সাংবাদিকদের বললেন, ‘নো মোর কোশ্চেন’ / সরকারি টাকা ব্যয়ে নিজ খামারের জন্য সড়ক নির্মাণ
কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা অভিযোগ উঠেছে। তিনি নিজের গরু ও মাছের খামারে সহজে যাতায়াতের জন্য কৃষকের ফসলি জমির ওপর দিয়ে সরকারি টাকা ব্যয় করে দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ একটি রাস্তা নির্মাণ করেছেন। এমনকি যাদের ফসলি জমির ওপর দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে তাদের কোনোপ্রকার ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয়নি। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রথম ধাপে উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী, আওয়ামী লীগ নেতা ও মনোহরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেনের বাকরা গ্রামে তিনি গরু ও মাছের খামার করেছেন। এ জন্য উপজেলার নাথেরপেটুয়া-হাসনাবাদ সড়ক থেকে জাকিরের ওই খামার বাড়ি পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ করা হয়। ফসলি জমির ওপর দিয়ে নির্মিত ওই রাস্তার সুফল একাই ভোগ করছেন উপজেলা চেয়ারম্যান। ২০২১ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে নির্মিত ওই রাস্তাটির দুই পাশে কোনো ধরনের ঘর-বাড়ি নেই। রাস্তাটি দিয়ে মানুষের যাতায়াতের কোনো প্রকার প্রয়োজনীয়তাও নেই। শুধু চেয়ারম্যান জাকির হোসেনের মালিকানাধীন সুবিশাল মাছের ও গরুর খামারের জন্যই সড়কটি ক্ষমতার অপব্যবহার করে নির্মাণ করেছেন তিনি। স্থানীয় পরানপুর গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে সৌদি প্রবাসী মিজানুর রহমান বলেন, তিনি ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিক ও ভুক্তভোগীদের একজন। তিনি বলেন, ‘আমার ২২-২৩ বছরের আয়-উপার্জনের টাকা দিয়ে আমিনাথেরপেটুয়া-হাসনাবাদ সড়কের পাশে সাড়ে ৪০ শতক জায়গা ক্রয় করি। আমাকে না জানিয়ে জাকির হোসেন আমার জায়গার ওপর দিয়ে ১৪ ফুট প্রশস্ত রাস্তাটি তৈরি করেন। এতে আমার প্রায় ৩০ শতক জায়গা রাস্তার ভেতর পড়ে যায়। আর বাকি অংশ গর্ত করে মাটি নিয়ে গেছেন তিনি। এ কথাগুলো বলতে বলতে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন প্রবাসী। তিনি আরও বলেন, আমি বিষয়টি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব, কুমিল্লা জেলা প্রশাসক, কুমিল্লা পুলিশ সুপার, মনোহরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, সৌদি আরব অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাসহ বিভিন্ন মহলে জানিয়েছি। কিন্তু জায়গার ক্ষতিপূরণ ও জাকির হোসেনের বিচার হয়নি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ক্ষতিগ্রস্ত আরেক জমির মালিক জানান, আমার পৈতৃক সম্পত্তির ওপর দিয়ে জাকির তার নিজ খামারে যাতায়াতের জন্য রাস্তাটি নির্মাণ করেছেন। তাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারে না। এজন্য আমরা চুপ করে আছি। এত দীর্ঘ রাস্তা হলো আমাদের জমির ওপর দিয়ে; কিন্তু ক্ষতিপূরণ তো দূরের কথা আমাদের জিজ্ঞেসও করেননি তিনি। নিজের সুবিধার জন্য সরকারের পুরো টাকাটা অপচয় করেছেন তিনি।   এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মনোহরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উজালা রানী চাকমা বলেন, যে সময় রাস্তাটি নির্মাণ করা হয়েছে, সে সময় আমি এখানে ছিলাম না। আমি যোগদানের পর বিষয়টি নিয়ে কেউ আমাকে অভিযোগ করেনি। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।  এদিকে মঙ্গলবার (৭ মে) বেলা ১১টায় কুমিল্লা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন ডাকেন জাকির হোসেন। সেখানে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে ‘মনগড়া’ মন্তব্যসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন তিনি। জাকির বলেন, আমি একা। তারা সবাই ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী আবদুল মান্নান চৌধুরীর পক্ষে। তবে সুষ্ঠু ভোট হলে আমি সব কেন্দ্রে পাস করব। এক পর্যায়ে জাকির হোসেন মানুষের ফসলি জমির ওপর দিয়ে নিজের গরু ও মাছের খামারের জন্য দেড় কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ করার বিষয়টি আলোচনায় আসে। এ ছাড়া নির্বাচন নিয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্ন শুনে দ্রুত প্রেস ক্লাব ত্যাগ করেন তিনি। জাকির হোসেনের এমন বক্তব্য সম্পর্কে জানতে চাইলে ঘোড়া প্রতীক নিয়ে উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আবদুল মান্নান চৌধুরী বলেন, জাকির হোসেন নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশকে ঘোলাটে করতে চান। এজন্য তিনি কয়েকদিন ধরে উল্টাপাল্টা বকছেন।
০৭ মে, ২০২৪

স্কালোনির নামে আর্জেন্টিনায় সড়ক নির্মাণ
আর্জেন্টিনার প্রধান কোচের দায়িত্ব নিয়েই ২৮ বছরের শিরোপাখরা কাটান লিওনেল স্কালোনি। ২০২১ সালে কোপা আমেরিকার পর ২০২২ কাতার বিশ্বকাপের শিরোপা জেতেন আলবিসেলেস্তে কোচ। ম্যারাডোনার পর ৩৬ বছরের বিশ্বকাপ জয়ের অপেক্ষার পালা দূর করেন স্কালোনি। এবার কাতার বিশ্বকাপ জয়ের সেই কারিগর স্কালোনিকে বিশেষ সম্মানে ভূষিত করল আর্জেন্টিনার স্থানীয় সরকার। আর্জেন্টিনায় নিজের জন্মস্থান ‘পুজাতো’ শহরে একটি সড়ক নির্মাণ করেছে পুজাতোর স্থানীয় সরকার। নির্মাণকৃত সড়কের নামকরণ করা হয়েছে লিওনেল মেসি-ডি মারিয়াদের কোচ স্কালোনির নামে। জন্মস্থান পুজাতো শহরের সড়কটির নামকরণ করা হয়েছে ‘লিওনেল সেবাস্তিয়ান স্কালোলি’ নামে।  ২০২২ কাতার বিশ্বকাপে ফ্রান্সকে হারিয়ে সোনালি ট্রফি জয় করে আর্জেন্টিনা। তখনই স্কালোনির নামে সড়ক তৈরির কথা দিয়েছিলেন পুজাতোর স্থানীয় সরকার প্রধান দানিয়েল কুয়াকুয়ারেনি। এবার নিজের সেই কথা রাখলেন তিনি। স্কালোনির নামে পুজাতোয় একটি সড়ক নির্মাণ করলেন কুয়াকুয়ারেনি। সম্মানজনক এই স্বীকৃতি পেতে পুজাতোর স্থানীয় ক্লাব মাতিয়েনসোতে উপস্থিত ছিলেন স্কালোনি। সেখানে ক্লাবের তরুণ ফুটবলার ও সমর্থকরা আর্জেন্টাইন মাস্টারমাইন্ডের অটোগ্রাফ ও একনজর দেখতে মুখিয়ে ছিলেন। নতুন বছরে এটা অবশ্যই স্কালোনির জন্য বিরাট এক পাওয়া।    
১১ জানুয়ারি, ২০২৪

একনেকে অনুমোদন পেলো দক্ষিণ সিটির ৮ সারির সড়ক নির্মাণ প্রকল্প
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পেয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে গৃহীত ‘ইনার সার্কুলার রিং রোডের রায়েরবাজার স্লুইস গেট হতে লোহার ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তার উন্নয়ন’ শীর্ষক ৮ সারির (লেন) সড়ক নির্মাণ প্রকল্প। আজ মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর)  রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় অন্যান্যদের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস উপস্থিত ছিলেন। ঢাকা মহানগরীর অভ্যন্তরে যানজট নিরসনে সরকারের সংশোধিত কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনায় (RSTP) ইনার সার্কুলার রিং রোডের উন্নয়নের প্রস্তাবনা রয়েছে। সে প্রস্তাবনার আলোকেই সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার সাথে সমন্বয় করে রায়েরবাজার স্লুইস