হুমায়ুন কবির, সাভার
প্রকাশ : ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম
আপডেট : ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:০১ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা বিচারের দাবি

নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা বিচারের দাবি

২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল—এক ভয়াবহ দিন, যেদিন সাভারের রানা প্লাজার ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে প্রাণ হারান ১ হাজার ১৩৮ জন শ্রমিক। সেই দিনটির ১২ বছর পূর্ণ হলো গতকাল বৃহস্পতিবার। অথচ এত বছর পেরিয়ে গেলেও ঘটনার বিচার এখনো অসম্পূর্ণ, পুনর্বাসনও হয়নি সুষ্ঠুভাবে। গতকাল সকাল থেকে রানা প্লাজার ধ্বংসাবশেষের সামনে জড়ো হন নিহতদের স্বজন, আহত শ্রমিক ও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা। অস্থায়ী বেদিতে ফুল দিয়ে তারা শ্রদ্ধা জানান। চারপাশে ধ্বনিত হয়—‘দায়ীদের বিচার চাই, ক্ষতিপূরণ চাই’ স্লোগান।

ইয়ানুর বেগম রানা প্লাজার ষষ্ঠ তলায় কাজ করতেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘১২ বছর পার হইলো, এখনো ঠিকমতো চিকিৎসা পাই না। সরকার শুধু আশ্বাস দেয়, কাজ করে না।’ শ্রমিক সংগঠনগুলো দাবি জানিয়েছে—রানা প্লাজার সামনে স্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ, ২৪ এপ্রিলকে রাষ্ট্রীয় শোক দিবস ঘোষণাসহ আইএলও কনভেনশন ১২১ অনুযায়ী পূর্ণাঙ্গ ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশ গার্মেন্ট ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইন সম্পাদক খাইরুল মামুন বলেন, ‘আহত শ্রমিকরা এখনো রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন চিকিৎসার জন্য। এই অবহেলার জবাব চাই।’

এনসিপির সমাবেশ: বেলা ১১টায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শ্রম উইং আয়োজন করে পৃথক এক সমাবেশ। রানা প্লাজার সামনে আয়োজিত ওই সমাবেশে নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়ার আয়োজন করা হয়। সমাবেশে এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘রানা প্লাজার ভবনে ফাটল থাকলেও, রাজনৈতিক দাপটে তা উপেক্ষা করে শ্রমিকদের জীবনের ঝুঁকিতে কাজে বাধ্য করা হয়েছিল। বিদেশি সংস্থাগুলো উদ্ধারকাজে আগ্রহ দেখালেও সরকারের পক্ষ থেকে অনুমতি না দেওয়ার পেছনে ছিল ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দাবি, দায়ীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে। একই সঙ্গে শ্রমিকদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।’ এনসিপির শ্রমিক উইংয়ের প্রধান সমন্বয়কারী মাজহারুল ইসলাম, যুগ্ম সদস্য সচিব রিফাত রশীদ, আব্দুল্লাহ আল আমিন, জয়নাল আবেদিন শিশির, মেহেরাব সিফাত প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

শ্রম সচিবের শ্রদ্ধা, বিচারের আশ্বাস: দুপুরে নিহতদের স্মরণে শ্রদ্ধা জানান শ্রম সচিব এএইচএম সফিকুজ্জামান। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘রানা প্লাজার ঘটনায় দোষীদের বিচারে এরই মধ্যে অগ্রগতি হয়েছে। আশা করছি আগামী বছর এই সময়ের আগেই বড় একটি অগ্রগতি দেখানো সম্ভব হবে। আহত শ্রমিকদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের বিষয়েও সরকার নতুন পরিকল্পনা নিচ্ছে।’

এক যুগ পেরিয়ে গেলেও রানা প্লাজার ট্র্যাজেডি এখনো জাতীয় বিবেককে নাড়া দেয়। নিহত ও আহতদের ন্যায়বিচার এবং পূর্ণ পুনর্বাসন না হওয়া পর্যন্ত এই ট্র্যাজেডির ক্ষত শুকাবে না—এমনটাই বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ব্যস্ততার মাঝেও মানবিকতার আলো ছড়াচ্ছেন চট্টগ্রামের ডিসি

গায়ের রং কালো হওয়ায় ট্রলের শিকার নবদম্পতি

৩৫ ফুট গভীর নলকূপের পাইপে আটকা দুই বছরের শিশু

রংপুর-১ আসনে এনসিপির প্রার্থী জাপার ছাত্র সংগঠনের সাবেক সভাপতি

যে ৩ সময়ে ঘুমাতে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে হাদিসে 

৬ নেতার বিষয়ে সিদ্ধান্ত বদলাল বিএনপি

স্বাধীনতার সুফল আমরা ঘরে তুলতে ব্যর্থ হয়েছি : মামুনুল হক

চাপে থাকা আলোনসোকে অদ্ভুত পরামর্শ দিলেন গার্দিওলা

হলিউডের নতুন জুটি

শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার শিক্ষক রিমান্ডে

১০

হাতিয়ার মানুষ না চাইলে নির্বাচনে অংশ নেব না : হান্নান মাসউদ 

১১

চট্টগ্রাম বন্দর অভিমুখে স্কপের মিছিল

১২

আসিফ ও মাহফুজের পদত্যাগ কার্যকর যখন থেকে

১৩

পদত্যাগের পর আসিফ-মাহফুজকে যে পরামর্শ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা

১৪

ভারত বধের স্বীকৃতি হিসেবে ৭ লাখ টাকা করে পেলেন হামজারা

১৫

নবীজিকে (সা.) স্বপ্নে দেখার ৩ আমল

১৬

হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে সুখবর দিলেন ধর্ম উপদেষ্টা

১৭

পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির আহ্বান সেনাপ্রধানের

১৮

বিএনপিতে যোগ দেওয়া সেলিমকে নিয়ে এলডিপি নেতাদের অভিযোগ

১৯

কারওয়ানবাজারে সড়ক অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ

২০
X