কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৪২ পিএম
আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

জুলাই আন্দোলনে আহতদের বেশিরভাগ মানসিক অসুস্থতায় ভুগছেন : গবেষণা

পুরোনো ছবি।
পুরোনো ছবি।

জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় চোখে আঘাতপ্রাপ্ত বেশিরভাগই মানসিক রোগে ভুগছেন, এমন চিত্র উঠে এসেছে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট পরিচালিত এক গবেষণায়। মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ৫৫ তরুণের ওপর গবেষণা চালায়, যাদের বেশির ভাগই ২২ বছরের কম বয়সী শিক্ষার্থী, যারা চোখের চিকিৎসায় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে ভর্তি রয়েছেন। গবেষণার উদ্দেশ্য ছিল আহত তরুণরা বিষণ্নতা, উদ্বেগ ও মানসিক চাপে কী মাত্রায় ভুগছেন তা পরীক্ষা করা।

গবেষণায় দেখা যায়, আহতদের মধ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশ হালকা থেকে গুরুতর বিষণ্নতায় ভুগছেন এবং তাদের মধ্যে ২৫ শতাংশের অবস্থা অত্যন্ত গুরুতর স্তরে পৌঁছেছে।

গবেষণায় আরও দেখা যায়, ৫০ শতাংশেরও বেশি ভুক্তভোগী হালকা থেকে গুরুতর উদ্বেগে ভুগছেন, ২০ শতাংশের বেশি অত্যন্ত গুরুতর উদ্বেগের সঙ্গে লড়াই করছেন এবং প্রায় ৬০ শতাংশ মানসিক চাপে ভুগছেন।

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মুনতাসির মারুফ বুধবার (১২ ডিসেম্বর) জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে (এনআইওএইচ) আয়োজিত এক কর্মশালায় এ গবেষণার তথ্য তুলে ধরেন।

অরবিস ইন্টারন্যাশনালের সহযোগিতায় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট জুলাই আন্দোলনে আহতদের দৃষ্টিশক্তি ও মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত এ কর্মশালার আয়োজন করে। কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান।

তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত ব্যক্তিদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সরকার সবকিছু করবে। ডাটাবেজ চূড়ান্ত করতে বিলম্ব হওয়ায় জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে নিহত ও আহতদের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতির প্রক্রিয়া এখনো শেষ হয়নি। সরকার সাড়ে ৯ হাজার থেকে ১০ হাজার আহতের নাম পেয়েছে এবং এখন পর্যন্ত অর্ধেক তথ্য যাচাই করা সম্ভব হয়েছে। যাচাই শেষে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি এবং পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে তিনি জানান।

বিশেষ সহকারী আরও বলেন, সরকার আহতদের চিকিৎসা, পুনর্বাসন ও কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছে। সরকার খরচ নিয়ে উদ্বিগ্ন নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, আহতদের সর্বোত্তম চিকিৎসা দেওয়ার জন্য যেখানে দরকার সেখানে নেওয়া হবে।

ইতোমধ্যে ১০ জনকে থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।

সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল (এনআইওএইচ), জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ইস্পাহানি ইসলামিয়া চক্ষু ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ নেতৃস্থানীয় হাসপাতাল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে আগত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের একটি প্যানেল কর্মশালায় উপস্থিত আহতদের প্রশ্নের জবাব দেন।

আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের প্রশ্নের জবাবে প্যানেল সদস্যরা বলেন, তারা আহতদের শরীরে থাকা সকল বুলেট অপসারণের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন, তবে কিছু এখনও রয়ে গেছে। গুলিগুলো তাদের কোন ক্ষতি করবে না বলেও আশ্বস্ত করেন তারা।

কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমান। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর, এনআইওএইচ এর পরিচালক অধ্যাপক ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরী এবং অরবিস ইন্টারন্যাশনালের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. মুনির আহমেদ।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

খতমে নবুওয়তের চেতনায় সত্য ও ন্যায়ের পথে এগিয়ে যাক কালবেলা : মুহিউদ্দীন রাব্বানী

এইচএসসির ফল পুনর্নিরীক্ষণ আবেদন করবেন যেভাবে

চট্টগ্রামে আগুন ৪ ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি, ২৫ শ্রমিককে উদ্ধার

চীনে ৩০ পাদরি গ্রেপ্তার, বড় অভিযানের আশঙ্কা

মোস্তারির অর্ধশতকে অজিদের বিপক্ষে বাংলাদেশের লড়াকু সংগ্রহ

‘ভর্তির পরে সবার বিয়ে হয়ে গেছে, তাই কেউ পাস করেনি’

সর্বপ্রথম কোথায় আজান হয়েছিল, কার কণ্ঠে?

নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্রের পথ মসৃণ হবে : মির্জা ফখরুল

রাকসু নির্বাচন ঘিরে নানা অভিযোগ ছাত্রদল প্যানেলের ভিপি প্রার্থীর

যমুনা ঘেরাও কর্মসূচি স্থগিত, আন্দোলনরত শিক্ষকদের বড় কর্মসূচি ঘোষণা

১০

গাজায় সৈন্য পাঠাতে যাচ্ছে পাকিস্তান, আজারবাইজান ও ইন্দোনেশিয়া!

১১

রংপুর ক্যাডেট কলেজে শতভাগ জিপিএ ৫

১২

‘ইলেকশন ইন ফেব্রুয়ারি’ স্লোগানে ঢাবিতে ছাত্রদলের মিছিল 

১৩

টাঙ্গাইলে ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত ৪

১৪

নেসলের ১৬ হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা

১৫

বাবা হলেন হাসনাত আব্দুল্লাহ

১৬

রাকসু নির্বাচনের ভোট গণনা শুরু

১৭

র‌্যাঙ্কিংয়ে এগোতে উইন্ডিজ সিরিজে বাংলাদেশকে কী করতে হবে?

১৮

এক যুগ পর আবার মঞ্চে পালাকারের ‘ডাকঘর’

১৯

অবশেষে হাত মেলালেন ভারত-পাকিস্তানের খেলোয়াড়েরা

২০
X