ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে বর্ষার আগেই নড়েচড়ে বসেছে নাসিক
গত মৌসুমে নারায়ণগঞ্জবাসীকে ভুগিয়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। মারাও গেছেন কয়েকজন। এবার বর্ষা আসার আগেই নড়েচড়ে বসেছে সিটি করপোরেশন। এডিস মশা নিধনে কর্মপরিকল্পনা বৃদ্ধি ও কর্মীর সংখ্যাও বাড়িয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।  এরইমধ্যে প্রতিটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলরদের নেতৃত্বে পাঁচজন করে মশক নিধন দল গঠন করা হয়েছে। ২৭টি ওয়ার্ডে পাঁচজন করে মোট ১৩৫ জন মশক নিধন কর্মীসহ আরও ৪০ জনের একটি বিশেষ টিম গঠন করা হয়েছে। তবে ডেঙ্গু থেকে রক্ষায় এসব কার্যক্রম যথাযথ সঠিক প্রয়োগের দাবি জানান ‍নগরবাসী। মশক নিধনের বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শ্যামল চন্দ্র পাল বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে এরই মধ্যে কর্মসূচি হাতে নিয়ে প্রতিটি ওয়ার্ডভিত্তিক কাজ করা হচ্ছে। অবস্থা বুঝে আরও কার্যক্রম বাড়ানো হবে। প্রতিদিন আমাদের মশক নিধন কর্মীরা ওষুধ ছিটাচ্ছেন। কোনো ভবন বা প্রতিষ্ঠানের ছাদে কিংবা অন্য জায়গায় পানি জমে থাকলে প্রতিনিয়ত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। সেখান থেকে এডিশ মশার উপদ্রপ দেখা গেলে নগরবাসীকে সতর্ক করা হচ্ছে।  নাসিক সূত্রে জানা গেছে, সপ্তাহে ছয় দিন প্রতিটি ওয়ার্ডের বিভিন্ন স্থানে অ্যাডাল্টিসাইড, লার্ভিসাইড ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। এ ছাড়া জনগণকে সচেতন করতে কাউন্সিলরদের নেতৃত্বে এলাকাভিত্তিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যেমন স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসায় জনসচেতনতামূলক সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। লিফলেট বিতরণসহ মসজিদে জুমার খুতবায় ডেঙ্গুবিষয়ক সচেতনতামূলক বার্তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। মশক নিধন কার্যক্রমে ২০২২-২৩ অর্থবছরে মশক নিধন ও ফগার মেশিনের জ্বালানির জন্য ১ কোটি ৪৭ লাখ ১৭ হাজার ৬৯৪ টাকা ব্যয় করা হয়েছে। এবার মশক নিধন সরঞ্জাম ক্রয় ও ফগার মেশিনের জ্বালানি বাবদ ২০২৩-২৪ চলতি অর্থ বছরে এর বাজেট করা হয়েছে  ৪ কোটি ১০ লাখ টাকা। সিটি করপোরেশনের মেডিকেল অফিসার ডা. নাফিয়া ইসলাম বলেন, ভারতে ওয়েলবল দিয়ে এডিশ মশা প্রতিরোধ করা হয়। এবার মেয়রের নির্দেশে সেই ওয়েলবল তৈরি করে আমরা একটি নতুন উদ্যোগ হাতে নিয়েছি। এটি প্রয়োগ করব যাতে মশক নিধন দ্রুত ও ভালোভাবে হয়। সিটি করপোরেশনের মশক নিধন কার্যক্রমের সমালোচনা করে আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী সংগঠনের সভাপতি মো. নুরুদ্দিন বলেন, বর্ষা মৌসুমে এবং বৃষ্টিতে ডেঙ্গু মশার উপদ্রব বেড়ে যায়। এডিশ মশক নিধনের সেবাটা আমাদের সিটি করপোরেশনকেই নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু সেই সেবাটা আমরা নগরবাসী কয়েক বছর ধরে তাদের কাছ থেকে ঠিকমতো পাচ্ছি না। তারা লোক দেখানো স্প্রে করে যায় এবং নামমাত্র অভিযান করে যায়। এভাবে তো এডিস মশা নিধন সম্ভব না। ডেঙ্গু প্রতিরোধে সিটি করপোরেশনকে সঠিক কার্যক্রম গ্রহণের মাধম্যে তা বাস্তবায়ন করার দাবি জানাচ্ছি। তার সঙ্গে জনগণকেও সচেতন হতে হবে। এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র-১ আব্দুল করিম বাবু বলেন, এডিস মশা থেকে নগরবাসীকে রক্ষা করতে প্রতিনিয়তই কাজ করছে সিটি করপোরেশন। প্রতিদিন প্রতিটি ওয়ার্ডে ডেঙ্গু মশার ওষধ ছিটানো হচ্ছে এবং নগরবাসীর মাঝে জনসচেতনায় কাজ করা হচ্ছে। এডিশ মশা নিয়ন্ত্রনে শুধু সিটি করপোরেশনকে দায়ী করলে চলবে না। আমাদের নগরবাসীকেও সচেতন হতে হবে এবং এগিয়ে আসতে হবে। ছাদবাগান, নির্মাণাধীন ও পরিত্যক্ত স্থান ও ঝোপঝাড় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না করে আমরা যদি পানি জমিয়ে রাখি এবং সেখানে যদি ডেঙ্গু মশার জন্ম নেয় সেজন্য তো আমরাই দায়ী। এডিস মশা প্রতিরোধে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কার্যক্রমের কমতি নেই আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি।
১৩ মে, ২০২৪

ডেঙ্গু প্রকোপ নিয়ে কালবেলায় আজ যত খবর
মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু সাধারণত বর্ষা মৌসুমে ছড়ানোর কথা। তবে বাংলাদেশে এখন আর এটি নির্দিষ্ট সময়ে সীমাবদ্ধ থাকছে না। জলবায়ু পরিবর্তন ও মশকনিধনে উদাসীনতার কারণে সারা বছরই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত মানুষ। শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে এর ভয়াবহতা। প্রতি বছরই ভাঙছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর রেকর্ড। মশা নিধন কার্যক্রম গতানুগতিক পদ্ধতিতে আটকে থাকায় এ বছর ডেঙ্গুর ভয়াবহতা আগের চেয়ে বাড়তে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত চার মাসের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত বছরের চেয়ে এবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার দ্বিগুণ। গত বছর প্রথম চার মাসে ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয় ১১ জনের। চলতি বছরের চার মাসে এই সংখ্যা ২৪। চলতি মাসের প্রথম ৯ দিনে ডেঙ্গুতে প্রাণ হারিয়েছেন আরও পাঁচজন। ডেঙ্গু প্রকোপ নিয়ে দৈনিক কালবেলাতেও রয়েছে বিশেষ আয়োজন। চলুন দেখে নেই ডেঙ্গু প্রকোপ নিয়ে কালবেলায় যত খবর- এবারও ডেঙ্গুঝড়ের শঙ্কা, প্রস্তুতি কম মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু সাধারণত বর্ষা মৌসুমে ছড়ানোর কথা। তবে বাংলাদেশে এখন আর এটি নির্দিষ্ট সময়ে সীমাবদ্ধ থাকছে না। জলবায়ু পরিবর্তন ও মশকনিধনে উদাসীনতার কারণে সারা বছরই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত মানুষ। শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে এর ভয়াবহতা। প্রতি বছরই ভাঙছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর রেকর্ড। মশা নিধন কার্যক্রম গতানুগতিক পদ্ধতিতে আটকে থাকায় এ বছর ডেঙ্গুর ভয়াবহতা আগের চেয়ে বাড়তে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা। বিস্তারিত লিংকে... শ্রমিক অধ্যুষিত গাজীপুর যেন মশার কারখানা গাজীপুর মহানগরীসহ আশপাশের এলাকায় রয়েছে শত শত পোশাক কারখানা। এসব কারখানায় কাজ করেন লাখ লাখ শ্রমিক। শ্রমিক অধ্যুষিত এ গাজীপুরে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মশার প্রজনন। বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ গাজীপুরবাসী। বাসাবাড়ি, দোকানপাট, অফিস-আদালত, ধর্মীয় উপাসনালয়সহ সর্বত্র মশার রাজত্ব। অপ্রতুল ড্রেনেজ ব্যবস্থা, যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনার স্তূপ, জলাবদ্ধতা, মজা পুকুর ও মানুষের অসচেতনতায় এবারও ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে পারে গাজীপুরে। এ ছাড়া এ জেলার হাজার হাজার মানুষ বিভিন্ন কারণে প্রতিদিন ঢাকায় যাতায়াত করেন। ফলে ডেঙ্গুর সরাসরি প্রভাব এসে পড়ে এ জনপদে। সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ডেঙ্গু মোকাবিলায় তাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। বিস্তারিত লিংকে... ৬৯ মৃত্যুতেও খুলনায় গা-ছাড়া ভাব ঈদের পর থেকেই খুলনা জেলায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ডেঙ্গু রোগী। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গত মৌসুমে ৩ হাজার ৪৪৪ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৬৯ জনের। চলতি মৌসুমেও ইতোমধ্যে একজন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এমন বাস্তবতায়ও ডেঙ্গু প্রতিরোধে সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিভাগের তেমন কোনো কার্যক্রম চোখে পড়েনি। এমনকি ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসার জন্য হাসপাতালগুলোতে খোলা হয়নি আলাদা কোনো ইউনিট। বিস্তারিত লিংকে... মশার প্রজননক্ষেত্র শ্যামা সুন্দরী খাল মশার অত্যাচারে অতিষ্ঠ রংপুরবাসী। দিনে-রাতে সমানভাবে কামড়াচ্ছে মশা। নগরবাসী বলছে, প্রজননস্থলগুলো পরিষ্কার না করাসহ নিয়মিত মশানিধন কার্যক্রম পরিচালনা না করায় বেড়েছে উৎপাত। সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ বলছে, শ্যামা সুন্দরী খাল সংস্কার না করায় এখন এটি ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। এতে বেড়েছে মশার প্রজনন। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় দুই দফা খাল সংস্কারের নামে প্রায় ৯২ কোটি টাকা ব্যয় দেখালেও বাস্তবে এর কোনো সুফলই মেলেনি। বিস্তারিত লিংকে... রাসিক উদাহরণ সৃষ্টি করেছে করোনার পর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নখ্যাত রাজশাহী নগরীতে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব অনেক বেড়ে গিয়েছিল। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনাও ছিল নিত্যনৈমিত্তিক। এর পর থেকেই ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে নড়েচড়ে বসে রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক)। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেন মেয়রসহ করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। শুরু করেন সচেতনতামূলক নানা কার্যক্রম; চলে অভিযান। এভাবে বছরব্যাপী পরিকল্পিত কর্মসূচির কারণে বর্তমানে রাজশাহী মহানগরী এলাকায় ডেঙ্গু অনেকটা নিয়ন্ত্রণে। বিস্তারিত লিংকে... ওষুধে মশা নয়, মরে তেলাপোকা ৫৮ দশমিক ১৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের বরিশাল নগরীর বাসিন্দাদের তাড়া করছে ডেঙ্গু আতঙ্ক। খাল, নালা, নর্দমাজুড়ে মশার প্রজনন ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। নগরবাসী বলছেন, সিটি করপোরেশন থেকে যে ওষুধ দেওয়া হচ্ছে, তাতে মশা মরছে না; বরং বিভিন্ন ড্রেন ও খালে থাকা তেলাপোকা বাড়িতে এবং রাস্তায় এসে মারা যাচ্ছে। বিস্তারিত লিংকে... ক্রাশ প্রোগ্রামের পাশাপাশি মসিকের জোর সচেতনতায় ডেঙ্গু প্রতিরোধে নিয়মিত মশক নিধন কার্যক্রমসহ নাগরিকদের সচেতন করতে নানা কার্যক্রম পরিচালনা করছে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন (মসিক)। নগরীর ২২০টি হটস্পটকে প্রাধান্য দিয়ে নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি চলমান রয়েছে ক্রাশ প্রোগ্রাম। এর আওতায় প্রতিটি ওয়ার্ডে এডাল্টিসাইড ও লার্ভিসাইড প্রয়োগ করা হচ্ছে। এ বছর ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত দুটি ক্রাশ প্রোগ্রাম পরিচালনা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মসিক কর্তৃপক্ষ। বিস্তারিত লিংকে... ফগারে মশা মরে না, বললেন কুসিক মেয়র কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) ডেঙ্গু প্রতিরোধে ওয়ার্ডভিত্তিক ফগার এবং স্প্রে মেশিন দিয়ে মশানাশক ওষুধ ছিটানোসহ ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার রাখার বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছে। মহানগরের ২৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে বছরজুড়ে চারটি ফগার মেশিন দিয়ে মশা নিধনে ওষুধ ছিটানো হয়। তাতেও কাজ হচ্ছে না। নগরীতে মশার উপদ্রব বেড়েই চলেছে। বিস্তারিত লিংকে... গবেষণাগার চালুর উদ্যোগ গরমে বাড়ে কিউলেক্স মশার প্রজনন। গরম ছাপিয়ে স্বস্তির বৃষ্টি হলেও অস্বস্তির কারণ এডিস মশা। এমন পরিস্থিতিতে নগরের মশা নিয়ন্ত্রণে কখনো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) গবেষকদের দ্বারস্থ হতে হয় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে (চসিক)। কখনো ভরসা নতুন ওষুধ। কয়েক বছর ধরে এভাবে চললেও মশা নিধনের সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। চলতি মৌসুমে সমন্বিত মশক নিধন কার্যক্রমের পাশাপাশি ঘোষণা এসেছে একটি গবেষণাগার চালুর। বিস্তারিত লিংকে... নারায়ণগঞ্জে ৪০ জনের বিশেষ টিম গত মৌসুমে ডেঙ্গুর প্রকোপ ভুগিয়েছে নারায়ণগঞ্জবাসীকে। মারাও গেছেন কয়েকজন। এবার বর্ষা আসার আগেই নড়েচড়ে বসেছে সিটি করপোরেশন। এডিস মশা নিধনে কর্মপরিকল্পনা বৃদ্ধি ও কর্মী সংখ্যাও বাড়িয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এরই মধ্যে প্রতিটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলরদের নেতৃত্বে পাঁচজন করে মশক নিধন দল গঠন করা হয়েছে। ২৭টি ওয়ার্ডে পাঁচজন করে মোট ১৩৫ জন মশক নিধন কর্মীসহ আরও ৪০ জনের একটি বিশেষ টিম গঠন করা হয়েছে। বিস্তারিত লিংকে... প্রস্তুতি নেই সিসিকের সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বৃহস্পতি ও গতকাল শুক্রবার দুদিনে তিনজন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর পরও নগরীতে ডেঙ্গুর প্রতিরোধে নেই প্রস্তুতি। নগরীর ছড়া, নালা, ড্রেন পরিষ্কারে নেই কোনো উদ্যোগ। সারা বছর কোনো উদ্যোগ না নিলেও জুন মাস এলেই তড়িঘড়ি করে কিছু পরিচ্ছন্নতা অভিযান আর সভা-সেমিনার করেই দায় সারে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। এবারও তারা আসন্ন বর্ষার অপেক্ষা করছে। সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর সিলেট শহরে ৮১ জন রোগী শনাক্ত হয়। এর মধ্যে রয়েছে ভ্রমণজনিত ৭৭ জন। এদিকে কীটতত্ববিদ ডা. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, সারা বছর ডেঙ্গু প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে। বিস্তারিত লিংকে...
