

মৃত্যু জীবনের ঘনিষ্ঠ সঙ্গী। জন্ম নিলে একদিন মারা যেতে হবে। মায়াঘেরা দুনিয়ার রূপ-রঙ ছেড়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমাতে হবে— যেখানে কেউ কারও বন্ধু হবে না, হবে না শত্রুও। নিজের দায়িত্ব নিজেই নিতে হবে।
এ প্রসঙ্গে রাব্বুল আলামিন মহাগ্রন্থ আল কোরআনে ইরশাদ করেন, ‘প্রত্যেক প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে এবং তোমরা নিজ নিজ কাজের প্রতিফল সম্পূর্ণভাবেই কিয়ামতের দিন পাবে।’ (সুরা আলে ইমরান : ১৮৫, সুরা আনকাবুত : ৫৭)
সুরা নাহলে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘অতঃপর নির্ধারিত সময়ে যখন তাদের মৃত্যু এসে যাবে, তখন এক মুহূর্তও বিলম্বিত কিংবা ত্বরান্বিত করতে পারবে না।’ (আয়াত : ৬১)
মৃত্যুর কথা সামনে আসতেই অনেকে জানতে চান, ‘তীব্র কষ্টের সময় নিজের মৃত্যু কামনা করা কি জায়েজ?’কারণ, অনেক সময় কষ্ট সহ্য করতে না পেরে অনেকে নিজের মৃত্যু কামনা করে বসেন।
এ প্রসঙ্গে প্রখ্যাত ইসলামী স্কলার শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, তীব্র কষ্টেও নিজের মৃত্যু কামনা করা যাবে না। হাদিসে দুঃসময়ে বা কঠিন সময়ে নিজের মৃত্যু কামনা করার ক্ষেত্রে কঠোর নিষেধ রয়েছে। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমাদের কেউ কোনো বিপদের কারণে মৃত্যু কামনা করবে না। আর যদি কেউ এমন অবস্থায় পতিত হয় যে, তাকে মৃত্যু কামনা করতেই হয় তবে সে (মৃত্যু কামনা না করে) দোয়া করবে, হে আল্লাহ! যতদিন পর্যন্ত বেঁচে থাকা আমার জন্য মঙ্গলজনক হয় ততদিন আমাকে জীবিত রাখুন, আর যখন আমার জন্য মৃত্যু মঙ্গলজনক হয় তখন আমার মৃত্যু দিন। (বোখারি : ৫৯১১)
অন্য হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমাদের কেউ মৃত্যু কামনা করবে না। কেননা, সে (মৃত্যু কামনাকারী) যদি সৎকর্মশীল হয় তবে (বেঁচে থাকলে) হয়তো সে সৎকর্ম করবে। কিংবা সে পাপাচারী হবে, হয়তো সে অনুতপ্ত হয়ে তওবা করবে। (বোখারি : ৬৭৪১)
প্রসঙ্গত, দুঃসময়ে বা কঠিন বিপদে ধৈর্য ধারণের ক্ষেত্রে বিপদের প্রথম মুহূর্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে ধৈর্য ধারণকারীরাই সফলকাম হতে পারেন। আনাস ইবনু মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, প্রকৃত ধৈর্য ধারণ করা হলো বিপদ-আপদের প্রথম মুহূর্তে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২০১১)
অন্যদিকে ধৈর্যশীলদের সঙ্গে থাকার ওয়াদা স্বয়ং আল্লাহ তায়ালার। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে রয়েছেন।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৫৩)
মন্তব্য করুন