আফতাবনগরে পশুর হাট নয়: হাইকোর্ট
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানীর আফতাবনগরে পশুর হাট বসানোর ইজারা বিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতা স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। সঙ্গে ওই আবাসিক এলাকায় হাট বসানো কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। এ বিষয়ে করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গতকাল বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুলসহ আদেশ দেন। এর ফলে কোরবানিতে আফতাবনগরে পশুর হাট বসানো যাবে না বলে জানান আইনজীবীরা। আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী শাহ মনজুরুল হক ও আইনজীবী এস এম শামীম হোসাইন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত। আফতাবনগর হাটের অংশের বৈধতা নিয়ে রিট করেন আফতাবনগর জহুরুল ইসলাম সিটি সোসাইটির সভাপতি মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন ঢালী এবং সাধারণ সম্পাদক গিয়াসউদ্দিন কাজল।
৬ ঘণ্টা আগে

শিক্ষায়ও ছেলেখেলার হাইকোর্ট দর্শন
বাঙালকে হাইকোর্ট দেখানো মর্মে একটা প্রবাদ আছে। এর সাধারণ অর্থ হচ্ছে—বোকা বানানো বা ধোঁকা দেওয়ার চেষ্টা। এর পেছনে নানা গল্প। একটি হচ্ছে এমন—এক বাঙালি ছেলে ব্রিটেনে পড়াশোনা করতে গিয়ে ওখানকার এক মেয়ের সঙ্গে বেশ সম্পর্ক পাতে। মেয়েটিকে পটাতে বাংলাদেশ হাইকোর্টের ছবি দেখিয়ে বলে এটা তার বিশাল বাড়ি। পটিয়ে-পাটিয়ে ওই মেয়েকে বিয়ে করে দেশে নিয়ে আসে। একদিন হাইকোর্টের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় মেয়েটি হাইকোর্ট দেখে চেঁচামেচি শুরু করে ও সবাইকে এ ঘটনা জানিয়ে দেয়। আরেকটি ভার্সন এমন—কলকাতার হাইকোর্টটি ছিল পরাধীন ভারতের বাঙাল প্রদেশের হাইকোর্ট। তখন বাংলা বলতে বোঝাত আজকের উভয় বঙ্গকেই। পূর্ববাংলার লোকেরা মামলাবাজি বেশি করত। মামলা-মোকদ্দমার তারিখে তারিখে তাদের কলকাতায় যেতে হতো। এ ওসিলায় কলকাতার আর কিছু চিনুক না চিনুক, হাইকোর্টটি ভালোমতো চিনত তারা। সত্য-বানোয়াট বা কল্পকাহিনি যাই হোক, ঘটনে-অঘটনে ‘বাঙালকে হাইকোর্ট দেখানো’ প্রবাদ বাক্যের রূপ নিয়েছে পাকাপোক্তভাবে। রমজানে বা গরমে ক্লাস কতদিন চলবে, ছাত্ররাজনীতি চলবে কি না, এ ধরনের বিষয়েও শিক্ষার্থীদের হাইকোর্ট দেখতে হচ্ছে। হলে সিট ফেরত দেওয়া নিয়েও হাইকোর্টের নির্দেশনা। তা বহিষ্কারাদেশের বৈধতা, একাডেমিক পরীক্ষার ফল, শিক্ষা শেষে পরীক্ষা বা নিয়োগ পরীক্ষা নিয়েও। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগ, পরিচালনা কমিটি নিয়ে তো আছেই। তা দুভাবেই হচ্ছে। হয় কোনো না কোনো পক্ষ ছুটে যাচ্ছে হাইকোর্টে, নইলে হাইকোর্ট স্বপ্রণোদিত হয়েও করছেন। আদালতের ভাষায় যাকে বলে সুয়োমুটো। ওই স্বপ্রণোদনা বা বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে আনার পেছনেও থাকছে কারও না কারও মেহনত। এসব কসরত-মেহনত বিফলে যাচ্ছে না। শিক্ষার্থীদের হাইকোর্ট দেখিয়ে ছাড়া হচ্ছে। সদ্য বিদায়ী রমজানে হাইকোর্ট দেখতে হয়েছে খুদে বা শিশু শিক্ষার্থীদেরও। যে বয়সে ও সময়ে তাদের দেখানো যেত অন্য কিছু। কিন্তু দেখল হাইকোর্ট। গরমে তাদের আবারও হাইকোর্ট দর্শন। নতুনত্ব হলো, গরমের তীব্রতায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশনায় ক্ষুব্ধ শিক্ষামন্ত্রী। শুধু চটেনইনি, হাইকোর্টের আদেশ আপিল বিভাগে নিয়ে যাওয়ার কথাও জানান তিনি। এ বয়সেই কী জানল-বুঝল কোমলমতি শিক্ষার্থীরা? শুধু হাইকোর্ট নয়, জানল পরের ধাপ আপিল সম্পর্কেও। বোনাসের মতো এর বাইরে বিচার বিভাগের সঙ্গে রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগের বিরোধের এক ঝলক দেখল। সবকিছুতে হাইকোর্ট দেখানোর ভালোমন্দ নিয়ে মাঝেমধ্যেই ঘটনাদৃষ্টে কথা হয়। ক্ষতিগ্রস্ত বা আক্রান্ত মহল তখন জ্ঞানী কথা বেশি বলেন। সৌজন্যতার নমুনা দেখিয়ে বলেন, সবকিছুতে আদালতে ছুটে যাওয়া ঠিক নয়। আর প্রতিপক্ষ দেখান আইনের যুক্তি। প্রশ্ন ছোড়েন—আদালত কি দেশের বাইরের কেউ? কখনো কখনো হাইকোর্টকেও এ নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করতে শোনা যায়। বিব্রত হতেও দেখা যায়। কিছু নির্দেশনা দিয়ে বলা হয়, নিজেরা নিজেরা মিটমাট বা ঠিকঠাক করে নিতে। তা ক্রমেই শিক্ষা খাতেও বাড়বাড়ন্ত। বলার অপেক্ষা