯২ সালে বাংলাদেশ রেলওয়েতে দূরত্বভিত্তিক ও সেকশনভিত্তিক রেয়াতি দেওয়া হয়। ২০১২ সালে ‘সেকশনাল রেয়াত’ রহিত করা হলেও দূরত্বভিত্তিক রেয়াত বলবৎ থাকে। বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী কালবেলাকে বলেন, রেয়াত প্রত্যাহারের মাধ্যমে আগামী ৪ মে থেকে ট্রেনের ভাড়া সমন্বয় করা হবে। ভাড়া কী হারে বাড়ছে—এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা রেলওয়ের বাণিজ্যিক শাখা নির্ধারণ করবে। রেলওয়ের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে ১০১-১৫০ কিলোমিটার ভ্রমণে ২০ শতাংশ, ১৫১-৪০০ কিলোমিটার ২৫ শতাংশ আর ৪০০ কিলোমিটারের বেশি পথ ভ্রমণে ৩০ শতাংশ রেয়াত সুবিধা পান যাত্রীরা। এ সুবিধাটি বাতিল করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি রেলের এ প্রস্তাব অনুমোদন করেন। গত ১৬ মার্চ বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী রেলের ভাড়া বাড়ানো হবে বলে কয়েকটি গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন। তখন রেলমন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম জানিয়েছিলেন ভাড়া বৃদ্ধির কোনো পরিকল্পনা নেই। এখন রেয়াত সুবিধা প্রত্যাহারের মাধ্যমে ঠিকই যাত্রীদের কাঁধে বাড়তি ভাড়া চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এর আগে ২০১২ ও ২০১৬ সালে ভাড়া বাড়িয়েছিল রেলওয়ে। ২০১২ সালের অক্টোবরে সর্বনিম্ন ৫ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ১১০ শতাংশ পর্যন্ত ভাড়া বাড়ানো হয়। পরে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে আরেক দফা রেলের ভাড়া বাড়ানো হয় ৭ থেকে ৯ শতাংশ। এর প্রায় সাত বছর পর ২০২৩ সালের শেষার্ধে রেলওয়ের বিভিন্ন সেতু ও ভায়াডাক্টে পন্টেজ চার্জ আরোপের মাধ্যমে আয় বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৪ মে, ২০২৪

রেলস্টেশনে ‘টিভিএম’ মেশিন, কাউন্টার ছাড়াই কাটা যাবে টিকিট
ট্রেন যাত্রীদের দ্রুত টিকিট কাটা নিশ্চিত করতে কমলাপুর, বিমানবন্দরসহ বিভিন্ন স্টেশনে ১৫টি ভেন্ডিং মেশিন বসানো হয়েছে। স্টেশনের কাউন্টার, মোবাইল অ্যাপের পর বাংলাদেশ রেলওয়ের নতুন এই সংযোজনকে বলা হচ্ছে টিকিট ভেন্ডিং মেশিন ‘টিভিএম’ প্রযুক্তি। সোমবার (২২ এপ্রিল) কমলাপুরে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনে অটোমেটিক টিকিট ভেন্ডিং মেশিন বসানো হয়।  জানতে চাইলে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারোয়ার বলেন, কমলাপুরে দুটি অটোমেটিক টিকিট ভেন্ডিং মেশিন বসানো হয়েছে। মোট চারটি ভেন্ডিং মেশিন বসানো হবে। ঢাকা, চট্টগ্রামসহ ২১ স্টেশনে ভেন্ডিং মেশিন বসানো হবে। রেলসূত্র জানিয়েছে, কমলাপুরে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনে ৪টি, বিমানবন্দর স্টেশনে ২টি, চট্টগ্রাম স্টেশনে ২টি, সিলেট স্টেশনে ১টি, কক্সবাজার স্টেশনে ১টি, রাজশাহী স্টেশনে ২টি, খুলনা স্টেশনে ১টি, বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম স্টেশনে ১টি ও রংপুর স্টেশনে ১টি ভেন্ডিং মেশিন বসানো হবে। সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, রেলওয়ে স্টেশনে