মশা নিধনে এবার প্রায় ৪৭ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। মশা নিধনে ব্যবহৃত কীটনাশক ও যন্ত্রপাতি কেনা ও পরিবহনে এই টাকা ব্যয় করা হবে। এ ছাড়া পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩০ কোটি টাকা।
সোমবার (৩১ জুলাই) বিকেলে ঢাকা দক্ষিণ সিটির নগর ভবনে মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বরাদ্দের এ বিষয়টি জানানো হয়। ডিএসসিসির ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন মেয়র ব্যরিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
ঢাকা দক্ষিণ সিটির গত ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে মশক নিয়ন্ত্রণ বাবদ মোট ৩০ কোটি ৭৫ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছিল। সংশোধিত বাজেট অনুযায়ী এ খাতে ব্যয় হয় ৩১ কোটি ১০ লাখ টাকা। এর মধ্যে মশক নিধনে ব্যবহৃত কীটনাশকে ২৯ কোটি ৩২ লাখ টাকা ও ফগার, হুইল, স্প্রে মেশিন, পরিবহন খাতে ব্যয় হয় এক কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এ ছাড়া মশক যন্ত্রপাতি ক্রয়ে দুই কোটি বরাদ্দ রাখলেও ব্যয় হয় মাত্র তিন লাখ টাকা।
এবারের বাজেটে মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের মধ্যে মশার ওষুধ কেনার পেছনে বরাদ্দ ৩৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা। আর ৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে ফগার, হুইল, স্প্রে মেশিন, পরিবহন খাতে। মশক যন্ত্রপাতি ক্রয়ে বরাদ্দ রয়েছে সাড়ে চার কোটি টাকা।
এদিকে খাল, জলাশয়, নর্দমা ইত্যাদি পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩০ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে এ খাতে ১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হলেও ব্যয় হয়েছে ২৯ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
সংবাদ সম্মেলেন মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ঢাকাবাসীর জীবনযাত্রায় মশক বিশেষত এডিস মশার বিস্তার অন্যতম এক প্রতিবন্ধকতা। তাই, দায়িত্বভার গ্রহণের পর মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম ও ব্যবস্থাপনায় আমরা আমূল পরিবর্তন এনেছি। শুরু করা হয়েছে বছরব্যাপী সমন্বিত মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম। নতুন এ কার্যক্রমের আওতায় পর্যাপ্ত লোকবল নিয়োগ, মানসম্পন্ন কীটনাশক ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি জন্য ও মাঠপর্যায়ে সরবরাহ নিশ্চিত করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমার দায়িত্বভার গ্রহণের পূর্বে করপোরেশনের শুধু পুরাতন ৫৭টি ওয়ার্ডেই মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম পরিচালিত হতো। তা ছাড়া, সে সময় প্রতি ওয়ার্ডে গড়ে মাত্র চারজন মশককর্মী এবং প্রতি ৪/৫টি ওয়ার্ডের জন্য মাত্র একজন করে মশক সুপারভাইজার নিয়োজিত ছিল। দায়িত্বভার গ্রহণ করেই মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম জোরদার করার লক্ষ্যে সাত শতাধিক মশককর্মী নিয়োগ দিয়েছি। বর্তমানে প্রতি ওয়ার্ডে ১৩ জন মশককর্মী ও একজন করে মশক সুপারভাইজার অর্থাৎ প্রতি ওয়ার্ডে মোট ১৪ জন করে ৭৫টি ওয়ার্ডে সর্বমোট এক হাজার ৫০ জন কর্মী মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
মেয়র বলেন, মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম গতিশীল করার লক্ষে বিগত তিন বছরে আমরা এডাল্টিসাইডিং কর্মযজ্ঞে ৩৭৫টি নতুন ফগার মেশিন লার্ভিসাইডিং কর্মকারে ৪০০টি নতুন হস্ত পরিচালিত যন্ত্র এবং কিউলেক্স মশক নিয়ন্ত্রণ কাজে ব্যবহারের জন্য ২৫টি নতুন হুইল মেশিন ক্রয় করেছি। এখানে একটি বিষয় উল্লেখ করতে চাই, আমার দায়িত্বভার গ্রহণের পূর্বে বড় আকারের জলাশয়ে ও পতিত ভূমিতে মশক নিয়ন্ত্রণে বিশেষত কিউলেক্স মশকের বংশ বৃদ্ধি রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখা এই হুইল মেশিনের সংখ্যা ছিল মাত্র ১৭টি। নতুন ২৫টি মেশিনসহ বর্তমানে মোট ৪২টি হুইল মেশিন মাঠপর্যায়ে মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে ব্যবহৃত হচ্ছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য বাজেট ঘোষণা করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। এই অর্থবছরে ৬ হাজার ৭৫১ কোটি ৫৬ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন : ‘আন্দোলন দেখলে ভয় পাবেন না’
বাজেট ঘোষণা অনুষ্ঠানে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান, বিভিন্ন ওয়ার্ড কাউন্সিলর, করপোরেশনের বিভাগীয় প্রধান এবং আঞ্চলিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন