শনাক্তের বাইরে ৪৬ ভাগ রোগী
উচ্চ রক্তচাপকে বলা হয় নীরব ঘাতক। দেশে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা। মৃত্যু ও পঙ্গুত্বের প্রধান তিনটি কারণের অন্যতম এই রোগ। নির্দিষ্ট কোনো লক্ষণ বা উপসর্গ না থাকায় শনাক্তের বাইরে থাকছেন প্রায় ৪৬ শতাংশ রোগী। হৃদরোগ-ডায়াবেটিস কিংবা অন্য কোনো জটিল রোগের চিকিৎসা নিতে গিয়ে শনাক্ত হয় উচ্চ রক্তচাপ। হৃদরোগ, ব্রেইন স্ট্রোক, ডায়াবেটিস ও কিডনি রোগের জন্য দায়ী এই উচ্চ রক্তচাপ। একসময় উচ্চ রক্তচাপের রোগী শহরকেন্দ্রিক হলেও নগরায়ণের প্রভাবে এখন গ্রামেও বাড়ছে এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা। অনিয়মিত ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং অপর্যাপ্ত শারীরিক শ্রমকে এর জন্য দায়ী করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, শুধু উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমেই অসংক্রামক রোগজনিত অকালমৃত্যু অনেকটা কমিয়ে আনা সম্ভব। শর্করা জাতীয় খাবার বেশি খাওয়া, জাঙ্ক ফুড, প্রচুর পরিমাণে লবণ ও চিনি খাওয়া, মদ ও ধূমপান এবং পর্যাপ্ত কায়িক পরিশ্রম না করা এবং পরিমিত না ঘুমানোর কারণে বাড়ছে উচ্চ রক্তচাপ। শুধু বিস্তার নয়, স্থানীয় পর্যায়ে সুযোগ-সুবিধার অভাবে রোগটি দেরিতে শনাক্ত হচ্ছে এবং আক্রান্ত ব্যক্তিকে ঝুঁকিতে ফেলছে। আসন্ন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে এ খাতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ প্রদানের পরামর্শ দেন তারা। চিকিৎসকরা বলছেন, শহরাঞ্চলে চলাচলের পথ সীমিত হওয়ায় অধিকাংশ সময়ে যানবাহন ব্যবহার করে মানুষ। আবার যাতায়াত ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় গ্রামাঞ্চলেও কম দূরত্বের পথে না হেঁটে বাহন ব্যবহারের প্রবণতা বেড়েছে। সেখানেও অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপনের প্রভাব পড়ছে। ফলে উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে প্রাপ্তবয়স্ক প্রতি চারজনের একজন। মোট জনসংখ্যার প্রায় ২৭ শতাংশ অর্থাৎ ৪ কোটির বেশি মানুষ এই রোগে আক্রান্ত। তবে সিংহভাগ আক্রান্তই জানেন না তারা এ নীরব ঘাতকের শিকার। গ্রাম পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে ১৪ হাজারের বেশি কমিউনিটি ক্লিনিক থাকলেও রয়েছে সচেতনতার অভাব। আবার সব ক্লিনিকে রোগটি স্ক্রিনিংয়ের সুযোগও নেই। যদি স্ক্রিনিং জোরদার করে সেবার আওতা বাড়ানো যায়, তাহলে ২০৫০ সালের মধ্যে ৭ দশমিক ৬ কোটি মৃত্যু এড়ানো সম্ভব। এমন পরিস্থিতিতে আজ (শুক্রবার) দেশে পালিত হচ্ছে বিশ্ব উচ্চ রক্তচাপ দিবস। ওয়ার্ল্ড হাইপারটেনশন লিগের সদস্য হিসেবে হাইপারটেনশন কমিটি অব ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ ২০০৬ সাল থেকে প্রতি বছর ১৭ মে দিবসটি পালন করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরও জনসচেতনতায় এ দিবসকে ঘিরে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘সঠিকভাবে রক্তচাপ মাপুন, নিয়ন্ত্রণে রাখুন এবং দীর্ঘজীবী হোন’। গত বছর সেপ্টেম্বরে উচ্চ রক্তচাপবিষয়ক বৈশ্বিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এতে বলা হয়, বিশ্বের ৩০ থেকে ৭৯ বছর বয়সী জনগোষ্ঠীর ৩৩ শতাংশ উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত। গত ৩০ বছরে আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে হয়েছে ১৩০ কোটি। এর মধ্যে ৭৮ শতাংশই বাংলাদেশসহ নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর অধিবাসী। বাংলাদেশের চিত্র খুবই উদ্বেগজনক বলেও মন্তব্য করেছে ডব্লিউএইচও। সংস্থাটির গ্লোবাল রিপোর্ট অন হাইপারটেনশন-২০২৩ বলছে, বাংলাদেশে আক্রান্তদের ৪৬ শতাংশই তাদের রোগ সম্পর্কে অবগত নন। তাদের চিকিৎসাসেবা গ্রহণের হার খুবই কম। মাত্র ৩৮ শতাংশ চিকিৎসা নেন। যার মধ্যে নিয়মিত ওষুধ সেবনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছেন মাত্র ১৫ শতাংশ। অর্থাৎ ওষুধ সেবনের পরও রোগটি নিয়ন্ত্রণে নেই ৮৫ শতাংশেরই। ২০১৯ সালে দেশে ২ লাখ ৭৩ হাজার মানুষ হৃদরোগজনিত অসুস্থতায় মারা যান, যার ৫৪ শতাংশের জন্য দায়ী উচ্চ রক্তচাপ। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ে সাম্প্রতিক কোনো গবেষণা নেই সরকারের কাছে। বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক অ্যান্ড হেলথ সার্ভে ২০১৭ অনুযায়ী, দেশের প্রায় ২৭ শতাংশ মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে। সংখ্যায় ৪ কোটির বেশি। এর মধ্যে অতিরিক্ত ওজনের নারী-পুরুষের রোগটিতে আক্রান্তের হার যথাক্রমে ৪৯ ও ৪২ শতাংশ। আর স্বাভাবিক ওজনের নারী-পুরুষের হার যথাক্রমে ২৫ ও ২৪ শতাংশ। প্রতি ১০টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সাতটিতে উচ্চ রক্তচাপজনিত চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। তবে নির্ণয় ও ব্যবস্থাপনা গাইডলাইন রয়েছে মাত্র ১৭ ভাগে। প্রশিক্ষিত কর্মী রয়েছেন মাত্র ২৯ শতাংশে। গ্লোবাল বারডেন অব ডিজিজ স্টাডি (জিবিডি) ২০১৯-এর তথ্য অনুযায়ী, দেশে মৃত্যু এবং পঙ্গুত্বের প্রধান তিনটি কারণের একটি উচ্চ রক্তচাপ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, নগরায়ণের ফলে বর্তমানে উচ্চ রক্তচাপের রোগী সবখানেই। বার্গার, হাই এনার্জি ড্রিংকস থেকে শুরু করে অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রামের দোকানেও পাওয়া যাচ্ছে। উচ্চ রক্তচাপের প্রকোপ মোকাবিলায় সরকার বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে মডেল এনসিডি কর্নার করা হয়েছে। ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিউনিটি ক্লিনিকে ডায়াবেটিস ও প্রেশারের ওষুধের সঙ্গে ব্লাড প্রেশার ও সুগারও মাপা যাচ্ছে। তবে এখনো ডায়াগনোসিস শুরু হয়নি। সে পর্যায়ে যেতে আলাদা লোকবল লাগবে। ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের এপিডেমিওলোজি অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগের অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী কালবেলাকে বলেন, অর্থনৈতিক পরিবর্তনে গ্রাম ও শহর মানুষের দৈনন্দিন জীবনে পরিবর্তন এসেছে। সবাই হাঁটাচলা কমিয়েছে। অল্প দূরত্বেও যানবাহন ব্যবহার করছে আবার ক্যালোরি বেশি খাচ্ছে, ফলে ওজন বাড়ছে। গ্রামেও প্রসেসড ফুড (প্রক্রিয়াজাত খাবার) খাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। সঙ্গে আছে মাত্রাতিরিক্ত লবণ খাওয়া। এ ছাড়া তামাক ও মদপানও দায়ী। এসব করেই শরীরে বাসা বাঁধছে উচ্চ রক্তচাপ। দিবসটি উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিএমএ ভবনে গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের (জিএইচএআই) সহযোগিতায় গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) আয়োজিত বাংলাদেশে উচ্চ রক্তচাপ পরিস্থিতি ও করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেন, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে অসংক্রামক রোগের প্রকোপ অনেকটাই কমানো সম্ভব। সরকার ইতোমধ্যে কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। তবে ওষুধ সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখতে এখাতে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে। স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. মো. এনামুল হক বলেন, উচ্চ রক্তচাপ পরীক্ষা ও ওষুধে ১ টাকা বিনিয়োগ করলে সামগ্রিকভাবে ১৮ টাকার সুফল পাওয়া যায়। এ খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর পাশাপাশি দক্ষভাবে তা ব্যবহার করা সম্ভব হলে উচ্চ রক্তচাপজনিত অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কমিউনিটি বেইজড হেলথ কেয়ার (সিবিএইচসি) এর লাইন ডিরেক্টর ডা. মো. কাইয়ুম তালুকদার বলেন, পর্যায়ক্রমে দেশের সব উপজেলায় হেলথ কমপ্লেক্স ও কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধের প্রাপ্যতা নিশ্চিতের লক্ষ্যে কাজ করছি। এই কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপ ও অসংক্রামক রোগের প্রকোপ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে। এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের (ইডিসিএল) উপ-মহাব্যবস্থাপক (বিক্রয় ও বিপণন) মো. জাকির হোসেন জানান, আশা করছি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সব কমিউনিটি ক্লিনিকে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ সরবরাহ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
১৭ মে, ২০২৪

ডেঙ্গু রোগীর বাড়িসহ আশপাশে সচেতনতা জোরদারের তাগিদ মেয়র আতিকুলের
ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর বাড়িসহ আশপাশের এলাকায় সচেতনতা কার্যক্রম জোরদার করার জন্য কাউন্সিলরদের আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার (১৬ মে) দুপুরে রাজধানীর গুলশান-২ এ অবস্থিত ডিএনসিসির নগর ভবনের হলরুমে দ্বিতীয় পরিষদের ২৭তম করপোরেশন সভার আলোচনায় তিনি এ আহ্বান জানান। ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘ডেঙ্গু রোগীর তালিকা অনুযায়ী তাদের ঠিকানা সংগ্রহ করে রোগীর বাড়িসহ আশপাশের এলাকায় ব্যাপকভাবে সচেতনতা কার্যক্রম চালাতে হবে। কাউন্সিলরদের আহ্বান করছি, আপনারা নিজ নিজ ওয়ার্ডের ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের বাড়িতে যাবেন, খোঁজ নেবেন; তাদের আশপাশের মানুষদের সচেতন করবেন।’ কাউন্সিলরদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা, রাজনীতিবিদ, ইমাম, শিক্ষক ও শিক্ষার্থী সবাইকে নিয়ে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে করণীয় সম্পর্কে মতবিনিময় সভা, সচেতনতামূলক র‍্যালি করতে হবে। এজন্য প্রত্যেক কাউন্সিলরকে ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ওষুধ প্রয়োগ করা, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনা করার পাশাপাশি জনসচেতনতা জরুরি। জনগণের মাঝে বার্তা ছড়িয়ে দিতে হবে- এডিসের লার্ভা যেন জন্মাতে না পারে সেজন্য তারা যেন নিজেদের ঘরবাড়ি, অফিস পরিচ্ছন্ন রাখে। ছাদে, বারান্দায়, পরিত্যক্ত টায়ার, ডাবের খোসা, মাটির পাত্র, খাবারের প্যাকেট, অব্যবহৃত কমোড- এসব জায়গায় পানি জমতে দেওয়া যাবে না।’ এ সময় মেয়র বলেন, ‘খাল উদ্ধারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কাউন্সিলরদের যার যার এলাকায় খাল দখল রয়েছে এবং দখলদার কারা আমাকে জানাবেন। আপনারা তথ্য দেবেন, সেই অনুযায়ী অভিযান পরিচালনা করে খাল দখলমুক্ত করা হবে। খাল দখলদারদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’ গত বছরের মতো এবারও ডিএনসিসি এলাকার কোরবানির পশুর হাটে ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থা থাকবে বলে ঘোষণা দেন ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। সভায় ডিএনসিসির সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিকের সঞ্চালনায় অন্যদের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মঈন উদ্দিন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ফিদা হাসান, ডিএনসিসির সকল বিভাগীয় প্রধান ও ডিএনসিসির কাউন্সিলরবৃন্দ এবং অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
১৬ মে, ২০২৪

‘২০১৯ সালের চেয়ে ২০২৩-এ ঢাকায় ডেঙ্গুরোগী ৪২ হাজার কম ছিল’
২০১৯ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে রাজধানী ঢাকায় ডেঙ্গুরোগীর সংখ্যা ৪২ হাজার কম ছিল বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। বুধবার (১৫ মে) মালিবাগ মোড় সংলগ্ন উড়ালসেতুর নিচে ১২ নম্বর ওয়ার্ডের গণশৌচাগার উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ তথ্য জানান। মেয়র বলেন, ২০১৯ সালে ঢাকা শহরে ১ লাখ ৫৫ হাজার ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছিল। গত বছর পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল যে, ডেঙ্গু পরিস্থিতি ২০১৯ সালকেও ছাড়িয়ে যাবে। এরপর আমরাও এ বিষয়ে যথাযথ প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। মশককর্মী, যান-যন্ত্রপাতি, মানসম্মত কীটনাশক মজুত ও কাউন্সিলরদের সহযোগিতায় আমরা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছি। তিনি বলেন, রোগীদের ঠিকানার ৪০০ গজের মধ্যে বিশেষ মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম পরিচালনাসহ বিভিন্ন জায়গা ও স্থাপনায় আমাদের মশককর্মীরা কাজ করেছে। ফলে সফলতার সঙ্গে এডিস মশার বিস্তার নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি বলেই ২০২৩ সালে উত্তর ও দক্ষিণ (সিটি করপোরেশন) মিলিয়ে ঢাকা শহরে ডেঙ্গুরোগী ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার। অর্থাৎ, ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে ঢাকা শহরে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৪২ হাজার কম ছিল। সবার সহযোগিতায় এ বছরও ডেঙ্গুর সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সকলের দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রয়োজন জানিয়ে মেয়র তাপস বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আগামী ২১ মে আমরা সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মতবিনিময় করব। ইতোমধ্যে তাদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও আমরা বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয়, থানা ও পুলিশ ফাঁড়িসহ সব সরকারি, আধা-সরকারি স্থাপনা ও আবাসনে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করব। শেখ তাপস বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে একবার পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করব এবং যে সকল স্থাপনায় লার্ভা পাওয়া যাবে আমরা সেগুলো নিধন করব। পরে সেসব স্থাপনা ও আবাসনে যাতে এডিসের প্রজননস্থল সৃষ্টি না হয়, সেজন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে ডেঙ্গু সংক্রমণবিষয়ক নির্ভুল তথ্য দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মেয়র বলেন, এক মাস আগে আমরা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছি। সেই