সিডনি শ্যানবার্গের প্রতিবেদনে প্রবাসী সরকার
আজ ১৭ এপ্রিল। একাত্তরের এই দিনে মুজিবনগর সরকারের মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা শপথ গ্রহণ করেন। পাকিস্তানি বাহিনীর অব্যাহত গণহত্যার মধ্যে মুজিবনগর সরকার গঠন বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গৌরবোজ্জ্বল ঘটনা। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পর মধ্য এপ্রিল মুজিবনগর সরকারের যাত্রা বিশ্ববাসীকে দারুণভাবে নাড়া দিয়েছিল। বিশ্বখ্যাত মার্কিন সাংবাদিক সিডনি শ্যানবার্গ মুজিবনগর সরকার নিয়ে প্রতিবেদন করেছিলেন নিউইয়র্ক টাইমসে। এই সিডনি শ্যানবার্গই সবার আগে বাংলাদেশে গণহত্যার খবর বিশ্ববাসীকে জানান। বাংলাদেশের গণহত্যা নিয়ে একাত্তরের ২৮ মার্চ নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশ হয় তার দুটি প্রতিবেদন। এ দুটি প্রতিবেদনের একটির শিরোনাম ছিল—‘ইন ঢাকা, ট্রুপস ইউজ আর্টিলারি টু হল্ট রিভোল্ট, সিভিলিয়ানস ফায়ার্ড সেকশন অব ঢাকা আর সেট অ্যা ব্লেজ’। অর্থাৎ ‘পূর্ব পাকিস্তানে সামরিক অভিযান, জোর লড়াইয়ের খবর, সৈন্যরা কামান দাগিয়েছে, নাগরিকদের ওপর গুলিবর্ষণ, বিভিন্ন এলাকায় অগ্নিসংযোগ করেছে’। অন্যটির শিরোনাম ছিল—‘স্লিকস অ্যান্ড স্পেয়ার্স অ্যাগেইনস্ট ট্যাঙ্কস ইন ইস্ট পাকিস্তান’। অর্থাৎ ‘পূর্ব পাকিস্তানে ট্যাঙ্কের বিরুদ্ধে লাঠি ও বল্লম’। সিডনি শ্যানবার্গের এ দুটি রিপোর্ট প্রকাশের দুদিন পর ৩০ মার্চ ডেইলি টেলিগ্রাফে প্রকাশ হয় ব্রিটিশ সাংবাদিক সাইমন ড্রিংয়ের ‘ট্যাঙ্কস ক্রাশ রিভোল্ট ইন পাকিস্তান’। ওইদিন (৩০ মার্চ) প্রভাবশালী সাময়িকী টাইমে প্রকাশ হয় এপির সাংবাদিক মিশেল লরেন্টের প্রতিবেদন—‘অ্যাট ঢাকা ইউনিভার্সিটি বার্নিং বোডিস অব স্টুডেন্ট স্টিল লে ইন দেয়ার বেডস, অ্যা ম্যাসগ্রেব হ্যাড বিন হেইস্টিলি কাভার্ড’। অর্থাৎ ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের বিছানায় তাদের দগ্ধ মৃতদেহ পড়ে আছে, একটি বিশাল হত্যাকাণ্ডকে ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে...’। এ দুটি প্রতিবেদন বিশ্বকে আরও বিশদভাবে জানিয়ে দেয়, পূর্বাঞ্চলে পাকিস্তান সরকার ও সেনাবাহিনী কি পৈশাচিক নির্যাতন ও নিপীড়ন করছে। সত্তরের দশকে সিডনি শ্যানবার্গ ছিলেন নিউইয়র্ক টাইমসের দিল্লি সংবাদদাতা। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় ‘নিউইয়র্ক টাইমস’-এ প্রকাশ হয়েছে সিডনি শ্যানবার্গের প্রায় অর্ধশতাধিক প্রতিবেদন। কোনো বিদেশি সাংবাদিক আমাদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এতসংখ্যক রিপোর্ট করেছেন বলে জানা নেই। ২৫ মার্চ রাতে ঢাকার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে যে কজন বিদেশি সাংবাদিক পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গণহত্যা প্রত্যক্ষ করেন, শ্যানবার্গ ছিলেন তার অন্যতম। ২৭ মার্চ সকালে যে ৩৫ জন সাংবাদিক ও