১১ মে, ২০২৪

সিলেটে শনাক্ত হচ্ছেন ডেঙ্গু রোগী, প্রতিরোধ প্রস্তুতিতে ঢিমেতাল
সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বৃহস্পতি ও শুক্রবার দুদিনে তিনজন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর পরও নগরীতে ডেঙ্গুর প্রতিরোধে নেই প্রস্তুতি। নগরীর ছড়া, নালা, ড্রেন পরিষ্কারে নেই কোনো উদ্যোগ। সারা বছর কোনো উদ্যোগ না নিলেও জুন মাস এলেই তড়িঘড়ি করে কিছু পরিচ্ছন্নতা অভিযান আর  সভা-সেমিনার করেই দায় সারে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। এবারও তারা আসন্ন বর্ষার অপেক্ষা করছে। সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর  সিলেট শহরে ৮১ জন রোগী শনাক্ত হয়। এর মধ্যে রয়েছে ভ্রমণজনিত ৭৭ জন। এদিকে কীটতত্ববিদ ডা. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, সারা বছর ডেঙ্গু প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে। সরেজমিন নগরের তালতলা, লামাবাজার, সোবহানীঘাট, আম্বরখানা, মিরাবাজার, শিবগঞ্জ ঘুরে দেখা গেছে, এসব এলাকার ড্রেনগুলোতে পোকা কিলবিল করছে। এ ছাড়া বিভিন্ন বাসা ও মার্কেটের সামনে বোতল, বিভিন্ন ধরনের কৌটা ও খাবারের প্যাকেটে পানি জমে আছে। জমে থাকা এ পানি থেকেই এডিস মশার প্রজনন ঘটতে পারে।  সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রতি অর্থবছরে ডেঙ্গু প্রতিরোধে বাজেট হলেও পুরো টাকা খরচ হয় না। ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাজেট ছিল ২ কোটি টাকা। এর মধ্যে খরচ হয় ১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরেও বাজেট হয় ২ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৪৫ লাখ টাকা খরচ করা হয়েছে।  সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম কালবেলাকে বলেছেন, বর্ষায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়বে। এ বিষয়ে জনসচেতনতামূলক প্রচারে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। করপোরেশনের স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ নেবেন। কোথাও ডেঙ্গুর লার্ভা পাওয়া গেলে জরিমানা করা হবে। এ ছাড়া সচেতনতার জন্য প্রতিটি ওয়ার্ডে মাইকিং করা হবে। বিভিন্ন  শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে বৈঠক করা হবে। মশক নিধন অভিযান অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার আরও জোরদার করা হবে।  ডেঙ্গু প্রতিরোধে সতর্ক থাকার কোনো বিকল্প নেই জানিয়ে ডা. জাহিদ বলেন, বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের বিষয়ে যত্নশীল হতে হবে। আর ডেঙ্গুর লক্ষণ প্রকাশ পেলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। অন্যথায় বড় জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।  সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী কালবেলাকে বলেন, গত দুদিনে নারীসহ ৩ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। হাসপাতালে সব ধরনের প্রস্তুতি আছে। পুরুষ-নারী-শিশুদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
১১ মে, ২০২৪

ডেঙ্গু সংক্রমণ বাড়লে হাসপাতাল খালি রাখার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, ডেঙ্গু সংক্রমণ বাড়লে হাসপাতালগুলোকে খালি রাখার ব্যবস্থা করার নির্দেশনা দিয়েছি। যাতে করে পরে সার্জারি বা ভর্তি না করিয়ে চিকিৎসা দেওয়া যায় এমন যারা আছে তাদের হাসপাতালে ভর্তি না করে যাদের প্রয়োজন তাদের ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার (৭ মে) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ২০২৪ সালের ডেঙ্গু প্রস্তুতি নিয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমরা অনেক আলোচনা ইতোমধ্যে করেছি। আমি নির্দেশনা দিয়েছি যাতে ডেঙ্গু বৃদ্ধির সময়ে কোনোভাবেই স্যালাইন সংকট দেখা না দেয় এবং স্যালাইনের দামও না বাড়ে। তিনি বলেন, ডেঙ্গু সংক্রমণ বৃদ্ধির আগেই তা প্রতিরোধে সচেতন হতে হবে। ডেঙ্গুতে আমি মাকে হারিয়েছি। তাই এটা নিয়ে আমার চিন্তা আছে। আমি কাজ করব যাতে আর কারও মা এতে মারা না যায়। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সব রোগের ক্ষেত্রেই সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে যাতে রোগটি কারও হওয়ার আগেই প্রতিরোধ করা যায়। যাতে মানুষের ডেঙ্গু না হয় সেই ব্যবস্থা নিতে হবে। মশা নির্মূলে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও সিটি করপোরেশন এবং যে ঘরে মানুষ থাকে সেখানকার সবাইকেই সচেতন থাকতে হবে। মন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের ফগিং বিষয়ে কিছু ভুল ধারণা আছে। এ বিষয়ে আলোচনা করব। সিটি করপোরেশনের সাথেও ওপেনলি আলোচনা করব। 