গেট হতে লোহার ব্রিজ পর্যন্ত বিদ্যমান সড়কটিকে ৮ সারিতে উন্নীত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় ইনার সার্কুলার রিং রোডের রায়েরবাজার স্লুইসগেট থেকে লোহার ব্রিজ পর্যন্ত ৫ কিমি অংশে ৮ সারির সড়ক নির্মাণ করা হবে। যার মধ্যে মাঝের দুই-দুই সারি করে ৪ সারি এক্সপ্রেসওয়ে এবং দুই পাশে দুই-দুই সারি করে ৪ সারি সার্ভিস লেন নির্মাণ করা হবে। এর ফলে বর্তমানে বিদ্যমান ২০ ফুট প্রশস্ততার সড়কটি ১৪০ ফুটে উন্নীত হবে। এছাড়াও সড়কের প্রতি পাশে ৫ ফুট করে উভয় পাশে মোট ১০ ফুট প্রশস্ততার ১০ কিমি ফুটপাত ও ১০ কিমি আরসিসি ড্রেন নির্মাণ করা হবে। সেজন্য ফুটপাতসহ অতিরিক্ত ১৩০ ফুট সড়ক উন্নয়নে বিদ্যমান গড় ৮ ফুট গভীরতার রাবিশ (আবর্জনা) অপসারণ করতে হবে, যা পরবর্তীতে বালু ভরাটের মাধ্যমে ভূমি উন্নয়ন কার্যক্রম সম্পন্ন করার পর সড়ক নির্মাণ করা হবে। এছাড়াও এই সড়ক উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়নে সড়কের উভয় পাশে ৮ কিমি গার্ডওয়াল ও রিটেইনিং ওয়াল, ৩টি ভ্যাহিক্যুলার ওভারপাস, ৩টি ফুটওভারব্রিজ, ৬টি যাত্রী ছাউনি ও বাস-বে এবং ৩টি অন্তর্বর্তীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র (এসটিএস) নির্মাণ করা হবে। এ কার্যক্রম বাস্তবায়নে ৫৬৫টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ও ৮টি টাওয়ার স্থানান্তর বাবদ ১২০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এ সকল বৈদ্যুতিক খুঁটি ও টাওয়ার স্থানান্তরের জন্য ডিপিডিসিকে ১২০ কোটি টাকা পরিশোধ করা হবে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ৮ কিমি গার্ডওয়াল ও রিটেইনিং ওয়াল, ৩টি ভ্যাহিক্যুলার ওভারপাস, ৩টি ফুটওভারব্রিজ, ৬টি যাত্রী ছাউনি ও বাস-বে, ১০ কিমি ফুটপাত, ১০ কিমি আরসিসি ড্রেন নির্মাণের জন্য ৪০০ কোটি টাকা, ২২ জন পরামর্শকসহ ৩৩ জন জনবলের জন্য ৩০ মাসে ১৪ কোটি টাকা এবং ৯০০টি এলইডি বাতি স্থাপনে সাড়ে ৭ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। প্রকল্পের উল্লিখিত অনুষঙ্গ বাদে ১৪০ ফুট প্রশস্ততার ৫ কিমি দৈর্ঘ্যের সড়কের নির্মাণে ব্যয় রাখা হয়েছে ৩৮৯ কোটি টাকা। প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে যানবাহনগুলো সার্ভিস রোড হতে এক্সপ্রেসওয়েতে এবং এক্সপ্রেসওয়ে হতে সার্ভিস রোডে প্রবেশ করতে পারবে। এতে করে সড়কের পার্শ্ববর্তী এলাকার যানবাহনগুলোও এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহারের সুবিধা পাবে। তাছাড়া সড়কের এলাইনমেন্টে ৩টি ওভারপাস রাখা হয়েছে। এতে করে পার্শ্ববর্তী এলাকার যানবাহনগুলো এক্সপ্রেসওয়ের নিচ দিয়ে পারাপার করতে পারবে। ফলে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে নগরীর অভ্যন্তরে যানজট কমানোর পাশাপাশি প্রতিনিয়ত নষ্ট হওয়া কর্মঘণ্টা হ্রাস করা এবং ফলশ্রুতিতে জ্বালানি অপচয় রোধ করা সম্ভব হবে। কারণ পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহারকারী ২১ জেলার যানবাহনের পাশাপাশি চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের ১৬ জেলার যানবাহনও যাত্রাবাড়ী মোড় দিয়ে ঢাকা মহানগরীতে প্রবেশ করে। ফলে যাত্রাবাড়ী এলাকায় প্রচন্ড যানজটের সৃষ্টি হয়। কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্পন্ন হলে সাভার, উত্তরা, এয়ারপোর্ট, গাজীপুরসহ উত্তর বঙ্গগামী যানবাহনগুলোর আর ঢাকা মহানগরীর অভ্যন্তরে প্রবেশের প্রয়োজনীয়তা পড়বে না। এছাড়াও বুড়িগঙ্গা আদি চ্যানেল সংলগ্ন হওয়ায় প্রস্তাবিত সড়কে প্রশস্ত হাঁটার পথ এবং বৃক্ষ রোপণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এতে পরিবেশের ভারসাম্য যেমনি রক্ষা হবে এবং তেমনি নগরবাসী নদীর নান্দনিক পরিবেশ ও সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবে। প্রসঙ্গত, ইনার সার্কুলার রিং রোডের রায়েরবাজার স্লুইস গেট থেকে পোস্তগোলা পর্যন্ত ১২ কিমি অংশের বিদ্যমান সড়কটিকে ৮ সারিতে উন্নীত করার পরিকল্পনা ২ ধাপে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রথম ধাপে রায়েরবাজার স্লুইস গেট হতে লোহার ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ প্রকল্প আজ একনেক সভায় অনুমোদন পেলো। ২য় ধাপে লোহার ব্রিজ হতে পোস্তগোলা পর্যন্ত বাকী ৭ কিমি রাস্তা নির্মাণের লক্ষ্যে সম্ভাব্যতা যাচাই কার্যক্রম চলমান রয়েছে। মোট ৯৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে জুলাই ২০২৩ হতে জুন ২০২৬ সাল মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ৯৭ কোটি টাকা অর্থায়ন করবে। বাকি অর্থ সরকার যোগান দেবে।
৩১ অক্টোবর, ২০২৩

পচা ইট-খোয়া দিয়ে হচ্ছে সড়ক নির্মাণ
মাদারীপুরের কালকিনিতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে একটি সড়কের নির্মাণকাজে পচা ইট ও খোয়া ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। এতে সড়কের স্থায়িত্ব নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। তবে এই বিষয়ে পৌর মেয়র ঠিকাদারের পক্ষ নিয়ে দাবি করেন, ভালোভাবেই কাজ চলছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ‘স্থানীয় সরকার কভিড-১৯ রেসপন্স অ্যান্ড রিকভারি’ প্রকল্পের আওতায় কালকিনি-ভুরঘাটা বিসি রোড (রেন্ডিতলা) থেকে আলমগীর উকিলের বাড়ি পর্যন্ত ৯০০ মিটার সড়কের নির্মাণকাজ বাস্তবায়নের জন্য কালকিনি পৌরসভার সঙ্গে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স এসএস এন্টারপ্রাইজের ৩৪ লাখ ৭ হাজার ৯০৫ টাকার চুক্তি হয়। চুক্তি অনুসারে চলতি বছরের ৬ জুলাই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সড়কটি নির্মাণের কাজ শুরু করে, যা শেষ হওয়ার কথা রয়েছে ২০২৪ সালের ৫ জুন। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিশ্বব্যাংকের এই প্রকল্প থেকে বেশি মুনাফার উদ্দেশ্যে সড়কটিতে নিম্নমানের ইট ও খোয়া বিছিয়ে কার্পেটিং করছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দা আবুল বাসার বলেন, রাস্তাটি অনেক বছর ধরেই ভাঙাচোরা ছিল। কিন্তু এখন পৌরসভা থেকে রাস্তাটি নতুন করে নির্মাণ করা হলেও পচা ইট-খোয়া দিয়ে বানানো হচ্ছে। ইটের খোয়া এতই পচা যে, তা হাত দিয়ে চাপ দিলেই গলে যায়। একই এলাকার আরেক বাসিন্দা মোহম্মদ ফারুক হোসেন দাবি করেন, এই কাজের ঠিকাদার পৌর মেয়রের ঘনিষ্ঠ। তাই মেয়র সড়কটি টেকসই করে মেরামতের জন্য কোনো পদক্ষেপ নেননি। এটি বিদেশি টাকা লুটপাট করে খাওয়ার একটা ধান্ধা ছাড়া আর কিছুই নয়। এই সড়ক বেশিদিন টিকবে না। এলাকার ষাটোর্ধ্ব বাসিন্দা জয়নাল হোসেন বলেন, ঠিকাদাররা যখন ইট বিছান রাস্তায়, তখন আমরা নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু তারা শোনেননি। ঠিকাদারের লোকজন বলে, পচা ইট-খোয়ায় রাস্তা বানালে রাস্তার ফিনিশিং ভালো হয়। ঠিকাদার পৌর মেয়রের লোক। বেশি কিছু বললে পরে আবার আমাদের নানা ধরনের বিপদে ফেলে দেবে। তাই ভয়ে আর কিছু বলিনি। এই বিষয়ে মাদারীপুর সামাজিক আন্দোলন পরিষদের সভাপতি জাহিদ হোসেন অনিক বলেন, নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের ফলে সড়কটি যেমন টেকসই হবে না, তেমনি সরকারের এই সুন্দর উদ্যোগটিও ব্যর্থ হবে। তাই আমি দাবি করছি, সড়কটি উন্নতমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করে তৈরি করা হোক। পাশাপাশি এই প্রকল্পের নজরদারির দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা হোক। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে সড়ক নির্মাণের বিষয়টি জানতে চাইলে ঠিকাদারের প্রতিনিধি মো. সাইফুদ্দিন বলেন, ‘আমরা সড়কের কাজে কোনো নিম্নমানের ইট-খোয়া ব্যবহার করিনি। রাস্তা যাতে ভালোমানের হয়, সেভাবেই কাজ করেছি। তবে পৌর মেয়র ঠিকাদারের পক্ষ নিয়ে বলেন, এলাকাবাসী সড়কে নিম্নমানের ইট-খোয়া ব্যবহারের যে অভিযোগ তুলেছে, তা সঠিক নয়। ঠিকাদার ভালোভাবেই কাজ করছে।
৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

কালবেলায় সংবাদ প্রকাশ / সেই সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণ শুরু
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ চর বৈরাতী হাজিরহাটে পাশাপাশি সেই দুই সেতুর সংযোগ সড়ক তৈরির কাজ শুরু করেছেন প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। গতকাল মঙ্গলবার থেকে বাঁশ, কাঠ, মাটির বস্তা দিয়ে সংযোগ সড়ক তৈরি করতে দেখা গেছে। এর আগে গত ২৩ জুলাই ‘তিন কোটি টাকার সেতুতে উঠতে হয় মই বেয়ে’ শিরোনামে দৈনিক কালবেলার প্রিন্ট ও অনলাইন সংস্করণে সংবাদ প্রকাশ হলে নড়েচড়ে বসে কর্তৃপক্ষ। পরে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও ইব্রাহিম এন্টারপ্রাইজ নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রাস্তা তৈরির উদ্যোগ নেয়। উভয় প্রান্তে সংযোগ সড়ক তৈরি করায় বর্তমানে চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। কালীগঞ্জ প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ফেরদৌস আলম কালবেলাকে জানান, গত বর্ষায় সেতু দুটির সংযোগ সড়ক ভেঙে যাওয়ার পর দ্রুত সময়ের মধ্যেই সংযোগ সড়ক তৈরি করা হয়েছে। এলাকাবাসী রাস্তা দিয়ে চলাচল শুরু করেছেন।
০২ আগস্ট, ২০২৩

কালবেলায় সংবাদ প্রকাশের পর সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণ
কালবেলায় সংবাদ প্রকাশের পর লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ চর বৈরাতী হাজিরহাটে পাশাপাশি সেই দুই সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণ করেছেন প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। মঙ্গলবার (১ আগস্ট) সরজমিনে দেখা যায়, সেতুর উভয় প্রান্তের সংযোগ সড়ক তৈরির কাজ শেষ হওয়ায় স্থানীয়রা এখন নির্বিঘ্নে চলাচল করছে। গত ২৩ জুলাই ‘৩ কোটি টাকার সেতুতে উঠতে হয় মই বেয়ে!’ এই শিরোনামে দৈনিক কালবেলা এবং কালবেলা অনলাইনে সংবাদ প্রকাশ হলে নড়েচড়ে বসে কর্তৃপক্ষ। পরে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও ইব্রাহিম এন্টারপ্রাইজ নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রাস্তা তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করেন। উভয় প্রান্তে সংযোগ সড়ক তৈরি করায় বর্তমানে চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। এ বিষয়ে কালিগঞ্জ প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ফেরদৌস আলম জানান, গত বর্ষায় সেতু দুটির সংযোগ সড়ক ভেঙে যাওয়ার পর দ্রুত সময়ের মধ্যেই সংযোগ সড়ক তৈরি করা হয়েছে। এলাকাবাসী রাস্তা দিয়ে চলাচল শুরু করেছেন। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) বৈরাতী খালের ওপর ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩০ মিটার দৈর্ঘ্যের ব্রিজটি নির্মাণ করেছে। কিন্তু গত বন্যায় সেতুটির সংযোগ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেতু দিয়ে যোগাযোগব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ফলে ৩ কোটি টাকার সেতুটি কোনো কাজে আসছে না স্থানীয় বাসিন্দাদের। স্থানীয়রা জানায়, সদ্যনির্মিত সেতুটির পরিকল্পনায় ত্রুটির কারণে সেটি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এ কারণে কৃষকদের কয়েক কিলোমিটার ঘুরে জমির ফসল ঘরে আনতে হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা দুলাল মিয়া, শফিকুল ইসলামসহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুর বিষয়ে ভালো পরিকল্পনা ছিল না। তাই এখন মই বেয়ে সেতু পারাপার হতে হয়। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ফেরদৌস আহমেদ বলেন, ত্রাণ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার অর্থায়নে সদ্যনির্মিত ব্রিজটির সংযোগ সড়ক তিস্তার ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহম্মেদ ইতোমধ্যে সেতুটি পরিদর্শন করেছেন। শিগগিরই রাস্তা নির্মাণ করে সেতুটি চলাচলের উপযোগী করা হবে।
০১ আগস্ট, ২০২৩

স্বেচ্ছাশ্রমে দেড় কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ
ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার বড়ইয়া ইউনিয়নের আরুয়া-সোনারগাও গ্রামে স্থানীয়দের উদ্যোগে দেড় কিলোমিটার সড়কে ইটের সলিংসহ নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে। শুক্রবার (২১ জুলাই) দুপুরে বৃষ্টির মধ্য প্রতিকূল আবহাওয়া উপেক্ষা করে এ নির্মাণ কাজে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন । সরকারি কোনো বরাদ্দ না থাকায় স্থানীয়ভাবে অর্থ সংগ্রহ করে রাস্তা নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। স্থানীয়রা জানান, দুইশত বছরের পুরনো বড়ইয়া ইউনিয়নের এই আরুয়া-সোনারগাও গ্রাম। আরুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং সোনারগাও একে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্য দিয়ে পশ্চিম দিকে কবিরাজ বাড়ি পর্যন্ত সড়কটির দৈর্ঘ্য আড়াই কিলোমিটার। মাটির রাস্তা হলেও মানুষ চলাচল করার মতো অবস্থায় ছিল না। এলাকার মানুষের ভোগান্তি দেখে এগিয়ে আসেন জিয়া নামে স্থানীয় এক প্রবাসী। প্রবাসী জিয়ার অর্থায়নে ও এলাকাবাসীর স্বেচ্ছাশ্রমে ইটের সলিংসহ রাস্তার নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে এক কিলোমিটার পর্যন্ত সম্পন্ন হয়েছে। এলাকার বিত্তবান ও ধনাঢ্য ব্যক্তিদের সহযোগিতায় এবং স্থানীয়দের স্বেচ্ছাশ্রমে বাকি অংশটুকু পর্যায়ক্রমে সম্পন্ন করা হবে বলে জানা গেছে। স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তি আলাউদ্দিন গাজী, মীর ফজলুর রহমান, যুবক ছবুর খান, দ্বীন ইসলাম জানান, দুটি স্কুলের মধ্য দিয়ে পশ্চিম দিকে রাস্তাটি চলাচলের উপযুক্ত ছিল না। শুনেছি দুই শত বছরের বেশি সময় ধরে মানুষ চলাচল করে। প্রবাসী জিয়া জানান, এলাকার রাস্তাটি অনেক পুরনো। কিন্তু চলাচলে কোনো ব্যবস্থা ছিল না। এলাকাবাসীর অনুরোধে তাদের সহযোগিতায় রাস্তাটি নির্মাণ কাজ শুরু করেছি। ইতোমধ্যে প্রায় এক কিলোমিটার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আরও পড়ুন: বাড়ি পেল 'ভাল কাজের হোটেল' এ বিষয়ে বড়ইয়া ইউনিয়নের আরুয়া এলাকার ইউপি সদস্য নাসির উদ্দিন জানান, ২শ বছরেরও বেশি সময় ধরে মানুষ চলাচল করছে। সরকারি কোন বরাদ্দ না থাকায় রাস্তাটির কোন উন্নয়ন হয়নি। এলাকাবাসীর অর্থায়ন ও স্বেচ্ছাশ্রমের সহযোগিতায় নির্মাণ করা হচ্ছে।
২২ জুলাই, ২০২৩
X