স্বাধীনতা ও একুশে পদকপ্রাপ্ত ১৩ গুণিজনকে সম্মাননা দেওয়ার উদ্যোগ
দেশের ১৩ গুণিজনকে সম্মাননা প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছে সাতক্ষীরা জেলা সমিতি ঢাকা।  আগামী শুক্রবার (১৭ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় রাজধানীর কাকরাইলস্থ ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইডিইবি)'র মাল্টিপারপাস হলরুমে সমিতির ঈদ পুনর্মিলনী, গুণিজন সম্মাননা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তাদের এই সম্মাননা প্রদান করা হবে।  অনুষ্ঠান আয়োজক কমিটির মিডিয়া ম্যানেজার তরিকুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন। যাদের সম্মাননা প্রদান করা হবে তারা হলেন- স্বাধীনতা ও একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রথিতযশা শিশুবিশেষজ্ঞ ও সমাজসেবক জাতীয় অধ্যাপক ডা. এম আর খান, দেশের অন্যতম সেরা সংগীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন ও স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত খাদ্য নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ও ধান বিজ্ঞানী ড. মো. আব্দুল মজিদ। একুশে পদকপ্রাপ্ত কণ্ঠশিল্পী, গীতিকার ও সুরকার শেখ লুৎফর রহমান; প্রথিতযশা চিত্রকর সৈয়দ জাহাঙ্গীর, কবি, সংগীত রচয়িতা, নাট্যকার ও সাংবাদিক সিকান্দার আবু জাফর; বরেণ্য কণ্ঠশিল্পী নিলুফার ইয়াসমিন, প্রখ্যাত সাংবাদিক ও লেখক তোয়াব খান; কবি ও সাংবাদিক কাজী রেজা; অভিনেতা, পরিচালক, চিত্রশিল্পী এবং বিজ্ঞাপিন নির্মাতা আফজাল হোসেন; স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠশিল্পী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. মনোরঞ্জল ঘোষাল এবং অভিনেতা ও আবৃতিকর জয়ন্ত চট্টপধ্যায়। এ ছাড়াও প্রতিষ্ঠান ক্যাটাগরিতে সমাজসেবায় অবদানে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনকে সম্মাননা প্রদান করা হবে।
১৫ মে, ২০২৪

ইসরায়েলি লবির সঙ্গে যুক্ত হয়ে ষড়যন্ত্র করছে বিএনপি : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, গত নির্বাচন নিয়ে বিএনপির চক্রান্ত ভেস্তে যাওয়ার পর তারা আন্তর্জাতিক ইসরায়েলি লবির সঙ্গে যুক্ত হয়ে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। মঙ্গলবার (১৪ মে) দুপুরে রাজধানীর তোপখানা রোডে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদ আয়োজিত ‘ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধের দাবিতে ও বিএনপির দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সমাবেশ ও মানববন্ধনে’ তিনি এ অভিযোগ করেন।  পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ফিলিস্তিনি হত্যা বন্ধে কোনো প্রতিবাদ না করে বিএনপি-জামায়াত ধর্মীয় ‘সেন্টিমেন্ট’ নিয়ে অপরাজনীতি করছে। ফিলিস্তিনের পক্ষে না দাঁড়িয়ে তারা ইসরায়েলের দোসরে পরিণত হয়েছে, নেতানিয়াহুর দোসরে পরিণত হয়েছে। ইসরায়েলের এজেন্টদের সঙ্গে মিলে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। আমাদের কাছে তথ্য-প্রমাণ আছে। এদের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে। তিনি বলেন, পুরো পৃথিবী গাজায় ইসরায়েলের বর্বরতার প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছে। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি বিএনপি ও জামায়াত, যারা ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করার অপচেষ্টা করে, এই মানবতাবিরোধী অপরাধের বিরুদ্ধে তারা একটা শব্দও উচ্চারণ করেনি। কারণ কেউ অসন্তুষ্ট হতে পারে। ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি গণহত্যার বিরুদ্ধে নিশ্চুপ থাকা ইসলামী দলগুলোরও সমালোচনা করেন মন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, আমাদের দেশে কিছু ইসলামী দল আছে, তারা কারণে-অকারণে বায়তুল মোকাররমে দাঁড়িয়ে যায়। এখন আপনাদের কেন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না? আপনারা কোথায় এখন? নির্বাচনের আগে সরকার নামানোর জন্য বায়তুল মোকাররমের সামনে এসে আন্দোলন করেন। ফিলিস্তিনি ভাইদের পক্ষে, ইসরায়েলের বিপক্ষে তো একটা বড় মিছিল করতে দেখলাম না আপনাদের। তিনি বলেন, এরা আসলে ইসলামপ্রেমী নয়, এরা হলো মুখোশধারী ধর্ম ব্যবসায়ী। এদের মুখোশও উন্মোচন করতে হবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান বলেন, সরকারের সমালোচনাকারী নামসর্বস্ব রাজনৈতিক দলের নেতাদের অনেকেরই দলের চেয়ে ব্যক্তি বড়, শরীরের চেয়ে গাল বড়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও অনেককেই দেখি সরকারের বিরুদ্ধে বড় বড় ভাষণ দেয়, বিষোদগার করে। কিন্তু নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে তো তাদের কথা বলতে শুনলাম না। এরা কোথায়? এরা কোথায় লুকিয়ে আছে?  ফিলিস্তিনিদের প্রতি অটল সমর্থন ব্যক্ত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সরকার ও মানুষের অবস্থান সবসময় ফিলিস্তিনিদের পক্ষে। আমাদের নীতি ফিলিস্তিনি মুক্তিকামী মানুষের পক্ষে। বাংলাদেশ  স্বাধীনতা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন টয়েলের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য বলরাম পোদ্দার, আওয়ামী লীগ নেতা এমএ করিম, কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা মানিক লাল ঘোষ, স্বাধীনতা পরিষদের নেতা ফরিদুজ্জামান, মুহাম্মদ রোকন উদ্দিন পাঠান প্রমুখ।
১৪ মে, ২০২৪

ইন্টারনেট-ওটিটি প্লাটফর্মে স্বাধীনতা নিশ্চিতের দাবি
ইন্টারনেট এবং ওভার দ্য টপ বা ওটিটি প্ল্যাটফর্মের স্বাধীনতা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন। শনিবার (২৭ এপ্রিল) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় সংগঠনটি এবং খাত সংশ্লিষ্টরা এমন দাবি জানান। ‘ওটিটি/ইন্টারনেট প্ল্যাটফর্মে লাইভ টেলিভিশন দেখতে চাওয়া গ্রাহকের অধিকার’ শীর্ষক ঐ সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনটির সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ।   মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, বিশ্বে ইতোমধ্যে ৪২টি দেশে ইন্টারনেটকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। যেখানে সরকার ঘরে ঘরে শতভাগ মানুষের কাছে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দিতে কাজ করছে সে সময় তিন কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারীকে ওটিটি প্লাটফর্মে লাইভ টিভি দেখতে না দেওয়া মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে মনে করি। যেখানে ফেসবুক সরকারের লাইসেন্সপ্রাপ্ত না হয়েও মোটা অঙ্কের অর্থ নিয়ে যাচ্ছে, সেখানে বৈধ লাইসেন্সারী ওটিটি প্ল্যাটফর্মে লাইভ টিভি দেখাতে না দেওয়া খুবই দুঃখজনক। আলোচনায় অংশ নিয়ে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের ইনোভেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) বিকর্ণ কুমার ঘোষ বলেন, ইন্টারনেটে লাইভ টেলিভিশন দেখতে চাওয়া বা ওটিটি প্লাটফর্মে লাইভ টিভি দেখতে চাওয়া গ্রাহকের অধিকার। এখানে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা সমীচীন নয়। ওটিটিতে লাইভ টিভি বন্ধ করা পারস্পরিক সাংঘর্ষিক। সরকারের এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে হলে অবশ্যই ইন্টারনেটে স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি সরকার এবং সকল পক্ষকে এ বিষয়ে আলোচনা করে দ্রুত সমাধানের আহ্বান জানান। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারীদের সংগঠন আইএসপিএবির সভাপতি ইমদাদুল হক বলেন, কেবল ব্যবসায়ীদের ৭০ ভাগ অবৈধভাবে ব্যবসা পরিচালনা করছে। তাদের ইন্টারনেট ব্যবসা করার আইনগত অধিকার নেই অথচ তারা করছে। আমরা তাদের বাধা দিচ্ছি না কিন্তু তারা আমাদের ইন্টারনেট ব্যবসার মধ্যে হস্তক্ষেপ করছে যা মোটেও কাম্য নয়। খুব দ্রুত তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রণালয় বিটিআরসি এবং অন্যান্য স্টেক হোল্ডারদের নিয়ে সমস্যার সমাধান করা না হলে দেশ থেকে অবৈধ উপায়ে বিদেশে টাকা চলে যাবে। সভায় বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সাবেক পরিচালক খালিদ আবু নাসেরসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন।
