অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির অধ্যাপক মজিবুর রহমান বলেছেন, বেশি সময় নয়, বেশি সময় নিলে মানুষের একটা ক্ষমতা স্বাদ এসে যায়, অতীতে দেখা গেছে এই ধরনের শক্তি যখন ক্ষমতায় যায়, ক্ষমতার স্বাদ যখন পেয়ে যায় তখন আর ক্ষমতা ছাড়তে চায় না, নতুন নতুন দল তৈরি করে ক্ষমতাকে আগলে ধরার চেষ্টা করে। তাই বলছি খুব বেশি নয় একটি বছরের মধ্যেই সরকারকে সংস্কারের কাজ শেষ করতে হবে। নির্বাচনের জন্য কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে একটা নির্বাচন ব্যবস্থা করতে হবে।
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর রমনা ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বাংলাদেশ আর্দশ শিক্ষক ফেডারেশন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আয়োজিত ‘শিক্ষক সম্মেলনে’ তিনি এসব কথা বলেন। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক নূরনবী মানিকের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা দক্ষিণ জামায়াতের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।
মজিবুর রহমান বলেন, যার ভিতরে আল্লাহর ভয় আছে সেই ব্যক্তি শিক্ষক, যার ভিতরে ভয় নেই, একদিন শিক্ষক নন। যার ভিতরে নৈতিকতা নেই, সে পশু।
পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, কত ডিগ্রি ছিল তার, অথচ তিনি বলেছিলেন, ‘দেখামাত্রই গুলি করতে হবে’। কিন্তু সেই ব্যক্তি পালিয়ে গেছে। চরিত্রহীন মানুষই পশুর সমান। জনগণের ট্যাক্সের টাকা দিয়ে চরিত্রহীন মানুষ গড়ার কোনো কোনো দরকার নাই।
শিক্ষা ব্যবস্থা সংস্কারের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার উপযোগী নয় জানিয়ে তিনি বলেন, জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার আসলে সে দাবিটা পূরণ হওয়ার মত। উপযুক্ত সময়ের মধ্যে বর্তমান সরকার রাষ্ট্রের সংস্কার কাজ গুলো করবে। বেশি সময় নিলে মানুষের একটা ক্ষমতা স্বাদ এসে যায়, অতীতে দেখা গেছে এই ধরনের শক্তি যখন ক্ষমতায় যায়, ক্ষমতার স্বাদ যখন পেয়ে যায় তখন আর ক্ষমতা ছাড়তে চায় না, নতুন নতুন দল তৈরি করে ক্ষমতাকে আগলে ধরার চেষ্টা করে। তাই বলছি খুব বেশি নয় একটি বছরের মধ্যেই সরকারকে সংস্কারের কাজ শেষ করতে হবে। নির্বাচনের জন্য কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে একটা নির্বাচন ব্যবস্থা করতে হবে। নির্বাচিত সরকার এসেই জনগণের উপযোগীদের শিক্ষা ব্যবস্থা কায়েম করা দরকার সেটি তারা করবেন।
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, আমরা দেশের ধ্বংস কালো অন্ধকার দেখেছি, যেখানে কেউ বৈঠক করলেই বলতো জঙ্গিবাদ-ষড়যন্ত্র হচ্ছে, আমরা ভাবতাম এই কালো অন্ধকার পরিবেশের কি অবসান হবে না? তখন এ দেশের ছাত্র জনতা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে সেই কালো যুগের অবসান করেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের মূল লক্ষ্য হলো সভ্য সমাজ ও জাতিকে সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছানো। এখন ছাত্র ও শিক্ষার্থী নৈতিকতা পরে কথা এখন শিক্ষকদের নৈতিকতা ধ্বংস হয়ে গেছে। আধুনিক শিক্ষার নামে আজকে জাতিকে দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। শুধু এক জায়গায় মেরামত করে জাতির বিভাজন দূর করা যাবে না। ফলে জোড়াতালি দিয়ে শিক্ষানীতি তৈরি করে তরুণ প্রজন্মের রক্তের ঋণ শোধ করা যাবে না। গোটা শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে নতুন কারিকুলাম প্রণয়ন করতে হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্য তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গনে এখনো আওয়ামী প্রেত্মাতারা এখনো বসে আছে। তারা আবারও দেশকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছে। তাদের খুঁজে বের করুন, দ্রুত ব্যবস্থা নেন। শিল্পকলা একাডেমির ডিজি জামিল আহমেদ অপসারণ না হলে ছাত্রজনতা আবারও রাজপথে নামতে বাধ্য হবে।
সভায় আরও বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামী ঢাকা দক্ষিণের আমীর নুরুল ইসলাম বুলবুল, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড আ ন ম রফিকুর রহমান মাদানী, তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ড. আবু ইউসুফ খান, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক মোর্শেদ মাহবুব, এডুকেশন সোসাইটির সেক্রেটারি ড. ইকবাল হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আরিফুল ইসলাম অপু, ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল আজিজ, কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. আব্দুল মান্নান, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ভিসি ড. আব্দুর রউফ, মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড ঢাকা মহানগর পরিষদের সভাপতি মাওলানা মোশাররফ হোসেন, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভাপতি আব্দুস সবুর মাতব্বর, কলেজ শিক্ষক পরিষদের সভাপতি মাকসুদুর রহমান, মাধ্যমিক শিক্ষক পরিষদের সভাপতি আব্দুল করিম শাহীন, কিন্ডার গার্ডেন শিক্ষক পরিষদের সভাপতি শিকদার আব্দুস কুদ্দুস, প্রাথমিক শিক্ষা পরিষদের সভাপতি আলী আকবর গাজী, ইবতেদায়ী পরিষদের চেয়ারম্যান মমিরুল ইসলাম হেলালি
মন্তব্য করুন