কালবৈশাখীর ঝড়ে বিধ্বস্ত ঘরবাড়ি, খুঁটি ভেঙে বিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ
কালবৈশাখীর ঝড়ে ফেনীর উপকূলীয় সোনাগাজী উপজেলায় প্রায় ৩শ ৩৭টি ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা লন্ডভন্ড হয়ে পড়েছে। ভেঙে গেছে পল্লী বিদ্যুতের ২৪টির মতো খুঁটি। হেলে পড়েছে ২৮টি খুঁটি। গাছ ভেঙে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের ওপর পরায় বিদ্যুৎ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। এতে অন্তত প্রায় ৫৬ হাজার গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে পড়েছে।  সোমবার (৬ মে) দপুর থেকে পুরো উপজেলা ৩০ ঘণ্টা বিদ্যুৎবিহীন থাকার পর মঙ্গলবার (৭ মে) বিকেল থেকে কয়েকটি জায়গায় বিদ্যুৎ লাইন চালু করা হয়েছে। বিদ্যুৎ না থাকায় সোমবার রাত থেকে মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ হয়ে যায়।  খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সোমবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত কালবৈশাখীর ঝড়ে বাড়ি ঘরের টিনের চালা উড়ে কয়েক কিলোমিটার দূরে আচড়ে পড়েছে। এ ছাড়া বেশকিছু দোকানপাট ও হাঁস, মুরগির খামারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় গাছপালা ভেঙে বিদ্যুতের তারের ওপর ঝুলে আছে।  উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় ঝড়ের আঘাতে ১৫২টি ঘর সম্পূর্ণ এবং ১৮৫টি ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।  ফেনী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সোনাগাজী জোনাল অফিসের ডিজিএম বলায় মিত্র বলেন, সোমবারের কালবৈশাখী ঝড়ে বিদ্যুতের খুঁটি ও মিটারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২৪টির মতো খুঁটি ভেঙে বিদ্যুতের তারসহ মাটিতে পড়ে রয়েছে। এ ছাড়া ২৮টি খুঁটি হেলে পড়েছে। ২৪৫টি স্থানে তার ছিড়ে গেছে এবং ৩৩৯টি স্থানে তারের ওপর গাছ পড়েছে। অনেক জায়গায় গাছ বিদ্যুতের তারের ওপর পরায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। পল্লী বিদ্যুতের লোকজন সড়ক থেকে বিদ্যুতের খুঁটি ও তার অপসারণের কাজ করছে। মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত সোনাগাজী পৌর শহরসহ অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ লাইন চালু করা হয়েছে। সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান জানান, পৌর মেয়র, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউপি সচিবদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে সোমবার দিনব্যাপী উপকূলীয় সোনাগাজী উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া প্রচণ্ড শক্তিশালী কালবৈশাখী ঝড়ে উপজেলার ৩শ ৩৭টি ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।
০৮ মে, ২০২৪

সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পানি নেই ৬ দিন
ফেনীর সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত ৬ দিন ধরে পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ফলে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট এই হাসপাতালের রোগীসহ চিকিৎসক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে হাসপাতালে পানি ওঠানোর একমাত্র পাম্পটি গত ৬ দিন ধরে বিকল।  মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) সরেজমিনে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের পুরুষ-মহিলা ওয়ার্ডের ট্যাপ থেকে পানি পড়ছে না। রোগী ও তাদের স্বজনরা বাইরের দোকান, পুকুর ও টিউবওয়েলের পানি আনতে ব্যস্ত। পানি সংকটে শৌচাগারে পানি ব্যবহার কম হওয়ায় চারদিকে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। সব মিলিয়ে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা। জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত শনিবার দুপুরে হাসপাতালে ভর্তি হন চরচান্দিয়া ইউনিয়নের নদী ভাঙন এলাকার আকবর হোসেন (৩৭)। তিনি বলেন, এখানে চিকিৎসার জন্য আসার পর থেকে টয়লেটের ট্যাপে পানি নেই। পানি সরবরাহ বন্ধ থাকায় অনেক রোগী হাসপাতাল ছেড়ে চলে গেছেন। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা উপজেলার মতিগঞ্জ ইউনিয়নের সুজাপুর গ্রামের রোগী আকলিমা বেগম (২৮) বলেন, আমাদের পানি না হলে চলে না। পানির অভাবে খুব কষ্ট হচ্ছে।  উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. উৎপল দাস জানান, গত ছয়দিন ধরে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পানি নেই। পানির পাম্প নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে এ সমস্যা তৈরি হয়েছে। সেটা কর্তৃপক্ষকে বারবার চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের ইঞ্জিনিয়ার দুইবার এলেও পাম্প ঠিক হয়নি। বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। আশা করছি, আজ-কালের মধ্যে পানির সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।  উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল হাসান বলেন, হাসপাতালের পানির সমস্যার বিষয়টি আমি জানতাম না। স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সাথে কথা বলে পানির সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন বলেন, পানির সমস্যা নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সাথে কথা বলেছি। আশা করছি, দ্রুত সমাধান হবে।
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৩

অস্ত্র ঠেকিয়ে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের মারধর, ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার
ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় তিনজন এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছাত্রীকে অস্ত্র ঠেকিয়ে মারধর ও শ্লীলতাহানির মামলার প্রধান আসামি ছাত্রলীগ নেতা রবিউল হাসানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।  রোববার (২০ আগস্ট) রাতে ফেনী শহরের ট্রাংক রোডের একটি রেস্তোরাঁর সামনে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।  গ্রেপ্তার রবিউল হাসান সোনাগাজী উপজেলার বগাদানা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সমাজসেবা সম্পাদক। রবিউল হাসান বগাদানা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড বগাদানা গ্রামের সুভাস ড্রাইভার বাড়ির হেলাল উদ্দিন ও জান্নাতুল ফেরদৌসের ছেলে। স্বজন, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার উপজেলার বখতারমুন্সী শেখ শহীদুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজ এইচএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে বাংলা প্রথমপত্রের পরীক্ষা শেষ করে বের হয় তিন ছাত্রী। এ সময় তাদের পিছু নেন ছাত্রলীগ নেতা রবিউল হাসান ও তার সহযোগীরা। একপর্যায়ে তারা নানাভাবে ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করেন। প্রতিবাদ করলে তারা ছাত্রীদের চড়থাপ্পড় ও লাথি মারেন। পরে ছাত্রীরা দ্রুত সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন। রবিউল ও তার সহযোগীরা অটোরিকশার পিছু নেন। অটোরিকশার গতি রোধ করে ছাত্রীদের নামিয়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে আবারও মারধর করেন তারা। ছাত্রীদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে ছাত্রলীগ নেতা রবিউল ও তার সহযোগীরা পালিয়ে যান। এ ঘটনায় শনিবার রাতে ভুক্তভোগী এক ছাত্রী বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় রবিউল হাসানসহ চারজনের নামে মামলা করে। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- রবিউলের সহযোগী মো. তুষার, মো. মুরাদ ও মো. ফারুক। এ ঘটনায় ফেসবুকে সংবাদ প্রচারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় সাংবাদিক গিয়াস উদ্দিন মামুনকে হত্যা করে লাশ গুমের হুমকিও দিয়েছে ছাত্রলীগ নেতা রবিউল। সোনাগাজী মডেল থানার ওসি হাসান ইমাম বলেন, ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পলাতক ছিলেন। রোববার রাতে রবিউল ও তার সহযোগীরা এলাকা ছেড়ে ঢাকা-চট্টগ্রামে পালিয়ে যাওয়ার উদ্দেশে ফেনী শহরে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে শহরের ট্রাংক রোডের একটি রেস্তোরাঁর সামনে থেকে রবিউলকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অন্যরা দৌড়ে পালিয়ে যায়। জিজ্ঞাসাবাদে রবিউল ঘটনার দায় স্বীকার করেছেন। গ্রেপ্তার আসামিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে বলেও জানান তিনি।  
২১ আগস্ট, ২০২৩
X