নওগাঁ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৭ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:০৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

মৃত্যু ছাড়া মানুষের সেফ এক্সিট নেই : সারজিস আলম

নওগাঁ সদর উপজেলা পরিষদ হলরুমে সমন্বয় সভায় সারজিস আলমসহ অন্যরা। ছবি : কালবেলা
নওগাঁ সদর উপজেলা পরিষদ হলরুমে সমন্বয় সভায় সারজিস আলমসহ অন্যরা। ছবি : কালবেলা

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, কোথায় সেফ এক্সিট? সেফ এক্সিট তো একমাত্র মৃত্যু, মৃত্যু ছাড়া মানুষের সেফ এক্সিট নেই। দেশ থেকে পালিয়ে যাবেন, ওখানেও আপনাকে মানুষ আটকাবে।

মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে নওগাঁ সদর উপজেলা পরিষদ হলরুমে এনসিপির জেলা ও উপজেলা সমন্বয় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

সারজিস আলম বলেন, কিছু উপদেষ্টাদের মধ্যে দায়সারা কর্মকাণ্ড দেখতে পাচ্ছি। তারা কোনোভাবে দায়সারা দায়িত্ব পালন করে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এক্সিট নিতে পারলেই যেন বেঁচে যান। দেশে থাকুক আর দেশের বাইরেই থাকুক। এ দায়সারা দায়িত্ব নেওয়ার জন্য অভ্যুত্থান পরবর্তী একটি সরকার কাজ করতে পারে না।

তিনি আরও বলেন, তারা শহীদের রক্তের ওপরে দাঁড়িয়ে আছে। এখন যদি জীবনের জন্য ভয় করে তাহলে তো তাদের দায়িত্ব নেওয়া উচিত ছিল না। তারা যদি এমনটা করে থাকে তাহলে দেশের মানুষের সামনে মুখ দেখাতে পারবে না। তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।

এনসিপির এ নেতা বলেন, যেহেতু প্রতীক নিয়ে আইনি বাধা নেই সুতরাং এনসিপি আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে শাপলা প্রতীক নিয়েই অংশগ্রহণ করবে। আমরা নির্বাচন কমিশন থেকে প্রতীকের ব্যাপারে পজিটিভ সাড়া পাচ্ছি। আশা করি নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে আস্থা ধরে রাখার কাজ করবে।

সারজিস বলেন, এনসিপি এককভাবে নির্বাচনে যাবে নাকি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জোটবদ্ধ হবে, সে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা চলছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে যখন অনেকগুলো রাজনৈতিক দল একই পথে হাঁটবে, তখন দাবি, চিন্তাভাবনা, দেশ এবং জনগণের স্বার্থে কাজ করার বিষয়গুলো মিলে যায়, তখন হতেই পারে জনগণের হয়ে এক সঙ্গে কোনো দলের সঙ্গে নির্বাচনে যাওয়ার। এনসিপি এ বিষয়গুলোকে পজিটিভভাবেই দেখছে। কিন্তু এনসিপি থেকে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের যে কোনো ভার্সন বাংলাদেশে তৈরির অপচেষ্টা মেনে নেওয়া হবে না। ভার্সন কাকে নিয়ে বানাবেন? আওয়ামী লীগের ওই মন্ত্রী, এমপি, জেলা, উপজেলার যারা সভাপতি সেক্রেটারি ছিল, বড় বড় যারা চেয়ারম্যান ছিল তাদের নিয়ে? আপনি তো আর ইউনিয়নের মেম্বারকে আওয়ামী লীগের সভাপতি বানিয়ে দেবেন না। এরা প্রত্যেকেই আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী, এরা প্রত্যেকেই ফ্যাসিস্ট কাঠামোর সঙ্গে জড়িত।

এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক বলেন, সুতরাং তাদের মধ্যে মন্দের ভালো খোঁজা, যারা একেক জন হাসিনাকে ফ্যাসিস্ট হাসিনা বানাল, সেই সুযোগ তাদের দেওয়া হবে না। বাংলাদেশের ভালো মানুষরা একত্রিত হয়ে যদি আরেকটি রাজনৈতিক দল গঠন করতে চায় করুক, এতে আমাদের কোনো সমস্যা থাকবে না।