রাখে না, শিক্ষা বিষয়টি ভিন্ন ও স্পর্শকাতর। এ নিয়ে ছেলেখেলা মানায় না। কিন্তু মানিয়ে ছাড়ানোর এক প্রবণতা লক্ষণীয়। শিক্ষা শুধু কিছু বই-খাতা আর চুল-টেবিল নয়। এটি বিশালত্ব অনেক। মোটা দাগে শিক্ষার তিনটি পক্ষ—ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবক। এর বাইরে একটা ব্যবস্থা বা কর্তৃপক্ষ। শিক্ষা কী—তার পুরোটা ছাত্রের বোঝার কথা নয়। অভিভাবকেরও নয় সেভাবে, কারণ শিক্ষা বুঝে কেউ সন্তান জন্ম দেন না। শিক্ষার একটা বড় অংশ বোঝেন শিক্ষকরা। কিন্তু তাদের কেউ হয়ে গেছেন চাকুরে। কেউ মত্ত সরাসরি রাজনীতিতে। শিক্ষা রেখে জাতীয়তাবাদ, মানবাধিকার, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, পরিবেশ, পুঁজিবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, ক্ষুধা, দারিদ্র্য, যুদ্ধ ইত্যাদি নিয়ে যারপরনাই ব্যস্ত তারা। নিজের ঘর শিক্ষার বিষয়ে তাদের ভাবার সময়ইবা কই? রাজনীতির মাঠের বড় দু’দলের ঘুঁটি হতে গিয়ে দুটি উচিত কথা বলার অবস্থান তারা বরবাদ করে দিয়েছেন। তা শিশুশ্রেণি থেকে উচ্চশিক্ষার স্তরে স্তরেও। এর মাঝ দিয়েই শিক্ষার মান পৃথিবীর মধ্যে তলানিতে পৌঁছে যায়। আর তখন সেখানকার আউটপুট নিয়ে জাতীয়তাবাদ, মানবাধিকার, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, পরিবেশ, পুঁজিবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, ক্ষুধা, দারিদ্র্য, যুদ্ধ কোনো আলাপই করা যায় না। দগদগে পুঁজ-রক্ত-বমি গায়ে-পায়ে মাড়িয়েও তারা তা দেখেন না। এসবের অনিবার্য পরিণতিতে শিক্ষা নিয়ে নানা উৎকট-বীভৎস কর্মকাণ্ড নাগরিক শ্লীলতার সীমা অতিক্রম করতে তেমন বাকি নেই। এবারের গরমের ব্যাপকতা রেকর্ড ভাঙা। তাপমাত্রা কোথাও কোথাও ৪৩ ডিগ্রিতে উঠেছে। তাপপ্রবাহে পুড়ছে মাঠঘাট, পথপ্রান্তর। তার ওপর বিদ্যুতের লোডশেডিং। হিটস্ট্রোকে একাধিক শিক্ষকের মৃত্যু। বহু শিক্ষার্থী আক্রান্ত। রাজধানীতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পাকা বিল্ডিংয়ে হলেও মফস্বল শহর ও গ্রামগঞ্জের স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার বেশিরভাগ বিল্ডিং সেমিপাকা ঘর। ওপরে টিনের প্রচণ্ড গরমে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের অস্থির অবস্থা। এ তাপপ্রবাহের মধ্যেই খুলে দেওয়া হয় স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা। এমন পরিস্থিতিতে হাইকোর্টের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশনা। এর জবাবে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধে এক ধরনের মানসিকতা তৈরি হচ্ছে। সবকিছুতেই কেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওপর আদালতের নির্দেশনা নিয়ে আসতে হবে—এ প্রশ্নও করেন তিনি? জেদাজেদি বা ছেলেখেলার বিষয় নয় এটি। হাইকোর্ট আর মন্ত্রণালয়ও ঠুনকা বিষয় নয়। কোনোটাকেই অমান্য করার জো নেই। আবার মান্য করার বাস্তবতাও নেই। কী এক বিতিকিচ্ছিরি দশা। নানান ফের। একেক জায়গার একেক নির্দেশ। রোদ-গরমের তীব্রতায় বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে বিটুমিন গলতে থাকায় এখন বলা হচ্ছে, এগুলোতে ব্যবহার করা বিটুমিনে গোলমাল ছিল, যা তীব্র গরম সহ্য করার উপযোগী নয়। তার আগপর্যন্ত এগুলোর গুণমানের প্রশংসা ছিল। উন্নয়নের তাল-তবলা তো বাজছিলই। তাপপ্রবাহ এখন একটা ভেজাল লাগিয়ে দিয়েছে। গরমের এ ভয়াবহতা না নামলে তা কোনো ব্যাপারই ছিল না। বিটুমিনের গলদও থেকে যেত অজানা। গরমের তোড়ে কয়েকজন শিক্ষকের মৃত্যু, শিক্ষার্থীর কাহিল দশার পর সার্কাসের মতো ধরা পড়ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ-খোলার মতো সিদ্ধান্তে অসারতা ও চিন্তার দৈন্য। পুরোটাই এ সেক্টরের মহোদয়দের মনমর্জি। কেন বন্ধ, কেন খোলা, কেনইবা খুলে আবার আংশিক বন্ধ-খোলার কানামাছি? এত প্যাঁচ-প্যাঁচাল কি জরুরি ছিল? তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে বন্ধ করে দেওয়া প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়ার শিডিউল তারিখ ২৮ এপ্রিল রোববার। এর আগের দিন শনিবার দুই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরগুলোর পক্ষ থেকে পৃথকভাবে এ শিডিউলের কথা মনে করিয়ে দেওয়া হয়। এর আগে, বন্ধ ঘোষণার