০৭ মে, ২০২৪

ডিএনসিসির একার পক্ষে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয় : মেয়র আতিক
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমরা নানা কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। কিন্তু সবাই সচেতন না হলে সিটি করপোরেশনের একার পক্ষে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। সোমবার (৬ মে) রাজধানীর কুড়িল প্রগতি সরণিতে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক কার্যক্রম ও মশক নিধন অভিযান শুরুর আগে তিনি এসব কথা বলেন। আতিকুল ইসলাম বলেন, রোদ ও বৃষ্টি এমন আবহাওয়ায় জমা পানিতে এডিসের লার্ভা জন্মায়। তাই এই সময়ে বেশি সতর্ক থাকতে হবে। বর্ষা শুরুর আগে থেকেই আমরা একযোগে ৫৪টি ওয়ার্ডে মাসব্যাপী জনসচেতনতামূলক প্রচারাভিযান শুরু করেছি। সচেতনতামূলক কার্যক্রমের পাশাপাশি আমাদের ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে আছে, অভিযান করছেন। এডিসের লার্ভা পেলে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। মেয়র বলেন, আমাদের চ্যালেঞ্জ কিন্তু অনেক। একদিকে দাবদাহ, অন্যদিকে এডিস মশা, আরেক দিকে সিটি করপোরেশনের রোপণ করা গাছগুলোকে রক্ষা করা। আমরা মনে করি, কোনো চ্যালেঞ্জই চ্যালেঞ্জ মনে হবে না, যদি জনগণ আমাদের সঙ্গে এগিয়ে আসে। অফিস, দোকান ও যার যার বাসাবাড়ি যদি নিজেরা পরিষ্কার করি তাহলে এডিস মশা জন্মাবে না। তিনি বলেন, সিটি করপোরেশন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করছে, লার্ভিসাইডিং ও এডাল্টিসাইডিং করছে। জনগণকে সচেতন করার জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছি আমরা। এডিসের লার্ভা পেলে আমাদের ম্যাজিস্ট্রেটরা জরিমানা করছেন। আমাদের উদ্দেশ্য জেল-জরিমানা করা না। আমাদের উদ্দেশ্য হলো ডেঙ্গু প্রতিরোধ করা। মেয়র বলেন, বিশেষজ্ঞদের মতে, খালের ও ড্রেনের ময়লা পানিতে এডিস মশা জন্মায় না। জমে থাকা স্বচ্ছ পানিতে এডিস মশা জন্মায়।  যেসব পরিত্যক্ত দ্রব্যাদিতে পানি জমে এডিসের লার্ভা জন্মাতে পারে সেসব দ্রব্যাদি সিটি করপোরেশন কিনে নিচ্ছে। ডাবের খোসা, পরিত্যক্ত পলিথিন, চিপসের প্যাকেট, আইসক্রিমের কাপ, দইয়ের কাপ এগুলো যত্রতত্র না ফেলে ডিএনসিসির কাউন্সিলরদের কাছে জাম দিন নগদ টাকা গ্রহণ করুন। পুরোনো টায়ার, কমোড, রঙের কৌটা এগুলো ছাদে বা বারান্দায় না রেখে আমাদের কাউন্সিলরদের কাছে জমা দিয়ে টাকা নিন। এ সময় ডিএনসিসি মেয়র ট্রাকে ওঠে এডিস মশার উৎসস্থল-গাড়ির পরিত্যক্ত টায়ার, ডাবের খোসা, মাটির পাত্র, খাবারের প্যাকেট, অব্যবহৃত কমোড এগুলো দেখিয়ে জনগণকে সচেতন করেন এবং প্রগতি সরণি এলাকায় রাস্তায় ঘুরে ঘুরে জনগণের মাঝে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করেন। এডিস মশা জন্মাতে পারে এমন পরিত্যক্ত জিনিসপত্র ক্রয় করেন মেয়র আতিক। কুড়িল ব্রিজের নিচে রিকশাচালকদের মাঝে ছাতা, পানির বোতল ও স্যালাইন বিতরণ করেন মেয়র। পরে মেয়র কয়েকটি বাড়ি পরিদর্শন করেন। এডিসের লার্ভা পাওয়ায় মেয়রের উপস্থিতিতে একটি বাড়িতে এক লাখ টাকা জরিমানা ও অন্য আরেকটি বাড়িতে নিয়মিত মামলা দায়ের করেন ডিএনসিসির অঞ্চল-১ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াউল বাসেত।
০৬ মে, ২০২৪

ডেঙ্গু সংক্রমণ এক দিনে মারা গেলেন ৩ জন
ডেঙ্গু মৌসুম আসন্ন। তাপপ্রবাহ শেষে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বৃষ্টির। স্বস্তির বৃষ্টিপাতের আগেই ডেঙ্গুর উঁকি। গতকাল সারা দেশে ৯ ডেঙ্গুরোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। একই সময়ে মশাবাহিত রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তিনজনের। তারা সবাই ঢাকা দক্ষিণ সিটির বাসিন্দা। চলতি বছর শুরু থেকে গতকাল পর্যন্ত ২ হাজার ২৪৮ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। আর মারা গেছেন ২৭ জন। গতকাল শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গু বিষয়ক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, গতকাল হাসপাতালে ভর্তি হওয়াদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২ জন, ঢাকা বিভাগের (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪ জন এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩ জন। গতকাল সারা দেশে ১০ জন সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। চলতি বছরে মোট ২ হাজার ১০৫ জন ছাড়পত্র পেয়েছেন। চলতি বছরের ৩ মে পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হন ২ হাজার ২৪৮ জন। এর মধ্যে ১ হাজার ৩৭৮ পুরুষ এবং ৮৭০ জন নারী। চলতি বছর এ পর্যন্ত মৃত রোগীদের মধ্যে ১৩ পুরুষ এবং ১৪ জন নারী।
