গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।
বুধবার (০৪ সেপ্টম্বর) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মতিঝিল দক্ষিণ থানার উদ্যোগে রাজধানীর একটি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশে আমরা ’৪৭-এ একবার স্বাধীনতা অর্জন করেছি। তখন মনে হয়েছিল আমাদের হয়তো আর স্বাধীনতা লাগবে না। কিন্তু পরোক্ষণেই দেখা গেল আমাদের শাসনের নামে শোষণ করা হচ্ছে। ’৭১-এ আবার জীবন দিয়ে মানুষ তার প্রিয় স্বদেশকে মুক্ত করল। তখন একটি স্বাধীনতা আমরা পেলাম। তখনও আমাদের মনে হয়েছিল আমরা হয়তো মুক্ত হয়েছি। আসলে তখন স্বাধীনতা ঠিকই পেয়েছিলাম কিন্তু একটি পরিবার সেই স্বাধীনতাকে তাদের নিজস্ব অর্জন মনে করে বাংলাদেশের মানুষকে গোলাম হিসেবে চিন্তা করে আমাদের জিম্মি করে ফেলেছিল।
তিনি বলেন, ২০২৪ সালে ৫ আগস্ট আমরা নতুন স্বাধীনতা পেয়েছি। এই সংগ্রামে যারা রক্ত দিয়ে, জীবন দিয়ে এই দেশকে ফ্যাসিবাদের কবল থেকে মুক্ত করেছেন তারা আমাদের জাতীয় বীর। সেই সব শহীদদের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
মহানগর সেক্রেটারি বলেন, ১৫ বছরের অধিক সময় ধরে বাংলাদেশের মানুষ ফ্যাসিবাদের কড়াল গ্রাসে আবদ্ধ ছিল। দেশে কোনো গণতন্ত্র ছিল না। মানুষের কথা বলার কোনো অধিকার ছিল না। ফ্যাসিবাদ তার অপশাসন দিয়ে জনগণের টুটি চেপে ধরেছিলো। গুম-খুনের মহোৎসব চলেছে। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান গুলোকে তারা ধ্বংস করে দিয়েছিলো। বিচার ব্যবস্থাকে স্বৈরাচার সরকার পরিপূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়ে ছিলো। ব্যাংক ব্যবস্থাকে ধ্বংসের মাধ্যমে এদেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দেওয়া হয়েছিলো। এই অবস্থা থেকে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে অসংখ্য রক্তের বিনিময়ে জাতি মুক্ত হয়েছে। তাই আমাদের এই শহীদদের আত্মত্যাগের কথা ভুলে গেলে চলবে না। তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মান প্রদান করতে হবে। নতুন বাংলাদেশে আবার যেন কোন ফ্যাসিবাদের জন্ম হতে না পারে সে ব্যাপারে সজাগ ও সচেতন থাকতে হবে।
ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ড. মোবারক হোসাইন বলেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকার ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে দমন করতে না পেরে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করে অথচ আজ জনগণই তাদেরকে নিষিদ্ধ করে দিয়েছে। এই জামায়াত-শিবিরই জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।
মতিঝিল দক্ষিণ থানা আমির মাওলানা মুতাসিম বিল্লাহর সভাপতিত্বে ও থানা সেক্রেটারি ইমাম হোসেনের সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ড. মোবারক হোসাইন ও মতিঝিল জোন পরিচালক সৈয়দ সিরাজুল ইসলাম, বিশিষ্ট সমাজসেবক শফিক মাইনুদ্দিন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন থানা কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আব্দুল আওয়াল, এ্যাডভোকেট ওয়াালি উল্লাহ, ওয়ার্ড সভাপতি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হাফিজুর রহমানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।
মন্তব্য করুন