সময় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রথমে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অ্যাসেমব্লি বন্ধের ঘোষণা দেয়। কিছুক্ষণ পর আলাদা বিজ্ঞপ্তি দেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। জানায়, চলমান তাপপ্রবাহে শিশুশিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা বিবেচনায় ২১ থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শিশুকল্যাণ ট্রাস্টের বিদ্যালয় ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর লার্নিং সেন্টারগুলো বন্ধ থাকবে। যথারীতি ২৮ এপ্রিল শুরু হয় শিক্ষা কার্যক্রম। পরিবর্তিত রোটায় সকাল থেকে শিক্ষার্থীদের আনাগোনায় মুখর হয়ে ওঠে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। কারও হাতে পানির বোতল, কারও হাতে তরল খাবার। সেগুলো সঙ্গে নিয়েই তীব্র গরমের মধ্যে নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়ার তোড়জোড় ছিল সবার। কিন্তু এক দিন ক্লাসের পর রাতে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ঢাকাসহ দেশের পাঁচটি জেলার সব মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সোমবার বন্ধ ঘোষণা জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ঢাকা ছাড়া বাকি জেলাগুলো হলো চুয়াডাঙ্গা, যশোর, খুলনা ও রাজশাহী। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এ সিদ্ধান্তের বিশেষ অংশে বলা হয়, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ (এসি) ব্যবস্থা আছে এমন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খোলা রাখা যাবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও আবহাওয়া অধিদপ্তরের সঙ্গে পরামর্শ করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এরপর রাতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আরেকটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত নেই। যেহেতু প্রাথমিকের সব ক্লাস সকালে হবে, তাই প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলাই থাকবে। নির্দেশনার এমন রকমফের এবং আদালতের বাইরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, শিক্ষা অধিদপ্তর, মাউশিসহ কত কী? স্থানীয় প্রশাসন তো আছেই। এত ফেরের জেরে মন্ত্রণালয়ের দেওয়া পাঁচ জেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশনাটি কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মেনেছে, কোনো কোনোটি মানেনি। অনেক প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের শোকজও করা হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা বা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়ে নীতিনির্ধারকদের মধ্যে সমন্বয়হীনতা ও বিশৃঙ্খলার মাঝেই আসে হাইকোর্টের রুলিং। শিক্ষার্থী আর অভিভাবকরা এখানে আস্ত বলির পাঁঠা। তাদের প্রশ্ন করার সুযোগ নেই—দেশে কয়টা স্কুলের ক্লাসরুমে এসি দূরে থাক, বৈদ্যুতিক পাখাও আছে? কয়টিতে ভবনের ওপর রড-সুরকিতে ঢালাই করা ছাদ আছে? সরকারের কি জানার বাইরে, দেশে টিনের চালের তলে বৈদ্যুতিক পাখাবিহীন পাঠশালায় লাখ লাখ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে? সেই টিনের চাল উত্তপ্ত হলে ক্লাসঘরগুলো যে আস্ত একেকটা লোহা গলানো রি-রোলিং মিল হয়ে ওঠে। কোনো শিক্ষার্থী বা শিক্ষক হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হলে তাৎক্ষণিক চিকিৎসার ব্যবস্থার প্রশ্ন করা তো গর্হিত। লেখক: সাংবাদিক-কলামিস্ট; ডেপুটি হেড অব নিউজ, বাংলাভিশন
০৪ মে, ২০২৪

চট্টগ্রামে মিতু হত্যা / বাবুল আক্তারকে জামিন দেননি হাইকোর্ট
স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের জামিন আবেদন উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। গতকাল সোমবার বিচারপতি মো. হাবিবুল গনি ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান মনির ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শাহ নেওয়াজ। পরে মুহাম্মদ শাহ নেওয়াজ বলেন, এ মামলায় মোট ৯৭ জন সাক্ষী আছে। এর মধ্যে ৪৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। এ পর্যায়ে আসামিকে জামিন দেওয়ার সুযোগ নেই। এই যুক্তিতে হাইকোর্ট তাকে জামিন দিতে চাননি। তখন তার আইনজীবীর আবেদন ফেরত চান। আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত জামিন আবেদনটি ‘নট প্রেসড রিজেক্ট’ করে আদেশ দিয়েছেন। ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরের নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হন মিতু। এ ঘটনা দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচিত হয়। ঘটনার সময় মিতুর স্বামী পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার অবস্থান করছিলেন ঢাকায়। পরে তিনি চট্টগ্রামে ফিরে পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয়দের আসামি করে হত্যা মামলা করেন। তবে মামলাটিতে স্ত্রী হত্যাকাণ্ডে স্বামী বাবুল আক্তারেরই সম্পৃক্ততা পায় পিবিআই। ২০২১ সালের ১২ মে আগের মামলাটিতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। একই দিন বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ থানায় দ্বিতীয় মামলাটি দায়ের করেন মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন। ওইদিনই মামলাটিতে বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায় পিবিআই। সেই থেকে কারাগারে রয়েছেন বাবুল। এদিকে, প্রথম মামলায় পিবিআইর দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ১৪ অক্টোবর নারাজির আবেদন করেন বাবুলের আইনজীবী। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একই বছরের ৩ নভেম্বর নারাজি ও পিবিআইর প্রতিবেদন খারিজ করে মামলাটি অধিকতর তদন্তের আদেশ দেন। এরপর দুটি মামলাই তদন্ত করতে থাকে পিবিআই। তবে পরবর্তী সময়ে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ২০২২ সালের ২৫ জানুয়ারি মিতুর বাবার করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়। এরপর একই বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর প্রথম মামলাটি অধিকতর তদন্ত শেষে বাবুলসহ সাতজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। ২০২৩ সালের ১৩ মার্চ আলোচিত মামলাটিতে বাবুল আক্তারসহ সাত আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। বতর্মানে মামলাটি সাক্ষ্য গ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।
৩০ এপ্রিল, ২০২৪

রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধান বিরোধী নয় : হাইকোর্ট
রাষ্ট্রধর্ম ইসলামকে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট আবেদন সরাসরি খারিজের রায় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। রায়ের পর্যবেক্ষণে হাইকোর্ট বলেছেন, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়। একই সঙ্গে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানের মৌলিক কাঠামোকেও আঘাত করে না। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিচারপতি নাইমা হায়দারের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বৃহত্তর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায়  দিয়েছেন। অন্য দুই বিচারপতি হলেন বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল।  রিট খারিজের সিদ্ধান্তের সঙ্গে তিন বিচারপতি একমত পোষণ করেছেন। তবে বেঞ্চের কনিষ্ঠ বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল রায়ে পৃথক পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন। বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি নাইমা হায়দারের লেখা পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, সংবিধানের ২(ক) অনুচ্ছেদে সন্নিবেশিত রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম শুধু সংবিধানের প্রস্তাবনায় উল্লিখিত শুধু মৌলিক নীতিগুলো অন্য কোনো বিধানের সাথেও অসঙ্গতিপূর্ণ নয়। সংবিধানে ইসলামকে  "রাষ্ট্রধর্ম মর্যাদা" প্রদান করা হলেও রাষ্ট্রীয়ভাবে রাজনৈতিক মর্যাদা প্রদানের বাধ্যবাধকতা নেই। অনুচ্ছেদ ২(ক) অবশ্যই সামগ্রিকভাবে পড়তে হবে এবং পড়লে এটা সুস্পষ্ট হয় যে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করার ধারণার সন্নিবেশ কোনভাবেই ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের সাংবিধানিক অধিকারকে খর্ব করে না। এটি সংবিধানের মৌলিক কাঠামোকেও প্রভাবিত করে না এবং সংবিধানে বাহুল্যতাও সৃষ্টি করে না। রায়ে বলা হয়েছে, তর্কিত সংশোধনী সংবিধানে সন্নিবেশিত রাষ্ট্রধর্ম ধর্মনিরপেক্ষতার ধারণাকেও প্রভাবিত করে না। অতএব, আমরা মনে করি তর্কিত সংশোধনীর মাধ্যমে অনুচ্ছেদ ২ক সন্নিবেশ করে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম হিসাবে স্বীকৃতি প্রদান সংবিধান বিরোধী নয়। বিষয়টিকে সহজ করার প্রয়াস হিসেবে, উপস্থাপিত যুক্তিতর্ক আমরা আমাদের রায়ে  আলোচনা করেছি। রিট আবেদনকারী এবং বিবাদী পক্ষের আইনজীবীগণের সুনির্দিষ্ট আইনগত যুক্তিসমূহ  আমরা রায়ে প্রকাশ  করা থেকে বিরত থেকেছি কারণ সাংবিধানিক বিষয় "সামগ্রিকভাবে " আলোচনা করা উচিত।উপরোক্ত আলোচনার আলোকে রুল  খারিজ করা হলো।  রায়ে তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ধর্মকে যে রাষ্ট্রধর্মের মর্যাদা দেয়া হয়েছে সে বিষয়টিও তুলে ধরেছেন। বিচারপতি কাজী রেজাউল হক রায়ের এ পর্যবেক্ষণের একমত প্রকাশ করেছেন। ২০১৬ সালের ২৮ মার্চ রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন সরাসরি খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। আদালত বলেন, এই রিটে আবেদনকারীর আবেদনের এখতিয়ার (লোকাস স্ট্যান্ডি) নেই। বিচারপতি নাঈমা হায়দার, বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ এ রায় দেন। ১৯৮৮ সালে অষ্টম সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ইসলামকে সংযুক্ত করেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। সংবিধানে ২ (ক) অনুচ্ছেদ যুক্ত করে বলা হয়, প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম হবে ইসলাম, তবে অন্যান্য ধর্মও প্রজাতন্ত্রে শান্তিতে পালন করা যাবে। তখন স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ কমিটির পক্ষে ওই বিধানের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছিলেন ১৫ জন বরেণ্য ব্যক্তি। তাদের মধ্যে অনেকেই মারা গেছেন।  তারা হলেন- সাবেক প্রধান বিচারপতি কামালউদ্দিন হোসেন, বিচারপতি দেবেশ চন্দ্র ভট্টাচার্য, বিচারপতি কে এম সোবহান, কবি সুফিয়া কামাল, অধ্যাপক খান সারওয়ার মুরশিদ, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ, অধ্যাপক কবীর চৌধুরী, শিল্পী কলিম শরাফী, অধ্যাপক মোশাররফ হোসেন ও সাংবাদিক ফয়েজ আহমদ,অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, সেক্টর কমান্ডার সি আর দত্ত, লেখক বদরুদ্দীন উমর, অধ্যাপক বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর ও অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। রিট আবেদনের ২৩ বছর পর ২০১১ সালের ৮ জুন বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল দেন।  ওই রুল জারির প্রায় পাঁচ বছর পর ২০১৬ সালের ৮ মার্চ এই রুল শুনানির জন্য আদালতে ওঠে। ওই দিন আদালত অ্যামিকাস কিউরি নিয়োগের আদেশটি প্রত্যাহার করেন। পরে ২০১৬ সালের ২৮ মার্চ রিটটি সরাসরি খারিজ করে দেন আদালত।
২৬ এপ্রিল, ২০২৪

কক্সবাজারে কত রোহিঙ্গা ভোটার হয়েছে জানতে চান হাইকোর্ট
কক্সবাজারে কতজন রোহিঙ্গাকে ভোটার করা হয়েছে, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্টে। বিষয়টি তদন্ত করে ৬ জুনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে কক্সবাজারের ঈদগাঁও ইউনিয়নের ৩৮ রোহিঙ্গাকে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ-সংক্রান্ত রিটের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের বেঞ্চ গতকাল বুধবার এই আদেশ দেন। একই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের ভোটার করা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাস গুপ্ত। রোহিঙ্গাদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ না দিয়েই ঈদগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তপশিল প্রকাশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত মঙ্গলবার রিট করেন ওই ইউনিয়নের বাসিন্দা মোহাম্মদ হামিদ। অ্যাডভোকেট ছিদ্দিক উল্লাহ জানান, ঈদগাঁও ইউনিয়নের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়ে বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিয়েছে ৩৮ রোহিঙ্গা। তাদের তালিকা যুক্ত করে রিট আবেদন করা হয়। এ ছাড়া একই ইউনিয়নে কয়েকশ (সাড়ে তিনশ) রোহিঙ্গা বাংলাদেশের নাগরিক হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে তাদের নাগরিকত্ব বাদ দিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ না করা পর্যন্ত ওই ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন স্থগিত রাখার আর্জি জানানো হয়েছে রিটে।