২৭ এপ্রিল, ২০২৪

বুয়েট রাজনীতি / প্রশ্নটা যখন স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের
সাম্প্রতিক সূচিত বুয়েট আন্দোলন গড়িয়ে বর্তমানে যে অবস্থায় এসেছে, তাকে সংঘাতময় বলা যায়। হাইকোর্টের সিদ্ধান্তের পর ছাত্রদের একাংশ রাজনীতি করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। উপাচার্য হাইকোর্টের আদেশ মেনে নিতে তার প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন। ছাত্রদের অপরাংশ তাদের আগের দাবিতে অটল রয়েছে। তাদের সংখ্যা নাকি ৯৭ শতাংশ। তাহলে কি ৩ শতাংশের প্রতিনিধিত্বকারী কেউ কেউ প্রাণনাশের হুমকি পেয়েছে? এই হুমকি মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর অতি পুরোনো অপকৌশল। ভাগ্যিস বর্তমানে শেখ হাসিনার শাসন চলছে। তা না হলে হাত কাটা, রগ কাটা থেকে লাশ ফেলানো পর্যন্ত তাদের অতীত কর্মকাণ্ড আবারও চাঙ্গা হতো। তারা আবার প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবদার করছেন। আর প্রধানমন্ত্রী চোখ মেলে দেখছেন সে প্রতিষ্ঠানে তার পিতা, জাতির পিতা বা বঙ্গমাতা জন্ম-মৃত্যু দিবস পালিত হয় না। ঠেলায় পড়ে কোনো কোনো জাতীয় দিবস পালিত হয়। তাতে আন্তরিকতা থাকে অনুপস্থিত। উপাচার্য ও প্রশাসনের কিয়দাংশ হয়তো সরকারমুখী, তাদের সংখ্যা এত কম যে, একটু মুখ খুলতেও তাদের জিহ্বা আড়ষ্ট। বুয়েট শিক্ষার্থীদের বৃহদাংশ প্রধানমন্ত্রী বরাবর যে ভাষায় নিবেদন করেছে, তাতে ইতিহাস অচেতন সাধারণ মানুষের কাছে প্রতিভাত হবে যে তারা দেশপ্রেমিক, বঙ্গবন্ধু প্রেমিক, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাসমৃদ্ধ সাধারণ ছাত্রসমাজ। স্মরণ থাকতে পারে ছাত্রলীগ এই সাধারণ ছাত্রসমাজ নামধারীদের শিবিরের অন্য নাম বলে চিহ্নিত করেছে। তাদের শতভাগও যদি একত্র হয়ে ঘোষণা দেয় যে, তারা ছাত্ররাজনীতি চায় না তাহলে গণতান্ত্রিক ধারা মেনেও হাইকোর্টের রায়ই বহাল রাখতে হবে, যদিও উপাচার্য এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার চাপে রয়েছেন। কেননা গণতন্ত্রের সীমাবদ্ধতাও আছে। গণতন্ত্রের সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে একটা গল্প বললে বিষয়টি আরও পরিষ্কার হবে। গল্পটি নিম্নরূপ— আমেরিকানদের গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধা সর্বজনীন। স্কুলশিশুদের মধ্যেও তা পরিব্যাপ্ত। একবার তারা শুনল যে স্কুলের পাশে কোনো এক বাড়িতে একটা শিশু জন্ম নিয়েছে। জন্মলাভ করা শিশুটি নিয়ে কেউ বলল এটি ছেলে আর কেউ বলল মেয়ে। বিতর্কের একপর্যায়ে একজন বলল, চলো আমরা ভোটাভুটি করি, শিশুটি ছেলে কি মেয়ে। ভোটে নির্ধারিত হলো যে শিশুটি ছেলেশিশু। তারা পাশের বাড়িতে হাজির হয়ে জানল যে শিশুটি ছেলে না, মেয়ে। আমাদের বুয়েটের এই ভোটারদের ও তাদের পূর্বসূরিদের অভিব্যক্তি এমনভাবে নির্ণীত হওয়ার সম্ভাবনা আছে, যদিও একজন সাবেক শিক্ষক বঙ্গবন্ধুকে উদ্ধৃত করে বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের ফায়দা বর্ণনা করেছেন। তবে বঙ্গবন্ধু হয়তো কস্মিনকালেও ভাবেননি যে রাজনীতিমুক্ত বুয়েট শিক্ষার্থীরা ব্যাপক হারে সিভিল সার্ভিসের দিকে ঝুঁকবে কিংবা ব্যাপকভাবে দেশ ত্যাগ করে বিদেশে বসেও মৌলবাদী ধ্যান-ধারণা বাস্তবায়ন করবে। তিনি হয়তো আরও ভাবেননি তার আদর্শ ও চেতনা ধর্মের ছদ্মাবরণে চ্যালেঞ্জ করা হবে, ধর্মের নামে ওয়াহিবীবাদ, সালাফী বাবদ, হিযবুত তাহরীর আখড়া হবে বুয়েট। একজন সাবেক শিক্ষক যখন বলেন যে বুয়েটে সব শিক্ষার্থী ও অধিকাংশ শিক্ষক ছাত্ররাজনীতির বিপক্ষে, তখন আমার বলতে ইচ্ছে করছে তারা কি রাজনীতি বিমুক্ত? আমার তো মনে হয় নিরপেক্ষ ছাত্রসমাজ মানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী ছাত্র আর নিরপেক্ষ শিক্ষক মানে প্রকাশ্য বা তলে তলে তাদের উসকে দেওয়া শিক্ষকবৃন্দ। এসব শিক্ষার্থী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেও তাদের আদর্শ প্রচারে থেমে থাকেননি। অতীতে অন্তত দুটো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে তারা