আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, সবার সর্বদা সজাগ ও সচেতন থাকতে হবে, যাতে করে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি গোলাম আজম-নিজামী-মুজাহিদীদের প্রেতাত্মারা আর মাথাচারা দিয়ে উঠতে না পারে।
শনিবার (২৯ আগস্ট) রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট আয়োজিত ‘বৌদ্ধ পারিবারিক আইন প্রণয়ন : আমাদের প্রত্যাশ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া সেমিনারের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি সুখী-সমৃদ্ধশালী অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে আজীবন নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন। তার সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মডেল দেশ হিসেবে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত ও সমাদৃত।
তিনি বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার জন্য অতীতে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র ও অপতৎপরতা চালিয়েছে। কিন্তু জননেত্রী শেখ হাসিনার সাহসী ও দূরদর্শী পদক্ষেপ এবং সব ধর্ম-বর্ণ ও শ্রেণি-পেশার মানুষের সহযোগিতায় তা কঠোরভাবে দমন করা সম্ভব হয়েছে। আমাদের সবার সর্বদা সজাগ ও সচেতন থাকতে হবে যাতে করে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি গোলাম আজম-নিজামী-মুজাহিদীদের প্রেতাত্মারা আর মাথাচারা দিয়ে উঠতে না পারে।
আইনমন্ত্রী বলেন, স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে আবহমান কাল হতে সব সম্প্রদায় ও ধর্মের জনগণ স্বাধীনভাবে ধর্মচর্চা ও ধর্ম পালন করে আসছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে বসবাসরত সব ধর্মের জনগণের প্রতি সমান সহানুভূতিশীল। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় গৌতম বুদ্ধের জন্মভূমি নেপালের লুম্বিনী কনজারভেশন এলাকায় প্রায় ২ একর জমির ওপর বাংলাদেশ প্যাগোডা ও বুড্ডিস্ট কালচারাল কমপ্লেক্স নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এই যুগান্তকারী পদক্ষেপ বিশ্বে অসাম্প্রদায়িকতার নিদর্শন হিসেবে ইতিহাসে চিরদিন স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ হয়ে থাকবে।
মন্ত্রী বলেন, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের কার্যাবলিকে আরও বিস্তৃত করে এর কার্যক্রমকে গতিশীল ও ব্যাপকভাবে তৃণমূল পর্যায়ের জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর লক্ষ্যে ট্রাস্টের অধ্যাদেশকে ২০১৮ সালে আইনে পরিণত করা হয়েছে। এতে ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যদের সংখ্যা ৮ থেকে ১২ জনে উন্নীত করা হয়েছে। একই সাথে হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট ও খ্রিষ্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট আইনও পাস করা হয়েছে। এটাও দেশরত্ন শেখ হাসিনার সরকারের অসাম্প্রদায়িক আদর্শের অনন্য উদাহরণ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্নের বাস্তবায়ন।
আনিসুল হক বলেন, বাংলাদেশে ইসলাম ধর্মের মানুষের জন্য মুসলিম পারিবারিক আইন, হিন্দু ধর্মের মানুষের জন্য হিন্দু পারিবারিক আইন এবং খ্রিষ্টান ধর্মের মানুষের জন্য খ্রিষ্টান ধর্মীয় আইন প্রচলিত আছে। কিন্তু বাংলাদেশের সমতলীয় বৌদ্ধধর্মের মানুষের জন্য কোনো পারিবারিক আইন নেই, এটা চিন্তার বিষয়। বৌদ্ধ পারিবারিক আইন প্রণয়নে তিনি সবধরনের সহযোগিতা করবেন।
আরও পড়ুন : বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি থেকে আটক ৯০
বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান সুপ্ত ভূষণ বড়ুয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের সচিব মো. মইনুল কবির, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার, ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মু.আ. হামিদ জমাদ্দার, শিক্ষাবিদ ড. বিকিরণ প্রসাদ বড়ুয়া, প্রফেসর ডা. প্রভাত চন্দ্র বড়ুয়া, ড. নীরু বড়ুয়া, ট্রাস্টি ববিতা বড়ুয়া প্রমুখ বক্তৃতা প্রদান করেন।
মন্তব্য করুন