বৈঠকে আমরা বলেছি, আমাদের ডেঙ্গু রোগীর যে তথ্য দেওয়া হয় তা পরিপূর্ণ নয়, অসম্পূর্ণ। ফলে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার রোগীদের তথ্য পেতে আমাদের বেশ বেগ পেতে হয়। তিনি বলেন, ঢাকার বাইরে থেকে যেসব রোগী আসে তাদের পৃথক করা কঠিন কোনো কাজ নয়। কারণ তাদের বেশিরভাগই রেফারেল হয়ে আসে। ওইসব রোগীকে পৃথকভাবে লিপিবদ্ধ করলে ঢাকার প্রকৃত রোগী শনাক্ত করা সহজ হয়। দেখা যাচ্ছে ঢাকার প্রকৃত রোগী ১০ জন, সেখানে যদি আমাদের (ঢাকার বাইরের রোগীসহ) ১০০টি ঠিকানা দেওয়া হয়, তাহলে বাকি ৯০টি ঠিকানা খুঁজতে খুঁজতে আমাদের সময়ক্ষেপণ হয়। এমন বিভ্রান্তিকর তথ্য দেওয়া হলে আমাদের পক্ষে সঠিকভাবে (এডিসের প্রজননস্থল ধ্বংসের) কাজটা করা কষ্টসাধ্য হয়। সঠিক তথ্য দিলে আমরা সঠিকভাবে কাজটা করতে পারি। ঢাকাবাসীকে আমরা আরও বেশি ফলপ্রসূ সেবা দিতে পারব। এর আগে ঢাদসিক ১২ নম্বর ওয়ার্ডে পাইপ-নর্দমা পরিষ্কার কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন মেয়র। পরে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমের সঙ্গে দক্ষিণ কমলাপুর কালভার্ট সংলগ্ন ৮ নম্বর ওয়ার্ডের গণশৌচাগার উদ্বোধন করেন। পরে তারা গণশৌচাগারের পাশে দুটি কদম ফুলের চারা রোপণ করেন। এ সময় অন্যদের মধ্যে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, সচিব আকরামুজ্জামান, ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমান, অঞ্চল-২ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা সোয়ে মেন জো, কাউন্সিলরদের মধ্যে ১২ নম্বর ওয়ার্ডের খ ম মামুন রশিদ শুভ্র, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মো. সুলতান মিয়া, সংরক্ষিত আসনের ফারহানা ইসলাম ডলি, মিনু রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
১৫ মে, ২০২৪

সার্ভার সমস্যায় রোগী ভর্তি বন্ধ হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে
সাভারের হেমায়েতপুরের বাসিন্দা আজগর আলী (৫০)। দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগের সমস্যায় ভুগছেন। চিকিৎসক পরামর্শ দিয়েছেন এনজিওগ্রাম করাতে। গতকাল সোমবার তিনি সাভার থেকে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে এসেছিলেন এনজিওগ্রাম করাতে। এসে জানতে পারলেন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে এনজিওগ্রাম সেবা বন্ধ। কারণ হিসেবে জানানো হয়, হাসপাতালের লোকাল সার্ভারে (ডিজিটাল তথ্য ভান্ডার) সমস্যা হয়েছে। তাই হাসপাতালের ভর্তি ও বহির্বিভাগের সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। শুধু হাতে লেখা কাগজে ভর্তি কার্যক্রম চালু রয়েছে। সেটাও অনেকটা জোড়াতালি দিয়ে চলছে। শুধু আজগর আলী নয়, হাজারীবাগের শারমিন রিমাও ভর্তি রোগী নিয়ে বিভ্রাটের কথা জানান। তার বাবার হার্টে একাধিক ব্লক রয়েছে, তাই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে; কিন্তু সার্ভার সমস্যার কারণে পরীক্ষা করাতে পারেনি। একাধিক রোগীর স্বজন জানান, সকাল থেকে হাসপাতালের সবধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। বাধ্য হয়ে তাদের ক্লিনিকে ছুটতে হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হয় জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীর জামাল উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বর্তমানে বিদেশে অবস্থান করছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিষয়টি তিনি জানতেন না। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক (এমআইএস) অধ্যাপক ডা. মো. শাহাদাত হোসেন কালবেলাকে বলেন, প্রতিটি হাসপাতালের নিজস্ব লোকাল সার্ভার রয়েছে। সেই সার্ভারের মাধ্যমে প্রতিটি হাসপাতাল তার কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের লোকাল সার্ভারে কোনো সমস্যা হয়েছে কি না, আমার জানা নেই। এ বিষয়ে কেউ কিছু জানায়নি। খোঁজ নিয়ে জানবো। সমস্যা হলে অবশ্যই সমাধানের ব্যবস্থা হবে।
১৪ মে, ২০২৪

হাসপাতালে লিফটে আটকে রোগী মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটির কাজ শুরু
গাজীপুরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লিফটে আটকা পড়ে রোগী মৃত্যুর ঘটনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ সময় তারা চিকিৎসক, নার্স, লিফটের অপারেটর, ওয়ার্ডবয় ও গণপূর্ত বিভাগের কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলেন। সোমবার (১৩ মে) দুপুরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসা তদন্ত দলের নেতৃত্ব দেন কমিটির প্রধান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (ডেন্টাল) ডা. মাহমুদা বেগম। কমিটির বাকি দুই সদস্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. খায়রুজ্জামান ও সহকারী পরিচালক মো. মাসুদ রেজা খান এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন। তদন্ত কমিটির প্রধান মাহমুদা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, রোববার সকালে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের লিফটে আটকা পড়ে নিহত হওয়ার খবর মিডিয়ায় প্রচার হওয়ার পর এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তথ্য পেয়ে ঘটনার তদন্তে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। তিন কার্যদিবসের মধ্যে এ তদন্তের প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। তিনি বলেন, সোমবার শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম, উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলমসহ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক, নার্স, লিফটের অপারেটর, ওয়ার্ডবয় ও গণপূর্ত বিভাগের কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বক্তব্য নেওয়া হয়েছে। তদন্তে লিফট বন্ধের কারণ, তা কতক্ষণ বন্ধ ছিল, লিফটে আটকা পড়া লোকজন কীভাবে উদ্ধার হলো ও রোগী মৃত্যুর ঘটনায় কারও কোনো অবহেলা ছিল কী না সবকিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
১৩ মে, ২০২৪

৪৫ মিনিট লিফটে আটকা থেকে মারা গেলেন রোগী
এবার গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের লিফটে আটকে এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এমনটি হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। রোগীর স্বজন ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার রানীগঞ্জ বাড়িগাঁও গ্রামের শারফুদ্দিনের স্ত্রী মমতাজ বেগম (৫৩) বুকে ব্যথা নিয়ে গত রোববার সকালে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। তাকে প্রথমে মেডিসিন বিভাগে পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় জানা যায় তার হার্টে সমস্যা। পরে চিকিৎসকদের পরামর্শে সকাল সাড়ে ৯টায় ১১তলা থেকে তাকে লিফটে চারতলায় হৃদরোগ বিভাগে নেওয়া হচ্ছিল। লিফটটি ৯ তলার মাঝামাঝি গিয়ে বন্ধ হয়ে যায়। নিহতের মেয়ে শারমিন বলেন, ‘মাকে নিয়ে ১১ তলা থেকে লিফটে চারতলায় যাচ্ছিলাম। ৯ তলার মাঝামাঝি লিফট বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় লিফটে মা, আমি, আমার মামা, ভাইসহ আরও কয়েকজন ছিলেন। আমাদের দম বন্ধ হয়ে আসছিল। আমরা তিন লিফটম্যানকে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানাই। কিন্তু তারা ফোনে আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। পরে ৯৯৯ কল করলে ৪৫ মিনিট পর ফায়ার সার্ভিস এসে আমাদের উদ্ধার করে। কিন্তু এর মধ্যেই আমরা মা মারা যান। লিফটম্যানদের গাফিলতির কারণে মায়ের মৃত্যু হয়েছে।’ হাসপাতালের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে রোগী ও তার স্বজনরা দীর্ঘসময় লিফট আটকা পড়েন। পরে লিফটম্যান ও ফায়ার সার্ভিসের লোক এসে তাদের উদ্ধার করেন। লিফটের ভেতর মমতাজ বেগম মারা যান। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। হাসপাতালের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান রুবিনা ইয়াসমিনকে প্রধান করে ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে। কমিটিকে তিন কর্ম দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। উল্লেখ্য, এর আগে গত ৩ মে হাসপাতালের ১২ তলার নামাজের কক্ষের দেয়ালের পাশের ফাঁকা স্থান দিয়ে নিচে ১০ তলায় পড়ে এক রোগীর মৃত্যু হয়। তখনো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির অভিযোগ উঠে।
১৩ মে, ২০২৪

রোগী বাড়লেও সেবা বাড়েনি
রাজধানীর শনির আখড়ার বাসিন্দা পিয়াস-মলি দম্পতি। দুজনেই ছিলেন থ্যালাসেমিয়ার অজ্ঞাত বাহক। তাদের তিন বছরের একমাত্র ছেলে রাহিদ এ রোগে আক্রান্ত। আড়াই বছর ধরে প্রতি মাসে এক ব্যাগ করে রক্ত দিতে হয় তাকে। পিয়াস জানান, আড়াই বছর ধরে একমাত্র সন্তানের থ্যালাসেমিয়ার চিকিৎসা করে তারা হাঁপিয়ে উঠেছেন। অনেক ওষুধ কিনতে হয়। প্রতি মাসে একবার মালিবাগ থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশন হাসপাতালে এসে রক্ত পরিসঞ্চালন করতে হয়। পিয়াস বলেন, আমি স্বল্প আয়ের মানুষ। এর মধ্যেও অন্তত পাঁচ হাজার টাকার বেশি খরচ হয়। তবু কষ্টটা থাকত না, যদি ছেলে সুস্থ হয়ে উঠত। মালিবাগ থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশন হাসপাতালের পঞ্চম তলায় রক্ত পরিসঞ্চালন বিভাগে কথা হয় তাদের সঙ্গে। সেখানে গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিন দেখা যায়, রাহিদের মতো অন্তত ৮৪ জন থ্যালাসেমিয়া রোগী রক্ত পরিসঞ্চালন করতে এসেছেন। জানা গেছে, হাসপাতালটিতে প্রতিদিন দেড় শতাধিক রোগী থ্যালাসেমিয়ার চিকিৎসা নেন। সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতি বছরের মতো আজ ৮ মে পালিত হচ্ছে বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য, ‘প্রতিটি প্রাণের ক্ষমতায়ন এবং অগ্রগতিকে আঁকড়ে ধরার মাধ্যমে সবার জন্য ন্যায়সংগত ও সহজলভ্য থ্যালাসেমিয়া চিকিৎসা।’ এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। দিবসটি উপলক্ষে সরকারি-বেসকারিভাবে নানা কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে জনসংখ্যার প্রায় ৭ শতাংশ থ্যালাসেমিয়ার বাহক। অর্থাৎ প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ মানুষ এ রোগ বয়ে বেড়াচ্ছেন। বাংলাদেশে বর্তমানে প্রতি ১৪ জনে একজন থ্যালাসেমিয়ার বাহক রয়েছেন, আর ৭০ হাজারের বেশি শিশু থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত। প্রতি বছর ৬ থেকে ৭ হাজার শিশু বিভিন্ন ধরনের থ্যালাসেমিয়া রোগ নিয়ে জন্মগ্রহণ করছে। শঙ্কার বিষয়, এ সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। তবে যে হারে রোগী বাড়ছে, সেই হারে বাড়েনি সেবার মান। চিকিৎসা ব্যবস্থা ঢাকাকেন্দ্রিক হওয়ায় সবচেয়ে বেশি অবহেলিত গ্রামের রোগীরা। বিপুলসংখ্যক রোগীর চিকিৎসায় রয়েছেন মাত্র দেড়শর কম রক্তরোগ বিশেষজ্ঞ। থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশন হাসপাতালের পরামর্শক ও হেমাটোলজি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মনজুর মোর্শেদ বলেন, সচেতনতার কথা বলা হলেও সাধারণ মানুষ সচেতন হচ্ছে না। এক্ষেত্রে আইনের প্রয়োগ থাকতে হবে। বিয়ের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ উভয়কে এ-সংক্রান্ত রক্ত পরীক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। বিয়ের আগে কাজির সামনে বর-কনের থ্যালাসেমিয়ার বাহক নির্ধারক পরীক্ষা করাতে হবে। তাহলে রোগটি ছড়িয়ে পড়া কমানো যাবে। সেইসঙ্গে মসজিদের ইমাম দিয়ে ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সচেতনতামূলক প্রচার বাড়াতে হবে। এতে একটি প্রজন্মের মধ্যে সচেতনতা গড়ে উঠলে রোগটি প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।
০৮ মে, ২০২৪

দেয়াল ছাড়াই হাসপাতালের ফ্লোর, ১২তলা থেকে পড়ল রোগী
গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১২তলার দেয়ালের পাশের ফাঁকা স্থান দিয়ে ১০ম তলায় পড়ে গিয়ে হাসপাতালে চিকিসাধীন এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (০৩ মে) রাতে পৌনে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত জিল্লুর রহমান (৭০) গাজীপুরের কাপাসিয়া থানার দরদরিয়া এলাকার কাসেম আলীর ছেলে। তিনি ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে ওই হাসপাতালে ১২তলার মেডিসিন বিভাগের বারান্দায় চিকিৎসাধীন ছিলেন। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে হাসপাতালের পরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম জানান, এ ঘটনা তদন্তে ৬ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি প্রধান হলেন হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান রুবিনা ইয়াসমিন। তিন কার্যবিসের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।  হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক মো. কামরুল ইসলাম জানান, শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে নিহতের স্ত্রী ধূমপান করতে বারণ করলেও, পাশের নামাজের কক্ষে গিয়ে এক পাশে দাঁড়িয়ে ধূমপান করছিলেন জিল্লুর। একপর্যায়ে রাত পৌনে ১১টার দিকে তিনি সেখানে মাথা ঘুরে কক্ষের দেয়ালের পাশে ফাঁকা স্থান দিয়ে ১২তলা থেকে ১০তলায় পড়ে যান এবং গুরুতর জখম হন। এ ব্যাপারে হাসপাতালের পরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন, বিষয়টি গণপূর্ত বিভাগকে একাধিকবার জানালেও তারা ব্যবস্থা নেয়নি। তবে গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। সদর থানার ওসি সৈয়দ মো. রফিউল করিম রাফি জানান, এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
০৪ মে, ২০২৪

তীব্র দাবদাহে খুলনার হাসপাতালগুলোতে শিশু রোগীর চাপ