আখড়া গেড়েছিল। নিবিড় প্রচেষ্টায় সেগুলো ভেঙে পড়েছে। দেশের ৯৭ শতাংশ নির্বাচিত প্রতিনিধি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সপক্ষে। তার বিপরীতে কোনো বিশেষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৯৭ ভাগ যখন সে চেতনার বিপক্ষে তখন সেখানে ক্র্যাকডাউন অত্যাবশ্যক। এখন বুয়েটের বিষয়টা ছাত্ররাজনীতির গণ্ডি ছাড়িয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ ও বিপক্ষ পর্যায়ে। এখন কোনো একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্ররা যদি একুনে সিদ্ধান্ত নেয় যে, আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে মিলে যাব, তাহলে সে সিদ্ধান্ত বলপ্রয়োগে প্রতিহত করা সরকারের নৈতিক, মানবিক ও সাংবিধানিক দায়িত্ব। গণতন্ত্রের সীমাবদ্ধতার কথা বলেছি। একটি বদ্ধ আবহে বা আঙিনায় কোনো গোষ্ঠীর অসাবধানতা বা অবিমৃশ্যকারিতায় অপরাজনীতি বর্ধিত হয়ে ২০১৯ সালে মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদ পর্যন্ত গড়িয়েছে। এটা পাপে রূপান্তরিত হয়েছে, পাপের প্রায়শ্চিত্ত হিসেবে ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে, তারাও মেধাবী ছিল। তাতেও যদি তাদের উত্তরসূরিদের সম্বিত না ফেরে, তাহলে চরমপন্থা আবশ্যক। তুহিন নামক ছাত্রটিও মেধাবী ছিল। তার বিচার আজও নীরবে-নিভৃতে কাঁদে। বুয়েটে নিরপেক্ষ শিক্ষার্থী ও নিরপেক্ষ বঙ্গবন্ধুপ্রেমিক শিক্ষকদের কজন সে ব্যাপারে মুখ খুলেছেন? গত চার বছরে যদি বুয়েটকে স্বাধীনতা বিরোধীচক্র, হিযবুত তাহরীর ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের নামে শিবির কবজা করে অভয়ারণ্য বানিয়েছে বলি, তাহলে আমার ভুল প্রমাণের জন্য সরকারের গোয়েন্দা সংস্থার দ্রুত পদক্ষেপ প্রয়োজন। লেখক: বীর মুক্তিযোদ্ধা ও দেশবরেণ্য শিক্ষাবিদ
২৭ এপ্রিল, ২০২৪

স্বাধীনতা দিবস জিমন্যাস্টিকস
বাংলাদেশ জিমন্যাস্টিকস ফেডারেশন আয়োজিত স্বাধীনতা দিবস জিমন্যাস্টিকস প্রতিযোগিতা গতকাল শুরু হয়েছে। বিকেলে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) জিমনেশিয়ামে শুরু হওয়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ জিমন্যাস্টিকস ফেডারেশনের সহসভাপতি আহমেদুর রহমান। ২৫ থেকে ২৭ এপ্রিল—তিন দিনের এ প্রতিযোগিতায় বিকেএসপি, বাংলাদেশ পুলিশ, কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনসহ জুনিয়র-সিনিয়র বিভাগে ৩৫ দল ও ক্লাবের প্রায় ৫০ জন পুরুষ ও নারী জিমন্যাস্ট অংশ নিচ্ছে। ১২ থেকে ২০ মে উজবেকিস্তানে অনুষ্ঠেয় এশিয়ান (সিনিয়র ও জুনিয়র) জিমন্যাস্টিকস প্রতিযোগিতার দল নির্বাচনের বাছাইপর্ব প্রতিযোগিতা হিসেবে এ আসর আয়োজন করা হয়েছে। আগামীকাল সকাল সাড়ে ১১টায় প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান আয়োজিত হবে।
২৬ এপ্রিল, ২০২৪

স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘের নতুন স্বপ্ন
বসুন্ধরা কিংসকে হারিয়ে প্রিমিয়ার লিগে স্বপ্নের মতো অভিষেক হয়েছিল স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘের। সুখ স্মৃতি উবে যেতেও সময় লাগেনি। প্রিমিয়ার লিগের পর চ্যাম্পিয়নশিপ লিগ থেকে অবনমন ঘটে ক্লাবটির। সিনিয়র ডিভিশন লিগে অবস্থান করা দলটি নতুন নেতৃত্বে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছে। ধাপে ধাপে প্রিমিয়ার লিগে ফিরে আসার লক্ষ্য নিয়ে পরীক্ষিত কোচ কামাল বাবুকে কোচ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘ। ক্লাবটির সভাপতি সৈয়দ গোলাম রূপস নতুন মিশনে ফুটবলারদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘আমি কথা দিচ্ছি, তোমাদের জন্য সর্বোচ্চ মানের ফুডিং-লজিং এবং লজিস্টিক সাপোর্ট নিশ্চিত করব। তোমাদের সেরা মানের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। ক্রীড়া সরঞ্জামও হবে সর্বোচ্চ মানের। যাতে অন্য ক্লাবের খেলোয়াড়রা তোমাদের দেখে হিংসা করে। আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা থাকবে তোমাদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার। তোমরা কেবল নিজেদের সেরাটা দিয়ে চেষ্টা করো। আমাদের লক্ষ্য একটাই, ধাপে ধাপে এগিয়ে যাওয়া। চ্যাম্পিয়ন হতে হতে প্রিমিয়ার লিগে ফেরা।’ ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমানও স্বপ্ন দেখছেন, ‘কামাল বাবুর কাছ থেকে শেখার অনেক কিছু আছে। কামাল বাবুর অধীনে আপনাদের যাতে কোনো সমস্যা না হয়, সেই চেষ্টা করব। আপনারা শুধু ভালো খেলা উপহার দিন। ক্লাবকে সম্মানিত করুন। আপনাদের উদ্দেশ্য আপনারা হাসিল করেন, সঙ্গে সঙ্গে ক্লাবের ভালো খেলে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য পূরণ করুন।’