টিকিট কাউন্টারের পাশে টাচ স্ক্রিনের মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। স্ক্রিনে- প্রারম্ভিক স্টেশন, যাত্রার তারিখ ও গন্তব্য স্টেশনের নাম লেখার ঘর রয়েছে। তারিখ ও গন্তব্যের ঘর পূরণ করে সার্চ ট্রেন অপশনে ক্লিক করলেই দেখা মিলবে কাঙ্খিত গন্তব্যের ট্রেনগুলোর নাম এবং আসন সংখ্যা। সেখানে ওয়েবসাইটের মতো প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে অনলাইনে পেমেন্ট করলেই বের হয়ে আসবে টিকিট। তবে এই মেশিনে নগদ টাকা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।  যাত্রীরা রেলওয়ের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও টিকিট কাটতে অতিরিক্ত ২০ টাকা চার্জ কাটায় যাত্রীরা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। মাইনুল মিজান নামে এক যাত্রী বলেন, স্টেশনে গিয়ে টিকিট ভেন্ডিং মেশিনে টিকিট কাটতে যদি অনলাইন চার্জ দিতে হয় তাহলে এই মেশিনের দরকার কী! রেলওয়ে অপারেশন দপ্তর সূত্রে জানা যায়, আধুনিক এ মেশিনের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকবে সহজ ডটকম। এর মাধ্যমে যাত্রীরা সহজেই নিজের টিকিট নিজে কাটতে পারবেন। তবে এজন্য অনলাইনে টিকিট কাটতে যে পরিমাণ চার্জ (২০ টাকা) দিতে হয়, ভেন্ডিং মেশিন থেকে টিকিট কাটলে একই পরিমাণ চার্জ কাটা হবে। ইন্টারনেট ও মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাপের মাধ্যমে সাধারণ যাত্রীরা টিকিট কাটতে পারবেন।   এ সেবা চালুর বিষয়ে রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী বলেছেন, রেলে বিনা টিকিটের যাত্রী রোধ এবং তাৎক্ষণিক ট্রেনে ভ্রমণ করা যাত্রীদের সেবা নিশ্চিত করতে এমন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে দেশের সবকটি অনলাইনভিত্তিক স্টেশনে এ ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন করা হবে।  রেলওয়ের টিভিএম স্থাপন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান কালবেলাকে বলেন, যে লক্ষ্য সামনে নিয়ে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সেটা ইতিবাচক। টিভিএম পৃথিবীর কোথাও শুধু অনলাইন পেমেন্টের মাধ্যমে হয় না। টিভিএম থাকলে সেখানে অবশ্যই নগদ টাকা প্রবেশ করানোর ব্যবস্থা থাকতে হবে। কিন্তু এখানে নগদ টাকা প্রবেশ করানোর কোনো সুযোগ নেই।  স্টেশনে টিভিএম মেশিন স্থাপন প্রসঙ্গে রেলওয়ের ঢাকা বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা শাহ আলম কিরণ শিশির কালবেলাকে বলেন, ঢাকা, বিমানবন্দর, ময়মনসিংহ, সিলেটসহ বড় স্টেশনগুলোতে টিভিএম দেওয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে টিকিটের বেশি চাহিদা আছে এমন স্টেশনগুলোতেও দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনে চারটি টিভিএম ও একটি বুথ, বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনে তিনটি টিভিএম ও একটি বুথ থাকছে। স্টেশনে এসে যাত্রী যেন নিজেই টিকিট কাটতে পারেন এবং অনলাইনে টাকা পরিশোধ করতে পারেন, সেজন্য এ ব্যবস্থা করা হয়েছে। যাত্রীর সুবিধার্থে এটি সবসময় খোলা থাকবে। পেমেন্টের গোপন নম্বর প্রবেশের ক্ষেত্রে যাত্রীর অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, লাইনে কেউ থাকলে পেছনের জনতো তার সামনের মনিটর দেখতে পারবেন না। এ ছাড়া এটার পাশে একটি বুথের মতো ব্যবস্থা থাকবে। সেখানে গেলে যাত্রীকে টিকিট কাটা থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত সবকিছু বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য একজন লোক থাকবে।