খুলনায় বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে, যা বিগত ২৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। গত ১৩ এপ্রিল থেকে অর্থাৎ, ১২ দিন ধরে তীব্র তাপদাহ চলছে। অসহনীয় গরমে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। এতে খুলনায় শিশু স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোতে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। তীব্র গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছে শিশুরা। ডায়রিয়া, জ্বর ও ঠান্ডা-গরম লাগার কারণে হাসপাতালে ছুটছেন অভিভাবকরা। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) খুলনার তিনটি বড় হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুর থেকে ডায়রিয়া শুরু হয় খুলনার সোনাডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা আরাফাত হোসেনের তিন বছরের মেয়ে লামিয়ার। মেয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়লে খুলনা শিশু হাসপাতালের বহির্বিভাগে ১৫০ টাকা টিকিট কেটে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখান আরাফাত। চিকিৎসক লামিয়াকে দ্রুত ভর্তির পরামর্শ দিলেও জানান এখানে কোনো সিট নেই। পাশেই সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান থেকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগে। মেয়েকে কোনো রকম ভর্তি করতে পারলেও সিট তো দূরের কথা লামিয়ার স্থান হয় বারান্দার মেঝেতে। একই অবস্থা হয় নিউমার্কেটের দোকানি কর্মচারী আবুবক্করের দেড় বছরের ছেলে আইয়ানের ভাগ্যেও। ছেলেকে নিয়ে শিশু হাসপাতালে গিয়ে জানতে পারেন কোনো সিট তো নেই। সিটের জন্য ৩০ জনের ওপরে সিরিয়াল দিয়ে রেখেছেন যাদের এখনো ভর্তি করা সম্ভব হয়নি। শুধু খুলনা শিশু হাসপাতাল বা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালই নয়; তীব্র তাপপ্রবাহে হঠাৎ করে বেড়ে গেছে রোগীর চাপ। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন শিশুরা। শিশুদের মধ্যে ডায়রিয়া, জ্বর ও ঠান্ডা-গরম লাগার প্রবণতা বেশি। খুলনা শিশু হাসপাতাল বৃহস্পতিবার বিকেলে খুলনা শিশু হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, বহির্বিভাগে শিশু রোগীর স্বজনদের উপচেপড়া ভিড়। প্রতিটি শিশুর সঙ্গে একাধিক স্বজন হাসপাতালে আসায় ভিড় আরও বেড়েছে। বেশিরভাগ শিশুই ডায়রিয়া, জ্বর, ঠান্ডা-কাশিতে আক্রান্ত। টুটপাড়া এলাকার মনির হোসেন বলেন, আজ ২ দিন ধরে বাচ্চার পাতলা পায়খানা হচ্ছে। বাড়িতে স্যালাইন খাইয়েছি, ভেবেছিলাম ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু পায়খানা না কমায় হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। সকাল থেকে লম্বা লাইন। আরও ১১ জনের পরে আমাদের সিরিয়াল। খুলনা শিশু হাসপাতালের ভর্তি তথ্য কেন্দ্র থেকে জানা গেছে, ২৭৫ শয্যার হাসপাতালে সাধারণ শয্যা রয়েছে ২৪৭টি। গত দুই সপ্তাহ ধরে সব শয্যাই পূর্ণ থাকছে। প্রতিদিন ৩০-৪০টি শয্যা খালি হচ্ছে, সঙ্গে সঙ্গে একই সংখ্যক রোগী ভর্তি হয়ে যাচ্ছে। অবস্থা এমন যে, হাসপাতালে ভর্তির জন্য এখন সিরিয়াল রাখা হচ্ছে। সব সময় অন্তত ৩০ থেকে ৪০টি রোগী সিরিয়ালে থাকছেন ভর্তির জন্য। হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আল আমিন রাকিব জানান, গত ৮/১০ দিন ধরে রোগীর চাপ অস্বাভাবিক রকম বেড়েছে। আগে বহির্বিভাগে প্রতিদিন গড়ে ৪৫০টির মতো শিশু রোগী চিকিৎসা নিত। মঙ্গলবার চিকিৎসা নিয়েছে ৬৫০ জন। বুধবার দুপুর ২টা পর্যন্ত ৪৮২ জন চিকিৎসা নিয়েছে। সিরিয়ালে আছে আরও দেড় শতাধিক রোগী। তিনি বলেন, হাসপাতালে শয্যার বাইরে কোনো রোগী ভর্তি করা হয় না। এ কারণে যতগুলো শয্যা ফাঁকা হচ্ছে খুব অল্প সময়ের মধ্যে তা পূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। ভর্তি করতে না পারায় প্রতিদিন অনেক রোগী ফেরতও পাঠাতে হচ্ছে। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল দুপুর ২টায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, বহির্বিভাগে রোগীদের প্রচণ্ড ভিড়। আন্তঃবিভাগে ভর্তি রোগীও বেড়েছে। বুধবার খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মোট রোগী ভর্তি রয়েছেন ১ হাজার ৪৪৩ জন। হাসপাতাল থেকে জানা গেছে, হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে শয্যা রয়েছে ৪৮টি। অথচ ওই ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে ১৩৯টি শিশু। শয্যা না থাকায় রোগীর ঠাঁই হয়েছে মেঝে, বারান্দায়। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. হুসাইন শাফায়াত বলেন, শয্যা পরিপূর্ণ থাকার পরেও রোগী আসতে থাকে। গুরুতর অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসা না দিয়ে ফিরিয়ে দেই কীভাবে? এ জন্য মেঝে-বারান্দায় যেখানে ফাঁকা পাওয়া যায়, সেখানে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। তিনি বলেন, গরমের কারণে ডায়রিয়া ও জ্বরে আক্রান্ত শিশু রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। অন্যান্য রোগী স্বাভাবিক রয়েছে। খুলনা সংক্রমক ব্যাধি হাসপাতাল তীব্র তাপদাহে খুলনার একমাত্র সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালেও ডায়রিয়া রোগীর চাপ বেড়েছে। নগরীর মীরেরডাঙ্গায় অবস্থিত এই হাসপাতালেও শয্যা ফাঁকা নেই। মাত্র ২০ শয্যার এই হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীদের জন্য শয্যা বরাদ্দ ১০টি। কিন্তু রোগীর চাপ বাড়তে থাকায় সেটি বাড়িয়ে ১৪টি করা হয়েছে। তারপরও প্রতিদিন অসংখ্য রোগী ফিরে যাচ্ছেন। হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. হাবিবুর রহমান জানান, তীব্র তাপপ্রবাহে রোগীর চাপ বেড়েছে। গত ২৩ দিনে হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন প্রায় তিন শতাধিক রোগী। শয্যা সীমিত থাকায় রোগী ভর্তি করা যাচ্ছে না।
২৮ এপ্রিল, ২০২৪

রোগী বেশি সুস্থ হয় নারী চিকিৎসকের কাছে
নারী চিকিৎসকের কাছে রোগী বেশি সুস্থ হয়। তাদের সেবা পাওয়া রোগীদের ফের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সম্ভাবনাও কম। এমনকি তাদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। তবে কেন এমনটা হচ্ছে? কেন পুরুষ চিকিৎসকের তুলনায় নারী চিকিৎসকের চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুঝুঁকি কম? গবেষণায় এসব তথ্য উল্লেখ করলেও এর নির্দিষ্ট কারণ জানানো হয়নি। গবেষকদের মতে, হয়তো নারী চিকিৎসক রোগীর চিকিৎসায় বেশি যত্নশীল, রোগীদের সঙ্গে বেশি সময় দেন সমস্যা সমাধানে। চিকিৎসাবিষয়ক সাময়িকী ‘অ্যানালস অব ইন্টারনাল মেডিসিন’-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় এসব তথ্য জানানো হয়েছে। মেডিকেলনিউজটুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ৭ লাখ ৭৬ হাজার পুরুষ ও নারী রোগীর ওপর গবেষণাটি করা হয়। তাদের মধ্যে সাড়ে ৪ লাখ পুরুষ রোগী ও ৩ লাখের কিছু বেশি নারী রোগী নানারকম শারীরিক সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। গবেষণায় দেখা গেছে, যে রোগীরা নারী চিকিৎসকের অধীনে চিকিৎসাধীন ছিলেন, তারা তাড়াতাড়ি সেরে উঠেছেন। আর যারা পুরুষ চিকিৎসকের অধীনে চিকিৎসাধীন ছিলেন, তাদের অনেকরকম জটিলতা দেখা দিয়েছে। হাসপাতালেও বেশিদিন থাকতে হয়েছে। এমনকি নারী চিকিৎসকদের কাছে চিকিৎসা নেওয়া রোগীদের মৃত্যুহার পুরুষ চিকিৎসকের রোগীদের তুলনায় কম। গবেষণায় বলা হয়, নারী চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নেওয়ার সময় নারীদের মৃত্যুর হার ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ। অন্যদিকে পুরুষ চিকিৎসকের চিকিৎসায় নারীদের মৃত্যুর হার ৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ। নারী চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসায় পুরুষের মৃত্যুর হার ১০ দশমিক ১৫ শতাংশ। আর পুরুষ চিকিৎসকের চিকিৎসায় নারীর মৃত্যুর হার ১০ দশমিক ২৩ শতাংশ। কেন এমন হচ্ছে, তার কারণ এখনো জানা যায়নি। গবেষকরা বলছেন, এর আগে আমেরিকার কয়েকটি হাসপাতালেও এমন দেখা গিয়েছিল যে, পুরুষ সার্জনদের অধীনে থাকা হার্টের রোগীদের মৃত্যু বেশি হয়েছে। এ তুলনায় নারী সার্জনদের অধীনে থাকা রোগীরা তাড়াতাড়ি সেরে উঠেছেন। ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া লস অ্যাঞ্জেলেসের ডেভিড গেফেন স্কুল অব মেডিসিনের জেনারেল ইন্টারনাল মেডিসিন অ্যান্ড হেলথ সার্ভিসেস রিসার্চ বিভাগের মেডিসিনের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ইউসুকে সুগওয়া বলেন, আমরা গবেষণায় নারী ও পুরুষ চিকিৎসকদের ব্যবহারিক ওষুধ প্রয়োগে পার্থক্য পেয়েছি। যেগুলো রোগীদের সুস্থতার ফলাফলে পার্থক্য তৈরি করেছে। এগুলো নিয়ে আরও গবেষণা করতে হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নারী ও পুরুষ চিকিৎসকদের রোগীর সুস্থতার ফলাফলে পার্থক্য প্রমাণ করে যে, নারী চিকিৎসকরা বেশি যত্ন দিয়ে থাকেন এবং সেজন্য আরও নারী চিকিৎসকের উপস্থিতি রোগীদের উপকৃত করবে। নারী চিকিৎসকরা তাদের রোগীদের সঙ্গে কথা বলতে, তাদের রেকর্ড দেখতে বেশি সময় ব্যয় করেন। এতে ভালোমতো চিকিৎসা দিতে পারেন তারা। এ ছাড়া একজন নারী চিকিৎসক পরীক্ষার সময় নারী রোগীদের বিব্রত ও অস্বস্তিকর পরিবেশ দূর করতে সাহায্য করে থাকেন। গবেষণার সহ-লেখক ও ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক লিসা রোটেনস্টাইন বলেন, আমরা জানি যে, চিকিৎসার ক্ষেত্রে পুরুষ ও নারী চিকিৎসকদের যত্নে পার্থক্য রয়েছে। নারী চিকিৎসকরা পুরুষের তুলনায় রোগীদের সঙ্গে বেশি সময় ব্যয় করেন। এতে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হয়ে ওঠে। ২০০২ সালের একটি পৃথক গবেষণায় দেখা গেছে, নারী চিকিৎসকরা একজন রোগীর সঙ্গে গড়ে ২৩ মিনিট সময় ব্যয় করেন, যেখানে পুরুষ চিকিৎসকরা সময় ব্যয় করেন ২১ মিনিট।
২৫ এপ্রিল, ২০২৪
X