২৬ এপ্রিল, ২০২৪

স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘের নবযাত্রা
দেশের ফুটবলে স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘের ইতিহাস অতোটা পুরোনো নয়। মাত্র ১৯ বছর বয়সী ক্লাবটি দেশের শীর্ষ লিগে এসেছে মাত্র দুই বছর আগে। অভিষেকটা তারা রাঙিয়েছিল দেশের ফুটবলের পাওয়ার হাউস বসুন্ধরা কিংসকে হারিয়ে। স্বপ্নের মতো সেই শুরুকে অবশ্য বেশি দূর নিতে পারেনি তারা। প্রথম মৌসুমেই অবনমিত হতে হয় তাদের। পরের মৌসুমে দ্বিতীয় স্তর থেকে নামতে হয় তৃতীয় স্তরে। দুইবার অবনমনে ক্লাবের কর্তাদেরও পতন হয় তাদের জায়গায় দায়িত্বে আসে এক ঝাঁক নতুন মুখ। আর নতুনরা দায়িত্ব নিয়েই দেখছেন নতুন করে ঘুঁড়ে দাঁড়ানোর স্বপ্ন। ক্লাবটির দায়িত্বে এই সব নতুন মুখের একটাই লক্ষ্য বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে ফেরা। সেটা অবশ্য এত সহজ হবে না। সে জন্য দুই ধাপ পেরুতে হবে তাদের। তাদের প্রথম লক্ষ্য সিনিয়র ডিভিশন ফুটবল লিগ জেতা। তাদের সেই স্বপ্নে পথদ্রষ্টা হিসেবে পেয়েছে তারা পরীক্ষিত কোচ কামাল বাবুকে। আর পেছন থেকে রয়েছে বড় স্বপ্নে বিভোর একঝাঁক কর্মকর্তা। নতুন সভাপতি সৈয়দ গোলাম রূপসের নের্তৃত্বে স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘ চাইছে মাঠে সেরা হয়ে ফিরতে। দলটির কোচ কামাল বাবু বাংলাদেশের ফুটবলে পরীক্ষিত সৈনিক। প্রিমিয়ার লিগ, চ্যাম্পিয়নশিপ লিগের বড়-ছোট অনেক দলকে সাফল্য এনে দেওয়া এই কোচ ছিলেন সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবের ইয়ুথ ডেভেলপমেন্টের দায়িত্বে। তবে তার নিজ এলাকার ক্লাব স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘের কর্তাদের অনুরোধে ফেলতে না পেরে দায়িত্ব নেন শক্তিশালী দল গড়ার। নিজের মতো করে সারা দেশে ঘুরে ঘুরে পছন্দের ফুটবলারদের একত্রিত করে কমলাপুল স্টেডিয়ামে আয়োজন করেন ট্রায়ালে। যেই ট্রায়ালের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে বেছে নেন ৩৪ জনকে। ক্লাব তাদের জন্য ব্যবস্থা করেছে উন্নত আবাসন ও খাওয়া দাওয়ার। ক্লাবটির তরুণ সভাপতি রূপস বলেন, 'ছোটবেলা থেকেই দেখে এসেছি যারা চ্যাম্পিয়নশিপ এনে দেন, সেই খেলোয়াড়রাই থাকেন সবচেয়ে বেশি অবহেলিত। ভালো থাকার জায়গা, ভালো খাবার জুটে না। তাদের ভালো না রেখে কি করে ভালো ফলাফলের আশা করা যায়?' এ ছাড়াও খেলোয়াড়দের আশ্বাস দিয়েছেন রূপস, 'আমি কথা দিচ্ছি, তোমাদের জন্য সর্বোচ্চ মানের ফুডিং-লজিং এবং লজিস্টিক সাপোর্ট আমরা নিশ্চিত করবো। তোমাদের সেরা মানের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে, ক্রীড়া সরঞ্জামাদীও হবে সর্বোচ্চ মানের। যাতে অন্য ক্লাবের খেলোয়াড়রা তোমাদের দেখে হিংসে করে। আমাদের সর্বাত্ম চেষ্টা থাকবে তোমাদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার। তোমরা কেবল নিজেদের সেরাটা দিয়ে চেষ্টা করো। আমাদের লক্ষ্য একটাই ধাপে ধাপে এগিয়ে যাওয়া। চ্যাম্পিয়ন হতে হতে প্রিমিয়ার লিগে ফেরা।' দেশের ফুটবলের সেরা স্কাউট কোচের তকমা আগেই পেয়েছিলেন। ঢাকার ফুটবল ছাড়াও সারা দেশের ফুটবলে থেকে বড় প্রতিভা এনে দিয়েছেন তিনি। স্বাধীনতাকে নিয়ে তিনিও শোনালের আশার কথা, 'আমরা সাদা দেশে ঘুড়ে ঘুড়ে খেলোয়াড় সংগ্রহ করেছি। চ্যাম্পিয়নশিপ লিগ, প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় বিভাগ থেকে খেলোয়াড় এনেছি। তাদের ওপর আমার পূর্ণ আস্থা আছে। ক্লাব কর্তারা কথা দিয়েছেন খেলোয়াড়দের