চিত্রগ্রাহককে বলপূর্বক হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল থেকে উঠিয়ে তাদের দেহ ও লাগেজ তল্লাশি করে ফিল্ম ও নোটবই ছিনিয়ে নিয়ে পূর্ব পাকিস্তান থেকে প্রায় তাৎক্ষণিকভাবে বের করে দেওয়া হয়, সিডনি শ্যানবার্গ তাদের একজন। ২৭ মার্চের পর ঢাকা ত্যাগে বাধ্য হলেও মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাক্রম তিনি অনুসরণ করেছেন, পাকিস্তান জেলে বঙ্গবন্ধুর অন্তরীণাবস্থাও ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছিলেন। এ সময় তার অধিকাংশ প্রতিবেদনই দিল্লি থেকে পাঠানো। এপ্রিল মাসে শ্যানবার্গ ভারত ও পূর্ব পাকিস্তানের সীমান্তে এবং পূর্ব পাকিস্তানের বেশ অভ্যন্তরে চার দিনের সফর করেন। সফর শেষে ১৩ এপ্রিল নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশ হয় তার ‘অব্যাহত হত্যাযজ্ঞের মধ্যে বাঙালিদের মন্ত্রিসভা গঠন’ শীর্ষক প্রতিবেদন। এ প্রতিবেদনে বলা হয়—‘যদিও পূর্ব পাকিস্তানের বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের নেতৃত্বের বড় অংশ নিহত হয়েছে বলে খবরে প্রকাশ এবং পাইকারি গণহত্যা অব্যাহত রয়েছে, তা সত্ত্বেও আন্দোলনের হাইকমান্ডের কতক সদস্য বেঁচে আছেন এবং তারা একটি মন্ত্রিসভা গঠন করেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন শেখ মুজিবের প্রধান সহকারী তাজউদ্দীন আহমদ, যার দল আওয়ামী লীগের স্বাধীনতা-অভিমুখী পদক্ষেপ পশ্চিম পাকিস্তানি সামরিক অভিযান বয়ে এনেছে। বর্তমান সংবাদদাতা কর্তৃক ঘুরে আসা পূর্ব পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী এক এলাকায় অন্তত ছয়জন বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা একত্র হয়ে তাদের অভিহিত বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে তাজউদ্দীন আহমদকে মনোনীত করেছেন। তারা শেখ মুজিবকে প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেছেন। তবে অপ্রকাশ্যে বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতারা স্বীকার করেন যে, তিনি বর্তমানে পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে রয়েছেন। একদিকে পশ্চিম পাকিস্তানিদের আধিপত্যাধীন কেন্দ্রীয় সরকার বলে চলেছে যে, পূর্ব পাকিস্তানে পরিস্থিতি শান্ত ও স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসছে; অন্যদিকে বাস্তব ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ভিন্ন ছবি ফুটে উঠছে। বিশ্বস্ত সূত্রে বিভিন্ন সেক্টরে প্রতিদিনই যুদ্ধের খবর পাওয়া যাচ্ছে। পাকিস্তানিরা দলে দলে শহর ছেড়ে পালাচ্ছে বিচ্ছিন্নতাবাদী সেনাবাহিনীর আশ্রয় পেতে কিংবা তাতে যোগ দিতে। হাজার হাজার উদ্বাস্তু তাদের যৎসামান্য জিনিসপত্র বস্তায় অথবা পিচবোর্ডের সুটকেসে ঠেসে ভারতে চলে আসছে সাময়িক আশ্রয়ের সন্ধানে। বর্তমান সংবাদদাতা দেখেছেন, প্রতিরোধ যোদ্ধাদের নিরাপদ আশ্রয় কিংবা লুকোবার জায়গা থেকে বঞ্চিত করার