০৪ মে, ২০২৪

সম্পাদকীয় / ওত পেতে আছে ডেঙ্গু
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের ৪৫টির বেশি জেলার ওপর দিয়ে এখন তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। একই সঙ্গে দিনের গড় তাপমাত্রা কয়েক ডিগ্রি বেড়ে গেছে। ফলে তীব্র গরম অনুভূত হওয়ায় সারা দেশেই জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। আমাদের দেশে প্রায় প্রতি বছরই এপ্রিল মাসে গড়ে সাধারণত দুই-তিনটি মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ এবং এক-দুটি তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যায়। কিন্তু এ বছর তীব্র তাপপ্রবাহ অনুভূত হওয়ায় এরই মধ্যে তিনটি হিট অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, পর্যাপ্ত পরিমাণে বৃষ্টিপাত না হওয়ার কারণে বাংলাদেশে এ বছর এপ্রিলে গড় তাপমাত্রা বেড়ে গেছে। বৃষ্টিপাত না হওয়ার কারণে দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কম হচ্ছে। ফলে গরম থেকেই যাচ্ছে। ভারি বৃষ্টিপাত হলেই গরম কেটে যাবে। কিন্তু তখন বাড়বে মশা, দেখা দেবে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা নাটকীয়ভাবে বাড়ছে। ইউনাইটেড স্টেটস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন মনে করে, সারা বিশ্বে প্রতি বছর ১০ কোটি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়। ২০০০ সালে প্রায় ২০ হাজার মানুষের প্রাণ গেছে ডেঙ্গুতে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, চলতি বছর বিশ্বে ডেঙ্গুতে ৪০ হাজার মানুষের মৃত্যু হতে পারে। দি ইকোনমিস্ট গত ২৫ এপ্রিল এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরেছে। এতে বলা হয়েছে, একটি স্ত্রী এডিস মশা যদি ফ্ল্যাভিভাইরাস প্যাথোজেন বহন করে এবং এ অবস্থায় কাউকে কামড় দেয় তাহলে তিনি ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হতে পারেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সংক্রমণ লক্ষণ ছাড়াই চলে গেলেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে কিছু ক্ষেত্রে ডেঙ্গুজ্বর দেখা যায়, যা গুরুতরভাবে জয়েন্টে ব্যথা, রক্তক্ষরণ এমনকি মাঝেমধ্যে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটায়। ডেঙ্গুর আফটার-ইফেক্টও যন্ত্রণাদায়ক। সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু আক্রান্ত অঞ্চল হলো লাতিন আমেরিকা। ২০০০ থেকে ২০০৫ সালে সেখানে বছরে গড়ে পাঁচ লাখ মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হন; কিন্তু ২০২৩ সালে অঞ্চলটিতে আক্রান্ত হন ৪৬ লাখ মানুষ। এদিকে ২০২৪ সালে এরই মধ্যে সেখানে প্রায় ৬০ লাখ শনাক্ত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্রাজিলের মানুষ। ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা যেমন বাড়ছে, তেমনি অঞ্চল ছাপিয়ে তা ছড়িয়ে পড়ছে সারা বিশ্বে। এডিস মশা তাপমাত্রার ছোট পরিবর্তনের জন্য সংবেদনশীল এবং পৃথিবী উষ্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের পরিসর প্রসারিত হচ্ছে। বাংলাদেশে বহু বছর ধরে ডেঙ্গু রোগের সংক্রমণ থাকলেও গত বছর (২০২৩ সাল) অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। ওই বছরে আক্রান্তের হার যেমন বেড়েছে, তেমনি মৃত্যুর সংখ্যা সর্বোচ্চ ছুঁয়েছে। গত ২২ বছরে দেশে ডেঙ্গুতে মোট মারা গেছে ৮৬৮ জন। কিন্তু গত বছর ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১ হাজার ৬৯৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। অর্থাৎ গত ২২ বছরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে যত মানুষের মৃত্যু হয়েছে, গত এক বছরে তার চেয়ে বেশি মানুষ এ রোগে মারা গেছে। আমাদের এ পরিণতির পেছনে গত কয়েক বছর ধরে চলমান অপরিকল্পিত নগরায়ণ, মশক নিয়ন্ত্রণে কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা, স্বাস্থ্য খাতের দুরবস্থাসহ বেশ কিছু কারণ রয়েছে। গত কয়েক বছর ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থার মশার ওষুধ ছিটানো এবং সচেতনতা বৃদ্ধির মতো যে পদক্ষেপ নিয়েছে, তা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ছিল না। আমাদের প্রত্যাশা, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে এবার শুরু থেকেই যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