প্রিমিয়ার মানের সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করবেন। আমরাও আমাদের দিক থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। সেরার লক্ষ্য হয়েই খেলবো। তবে মনে রাখতে হবে শিরোপার সঙ্গে ভাগ্যও জড়িত।' ২০২২ প্রিমিয়ার লিগে তলানীতে শেষ করলেও বসুন্ধরা, সাইফের মতো দলকে হারানো, আবাহনী, শেখ জামালের মতো দলগুলোকে রুখে দিয়ে আশা জাগিয়েছিল স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘ। প্রথম ম্যাচে কিংসকে হারানোর সেই স্মৃতিটা পুঁজি করে একঝাঁক নতুনমুখ ফেরার স্বপ্নে শুরু করেছেন নবযাত্রা।
২৫ এপ্রিল, ২০২৪

গণতন্ত্রের শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে রাখতে হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অংশ গণতন্ত্র, মানবাধিকার, মুক্তবুদ্ধির চর্চা, মুক্ত গণমাধ্যম এবং একইসঙ্গে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা। গণতন্ত্রের শত্রু যারা, স্বাধীনতার বিরুদ্ধের শত্রু যারা, সমাজের অপশক্তি যারা তাদের বিরুদ্ধে লড়াই আমাদের চালিয়ে রাখতে হবে। এ লড়াইয়ে সাংবাদিকরা সরকারকে সহযোগিতা করবেন। শনিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি আয়োজিত ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন।  তিনি বলেন, সমাজে একটি অপশক্তি আছে যারা বাংলাদেশকে, এ দেশের স্বাধীনতাকে মেনে নিতে পারেনি। তারা বাংলাদেশের সংজ্ঞা বদলে দিতে চায়। আমরা ’৭১ এ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে সংজ্ঞা তৈরি করেছিলাম, ত্রিশ লক্ষ শহীদের ত্যাগ, জীবনদান, লাখ লাখ নারীর সংগ্রাম ও ত্যাগের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন করে আমরা যে সংজ্ঞা তৈরি করেছিলাম, একটি অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের একটি দেশ ও সমাজ, তার বিপরীতে তারা একটি অন্ধকারের সমাজ তৈরি করতে চায়, একটি জঙ্গিবাদ-মৌলবাদের সমাজ তৈরি করতে চায়। এই অন্ধকারের অপশক্তির সাথে আমাদের নিরন্তর লড়াই।  প্রতিমন্ত্রী বলেন, যারা উগ্রবাদ-জঙ্গিবাদে বিশ্বাসী এবং মুক্তিযুদ্ধবিরোধী, অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিরুদ্ধে যাদের অবস্থান, তারাই মিথ্যা অপপ্রচার এবং অপতথ্যের ওপর ভর করে তাদের অপরাজনীতি করে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় থেকে তথ্য অধিকার আইনকে আরও সুদৃঢ় করার এবং তথ্য কমিশনকে আরও শক্তিশালী ও কার্যকর করার বিষয়টি আমরা ভাবছি। প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, যে বার্তাটি সরকার দিতে চায়, তথ্য যদি চাওয়া হয়, তথ্য দিতে হবে এবং দায়িত্বপ্রাপ্তরা সরকারের পক্ষ থেকে, জনগণের পক্ষ থেকে দায়িত্বভার নিয়ে কাজ করছে। কাজেই জনগণের যেসব তথ্য জানার অধিকার আছে, সেসব তথ্য দেওয়ার বিষয় আমাদের জন্য বাধ্যতামূলক, এ চিন্তাটা জাগ্রত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সরকার তথ্য দিতে চায়, কারণ যদি তথ্য না থাকে তখনই অপপ্রচারের সুযোগ তৈরি হয়। তিনি বলেন, অপতথ্যকে আমাদের রোধ করতে হবে, কিন্তু অপতথ্য রোধ করতে গিয়ে আমরা তথ্যের অবাধ প্রবাহ বা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জায়গা সংকুচিত করতে চাই না। এ জায়গার সুন্দর ভারসাম্য করাটা খুবই জরুরি যে, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্রের স্বার্থে মুক্তবুদ্ধির চর্চা এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জায়গা অপরিবর্তিত রেখে কীভাবে আমরা অপতথ্য রোধ করতে পারি। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠান বক্তব্য প্রদান করেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সৈয়দ শুকুর আলী শুভ।
২০ এপ্রিল, ২০২৪

‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব ধর্মের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছেন’
বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব ধর্মের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা-৬ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। বুধবার (১৭ এপ্রিল) রাজধানীর দয়াগঞ্জের জাতীয় শিব মন্দির প্রাঙ্গণে এক ধর্মীয় সম্প্রীতি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। রাম নবমী উৎসব উপলক্ষ্যে এই সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোট। মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেন, সব ধর্মের ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে শেখ হাসিনার সরকার। আমরা সুখে-দুঃখে সব ধর্মের মানুষ একসঙ্গে ছিলাম এবং আগামীতেও থাকব। তিনি বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে একটি সুখী-সমৃদ্ধশালী সোনার বাংলা গড়তে চাই। যেখানে হিন্দু-মুসলিমসহ সবাই একটা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বাস করবে। সেই লক্ষ্যে আমরা নেত্রীর নির্দেশে কাজ করে যাচ্ছি। ঢাকা-৬ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় স্থানীয়দের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সাঈদ খোকন বলেন, এই আসন থেকে নির্বাচিত হতে পেরে এবং মহান জাতীয় সংসদে আপনাদের প্রতিনিধিত্ব করতে পেরে আমি গর্বিত। এই আসন থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধুর ছেড়ে দেওয়া এই আসনে উপনির্বাচনে আমার প্রায়াত পিতা মেয়র মোহাম্মদ হানিফকে আপনারা ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছিলেন। সেই একই আসন থেকে আপনারা আমাকে বিপুল ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত করেছেন। তাই আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের ভাষা আমার নেই। বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোটের সভাপতি বিধান বিহারী গোস্বামীর সভাপতিত্বে সমাবেশে ঢাকা-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবু হোসেন বাবলা, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সদস্য মো. আইয়ুব আলী খান, শিক্ষা ও মানববিষয়ক সম্পাদক এস কে বাদল উপস্থিত ছিলেন।
১৭ এপ্রিল, ২০২৪

স্বাধীনতা সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪১
সমৃদ্ধিতে ভারত ও পাকিস্তানকে ছাড়িয়ে গেলেও স্বাধীনতা সূচকে পিছিয়েছে বাংলাদেশ। স্বাধীনতা এবং সমৃদ্ধির সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ঢাকায় অবস্থিত বিদেশি দুটি সংস্থা। স্বাধীনতা সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১৬৪ দেশের মধ্যে ১৪১তম। আর সমৃদ্ধি সূচকে অবস্থান ৯৯তম। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস, ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএআইডি) এবং দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশন যৌথভাবে আটলান্টিক কাউন্সিলের নতুন বৈশ্বিক স্বাধীনতা ও সমৃদ্ধি প্রতিবেদনের (গ্লোবাল ফ্রিডম অ্যান্ড প্রসপারিটি রিপোর্ট) ফল জানাতে সমৃদ্ধি ও সুশাসন সম্মেলনের আয়োজন করে। সেখানে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, যেসব দেশ শক্তিশালী আইনি ব্যবস্থাসহ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতাকে উৎসাহিত করে, তারা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আরও বেশি করে স্বাগত জানায়। এসব দেশ কম স্বাধীনতা থাকা দেশগুলোর তুলনায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বেশি বিদেশি বিনিয়োগ পায়। সামগ্রিকভাবে স্বাধীনতা সূচক সুপারিশ করে যে, স্বাধীনতার প্রতি দৃঢ় অঙ্গীকার বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের মূল অনুষঙ্গ। আবার সুশাসন বৃহত্তর সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যায়। প্রতিবেদনে জানানো হয়, স্বাধীনতা সূচকে অন্তর্ভুক্ত আছে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং আইনি উপাদান। সেই সূচকে দীর্ঘ ২২ বছর ধরে বাংলাদেশের অবনতি হচ্ছে। ২০২৩ সালে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তানকে সমৃদ্ধির দিক থেকে ছাড়িয়ে গেলেও স্বাধীনতা সূচকে দেশগুলো থেকে অনেকটা পিছিয়ে ছিল। আটলান্টিক কাউন্সিলের স্বাধীনতা ও সমৃদ্ধি কেন্দ্রের ‘ফ্রিডম অ্যান্ড প্রসপারিটি ইন বাংলাদেশ’ (বাংলাদেশে