জন্য পাকিস্তানি সৈন্যরা গ্রামকে গ্রাম জ্বালিয়ে দিচ্ছে। কুমিল্লার বহিসীমায় বাঁশ ও ছনের দগ্ধ ঘর থেকে যখন ধোঁয়া উঠছিল আকাশে, আক্রমণরত শকুনরা নেমে আসছিল মাটিতে, নিহত কৃষকের লাশের ওপর, যে লাশ নিয়ে ইতিমধ্যে কুকুর ও কাকের মধ্যে টানাটানি চলছে। পূর্ব পাকিস্তানের ৭৫ মিলিয়ন বাঙালির কতজনকে পাকিস্তানি আর্মি হত্যা করেছে নিশ্চিতভাবে তা জানার কোনো উপায় নেই। তবে বিভিন্ন সূত্রের নির্ভরযোগ্য রিপোর্ট অনুযায়ী, তা অন্তত হাজার হাজার তো বটেই, কেউ কেউ আরও বেশিও বলে থাকেন। কেন্দ্রীয় সরকার নির্দেশ জারি করে, পূর্ব পাকিস্তানে সব বিদেশি সাংবাদিকের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে। কিন্তু বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অধিকৃত গ্রাম এলাকা থেকে প্রাপ্ত সাক্ষ্য-প্রমাণে জানা যায়, যার অনেক কিছুরই পাকিস্তানি আর্মি বিরোধিতা করে থাকে। পাকিস্তানি বাহিনী স্বাধীনতা আন্দোলন দমনকল্পে পূর্ব পাকিস্তানের সব নেতা ও সম্ভাব্য নেতাদের হত্যা করেছে, গোটা অঞ্চলের অর্থনৈতিক ভিত্তি ছারখার করে দিয়েছে। আদেশপ্রাপ্ত হয়ে আর্মি, এখন যা সম্পূর্ণভাবে পশ্চিম পাকিস্তানি সৈন্যদের দ্বারা গঠিত, হত্যা করেছে ছাত্র, বুদ্ধিজীবী, অধ্যাপক, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার ও নেতৃত্বের গুণসম্পন্ন অন্যদের, জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সঙ্গে তাদের সরাসরি যোগ থাকুক কিংবা না-ই থাকুক। ২৫ মার্চ সেনা অভিযান শুরুর পর যেসব বাঙালি অফিসার ও সৈন্য ছাউনি থেকে বেরিয়ে এসে গেরিলা দলে যোগ দিতে ব্যর্থ হয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের বাহিনী তাদের হত্যা করেছে। বেশিরভাগ অফিসারের পরিবারের লোকজনকে হত্যা করা হয়েছে, পালাতে পেরেছেন মাত্র অল্প কয়েকজন। নৌযান ও বিমান থেকে বোমাবর্ষণ করে আর্মি পূর্ব পাকিস্তানের অর্থনৈতিক ভিত্তি—খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা, চা প্রক্রিয়াকরণ কারখানা, পাটকল ও প্রাকৃতিক গ্যাস কূপ ধ্বংস করেছে। ফলে দেশটি ২৫ বছর পিছিয়ে গেল, বলেছেন উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বাগিচা থেকে ভারতে পালিয়ে আসা একজন স্কটিশ চা বাগান ম্যানেজার। পাকিস্তানি আর্মিকে ঠেকাতে মুক্তিবাহিনী রেললাইন ও সড়ক উড়িয়ে দিচ্ছে। শ্যানবার্গ একাত্তরের জুন-জুলাই মাসে পাকিস্তানের সামরিক সরকারের তত্ত্বাবধানে একদল বিদেশি সাংবাদিকের সঙ্গে ঢাকা ও ফরিদপুর সফরের সুযোগ পান, যা তাদের দেখানো হলো সবই সাজানো, সেনা কমান্ডের ‘গাইডেড ট্যুর’ ভিন্ন অন্য কিছু নয়, অভিজ্ঞ সাংবাদিক শ্যানবার্গের তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি। অক্টোবর মাসে, যখন মুক্তিবাহিনীর সাঁড়াশি আক্রমণে পর্যুদস্ত হয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনী দেশের বিভিন্ন রণাঙ্গন থেকে হটতে শুরু করেছে, সে সময় শ্যানবার্গ একাধিক