২২ এপ্রিল, ২০২৪

৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া
নানা জল্পনা-কল্পনার পর শেষ পর্যন্ত যাত্রীবাহী ট্রেনের রেয়াত সুবিধা প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এর ফলে ট্রেনের ভাড়া কিছুটা বাড়বে। যা আগামী ৪ মে থেকে কার্যকর হবে। সোমবার (২২ এপ্রিল) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় বাংলাদেশ রেলওয়ে। তবে এখন পর্যন্ত নতুন ভাড়ার হার নির্ধারণ করেনি রেলওয়ের বাণিজ্যিক বিভাগ। যা চলতি সপ্তাহেই চূড়ান্ত হবে বলে জানা গেছে।  বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সর্বসাধারণের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, ১৯৯২ সালে বাংলাদেশ রেলওয়েতে দূরত্বভিত্তিক ও সেকশনভিত্তিক রেয়াতি দেওয়া হয়। ২০১২ সালে ‘সেকশনাল রেয়াত’ রহিত করা হলেও দূরত্বভিত্তিক রেয়াত বলবৎ থাকে। সম্প্রতি যাত্রীবাহী ট্রেনগুলোতে ভাড়া বৃদ্ধি না করে শুধু বিদ্যমান দূরত্বভিত্তিক রেয়াত প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। আগামী ৪ মে থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে।’  বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী কালবেলাকে বলেন, রেয়াত প্রত্যাহারের মাধ্যমে আগামী ৪ মে থেকে ট্রেনের ভাড়া সমন্বয় করা হবে। ট্রেনের ভাড়া কী হারে বাড়ছে, এ প্রশ্নের জবাবে মহাপরিচালক বলেন, এটা রেলওয়ের বাণিজ্যিক শাখা নির্ধারণ করবে। রেলওয়ের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, ১০১-১৫০ কিলোমিটার ভ্রমণে ২০ শতাংশ, ১৫১-৪০০ কিলোমিটার ২৫ শতাংশ আর ৪০০ কিলোমিটারের বেশি পথ ভ্রমণে ৩০ শতাংশ রেয়াত সুবিধা পান যাত্রীরা। এই সুবিধাটি এখন বাতিল করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রেলের এই প্রস্তাব সম্প্রতি অনুমোদন করেছেন। যা চলতি মাসের ১ তারিখ থেকে কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। গত ১৬ মার্চ বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী রেলের ভাড়া বাড়ানো হবে বলে কয়েকটি গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন। তখন রেলমন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম জানিয়েছিলেন ভাড়া বৃদ্ধির কোনো পরিকল্পনা নেই। এখন রেয়াত সুবিধা প্রত্যাহারের মাধ্যমে ঠিকই যাত্রীদের কাঁধে বাড়তি ভাড়া চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। জানা গেছে, কোনো যাত্রী ১০০ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে গেলে তার ভাড়ার ক্ষেত্রে এতদিন ধরে ছাড় (রেয়াত) দিয়ে আসছিল বাংলাদেশ রেলওয়ে।  সূত্রটি জানিয়েছে, ৪ মে থেকে যদি একজন যাত্রী ট্রেনে ১০০ কিলোমিটারের বেশি ভ্রমণ করেন, তাহলে বাড়তি ভাড়া গুনতে হবে।   