২৫ এপ্রিল, ২০২৪

রোহিঙ্গা ভোটারদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট
নির্বাচন কমিশনের চুক্তিবদ্ধ ডাটা এন্ট্রি অপারেটরদের সহযোগিতায় এনআইডি কার্ড বানিয়ে নিচ্ছে রোহিঙ্গারা। মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তাদের এনআইডি কার্ড তৈরি করে দেওয়ার জন্য চুক্তিবদ্ধ হচ্ছে একটি চক্র। এমতবস্থায় কক্সবাজার জেলায় কত রোহিঙ্গাকে ভোটার করা হয়েছে তার তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট।  বুধবার (২৪ এপ্রিল) বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আগামী ৬ জুনের মধ্যে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক, নির্বাচন কমিশনসহ তিনজনকে এ তালিকা আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে কক্সবাজারের ঈদগাহ ইউনিয়নের ৩৮ রোহিঙ্গাকে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এর আগে গতকাল ২৩ এপ্রিল স্থানীয় ভোটার মো. হামিদুর রহমানের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া একটি রিট দায়ের করেন। রিটে মিয়ানমারের রাখাইন থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা কতজন রোহিঙ্গা কক্সবাজারে নাগরিকত্ব পেয়ে ভোটার হয়েছেন তা খুঁজে বের করতে উচ্চপর্যায়ের অনুসন্ধান কমিটি করতে সরকারের সংশ্লিষ্টাদের প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়। রিটকারী আইনজীবী বলেন, কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁও ইউনিয়নের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়ে বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিয়েছেন ৪০ রোহিঙ্গা। তাদের তালিকা যুক্ত করে রিট আবেদন করা হয়েছে। এরআগে একই ইউনিয়নে কয়েকশ (সাড়ে তিনশ) রোহিঙ্গা নাগরিক হয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে।
২৪ এপ্রিল, ২০২৪

প্রেমে ব্যর্থ হয়ে আত্মহত্যা করলে প্রেমিকা দায়ী নন : দিল্লি হাইকোর্ট
প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার ফলে যদি কোনো প্রেমিক বিষাদগ্রস্ত হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়, সেজন্য প্রেমিকা দায়ী থাকবেন না। এক্ষেত্রে প্রেমিকার বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মামলা দায়ের করা যাবে না। বুধবার এমনই এক রায় দিয়েছেন দিল্লি হাইকোর্ট।  আদালত বলেছে, দুর্বল ও ভঙ্গুর মানসিকতার জন্য যদি একজন পুরুষ এমন ভুল সিদ্ধান্ত নেন তাহলে প্রেমিকাকে দায়ী করা যাবে না।  আত্মহত্যার প্ররোচণায় দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারপূর্ব জামিন আবেদন নিয়ে শুনানিকালে এমন পর্যবেক্ষণ দেয় আদালত। বিচারক অমিত মহাজন আরও বলেন, একজন শিক্ষার্থী যদি পরিক্ষায় খারাপ করার কারণে আত্মহত্যা করে তার জন্য তো কাউকে দোষারোপ করা যায় না। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার।  এর আগে এমনই রায় দিয়েছিল ছত্রিশগড়ের একটি আদালত।  একজন নারী ও তার এক বন্ধুর জন্য আগাম জামিনের শুনানিকালে দিল্লি হাইকোর্ট আজ এই মন্তব্য করেন। ওই দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাদের উসকানিতে ২০২৩ সালে একজন পুরুষ আত্মহত্যা করেছেন। নিহত ব্যক্তির পিতা থানায় অভিযোগে বলেছেন, আগে থেকেই তার ছেলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল ওই যুবতীর। একই সঙ্গে তিনি অন্য এক যুবকের সঙ্গে প্রেম করতে থাকেন।  নিহত ব্যক্তির পিতা আরও অভিযোগ করেন, ওই যুবতীর দ্বিতীয় প্রেমিক প্রথম প্রেমিকের কাছে জানায়, যুবতীর সঙ্গে তার শারীরিক সম্পর্ক আছে এবং তারা খুব তাড়াতাড়িই বিয়ে করতে যাচ্ছেন। এ কথা শুনে প্রথম প্রেমিক আত্মহত্যা করেন। তার মা তার রুম থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করেন। সেখানে একটি আত্মহত্যার চিরকুট পাওয়া যায়।  চিরকুটে তিনি লিখেন, ওই যুবতী ও তার দ্বিতীয় প্রেমিকের কারণে আত্মহত্যা করেছেন। আদালত এটা আমলে নিয়ে বলেছে, চিরকুটে নাম উল্লেখ করে গেছেন মৃত ব্যক্তি। কিন্তু তার অর্থ এই নয়, আত্মহত্যায় প্ররোচণা দিয়েছেন তিনি। 
১৮ এপ্রিল, ২০২৪

হাইকোর্ট ক্রসিংয়ে নির্মাণ হচ্ছে আইল্যান্ড  
পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে সড়কে নির্বিঘ্নে যানবাহন চলাচলের জন্য হাইকোর্ট ক্রসিংয়ের বামের লেনে আইল্যান্ড নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ও মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ। গতকাল শুক্রবার (৩০ মার্চ) ট্র্যাফিক-রমনা বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার (ট্র্যাফিক-শাহবাগ জোন) শেখ মুত্তাজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।   তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের মাজার গেটের সামনে থেকে বামের লেনে গাড়ি চলাচলে শৃঙ্খলা ফেরানোর লক্ষ্যে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আইল্যান্ড নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, পবিত্র মাহে রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সড়কে যানবাহনের চাপ বেড়ে যায়। এ জন্য ডিএমপির ট্র্যাফিক বিভাগের উদ্যোগে রাস্তার ছোটখাটো সংস্কারকাজ করে শৃঙ্খলা ফেরাতে কাজ করা হচ্ছে। কাজটি সিটি করপোরেশনের হলেও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ঈদে ঘরে ফেরা মানুষের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতেই এই উদ্যোগ নিয়েছে। হাইকোর্ট ক্রসিং মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর চলাচল এবং সচিবালয় ও পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে যাতায়াতের রুট হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সুপ্রিম কোর্টের মাজার গেট থেকে বিচারপতি, আইনজীবী ও জনসাধারণের প্রচুর গাড়ি ও রিকশা উল্টাে দিক দিয়ে বের হয়ে এই ক্রসিংয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। আইল্যান্ড নির্মাণ হলে এ সড়কে নির্বিঘ্নে যানবাহন চলাচল করতে পারবে। 
৩০ মার্চ, ২০২৪

রেস্তোরাঁয় অভিযান চালানোর বিষয়ে আদেশ দিলেন হাইকোর্ট
পিক অ্যান্ড চুজ নয়, অনুমোদনহীন সব রেস্তোরাঁয় অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে বলে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।  বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) বিচারপতি কামরুল কাদেরের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ আজ এ আদেশ দেন। শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন অভিযান পরিচালনাকারী রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। আদালত তার কথা শোনেন। পরে রেস্তোরাঁ খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে এ আদেশ দেন। একইসঙ্গে, ধানমন্ডির সাত মসজিদ রোডের গাউছিয়া টুইন পিক টাওয়ারে থাকা অনুমোদনহীন ১৩ রেস্টুরেন্ট সিলগালাই থাকবে বলে আদেশ দেন হাইকোর্ট।  রাজউকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইমাম হাসান বলেন, আদালত রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের কথা শুনেছেন, রেস্তোরাঁ খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে আইন অনুযায়ী অভিযান চালু রাখতে বলেছেন। এর আগে বেইলি রোড ট্রাজেডির পর বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে অভিযানে গ্রেপ্তারকৃত রেস্তোরাঁ শ্রমিকদের তালিকা চেয়েছিলেন হাইকোর্টের অপর একটি বেঞ্চ। একইসঙ্গে, শ্রমিকদের গ্রেপ্তার করা কেন অবৈধ হবে না, তা চেয়েও রুল জারি করেন আদালত। ৪ সপ্তাহের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে বিবাদিদের। প্রসঙ্গত, গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রাতে গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে আগুন লাগে। এ ঘটনায় মারা যায় ৪৬ জন। এরপর রাজধানীর বিভিন্ন রেস্তোঁরা ও ভবনে অভিযান চালায় রাজউক, পুলিশ ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। অভিযানে অনেক রেস্তোরাঁ সিলগালা ও জরিমানা করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় গত ৪ মার্চ রাজধানীর ধানমন্ডির সাত মসজিদ সড়কে গাউসিয়া টুইন পিক টাওয়ারে অনুমোদনহীন ও নকশা বহির্ভূতভাবে নির্মাণ করা ১৩টি রেস্তোরাঁ সিলগালা করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)।
২১ মার্চ, ২০২৪

সাভারের গজাইরার বিলে আবাসন নয় : হাইকোর্ট