মুক্তাঞ্চল সফর করেন। ৬ ডিসেম্বর ভারত বাংলাদেশকে স্বীকৃতি জানালে যে দীর্ঘ প্রতিবেদনটি তিনি প্রেরণ করেন, তাতে বাঙালিদের উল্লাসের খবর থাকলেও বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতি যে শূন্যতার সৃষ্টি করেছে, সে কথাই বড় করে জানান। ৭ ডিসেম্বর প্রকাশিত সে প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল—‘বাঙালিরা আনন্দিত, কিন্তু তাদের নেতা এখনো অনুপস্থিত।’ শ্যানবার্গ ভারতীয় বাহিনীর সঙ্গে মুক্ত বাংলাদেশে প্রবেশ করেন, সে সময় খুলনাসহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন শহর ও গ্রাম ঘুরে দেখার সুযোগ তার হয়। তিনিই প্রথম বিদেশি সাংবাদিক যিনি ভারত-বাংলাদেশ যৌথবাহিনীর সঙ্গে পাকিস্তান বাহিনীর সম্মুখ সমর প্রত্যক্ষ করার সুযোগ পান। পাকিস্তান বাহিনীর হত্যাযজ্ঞও সরেজমিনে দেখে তার প্রামাণিক প্রতিবেদন পাঠকদের জন্য নিয়মিত পাঠিয়েছেন। ১৬ ডিসেম্বর ঢাকায় পাকিস্তানি জেনারেল নিয়াজির আত্মসমর্পণের ঘটনাও তিনি সম্মুখসারিতে বসে দেখার সুযোগ পান। লেখক: সাংবাদিক
১৭ এপ্রিল, ২০২৪

গান শোনাতে সিডনি যাচ্ছেন তাহসান
বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান সংগীত তারকা, তরুণ-তরুণীদের হার্টথ্রব, সুদর্শন অভিনেতা এবং মডেল ‘তাহসান খান’ সিডনিতে যাচ্ছেন গান শোনাতে। আগামী ১ জুন নিউ সাউথ ওয়েলস ইউনিভার্সিটির সায়েন্স থিয়েটারে সিডনির দর্শক-শ্রোতাদের মাতাতে তাকে নিয়ে যাচ্ছে ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের প্রাক্তন ছাত্রদের অস্ট্রেলিয়ার অ্যালামনাই ‘রেমিয়ানস অস্ট্রেলিয়া’। তিনি সম্মত হয়েছেন জেনে প্রবাসী সংগীতপ্রেমীদের মাঝে তুমুল আলোড়ন তৈরি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাকে ঘিরে আবালবৃদ্ধবনিতার আগ্রহের কমতি নেই। যুব সমাজের মুহুর্মুহ প্রশ্নবানে আনন্দিত আয়োজকরা তাই অনুষ্ঠানের টিকিট উন্মুক্ত করে দিয়েছে। টিকিট পাওয়া যাচ্ছে  www.deshievents.com.au নামের অনলাইন টিকিট বিক্রয় কেন্দ্র থেকে। রেমিয়ানস অস্ট্রেলিয়ার এই আয়োজনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসাবে রয়েছে বাংলাদেশের বৃহত্তম ফ্যাশন ও লাইফস্টাইল ব্র্যান্ড আড়ংয়ের ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম aarong.com নামের অনলাইন প্রতিষ্ঠানটি। প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছে দেশীয় প্রোডাক্ট সহজলভ্য করতে যাদের জুড়ি মেলা ভার। রেমিয়ানস অস্ট্রেলিয়ার অভিজ্ঞ আয়োজকদের মাধ্যমে সিডনির সুধীবৃন্দ স্বাদ পেতে যাচ্ছে একটি মনোজ্ঞ সংগীত সন্ধ্যার এবং দ্বীপ মহাদেশে যোগ হবে অভূতপূর্ব এক সাংস্কৃতিক সংযুক্তি। আর এদিকে শিল্পী তাহসান খান জানিয়েছেন তিনিও উন্মুখ হয়ে আছেন মন মাতানো পরিবেশনায় সিডনির দর্শকদের আনন্দিত করতে।
১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

সিডনি টেস্টে বৃষ্টির দাপট