এর আগে ২০১২ ও ২০১৬ সালে ভাড়া বাড়িয়েছিল রেলওয়ে। ২০১২ সালের অক্টোবরে সর্বনিম্ন ৫ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ১১০ শতাংশ পর্যন্ত ভাড়া বাড়ানো হয়েছিল। পরে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে আরেক দফায় রেলের ভাড়া বাড়ানো হয় ৭ থেকে ৯ শতাংশ। এর প্রায় সাত বছর পর ২০২৩ সালের শেষার্ধে রেলওয়ের বিভিন্ন সেতু ও ভায়াডাক্টে পন্টেজ চার্জ আরোপের মাধ্যমে আয় বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়।   রেলওয়েতে দূরত্বভিত্তিক রেয়াতি সুবিধা চালু হয়েছিল ১৯৯২ সালে। এর মধ্যে সেকশনভিত্তিক রেয়াত প্রত্যাহার করা হয় ২০১২ সালে। দূরত্বভিত্তিক রেয়াত সুবিধার কারণে দূরপাল্লার ভ্রমণে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের ভাড়া নির্ধারণ হয় দূরত্বের তুলনায় কম।
২২ এপ্রিল, ২০২৪

চলন্ত ট্রেনের ইঞ্জিনে ঝুলছিল নারীর মরদেহ
চলন্ত ট্রেনের ইঞ্জিনে ঝুলছিল মধ্যবয়সী এক নারীর মরদেহ। দিনাজপুরের হিলি রেলস্টেশনে ঢাকাগামী পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিনের সামনে থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় এ মরদেহ উদ্ধার করেছে রেলওয়ে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে পঞ্চগড় থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনটি ক্রসিংয়ের জন্য হিলি রেলস্টেশনে এসে দাঁড়ায়। এ সময় স্থানীয়রা ওই ট্রেনের ইঞ্জিনের সামনের হুকে মাঝবয়সী এক নারীর মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়। পরে হিলি রেলওয়ে পুলিশ এসে মরদেহটি উদ্ধার করে। হিলি রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম বলেন, নিহত ওই নারীর নাম-পরিচয় জানা যায়নি। ইঞ্জিনের সামনে লাশ কীভাবে করে এলো- এটি হত্যা, নাকি দুর্ঘটনা তা তদন্তসাপেক্ষে বলা যাবে।
১৯ এপ্রিল, ২০২৪

দেরিতে ট্রেন ছাড়ায় ভোগান্তিতে যাত্রীরা
ঈদযাত্রার চতুর্থ দিন শনিবার (৬ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর কমলাপুরের ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন থেকে তিনটি ট্রেন দেরিতে ছেড়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। সে সঙ্গে বেড়েছে ট্রেনের যাত্রা বিলম্ব। এতে যাত্রীরা কিছুটা অসন্তোষ প্রকাশ করেন। জানা গেছে, এদিন সকাল ৬টায় রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস স্টেশন ছাড়ার ছাড়ার কথা ছিল। কিন্তু ট্রেনটি পৌনে দুই ঘণ্টা দেরিতে ৭টা ৪৫ মিনিটে স্টেশন ছেড়ে যায়। এরপর নেত্রকোনার মোহনগঞ্জগামী মহুয়া কমিউটার ছাড়ার কথা ছিল ৮টা ১৫ মিনিটে। ট্রেনটি ৩৫ মিনিট দেরি করে ৮টা ৫০ মিনিটে স্টেশন ছাড়ে। একই সঙ্গে চট্টগ্রামগামী কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ট্রেন সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে স্টেশন ছাড়ার কথা থাকলেও ট্রেনটি ৪০ মিনিট দেরিতে ৯টা ২৫ মিনিটে স্টেশন ছাড়ে। এ ছাড়া তিতাস কমিউটার ৯টা ৪৫ মিনিটে কমলাপুর স্টেশন ছাড়ার কথা থাকলেও স্টেশন ছাড়ে সকাল ১০টায়। তবে অন্য ট্রেনগুলো যথাসময়ে স্টেশন ছেড়েছে। এ বিষয়ে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, শনিবার বেশিরভাগ ট্রেনই যথাসময়ে স্টেশন ছেড়েছে। দু-একটি ট্রেন দেরিতে আসায় স্টেশন ছাড়তে কিছুটা সময় লেগেছে। গত ২৪ মার্চ থেকে ৩০ মার্চ পর্যন্ত ঈদযাত্রার অগ্রিম টিকিট বিক্রি করে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এ ছাড়া ২৫ শতাংশ টিকিট ভ্রমণের দিন যাত্রা শুরুর আগমুহূর্তে স্টেশন থেকে পাওয়া যাবে। এদিকে ঈদুল ফিতর উদযাপন শেষে ট্রেনের ফিরতি যাত্রার অগ্রিম টিকিট বিক্রি করেছে রেলওয়ে। রেলওয়ের সূচি অনুযায়ী, বুধবার (৩ মার্চ) ১৩ এপ্রিলের আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট বিক্রি করা হয়। এরপর ১৪ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হয় ৪ এপ্রিল। ১৫ এপ্রিলের টিকিট ৫ এপ্রিল বিক্রি করা হচ্ছে। আর ১৬ এপ্রিলের টিকিট ৬ এপ্রিল; ১৭ এপ্রিলের টিকিট ৭ এপ্রিল; ১৮ এপ্রিলের টিকিট ৮ এপ্রিল এবং ১৯ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হবে ৯ এপ্রিল।
০৬ এপ্রিল, ২০২৪

ট্রেনে ভোগান্তিহীন ঈদযাত্রা
আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বিশেষভাবে ট্রেন পরিচালনা করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। শুক্রবার (৫ এপ্রিল) ঈদযাত্রার তৃতীয় দিন। গত বুধবার থেকে শুরু হয়েছে ট্রেনে আগাম টিকিটের ট্রেনযাত্রা। গত দুদিনের তুলনায় আজ যাত্রীচাপ কিছুটা বেড়েছে। প্রতিটি ট্রেনই যথাসময়ে ছেড়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে। এ দিন উৎসবমুখর পরিবেশে স্বস্তি নিয়েই যাত্রীদের ট্রেনে চড়ে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে। এছাড়া যাত্রীদের নিরাপত্তায় কমলাপুর স্টেশনে মোতায়েন রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সদস্য।  ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, প্রধান সড়ক থেকে স্টেশনে প্রবেশের মুখেই অপ্রয়োজনীয় গাড়িগুলোকে নিবেদন করছে রেলের নিরাপত্তা কর্মীরা। শুধু যেসব গাড়িতে যাত্রী রয়েছে সেইসব গাড়িগুলোকে স্টেশন এলাকায় প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে।    যাত্রীরা জানান, স্টেশনে এখন কোনো ভিড় নেই।  কিন্তু ট্রেন ছাড়ার পর অন্য স্টেশনে যখন দাঁড়াবে সেখানে কেমন ভিড় হবে তা বোঝা যাচ্ছে না। আশা করছি, অন্তত ভালো একটা যাত্রা হবে। যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবারের ঈদযাত্রায় এখন পর্যন্ত কোনো ভোগান্তিতে পড়তে হয়নি। অনলাইনের টিকিটও পাওয়া গেছে অনেকটা সহজেই। ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন থেকেও ট্রেনে উঠতে ও নিজ আসনে পৌঁছাতে কোনো বেগ পোহাতে হয়নি। গত দু’দিনের মতো আজও কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের প্রবেশমুখে অপ্রয়োজনীয় গাড়িগুলো আটকে দেয়া হচ্ছে। প্ল্যাটফর্মে প্রবেশেও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে না  যাত্রীদের। প্রবেশপথে টিটিই টিকিট চেক করে যাত্রীদের প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন। এতে যাত্রী ছাড়া অন্য কেউ এবার প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ করতে পারছে না, যা স্বস্তির কারণ হয়েছে যাত্রীদের কাছে। কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা বলছেন, প্ল্যাটফর্ম এলাকায় টিকিটবিহীন কাউকে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। এতে ভিড় কিছুটা কম। যারা আছে, সবাই যাত্রী। এতে প্ল্যাটফর্ম চত্বরের পরিবেশ ভালো আছে। ট্রেন যাত্রায় যাত্রীদের সার্বিক নিরাপত্তা দিতে প্ল্যাটফর্ম এলাকায় প্রবেশের মুখে ‍র‌্যাব, পুলিশ এবং রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। 
০৫ এপ্রিল, ২০২৪

অগ্রিম টিকিটে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা শুরু
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ট্রেনের অগ্রিম টিকিটে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা শুরু হয়েছে। প্রথম ও দ্বিতীয় দিন তেমন ভিড় না থাকায় স্বাচ্ছন্দ্যেই বাড়ি ফিরেছে মানুষ। তবে সংশ্লিষ্টদের ধারণা, আরও দুএকদিন পরই বাড়তে পারে যাত্রীদের ভিড়। বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) সরেজমিনে দেখা যায়, চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে সকাল থেকে ১২টি আন্তঃনগর ট্রেন ছেড়ে গেছে। তবে অনেক ট্রেনেই অর্ধেক আসন ফাঁকা ছিল। সকাল থেকে প্রতিটি ট্রেন নির্দিষ্ট সময়ে চট্টগ্রাম ছেড়ে গেছে।  জানা গেছে, ১০ এপ্রিলকে ঈদের দিন ধরে বাংলাদেশ রেলওয়ে গত ২৪ মার্চ থেকে যাত্রীদের মাঝে আন্তঃনগর ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু করেছিল। ঈদের আগে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত প্রতিটি আন্তঃনগর ট্রেনের ঈদের অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হয়েছে। আগের ঈদগুলোতে ৫ দিনের টিকিট বিক্রি করলেও এবারই প্রথম ৭ দিনের টিকিট বিক্রি করছে রেলওয়ে। সকাল সাড়ে ৮টায় চট্টগ্রাম রেল স্টেশনের ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মে বসেছিলেন ব্যবসায়ী ইমতিয়াজ উদ্দিন। তার সঙ্গে পরিবারের আরও ৫ সদস্য। তাদের গন্তব্য কুমিল্লার লাকসাম।  তিনি বলেন, ঈদে বাড়তি চাপ কমাতে পরিবারকে আগেই বাড়িতে পাঠিয়ে দিচ্ছি। শেষ সময়ে মানুষের অনেক গাদাগাদিতে যাত্রাই ভয়ংকর হয়ে পড়ে। অগ্রিম টিকেট দেওয়ায় রেলওয়েকে ধন্যবাদ জানাই। একই কথা বলেন পঞ্চাষোর্ধ রাহেলা বেগম। তিনি যাবেন ঢাকার কমলাপুর। দুই হাতে শক্ত করে চেপে ধরেছেন ব্যাগ। আর কিছুক্ষণ পরপর চিৎকার করে ডাকছেন তার নাতি আফসানা শাওনকে। রাহেলা বেগম বলেন, ছেলে চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে। সে ঈদের ছুটি পাবে ১০ এপ্রিল থেকে। তখন বাড়িতে যাওয়া আর আগুনে ঝাঁপ দেওয়া একই কথা। এই জন্য আগে থেকেই টিকেট কাটা হয়। এখন রেলস্টেশনে তেমন মানুষ দেখা যাচ্ছে না। যে কারণে আতঙ্কেরও কিছু নাই। আমরা ছেলের বউ ও নাতি স্বাচ্ছন্দ্যে আমার সঙ্গে বাড়িতে যাচ্ছে। চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান কালবেলাকে বলেন, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ট্রেনের অগ্রিম টিকিটে ঘরমুখো যাত্রীদের যাত্রা শুরু হয়েছে বুধবার থেকে। তবে বুধ ও বৃহস্পতিবার যাত্রীদের তেমন ভীড় ছিল না। কিন্তু আগামী ২-৩ দিন পর প্রচণ্ড ভীড় বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।  বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম। কালবেলাকে তিনি বলেন, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ট্রেনের অগ্রিম টিকিটে যাত্রা শুরু হয়েছে। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে ১২টি আন্তঃনগর ট্রেনে প্রতিদিন ৭ হাজার ৭১৫ জন যাত্রী ঈদে বাড়ি ফিরতে পারবেন। তিনি আরও বলেন, এবার স্পেশালসহ আন্তঃনগর ট্রেনে করে চট্টগ্রাম থেকে প্রতিদিন ১৪ থেকে ১৫ হাজার যাত্রী ঈদে বাড়ি যেতে পারবেন। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে ১ জোড়া স্পেশাল ট্রেন চলবে। ট্রেন দুটি ঈদের আগে ৮ ও ৯ এপ্রিল, ঈদের পরদিন থেকে তিনদিন চলবে। চট্টগ্রাম-চাঁদপুর রুটের চাঁদপুর ঈদ স্পেশাল (চারটি ট্রেন), চট্টগ্রাম-ময়মনসিংহ রুটে ময়মনসিংহ ঈদ স্পেশাল (দুটি ট্রেন), ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ রুটে দেওয়ানগঞ্জ ঈদ স্পেশাল (দুটি ট্রেন) চলবে। এসব ট্রেন ৫ এপ্রিল থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত ও ঈদের পরের দিন থেকে পাঁচদিন পর্যন্ত চলবে।
০৪ এপ্রিল, ২০২৪

ঈদে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথে বিশেষ চমক
ঈদ উপলক্ষে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথের যাত্রীদের জন্য আসছে বিশেষ চমক। ঈদযাত্রা স্বস্তি ও আরামদায়ক করতে এ রুটে প্রথমবারের মতো ঈদ স্পেশাল ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। একজোড়া বিশেষ ট্রেনে আসা-যাওয়ার পথে দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের ৮টি স্টেশনে থামবে। স্পেশাল এ ট্রেনটি ঈদুল ফিতরের আগে ও পরে চলবে। কক্সবাজার রেলওয়ের স্টেশন মাস্টার গোলাম রব্বানী বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ট্রেনটি চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে সকাল ৭টায় কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা করবে এবং পৌঁছাবে সকাল ১০টা ২০ মিনিটে। সন্ধ্যা ৭টায় কক্সবাজার আইকনিক রেলওয়ে স্টেশন থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা হয়ে রাত ১০টা ৫ মিনিটে চট্টগ্রাম পৌঁছাবে। পথে ট্রেনটি ষোলশহর, জানালীহাট, পটিয়া, দোহাজারী, সাতকানিয়া, চকরিয়া, ডুলাহাজারা এবং রামু স্টেশনে থামবে। তিনি আরও জানান, ট্রেনটি ৮ এপ্রিল থেকে ঈদুল ফিতরের আগের দিন পর্যন্ত এবং ঈদুল ফিতরের পরের দিন থেকে ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত চলাচল করবে। এ ট্রেনটিতে ১০টি কোচ এবং ৪৮০ সিট রয়েছে। ফার্স্টক্লাস সিটের (এসি) চট্টগ্রাম টু কক্সবাজারের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৪০ টাকা এবং শোভন সিটের (ননএসি) ভাড়া ১৮৫ টাকা। এছাড়াও বিভিন্ন আন্তঃনগর ট্রেন অর্থাৎ মহানগর, মেঘনা ও  তূর্ণা কক্সবাজার পর্যন্ত বর্ধিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি প্রকল্পের কাজ শেষ হলে দ্রুত সময়ের মধ্যে কমিউটার ট্রেনও চালু হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
০২ এপ্রিল, ২০২৪
X