ঢাকার সাভার উপজেলার অন্তর্গত ইয়ারপুর ইউনিয়নে ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যানে (ড্যাপ) মূল বন্যাপ্রবাহ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত ইছরকান্দি, মনোসন্তোষ ও সাতাইশকান্দি মৌজায় উত্তরণ প্রোপার্টিজ লিমিটেড ও অ্যাচিভ করপোরেশন নামক আবাসন কোম্পানির অননুমোদিত আবাসন প্রকল্পের জন্য মাটি ভরাট, প্লট বিক্রয়সহ সব কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন মহামান্য আদালত। একইসঙ্গে আদালত প্রদত্ত উল্লিখিত নির্দেশ প্রতিপালন সংবলিত প্রতিবেদন আদালতে দাখিলের জন্য রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং ঢাকা জেলার জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দিয়েছেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) কর্তৃক দায়েরকৃত একটি জনস্বার্থমূলক মামলার প্রাথমিক শুনানি শেষে সোমবার (১৮ মার্চ) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম এবং বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বিভাগের ডিভিশন বেঞ্চ এ আদেশ প্রদান করেন। অন্তর্বর্তীকালীন এ আদেশের পাশাপাশি মহামান্য আদালত উত্তরণ প্রোপার্টিজ লিমিটেড এবং অ্যাচিভ করপোরেশন নামক আবাসন কোম্পানি কর্তৃক মাটি ভরাট থেকে ইয়ারপুর ইউনিয়নের ইছরকান্দি, মনোসন্তোষ ও সাতাইশকান্দি মৌজায় অবস্থিত মূল বন্যাপ্রবাহ এলাকা (স্থানীয়ভাবে ‘গজাইরার বিল’ নামে পরিচিতি) রক্ষায় বিবাদীগণের ব্যর্থতা সংবিধান ও দেশে প্রচলিত আইনের পরিপন্থি হওয়ায় কেন তা অবৈধ, আইনবহির্ভূত ও জনস্বার্থবিরোধী ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে বিবাদীগণের ওপর রুল জারি করেছেন। মহামান্য আদালত এ রুলে আইন, বিধি ও পরিকল্পনা অনুযায়ী উল্লিখিত মূল বন্যাপ্রবাহ এলাকা পুনরুদ্ধার ও রক্ষার নির্দেশ কেন প্রদান করা হবে না তাও বিবাদীগণের কাছে জানতে চেয়েছেন।  উল্লেখ্য, ঢাকা জেলাধীন সাভার উপজেলাস্থ ইয়ারপুর ইউনিয়নের ইছরকান্দি, মনোসন্তোষ ও সাতাইশকান্দি মৌজায় প্রায় ৬০০ একর আয়তনের একটি বিল রয়েছে যা স্থানীয়ভাবে ‘গজাইরার’ বিল নামে পরিচিত। বিলটির দৈর্ঘ প্রায় ১০ কিলোমিটার ও প্রস্থ ৪ কিলোমিটার। এলাকাটি রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যানে (ড্যাব) মূল বন্যাপ্রবাহ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত রয়েছে। বিলটি বর্ষাকালে পানিতে পরিপূর্ণ হয়ে দৃশ্যত বিশাল এক সাগরে রূপ নেয়। এখনও এ বিলে দেশীয় প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়। মৎস্য উৎপাদনের পাশপাশি শীতকালে ফসল ও সবজি চাষ হয় এ বিলে। বিলটির ওপর নির্ভরশীল প্রায় ১৪টি গ্রামের কৃষক ও মৎস্যজীবী। বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী জীববৈচিত্র্যে ভরপুর এ বিল বর্তমানে নানামুখী হুমকির সম্মুখীন। নির্বিচারে এ বিলের জলাশয় ও কৃষি উপযোগী নিচু জমি ভরাট করা হচ্ছে আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য। ইতোমধ্যে উত্তরণ প্রোপার্টিজ লিমিটেড নামক আবাসন কোম্পানি বিলের ইছরকান্দি, মনোসন্তোষ ও সাতাইশকান্দি মৌজায় প্রায় ২৫০ বিঘা এবং অ্যাচিভ করপোরেশন বিলের সাতাইশকান্দি মৌজায় প্রায় ২২০ বিঘা উর্বর জমিতে কোম্পানির সাইনবোর্ড স্থাপন করেছে যার কোনোটিরই নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বৈধ অনুমোদন।   জলাশয় রক্ষায় বিদ্যমান আইনের বিধান লঙ্ঘন করে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া উত্তরণ প্রোপার্টিজ লিমিটেড ও অ্যাচিভ করপোরেশন নামক আবাসন কোম্পানি কর্তৃক জলাশয় ভরাট বন্ধে ও বিলটি সংরক্ষণে বেলা উল্লিখিত মামলাটি দায়ের করে।   মামলার বিবাদীরা হলেন- গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ঢাকা জেলার জেলা প্রশাসক, ঢাকার পুলিশ সুপার, রাজউকের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ, পরিবেশ অধিদপ্তর, ঢাকা জেলার উপপরিচালক, সাভার উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উত্তরণ প্রোপার্টিজ লিমিটেড এবং অ্যাচিভ করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। বেলা’র পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আশরাফ আলী, বার-এট-ল’ এবং তাকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট এস হাসানুল বান্না। রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
১৯ মার্চ, ২০২৪
X