৩০ এপ্রিল, ২০২৪

১৬ জনের করোনা ১৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত
মৃদু সংক্রমণ চলছে করোনাভাইরাস ও ডেঙ্গুজ্বরের। গতকাল এক দিনে ১৬ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ ছাড়া ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৩ জন। গতকাল শুক্রবার রাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দুটি বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, গতকালের সংখ্যা নিয়ে এ পর্যন্ত করোনা শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৪৯ হাজার ৮১৬ জনে। এদিন কারও মৃত্যু হয়নি। তবে এ পর্যন্ত ভাইরাসটিতে মারা গেছেন ২৯ হাজার ৪৯৪ জন। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল ও বাড়িতে উপসর্গবিহীন রোগীসহ গতকাল সুস্থ হয়েছেন ২৫ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ২০ লাখ ১৭ হাজার ২৯৪ জন। বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, গতকাল নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ৪ দশমিক ১২ শতাংশ। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ০৭ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৮ দশমিক ৪১ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ। অন্য বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১৩ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগের (সিটি করপোরেশনের বাইরে) চারজন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে সাতজন এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে দুজন রয়েছেন। এ সময় ৭ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। চলতি বছর এ নিয়ে মোট ১ হাজার ৮২৬ জন ছাড়পত্র পেয়েছেন। চলতি বছর শুরু থেকে গতকাল পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৯৫২ জন। তবে গতকাল কারও মৃত্যু হয়নি। চলতি বছর এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মোট প্রাণহানি হয়েছে ২৪ জনের।
২০ এপ্রিল, ২০২৪

ডেঙ্গু প্রতিরোধে মাঠে নামছে ডিএনসিসি
ডেঙ্গুর মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই একযোগে ৫৪টি ওয়ার্ডে জনসচেতনতা কার্যক্রম চালাতে মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।  জনসাধারণকে সম্পৃক্ত করে ডেঙ্গু মোকাবিলায় ৫৪ জন সাধারণ এবং ১৮ জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর মাসব্যাপী এই প্রচারাভিযান পরিচালনা করবেন। আগামী ২২ এপ্রিল থেকে এই কার্যক্রম শুরু হবে। বুধবার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে অনলাইন প্লাটফর্ম জুমে ডিএনসিসি মেয়রের সভাপতিত্বে সকল কাউন্সিলর ও কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে ডেঙ্গু প্রতিরোধে মাসব্যাপী প্রচারাভিযান পরিচালনা বিষয়ক এক সমন্বয় সভায় এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।  তিনি বলেন, ‘সাধারণ মানুষ আমাদের ভোট দিয়েছেন তাদের সেবা করার জন্য। মশার যন্ত্রণায় যদি তারা অতিষ্ঠ থাকে তার কি জবাব দেব আমরা। তাই সব কাউন্সিলর এবং সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের একযোগে কাজ করে ডেঙ্গু মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই তা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে।’ এ কাজে তিনি সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘সবাই যদি সচেতন থাকি এডিস মশা কখনই বংশ বিস্তার করতে পারবে না। নিজের নিরাপত্তার জন্যই অন্যকে এ বিষয়ে সচেতন করতে হবে।’  মেয়র বলেন, ‘আগামী ২২ এপ্রিল থেকে ডেঙ্গু মোকাবিলায় শহরজুড়ে যত্রতত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এডিস মশার প্রজনন স্থল এবং পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ পরিত্যক্ত পলিথিন, চিপসের প্যাকেট, আইসক্রিমের কাপ, ডাবের খোসা, অব্যবহৃত টায়ার, কমোড ও অন্যান্য পরিত্যক্ত দ্রবাদি জনগণের নিকট হতে নগদ মূল্যে ক্রয় করা হবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলরের কার্যালয়ে গিয়ে যেকেউ উল্লিখিত দ্রব্যাদি জমা দিয়ে নগদ অর্থ সংগ্রহ করতে পারবে।’  সভায় প্রত্যেক কাউন্সিলরকে নির্ধারিত দামে ময়লা কেনার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
১৮ এপ্রিল, ২০২৪

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে মেয়র আতিকের নতুন উদ্যোগ