স্বাধীনতা ও সমৃদ্ধি) শীর্ষক প্রতিবেদনে ‘অধিকাংশ ক্ষেত্রে অসচ্ছল’ এবং স্বাধীনতা সূচকে ‘অধিকাংশ ক্ষেত্রে পরাধীন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। ২০২৩ সালের জন্য করা এ তালিকায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সমৃদ্ধি সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১৬৪টি দেশের মধ্যে ৯৯তম। তালিকায় ভারতের অবস্থান ১৪৬তম এবং পাকিস্তানের ১৫০তম। আর স্বাধীনতা সূচকে ভারত ১০৪তম এবং পাকিস্তান ১১৩তম অবস্থানে রয়েছে। সমৃদ্ধি সূচকের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য, বৈষম্য, পরিবেশগত অবস্থা, সংখ্যালঘু অধিকার এবং শিক্ষাসহ মাথাপিছু জিডিপির মতো বিভিন্ন কারণ বিবেচনা করা হয়েছে। অন্যদিকে স্বাধীনতা সূচকে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং আইনি অবস্থার পরিমাপ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, জানুয়ারিতে হওয়া দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটি কর্তৃত্ববাদী দলীয় ব্যবস্থার দিকে শক্তিশালী পরিবর্তন এসেছে। বিরোধী দলকে বয়কট করে সেটি পুঁজি হিসেবে ব্যবহার করে আওয়ামী লীগ তার ১৫ বছরের শাসনকাল টিকিয়ে রেখেছে। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকা নারী সরকারপ্রধান হতে যাচ্ছেন। এটি স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত দিলেও কর্তৃত্ববাদী দলীয় ব্যবস্থাগুলো প্রায়ই বিভিন্ন ঝুঁকির মুখোমুখি হয়, যা সুশাসনকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এই ঝুঁকিগুলো কমানোর জন্য রাজনীতি, সরকার ব্যবস্থা এবং অর্থনীতিতে সুস্থ প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাঙ্কটির গবেষণায় দেখা গেছে, মৌলিক স্বাধীনতা জোরদার করলে সেটি দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিকে গতিশীল করে। এ সময় ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেন, প্রতিটি দেশ দুর্নীতির মতো বিষয়ে এবং অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অধিকার সুরক্ষিত রাখার লড়াই করছে। কিন্তু মূল সমস্যাগুলো এড়িয়ে না গিয়ে বরং সমস্যা মেনে নেওয়া ও সক্রিয়ভাবে সেগুলো সমাধানের চেষ্টা করাই আসল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত। মার্কিন রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, স্বাধীনতা সূচকে ‘অধিকাংশ ক্ষেত্রে পরাধীন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত দেশগুলো ‘সমৃদ্ধশালী’ দেশ হিসেবে (সমৃদ্ধি সূচকে) তালিকাভুক্ত হয়নি। এটি থেকে বোঝা যায়, সমৃদ্ধশালী হওয়ার জন্য বাংলাদেশকে জনগণের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও আইনি স্বাধীনতা বৃদ্ধি করতে সাহসী পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রতিবেদনে স্বাধীনতার সূচক এবং সমৃদ্ধি সূচকের ওপর ভিত্তি করে গণতান্ত্রিক এবং শাসন সূচক ব্যবহার করে একটি জাতির অর্থনৈতিক অবস্থানের মূল্যায়ন করা হয়েছে। সমৃদ্ধি ও সুশাসন সম্মেলনে সরকার, নাগরিক সমাজ, ব্যবসায়ী, দাতা, একাডেমিয়ান এবং থিঙ্ক ট্যাঙ্কের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। আটলান্টিক কাউন্সিলের ফ্রিডম অ্যান্ড প্রসপারিটি সেন্টারের পরিচালক জোসেফ লেমোইন অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন। মূল উপস্থাপনায় লেমোইন বলেন, উপাত্ত বলছে— যেসব দেশে বেশি স্বাধীনতা রয়েছে, সেসব দেশে অধিকতর সমৃদ্ধিও দেখা যায়। অন্যদিকে যেখানে স্বাধীনতা কম, সেখানে কম সমৃদ্ধি থাকার প্রবণতা রয়েছে। স্বাধীনতা এবং সমৃদ্ধি সূচকের মধ্যে দুটি আলাদা সূচক রয়েছে, যা বিশ্বের ১৬৪টি দেশের স্বাধীনতা এবং সমৃদ্ধির ধরন অনুযায়ী ক্রম বা অবস্থান নির্ধারণ করেছে। স্বাধীনতা সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ‘অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্বাধীনতাবঞ্চিত’ ক্যাটাগরিতে। সমৃদ্ধি সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ‘অধিকাংশ ক্ষেত্রে অসমৃদ্ধ’ ক্যাটাগরিতে রয়েছে।
১৭ এপ্রিল, ২০২৪
X