প্রথম দিন মাত্র ১ ওভার খেলার সুযোগ পেয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। ৬ রানে অপরাজিত ছিলেন ডেভিড ওয়ার্নার। দলের রানও ছিল ওটাই। গতকাল বৃষ্টিবিঘ্নিত দ্বিতীয় দিনে খেলা হয়েছে মাত্র ৪৬ ওভার। আলোক স্বল্পতায় দিনের খেলার সমাপ্তি ঘোষণার আগে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ছিল ২ উইকেটে ১১৬। ওয়ার্নার ৩৪ রান করে আগা সালমানের দুর্দান্ত স্পিনে বাবর আজমের হাতে ধরা পড়েন। অথচ ২০ রানে স্লিপে তার লোপ্পা ক্যাচ ফেলেছিলেন সিয়াম আইয়ুব। সেই সুযোগ নিতে পারেননি ওয়ার্নার। সিডনিতে ৭০ রানের ভালো জুটি গড়ার পর বিচ্ছিন্ন হন ওয়ার্নার। এরপর উসমান খাজা আউট হয়েছেন দলীয় ১০৮ রানের মাথায়। ৪৭ রান করে আউট হন তিনি। ৪৩.৩ ওভারে অজিরা দ্বিতীয় উইকেট হারায়। এরপর আর মাত্র ২১ বল খেলা হয়েছে। মারনাস লাবুশেন ৬৬ বলে ২৩ রান করে অপরাজিত ছিলেন। তার সঙ্গে ৬ রান নিয়ে ছিলেন স্টিভেন স্মিথ। লাবুশেনের ধীরে ব্যাটিং করার মনোভাবে সমালোচনা করেন অ্যাডাম গিলক্রিস্ট। অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম চ্যানেল নাইনে ধারাভাষ্য দেওয়ার সময় মাইকেল ভন বলেন, ‘আপনি আউট হতে পারেন কিংবা বাজে শট খেলতে পারেন। কিন্তু এমন একটি বলও হয়নি, যা খেলার পর মারনাস কিংবা স্মিথ আম্পায়ারকে বলবেন, ‘বল দেখা যায়নি।’ এরপর অ্যাডাম গিলক্রিস্ট বলেন, ‘আমি তো দেখছিলাম মারনাস এমনকি খাটো লেংথের বলগুলো থেকেও স্কোর করার প্রয়োজন বোধ করেনি। দেখে মনে হয়নি, সে কোনো বিপদের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এটি সবার জন্যই হতাশার।’
০৫ জানুয়ারি, ২০২৪

শেষের দৃঢ়তায় পাকিস্তানের সংগ্রহ ৩১৩
ডেভিড ওয়ার্নারের বিদায়ী টেস্টে প্রথম সেশনে ব্যাটিং ব্যর্থতায় পড়ে পাকিস্তান। মেলবোর্নের পর সিডনিতেও প্যাটি কামিন্সের বোলিং তোপে দিশাহারা সফরকারীদের ব্যাটিং লাইনআপ। ৪৭ রানে ৪ উইকেট হারালেও মোহাম্মদ রিজওয়ান, আগা সালমান ও আমের জামালের তিন ফিফটিতে ৩১৩ রানে অলআউট হয়েছে পাকিস্তান। অস্ট্রেলিয়া ১ ওভারে ৬ রান করলে প্রথম দিনের খেলা শেষ হয়।  বুধবার (৩ জানুয়ারি) সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে প্রথম ইনিংসে কামিন্সের ৫ উইকেটের পরও ৩১৩ রান সংগ্রহ করেছে পাকিস্তান। মোহাম্মদ রিজওয়ান ৮৮ ও আমের জামাল ৮২ রানের দুর্দান্ত ইনিংস উপহার দেন।   অস্ট্রেলিয়া সফরে কামিন্স-স্টার্কদের বোলিংয়ের ধার কোনোভোবেই বুজতে পারছে না পাকিস্তান। মেলবোর্নে লড়াইয়ের আভাস দিয়েও কাজের কাজ হয়নি। সিডনিতে প্রথম ইনিংসের প্রথম সেশনে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে পাকরা। ৪ রানের ব্যবধানে সাজঘরে ফেরেন দুই ওপেনার আব্দুল্লাহ শফিক ও অভিষিক্ত ওপেনার সাইম আইয়ু্ব। দুজনই রানের খাতা খুলতে ব্যর্থ হন। ৩৯ রানে বাবর আজম ও ৪৭ রানের মাথায় সৌদ শাকিলকে হারিয়ে খাদের কিনারে চলে যায় পাকিস্তান।  