চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের আহ্বান ও ৪ আগস্ট স্মরণে রাজধানীতে সোমবার (০৪ আগস্ট) পতাকা মিছিল করেছে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি। মিছিল পূর্ব সমাবেশে দলের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, গণঅভ্যুত্থানে দলের ব্যানারে না হলেও নির্দলীয় অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ সমর্থন ও ভূমিকা রেখেছে বিএনপি-জামায়াতসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল। তাদের শত শত নেতাকর্মী শাহাদাত বরণ করেছে ও হাজার হাজার সমর্থক আহত-পঙ্গু হয়েছে। কিন্তু এখন কোন দলের অবদান বেশি তা নিয়ে তারা পরস্পরকে আক্রমণ করে কথা বলছে। তিনি দেশ ও জাতির কল্যাণে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপিকে বিভেদ বন্ধ করার আহ্বান জানান।
রাজধানীর বিজয়নগরে এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয় সংলগ্ন এলাকায় ‘গণপ্রতিরোধ স্মরণে জাতীয় পতাকা মিছিল’ প্রারম্ভে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই বক্তব্য রাখেন। দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ডা. ওহাব মিনারের সভাপতিত্বে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসাইনের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, নাসরিন সুলতানা মিলি।
মজিবুর রহমান মঞ্জু আরও বলেন, গত বছরের জুলাইয়ের শুরু থেকে এবি পার্টিসহ কয়েকটি দল দলীয় ব্যানারে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সমর্থন দিয়েছে। ৪ আগস্ট দলের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার ফুয়াদ দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে ছাত্রদের আহ্বানে দেশবাসীকে ঢাকামুখী হবার আহবান জানিয়েছিলেন। জুলাই-আগস্ট জুড়ে এবি পার্টি প্রকাশ্য দলীয় ব্যানারে রাজপথে সংগ্রাম করেছে, রক্ত দিয়েছে, কারা নির্যাতন ভোগ করেছে। আমাদের অংশগ্রহণ ছিল দলগত, তবে আমরা মনেকরি আমাদের অবদান অতি ক্ষুদ্র ও নগন্য। বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির নেতা কর্মীরা নির্দলীয় পরিচয়ে সবচাইতে বেশি ত্যাগী অবদান রেখেছে এই অভ্যুত্থানে। কিন্তু এখন তারা দলীয়ভাবে ক্রেডিট নিতে গিয়ে বিবাদে জড়াচ্ছেন যা মোটেও কাঙ্ক্ষিত নয়। তিনি বলেন দলীয়ভাবে এনসিপি কোনো অবদান দাবি করতে পারেনা কারণ এনসিপির জন্ম হয়েছে অভ্যুত্থানের পর। এনসিপির নেতৃত্বে এখন যারা আছেন তাদের গণঅভ্যুত্থানের মূল নেতা উল্লেখ করে তিনি বলেন, অবদানের বিতর্কে জড়িয়ে কেউ কাউকে আপোষকামী এবং সাবেক ছাত্রলীগ বলে সম্বোধন করা উচিত নয়। তিনি দেশ ও জাতির কল্যাণে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপিকে এ জাতীয় বিভেদ বন্ধ করার আহ্বান জানান।
দলের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র যদি সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ ও আলোচনার মাধ্যমে প্রণয়ন হতো, তাহলে এটি একটি ঐতিহাসিক দলিলে পরিণত হতো। কিন্তু তা না করে একতরফাভাবে এটি উপস্থাপন করাটা শোভনীয় হচ্ছে না। আমরা জানি না, এটি কোথায়, কার মাধ্যমে এবং কী প্রক্রিয়ায় চূড়ান্ত করা হয়েছে। জুলাই সনদ প্রায় প্রস্তুত। কিন্তু সেটি কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে—সেই রূপরেখা আমাদের জানানো হয়নি। সুতরাং, জুলাই সনদকে কার্যকর করতে হলে আগে তার বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া সুস্পষ্টভাবে নির্ধারণ করতে হবে।
এরপর পতাকা মিছিলটি বিজয় একাত্তর চত্বর থেকে শুরু হয়ে নাইটিঙ্গেল, বিজয়নগর, কাকরাইল, পল্টনসহ রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মৌন মিছিলে আরও উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা) আমজাদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক (বরিশাল) গাজী নাসির, শ্রমবিষয়ক সম্পাদক শাহ আব্দুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহবায়ক আব্দুল হালিম খোকন, সদস্য সচিব বারকাজ নাসির আহমদ, কৃষিবিষয়ক সম্পাদক আখতার হোসেন, উত্তরের সদস্য সচিব সেলিম খান, ছাত্রপক্ষের সাধারণ সম্পাদক রাফিউর রহমান ফাত্তাহ, স্বেচ্ছাসেবক ও জনকল্যাণ বিষয়ক সহসম্পাদক কেফায়েত হোসাইন তানভীর, তোফাজ্জল হোসাইন রমিজ, সহকারী সাংগঠনিক (ঢাকা)সম্পাদক শাজাহান ব্যাপারী, শ্রমবিষয়ক সহসম্পাদক আজিজা সুলতানা, সহ সাংস্কৃতিক সম্পাদক আব্দুর রব জামিল, সহকারী দপ্তর সম্পাদক আব্দুল হালিম নান্নু, নারী উন্নয়ন বিষয়ক সহ সম্পাদক শাহিনুর আক্তার শিলা, কর্মসংস্থান বিসয়ক সহ সম্পাদক সুমাইয়া ফারহানা,এবি যুব পার্টির দপ্তর সম্পাদক আমানুল্লাহ রাসেল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুব পার্টির আহ্বায়ক মাহমুদ আজাদ প্রমুখ।
মন্তব্য করুন