এডিস মশার প্রজনন স্থল ধবংসে পরিত্যক্ত পলিথিন, ডাবের খোসা ও অন্যান্য দ্রব্যাদি কিনে নিবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) গুলশান-২ নগর ভবনের হলরুমে ২য় পরিষদের ২৬তম করপোরেশন সভার আলোচনায় এ সিদ্ধান্ত জানান মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।  তিনি বলেন, ডেঙ্গু মোকাবিলায় শহরজুড়ে যত্রতত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এডিস মশার প্রজনন স্থল এবং পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ পরিত্যক্ত পলিথিন, চিপসের প্যাকেট, আইসক্রিমের কাপ, ডাবের খোসা, অব্যবহৃত টায়ার, কমোড ও অন্যান্য পরিত্যক্ত দ্রবাদি জনগণের কাছ থেকে নগদ মূল্যে সংগ্রহ করার উদ্যোগ নিয়েছি। প্রতিটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলরের কার্যালয়ে গিয়ে যে কেউ উল্লিখিত দ্রব্যাদি জমা দিয়ে নগদ অর্থ সংগ্রহ করতে পারবে। প্রতিটি ওয়ার্ডের ক্রয়কৃত পরিত্যক্ত দ্রব্যাদি প্রতিদিন নিয়মিতভাবে সংগ্রহ করে পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা নিকটবর্তী এসটিএস (সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন) এ অপসারণ করবে। জনগণকে সম্পৃক্ত করে প্রতিটি ওয়ার্ডকে পরিচ্ছন্ন করার লক্ষ্যে এই উদ্যোগ। আশা করি এর ফলে জনগণ অব্যবহৃত এসব দ্রব্যাদি যত্রতত্র ফেলা বন্ধ করবে এবং ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পরিত্যক্ত দ্রব্যাদি সংগ্রহ করে সিটি করপোরেশনে জমা দিবে। সভায় কাউন্সিলরদের সম্মতিক্রমে পরিত্যক্ত দ্রব্যাদি ও সেগুলো সংগ্রহের জন্য মূল্য নির্ধারণ করা হয়। চিপসের প্যাকেট/সমজাতীয় প্যাকেট (১০০টি) ১০০ টাকা, আইসক্রিমের কাপ, ডিসপোজেবলব গ্লাস/কাপ (১০০টি) ১০০ টাকা, অব্যবহৃত পলিথিন (প্রতি কেজি) ৫০ টাকা, ডাবের খোসা (প্রতিটি) ২ টাকা, মাটি/প্লাস্টিক/মেলামাইন/সিরামিক ইত্যাদির পাত্র (প্রতিটি) ৩ টাকা, পরিত্যক্ত টায়ার (প্রতিটি) ৫০ টাকা, পরিত্যক্ত কমোড/বেসিন ইত্যাদি (প্রতিটি) ১০০ টাকা, অন্যান্য পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের দ্রব্যাদি (প্রতি কেজি) ১০ টাকায় কেনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ঈদের পরে কাউন্সিলরের কার্যালয় থেকে এটি বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানান মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। এর আগে করপোরেশন সভার শুরুতে মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম কাউন্সিলর ও কর্মকর্তাদের আসন্ন ঈদুল ফিতরের ও পহেলা বৈশাখের অগ্রিম শুভেচ্ছা জানান। মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ঈদের পর থেকেই ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে প্রতিটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলরদের নেতৃত্বে জনগণকে সচেতন করতে ক্যাম্পেইন শুরু করতে হবে। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা, রাজনীতিবিদ, ইমাম, শিক্ষক ও শিক্ষার্থী সবাইকে নিয়ে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে করণীয় সম্পর্কে মতবিনিময় সভা করতে হবে, সচেতনতামূলক র‍্যালি করতে হবে। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ওষুধ প্রয়োগ করা, পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করার পাশাপাশি জনগণের সচেতনতা জরুরি। জনগণের মাঝে বার্তা ছড়িয়ে দিতে হবে এডিসের লার্ভা যেন জন্মাতে না পারে সেজন্য নিজেদের ঘর-বাড়ি, অফিস পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ছাদে, বারান্দায়, পরিত্যক্ত টায়ার, ডাবের খোসা, মাটির পাত্র, খাবারের প্যাকেট, অব্যবহৃত কমোড এগুলোতে পানি জমতে দেয়া যাবে না।  সভায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে নিয়োজিত কোনো স্কেলভুক্ত মাস্টাররোল কর্মী এবং দৈনিক মজুরিভিত্তিক (মাস্টাররোল) শ্রমিক/কর্মী কর্মরত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে তার পরিবারকে এককালীন অনুদান ৮,০০,০০০/-(আট লাখ) টাকা প্রদানের বিষয় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় ডিএনসিসির সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিকের সঞ্চালনায় অন্যদের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগে. জেনা. মো. মঈন উদ্দিন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগে. জেনা. ইমরুল কায়েস চৌধুরী, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ফিদা হাসান, ডিএনসিসির সকল বিভাগীয় প্রধান ও ডিএনসিসির কাউন্সিলররা এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।   
০৪ এপ্রিল, ২০২৪
X