পঞ্চম উইকেটে কিছুটা সংগ্রাম চালান অধিনায়ক শান মাসুদ ও মোহাম্মদ রিজওয়ান। তবে ৯৫ রানের সময় ব্যাক্তগত ৩৫ রানে ফেরেন শান মাসুদ। এরপরই সর্বোচ্চ ৯৫ রানের জুটিতে পাকিস্তানকে সম্মানজনক সংগ্রহের দিকে এগিয়ে নেন রিজওয়ান ও আগা সালমান। ১০৩ বলে ৮৮ রানের ইনিংসে কামিন্সের শিকারে পরিণত হন পাকিস্তান উইকেট কিপার। ২২৬ রানে অষ্টম ব্যাটার হিসেবে ৫৩ রানে আগা সালমান ফিরলে আড়াই’শর মধ্যে অলআউট হওয়ার শঙ্কা জাগে পাকিস্তানের।  দশম উইকেটে ৮৬ রানের অভাবনীয় এক জুটি উপহার দেন আমের জামাল ও মির হামজা। পাক পেসার জামাল ৯৭ বলে ৮২ রানের ক্যামিও খেলেন। ১০টি চার ও ৪টি ছয়ের মার মারেন এই পেসার। মির হামজা ৪৩ বলের মোকাবিলায় ৭ রানে অপরাজিত থাকেন।  কামিন্স ৬১ রানে ৫টি উইকেট শিকার করেন। এ ছাড়া মিশেল স্টার্ক ২টি উইকেট নেন।   
০৩ জানুয়ারি, ২০২৪

সিডনি টেস্টে বিশ্রামে পাকিস্তানি পেসার
অবশেষ গুঞ্জনটা সত্য হয়েছে। প্রথম টেস্টের পর গুঞ্জন বেরিয়েছিল বক্সিং ডে টেস্টে পাকিস্তান হারলে বিশ্রাম পেতে পারেন বাঁহাতি পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদি। বাস্তবেও তেমনটায় ঘটেছে। অর্থাৎ সিডনিতে অনুষ্ঠেয় তৃতীয় ও শেষ টেস্টের স্কোয়াডে থাকছেন না পাক স্পিড স্টার। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম ও দ্বিতীয় টেস্টের একাদশ একদিন আগেই ঘোষণা করেছিল পাকিস্তান টিম ম্যানেজমেন্ট। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তৃতীয় টেস্টের একাদশও ঘোষণা করেছে দেশটি। ঘোষিত একাদশে নেই শাহিন আফ্রিদি। এ ছাড়া ফর্মে না থাকার কারণে বাদ পড়েছেন বাঁহাতি ওপেনার ইমাম-উল-হক।  দলের প্রধান তারকার বিশ্রাম নিয়ে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘পেসারদের চোটের কারণে ব্যাপক সমস্যায় পড়তে হয়েছে পিসিবিকে। মূলত ইনজুরির ঝুঁকি কাটাতেই বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে আফ্রিদিকে।’ তাছাড়া নিউজিল্যান্ডে আসন্ন টি-টোয়েন্টি সিরিজের কথা মাথায় রেখে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে বলেও জানান এই কর্তা। ইনজুরির ধাক্কায় একের পর এক ক্রিকেটার ছিটকে গেছেন অজিদের বিপক্ষে। পাকিস্তানের প্রধান স্পিনার আবরার আহমেদ হাঁটুর চোটে পুরো সিরিজ মিস করেছেন। প্রথম টেস্টের পর ইনজুরিতে পড়েছেন খুররম শাহজাদ। তবে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজে প্রথমবার মূল স্পিনার সাজিদ খানকে একাদশে রেখেছে পাক টিম ম্যানেজমেন্ট। সিডনি টেস্টে তিনজন পেসার নিয়ে মাঠে নামবে পাকিস্তান। ওপেনপার ইমাম-উল-হকের পরিবর্তে আগামীকাল টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক হতে যাচ্ছে তরুণ প্রতিভাবান সাইম আইয়ুবের। আগামী ১২ জানুয়ারি অকল্যান্ডের ইডেন পার্কে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে মাঠে নামবে পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড।  
০২ জানুয়ারি, ২০২৪
X