সম্প্রীতি একটি গণমাধ্যমে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেওয়া সাক্ষাৎকার প্রসঙ্গে সারজিস আলম বলেন, সাক্ষাৎকারে উনি বলেছেন, ওনার ভাইকে দেশে রেখে এসেছিলেন, সেই ভাইকে দেশে গিয়ে দেখতে পারবেন না, ওনার যেই ঘরে সারা জীবনের স্মৃতি সেই ঘরকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। উনি যে সুস্থ মাকে দেখে গিয়েছিলেন, ওই সুস্থ মাকে অসুস্থ করে ফেলা হয়েছে এবং বিভিন্নভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। এ প্রত্যেকটা বিষয়ের সঙ্গে আমাদের সহমর্মিতা থাকবে। আগামীর বাংলাদেশে আমরা আর এ ধরনের ঘটনা প্রত্যাশা করি না।

তিনি আরও বলেন, আমাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে, এই যে ব্যথা বেদনা, আমরা খুব মনোযোগ দিয়ে শুনেছি, ওনার এরকম হাজার হাজার নেতাকর্মীর সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটানো হয়েছে। তাদের ব্যথা বেদনাগুলো যেন স্থানীয় পর্যায়ে প্রকাশ হয় এবং যারা করেছে তাদের বিচার হয়। এগুলো কে করেছে? আওয়ামী লীগ করেছে। সুতরাং স্থানীয় পর্যায়ে আওয়ামী লীগের দোসরদের অর্থের বিনিময়ে অথবা কোনো সুযোগ-সুবিধার বিনিময় যেন আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া না হয়। বিএনপির সেন্ট্রাল কমান্ড থেকে শুরু করে স্থানীয় পর্যায়ে পর্যন্ত তারা যেন এ বিষয়টিতে কঠোর থাকে।

সারজিস আলম বলেন, আবার যদি আওয়ামী লীগ কোনোদিন ফিরে আসে তারা কেউ মাফ পাবে না। সুতরাং আমরা এ আহ্বানটুকু জানাই। তার ব্যথার সঙ্গে আমরাও সমব্যথিত। আমরা চাই ওই খুনিরা আর যেন কোনোভাবেই দেশে আশ্রিত না হয়।

সমন্বয় সভায় জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন, রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান ইমনসহ এনসিপির জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

জোট করলেও দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান চ্যালেঞ্জ করে রিট 

শেখ হাসিনা প্রতারণা করেছেন, দুর্নীতিবাজ কর্মচারীদের পুরস্কৃত করেছেন : বিচারক

সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জে ‘সিন্ডিকেট’, বদলির খেলা চলছে নীরবে

সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটির দ্বিতীয় সমাবর্তন ২৮ ডিসেম্বর

শীতের সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুরের অলিগলিতে পিঠা বিক্রির ধুম

বিপিএলে দল পেয়েই বড় চমক দেখাল নোয়াখালী

বিশ্ববাজারে কমলো স্বর্ণের দাম

প্লট দুর্নীতি / সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদের ১৮ বছরের কারাদণ্ড

দেশের চার সমুদ্রবন্দরে সতর্কসংকেত

নগদে ফিরে এলে বা নতুন অ্যাকাউন্ট খুললেই ক্যাশব্যাকসহ সারপ্রাইজ গিফট

১০

শেখ হাসিনার সম্পদের প্রতি লোভ আছে : বিচারক

১১

র‍্যাগিংয়ের দায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থী বহিষ্কার, ৯ পরিবারকে তলব

১২

সৎছেলে নাগাকে নিয়ে যা বললেন অমলা

১৩

দুই দিনে শেষ অ্যাশেজ: পিচকে ‘খুব ভালো’ রেটিং আইসিসির

১৪

যে ৬ সহজ কৌশল রক্ত পরীক্ষায় সুচের ভয় কমাতে সাহায্য করবে

১৫

ইমরান খানের মৃত্যুর গুজব, যা জানাল কারা কর্তৃপক্ষ

১৬

আবারও মালাইকার প্রেমের গুঞ্জন

১৭

প্লট দুর্নীতি মামলায় জয়-পুতুলের ৫ বছর কারাদণ্ড   

১৮

প্লট দুর্নীতির মামলায় গণপূর্তের সাইফুলকে খালাস

১৯

মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ নওগাঁ পৌরবাসী, বেড়েছে ডেঙ্গু রোগী

২০
X